(Book# 114/٢٦٠)-৪৬২ www.motaher21.net সুরা: আল-আনয়াম ১১৬-১১৭ নং আয়াত:- وَإِن تُطِعْ أَكْثَرَ مَن فِي الَارْضِ তুমি যদি দুনিয়াবাসী অধিকাংশ লোকের কথামত চল তাহলে, If you obey most of those on the earth,

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٢٦٠)-৪৬২
www.motaher21.net
সুরা: আল-আনয়াম
১১৬-১১৭ নং আয়াত:-

وَإِن تُطِعْ أَكْثَرَ مَن فِي الَارْضِ

তুমি যদি দুনিয়াবাসী অধিকাংশ লোকের কথামত চল তাহলে,

If you obey most of those on the earth,

وَ اِنۡ تُطِعۡ اَکۡثَرَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ یُضِلُّوۡکَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ اِنۡ یَّتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنۡ ہُمۡ اِلَّا یَخۡرُصُوۡنَ ﴿۱۱۶﴾

তুমি যদি দুনিয়াবাসী অধিকাংশ লোকের কথামত চল তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যূত করে ফেলবে, তারাতো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে, আর তারা শুধু অনুমানভিত্তিক কথা বলে।

اِنَّ رَبَّکَ ہُوَ اَعۡلَمُ مَنۡ یَّضِلُّ عَنۡ سَبِیۡلِہٖ ۚ وَ ہُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُہۡتَدِیۡنَ ﴿۱۱۷﴾
কোন্ ব্যক্তি আল্লাহর পথ হতে বিভ্রান্ত হয়েছে তা তোমার রাব্ব নিশ্চিতভাবে অবগত আছেন, আর তিনি তাঁর পথের পথিকগণ সম্পর্কেও খুব ভালভাবে জ্ঞাত রয়েছেন।

১১৬-১১৭ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীবাসী সম্পর্কে বলেন যে, তাদের অধিকাংশই পথভ্রষ্ট। কারণ তারা ধারণার অনুসারী। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَلَقَدْ ضَلَّ قَبْلَهُمْ أَكْثَرُ الْأَوَّلِيْنَ) ‏

“আর তাদের পূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছিল পূর্ববর্তীদের অধিকাংশই।”(সূরা সাফফাত ৩৭:৭১)

অন্যত্র তিনি বলেন:

(وَمَآ أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِيْنَ)‏

“তুমি যতই আকাক্সক্ষা কর না কেন, অধিকাংশ লোকই বিশ্বাসী নয়।”(সূরা ইউসুফ ১২:১০৩)

তাই আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলছেন, তুমি যদি অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ কর তাহলে তারা তোমাকে তাদের মত পথভ্রষ্ট করে ফেলবে।

অতএব সংখ্যাগরিষ্ঠতা সত্যের মাপকাঠি হতে পারে না। সত্যের পক্ষে একজন থাকলেও সত্যের পথই অবলম্বন করা উচিত। সুতরাং সত্যের মাপকাঠি হল কুরআন ও সহীহ হাদীস।

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. সংখ্যাগরিষ্ঠতা সত্যের মাপকাঠি নয় বরং সত্যের মাপকাঠি হচ্ছে কুরআন ও সহীহ হাদীস।
২. আল্লাহ তা‘আলার ভাষায় অধিকাংশ মানুষ পথভ্রষ্ট।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Anam
Verses :- 116-117

وَإِن تُطِعْ أَكْثَرَ مَن فِي الَارْضِ
If you obey most of those on the earth,

Most People are Misguided

Allah says;

وَإِن تُطِعْ أَكْثَرَ مَن فِي الَارْضِ يُضِلُّوكَ عَن سَبِيلِ اللّهِ

And if you obey most of those on the earth, they will mislead you far away from Allah’s path.

Allah states that most of the people of the earth, are misguided.

Allah said in other Ayat,

وَلَقَدْ ضَلَّ قَبْلَهُمْ أَكْثَرُ الاٌّوَّلِينَ

And indeed most of the men of old went astray before them. (37:71)

and,

وَمَأ أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُوْمِنِينَ

And most of mankind will not believe even if you eagerly desire it. (12:103)

They are misguided, yet they have doubts about their way, and they rely on wishful thinking and delusions.

إِن يَتَّبِعُونَ إِلاَّ الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلاَّ يَخْرُصُونَ

They follow nothing but conjecture, and they do nothing but lie.

Thus, they fulfill Allah’s decree and decision concerning them.

إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ مَن يَضِلُّ عَن سَبِيلِهِ

Verily, your Lord! It is He Who knows best who strays from His way.

and facilitates that for him,

وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ

And He knows best the rightly guided.

He facilitates that for them, all of them are facilitated for what He created them.

তাফসীরে‌ ইবনে কাসীর বলেছেন:-

১১৬-১১৭ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ পাক বলেনঃ বানী আদমের অধিকাংশের অবস্থা বিভ্রান্তিতে পরিপূর্ণ। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবী) “তাদের পূর্ববর্তী লোকদের অধিকাংশই ভ্রান্তির পথ অবলম্বন করেছিল।” (৩৭:৭১) আর এক জায়গায় তিনি বলেন, (আরবী) অর্থাৎ “(হে নবী সঃ)! তুমি আকাক্ষা করলেও লোকদের অধিকাংশই মুমিন নয়।” (১২:১০৩) তারা ভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে। মজার কথা এই যে, তাদের আমলের উপর তাদের নিজেদেরই বিশ্বাস নেই। তারা মিথ্যা ধারণার উপর বিভ্রান্ত হয়ে ফিরতে রয়েছে। তারা অনুমানে কথা বলছে এবং সন্দেহের মধ্যে পতিত হয়েছে।

(আরবী) শব্দের অর্থ হচ্ছে আন্দাজ ও অনুমান করা। বৃক্ষ ও চারা গাছের অনুমান করাকে বলা হয় (আরবী) বা খেজুর গাছের অনুমান করণ। আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছা ও অনুমান এই যে, তিনি স্বীয় পথ হতে বিভ্রান্ত পথিককে ভালভাবেই জানেন। এ জন্যেই তিনি তার পক্ষে বিভ্রান্ত হওয়াকে সহজ করে দেন। আর যারা সুপথ প্রাপ্ত, তিনি তাদের সম্পর্কেও পূর্ণ ওয়াকিফহাল। তিনি তাদের জন্যেও হিদায়াতকে সহজ করে দেন। যে জিনিস যার জন্যে সমীচীন তাই তিনি তার জন্যে সহজ করে থাকেন।

তাফসীরে আবুবকর ‌যাকারিয়া‌ বলেছেন:-
[১] এ আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে অবহিত করেছেন যে, পৃথিবীর অধিবাসীদের অধিকাংশই পথভ্রষ্ট। [ইবন কাসীর] আপনি এতে ভীত হবেন না এবং তাদের কথায় কর্ণপাত করবেন না। কুরআন একাধিক জায়গায় এ বিষয়টি বর্ণনা করেছে। এক জায়গায় বলা হয়েছে, “আর তাদের আগেও পূর্ববতীদের বেশীর ভাগ বিপথগামী হয়েছিল” [ সূরা আস-সাফফাত:৭১] অন্যত্র বলা হয়েছে, “আপনি যতই চান না কেন, বেশীর ভাগ লোকই ঈমান গ্রহণকারী নয়।” [সূরা ইউসুফ ১০৩] সুতরাং অনুসরণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আলেমদেরই অনুসরণ করতে হবে। যারা জানে না তারা যত বেশীই হোক না কেন তাদের অনুসরণ পথভ্রষ্টতাই ডেকে আনবে [আইসারুত তাফাসীর] এ আয়াত দ্বারা আরো বুঝা গেল যে, সংখ্যাধিক্যতা কোন অবস্থাতেই সঠিক হওয়ার দলীল নয়। কারণ হক বা সঠিক পথ ও মত দলীল-প্রমাণাদির ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে, সংখ্যাধিক্য বা সংখ্যালঘুতার ভিত্তিতে নয়। সাধারণত, হকপন্থীরা সংখ্যায় কম থাকে, কিন্তু তারা আল্লাহর নিকট সওয়াবের দিক থেকে অধিক অগ্রগামী [সা’দী]

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

টিকা:৮৩) অর্থাৎ দুনিয়ার অধিকাংশ লোক নির্ভুল জ্ঞানের পরিবর্তে কেবলমাত্র আন্দাজ অনুমানের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তাদের আকীদা-বিশ্বাস, দর্শন, চিন্তাধারা, জীবন-যাপনের মূলনীতি ও কর্মবিধান সবকিছুই ধারণা ও অনুমানের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। অন্যদিকে আল্লাহর পথ অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুযায়ী দুনিয়ায় জীবন যাপন করার পথ মাত্র একটিই। সেটি হচ্ছে, আল্লাহ্‌ নিজে যে পথটি জানিয়ে দিয়েছেন-লোকেরা নিজেদের আন্দাজ-অনুমান ও ধারণা-কল্পনার ভিত্তিতে নিজেরাই যে পথটি তৈরী করেছে, সেটি নয়। কাজেই দুনিয়ার বেশীর ভাগ লোক কোন্ পথে যাচ্ছে, কোন সত্য সন্ধানীর এটা দেখা উচিত নয়। বরং আল্লাহ্‌ যে পথটি তৈরী করে দিয়েছেন তার ওপরই তার দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলা উচিত। এ পথে চলতে গিয়ে দুনিয়ায় যদি সে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে তাহলেও তাকে একাকীই চলতে হবে।

Leave a Reply