(Book# 114/٢٤٠)-৪৪২ www.motaher21.net সুরা: আল-আনয়াম ৬০-৬২ নং আয়াত:- وَ یَعۡلَمُ مَا جَرَحۡتُمۡ بِالنَّہَار দিনের বেলা তোমরা যে পরিশ্রম কর, Knowledge of all that you have done by day,

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٢٤٠)-৪৪২
www.motaher21.net
সুরা: আল-আনয়াম
৬০-৬২ নং আয়াত:-
وَ یَعۡلَمُ مَا جَرَحۡتُمۡ بِالنَّہَار

দিনের বেলা তোমরা যে পরিশ্রম কর,
Knowledge of all that you have done by day,

وَ ہُوَ الَّذِیۡ یَتَوَفّٰىکُمۡ بِالَّیۡلِ وَ یَعۡلَمُ مَا جَرَحۡتُمۡ بِالنَّہَارِ ثُمَّ یَبۡعَثُکُمۡ فِیۡہِ لِیُقۡضٰۤی اَجَلٌ مُّسَمًّی ۚ ثُمَّ اِلَیۡہِ مَرۡجِعُکُمۡ ثُمَّ یُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿٪۶۰﴾

আর সেই মহান সত্তা রাতে নিদ্রারূপে তোমাদের এক প্রকার মৃত্যু ঘটিয়ে থাকেন, আর দিনের বেলা তোমরা যে পরিশ্রম কর তিনি সেটাও সম্যক পরিজ্ঞাত; অতঃপর তিনি নির্দিষ্ট সময়কাল পূরণের নিমিত্ত তোমাদেরকে নিদ্রা থেকে জাগিয়ে থাকেন, পরিশেষে তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে, তখন তিনি তোমাদেরকে তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবহিত করবেন।

وَ ہُوَ الۡقَاہِرُ فَوۡقَ عِبَادِہٖ وَ یُرۡسِلُ عَلَیۡکُمۡ حَفَظَۃً ؕ حَتّٰۤی اِذَا جَآءَ اَحَدَکُمُ الۡمَوۡتُ تَوَفَّتۡہُ رُسُلُنَا وَ ہُمۡ لَا یُفَرِّطُوۡنَ ﴿۶۱﴾

আর আল্লাহই স্বীয় বান্দাদের উপর প্রতাপশালী, তিনি তোমাদের উপর রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠিয়ে থাকেন, এমনকি যখন তোমাদের কারও মৃত্যু সময় সমুপস্থিত হয় তখন আমার প্রেরিত দূতগণ তার প্রাণ হরণ করে নেয়, এ ব্যাপারে তারা বিন্দুমাত্র ক্রটি করেনা।

ثُمَّ رُدُّوۡۤا اِلَی اللّٰہِ مَوۡلٰىہُمُ الۡحَقِّ ؕ اَلَا لَہُ الۡحُکۡمُ ۟ وَ ہُوَ اَسۡرَعُ الۡحٰسِبِیۡنَ ﴿۶۲﴾

তারপর সকলকে তাদের সত্যিকার অভিভাবক আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত করানো হয়। তোমরা জেনে রেখ যে, ঐ দিন একমাত্র আল্লাহই রায় প্রদানকারী হবেন, আর তিনি খুবই ত্বরিৎ হিসাব গ্রহণকারী।

৬০-৬২ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
অত্র আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা অবগত করছেন যে, তিনি মানুষকে রাতে ঘুম নামক মৃত্যু দান করেন। এটাকে ছোট মৃত্যু বলা হয়। একটি প্রবাদ রয়েছে

النوم أخ الموت

‘ঘুম হলো মৃত্যুর ভাই’। মারা গেলে যেমন মানুষের দুনিয়ার সাথে কোন সম্পর্ক থাকে না তেমনি ঘুমালেও দুনিয়ার সাথে কোন সম্পর্ক থাকে না।

এভাবে আল্লাহ তা‘আলা রাতে ঘুম নামক মৃত্যু এবং দিনে জীবিত করে বাঁচিয়ে রাখেন তার বয়স পূর্ণ করা পর্যন্ত। এমনিভাবে যখন তার সময় শেষ হয় তখন আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক প্রেরিত ফেরেশতাগণ মৃত্যু ঘটায়।

(وَيُرْسِلُ عَلَيْكُمْ حَفَظَةً)

‘তিনিই তোমাদের রক্ষক (কিরামান কাতেবিন) প্রেরণ করেন’অর্থাৎ বান্দার আমল সংরক্ষণ করার জন্য আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতা প্রেরণ করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(لَه۫ مُعَقِّبٰتٌ مِّنْۭ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِه۪ يَحْفَظُوْنَه۫ مِنْ أَمْرِ اللّٰهِ)

“মানুষের জন্য তার সম্মুখে ও পশ্চাতে একের পর এক প্রহরী ফেরেশতা থাকে; তারা আল্লাহর আদেশে তার রক্ষণাবেক্ষণ করে।”(সূরা রা‘দ ১৩:১১)

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيْبٌ عَتِيْدٌ)‏

“মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে।”(সূরা কাফ ৫০:১৮)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:

(وَإِنَّ عَلَيْكُمْ لَحَافِظِيْنَ – كِرَامًا كٰتِبِيْنَ – يَعْلَمُوْنَ مَا تَفْعَلُوْنَ)‏

“আর নিশ্চয়ই তোমাদের ওপর সংরক্ষকগণ নিযুক্ত রয়েছে। সম্মানিত লেখকগণ; তোমরা যা কর তাঁরা তা জানেন।”(সূরা ইনফিতার ৮২:১০-১২)

(ثُمَّ رُدُّوْآ إِلَي اللّٰهِ مَوْلٰهُمُ الْحَقِّ)

অর্থাৎ ফেরেশতাগণ আত্মা কবয করার পর আল্লাহ তা‘আলার কাছে ফিরিয়ে দেয়। (ইবনে কাসীর, ১১/৪১৩)

কেউ বলেন: সকল মৃত মানুষ পুনরুত্থানের পর হাশরের ময়দানে আল্লাহ তা‘আলার সমীপে আনীত হবে। সুতরাং সর্বদা আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নিযুক্ত ফেরেশতা দ্বারা আমরা নিয়ন্ত্রিত, আমরা যা করি সব তারা লিখে রাখছেন। তাই আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্যতামূলক কোন কাজ আমাদের করার সুযোগ নেই।

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. আল্লাহ তা‘আলার কুদরত, জ্ঞান ও হিকমতের বর্ণনা পেলাম।
২. সকল ক্ষমতার উৎস একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
৩. মানুষের আমল লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষণের জন্য ফেরেশতা নিয়োজিত রয়েছে।
৪. সকলের নির্ধারিত আয়ু রয়েছে, তা শেষ হয়ে গেলে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ফিরে যেতে হবে।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Anam
Verses :- 60-62
وَ یَعۡلَمُ مَا جَرَحۡتُمۡ بِالنَّہَار
Knowledge of all that you have done by day,

The Servants are in Allah’s Hands Before and After Death

Allah states that He brings death to His servants in their sleep at night, for sleep is minor death. Allah said in other Ayat,

إِذْ قَالَ اللَّهُ يعِيسَى إِنِّي مُتَوَفِّيكَ وَرَافِعُكَ إِلَىَّ

And (remember) when Allah said:”O `Isa! I will take you and raise you to Myself…” (3:55)

and,

اللَّهُ يَتَوَفَّى الاٌّنفُسَ حِينَ مِوْتِـهَا وَالَّتِى لَمْ تَمُتْ فِى مَنَامِـهَا فَيُمْسِكُ الَّتِى قَضَى عَلَيْهَا الْمَوْتَ وَيُرْسِلُ الاٍّخْرَى إِلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى

It is Allah Who takes away the souls at the time of their death, and those that die not during their sleep. He keeps those (souls) for which He has ordained death and sends the rest for a term appointed. (39:42)

thus mentioning both minor and major death.

Allah says,

وَهُوَ الَّذِي يَتَوَفَّاكُم بِاللَّيْلِ وَيَعْلَمُ مَا جَرَحْتُم بِالنَّهَارِ

It is He, Who takes your souls by night (when you are asleep), and has knowledge of all that you have done by day,

meaning, He knows the deeds and actions that you perform during the day.

This Ayah demonstrates Allah’s perfect knowledge of His creation, by day and night, and in their movements and idleness.

Allah said in other Ayat,

سَوَاءٌ مِّنْكُمْ مَّنْ أَسَرَّ الْقَوْلَ وَمَنْ جَهَرَ بِهِ وَمَنْ هُوَ مُسْتَخْفٍ بِالَّيْلِ وَسَارِبٌ بِالنَّهَارِ

It is the same (to Him) whether any of you conceal his speech or declare it openly, whether he be hid by night or go forth freely by day. (13:10)

and,

وَمِن رَّحْمَتِهِ جَعَلَ لَكُمُ الَّيْلَ وَالنَّهَارَ لِتَسْكُنُواْ فِيهِ

وَلِتَبْتَغُواْ مِن فَضْلِهِ

It is out of His mercy that He made night and day, so that you may rest therein, (by night), and that you may seek of His bounty (by day). 28:73)

Allah said,

وَجَعَلْنَا الَّيْلَ لِبَاساً

وَجَعَلْنَا النَّهَارَ مَعَاشاً

And (We) have made the night as a covering. And (We) have made the day for livelihood. (78:10-11)

Allah said here,

وَهُوَ الَّذِي يَتَوَفَّاكُم بِاللَّيْلِ وَيَعْلَمُ مَا جَرَحْتُم بِالنَّهَارِ

It is He, Who takes your souls by night (when you are asleep), and has knowledge of all that you have done by day, (6:60)

Then said,

ثُمَّ يَبْعَثُكُمْ فِيهِ

then he raises (wakes) you up again,

According to Mujahid, Qatadah and As-Suddi,

by day.

Allah’s statement,

لِيُقْضَى أَجَلٌ مُّسَمًّى

that a term appointed be fulfilled.

refers to the life span of every person,

ثُمَّ إِلَيْهِ مَرْجِعُكُمْ

then (in the end), unto Him will be your return.

on the Day of Resurrection.

ثُمَّ يُنَبِّيُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ

Then He will inform you of what you used to do.

He will reward you, good for good, and evil for evil.

Allah’s statement

وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ

He is the Qahir over His servants.

The Qahir means, the one who controls everything, all are subservient to His supreme grace, greatness and majesty,

وَيُرْسِلُ عَلَيْكُم حَفَظَةً

and He sends guardians over you,

angels who guard mankind.

In another Ayah, Allah said;

لَهُ مُعَقِّبَـتٌ مِّن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ يَحْفَظُونَهُ مِنْ أَمْرِ اللَّهِ

For each (person), there are angels in succession, before and behind him. They guard him by the command of Allah. (13:11),

watching his deeds and recording them.

Allah said,

وَإِنَّ عَلَيْكُمْ لَحَـفِظِينَ

But verily, over you (are appointed angels in charge of mankind) to watch you. (82:10)

and,

إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ

مَّا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلاَّ لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ

(Remember!) that the two receivers (recording angels) receive, one sitting on the right and one on the left. Not a word does he utter, but there is a watcher by him, ready. (50:17-18)

Allah’s statement,

حَتَّىَ إِذَا جَاء أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ

until when death approaches one of you…

refers to, when one’s life span comes to an end and he is dying,

تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا

Our messengers take his soul…

meaning, there are angels who are responsible for this job.

Ibn Abbas and several others said that;

the Angel of Death has angels who pull the soul from its body and when it reaches the throat, the Angel of Death captures it.

Allah said;

وَهُمْ لَا يُفَرِّطُونَ

and they never neglect their duty.

They guard the soul of the dead person and take it to wherever Allah wills, to Illiyyin if he was among the righteous, and to Sijjin if he was among the wicked (disbelievers, sinners, etc.), we seek refuge with Allah from this end.

Allah said next

ثُمَّ رُدُّواْ إِلَى اللّهِ مَوْلَاهُمُ الْحَقِّ

Then they are returned to Allah, their Master, the Just Lord.

Imam Ahmad recorded that Abu Hurayrah said that the Prophet said,

إِنَّ الْمَيِّتَ تَحْضُرُهُ الْمَلَيِكَةُ فَإِذَا كَانَ الرَّجُلُ الصَّالِحُ قَالُوا اخْرُجِي أَيَّتُهَا النَّفْسُ الطَّيِّبَةُ كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الطَّيِّبِ اخْرُجِي حَمِيدَةً وَأَبْشِرِي بِرَوْحٍ وَرَيْحَانٍ وَرَبَ غَيْرِ غَضْبَانَ

The angels attend the dying person. If he is a righteous person, the angels will say, `O pure soul from a pure body! Come out with honor and receive the good news of rest, satisfaction and a Lord Who is not angry.’

فَلَ تَزَالُ يُقَالُ لَهَا ذَلِكَ حَتَّى تَخْرُجَ ثُمَّ يُعْرَجَ بِهَا إِلَى السَّمَاءِ فَيَسْتَفْتَحُ لَهَا فَيُقَالُ مَنْ هَذَا

The angels will keep saying this until the soul leaves its body, and they will then raise it up to heaven and will ask that the door be opened for the soul and it will be asked, `Who is this?’

فَيُقَالُ فُلَنٌ

It will be said, `(The soul of) so-and-so.’

فَيُقَالَ مَرْحبًا بِالنَّفْسِ الطَّيِّبَةِ كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الطَّيِّبِ ادْخُلي حَمِيدَةً وَأَبْشِرِي بِرَوْحٍ وَرَيْحَانٍ وَرَبَ غَيْرِ غَضْبَانَ

It will be said, `Welcome, to the pure soul that inhabited the pure body. Enter with honor and receive the good news of rest, satisfaction and a Lord Who is not angry.’

فَلَ تَزَالُ يُقَالُ لَهَا ذَلِكَ حَتَّى يُنْتَهَى بِهَا إِلَى السَّمَاءِ الَّتِي فِيهَا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ

This statement will be repeated until the soul reaches the heaven above which there is Allah.

وَإِذَا كَانَ الرَّجُلُ السَّوْءُ قَالُوا اخْرُجِي أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْخَبِيثَةُ كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الْخَبِيثِ اخْرُجِي ذَمِيمَةً وَأَبْشِري بِحَمِيمٍ وَغَسَّاقٍ وَاخَرَ مِنْ شَكْلِهِ أَزْوَاج فَلَإ تَزَالُ يُقَالُ لَهَا ذَلِكَ حَتَّى تَخْرُجَ

If the dying person is evil, the angels will say, `Get out (of your body), O wicked soul from a wicked body! Get out in disgrace and receive the news of boiling fluid, a fluid dark, murky, intensely cold and other (torments) of similar kind – all together – to match them.’ This statement will be said repeatedly until the evil soul leaves its body.

ثُمَّ يُعْرَجَ بِهَا إِلَى السَّمَاءِ فَيُسْتَفْتَحُ لَهًا فَيُقَالُ مَنْ هَذَا

The soul will be raised up to heaven and a request will be made that the door be opened for it. It will be asked, `Who is this?’

فَيُقَالُ فُلَنٌ

It will be said, `(The soul of) so and so.’

فَيُقَالُ لَا مَرْحَبًا بِالنَّفْسِ الْخَبِيثَةِ كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الْخَبِيثِ ارْجِعِي ذَمِيمَةً فَإِنَّهُ لَا يُفْتَحُ لَكَ أَبْوَابُ السَّمَاءِ فَتُرْسَلُ مِنَ السَّمَاءِ ثُمَّ تَصِيرُ إِلَى الْقَبْرِ

It will be said, `No welcome to the wicked soul from the wicked body. Return with disgrace, for the doors of heaven will not be opened for you.’ So it will be thrown from heaven until it returns to the grave.

فَيُجْلَسُ الرَّجُلُ الصَّالِحُ فَيُقَالُ لَهُ مِثْلُ مَا قِيلَ فِي الْحَدِيثِ الَاوَّلِ وَيُجْلَسُ الرَّجُلُ السَّوْءُ فَيُقَالُ لَهُ مِثْلُ مَا قِيلَ فِي الْحَدِيثِ الثَّانِي

So the righteous person sits and similar is said to him as before. And the evil person sits and similar is said to him as before.

It is also possible that the meaning of,
ثُمَّ رُدُّوا
(Then they are returned…),

refers to the return of all creation to Allah on the Day of Resurrection, when He will subject them to His just decision.

Allah said in other Ayat,

قُلْ إِنَّ الاٌّوَّلِينَ وَالاٌّخِرِينَ

لَمَجْمُوعُونَ إِلَى مِيقَـتِ يَوْمٍ مَّعْلُومٍ

Say:”(Yes) verily, those of old, and those of later times. All will surely be gathered together for an appointed meeting of a known Day.” (56:49-50)

and,

وَحَشَرْنَاهُمْ فَلَمْ نُغَادِرْ مِنْهُمْ أَحَدًا
(And We shall gather them all together so as to leave not one of them behind… until,
وَلَا يَظْلِمُ رَبُّكَ أَحَدًا
(And your Lord treats no one with injustice). (18:47-49)

Allah said here,

مَوْلَاهُمُ الْحَقِّ

أَلَا لَهُ الْحُكْمُ وَهُوَ أَسْرَعُ الْحَاسِبِينَ

their Master, the Just Lord. Surely, His is the judgment and He is the swiftest in taking account.

তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-
৬০-৬২ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ পাক বলেন যে, তিনি স্বীয় বান্দাদেরকে রাত্রিকালে দ্রিারূপ মৃত্যুদান করে থাকেন এবং এটা হচ্ছে (আরবী) বা ছোট মৃত্যু। যেমন তিনি বলেনঃ “যখন আল্লাহ বলেন-হে ঈসা (আঃ)! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মৃত্যু দানকারী এবং আমার কাছে উত্তোলনকারী।” অন্য জায়গায় তিনি বলেনঃ “আল্লাহ মৃত্যুর সময় প্রাণগুলোকে ওফাত দিয়ে থাকেন, আর যে প্রাণ নিদ্রার সময় মৃত্যুবরণ করে
তা এমন প্রাণ যে, ওর উপর আগমনকারী মৃত্যুকে থামিয়ে দেয়া হয় এবং ওর উপর অন্য মৃত্যুকে পাঠিয়ে দেয়া হয় অর্থাৎ নিদ্রা, আর এটা নির্ধারিত মৃত্যু পর্যন্ত চলতে থাকে।”এই আয়াতে দু’টি ওফাতের উল্লেখ করা হয়েছে। একটা হচ্ছে (আরবী) অর্থাৎ বড় মৃত্যু এবং অপরটি হচ্ছে বা ছোট মৃত্যু।

ইরশাদ হচ্ছে- তিনি রাত্রিকালে তোমাদেরকে ওফাত দিয়ে থাকেন। তখন তোমরা কাজ কারবার থেকে বিরত থাক। কিন্তু দিনের বেলায় তোমরা নিজ নিজ কাজে লিপ্ত থাক। আর তিনি তোমাদের দিনের ঐসব কাজ কারবার সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফহাল । এটি একটি নতুন ও পৃথক বাক্য যা এটাই প্রমাণ করছে যে, আল্লাহ তা’আলার জ্ঞান তাঁর সমস্ত মাখলুকের উপর পরিবেষ্টিত রয়েছে। রাত্রিকালে যখন নীরবতা বিরাজ করে তখনও এবং দিনের বেলায় যখন সারা বিশ্ব কর্মমুখরিত থাকে তখনও। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ গোপনীয় ও প্রকাশ্য, রাত্রিকালের বা দিবাভাগের সমস্ত ব্যাপারেই তার পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। (১৩:১০) আর এক জায়গায় তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “এটা আল্লাহর একটা অনুগ্রহ যে, তিনি তোমাদের জন্যে দিন ও রাত করেছেন যেন তোমরা রাত্রে বিশ্রাম ও শান্তি লাভ কর এবং দিনে জীবিকা অর্জন কর।” (২৮:৭৩) তিনি আরও বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি রাত্রিকে তোমাদের জন্যে পোশাক বানিয়েছি এবং দিনকে তোমাদের জন্যে জীবিকা উপার্জনের সময় করেছি।” (৭৮:১০-১১) এজন্যেই তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ তিনি রাত্রিকালে তোমাদেরকে মৃত্যু দান করেন এবং দিবাভাগে তোমরা যা কিছু আমল করেছ বা যা কিছু উপার্জন করেছ তা তিনি সম্যক অবগত। অতঃপর তিনি তোমাদের এই বাহ্যিক মৃত্যুর পরে তোমাদেরকে দিনে পূর্ণ জীবন দান করেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “প্রত্যেক মানুষের সাথে একজন ফেরেশতা থাকেন। যখন সে ঘুমিয়ে পড়ে তখন সেই ফেরেশতা তার প্রাণ বের করে নিয়ে আল্লাহ তা’আলার নিকট চলে যান। আল্লাহ পাক সেই প্রাণকে রেখে দিতে বললে রেখে দেন, নতুবা পুনরায় তা তার দেহে ফিরিয়ে দেন।” (আরবী) -এই উক্তির ভাবার্থ এটাই।

মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর তার প্রাণ আল্লাহ তা’আলার নিকট পৌছিয়ে দেয়া হয়। সে যে আমল করেছিল তা তিনি তাকে জানিয়ে দেন। অতঃপর তিনি তাকে বিনিময় প্রদান করেন। ভাল হলে ভাল বিনিময় এবং মন্দ হলে মন্দ বিনিময়।

(আরবী) ‘তিনি তাঁর বান্দাদের উপর প্রতাপশালী। অর্থাৎ তিনি সব কিছুর উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান এবং সমস্তই তাঁর সামনে অবনত। তিনি মানুষের উপর ফেরেশতা নিযুক্ত করে রেখেছেন, যিনি সর্বক্ষণ তার রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকেন। যেমন তিনি বলেনঃ “মানুষের সামনে ও পিছনে ফেরেশতা অবস্থান করে, যে আল্লাহর নির্দেশক্রমে তার রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।” আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “নিশ্চয়ই তোমাদের উপর রক্ষকগণ রয়েছেন।” (৮২:১০) অন্য জায়গায় তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “সে যখনই কোন কথা মুখ দিয়ে বের করে তখনই তার নিকট একজন রক্ষক বিদ্যমান থাকে।” (৫০:১৮) মহান আল্লাহ আরও বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যখন ডানে ও বামে উপবিষ্ট দু’জন পাকড়াওকারী পাকড়াও করবে।” (৫০:১৭) আল্লাহ তা’আলা আর এক জায়গায় বলেনঃ “যখন তোমাদের কারও মৃত্যু এসে যায় তখন আমার ফেরেশতাগণ তার রূহ কবয করে নেয়। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, মালাকুল-মাওত বা মৃত্যুর ফেরেশতার কয়েকজন সাহায্যকারী ফেরেশতা রয়েছেন যারা দেহ থেকে রূহকে টানতে থাকেন। যখন সেই রূহ গলা পর্যন্ত পৌঁছে যায় তখন মৃত্যুর ফেরেশতা তা কব্য করে নেয়। (আরবী) (১৪:২৭) -এই আয়াতের তাফসীরের সময় এর বর্ণনা আসবে।

(আরবী) অর্থাৎ ঐ ফেরেশতাগণ সেই ওফাতপ্রাপ্ত রূহের রক্ষণাবেক্ষণে বিন্দুমাত্র ক্রটি করেন না। অতঃপর তারা ওকে ঐ স্থানে পৌছিয়ে দেন যেখানে পৌছানোর আল্লাহ ইচ্ছা করেন। যদি তা সৎ হয় তবে ওকে ইল্লীয়্যিন নামক স্থানে জায়গা দেয়া হয়। আর যদি ওটা অসৎ হয় তবে ওকে সিজ্জীনে রাখা হয়। সিজ্জীন হচ্ছে জাহান্নামের একটা স্তর। আমরা এটা থেকে আল্লাহ পাকের কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। অতঃপর ঐ ফেরেশতাগণ এই রহগুলোকে তাদের প্রকৃত প্রভু অর্থাৎ আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে দেন।

এখানে আমরা একটি হাদীস বর্ণনা করছি, যা ইমাম আহমাদ (রঃ) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, মরণ শয্যায় শায়িত ব্যক্তির কাছে ফেরেশতাগণ আগমন করেন। যদি সে সকর্মশীল হয় তবে তারা বলেনঃ “হে পবিত্র আত্মা! তুমি এসে যাও। তুমি পবিত্র দেহের মধ্যে ছিলে। দুনিয়া হতে তুমি প্রশংসিত অবস্থায় ফিরে এসো। তোমাকে জান্নাতের রূহ ও ঈমানের সুসংবাদ দিচ্ছি। আল্লাহ তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট নন।” যখন তারা ক্রমাগত এ কথা বলতে থাকেন তখন রূহ দেহ হতে বেরিয়ে আসে। ফেরেশতারা তখন তাকে নিয়ে আকাশে উঠে যান। তার জন্যে আকাশের দর খুলে দেয়া হয়। জিজ্ঞেস করা হয়, কে? উত্তরে বলা হয়, অমুকের আত্মা। তখন আকাশের ফেরেশতা বলেনঃ মারহাবা! হে পবিত্র আত্মা! তুমি পবিত্র দেহের মধ্যে ছিলে। তোমার জন্যে সুসংবাদ।’ শেষ পর্যন্ত তিনি তাকে নিয়ে ঐ আকাশ পর্যন্ত উঠে যান যেখানে আল্লাহ তা’আলা রয়েছেন। আর যদি ওটা অসৎ ও পাপী লোকের আত্মা হয় তবে ফেরেশতাগণ তাকে সম্বোধন করে বলেনঃ “হে অপবিত্র দেহের ভিতরে অবস্থানকারী অপবিত্র প্রাণ! তুমি লাঞ্ছিত অবস্থায় বেরিয়ে এসো। তোমাকে গরম পানি ও রক্ত-পুঁজের সুসংবাদ এবং এই গরম পানি ও রক্ত-পুঁজ ছাড়াও তোমার জন্যে অন্য শাস্তিও রয়েছে। বার বার বলার পর যখন সে বেরিয়ে আসে তখন তাকে নিয়ে ফেরেশতাগণ আকাশে উঠে যান। আকাশের দর্য খুলে দেয়া হয় এবং জিজ্ঞেস করা হয়, কে? উত্তর দেয়া হয়, অমুক। তখন ফেরেশতা বলেনঃ “হে অপবিত্র নফস! তোমার উপর লা’নাত বর্ষিত হাক। তোমার জন্যে আকাশের দরযা খোলা হবে না। তারপর ঐ রূহকে তার কবরে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এই হাদীসটি গারীব। এর ভাবার্থ নিম্নরূপ হতে পারেঃ (আরবী) অর্থাৎ সমস্ত মাখলুককে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলার নিকট ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং মহান আল্লাহ ইনসাফ ভিত্তিক তাদের উপর নির্দেশ জারী করবেন। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “নিশ্চয়ই পূর্ববর্তীগণকে নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট স্থানে একত্রিত করা হবে।” (৫৬৪ ৪৯-৫০) অন্য জায়গায় তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি তাদের সকলকেই উঠাবো, কাউকেই ছাড়বো না এবং আমি তাদের কারও উপর অত্যাচার করবো না।” (১৮:৪৭) এ জন্যেই আল্লাহ পাক বলেনঃ তারপর সকলকেই তাদের প্রকৃত প্রভু আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত করানো হয়, তোমরা জেনে রেখো যে, ঐ দিন একমাত্র আল্লাহই রায় প্রদানকারী হবেন, আর তিনি খুবই ত্বরিত হিসাব গ্রহণকারী।

Leave a Reply