أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٢٣٧)-৪৩৯
www.motaher21.net
সুরা: আল-আনয়াম
৪৬-৪৯ নং আয়াত:-
انظُرْ كَيْفَ نُصَرِّفُ الايَاتِ
লক্ষ্য করতো! আমি আমার নিদর্শনসমূহ ও দলীল প্রমাণাদী কিভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বর্ণনা করছি।
See how variously We explain the Ayat,
قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ اَخَذَ اللّٰہُ سَمۡعَکُمۡ وَ اَبۡصَارَکُمۡ وَ خَتَمَ عَلٰی قُلُوۡبِکُمۡ مَّنۡ اِلٰہٌ غَیۡرُ اللّٰہِ یَاۡتِیۡکُمۡ بِہٖ ؕ اُنۡظُرۡ کَیۡفَ نُصَرِّفُ الۡاٰیٰتِ ثُمَّ ہُمۡ یَصۡدِفُوۡنَ ﴿۴۶﴾
তুমি জিজ্ঞেস করঃ আল্লাহ যদি তোমাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেন এবং তোমাদের মনের কপাটে তালা লাগিয়ে মোহর এটে দেন তাহলে এই শক্তি তোমাদেরকে আবার দান করতে পারে এমন কোন সত্তা আল্লাহ ব্যতীত আছে কি? লক্ষ্য করতো! আমি আমার নিদর্শনসমূহ ও দলীল প্রমাণাদী কিভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বর্ণনা করছি। এর পরেও তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়!
قُلۡ اَرَءَیۡتَکُمۡ اِنۡ اَتٰىکُمۡ عَذَابُ اللّٰہِ بَغۡتَۃً اَوۡ جَہۡرَۃً ہَلۡ یُہۡلَکُ اِلَّا الۡقَوۡمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۴۷﴾
তুমি আরও জিজ্ঞেস করঃ আল্লাহর শাস্তি যদি হঠাৎ করে অথবা প্রকাশ্যে তোমাদের উপর এসে পড়ে তাহলে কি অত্যাচারীরা ছাড়া আর কেহ ধ্বংস হবে?
وَ مَا نُرۡسِلُ الۡمُرۡسَلِیۡنَ اِلَّا مُبَشِّرِیۡنَ وَ مُنۡذِرِیۡنَ ۚ فَمَنۡ اٰمَنَ وَ اَصۡلَحَ فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿۴۸﴾
আমি রাসূলদেরকে শুধু এ উদ্দেশে পাঠিয়ে থাকি যে, তারা (সৎ লোকদেরকে) সুসংবাদ দিবে এবং (অসৎ লোকদেরকে) ভয় দেখাবে। সুতরাং যারা ঈমান এনেছে ও চরিত্র সংশোধন করেছে তাদের জন্য কোন ভয়-ভীতি থাকবেনা এবং তারা চিন্তিতও হবেনা।
وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا یَمَسُّہُمُ الۡعَذَابُ بِمَا کَانُوۡا یَفۡسُقُوۡنَ ﴿۴۹﴾
আর যারা আমার আয়াত ও নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে তারা তাদের নিজেদের ফাসেকীর কারণে শাস্তি ভোগ করবে।
৪৬-৪৯ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
অত্র আয়াতগুলো আল্লাহ তা‘আলা তার মহত্বসহ বড়ত্বের ও তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন তার সংবাদ দিচ্ছেন। যারা আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্য হয়ে পাপাচারে লিপ্ত থাকে তাদেরকে চিন্তা করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমরা কি লক্ষ করে দেখেছ- চোখ, কান, অন্তর মানুষের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। চোখ দিয়ে দেখে, কান দিয়ে শুনে আর অন্তর দিয়ে অনুধাবন করে। এ তিনটি অঙ্গ না থাকলে যেন শরীর অচল। সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত। এ সব অঙ্গ যদি আমি ছিনিয়ে নেই কেউ আছে কি, যে তা ফিরিয়ে দিতে পারবে? না, কখনো পারবে না। তাহলে কিভাবে তোমরা আমার সাথে নাফরমানী কর? কিভাবে আমার অবাধ্য হও? এখানে এ তিনটি অঙ্গ উল্লেখ করলেও বাকি সব অঙ্গই এতে শামিল।
আল্লাহ তা‘আলা নাবী-রাসূল প্রেরণ করেন সৎ আমলকারীদেরকে সুসংবাদ দেয়ার জন্য আর অবাধ্যদের সতর্ক করার জন্য। যাতে পরকালে কোন ওযর পেশ করার সুযোগ না থাকে।
সুতরাং সৎ আমলকারীদের জন্য সুসংবাদ আর নাফরমানদের জন্য দুঃসংবাদ।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. চোখ, কান, অন্তর মানুষের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এগুলোসহ সকল অঙ্গকে স্রষ্টার নির্দেশিত পথেই ব্যবহার করা উচিত।
২. আল্লাহ তা‘আলা মানুষের কৃতকর্মের বিনিময়ে শাস্তি ও শান্তি দেন।
৩. রাসূলগণের অন্যতম দায়িত্ব সুসংবাদ প্রদান ও ভীতি প্রদর্শন করা।
৪. ঈমানদার ও সৎ আমলকারীদের কোন ভয় ও দুঃচিন্তা নেই।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Verses :- 46-49
انظُرْ كَيْفَ نُصَرِّفُ الايَاتِ
See how variously We explain the Ayat,
Allah said to His Messenger,
قُلْ
say,
O Muhammad, to those rebellious liars,
أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَخَذَ اللّهُ سَمْعَكُمْ وَأَبْصَارَكُمْ
Tell me, if Allah took away your hearing and your sight.
just as He gave these senses to you.
In another Ayah, Allah said;
هُوَ الَّذِى أَنشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالاٌّبْصَـرَ
It is He Who has created you, and endowed you with hearing, seeing. (67:23)
The Ayah above might also mean that Allah will not allow the disbelievers to benefit from these senses in religious terms. This is why He said next,
وَخَتَمَ عَلَى قُلُوبِكُم
and sealed up your hearts,.
He also said in other Ayat,
أَمَّن يَمْلِكُ السَّمْعَ والاٌّبْصَـرَ
Or who owns hearing and sight! (10:31)
and,
وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ
And know that Allah comes in between a person and his heart.
Allah said;
مَّنْ إِلَـهٌ غَيْرُ اللّهِ يَأْتِيكُم بِهِ
Is there a god other than Allah who could restore them to you!
Meaning, is there anyone except Allah who is able to give you back these senses if Allah took them from you! Only Allah is able to do so, and this is why He said here,
انظُرْ كَيْفَ نُصَرِّفُ الايَاتِ
See how variously We explain the Ayat,
and make them plain and clear, testifying to Allah’s Oneness in lordship and that those worshipped besides Him are all false and unworthy.
ثُمَّ هُمْ يَصْدِفُونَ
yet they turn aside.
After this explanation, they still turn away from the truth and hinder people from following it.
Allah’s statement
قُلْ أَرَأَيْتَكُمْ إِنْ أَتَاكُمْ عَذَابُ اللّهِ بَغْتَةً
Say:”Tell me, if the punishment of Allah comes to you suddenly…”
means, while you are unaware — or during the night — striking you all of a sudden,
أَوْ جَهْرَةً
or openly
during the day, or publicly,
هَلْ يُهْلَكُ إِلاَّ الْقَوْمُ الظَّالِمُونَ
will any be destroyed except the wrongdoing people.
This torment only strikes those who commit injustice against themselves by associating others with Allah, while those who worship Allah alone without partners will be saved from it, and they will have no fear or sorrow.
In another Ayah, Allah said;
الَّذِينَ ءَامَنُواْ وَلَمْ يَلْبِسُواْ إِيمَـنَهُمْ بِظُلْمٍ
It is those who believe and confuse not their belief with Zulm, (wrong or Shirk). (6:82)
Allah’s statement
وَمَا نُرْسِلُ الْمُرْسَلِينَ إِلاَّ مُبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ
And We send not the Messengers but as bearers of glad tidings and as warners.
means, the Messengers bring good news to Allah’s servants, as well as, command all that is good and righteous. They also warn those who disbelieve in Allah of His anger and of all types of torment.
Allah said,
فَمَنْ امَنَ وَأَصْلَحَ
So whosoever believes and does righteous good deeds,
meaning, whoever believes in his heart with what the Messengers were sent with and makes his works righteous by imitating them;
فَلَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ
upon such shall come no fear,
concerning the future,
وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
nor shall they grieve.
about what they missed in the past and left behind them in this world. Certainly, Allah will be the Wali and Protector over what they left behind.
Allah said next,
وَالَّذِينَ كَذَّبُواْ بِأيَاتِنَا يَمَسُّهُمُ الْعَذَابُ بِمَا كَانُواْ يَفْسُقُونَ
But those who reject Our Ayat, the torment will strike them for their rebelling.
The torment will strike them because of disbelieving in the Message of the Messengers, defying Allah’s commands, committing what He prohibited and transgressing His set limits.
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
৪৬-৪৯ নং আয়াতের তাফসীর:
মহান আল্লাহ রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলছেনঃ হে মুহাম্মাদ (সঃ)! এই সব মিথ্যা প্রতিপন্নকারী ও বিরোধিতাকারীকে বলে দাও-আল্লাহ তা’আলা যদি তোমাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নেন যা তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন, তাহলে কে এমন আছে, যে তোমাদেরকে তা প্রদান করতে পারে! যেমন তিনি বলেছেনঃ (আরবী) (৬৭:২৩) আবার এর ভাবার্থ এও হতে পারে যে, তাদের চক্ষু ও কর্ণ বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও শরঈ উপকার লাভ করা থেকে যদি তাদেরকে তিনি বঞ্চিত করে দেন এবং সত্য কথার উপকারিতা থেকে তারা অন্ধ ও বধির হয়ে যায়। আর -এরও ভাবার্থ এটাই। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ (১০:৩১) এবং আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ তোমরা জেনে রেখো যে, আল্লাহ মানুষ ও তার অন্তরের মধ্যে ফিরে থাকেন।’ (৮:২৪) অর্থাৎ যদি তিনি তোমাদের অন্তরের উপর মোহর লাগিয়ে দেন তবে কে এমন আছে, যে ঐ মোহরকে ভেঙ্গে দিতে পারে? এই জন্যেই তিনি বলেনঃ তোমরা একটু চিন্তা করে দেখো যে, আমি কিভাবে নিজের কথাকে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করে থাকি। যা এর স্পষ্ট দলীল যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন মাবুদ নেই এবং তিনি ছাড়া যত মাবুদ রয়েছে সবই মিথ্যা ও বাতিল। এই। স্পষ্ট বর্ণনার পরেও তারা সত্যের অনুসরণ থেকে মানুষকে বিরত রাখছে এবং নিজেরাও বিরত থাকছে। মহান আল্লাহ বলেনঃ তোমরা কি জান যে, যদি আকস্মিকভাবে তোমাদের উপর আল্লাহর শাস্তি নেমে আসে কিংবা তোমাদের চোখের সামনে শাস্তি এসে পড়ে তবে এই পথভ্রষ্ট সম্প্রদায় ছাড়া আর কেউ ধ্বংস হবে না! তবে ঐ লোকেরা মুক্তি পেয়ে যাবে যারা এক আল্লাহরই ইবাদত করে। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে শিরক দ্বারা কলংকিত করেনি তাদের জন্যে শান্তি ও নিরাপত্তা রয়েছে এবং তারা সুপথ প্রাপ্ত।’ (৬:৮২)
ইরশাদ হচ্ছে-আমি নবীদেরকে জান্নাতের সুসংবাদদাতা এবং জাহান্নাম হতে ভয় প্রদর্শনকারী রূপে প্রেরণ করেছি। তারা মুমিন ও সৎ লোকদেরকে শুভ সুসংবাদ দেয় এবং কাফির ও পাপী লোকদেরকে ভয় প্রদর্শন করে থাকে। এ জন্যেই আল্লাহ তা’আলা বলেন যে, যারা অন্তরের সাথে ঈমান এনেছে এবং নবীদের অনুসরণ করেছে তাদের ভবিষ্যতের জন্যে কোন ভয় নেই এবং অতীতের জন্যেও তাদের কোন দুঃখ ও আফসোস নেই। কেননা, তারা দুনিয়ায় যেসব আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব রেখে যাবে তাদের অভিভাবক স্বয়ং আল্লাহ। এরপর আল্লাহ পাক বলেনঃ যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তাদেরকে তাদের কুফর ও পাপের কারণে ভীষণ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। কেননা, তারা মহান আল্লাহর আদেশসমূহ অমান্য করেছে এবং তাঁর নিষেধকৃত কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। আর তারা তাঁর সীমা অতিক্রম করেছে।