(Book# 114/٢١٨)-৪২০ www.motaher21.net تَعَالَوْاْ إِلَى مَا أَنزَلَ اللّهُ وَإِلَى الرَّسُول ‘আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে ও রাসূলের দিকে আস’, “Come to what Allah has revealed and to the Messenger.” সুরা: আল্ মায়িদাহ আয়াত নং :-১০৩-১০৪

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٢١٨)-৪২০
www.motaher21.net

تَعَالَوْاْ إِلَى مَا أَنزَلَ اللّهُ وَإِلَى الرَّسُول

‘আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে ও রাসূলের দিকে আস’,

“Come to what Allah has revealed and to the Messenger.”
সুরা: আল্ মায়িদাহ
আয়াত নং :-১০৩-১০৪

مَا جَعَلَ اللَّهُ مِنۢ بَحِيرَةٍ وَلَا سَآئِبَةٍ وَلَا وَصِيلَةٍ وَلَا حَامٍ ۙ وَلٰكِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ ۖ وَأَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ

আল্লাহ তৈরী করেননি বাহীর, সায়েবা, ওয়াসীলা ও হাম । কিন্তু যারা কুফরী করেছে তারা আল্লাহর উপর মিথ্যা রটনা করে। আর তাদের অধিকাংশই বুঝে না।

আয়াত:- ১০৪

وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْا إِلٰى مَآ أَنزَلَ اللَّهُ وَإِلَى الرَّسُولِ قَالُوا حَسْبُنَا مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ ءَابَآءَنَآ ۚ أَوَلَوْ كَانَ ءَابَآؤُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ شَيْـًٔا وَلَا يَهْتَدُونَ

আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে ও রাসূলের দিকে আস’, তারা বলে, ‘আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের যার উপর পেয়েছি তাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাদের পিতৃপুরুষরা কিছুই জানত না এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত ছিল না তবুও?

১০৩-১০৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন: بَحِیْرَةٍ -‘বাহীরা’ বলা হয় ঐ প্রাণীকে যা প্রতিমার জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে বিধায় দুধ পান করা নিষেধ ছিল। তাই কোন মানুষ তার দুধ পান করত না।

سَا۬ئِبَةٍ -‘সায়েবাহ’বলা হয় ঐ প্রাণীকে যা তাদের দেবদেবীর নামে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ফলে তার ওপর কেউ আরোহন করত না।

وَصِیْلَةٍ -‘ওয়াসিলাহ’বলা হয় ঐ কুমারী উটনীকে যা প্রথম প্রসবে নর বাচ্চা দেয় তারপর দুটি মাদী বাচ্চা প্রসব করে। এটা তাদের মূর্তির নামে ছেড়ে দিত।

حَامٍ -‘হাম’ বলা হয় ঐ ষাঁড় উটকে যার দ্বারা নির্দিষ্ট সংখ্যা পর্যন্ত প্রজননের কাজ করা হয়। নির্দিষ্ট সংখ্যা পর্যন্ত পৌঁছে গেলে দেব-দেবীর নামে ছেড়ে দেয়া হয়, তার ওপর আরোহন করত না এবং কিছু বহনও করা হতো না।

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আমি আমর বিন আমের খুযাঈকে দেখেছি জাহান্নামে তাকে পেটের ওপর ভর দিয়ে টেনে হেঁচড়ে নেয়া হচ্ছে। কারণ সেই সর্বপ্রথম সায়েবার প্রচলন করে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৬২৩, মুসলিম হা: ৫১)

বাহীরাহ, সায়েবাহ, ওয়াসিলাহ ও হাম এসব প্রাণীকে আল্লাহ তা‘আলা নির্ধারণ করে দেননি। বরং নিজেরা তৈরি করে নিয়ে আল্লাহ তা‘আলার ওপর অপবাদ দিয়েছে।

১০৪ নং আয়াতের তাফসীর সূরা নিসার ৬১ নং আয়াত বলা হয়েছে:-

শানে নুযূল:

ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আবূ বারযাতা আল-আসলামী নামে একজন গণক ছিল। তার কাছে ইয়াহূদীগণ যে সকল বিচার নিয়ে আসত সে তার ফায়সালা করত। একদা কিছু মুসলিম তার কাছে বিচার নিয়ে আসে। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়

(أَلَمْ تَرَ إِلَي الَّذِيْنَ يَزْعُمُوْنَ……………… إِلَّآ إِحْسَانًا وَّتَوْفِيْقًا) ।

(লুবানুল নুকূল ফী আসবাবে নুযূল, পৃঃ ৮৬, সহীহ) বিশিষ্ট তাবেয়ী শা’বী (রহঃ) বলেন: জনৈক মুনাফিক ও ইয়াহূদীর মাঝে কোন বিষয়ে বিবাদ ছিল। ইয়াহূদী বলল: আমরা ফায়সালার জন্য মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে যাব। কারণ সে ইয়াহূদী জানে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুষ নেন না। মুনাফিক বলল: আমরা ইয়াহূদীর কাছে যাব। সম্ভব সে ঘুষ নিয়ে আমার পক্ষে ফায়সালা দেবে। তারপর তারা উভয়ে একমত হল যে, তারা জুহায়না গোত্রের এক গণকের কাছে যাবে। তখন এ আয়াত নাযিল হয়। এছাড়াও উমার (রাঃ) যে মুনাফিককে হত্যা করেছেন বলে জানা যায় তার ব্যাপারে নাযিল হয়েছে বলে বর্ণনা রয়েছে। (কিতাবুত তাওহীদ, তাফসীর কুরতুবী ৫/১৯৯)

যারা দাবী করে আল্লাহ তা‘আলা, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কিরামের প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন তার প্রতি ঈমান এনেছে- আল্লাহ তা‘আলা তাদের ঈমানকে নাকচ করে দিয়ে বলেন: তারা ঈমানদার নয়, তারা মুনাফিক। প্রকৃত ঈমানদার হলে তারা কুরআন ও সুন্নাহর বিচার-ফায়সালা প্রতিষ্ঠিত থাকার পরেও অন্য কোন মানব রচিত বিধানের দিকে ধাবিত হত না।

আল্লাহ তা‘আলার কিতাব ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহীহ সুন্নাহ ব্যতীত অন্য কিছুর কাছে বিচার ফায়সালা চাওয়া তাগুতকে মাথা পেতে মেনে নেয়ার শামিল।

অথচ এ তাগুতকে বর্জন করা ওয়াজিব। অন্যথায় প্রকৃত ঈমানদার হওয়া যাবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَقَدْ أُمِرُوْآ أَنْ يَّكْفُرُوْا بِه۪)

তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এ তাগুতের সাথে কুফরী করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(فَمَنْ يَّكْفُرْ بِالطَّاغُوْتِ وَيُؤْمِنْۭ بِاللّٰهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰي)

“সুতরাং যে তাগুতকে অস্বীকার করবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে সে এমন এক মজবুত রশি ধারণ করল।”(সূরা বাকারাহ ২:২৫৬)

ইসলাম বিনষ্টের অন্যতম একটি কারণ হলো: যে ব্যক্তি বিশ্বাস করবে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক প্রদর্শিত পথ ব্যতীত অন্যের প্রদর্শিত পথ অধিক পরিপূর্ণ অথবা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিচার ফায়সালা থেকে অন্যের বিচার ফায়সালা অতি উত্তম, তাঁর বিচার ফায়সালা বাদ দিয়ে অন্যের কাছে বিচার ফায়াসালা চাওয়া বৈধ, তাহলে সে ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে। কেননা এ ব্যক্তি দীনের জরুরী হারাম বিষয়কে হালাল মনে করছে।

এদের কথা হলো তাদের কথার মত, যারা বলে: ব্যভিচার করা বৈধ, কিন্তু আমি তা করি না, অথবা বলে সুদ খাওয়া বৈধ কিন্তু আমি সুদী লেনদেন করি না। এ ব্যক্তিও কাফির হয়ে যাবে। কেননা ব্যভিচার, সুদ ইসলামে হারাম, আপনি তা হালাল মনে করছেন অথচ তা দীনের জরুরী জ্ঞাত হারাম বিষয়। এটা কুফরী কাজ।

অনুরূপভাবে যদি কেউ বলে: মানব রচিত বিধান দ্বারা বিচার ফায়সালা জায়েয, তবে শরয়ী বিধান অধিক উত্তম, আমরা বলব: না; আপনি মানব রচিত বিধান দ্বারা বিচার ফায়াসালা বৈধ করে দিচ্ছেন, এটা কুফরী ও বর্জনীয়। কেননা আপনি দীনের জরুরী জ্ঞাত হারামকে হালাল মনে করছেন। তাই মানব রচিত বিধান দ্বারা বিচার-ফায়সালা করা ও গ্রহণ করা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। যেমন ব্যভিচার, সুদ সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। যে ব্যক্তি বলবে : সুদ, ব্যভিচার হালাল, সে ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে। অনুরূপভাবে যদি বলে : মানব রচিত বিধান দ্বারা বিচার-ফায়াসালা করা বৈধ সে কাফির হয়ে যাবে। যদিও সে বিশ্বাস করে শরয়ী বিচার ফায়াসালা অধিক উত্তম।

তাই যারা মুখে ঈমানের কথা বলে বেড়ায় আর বিচার-ফায়সালার ক্ষেত্রে কুরআন ও সুন্নাহ অগ্রাহ্য করে, সাথে সাথে বলে বর্তমান যুগে কুরআন-সুন্নাহ অকেজো হয়ে গেছে তা দ্বারা বিচার করা সম্ভব নয়, কিংবা তাগুতের ফায়সালাকে কুরআন ও সুন্নাহ সমতুল্য মনে করে, তারা কখনো ঈমানদার থাকতে পারে না। তারা ইসলামের গণ্ডির বাইরে। যতই মুখে ঈমানের কথা বলুক।

এক শ্রেণির মানুষ রয়েছে যাদেরকে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর দিকে ডাকা হলে বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে ইয়াহূদী-খ্রিস্টানদের পরিচয় দিয়ে থাকে।

বরং একজন প্রকৃত ঈমানদারকে যখন কুরআন ও সুুন্নাহর দিকে আহ্বান করা হবে তখন সে তা শুনবে এবং মেনে নেবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِيْنَ إِذَا دُعُوْا إِلَي اللّٰهِ وَرَسُوْلِه۪ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَّقُوْلُوْا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا)

“মু’মিনদের উক্তি তো কেবল এই- যখন তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেবার জন্য আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের দিকে আহ্বান করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা শ্রবণ করলাম ও আনুগত্য করলাম।’ (সূরা নূর ২৪:৫১)

মুনাফিকরা কুরআন ও সুন্নাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার কারণে যখন আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত আযাবে নিপতিত হয় তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে শপথ করে বলে আমরা তো তাদের কাছে গিয়েছিলাম একটি সুরাহা ও সুষ্ঠু সমাধানের জন্য। এরা মুখে যা বলে অন্তরে তা করে না ও ভাবে না।

আল্লাহ তা‘আলা এদের অন্তরের খবর জানেন। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং সদুপদেশ প্রদান করতে বলেছেন।

তাই যারা কুরআন ও সুন্নাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তাদের সাথে মু’মিনরা আন্তরিক কোন সম্পর্ক রাখবে না। তাদেরকে সদুপদেশ ও নসীহত করাই মু’মিনের একমাত্র কর্তব্য হবে।

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. কুরআন ও সুন্নাহ ব্যতীত অন্য কোন মানব রচিত বিধানের নিকট ফায়সালার জন্য যাওয়া শির্ক ও কুফরী।
২. তাগুতকে বর্জন করা ওয়াজিব।
৩. কেবল মুনাফিকরাই আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করতে পারে।
৪. মু’মিনদের উচিত কুরআন ও সুন্নাহকে মেনে চলা।
৫. কোন মত-বিরোধপূর্ণ বিষয়ের ফায়সালার ক্ষেত্রে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর দিকে আহ্বান করার পরে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া মুনাফিকদের পরিচয়।

অতএব আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা শরীয়তসিদ্ধ করে দেননি তা তাদের নামে শরীয়তের ভেতরে ইবাদতের নামে চালু করে দেয়া বড় ধরনের অপরাধ যা ইয়াহূদীদের স্বভাব।

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. ইবাদতের নামে দীনের মধ্যে নতুন কিছু তৈরি করে নেয়া হারাম।
২. দীনে নতুন কিছু তৈরি করলে আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি অপবাদ দেয়া হয়।
৩. বাপ-দাদার অন্ধ অনুসরণ বাদ দিয়ে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর অনুসরণ করা আবশ্যক।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Al Mayadah
Verse:- 103-104
تَعَالَوْاْ إِلَى مَا أَنزَلَ اللّهُ وَإِلَى الرَّسُول

“Come to what Allah has revealed and to the Messenger.”

The Meaning of Bahirah, Sa’ibah, Wasilah and Ham

Allah says;

مَا جَعَلَ اللّهُ مِن بَحِيرَةٍ وَلَا سَأيِبَةٍ وَلَا وَصِيلَةٍ وَلَا حَامٍ

Allah has not instituted things like Bahirah or a Sa’ibah or a Wasilah or a Ham.

Al-Bukhari recorded that Sa`id bin Al-Musayyib said,

“The Bahirah is a female camel whose milk was spared for the idols and no one was allowed to milk it.

The Sa’ibah is a female camel let loose for free pasture for the idols, and nothing was allowed to be carried on it.

Abu Hurayrah said that the Messenger of Allah said,

رَأَيْتُ عَمْرَو بْنَ عَامِرٍ الْخُزَاعِيَّ يَجُرُّ قُصْبَهُ فِي النَّارِ وَكَانَ أَوَّلَ مَنْ سَيَّبَ السَّوَايِب

I saw `Amr bin Amir Al-Khuza`i pulling his intestines behind him in the Fire, and he was the first to start the practice of Sa’ibah.

As for the Wasilah, it is a female camel set free for the idols, because it had given birth to a she-camel in its first delivery and then another she-camel at its second delivery. They used to set such camel free if she gave birth to two females without a male between them.

As for the Ham, it is a male camel which would be freed from work for the idols, after it had finished a number of copulations assigned for it. The male camel freed from work in this case is called a Hami.”

Muslim and An-Nasa’i recorded this Hadith.

Imam Ahmad recorded that Abdullah bin Mas`ud said that the Prophet said,

إِنَّ أَوَّلَ مَنْ سَيَّبَ السَّوَايِبَ وَعَبَدَ الاَْصْنَامَ أَبُو خُزَاعَةَ عَمْرُو بْنُ عَامِرٍ وَإِنِّي رَأَيْتُهُ يَجُرُّ أَمْعَاءَهُ فِي النَّار

The first to start the practice of Sa’ibah and worshipping idols was Abu Khuza`ah, `Amr bin Amir. I saw him pulling his intestines behind him in the Fire.

The `Amr mentioned in the above Hadith is the son of Luhay bin Qam`ah, one of the chiefs of the tribe of Khuza`ah who were the caretakers of the House of Allah after the tribe of Jurhum, (and before the Prophet’s tribe, Quraysh). He was the first to change the religion of Ibrahim (Al-Khalil in Makkah) bringing idol worshipping to the area of Hijaz (Western Arabia). He also called the foolish people to worship idols and offer sacrifices to them and started these ignorant rituals concerning the animals as well as other rituals of Jahiliyyah.

Allah said in Surah Al-An`am,

وَجَعَلُواْ لِلَّهِ مِمَّا ذَرَأَ مِنَ الْحَرْثِ وَالاٌّنْعَامِ نَصِيباً

And they assign to Allah a share of the tilth and cattle which He has created… (6:136)

As for the Bahirah, Ali bin Abi Talhah said that Ibn Abbas said,

“It is the female camel that has given delivery five times. After that, they looked at the fifth delivery, if it were a male, they would slaughter it and give it to the men only and not the women. If it were a female, they would cut off its ears and proclaim, `This is a Bahirah (no one is allowed to milk it).”‘

As-Suddi and others mentioned a similar statement.

As for the Sa’ibah, Mujahid said that;

it is for sheep, and mentioned a similar meaning as for Bahirah.

He said that it delivers six females and then a male, female or two males, and that they then would slaughter it (the newly born sheep) and feed its meat to the men, but not to the woman.

Muhammad bin Ishaq said that;

the Sa’ibah is the female camel that delivers ten females, without giving birth to a single male between them. They would then set it free and no one was allowed to ride it, cut its wool or milk it, except for a guest.

Abu Rawq said,

“The Sa’ibah was made as such when one goes out for some of his affairs and succeeds in whatever he intended to do. So he would designate a Sa’ibah from his property, a female camel or another type, and would set it free for the idols (in appreciation for his success). Then, whatever this camel gave birth to was set free for the idols too.”

As-Suddi said,

“When one’s affair was successful, or if he was cured from an illness, or if his wealth increased, he would set some of his wealth free for the idols. Those who would try to acquire any of the Sa’ibah property were punished in this world.”

As for the Wasilah, Ali bin Abi Talhah said that Ibn Abbas said,

“It is the sheep that gives birth seven times, if she gives birth to a male or a female stillborn at its seventh delivery, the men, but not the women, would eat from it. If she gave birth to a female, or a female and a male, they would set them free, proclaiming (about the male in this case), His sister Wasalat (literally, `connected him to being forbidden on us’).”

Ibn Abi Hatim recorded this statement.

Abdur-Razzaq narrated that Ma`mar said that Az-Zuhri said that Sa`id bin Al-Musayyib said that,
وَلَا وَصِيلَةٍ
(Or a Wasilah),

“It is the female camel that gives delivery to a female and then another female at its second delivery. They would call such a camel a Wasilah, proclaiming that she has Wasalat (connected) between two females without giving birth to a male between them. So they used to cut off the ears of the Wasilah and let it roam free to pasture for their idols.”

A similar explanation was reported from Imam Malik bin Anas.

Muhammad bin Ishaq said,

“The Wasilah sheep is the ewe that gives birth to ten females in five deliveries, giving birth to two females at each delivery. This sheep would be called Wasilah and would be set free. Whatever this sheep delivers afterwards, male or female, would be given to the men, but not the women, but if it delivers a stillborn, men and women would share it!”

As for the Ham, Al-Awfi said that Ibn Abbas said,

“If a man’s camel performs ten copulations, they would call him a Ham, `So set him free.,”

Similar was reported from Abu Rawq and Qatadah.

Ali bin Abi Talhah said that Ibn Abbas said,

“The Ham is the male camel whose offspring gave birth to their own offspring; they would then proclaim, `This camel has Hama (protected) its back.’ Therefore, they would not carry anything on this male camel, cut his wool, prevent him from grazing wherever he likes or drinking from any pool, even if the pool did not belong to its owner.”

Ibn Wahb said,

“I heard Malik saying, `As for the Ham, it is the male camel who is assigned a certain number of copulations, and when having finished what was assigned to him, would have peacock feathers placed on him and be set free.”‘

Other opinions were also mentioned to explain this Ayah.

There is a Hadith on this subject that Ibn Abi Hatim collected from Abu Ishaq As-Subay`i from Al-Ahwas Al-Jushami from his father Malik bin Nadlah who said,

“I came to the Prophet wearing old clothes. So he said to me,

هَلْ لَكَ مِنْ مَالٍ

Do you have any property?

I said, `Yes.’

He asked,

مِنْ أَيِّ الْمَالِ

What type?

I said, `All types; camels, sheep, horses and slaves.’

He said,

فَإِذَا اتَاكَ اللهُ مَالاًإ فَلْيُرَ عَلَيْك

If Allah gives you wealth, then let it show on you.

He then asked,

تُنْتِجُ إِبِلُكَ وَافِيَةً اذَانُهَا

Do your camels deliver calves that have full ears?

I said, `Yes, and do camels give birth but to whole calves.’

He said,

فَلَعَلَّكَ تَأْخُذُ الْمُوسَى فَتَقْطَعَ اذَانَ طَايِفَةٍ مِنْهَا وَتَقُولَ هَذِهِ بَحِيَرةٌ تَشُقَّ اذَانَ طَايِفَةٍ مِنْهَا وَتَقُولَ هَذِهِ حُرِّم

Do you take the knife and cut off the ears of some of them saying, `This is a Bahirah,’ and tear the ears of some of them and proclaim, `This is Sacred?’

I said, `Yes.’

He said,

فَلَ تَفْعَلْ إِنَّ كُلَّ مَا اتَاكَ اللهُ لَكَ حِل

Then do not do that, for all the wealth that Allah has given you is allowed for you.

Then he said;

مَا جَعَلَ اللّهُ مِن بَحِيرَةٍ وَلَا سَأيِبَةٍ وَلَا وَصِيلَةٍ وَلَا حَامٍ

Allah has not instituted things like Bahirah or a Sa’ibah or a Wasilah or a Ham.

As for the Bahirah, it is the animal whose ears were cut, one would not allow his wife, daughters, or any of his household to benefit from its wool, hair or milk. But, if it died, they would share it.

As for the Sa’ibah, they used to set it free for their idols and announce this fact in the vicinity of the idols.

As for the Wasilah, it is the sheep that gives birth to six offspring. When she delivered for the seventh time, they would cut its ears and horns, saying, `it has Wasalat (connected deliveries),’ and they would not slaughter it, hit it or prevent it from drinking from any pool.”

This Hadith was narrated with the addition of the explanation of these words in it.

In another narration for this Hadith from Abu Ishaq from Abu Al-Ahwas, `Awf bin Malik used his own words (i.e., he explained these words not as a part of the Hadith itself) and this is more sound.

Imam Ahmad recorded this Hadith from Sufyan bin Uyaynah, from Abu Az-Za`ra’ `Amr bin `Amr, from his uncle Abu Al-Ahwas `Awf bin Malik bin Nadlah from his father, Malik bin Nadlah.

This narration also does not contain the explanation of Bahirah, Ham etc., that is added to the Hadith above, and Allah knows best.

Allah’s statement,

وَلَـكِنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ يَفْتَرُونَ عَلَى اللّهِ الْكَذِبَ وَأَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ

But those who disbelieve invent lies against Allah, and most of them have no understanding.

means, Allah did not legislate these invented rituals and He does not consider them acts of obedience. Rather, it is the idolators who made them into rituals and acts of worship that they used to draw near to Allah. But they did not and will not help them to draw near to Him, rather, these innovations will only harm them

وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْاْ إِلَى مَا أَنزَلَ اللّهُ وَإِلَى الرَّسُولِ قَالُواْ حَسْبُنَا مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ ابَاءنَا

And when it is said to them:”Come to what Allah has revealed and to the Messenger.” They say:”Enough for us is that which we found our fathers following,”

meaning, if they are called to Allah’s religion, Law and commandments and to avoiding what He prohibited, they say, `The ways and practices that we found our fathers and forefathers following are good enough for us. `

Allah said,

أَوَلَوْ كَانَ ابَاوُهُمْ لاأَ يَعْلَمُونَ شَيْيًا وَلاأَ يَهْتَدُونَ

even though their fathers had no knowledge whatsoever and no guidance.

That is, even though their fathers did not understand or recognize the truth or find its way. Therefore, who would follow their forefathers, except those who are even more ignorant and misguided than they wer.

তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-

১০৩-১০৪ নং আয়াতের তাফসীর:

ইমাম বুখারী (রঃ) ইবনে শিহাব (রঃ) ও সাঈদ ইবনে মুসাইয়াব (রঃ)-এর মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন যে, বাহীরা ঐ জন্তুকে বলা হতো যার দুধ মানুষ দোহন করতো না এবং বলতো যে, এটা প্রতিমার নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। ওর দুধ কেউ পানও করতো না। সায়েবা ঐ জন্তুকে বলা হতো যাকে মূর্তির নামে ছেড়ে দেয়া হতো। না ওর উপর কোন বোঝা চাপানো হতো, না ওকে সোয়ারী রূপে ব্যবহার করা হতো। হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- “আমি আমর ইবনে খুযাঈকে দেখেছি যে, তাকে পেটের ভরে টেনে হেঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। সেই সর্বপ্রথম জন্তুকে মূর্তির নামে ছেড়ে দেয়ার প্রথা চালু করেছিল।” “ওয়াসিলা ঐ উস্ত্রীকে বলা হতো যা প্রথমবার একটা নর বাচ্চা প্রসব করতো, তারপর পর্যায়ক্রমে দু’টো মাদী বাচ্চা প্রসব করতো। ঐ ধরনের উন্ত্রীকে প্রতিমার নামে ছেড়ে দেয়া হতো। আর হামী’ ঐ বঁড় উটকে বলা হতো যার নসলে কয়েকটা বাচ্চা জন্মলাভ করার পর যখন ওর নসল খুব বৃদ্ধি পেতো তখন ওর দ্বারা বোঝা বহনের কাজ করা হতো না এবং ওকে সওয়ারী হিসেবেও ব্যবহার করা হতো না, বরং মূর্তির নামে ছেড়ে দেয়া হতো। আর ওর নাম তারা হামী’ রাখতো।

ইমাম বুখারী (রঃ) যুহরী (রঃ), উরওয়া (রঃ) এবং হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর মাধ্যম দিয়ে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- “আমি জাহান্নামকে দেখেছি যে, এক আগুন অন্য আগুনকে খেতে আছে, আর আমরকে ওর মধ্যে হেঁচড়িয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেই সর্বপ্রথম সায়েবা’র প্রথা চালু করেছিল।” ইমাম আহমাদ (রঃ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম সায়েবার প্রথা চালু করেছিল এবং প্রতিমা পূজায় লিপ্ত হয়েছিল। সে হচ্ছে আবু খুযাআ আমর ইবনে আমির। আমি তাকে পেটের ভরে হেঁচড়িয়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হতে দেখেছি।” আবদুর রাযযাক (রঃ) যায়েদ ইবনে আসলাম (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “সর্বপ্রথম সায়েবার প্রথা কে চালু করেছিল এবং হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মকে পরিবর্তন করেছিল তা আমি জানি।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! সে কে? তিনি উত্তরে বললেন :“সে ছিল বান্ কাব গোত্রের আমর ইবনে লুহাই। আমি দেখেছি যে, তাকে টেনে হেঁচড়ে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং তার দুর্গন্ধ অনান্য জাহান্নামবাসীদেরকে কষ্ট দিচ্ছে।” ‘বাহীরা বিদআতের আবিষ্কারক কে তাও আমি জানি।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! সে কে?” তিনি জবাব দিলেনঃ সে ছিল বান্ মুদলাজ গোত্রের একটি লোক। তার দু’টি উষ্ট্রী ছিল। সে ঐ উষ্ট্রী দু’টির কান কেটে দিয়েছিল। প্রথমে সে ঐ উন্ত্রী দু’টির দুগ্ধ পান নিজের উপর হারাম করেছিল। কিন্তু কিছুদিন পর দুধ পান করতে শুরু করে। আমি তাকে জাহান্নামে দেখেছি। উস্ত্রী দু’টি তাকে তাদের মুখ দ্বারা কর্তন করতে রয়েছে এবং খুর দ্বারা দলিত করতে আছে। সেই হচ্ছে লুহাই ইবনে কামআর পুত্র। সে খুযাআর নেতৃস্থানীয় লোকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। জুরহুম গোত্রের পরে কা’বার মুতাওয়াল্লী তারাই হয়েছিল। তারাই সর্বপ্রথম দ্বীনে ইবরাহীম (আঃ)-এর পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। হেজাযে তারাই প্রতিমাপূজার সূচনা করেছিল। জনগণকে প্রতিমাপূজার দিকে ও ওদের নৈকট্য লাভের দিকে আহ্বানকারী তারাই ছিল। জন্তুসমূহের ব্যাপারে অজ্ঞতার যুগে সর্বপ্রথম হেজাযে বিদআতের প্রচলনকারী ছিল তারাই। যেমন মহান আল্লাহ সূরায়ে আনআমে এর বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন (আরবী) অর্থাৎ “ক্ষেতে উৎপাদিত শস্যের বা চতুষ্পদ জন্তুর মাত্র একটা অংশ তারা আল্লাহর নামে মনে করতো এবং অবশিষ্টগুলো প্রতিমার নামে মনে করতো।” (৬:১৩৭)।

‘বাহীরা সম্পর্কে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, ওটা ঐ উষ্ট্ৰী যে পাচবার বাচ্চা প্রসব করেছে। পঞ্চমবার সে নর বাচ্চা প্রসব করলে তারা তাকে যবেহ করতো। অতঃপর পুরুষ লোকেরা ওর গোশত ভক্ষণ করতো, কিন্তু স্ত্রীলোকেরা ওর গোশত খেতো না। আর ওটা মাদী বাচ্চা প্রসব করলে তারা ওর কান কেটে নিতে এবং বলতো, “এটা হচ্ছে বাহীরা।” সুদ্দী (রঃ) এবং অন্যান্যগণ প্রায় এরূপই বর্ণনা করেছেন। সায়েবা’ সম্পর্কে মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, ওটা ঐ প্রকারের বকরী যে প্রকারের সংজ্ঞা বাহীরা” সম্পর্কে দেয়া হয়েছে। পার্থক্য শুধু এই যে, যখন ওটা ছ’বার বাচ্চা প্রসব করতো তখন পর্যন্ত ওর অবস্থা একইরূপ থাকতো। অতঃপর ওটা একটি বা দুটি নর বাচ্চা প্রসব করতো তখন তারা ওকে যবেহ করতো এবং পুরুষ লোকেরাই শুধু ওর গোশত ভক্ষণ করতো, স্ত্রীলোকেরা ভক্ষণ করতো না। মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (রঃ) বলেন যে, ‘সায়েবা’ ঐ উস্ত্রীকে বলা হতো যে, যখন সে পর্যায়ক্রমে দশটি মাদী বাচ্চা প্রসব করতো তখন তাকে মূর্তির নামে ছেড়ে দেয়া হতো। তাকে সওয়ারী রূপে ব্যবহার করা হতো না, তার নোম কাটা হতো না এবং তার দুধও দোহন করা হতো না। কিন্তু অতিথি আসলে তাকে ঐ উষ্ট্রীর দুগ্ধ পান করানো যেতো। আবু রাওক (রঃ) বলেন যে, ‘সায়েবা ঐ উষ্ট্র বা ছাগল ইত্যাদিকে বলা হতো যে, মানুষ যখন কোন কাজে বের হতো এবং ঐ কাজ সমাধা হয়ে যেতো তখন ঐ জন্তুকে সায়েবা’ বানানো হতো এবং মূর্তির নামে উৎসর্গ করা হতো, ওর বাচ্চাগুলোকে মূর্তির নামে উৎসর্গীকৃত মনে করা হতো। সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, কোন লোক যখন কোন উদ্দেশ্য সাধনের জন্যে বের হতো, কিংবা রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করতো, অথবা তার মালধন অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেতো, তখন সে নিজের কিছু মাল প্রতিমার নামে উৎসর্গ করতো। এই মালে বা জন্তুতে কেউ কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তাকে কঠিন শাস্তি দেয়া হতো।

‘ওয়াসীলা সম্পর্কে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, ওটা ছিল ঐ ছাগী, যে সাতবার বাচ্চা প্রসব করতো এবং সপ্তমবারে সে মৃত নর বাচ্চা প্রসব করলে ঐ বকরীর গোশতে শুধু পুরুষেরাই শরীক হতে পারতো, স্ত্রীলোকেরা শরীক হতে পারতো না। কিন্তু সপ্তমবারে ঐ বকরীটি মাদী বাচ্চা প্রসব করলে ওকে তারা জীবিতাবস্থাতেই রাখতো। আর একই সাথে নর ও মাদী বাচ্চা প্রসব করলে দু’টোকেই জীবিতাবস্থায় ছেড়ে দেয়া হতো এবং তারা বলতো-মাদীটি নরটিকেও ওয়াসীলা বানিয়ে দিয়েছে। এখন এটাও আমাদের জন্যে হারাম। মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (রঃ) বলেন যে, ‘ওয়াসীলা’ ঐ বকরীকে বলা হতো যা পাঁচবারে দশটি মাদী বাচ্চা প্রসব করতে অর্থাৎ প্রতিবার দু’টি করে মাদী বাচ্চা প্রসব করতো। প্রতিবারের বাচ্চাদ্বয়কে ‘ওয়াসীলা’ রূপে ছেড়ে দেয়া হতো। এরপর নর অথবা মাদী যে বাচ্চাই প্রসব করুক না কেন, শুধু পুরুষদেরকেই ওর হকদার মনে করা হতো, স্ত্রীদেরকে নয়। কিন্তু মৃত বাচ্চা প্রসব করলে পুরুষলোক ও স্ত্রীলোক সবাই অংশীদার হতো।

‘হামী’ সম্পর্কে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, কোন নরের মাধ্যমে দশটি বাচ্চা জন্মগ্রহণ করলে তাকেও প্রতিমার নামে ছেড়ে দেয়া হতো এবং ওটাকেই ‘হামী’ বলা হতো। ওর উপর বোঝা চাপানো হতো না এবং ওর লোম কাটা হতো না। যে কোন লোকের ক্ষেতের ফসল সে খেতে পারতো এবং যে কোন প্রস্রবণ থেকে ঐ জন্তুটি পানি পান করতে পারতো। কেউই ওকে বাধা দিতো না। এ আয়াতের তাফসীরে এগুলো ছাড়া অন্য কিছুও বলা হয়েছে। মহান আল্লাহর- (আরবী) এ কথার ভাবার্থ এই যে, কাফিররা আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে থাকে। আল্লাহ এগুলোকে শরীয়তের কাজরূপে নির্ধারণ করেননি এবং এগুলো তার নৈকট্য লাভের উপায়ও নয়। এটা মুশরিকদের আল্লাহ পাকের উপর মিথ্যারোপ ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা নিজেরাই ঐগুলোকে শরীয়তের পালনীয় কাজ বলে বরণ করে নিয়েছে। আর ওটাকেই তারা আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম মনে করেছে। অথচ ওটা কখনও তার নৈকট্য লাভের মাধ্যম হতে পারে। বরং তাদেরকে তাদের এ কৃতকর্মের শাস্তি ভোগ করতে হবে।

(আরবী) অর্থাৎ যখন তাদেরকে বলা হয়-তোমরা আল্লাহর অহীর দিকে ও তাঁর রাসূলের দিকে এসো, তখন তারা বলে-আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের রীতি নীতির উপরই প্রতিষ্ঠিত রয়েছি, এটাই আমাদের জন্যে যথেষ্ট। তারা কি এটা বুঝে না যে, তাদের পূর্বপুরুষরাও বাতিল ও মিথ্যা রীতিনীতির উপর থাকতে পারে? তারাও হক ও সত্য থেকে দূরে ও হিদায়াত থেকে বঞ্চিত থাকতে পারে? সুতরাং কিরূপে তোমরা তাদের অনুসরণ করতে পার? সত্য ব্যাপার এটাই যে, একমাত্র ভ্রান্ত ও মূর্খ লোকেরাই এরূপ মন্তব্য করতে পারে।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

টিকা:১১৮) আমাদের দেশে যেমন গরু, ষাঁড় ও ছাগল আল্লাহর বা ভগবানের নামে অথবা কোন দেবদেবী, ঠাকুর, বা পীর-আউলিয়ার নামে ছেড়ে দেয়া হয়, তাদেরকে ভারবহন বা অন্য কোন কাজে লাগানো হয় না এবং তাদেরকে যবেহ করা বা তাদের সাহায্যে কোন প্রকার ফায়দা হাসিল করা হারাম মনে করা হয়, ঠিক তেমনি জাহেলী যুগে আরববাসীরাও পুণ্য কাজের নিদর্শন হিসেবে বিভিন্ন পশু ছেড়ে দিতো। এ ধরনের ছেড়ে দেয়া পশুদের আলাদা আলাদা নামে আখ্যায়িত করা হতো। যেমনঃ

বাহীরাঃ এমন ধরনের উষ্ট্রীকে বলা হতো, যে পাঁচবার শাবক প্রসব করেছে এবং শেষবারের শাবকটি হয়েছে ‘নর’। এ উষ্ট্রীয় কান চিরে দিয়ে তাকে স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে ছেড়ে দেয়া হতো। অতঃপর কেউ কখনো বাহন হিসেবে ব্যবহার করতো না। কেউ তার দুধও পান করতো না। কেউ তাকে যবেহও করতো না। এমনকি তার গায়ের পশমও কেউ কাটতো না। সে ইচ্ছেমতো সে কোন ক্ষেতে চরে বেড়াতো, যে কোন চারণভূমিতে ঘাস খেতো এবং যে কোন ঘাটে গিয়ে পানি পান করতো।

সায়েবাঃ এমন উট বা উষ্ট্রীয় বলা হয়, যাকে কোন মানত পুরো হবার, কোন রোগ থেকে মুক্তি লাভ করার অথবা কোন বিপদ থেকে উদ্ধার লাভ করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের নিদর্শন স্বরূপ স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেয়া হতো। তাছাড়া সায়েবা এমন উটনীকেও বলা হতো, যে দশবার বাচ্চা প্রসব করেছে এবং প্রত্যেকটি বাচ্চা হয়েছে স্ত্রী জাতীয়। তাকেও স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেয়া হতো।

অসীলাঃ ছাগলের প্রথম বাচ্চাটা ‘পাঠা’ হলে তাকে উপাস্য দেবতাদের নামে যবেহ করে দেয়া হতো। আর যদি প্রথম বাচ্চাটা হতো ‘পাঁঠী’ তাহলে তাকে নিজের জন্য রেখে দেয়া হতো। কিন্তু একই সঙ্গে যদি পাঁঠা ও পাঁঠী বাচ্চা হতো তাহলে পাঁঠাটিকে যবেহ না করে দেবতাদের নামে ছেড়ে দেয়া হতো এবং তাকে বলা হতো অসীলা।

হামঃ কোন উটের পৌত্র যদি সওয়ারী বহন করার যোগ্যতা অর্জন করতো তাহলে বুড়ো উটটিকে স্বাধীন ছেড়ে দেয়া হতো। তাছাড়া কোন উটের ঔরসে দশটি সন্তান জন্ম নেবার পর তাকেও স্বাধীন করে দেয়া হতো।

Leave a Reply