(Book# 114/٢٣٥)-৪৩৭ www.motaher21.net সুরা: আল-আনয়াম ৩৭-৩৯ নং আয়াত:- وَقَالُواْ لَوْلَا نُزِّلَ عَلَيْهِ ايَةٌ مِّن رَّبِّهِ তারা বলেঃ রবের পক্ষ হতে তার প্রতি কোন নিদর্শন কেন অবতীর্ণ করা হলনা? And they said:”Why is not a sign sent down to him from his Lord!”

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٢٣٥)-৪৩৭
www.motaher21.net
সুরা: আল-আনয়াম
৩৭-৩৯ নং আয়াত:-
وَقَالُواْ لَوْلَا نُزِّلَ عَلَيْهِ ايَةٌ مِّن رَّبِّهِ
তারা বলেঃ রবের পক্ষ হতে তার প্রতি কোন নিদর্শন কেন অবতীর্ণ করা হলনা?
And they said:”Why is not a sign sent down to him from his Lord!”

وَ قَالُوۡا لَوۡ لَا نُزِّلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ؕ قُلۡ اِنَّ اللّٰہَ قَادِرٌ عَلٰۤی اَنۡ یُّنَزِّلَ اٰیَۃً وَّ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ ہُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۷﴾

তারা বলেঃ রবের পক্ষ হতে তার প্রতি কোন নিদর্শন কেন অবতীর্ণ করা হলনা? তুমি বলে দাওঃ নিদর্শন অবতীর্ণ করায় আল্লাহ নিঃসন্দেহে পূর্ণ ক্ষমতাবান, কিন্তু অধিকাংশ লোকই তা জ্ঞাত নয়।
وَ مَا مِنۡ دَآبَّۃٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا طٰٓئِرٍ یَّطِیۡرُ بِجَنَاحَیۡہِ اِلَّاۤ اُمَمٌ اَمۡثَالُکُمۡ ؕ مَا فَرَّطۡنَا فِی الۡکِتٰبِ مِنۡ شَیۡءٍ ثُمَّ اِلٰی رَبِّہِمۡ یُحۡشَرُوۡنَ ﴿۳۸﴾

ভূ-পৃষ্ঠে চলাচলকারী প্রতিটি জীব এবং বায়ুমন্ডলে ডানার সাহায্যে উড়ন্ত প্রতিটি পাখীই তোমাদের ন্যায় এক একটি জাতি, আমি কিতাবে কোন বিষয়ই লিপিবদ্ধ করতে বাদ রাখিনি। অতঃপর তাদের সকলকে তাদের রবের কাছে সমবেত করা হবে।
وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا صُمٌّ وَّ بُکۡمٌ فِی الظُّلُمٰتِ ؕ مَنۡ یَّشَاِ اللّٰہُ یُضۡلِلۡہُ ؕ وَ مَنۡ یَّشَاۡ یَجۡعَلۡہُ عَلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۳۹﴾

আর যারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা মনে করে তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত মূক ও বধির, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা হিদায়াতের সরল সহজ পথের সন্ধান দেন।

৩৭-৩৯ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-

কাফির মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সমস্যায় ফেলার জন্য বলে: কেন তার প্রতি কোন নিদর্শন নাযিল করা হয় না?

আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জবাব শিখিয়ে দিচ্ছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা নিদর্শন প্রেরণে সক্ষম কিন্তু চাওয়ার সাথে সাথে তিনি তা দেন না কারণ চাওয়ার সাথে সাথে দেয়ার পর ঈমান না আনলে আল্লাহ তা‘আলা তৎক্ষণাৎ শাস্তি প্রদান করবেন যেমন পূর্ববর্তী উম্মাতের ক্ষেত্রে ঘটেছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَمَا مَنَعَنَآ أَنْ نُّرْسِلَ بِالْاٰيٰتِ إِلَّآ أَنْ كَذَّبَ بِهَا الْأَوَّلُوْنَ ط وَاٰتَيْنَا ثَمُوْدَ النَّاقَةَ مُبْصِرَةً فَظَلَمُوْا بِهَا وَمَا نُرْسِلُ بِالْاٰياتِ إِلَّا تَخْوِيْفًا)‏

“পূর্ববর্তীগণের নিদর্শন অস্বীকার করাই আমাকে নিদর্শন প্রেরণ করা হতে বিরত রাখে। আমি নিদর্শনস্বরূপ সামূদ জাতিকে উষ্ট্রী দিয়েছিলাম, অতঃপর তারা তার প্রতি জুলুম করেছিল। আমি কেবল ভীতি প্রদর্শনের জন্যই নিদর্শন প্রেরণ করি।”(সূরা ইসরা ১৭:৫৯)

(اُمَمٌ اَمْثَالُکُمْ)

‘তোমাদের মত একটি জাতি’- বিশিষ্ট তাবেয়ী মুজাহিদ (রহঃ) বলেন: এসব জীবজন্তু ও পাখির কতকগুলো প্রকার রয়েছে যেগুলোর নাম জানা যায়। কাতাদাহ (রহঃ) বলেন: পাখি একটি জাতি, মানুষ একটি জাতি, জীন একটি জাতি।

সুদ্দী (রহঃ) বলেন:

(أُمَمٌ أَمْثَالُكُمْ)

অর্থাৎ তোমাদের মত সৃষ্টি জীব। (ইবনে কাসীর, ৩/২৮৭, ইবনু জারীর. ১১/১৩-১৪)
(مَا فَرَّطْنَا فِي الْكِتٰبِ مِنْ شَيْءٍ)

‘কিতাবে (লাওহে মাহফূজে) কোন কিছুই আমি বাদ দেইনি।’অর্থাৎ কিতাবে আমি কোন জিনিস উল্লেখ করতে ছাড়িনি- এখানে কিতাব দ্বারা উদ্দেশ্য লাওহে মাহফূজ। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃ. ১৩২)

ইমাম ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত সৃষ্টি জীবের খবর রাখেন। কাউকে আহার দান করতে এবং পরিচর্যা করতে তিনি ভুলে যান না, জলচর হোক বা স্থলচর হোক।

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَمَا مِنْ دَا۬بَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَي اللّٰهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا ط كُلٌّ فِيْ كِتٰبٍ مُّبِيْنٍ) ‏

“ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব একমাত্র আল্লাহরই। তিনি তাদের স্থায়ী ও অস্থায়ী অবস্থিতি সম্বন্ধে অবহিত; সুস্পষ্ট কিতাবে (লাওহে মাহফূজ) সব কিছুই আছে।”(সূরা হূদ ১১:৬)

অতঃপর সব মাখলুক কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার কাছে উপস্থিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَإِذَا الْوُحُوْشُ حُشِرَتْ) ‏

“যখন বন্য পশুগুলোকে একত্রিত করা হবে।”(সূরা তাকবীর ৮১:৫)

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: শিংবিশিষ্ট কোন ছাগল যদি শিংহীন কোন ছাগলের ওপর জুলুম করে তাহলে কিয়ামতের দিন শিংবিহীন ছাগল শিংবিশিষ্ট ছাগল থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করবে। (সহীহ মুসলিম হা: ১৯৯৭)

(صُمُّ وَبُكْمٌ) ‘বধির ও বোবা’এ সম্পর্কে সূরা বাক্বারার ১৮ নং আয়াতে অলোচনা হয়েছে।

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. আল্লাহ তা‘আলার কাছে কোন নিদর্শন চাওয়া হলে তা বিলম্ব করে দেয়ার পিছনে হিকমত রয়েছে।
২. জমিনে অসংখ্য উম্মাত বা জাতি রয়েছে।
৩. আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দেন। আবার যাকে ইচ্ছা গুমরাহ করেন। তবে হিদায়াত পেতে হলে আল্লাহ তা‘আলার কাছে হিদায়াত চাইতে হবে এবং সেই পথে চলতে হবে।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Verses :- 37-39
وَقَالُواْ لَوْلَا نُزِّلَ عَلَيْهِ ايَةٌ مِّن رَّبِّهِ

And they said:”Why is not a sign sent down to him from his Lord!”

The Idolators Ask for a Miracle

Allah says;

وَقَالُواْ لَوْلَا نُزِّلَ عَلَيْهِ ايَةٌ مِّن رَّبِّهِ

And they said:”Why is not a sign sent down to him from his Lord!”

Allah states that the idolators used to proclaim, “Why does not (Muhammad) bring an Ayah from his Lord,” meaning, a miracle of their choice!

They would sometimes say,

لَن نُّوْمِنَ لَكَ حَتَّى تَفْجُرَ لَنَا مِنَ الاٌّرْضِ يَنْبُوعًا

“We shall not believe in you, until you cause a spring to gush forth from the ground for us.” (17:90)

قُلْ إِنَّ اللّهَ قَادِرٌ عَلَى أَن يُنَزِّلٍ ايَةً وَلَـكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ

Say:”Allah is certainly able to send down a sign, but most of them know not.”

Certainly, Allah is able to send an Ayah (sign). But, He decided out of His wisdom to delay that, because if He sends an Ayah of their liking and they still do not believe, this will hasten their punishment as with the previous nations.

Allah said in other Ayat,

وَمَا مَنَعَنَأ أَن نُّرْسِلَ بِالاٌّيَـتِ إِلاَّ أَن كَذَّبَ بِهَا الاٌّوَّلُونَ وَءَاتَيْنَا ثَمُودَ النَّاقَةَ مُبْصِرَةً فَظَلَمُواْ بِهَا وَمَا نُرْسِلُ بِالاٌّيَـتِ إِلاَّ تَخْوِيفًا

And nothing stops Us from sending the Ayat but that the people of old denied them. And We sent the she-camel to Thamud as a clear sign, but they did her wrong. And We sent not the signs except to warn, and to make them afraid (of destruction). (17:59)

and,

إِن نَّشَأْ نُنَزِّلْ عَلَيْهِمْ مِّنَ السَّمَأءِ ءَايَةً فَظَلَّتْ أَعْنَـقُهُمْ لَهَا خَـضِعِينَ

If We will, We could send down to them from the heaven a sign, to which they would bend their necks in humility. (26:4)

The Meaning of Umam

Allah said

وَمَا مِن دَابَّةٍ فِي الَارْضِ وَلَا طَايِرٍ يَطِيرُ بِجَنَاحَيْهِ إِلاَّ أُمَمٌ أَمْثَالُكُم

There is not a moving (living) creature on earth, nor a bird that flies with its two wings, but are Umam like you.

Mujahid commented,

“Meaning, various species that have distinct names.”

Qatadah said,

“Birds are an Ummah, humans are an Ummah and the Jinns are an Ummah.”

As-Suddi said that,
إِلاَّ أُمَمٌ أَمْثَالُكُم
(but are Umam like you) means,

creations (or species).

Allah’s statement,

مَّا فَرَّطْنَا فِي الكِتَابِ مِن شَيْءٍ

We have neglected nothing in the Book,

means, the knowledge about all things is with Allah, and He never forgets any of His creatures, nor their sustenance, nor their affairs, whether these creatures live in the sea or on land.

In another Ayah, Allah said;

وَمَا مِن دَابَّةٍ فِي الاٌّرْضِ إِلاَّ عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا كُلٌّ فِى كِتَابٍ مُّبِينٍ

And no moving creature is there on earth but its provision is due from Allah. And He knows its dwelling place and its deposit (in the uterus, grave, etc.). All is in a Clear Book. (11:6)

there is a record of their names, numbers, movements, and lack of movement.

In another Ayah, Allah said;

وَكَأَيِّن مِّن دَابَّةٍ لاَّ تَحْمِلُ رِزْقَهَا اللَّهُ يَرْزُقُهَا وَإِيَّاكُمْ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

And so many a moving creature there is, that carries not its own provision! Allah provides for it and for you. And He is the All-Hearer, the All-Knower. (29:60)

ثُمَّ إِلَى رَبِّهِمْ يُحْشَرُونَ

then unto their Lord they (all) shall be gathered.

Ibn Abi Hatim reported that Ibn Abbas said about the Ayah,

“Death gathers them.”

It was also said that the Day of Resurrection gathers them, for in another Ayah, Allah said;

وَإِذَا الْوُحُوشُ حُشِرَتْ

And when the wild beasts shall be gathered together. (81:5)

Abdur-Razzaq recorded that Abu Hurayrah said about Allah’s statement,
إِلاَّ أُمَمٌ أَمْثَالُكُم

مَّا فَرَّطْنَا فِي الكِتَابِ مِن شَيْءٍ ثُمَّ إِلَى رَبِّهِمْ يُحْشَرُونَ
(but are Umam like you. We have neglected nothing in the Book, then unto their Lord they (all) shall be gathered),

“All creatures will be gathered on the Day of Resurrection, the beasts, birds and all others. Allah’s justice will be so perfect, that the un-horned sheep will receive retribution from the horned sheep. Allah will then command them, `Be dust!’ This is when the disbeliever will say,
يَا لَيْتَنِي كُنتُ تُرَابًا
(“Woe to me! Would that I were dust!)” (78:40)

And this was reported from the Prophet in the Hadith about the Trumpet.

The Disbelievers will be Deaf and Mute in Darkness

Allah said

وَالَّذِينَ كَذَّبُواْ بِأيَاتِنَا صُمٌّ وَبُكْمٌ فِي الظُّلُمَاتِ

Those who reject Our Ayat are deaf and dumb in darkness.

due to their ignorance, little knowledge and minute comprehension. Their example is that of the deaf-mute who cannot hear nor speak, as well as being blinded by darkness. Therefore, how can such a person find guidance to the path or change the condition he is in

Allah said in other Ayat,

مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِى اسْتَوْقَدَ نَاراً فَلَمَّأ أَضَاءَتْ مَا حَوْلَهُ ذَهَبَ اللَّهُ بِنُورِهِمْ وَتَرَكَهُمْ فِي ظُلُمَـتٍ لاَّ يُبْصِرُونَ

صُمٌّ بُكْمٌ عُمْىٌ فَهُمْ لَا يَرْجِعُونَ

Their parable is that of one who kindled a fire; then, when it illuminated all around him, Allah took away their light and left them in darkness. (So) they could not see. They are deaf, dumb, and blind, so they return not (to the right path). (2:17-18)

and,

أَوْ كَظُلُمَـتٍ فِى بَحْرٍ لُّجِّىٍّ يَغْشَـهُ مَوْجٌ مِّن فَوْقِهِ مَوْجٌ مِّن فَوْقِهِ سَحَابٌ ظُلُمَـتٌ بَعْضُهَا فَوْقَ بَعْضٍ إِذَا أَخْرَجَ يَدَهُ لَمْ يَكَدْ يَرَاهَا وَمَن لَّمْ يَجْعَلِ اللَّهُ لَهُ نُوراً فَمَا لَهُ مِن نُورٍ

Or like the darkness in a vast deep sea, overwhelmed with a great wave topped by a great wave, topped by dark clouds, darkness, one above another, if a man stretches out his hand, he can hardly see it! And he for whom Allah has not appointed light, for him there is no light. (24:40)

This is why Allah said here,

مَن يَشَإِ اللّهُ يُضْلِلْهُ وَمَن يَشَأْ يَجْعَلْهُ عَلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ

Allah sends astray whom He wills and He guides on the straight path whom He wills.

for He does what He wills with His creatures.

তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-
৩৭-৩৯ নং আয়াতের তাফসীর:

মুশরিকদের ব্যাপারে ইরশাদ হচ্ছে- তারা বলেঃ হে মুহাম্মাদ (সঃ)! আমাদের চাহিদা অনুযায়ী কোন নিদর্শন বা অলৌকিক জিনিস আল্লাহ আপনার উপর অবতীর্ণ করেন না কেন? যেমন যমীনে ঝরণা প্রবাহিত হওয়া ইত্যাদি। তাই ইরশাদ হচ্ছে-হে মুহাম্মাদ (সঃ)! তুমি বলে দাও যে, আল্লাহ তো এই কাজের উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান। কিন্তু এর বিলম্বে দূরদর্শিতা রয়েছে। তা এই যে, যদি তাদের চাহিদা অনুযায়ী মহান আল্লাহ কোন নিদর্শন অবতীর্ণ করে দেন এবং এর পরেও তারা ঈমান না আনে তবে তৎক্ষণাৎ তাদের উপর তার শাস্তি নেমে আসবে, মৃত্যু পর্যন্ত তাদেরকে অবসর দেয়া হবে না। যেমন পূর্ববর্তী উম্মতদের সাথে এরূপ ব্যবহারই করা হয়েছিল। আহলে সামূদের দৃষ্টান্ত তো তোমাদের সামনেই বিদ্যমান রয়েছে। আমি ইচ্ছে করলে নিদর্শনও দেখাতে পারি।

আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ হে মুশরিকদের দল! ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী জীব-জন্তু এবং আকাশে উড়ডীয়মান পাখিও তোমাদের মতই বিভিন্ন প্রকারের রয়েছে।

মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, এইসব জীব-জন্তু ও পাখির কতগুলো প্রকার রয়েছে যেগুলোর নাম প্রসিদ্ধ হয়ে আছে। কাতাদা (রঃ) বলেন যে, পাখিও একটি উম্মত এবং মানব-দানবও এক একটি উম্মত। এইসব উম্মতও তোমাদের মতই আল্লাহর সৃষ্টজীব।

অর্থাৎ সমস্ত জীবেরই আল্লাহ খবর রাখেন। কাউকেও আহার্য দান করতে তিনি ভুলে যান না। জলচরই হাক বা স্থলচরই হাক। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছে (আরবী) অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী প্রত্যেক প্রাণীরই জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর উপর রয়েছে। (১১:৬) অর্থাৎ তিনি ঐ সব প্রাণীর সংখ্যা, বাসস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে পূর্ণ অবগত। এমন কি ওগুলোর অঙ্গভঙ্গি সম্পর্কেও তিনি পূর্ণ ওয়াকিফহাল। আর এক জায়গায় রয়েছে- (আরবী) অর্থাৎ “এমন বহু প্রাণী রয়েছে যেগুলোর জীবিকার দায়িত্ব তোমার উপর নেই, আল্লাহই তাদেরকে এবং তোমাদেরকে জীবিকা দান করছেন, তিনি শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।” (২৯:৬০) হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত উমার (রাঃ)-এর খিলাফতের যুগে এক বছর ফড়িং অদৃশ্য হয়ে যায়। তিনি লোকদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোন সন্ধান পেলেন না। ফলে তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। অতঃপর তিনি ইরাক, সিরিয়া প্রভৃতি দেশে লোক পাঠিয়ে সংবাদ নিলেন যে, কোন ফড়িং দেখা যায় কি-না। তখন ইয়ামান হতে আগত লোক কতগুলো ফড়িং তার সামনে এনে হাযির করে। তা দেখে তিনি তিনবার ‘আল্লাহু আকবার পাঠ করেন এবং বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলতেন, “আল্লাহ তা’আলা এক হাজার মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন, ছয়শ’ জলচর এবং চারশ’ স্থলচর। সর্ব প্রথম আল্লাহ পাক ফড়িংকে ধ্বংস করবেন। তারপর ক্রমান্বয়ে অন্যান্য সৃষ্টজীবকে ধ্বংস করতে থাকবেন, যেমনভাবে তাসবীহর দানা ঝরতে থাকে।”

(আরবী) অতঃপর তাদেরকে তাদের প্রভুর নিকট সমবেত করা হবে। অর্থাৎ এই সমুদয় উম্মতেরই মৃত্যু সংঘটিত হবে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, চতুষ্পদ জন্তুর মৃত্যুই ওদের হাশর হওয়া। এই সম্পর্কে অন্য একটি উক্তি এই রয়েছে যে, এই চতুষ্পদ জন্তুগুলোকেও কিয়ামতের দিন পুনরায় উঠানো হবে। যেহেতু আল্লাহ পাক বলেছেন (আরবী) অর্থাৎ ‘এবং যখন চতুষ্পদ জন্তুগুলোকে একত্রিত করা হবে।’ (৮১:৫) হযরত আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) দুটি ছাগলকে দেখলেন যারা একে অপরকে শিং দ্বারা মারছিল। তখন বললেনঃ হে আবু যার (রাঃ)! এরা কিভাবে লড়াই করছে তা কি তুমি জান? তিনি উত্তরে বললেনঃ জ্বীনা।’ রাসূলুল্লাহ (সঃ) (আরবী) তখন বললেনঃ ‘আল্লাহ কিন্তু অত্যাচারীকে জানেন এবং কিয়ামতের দিন এদেরও তিনি বিচার করবেন। আর যার (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমাদেরকে উড়ন্ত পাখী সম্পর্কেও জ্ঞান দান করেছেন। তিনি বলেন যে, শিং বিশিষ্ট বকরী হতে শিং বিহীন বকরী কিয়ামতের দিন প্রতিশোধ নিয়ে নেবে। (আরবী) সম্পর্কে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ চতুষ্পদ জন্তু, ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী প্রাণী এবং পাখীসমূহকেও সৃষ্টি করবেন। প্রত্যেকেই অপর হতে নিজ নিজ প্রতিশোধ গ্রহণ করবে। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা ওগুলোকে সম্বোধন করে বলবেনঃ “তোমরা সব মাটি হয়ে যাও! সেই সময় কাফিররাও আফসোস করে বলবেঃ হায়! আমরাও যদি মাটি হয়ে যেতাম!’

(আরবী) অর্থাৎ, যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তারা তাদের মূখতা ও নির্বুদ্ধিতার কারণে বধির ও মূকদের মত আর তারা অন্ধকারের মধ্যে রয়েছে। তারা কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। এমতাবস্থায় এই লোকগুলো সঠিক ও সোজা রাস্তার উপর কিরূপে চলতে পারে? তাদের দৃষ্টান্ত ঐ ব্যক্তির মত, যে আগুন জ্বালিয়েছে। ফলে ওর আশে-পাশের স্থান আলোকিত হয়েছে। হঠাৎ ঐ আগুন নিভে গেছে। কাজেই সে অন্ধকারের মধ্যে পড়ে গেছে। কিছুই সে দেখতে পায় না। এ জন্যেই আল্লাহ পাক বলেছেন-(আরবী) অর্থাৎ আল্লাহ যাকে চান পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান সোজা সরল পথের উপর পরিচালিত করেন।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
টিকা:২৬) নিদর্শন বলতে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য মু’জিযাকে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহর এ ব্ক্তব্যের অর্থ হচ্ছে, মু’জিযা না দেখাবার কারণ এ নয় যে, আমি তা দেখাতে অক্ষম বরং এর কারণ অন্য কিছু। নিছক নিজেদের অজ্ঞতার কারণে তারা এটা বুঝতে পারছে না।
টিকা:২৭) অর্থাৎ তোমরা যদি নিছক তামাশা দেখার জন্য নয় বরং এ নবী যে বিষয়ের দিকে আহবান জানাচ্ছেন তা সত্য কিনা যথার্থই তা জানার জন্য নিদর্শন দেখতে চাও, তাহলে ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখো, তোমাদের চারদিকে অসংখ্য নিদর্শন ছড়িয়ে আছে। পৃথিবীর বুকে বিচরণশীল প্রাণীকুল এবং শূন্যে উড়ে চলা পাখিদের কোন একটি শ্রেণীকে নিয়ে তাদের জীবন সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করো। দেখো, কীভাবে তাদেরকে অবস্থা ও পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তাদের আকৃতি নির্মাণ করা হয়েছে। কীভাবে তাদের জীবিকা দানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কীভাবে তাদের জন্য ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তারা তার সীমানা পেরিয়ে এগিয়ে যেতেও পারে না, পিছিয়ে আসতেও পারে না। কীভাবে তাদের এক একটি প্রাণীকে এবং এক একটি ছোট ছোট কীট-পতংগকেও তার নিজের স্থানে সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও পথপ্রদর্শন করা হচ্ছে। কীভাবে একটি নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী তার থেকে কাজ আদায় করে নেয়া হচ্ছে। কীভাবে তাকে একটি নিয়ম-শৃংখলার আওতাধীন করে রাখা হয়েছে। কীভাবে তার জন্ম, মৃত্যু ও বংশ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা যথা নিয়মে চলছে। আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শনের মধ্য থেকে যদি কেবলমাত্র এ একটি নিদর্শন সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করো তাহলে তোমরা জানতে পারবে যে, আল্লাহর একত্ব এবং তাঁর গুণাবলীর যে ধারণা এ নবী তোমাদের সামনে পেশ করছেন এবং সে ধারণা অনুযায়ী দুনিয়ায় জীবনযাপন করার জন্য যে কর্মনীতি অবলম্বন করার দিকে তোমাদের আহবান জানাচ্ছেন, তা-ই যথার্থ ও প্রকৃত সত্য। কিন্তু তোমরা নিজেদের চোখ মেলে এগুলো দেখও না আর কেউ বুঝাতে এলে তার কথা মেনেও নাও না। তোমরা তো মুখ গুঁজে পড়ে আছো মূর্খতার নিকষ অন্ধকারে। অথচ তোমরা চাইছো আল্লাহর বিস্ময়কর ক্ষমতার তেলেসমাতি দেখিয়ে তোমাদের মন মাতিয়ে রাখা হোক।

টিকা:২৮) আল্লাহর বিপথগামী করার অর্থ হচ্ছে একজন মূর্খতা ও অজ্ঞতাপ্রিয় ব্যক্তিকে আল্লাহর নিদর্শনসমূহ অধ্যয়ন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা। আর একজন পক্ষপাতদুষ্ট, বিদ্বেষী ও সত্যবিরোধী জ্ঞানান্বেষী কখনো আল্লাহর নিদর্শন পর্যবেক্ষণ করলেও সত্যের পক্ষে পৌঁছার নিশানীগুলো তার দৃষ্টির অগোচরে থেকে যাবে এবং বিভ্রান্তির অক্টোপাসে জড়িয়ে ফেলার মতো জিনিসগুলো তাকে সত্য থেকে দূরে টেনে নিয়ে যেতে থাকবে। অপরদিকে আল্লাহর হেদায়াত তথা সত্য-সরল পথে পরিচালিত করার অর্থ হচ্ছে এই যে, একজন সত্যান্বেষী ব্যক্তি জ্ঞানের উপকরণসমূহ থেকে লাভবান হবার সুযোগ লাভ করে এবং আল্লাহর নিদর্শনগুলোর মধ্যে সত্যের লক্ষ্যে পৌঁছার নিশানী গুলো লাভ করে যেতে থাকে। এ তিনটি অবস্থার অসংখ্য দৃষ্টান্ত আজকাল প্রায়ই আমাদের সামনে এসে থাকে। এমন বহু লোক আছে যাদের সামনে পৃথিবীর বস্তুনিচয় ও প্রাণীকূলের মধ্যে তাদের জন্য আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে কিন্তু তারা জন্তু-জানোয়ারের মতো সেগুলো দেখে থাকে এবং সেখান থেকে কোন শিক্ষা গ্রহণ করে না। বহু লোক প্রাণীবিদ্যা (Zoology), উদ্ভিদ বিদ্যা (Botany), জীববিদ্যা (Biology), ভূতত্ব (Geology), মহাকাশ বিদ্যা (Astronomy), শরীর বিজ্ঞান (physiology), শবব্যবচ্ছেদ বিদ্যা(Anatomy) এবং বিজ্ঞানের আরো বিভিন্ন শাখা প্রশাখায় ব্যাপক অধ্যয়ন করেন, ইতিহাস, প্রত্নতত্ব ও সমাজ বিজ্ঞানে গবেষণা করেন এবং এমন সব নির্দশন তাদের সামনে আসে যেগুলো হৃদয়কে ঈমানের আলোয় ভরে দেয়। কিন্তু যেহেতু তারা বিদ্বেষ ও পক্ষপাতদুষ্ট মানসিকতা নিয়ে অধ্যয়নের সূচনা করেন এবং তাদের সামনে বৈষয়িক লাভ ছাড়া আর কিছুই থাকে না, তাই এ অধ্যয়ন ও পর্যবেক্ষণকালে তারা সত্যের দোরগোড়ায় পৌঁছাবার মতো কোন নিদর্শন পায় না। বরং তাদের সামনে যে নিদর্শনটিই উপস্থিত হয় সেটিই তাদের নাস্তিকতা, আল্লাহ‌ বিমুখতা, বস্তুবাদিতা ও প্রকৃতিবাদিতার দিকে টেনে নিয়ে যায়। তাদের মোকাবিলায় এমন লোকের সংখ্যাও একেবারে নগণ্য নয় যারা সচেতন বুদ্ধি বিবেকের সাথে চোখ মেলে বিশ্ব প্রকৃতির এ সুবিশাল কর্মক্ষেত্র পর্যবেক্ষণ করেন এবং বলে ওঠেনঃ

“সচেতন দৃষ্টি সমুখে গাছের প্রতিটি সবুজ পাতা
একেকটি গ্রন্থ যেন স্রষ্টা-সন্ধানের এনেছে বারতা।”

তাফসীরে আবুবকর ‌যাকারিয়া‌ বলেছেন:-

[১] মুশরিকরা এমন কোন অলৌকিক নিদর্শন দেখতে চেয়েছিল, যা দেখার পর তারা ঈমান আনবে বলে ওয়াদা করছে। আল্লাহ তা’আলা এ আয়াতে এটাই ঘোষণা করছেন যে, তাদের চাহিদা মোতাবেক নিদর্শন দেখানো আল্লাহর পক্ষে অবশ্যই সম্ভব। কিন্তু তারা প্রকৃত অবস্থা জানে না। অন্য আয়াতে তারা কি জানে না সেটাও ব্যক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, যদি তাদের কথামত নিদর্শন দেয়ার পর তারা ঈমান না আনে, তবে আল্লাহর শাস্তির পথে আর কোন বাধা থাকবে না। যেমনটি সালিহ আলাইহিস সালামের জাতির বেলায় ঘটেছিল। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর পূর্ববর্তিগণের নিদর্শন অস্বীকার করাই আমাদেরকে নিদর্শন পাঠানো থেকে বিরত রাখে। আমরা শিক্ষাপ্রদ নিদর্শনস্বরূপ সামূদ জাতিকে উট দিয়েছিলাম, তারপর তারা এর প্রতি যুলুম করেছিল। আমরা শুধু ভয় দেখানোর জন্যই নিদর্শন পাঠিয়ে থাকি।” [সূরা আল-ইসরাঃ ৫৯] অন্য আয়াতে এটাও বলা হয়েছে যে, কুরআন নাযিল করার পর আর কোন নিদর্শনের প্রয়োজন নেই বিধায় তিনি তা নাযিল করেন না। “এটা কি তাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, আমরা আপনার প্রতি কুরআন নাযিল করেছি, যা তাদের কাছে পাঠ করা হয়। এতে অবশ্যই অনুগ্রহ ও উপদেশ রয়েছে সে সম্প্রদায়ের জন্য, যারা ঈমান আনে।” [সূরা আল-আনকাবৃত: ৫১] সুতরাং এর দ্বারা বোঝা যাচ্ছে যে, কুরআনই হচ্ছে সবচেয়ে বড় মু’জিযা বা নিদর্শন। [আদওয়াউল বায়ান]
[২] এখানে কিতাব বলে, লাওহে মাহফুজের লেখা বোঝানো হয়েছে। তাতে সবকিছুই লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। [তাবারী]

[৩] এ আয়াত থেকে জানা যায় যে, কেয়ামতের দিন মানুষের সাথে সর্বপ্রকার জানোয়ারকেও জীবিত করা হবে। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কেয়ামতের দিন তোমরা সব হক আদায় করবে, এমনকি (আল্লাহ তা’আলা এমন সুবিচার করবেন যে,) কোন শিং বিশিষ্ট জন্তু কোন শিংবিহীন জন্তুকে দুনিয়াতে আঘাত করে থাকলে এ দিনে তার প্রতিশোধ তার কাছ থেকে নেয়া হবে। [মুসনাদে আহমাদঃ ২/৩৬২] এমনিভাবে অন্যান্য জন্তুর পারস্পরিক নির্যাতনের প্রতিশোধও নেয়া হবে। [মুসনাদে আহমাদঃ ২/৩৬২] অন্য হাদীসে এসেছে, যখন তাদের পারস্পরিক অধিকার ও নির্যাতনের প্রতিশোধ নেয়া সমাপ্ত হবে, তখন আদেশ হবেঃ তোমরা সব মাটি হয়ে যাও। সব পক্ষীকুল ও জন্তু-জানোয়ার তৎক্ষণাৎ মাটির স্তুপে পরিণত হবে। এ সময়ই কাফেররা আক্ষেপ করে বলবেঃ (আরবি) অর্থাৎ “আফসোস আমিও যদি মাটি হয়ে যেতাম” এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে বেঁচে যেতাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ (কেয়ামতের দিন) সব পাওনাদারের পাওনা পরিশোধ করা হবে, এমনকি, শিংবিহীন ছাগলের প্রতিশোধ শিংবিশিষ্ট ছাগলের কাছ থেকে নেয়া হবে। [মুসনাদে আহমাদঃ ২/৩৬৩, ৫/১৭২-১৭৩; মুস্তাদরাকে হাকিম: ২/৩৪৫; ৪/৬১৯]

[৪]কাতাদা বলেন, এটি কাফেরদের জন্য দেয়া উদাহরণ, তারা অন্ধ ও বধির। তারা হেদায়াতের পথ দেখে না। হেদায়াত থেকে উপকৃত হতে পারে না। হক থেকে তারা বধির। এমন অন্ধকারে তারা অবস্থান করছে যে, সেখান থেকে বের হওয়ার কোন পথ খুঁজে পাচ্ছে না। [তাবারী]

Leave a Reply