أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٢٧٣)-৪৭৫
www.motaher21.net
সুরা: আল-আনয়াম
১৩৬ নং আয়াত:-
سَاء مَا يَحْكُمُونَ
এই লোকদের ফাইসালা ও বন্টন নীতি কতই না নিকৃষ্ট!
Evil is the way they judge!
وَ جَعَلُوۡا لِلّٰہِ مِمَّا ذَرَاَ مِنَ الۡحَرۡثِ وَ الۡاَنۡعَامِ نَصِیۡبًا فَقَالُوۡا ہٰذَا لِلّٰہِ بِزَعۡمِہِمۡ وَ ہٰذَا لِشُرَکَآئِنَا ۚ فَمَا کَانَ لِشُرَکَآئِہِمۡ فَلَا یَصِلُ اِلَی اللّٰہِ ۚ وَ مَا کَانَ لِلّٰہِ فَہُوَ یَصِلُ اِلٰی شُرَکَآئِہِمۡ ؕ سَآءَ مَا یَحۡکُمُوۡنَ ﴿۱۳۶﴾
আর আল্লাহ যে সব শস্য ও পশু সৃষ্টি করেছেন, তারা (মুশরিকরা) ওর একটি অংশ আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করে থাকে। অতঃপর নিজেদের ধারণা মতে তারা বলে যে, এই অংশ আল্লাহর জন্য এবং এই অংশ আমাদের শরীকদের জন্য। কিন্তু যা তাদের শরীকদের জন্য নির্ধারিত হয়ে থাকে, তাতো আল্লাহর দিকে পৌঁছেনা, পক্ষান্তরে যা আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল তা তাদের শরীকদের কাছে পৌঁছে থাকে। এই লোকদের ফাইসালা ও বন্টন নীতি কতই না নিকৃষ্ট!
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
টিকা:১০৪) ওপরের ভাষণটি এ বলে শেষ করা হয়েছিল যে, এরা যদি উপদেশ গ্রহণ করতে প্রস্তুত না হয় এবং নিজেদের মূর্খতার ওপর জিদ চালিয়ে যেতেই থাকে, তাহলে তাদেরকে বলে দাওঃ ঠিক আছে, তোমরা তোমাদের পথে চলো এবং আমি আমার পথে চলি, তারপর একদিন কিয়ামত অবশ্যি আসবে, সে সময় এ কর্মনীতির ফল তোমরা অবশ্যি জানতে পারবে, তবে একথা ভালভাবে জেনে রাখো, সেখানে জালেমদের ভাগ্যে কোন সফলতা লেখা নেই। তারপর যে জাহেলিয়াতের ওপর তারা জোর দিয়ে আসছিল এবং যাকে কোনক্রমেই ত্যাগ করতে তারা প্রস্তুত ছিল না, তার কিছুটা ব্যাখ্যা এখন এখানে করা হচ্ছে। তাদের সামনে তাদের সে “জুলুমের স্বরূপ” তুলে ধরা হচ্ছে যার ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে তারা কোন সফলতার মুখ দেখার আশা করতে পারে না।
টিকা:১০৫) তারা একথা স্বীকার করতো, পৃথিবীর মালিক হচ্ছেন আল্লাহ। তিনিই গাছপালা ও শস্যাদি উৎপন্ন করেন। তাছাড়া যেসব গবাদি পশুকে তারা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে তাদের স্রষ্টাও আল্লাহ। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের ধারণা ছিল, তাদের প্রতি আল্লাহ এই যেসব অনুগ্রহ করেছেন এগুলো তাদের প্রতি স্নেহ মমতা ও করুণার ধারা বর্ষণকারী দেব-দেবী, ফেরেশতা, জিন, তারকা ও পূর্ববর্তী সৎব্যক্তিবর্গের পবিত্র আত্মার বদৌলতেই সম্ভব হয়েছে। এজন্য তারা নিজেদের ক্ষেতের ফসল ও গৃহপালিত পশু থেকে দু’টি অংশ উৎসর্গ করতো। একটি অংশ উৎসর্গ করতো আল্লাহর নামে। যেহেতু তিনিই এ ফসল ও পশু তাদেরকে দান করেছেন। তাই তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। আর দ্বিতীয় অংশটি উৎসর্গ করতো নিজেদের গোত্র বা পরিবারের অভিভাবক ও পৃষ্ঠপোষক উপাস্যদের নযরানা হিসেবে। তাদের করুণা ও অনুগ্রহের ধারা অব্যাহত রাখাই ছিল এর উদ্দেশ্য। আল্লাহ সর্বপ্রথম তাদের এ জুলুমের জন্য তাদেরকে পাকড়াও করেছেন। আল্লাহ বলেন, এসব গবাদি পশু আমিই সৃষ্টি করেছি এবং আমিই এগুলো তোমাদের দান করেছি, তাহলে এজন্য অন্যদের কাছে নযরানা পেশ করছো কেন? যিনি তোমাদের প্রতি সরাসরি অনুগ্রহ ও করুণা করেছেন, তোমাদের সে মহান অনুগ্রহকারী সত্তার অনুগ্রহকে অন্যদের হস্তক্ষেপ, সহায়তা ও মধ্যস্থতার ফল গণ্য করা এবং এজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে সে মহান অনুগ্রহকারীর অধিকারের মধ্যে তাদেরকে শরীক করা কি নিমকহারামী নয়? তারপর ইঙ্গিতে এ বলে তাদের পুনরায় সমালোচনা করেছেন যে, তারা আল্লাহর এই যে অংশ নির্ধারণ করেছে এও তাদের নিজেদের নির্ধারিত, আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত নয়। তারা নিজেরাই নিজেদের বিধায়কে পরিণত হয়েছে। নিজেরাই ইচ্ছা মতো যে অংশটা চাচ্ছে আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করছে আবার যে অংশটা চাচ্ছে অন্যদের জন্য নির্ধারণ করছে। অথচ এ দানের আসল মালিক ও সর্বময় অধিকারী হচ্ছেন আল্লাহ। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য এ দান থেকে কি পরিমাণ তাঁর জন্য উৎসর্গ করতে হবে এবং বাকি অংশের মধ্যে আর কার কার অধিকার আছে তা নির্ধারিত হতে হবে আল্লাহর দেয়া শরীয়াতের মাধ্যমে। কাজেই তারা নিজেরা নিজেদের মনগড়া বাতিল পদ্ধতিতে আল্লাহর জন্য যে অংশ উৎসর্গ করে এবং যে অংশ গরীব ও অভাবীদের মধ্যে দান করে দেয়, তাও কোন সৎকাজ হিসেবে গণ্য হবে না। আল্লাহর দরবারে তার গৃহীত হবার কোন কারণ নেই।
টিকা:১০৬) তারা আল্লাহর নামে যে অংশ নির্ধারণ করতো নানা ধরনের চালবাজীর আশ্রয় নিয়ে তার মধ্যেও বিভিন্ন প্রকার কমতি করতে থাকতো এবং প্রত্যেকবার নিজেদের মনগড়া শরীকদের অংশ বাড়াবার প্রচেষ্টা চালাতো, তাদের কর্মনীতির প্রতি এখানে সূক্ষ্ম বিদ্রূপ করা হয়েছে। এ থেকে একথা প্রকাশ হতো যে, নিজেদের মনগড়া উপাস্যদের সাথে তাদের যে মানসিক যোগ আছে তা আল্লাহর সাথে নেই। যেমন আল্লাহর নামে যেসব শস্য বা ফল নির্ধারণ করা হতো তার মধ্য থেকে কিছু পড়ে গেলে তা মনগড়া মাবুদদের অংশে শামিল করা হতো আর মনগড়া মাবুদের অংশ থেকে কিছু পড়ে গেলে বা আল্লাহর অংশে পাওয়া গেলে তা আবার মনগড়া মাবুদদের অংশে ফেরত দেয়া হতো। শস্য ক্ষেত্রের যে অংশ মনগড়া মাবুদদের নযরানার জন্য নির্দিষ্ট ছিল সেদিক থেকে যদি আল্লাহর নযরানার জন্য নির্দিষ্ট অংশের দিকে পানির ধারা প্রবাহিত হতো তাহলে তার সমস্ত ফসল মনগড়া মাবুদদের অংশে দিয়ে দেয়া হতো। কিন্তু এর বিপরীত ঘটনা ঘটলে আল্লাহর অংশে কোন বৃদ্ধি করা হতো না। কোন বছর দুর্ভিক্ষের কারণে যদি নযরানার ফসল খেয়ে ফেলার প্রশ্ন দেখা দিতো, তাহলে আল্লাহর ভাগের ফসল খেয়ে ফেলা হতো। কিন্তু মনগড়া শরীকদের ভাগের ফসলে হাত লাগানো হতো না। ভয় করা হতো, এ অংশে হাত দিলে কোন বালা-মুসিবত নাযিল হয়ে যাবে। কোন কারণে শরীকদের অংশ কম হয়ে গেলে আল্লাহর অংশ থেকে কেটে তা পূরণ করে দেয়া হতো। কিন্তু আল্লাহর অংশ কম হয়ে গেলে শরীকদের অংশ থেকে একটি দানাও সেখানে ফেলা হতো না। এ কর্মনীতির সমালোচনা করা হলে নানা ধরনের মুখরোচক ও চিত্তাকর্ষক ব্যাখ্যার অবতারণা করা হতো। যেমন বলা হতো, আল্লাহ তো কারোর মুখাপেক্ষী নন। তাঁর অংশ কিছু কম হয়ে গেলেও তাঁর কোন পরোয়া নেই। আর শরীকরা তো আল্লাহর বান্দা। তারা আল্লাহর মতো অভাবহীন নয়। কাজেই তাদের এখানে সামান্য কমবেশী হলেও তারা আপত্তি জানায়।
এ কাল্পনিক ধারণা ও কুসংস্কারগুলোর মূল কোথায় প্রোথিত ছিল তা বুঝার জন্য এটা জানা প্রয়োজন যে, আরবের মুর্খ ও অজ্ঞ লোকেরা নিজেদের ধন-সম্পদ থেকে আল্লাহর জন্য যে অংশ নির্ধারণ করতো তা গরীব মিসকীন, মুসাফির, এতিম ইত্যাদির সাহায্যের কাজে ব্যয়িত হতো। আর মনগড়া শরীকদেরকে নযরানা দেবার জন্য যে অংশ নির্ধারণ করতো তা হয় সরাসরি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পেটে চলে যেতো অথবা পূজার বেদীমূলে অর্ঘরূপে পেশ করা হতো এবং এভাবে তাও পরোক্ষভাবে পূজারী ও সেবায়েতদের ঝুলিতে গিয়ে পড়তো। এজন্যই শত শত বছর ধরে এ স্বার্থ শিকারী ধর্মীয় নেতারা ক্রমাগতভাবে উপদেশ দানের মাধ্যমে অজ্ঞ জনতার মনে একথা বসিয়ে দিয়েছিল যে, আল্লাহর অংশ কিছু কম হয়ে গেলে ক্ষতি নেই কিন্তু “আল্লাহর প্রিয়পাত্রদের” অংশে কিছু কম হওয়া উচিত নয় বরং সম্ভব হলে সেখানে কিছু বেশী হয়ে থাকাটাই ভালো।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Anam
Verses :- 136
سَاء مَا يَحْكُمُونَ
Evil is the way they judge!
Some Acts of Shirk
Allah chastises and criticizes the idolators who invented innovations, Kufr and Shirk, and called on partners and rivals with Allah among His creation, although He created every thing, all praise is due to Him. This is why Allah said,
وَجَعَلُواْ لِلّهِ مِمِّا ذَرَأَ
And they assign to Allah from that which He has created,
مِنَ الْحَرْثِ
of the tilth,
meaning, fruits and produce,
وَالَانْعَامِ نَصِيبًا
and of the cattle a share,
meaning a part and a section.
فَقَالُواْ هَـذَا لِلّهِ بِزَعْمِهِمْ وَهَـذَا لِشُرَكَأيِنَا
and they say:”This is for Allah,” according to their claim, “and this is for our partners.”
Allah said next,
فَمَا كَانَ لِشُرَكَأيِهِمْ فَلَ يَصِلُ إِلَى اللّهِ وَمَا كَانَ لِلّهِ فَهُوَ يَصِلُ إِلَى شُرَكَأيِهِمْ
But the share of their “partners” reaches not Allah, while the share of Allah reaches their “partners”!
Ali bin Abi Talhah and Al-Awfi narrated that Ibn Abbas said;
“When they, the enemies of Allah, would cultivate the land or collect produce, they would assign a part of it to Allah and another part to the idol. They would keep the share for the idol, whether land, produce or anything else, and preserve its division to such an extent that they would collect anything that accidentally falls from the share they assigned to Allah and add it to the share of the idol. If the water that they assigned for the idol irrigated something (a section of land, for instance) that they assigned for Allah, they would add whatever this water irrigated to the idol’s share! If the land or produce that they assigned for Allah was accidentally mixed with the share that they assigned for the idol, they would say that the idol is poor. Therefore, they would add it to the share they assigned for the idol and would not return it to the share they assigned for Allah. If the water that they assigned for Allah irrigated what they assigned for the idol they would leave it (the produce) for the idol. They also made some of their other property sacred, like the Bahirah, Sa’ibah, Wasilah and Ham, assigning them to the idols, claiming that they do so as way of seeking a means of approach to Allah. Allah said,
وَجَعَلُواْ لِلّهِ مِمِّا ذَرَأَ مِنَ الْحَرْثِ وَالَانْعَامِ نَصِيبًا
(And they assign to Allah a share of the tilth and cattle which He has created…).”
Similar was said by Mujahid, Qatadah, As-Suddi and others.
Abdur-Rahman bin Zayd bin Aslam commented;
“Every type of slaughter that they would assign for Allah, would never be eaten unless they mentioned the names of their idols when slaughtering it. Yet for what they sacrificed in the names of the idols, they would not mention Allah’s Name when slaughtering it.”
He then recited the Ayah (6:136) until he reached,
سَاء مَا يَحْكُمُونَ
Evil is the way they judge!
This Ayah means, evil is that which they determined, for they committed error in the division. Certainly, Allah is the Lord, Owner and Creator of all things and His is the dominion. All things are His property and under His supreme control, will and decree. There is no deity worthy of worship, or Lord, except Him. And even when the polytheists made this evil division, they did not preserve it, but cheated in it.
Allah said in other Ayat,
وَيَجْعَلُونَ لِلَّهِ الْبَنَـتِ سُبْحَانَهُ وَلَهُمْ مَّا يَشْتَهُونَ
And they assign daughters unto Allah — glory be to Him — and unto themselves what they desire. (16:57)
and,
وَجَعَلُواْ لَهُ مِنْ عِبَادِهِ جُزْءًا إِنَّ الانسَـنَ لَكَفُورٌ مُّبِينٌ
Yet, they assign to some of His servants a share with Him. Verily, man is indeed a manifest ingrate! (43:15)
and,
أَلَكُمُ الذَّكَرُ وَلَهُ الاٍّنثَى
تِلْكَ إِذاً قِسْمَةٌ ضِيزَى
Is it for you the males and for Him the females! That indeed is a division most unfair! (53:21-22).
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
এখানে আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে মুশরিকদেরকে তিরস্কার করা হচ্ছে যারা বিদআত, শিরক ও কুফরী ছড়িয়ে দিয়েছিল এবং মাখলুকাতকে তার শরীক বানিয়ে ছিল । অথচ প্রত্যেক জিনিসেরই সৃষ্টিকর্তা হচ্ছেন সেই পাক পরওয়ারদিগার। এজন্যেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন-এ লোকগুলো জমির উৎপাদন এবং পশুর বংশ থেকে যা কিছু পাচ্ছে তার একটা অংশ আল্লাহর নামে নির্ধারণ করছে এবং নিজেদের ভিত্তিহীন ধারণামতে বলছে; এই অংশ আল্লাহর জন্যে এবং এই অংশ আমাদের শরীকদের জন্যে। কিন্তু শরীকদের নামে যেগুলো রয়েছে সেগুলো তো আল্লাহর জন্যে খরচ করা হয় না, পক্ষান্তরে যেগুলো আল্লাহর নামে রয়েছে সেগুলো তাদের শরীকদের প্রয়োজনে ব্যয় করা হচ্ছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এই আয়াতের তাফসীরে বলেন যে, আল্লাহ তাআলার এই শত্রুরা যখন শস্যক্ষেত্র হতে শস্য উৎপাদন করতো কিংবা খেজুর। বৃক্ষ হতে খেজুর লাভ করতো তখন তারা ওগুলোর কতক অংশ আল্লাহর বলে নির্ধারণ করতো এবং কতক অংশ মূর্তির নামে নির্ধারণ করতো। অতঃপর যেগুলো মর্তির নামে নির্দিষ্ট করতে সেগুলো রক্ষিত রাখতো। অতঃপর আল্লাহর জন্যে নির্ধারিত অংশ হতে যদি কোন কিছু মূর্তির জন্যে নির্ধারিত অংশে পড়ে যেতো তবে তা ঐ ভাবেই রেখে দিতে এবং বলতো-আল্লাহ সম্পদশালী, তিনি মূর্তির মুখাপেক্ষী নন। পক্ষান্তরে মূর্তির জন্যে নির্ধারিত অংশ হতে কোন কিছু আল্লাহর জন্যে নির্ধারিত অংশে পড়ে গেলে আল্লাহর অংশ হতে ওটা নিয়ে মূর্তির অংশ পূরণ করতো এবং বলতো-এটা আমাদের দেবদেবীরই হক এবং এরা দরিদ্র ও মুখাপেক্ষী। আল্লাহর জন্যে নির্ধারিত জমির পানি বেড়ে গিয়ে মূর্তির জন্যে নির্ধারিত কর্ষণকৃত জমিকে ভিজিয়ে দিলে তারা এরূপ হতে দিতে এবং ওটাকে মূর্তির জন্যেই নির্দিষ্ট করে দিতো। তারা বাহিরা’, সায়েবা’, ‘হাম’ এবং ‘ওয়াসীলা পশুগুলোকে মূর্তির জন্যে নির্দিষ্ট করতো এবং দাবী করতো যে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই তারা ঐ পশুগুলো দ্বারা উপকার লাভ করা হারাম মনে করে থাকে। এই আয়াতে এই বিষয়ের উপরই আলোকপাত করা হয়েছে। (খাওলান গোত্রের ‘আম্মে আনাস’ নামক একটি প্রতিমা ছিল। তারা ওর জন্যে অংশ নির্ধারণ করতো এবং আল্লাহর জন্যেও অংশ নির্ধারণ করতো। অতঃপর আল্লাহর জন্যে নির্ধারিত অংশের মধ্যে ওর অংশের কিছুটা পড়ে গেলে তারা ওকে ওটা ফিরিয়ে দিত এবং বলতোঃ এটা দুর্বল মা’বৃদ।এভাবেই সুহাইলী ইবনে ইসহাক হতে এটা বর্ণনা করেছেন। এই খাগুলান গোত্রের লোকেরা হচ্ছে আমর ইবনুল হারিস ইবনে কুযাআর বংশধর)
ইবনে আসলাম বলেন যে, তারা আল্লাহর জন্যে নির্ধারিত কোন জন্তু যবাই করলে আল্লাহর নামের সাথে প্রতিমার নামও উচ্চারণ করতো। ঘটনাক্রমে যদি শুধু আল্লাহর নামই নেয়া হতো এবং প্রতিমার নাম না নেয়া হতো তবে তারা ঐ জবাইকৃত জন্তুর গোশত খেতো না। পক্ষান্তরে প্রতিমার জন্যে নির্ধারিত জন্তু যবাই করার সময় তারা আল্লাহর নাম নিতো না, শুধু প্রতিমার নাম নিতো। অতঃপর তিনি (আরবী) (অর্থাৎ তাদের ফায়সালা ও বণ্টননীতি কতইনা জঘন্য!) এই আয়াতটি পাঠ করেন।
প্রথমে তো তারা বণ্টনেই ভুল করেছে। কেননা, আল্লাহ তা’আলাই প্রত্যেক জিনিসের প্রতিপালক ও সৃষ্টিকর্তা। তিনিই রাজাধিপতি। সবকিছুই তার ক্ষমতার মধ্যে। তিনি ছাড়া অন্য কেউ মা’বূদ নেই। সবকিছু তাঁর ইচ্ছাধীন। এরপর যে বিকৃত বণ্টন তারা করলো সেখানেও তারা সঠিক পন্থা অবলম্বন করলো না, বরং তাতেও যুলুম ও অন্যায় করলো। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “তারা আল্লাহর জন্যে নির্ধারণ করলো কন্যা, আর নিজেদের জন্যে নির্ধারণ করলো পুত্র!” আল্লাহ পাক আরও বলেনঃ “তারা আল্লাহর বান্দাদেরকেই তাঁর পুত্র বানিয়ে দিলো! মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ।” আর এক জায়গায় তিনি বলেনঃ “তোমাদের জন্যে ছেলে আর আল্লাহর জন্যে মেয়ে, এটা অত্যন্ত অপ্রীতিকর ও বেটংগা বন্টনই বটে!”