(Book# 114/٢٦٨)-৪৭০ www.motaher21.net সুরা: আল-আনয়াম ১২৮ নং আয়াত:- وَيَوْمَ يِحْشُرُهُمْ جَمِيعًا আর যেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে একত্রিত করবেন, On the Day when He will gather them (all) together.

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٢٦٨)-৪৭০
www.motaher21.net
সুরা: আল-আনয়াম
১২৮ নং আয়াত:-

وَيَوْمَ يِحْشُرُهُمْ جَمِيعًا
আর যেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে একত্রিত করবেন,
On the Day when He will gather them (all) together.

وَ یَوۡمَ یَحۡشُرُہُمۡ جَمِیۡعًا ۚ یٰمَعۡشَرَ الۡجِنِّ قَدِ اسۡتَکۡثَرۡتُمۡ مِّنَ الۡاِنۡسِ ۚ وَ قَالَ اَوۡلِیٰٓؤُہُمۡ مِّنَ الۡاِنۡسِ رَبَّنَا اسۡتَمۡتَعَ بَعۡضُنَا بِبَعۡضٍ وَّ بَلَغۡنَاۤ اَجَلَنَا الَّذِیۡۤ اَجَّلۡتَ لَنَا ؕ قَالَ النَّارُ مَثۡوٰىکُمۡ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَاۤ اِلَّا مَا شَآءَ اللّٰہُ ؕ اِنَّ رَبَّکَ حَکِیۡمٌ عَلِیۡمٌ ﴿۱۲۸﴾

আর যেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে একত্রিত করবেন, সেদিন তিনি বলবেনঃ হে জিন সম্প্রদায়! তোমরা মানুষের মধ্যে অনেককে বিভ্রান্ত করে অনুগামী করেছ, আর ওদের মধ্যে যাদের মানুষের সাথে বন্ধুৃত্বের সম্পর্ক ছিল তারা স্বীকারোক্তিতে বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমরা একে অপরের দ্বারা উপকৃত হয়েছি। হায়! আপনি আমাদের জন্য যে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করেছেন তা এসে গেছে! তখন (কিয়ামাত দিবসে) আল্লাহ (সমস্ত কাফির জিন ও মানুষকে) বলবেনঃ জাহান্নামই হচ্ছে তোমাদের বাসস্থান, তাতে তোমরা চিরস্থায়ীভাবে থাকবে, তবে আল্লাহ যাদেরকে চাইবেন (তারাই তা থেকে মুক্তি পেতে পারে) তোমাদের রাব্ব অতিশয় সম্মানিত এবং অত্যন্ত জ্ঞানবান।

১২৮ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-

যারা মানুষকে ভুল পথে নিয়ে যায়, সে মানুষ হোক আর জিন হোক তাদেরকে হুশিয়ার করে দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন- সকলকে তিনি তাঁর কাছে হাজির করবেন এবং বলবেন-

(قَدِ اسْتَكْثَرْتُمْ مِّنَ الْإِنْسِ)

‘তোমরা তো অনেক লোককে তোমাদের অনুগামী (পথভ্রষ্ট) করেছিলে; অর্থাৎ অনেক মানুষকে নিজেদের আনুগত্যে নিয়ে এসেছ। তারা তোমাদের ইবাদত করেছে, তোমাদের কাছে আশ্রয় চেয়েছে, তোমাদের আনুগত্য করেছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(اَلَمْ اَعْھَدْ اِلَیْکُمْ یٰبَنِیْٓ اٰدَمَ اَنْ لَّا تَعْبُدُوا الشَّیْطٰنَﺆ اِنَّھ۫ لَکُمْ عَدُوٌّ مُّبِیْنٌﮋﺫ وَّاَنِ اعْبُدُوْنِیْﺛ ھٰذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِیْمٌﮌ وَلَقَدْ اَضَلَّ مِنْکُمْ جِبِلًّا کَثِیْرًاﺚ اَفَلَمْ تَکُوْنُوْا تَعْقِلُوْنَﮍ)

“আমি কি তোমাদেরকে নির্দেশ দেইনি হে বানী আদম! তোমরা শয়তানের ইবাদত কর না, সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্র“। আমারই ইবাদত কর, এটাই সরল-সঠিক পথ। আর সে (শয়তান) তো তোমাদের বহু লোককে পথভ্রষ্ট করেছে তবুও কি তোমরা বুঝবে না।”(সূরা ইয়াসীন ৩৬:৬০-৬২)

যে সব মানুষ জিন নামক শয়তানের ইবাদত করত তারা বলত: আমরা একে অপরের কাছ থেকে উপকৃত হয়েছি। এর দু’টি অর্থ হতে পারে-

১. মানুষের কাছ থেকে জিনদের উপকারিতা অর্জন করা হল: তাদেরকে নিজেদের অনুসারী বানিয়ে তৃপ্তি লাভ করা। আর জিনদের থেকে মানুষের উপকারিতা অর্জন করা হল: শয়তানের পাপকর্মসমূহকে তাদের জন্য সুন্দর আকারে পেশ করা।

২. মানুষ সেসব খবরকে বিশ্বাস করত শয়তান ও জিনদের পক্ষ হতে যা ভবিষ্যতবাণী হিসাবে প্রচার করা হত।

(أَجَلَنَا الَّذِيْٓ أَجَّلْتَ لَنَا)

‘তুমি আমাদের জন্য যে সময় নির্ধারিত করেছিলে এখন আমরা তাতে উপনীত হয়েছি।’অর্থাৎ কিয়ামত সংঘটিত হয়ে গেছে যা আমরা মানতাম না। এর উত্তরে আল্লাহ তা‘আলা বলবেন: এখন জাহান্নামই হবে তোমাদের চিরন্তন ঠিকানা।

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. খারাপ মানুষ ও জিনরা পরস্পরকে খারাপ কাজে সহযোগিতা করে।
২. আমলের মাধ্যমে মানুষ ও জিনদের মাঝে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। ভালদের সাথে ভাল আর খারাপদের সাথে খারাপের সম্পর্ক।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Anam
Verses :- 128

وَيَوْمَ يِحْشُرُهُمْ جَمِيعًا

On the Day when He will gather them (all) together.

Allah says, `Mention, O Muhammad, in what you convey and warn,’ that,

وَيَوْمَ يِحْشُرُهُمْ جَمِيعًا

on the Day when He will gather them (all) together.

gather the Jinns and their loyal supporters from mankind who used to worship them in this life, seek refuge with them, obey them and inspire each other with adorned, deceitful speech.

Allah will proclaim then,

يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ قَدِ اسْتَكْثَرْتُم مِّنَ الاِنسِ

O you assembly of Jinn! Many did you mislead of men,

So the Ayah;
قَدِ اسْتَكْثَرْتُم مِّنَ الاِنسِ
(Many did you mislead of men) refers to their misguiding and leading them astray.

Allah also said;

أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يبَنِى ءَادَمَ أَن لاَّ تَعْبُدُواْ الشَّيطَـنَ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ

وَأَنِ اعْبُدُونِى هَـذَا صِرَطٌ مُّسْتَقِيمٌ

وَلَقَدْ أَضَلَّ مِنْكُمْ جِبِلًّ كَثِيراً أَفَلَمْ تَكُونُواْ تَعْقِلُونَ

Did I not command you, O Children of Adam, that you should not worship Shaytan. Verily, he is a plain enemy to you. And that you should worship Me. That is the straight path. And indeed he (Shaytan) did lead astray a great multitude of you. Did you not, then, understand. (36:60-62)

and,

وَقَالَ أَوْلِيَأوُهُم مِّنَ الاِنسِ رَبَّنَا اسْتَمْتَعَ بَعْضُنَا بِبَعْضٍ

and their friends among the people will say:”Our Lord! We benefited one from the other…”

The friends of the Jinns among humanity will give this answer to Allah, after Allah chastises them for being misguided by the Jinns.

Al-Hasan commented,

“They benefited from each other when the Jinns merely commanded and mankind obeyed.”

Ibn Jurayj said,

“During the time of Jahiliyyah, a man would reach a land and proclaim, `I seek refuge with the master (Jinn) of this valley,’ and this is how they benefited from each other. They used this as an excuse for them on the Day of Resurrection.”

Therefore, the Jinns benefit from humans since humans revere the Jinns by invoking them for help. The Jinns would then proclaim, “We became the masters of both mankind and the Jinns.”

وَبَلَغْنَا أَجَلَنَا الَّذِيَ أَجَّلْتَ لَنَا

but now we have reached our appointed term which You did appoint for us.

meaning, death, according to As-Suddi.

قَالَ النَّارُ مَثْوَاكُمْ

He (Allah) will say:”The Fire be your dwelling place…”

where you will reside and live, you and your friends,

خَالِدِينَ فِيهَا

you will dwell therein forever.

and will never depart except what Allah may will.

إِلاَّ مَا شَاء اللّهُ
.

except as Allah may will.

إِنَّ رَبَّكَ حَكِيمٌ عَليمٌ

Certainly your Lord is All-Wise, All-Knowing.

তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-
ইরশাদ হচ্ছে-হে মুহাম্মাদ (সঃ)! ঐ দিনকে স্মরণ কর, যখন আল্লাহ ঐ জ্বিন ও শয়তানদেরকে এবং তাদের মানব বন্ধুদেরকে, তারা দুনিয়ায় যাদের ইবাদত করতো এবং যাদের কাছে আশ্রয় গ্রহণ করতো, আর দুনিয়ার মজা উপভোগের ব্যাপারে একে অপরের কাছে অহী পাঠাতো, তাদের সকলকে সমবেত করবেন এবং বলবেনঃ হে জ্বিন ও শয়তানের দল! তোমরা মানব গোষ্ঠীকে বহু প্রকারে বিভ্রান্ত করেছিলে। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “হে আদম সন্তান! আমি কি তোমাদের কাছে এ অঙ্গীকার গ্রহণ করিনি যে, তোমরা শয়তানের উপাসনা করবে না, কেননা সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? আর তোমরা আমারই ইবাদত করবে, এটাই হচ্ছে সিরাতে মুসতাকীম বা সরল সহজ পথ? তোমাদের বড় বড় লকে এই শয়তানরাই পথভ্রষ্ট করেছে, তাহলে এখনও কি তোমাদের জ্ঞান লাভ হবে না?” আর তাদের মানব বন্ধুরা বলবেঃ “হে আমাদের প্রভু! নিশ্চয়ই আপনার কথা সত্য। আমরা প্রত্যেকেই একে অপরের দ্বারা উপকার লাভ করেছি।”

হাসান (রঃ) বলেন, এই প্রকার লাভ করা ছিল এই যে, ঐ শয়তানরা আদেশ করতো আর এই মূখ ও অজ্ঞ মানুষেরা ওর উপর আমল করতো। ইবনে জুরায়েজ (রাঃ) বলেন, অজ্ঞতার যুগে কোন লোক সফররত অবস্থায় কোন উত্যকায় পথভ্রষ্ট হয়ে গেলে বলতোঃ ‘আমি এই উপত্যকায় সবচেয়ে বড় জ্বিনের আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এটাই হতো ঐ সব মানুষের উপকার লাভ। কিয়ামতের দিন তারা এরই ওযর পেশ করবে। আর জ্বিনদের মানুষদের নিকট থেকে উপকার লাভ করা এই যে, মানুষ তাদের সম্মান করতো এবং তাদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতো। ফলে মানুষদের নিকট থেকে তাদের মর্যাদা লাভ হতো। তাই তারা বলতোঃ “আমরা জ্বিন ও মানুষের নেতা। আর আপনি আমাদের জন্যে যে সময় নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন ঐ ওয়াদা পর্যন্ত আমরা পৌছে গেছি।” এর দ্বারা মৃত্যুকে বুঝানো হয়েছে। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ “এখন জাহান্নামই হচ্ছে তোমাদের ও তোমাদের বন্ধুদের বাসস্থান, যার মধ্যে তোমরা চিরকাল অবস্থান করবে। তারপর আল্লাহ যা চাইবেন তাই করবেন।” কেউ কেউ বলেন যে, এই ব্যতিক্রমের অর্থ হচ্ছে বারযাখের দিকে প্রত্যাবর্তন। কেউ কেউ এই মত পোষণ করেন যে, এই সময়কাল দুনিয়ার দিকে প্রত্যাবর্তন। আবার কেউ কেউ এমন কথা বলেছেন যার বর্ণনা সূরায়ে হৃদে আসবে। সেখানে আল্লাহ পাক বলেছেনঃ “তারা জাহান্নামে ততকাল থাকবে যতকাল যমীন ও আসমান থাকবে। হ্যা, তবে এ ছাড়া আল্লাহ যা চাইবেন তা তার মর্জি। তিনি তো যা ইচ্ছা করেন তা কার্যে পরিণত করার অধিকার তার রয়েছে। এই আয়াতের তাফসীর ঐ আয়াত দ্বারা হচ্ছে-জাহান্নাম তোমাদের বাসস্থান, যার মধ্যে তোমরা চিরকাল অবস্থান করবে, হ্যা, তবে আল্লাহ যা চান। এটা এমন একটি আয়াত যে, আল্লাহর মাখলুকের ব্যাপারে আল্লাহর উপর কোন হুকুম লাগানো এবং কাউকে জান্নাতী বা জাহান্নামী বলা কারো মোটেই উচিত নয়।

তাফসীরে আবুবকর ‌যাকারিয়া‌ বলেছেন:-
[১] এ আয়াতে হাশরের ময়দানে সব জিন ও মানবকে একত্রিত করার পর উভয় দলের সম্পর্কে একটি প্রশ্ন ও উত্তর বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ্ তা’আলা শয়তান জিনদেরকে সম্বোধন করে তাদের অপরাধ ব্যক্ত করবেন এবং বলবেন, ‘তোমরা মানব জাতিকে পথভ্রষ্ট করার কাজে ব্যাপকভাবে অংশ নিয়েছ। তাদেরকে তোমরা আল্লাহর পথ থেকে দূরে রেখেছ। আর তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলে। তোমরা মানুষদেরকে পথভ্রষ্ট করে জাহান্নামের দিকে ধাবিত করেছ। সুতরাং আজ তোমাদের উপর আমার লা’নত অবশ্যম্ভাবী, আমার শাস্তি অপ্রতিরোধ্য। তোমাদের অপরাধ অনুপাতে আমি তোমাদেরকে শাস্তি দিব। কিভাবে তোমরা আমার নিষিদ্ধ বিষয়ে অগ্রগামী হলে? কিভাবে আমার রাসূল ও নেক বান্দাদের বিরোধিতায় লিপ্ত হলে? অন্যদের পথভ্রষ্ট করার ব্যাপারে তোমাদের কোন ওজর আপত্তি শোনা হবে না। আজ তোমাদের পক্ষে সুপারিশ করারও কেউ নেই।’ তখন তাদের উপর যে শাস্তি, অপমান ও লাঞ্ছনা আপতিত হবে সেটা অবর্ণনীয়। এর উত্তরে জিনরা কি বলবে, কুরআন তা উল্লেখ করেনি। তবে এটা বোঝা যায় যে, মহাজ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ তা’আলার সামনে স্বীকারোক্তি করা ছাড়া গতি নেই। কিন্তু তাদের স্বীকারোক্তি উল্লেখ না করার মধ্যেই ইঙ্গিত রয়েছে যে, এ প্রশ্ন শুনে তারা এমন হতবাক হয়ে যাবে যে, উত্তর দেয়ার জন্য মুখই খুলতে পারবে না। [সা’দী]

[২] এরপর মানব শয়তান অর্থাৎ দুনিয়াতে যে সমস্ত মানব শয়তানদের অনুগামী ছিল, নিজেরাও পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অপরকেও পথভ্রষ্ট করেছে, তাদের পক্ষ থেকে আল্লাহর দরবারে একটি উত্তর বর্ণনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে উপরোক্ত প্রশ্ন যদিও তাদেরকে করা হয়নি; কিন্তু প্রসঙ্গক্রমে তাদেরকেও যেন সম্বোধন করা হয়েছিল। কেননা, তারাও শয়তান জিনদের কাজ অর্থাৎ পথভ্রষ্টতাই প্রচার করেছিল। এ প্রাসঙ্গিক সম্বোধনের কারণে তারা উত্তর দিয়েছে। কিন্তু বাহ্যতঃ বোঝা যায় যে, মানবরূপী শয়তানদেরকেও প্রশ্ন করা হয়ে থাকবে। তা স্পষ্টতঃ এখানে উল্লেখ করা না হলেও অন্য এক আয়াতে বলা হয়েছেঃ “হে আদম সন্তানরা! আমি কি তোমাদেরকে নবীগণের মাধ্যমে অঙ্গীকার নেইনি যে, শয়তানের ইবাদাত (অনুসরণ) করো না”? [সূরা ইয়াসীন: ৬০] এতে বোঝা যায় যে, এ সময়ে মানুষ শয়তানদেরকেও প্রশ্ন করা হবে। তারা উত্তরে স্বীকার করবে যে, নিঃসন্দেহে আমরা শয়তানদের কথা মান্য করার অপরাধ করেছি। তারা আরো বলবেঃ হ্যাঁ, জিন শয়তানরা আমাদের সাথে এবং আমরা তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে পরস্পর পরস্পরের দ্বারা ফল লাভ করেছি। মানুষ শয়তানরা তাদের কাছ থেকে এ ফল লাভ করেছে যে, দুনিয়ার ভোগ-বিলাস আহরণের উপায়াদি শিক্ষা করেছে এবং কোথাও কোথাও জিন শয়তানদের দোহাই দিয়ে কিংবা অন্য পন্থায় তাদের কাছ থেকে সাহায্যও লাভ করেছে; যেমন, মূর্তিপূজারীর মধ্যে বরং বিশেষ ক্ষেত্রে অনেক মূৰ্খ মুসলিমের মধ্যেও এ পন্থা প্রচলিত আছে, যা দ্বারা শয়তান ও জিনদের কাছ থেকে কোন কোন কাজে সাহায্য নেয়া যায়। জিন শয়তানরা মানুষদের কাছ থেকে যে ফল লাভ করেছে, তা এই যে, তাদের কথা অনুসরণ করা হয়েছে এবং তারা মানুষকে অনুগামী করতে সক্ষম হয়েছে। এমনকি তারা মৃত্যু ও আখেরাতকে ভুলে গিয়েছে। এই মুহুর্তে তারা স্বীকার করবে যে, শয়তানের বিপথগামী করার কারণে আমরা যে মৃত্যু ও আখেরাতকে ভুলে গিয়েছিলাম, এখন তা সামনে এসে গেছে। এখন আপনি যে শাস্তি দিতে চান তা দিতে পারেন। কারণ এখন আপনারই একচ্ছত্র ক্ষমতা। এভাবে তারা যেন আল্লাহর কৃপাই পেতে চাইবে। কিন্তু এটা কৃপা করার সময় নয়। তাই এ স্বীকারোক্তির পর আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ তোমরা উভয় দলের অপরাধের শাস্তি এই যে, তোমাদের বাসস্থান হবে অগ্নি, যাতে সদা-সর্বদা থাকবে। তবে আল্লাহ কাউকে তা থেকে বের করতে চাইলে তা ভিন্ন কথা। কুরআনের অন্যান্য আয়াত সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ তা’আলা তাও চাইবেন না। তাই অনন্তকালই সেখানে থাকতে হবে। [সা’দী]
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

টিকা:৯৪) এখানে জিন বলতে শয়তান জিন বুঝানো হয়েছে।

টিকা:৯৫) অর্থাৎ আমাদের প্রত্যেকে প্রত্যেককে অবৈধভাবে কাজে লাগিয়েছে এবং তার দ্বারা লাভবান হয়েছে। প্রত্যেকে অন্যকে প্রতারণা করে নিজের কামনা বাসনা চরিতার্থ করেছে।

টিকা:৯৬) অর্থাৎ যদিও আল্লাহ যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেবার এবং যাকে ইচ্ছা মাফ করার ইখিতয়ার রাখেন কিন্তু এ শাস্তি দেয়া ও মাফ করা যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া নিছক খেয়াল খুশীর ভিত্তিতে হবে না। বরং এর পেছনে থাকবে জ্ঞান ও ন্যায়সঙ্গত কারণ। আল্লাহ সেই অপরাধীকে মাফ করবেন যার সম্পর্কে তিনি জানেন যে, তার অপরাধের জন্য সে নিজে দায়ী নয়। তিনি তাকেই শাস্তি দেবেন যাকে শাস্তি দেয়া তিনি যুক্তিসঙ্গত মনে করবেন।

Leave a Reply