أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٢٩٣)-৪৯৫
www.motaher21.net
সুরা: আল্ আরাফ
সুরা:৭
১১-১৫ নং আয়াত:-
لَمۡ یَکُنۡ مِّنَ السّٰجِدِیۡنَ
তখন ইবলীস ছাড়া সবাই সাজদাহ করল,
Prostration of the Angels to Adam and Shaytan’s Arrogance .
وَ لَقَدۡ خَلَقۡنٰکُمۡ ثُمَّ صَوَّرۡنٰکُمۡ ثُمَّ قُلۡنَا لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اسۡجُدُوۡا لِاٰدَمَ ٭ۖ فَسَجَدُوۡۤا اِلَّاۤ اِبۡلِیۡسَ ؕ لَمۡ یَکُنۡ مِّنَ السّٰجِدِیۡنَ ﴿۱۱﴾
আমিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর তোমাদেরকে রূপ দান করেছি, তারপর আমি মালাইকাদেরকে/ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি – তোমরা আদমকে সাজদাহ কর। তখন ইবলীস ছাড়া সবাই সাজদাহ করল, যারা সাজদাহ করল সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হলনা।
قَالَ مَا مَنَعَکَ اَلَّا تَسۡجُدَ اِذۡ اَمَرۡتُکَ ؕ قَالَ اَنَا خَیۡرٌ مِّنۡہُ ۚ خَلَقۡتَنِیۡ مِنۡ نَّارٍ وَّ خَلَقۡتَہٗ مِنۡ طِیۡنٍ ﴿۱۲﴾
তিনি (আল্লাহ) তাকে (ইবলীসকে) জিজ্ঞেস করলেনঃ আমি যখন তোকে সাজদাহ (আদমকে) করতে আদেশ করলাম তখন কোন বস্তু তোকে নত শির হতে নিবৃত্ত করল? সে উত্তরে বললঃ আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ, আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদামাটি দ্বারা।
قَالَ فَاہۡبِطۡ مِنۡہَا فَمَا یَکُوۡنُ لَکَ اَنۡ تَتَکَبَّرَ فِیۡہَا فَاخۡرُجۡ اِنَّکَ مِنَ الصّٰغِرِیۡنَ ﴿۱۳﴾
আল্লাহ বললেনঃ এই স্থান থেকে নেমে যা, এখানে থেকে অহংকার করা যেতে পারেনা; সুতরাং বের হয়ে যা, নিশ্চয়ই তুই ইতরদের অন্তর্ভুক্ত।
قَالَ اَنۡظِرۡنِیۡۤ اِلٰی یَوۡمِ یُبۡعَثُوۡنَ ﴿۱۴﴾
সে বললঃ আমাকে পুনরুত্থান দিন পর্যন্ত অবকাশ দিন!
قَالَ اِنَّکَ مِنَ الۡمُنۡظَرِیۡنَ ﴿۱۵﴾
আল্লাহ বললেনঃ তোকে অবকাশ দেয়া হল।
১১-১৫ নং আয়াতের তাফসীরঃ
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
(فَبِمَآ أَغْوَيْتَنِيْ)
অর্থাৎ আমাকে পথভ্রষ্ট করার কারণে।
(مَذْءُوْمًا مَّدْحُوْرًا)
অর্থাৎ নিন্দনীয়, বিতাড়িত ও ক্রোধভাজন।
(فَدَلّٰهُمَا بِغُرُوْرٍ)
অর্থাৎ ধোঁকা দিয়ে ধীরে ধীরে তাদের দু’জনকে গাছের নিকটবর্তী করল, অবশেষে তারা গাছের ফল খেল।
এ আয়াতগুলো আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি, ফেরেশতা কর্তৃক তাকে সিজদাহ করানো, জান্নাতে বসবাস, শয়তানের কুমন্ত্রণায় নিষেধকৃত বিষয়ে লিপ্ত হওয়া, জান্নাত থেকে বহিস্কার, আল্লাহ তা‘আলার কাছে তাওবাহ করা এবং আল্লাহ তা‘আলার সাথে শয়তানের প্রতিশ্র“তি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এ সবের অধিকাংশ বিষয় সূরা বাক্বারার শুরুতে (৩৪-৩৯ নং আয়াতে) আলোচনা করা হয়েছে।
(وَلَقَدْ خَلَقْنٰكُمْ ثُمَّ صَوَّرْنٰكُمْ)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَا۬ئِكَةِ إِنِّيْ خَالِقٌۭ بَشَرًا مِّنْ صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُوْنٍ – فَإِذَا سَوَّيْتُه۫ وَنَفَخْتُ فِيْهِ مِنْ رُّوْحِيْ فَقَعُوْا لَه۫ سٰجِدِيْنَ)
“স্মরণ কর, যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদেরকে বললেন: ‘আমি গন্ধযুক্ত কর্দমের শুষ্ক ঠন্ঠনা মৃত্তিকা হতে মানুষ সৃষ্টি করেছি; ‘যখন আমি তাকে পূর্ণমাত্রায় বানিয়ে দেব এবং তাতে আমার পক্ষ হতে রূহ সঞ্চার করব তখন তোমরা তার প্রতি সিজ্দাবনত হও’।” (সূরা হিজর ১৫:২৮-২৯)
(مَا مَنَعَكَ أَلَّا تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَ)
‘আমি যখন তোমাকে আদেশ দিলাম তখন কিসে তোমাকে সিজদাহ দিতে বারণ করল?’ অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বললেন, আদমকে নিজের উভয় হাতে সৃষ্টি করেছেন, তারপর ফেরেশতাদেরকে সিজদাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قَالَ يٰٓإِبْلِيْسُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ ط أَسْتَكْبَرْتَ أَمْ كُنْتَ مِنَ الْعَالِيْنَ)
“তিনি (আল্লাহ) বললেন: হে ইবলীস! আমি যাকে নিজের দু’হাতে সৃষ্টি করেছি, তাকে সিজদাহ করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি কি অহঙ্কার করলে, না তুমি শ্রেষ্ঠ মর্যাদাশীলদের একজন?” (সূরা সোয়াদ ৩৮:৭৫)
(أَنَا خَيْرٌ مِّنْهُ)
‘আমি তার অপেক্ষা উত্তম’ অর্থাৎ শয়তান আদম (আঃ)-কে সিজদাহ না করার কারণ পেশ করল: আমি তার থেকে শ্রেষ্ঠ। আমি আগুন দ্বারা সৃষ্ট আর সে মাটি দ্বারা সৃষ্ট। আগুন মাটি থেকে উপরে থাকে। এটা ছিল শয়তানের হিংসা ও অহঙ্কারের বহিঃপ্রকাশ।
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন: সে ছিল অহঙ্কারী। অহঙ্কার হল সকল ধ্বংসের মূল। ইবলীস প্রথমে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্যশীল বান্দা হওয়া সত্ত্বেও পরে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে বিতাড়িত হল।
(أَنْظِرْنِيْ إِلٰي يَوْمِ يُبْعَثُوْنَ)
‘পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দাও।’ শয়তান বিতাড়িত হবার পর আল্লাহ তা‘আলার কাছে কিয়ামত অবধি আয়ু চাইলে আল্লাহ তা‘আলা তা মেনে নিলেন।
(ثُمَّ لَاٰتِيَنَّهُمْ مِّنْۭ بَيْنِ)
‘অতঃপর আমি তাদের নিকট আসব তাদের সম্মুখ…’ অর্থাৎ শয়তান মানুষকে ধোঁকা দেয়ার জন্য সামনে, পেছনে, ডান ও বাম দিক দিয়ে আসবে। কিন্তু ওপর দিক থেকে আসতে পারবে না। আর মানুষের কাছে খারাপ অশ্লীল বেহায়াপনাপূর্ণ কাজগুলো চাকচিক্য করে তুলে ধরবে।
আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, জীবিকা নির্বাহের সব উপকরণ দিয়েছেন। এসত্ত্বেও মানুষ আল্লাহ তা‘আলার বিধানমত চলে কিনা তা পরীক্ষার জন্য ইবলীসকে সুযোগ দিয়েছেন। যারা আল্লাহ তা‘আলার কৃতজ্ঞ বান্দা তারা আল্লাহ তা‘আলার পথে অটল থাকবে, তারা মুক্তি পাবে। আর যারা ইবলীসের অনুসরণ করবে আল্লাহ তা‘আলা ইবলীসসহ তাদেরকে জাহান্নামে দিবেন।
(وَقَاسَمَهُمَا)
‘সে তাদের উভয়ের নিকট শপথ করে বলল’ অর্থাৎ শয়তান আদম (আঃ)-এর কাছে আল্লাহ তা‘আলার নামে শপথ করে বলল: নিশ্চয়ই আমি তোমাদের কল্যাণকামী। ঐ গাছের কাছে যেতে আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন এ কারণে, যাতে তোমরা ফেরেশতা না হয়ে যাও অথবা চিরস্থায়ী না হতে পার। কত বড় মিথ্যুক শয়তান। শয়তানের ধোঁকায় পড়ে নিষিদ্ধ কাজে জড়িত হবার পর নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে আদম ও হাওয়া (আলাইহিমাস সালাম) উভয়ে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল।
(فِيْهَا تَحْيَوْنَ وَفِيْهَا… )
‘সেখানেই তোমরা জীবন যাপন করবে’ যেমন অন্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বললেন:
(مِنْهَا خَلَقْنٰكُمْ وَفِيْهَا نُعِيْدُكُمْ وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرٰي)
“আমি মৃত্তিকা হতে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, তাতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিব এবং তা হতে পুনরায় তোমাদেরকে বের করব।” (সূরা ত্বহা ২০:৫৫) যে শয়তান আদম (আঃ)-এর সুখ সহ্য করতে পারেনি, বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করেছে সে শয়তান আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করতে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ। আমরা যেন কিছুতেই তার কথা শুনে সঠিক পথ না হারাই। এ সম্পর্কে আরো আলোচনা সূরা হিজর-এ আসবে ইনশা-আল্লাহ ।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শয়তানের অহঙ্কারের কথা অবগত হলাম, অহংকারই ধ্বংসের মূল, এ অহংকারের কারণে মানুষ হক হতে বিচ্যুত ও বঞ্চিত হয়।
২. শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু, তার প্রতিশ্র“তি মিথ্যা, সে ধোঁকা দিয়ে মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে চায়, তাই তার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
৩. শয়তানের চক্রান্তে পড়ে অন্যায় করলে সঙ্গে সঙ্গে তাওবাহ করা উচিত, এটাই আদম (আঃ)-এর বৈশিষ্ট্য। আর তাওবাহ না করে অপরাধে অটল থাকা শয়তানের কাজ।
৪. মৃত্যুর পর আবার পুনরুত্থান হবে, সেখানে মানুষের ভাল-মন্দ কর্মের প্রতিদান ও প্রতিফল দেয়া হবে তার প্রমাণ পেলাম।
৫. নগ্নতা শয়তানের প্রথম কাজ, সে নগ্নতার মাধ্যমে সমাজে বেহায়াপনা ছড়িয়ে দিতে চায়।
৬. সমাজে অশ্লীল-বেহায়াপনা ও ঝগড়া-বিবাদ ছড়িয়ে দেয়ার জন্য শয়তান নারীদেরকে বড় ধরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Araf
Sura:7
Verses :- 11- 15
لَمۡ یَکُنۡ مِّنَ السّٰجِدِیۡنَ
Prostration of the Angels to Adam and Shaytan’s Arrogance .
Prostration of the Angels to Adam and Shaytan’s Arrogance
Allah informs the Children of Adam about the honor of their father and the enmity of Shaytan, who still has envy for them and for their father Adam. So they should beware of him and not follow in his footsteps.
Allah said,
وَلَقَدْ خَلَقْنَاكُمْ ثُمَّ صَوَّرْنَاكُمْ ثُمَّ قُلْنَا لِلْمَليِكَةِ اسْجُدُواْ لادَمَ فَسَجَدُواْ
And surely, We created you and then gave you shape; then We told the angels, “Prostrate yourselves to Adam,” and they prostrated,
This is like His saying,
وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَـيِكَةِ إِنِّى خَـلِقٌ بَشَرًا مِّن صَلْصَـلٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِى فَقَعُواْ لَهُ سَـجِدِينَ
And (remember) when your Lord said to the angels:”I am going to create a man from dried (sounding) clay of altered mud. So, when I have fashioned him completely and breathed into him the soul (which I created for him), then fall (you) down prostrating yourselves unto him.” (15:28-29)
After Allah created Adam with His Hands from dried clay of altered mud and made him in the shape of a human being, He blew life into him and ordered the angels to prostrate before him, honoring Allah’s glory and magnificence. The angels all heard, obeyed and prostrated, but Iblis did not prostrate.
إِلاَّ إِبْلِيسَ لَمْ يَكُن مِّنَ السَّاجِدِينَ
except Iblis (Shaytan), he refused to be of those who prostrated.
We explained this subject in the beginning of Surah Al-Baqarah. Therefore, the Ayah (7:11) refers to Adam, although Allah used the plural in this case, because Adam is the father of all mankind.
Similarly, Allah said to the Children of Israel who lived during the time of the Prophet,
وَظَلَّلْنَا عَلَيْكُمُ الْغَمَامَ وَأَنزَلْنَا عَلَيْكُمُ الْمَنَّ وَالسَّلْوَى
And We shaded you with clouds and sent down on you manna and the quail, (2:57)
This refers to their forefathers who lived during the time of Moses. But, since that was a favor given to the forefathers, and they are their very source, then the offspring have also been favored by it. This is not the case in:
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الاِنْسَـنَ مِن سُلَـلَةٍ مِّن طِينٍ
And indeed We created man out of an extract of clay (water and earth). (23:12)
For this merely means that Adam was created from clay. His children were created from Nutfah (mixed male and female sexual discharge).
This last Ayah is thus talking about the origin of mankind, not that they were all created from clay, and Allah knows best.
Allah tells,
قَالَ مَا مَنَعَكَ أَلاَّ تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَ قَالَ أَنَاْ خَيْرٌ مِّنْهُ خَلَقْتَنِي مِن نَّارٍ وَخَلَقْتَهُ مِن طِينٍ
(Allah) said:”What prevented you (O Iblis) that you did not prostrate, when I commanded you”
Iblis said:”I am better than him (Adam), You created me from fire, and him You created from clay.”
مَا مَنَعَكَ أَلاَّ تَسْجُدَ
(Allah) said:What prevented you (O Iblis) that you did not prostrate!
According to Ibn Jarir, meaning,
what stopped and hindered you from prostrating after I ordered you to do so,
This meaning is sound, and Allah knows best.
Iblis, may Allah curse him, said,
أَنَاْ خَيْرٌ مِّنْهُ
(I am better than him (Adam)),
and this excuse is worse than the crime itself! Shaytan said that he did not obey Allah because he who is better cannot prostrate to he who is less.
Shaytan, may Allah curse him, meant that he is better than Adam, “So how can You order me to prostrate before him!” Shaytan said that he is better than Adam because he was created from fire while, “You created him from clay, and fire is better.” The cursed one looked at the origin of creation not at the honor bestowed, that is, Allah creating Adam with His Hand and blowing life into him. Shaytan made a false comparison when confronted by Allah’s command,
فَقَعُوا لَهُ سَاجِدِينَ
(Then you fall down prostrate to him) (38:72). Therefore, Shaytan alone contradicted the angels, because he refused to prostrate. He, thus, became `Ablasa’ from the mercy, meaning, lost hope in acquiring Allah’s mercy. He committed this error, may Allah curse him, due to his false comparison.
His claim that the fire is more honored than mud was also false, because mud has the qualities of wisdom, forbearance, patience and assurance, mud is where plants grow, flourish, increase, and provide good. To the contrary, fire has the qualities of burning, recklessness and hastiness. Therefore, the origin of creation directed Shaytan to failure, while the origin of Adam led him to return to Allah with repentance, humbleness, obedience and submission to His command, admitting his error and seeking Allah’s forgiveness and pardon for it.
Muslim recorded that Aishah said that the Messenger of Allah said,
خُلِقَتِ الْمَلَيِكَةُ مِنْ نُورٍ وَخُلِقَ إِبْلِيسُ مِنْ مَارِجٍ مِنْ نَارٍ وَخُلِقَ ادَمُ مِمَّا وُصِفَ لَكُم
The angels were created from light, Shaytan from a smokeless flame of fire, while Adam was created from what was described to you.
Iblis was the First to use Qiyas (Analogical Comparison)
Ibn Jarir recorded that Al-Hasan commented on Shaytan’s statement,
خَلَقْتَنِي مِن نَّارٍ وَخَلَقْتَهُ مِن طِينٍ
(“You created me from fire, and him You created from clay).”
“Iblis used Qiyas (analogy), and he was the first one to do so.”
This statement has an authentic chain of narration.
Ibn Jarir recorded that Ibn Sirin said,
“The first to use Qiyas was Iblis, and would the sun and moon be worshipped if it was not for Qiyas”
This statement also has an authentic chain of narration.
Allah ordered Iblis;
قَالَ فَاهْبِطْ مِنْهَا
(Allah) said:”Get down from this,
because you defied My command and disobeyed Me. Get out,
فَمَا يَكُونُ لَكَ أَن تَتَكَبَّرَ فِيهَا
it is not for you to be arrogant here.”
in Paradise, according to the scholars of Tafsir.
It could also refer to particular status which he held in the utmost highs.
Allah said to Iblis,
فَاخْرُجْ إِنَّكَ مِنَ الصَّاغِرِينَ
Get out, for you are of those humiliated and disgraced.
as just recompense for his ill intentions, by giving him the opposite of what he intended (arrogance).
This is when the cursed one remembered and asked for respite until the Day of Judgment,
قَالَ فَأَنظِرْنِي إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ
(Iblis) said:”Allow me respite till the Day they are raised up (the Day of Resurrection).”
(Allah) said:”You are of those respited.”
It is like His statement;
قَالَ رَبِّ فَأَنظِرْنِى إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ
قَالَ فَإِنَّكَ مِنَ الْمُنظَرِينَ
Then allow me respite till the Day they are raised up. (Allah) said:”Then you are of those respited.” (15:36-37)
Allah gave Shaytan what he asked for out of His wisdom, being His decision and decree, that is never prevented or resisted. Surely, none can avert His decision, and He is swift in reckoning.
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
এখানে আল্লাহ পাক মানব-পিতা আদম (আঃ)-এর মর্যাদা এবং তাঁর শত্রু ইবলীসের বর্ণনা দিচ্ছেন, যে ইবলীস হযরত আদম (আঃ) ও তাঁর সন্তানদের সাথে শত্রুতা রাখে। যেন মানুষ তাদের শত্রু ইবলীস থেকে বেঁচে থাকে এবং তার পথে না চলে। তাই তিনি মানব জাতিকে সম্বোধন করে বলেনঃ আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের আকৃতি দান করেছি। তারপর আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছি-আদিম (আঃ)-কে সিজদা কর । আমার এ নির্দেশ পালনার্থে সবাই সিজদা করলো। আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতামণ্ডলীকে বলেছিলেন-আমি মানব সৃষ্টি করবো, যাকে আমি ঠনঠনে শুষ্ক মাটি দ্বারা তৈরী করবো। সুতরাং যখন আমি ওকে তৈরী করে ওতে রূহ ফুঁকে দিলাম এবং একটা জীবন্ত দেহ তৈরী হয়ে গেল, তখন আমার এই ক্ষমতা দেখে সবাই আদম (আঃ)-এর সিজদায় পড়ে গেল। আর এর প্রয়োজনীয়তা এজন্যেই ছিল যে, যখন আল্লাহ তা’আলা আদম (আঃ)-কে নিজের হাতে মসৃন চটচটে মাটি দ্বারা তৈরী করলেন এবং তাকে একটা সোজা দেহবিশিষ্ট মানবীয় রূপ দান করলেন আর তার মধ্যে রূহ ফুকে দিলেন, তখন তিনি ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিলেন- ‘কুন’ শব্দ দ্বারা বানানো মাখলুককে নয়, বরং স্বয়ং আমার হাতে বানানো পুতুলকে সিজদা কর। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল কুদরতে ইলাহীকে সিজদা করা এবং তার শান শওকতের সম্মান করা। এই নির্দেশ দেয়া মাত্রই সমস্ত ফেরেশতা নির্দেশ পালনার্থে সিজদা করলেন। কিন্তু একমাত্র ইবলীস সিজদাহ করলো না। প্রথম সূরা অর্থাৎ সূরায়ে বাকারায় এর উপর যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে। এখন এই স্থানে আমরা যা কিছু আলোচনা করলাম তা হচ্ছে। ওটাই যা ইবনে জারীর (রঃ) অবলম্বন করেছেন।
(আরবী) -এর তাফসীরে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, প্রথমে মানুষকে পুরুষ লোকদের পৃষ্ঠদেশে সৃষ্টি করা হয়। এরপর স্ত্রী লোকদের গর্ভাশয়ে তার আকৃতি দান করা হয়। কাতাদাহ (রঃ) এবং যহ্হাক (রঃ) এই আয়াতের তাফসীরে বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে-আমি আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করেছি। তারপর তার সন্তানের আকৃতি দান করেছি। কিন্তু এতে চিন্তা ভাবনার অবকাশ রয়েছে। কেননা, এর পরেই আল্লাহ পাক বলেছেন- (আরবী)-এটা একথাই প্রমাণ করছে যে, এর দ্বারা আদম (আঃ)-কেই বুঝানো হয়েছে। আর এখানে বহুবচনের সাথে যে বলা হয়েছে, এর কারণ এই যে, আদম (আঃ) হচ্ছেন মানব জাতির পিতা। যেমন আল্লাহ তা’আলা তো সম্বোধন করছেন নবী (সঃ)-এর যুগের বানী ইসরাঈলদেরকে। অর্থাৎ (আরবী) (২:৫৭) অর্থাৎ গামাম’, ‘মান’ ও ‘সালওয়া তো এসেছিল বর্তমান যুগের বানী ইসরাঈলের পূর্বপূরুষদের উপর। তাহলে এর দ্বারা তো ঐ লোকদেরকেই বুঝানো হয়েছে যারা হযরত মূসা (আঃ)-এর যুগে ছিল। কিন্তু বাপ-দাদাদের উপর অনুগ্রহ করাও প্রকতপক্ষে তাদের বংশধরদের উপরও অনুগহ করা হয়ে থাকে। তাহলে এই অনুগ্রহ যেন সন্তানদের উপরও করা হয়েছিল। এ জন্যেই (আরবী) সে দ্বারা সম্বোধন করেছেন। তাহলে যেন (আরবী) শব্দ দ্বারা আদম (আঃ) এবং তাঁর সন্তানগণ সকলকেই বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ সকলকেই একত্রিত করা হয়েছে। এটা আল্লাহ পাকের নিম্নের উক্তির বিপরীতঃ (আরবী) (২৩:১২) এখানে (আরবী) শব্দ দ্বারা (আরবী) উদ্দেশ্য। অর্থাৎ বহুবচন উদ্দেশ্য নয়, বরং একটি আত্মা অর্থাৎ হযরত আদম (আঃ)-এর সত্তা উদ্দেশ্য, যাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর সমস্ত সন্তানকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়নি, বরং নুঙ্কা’ বা বীর্য থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এখন যে বলা হয়-“মানুষকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে তা শুধু এই কারণে যে, মানুষের পিতা আদম (আঃ)-কে মানুষের মত বীর্য থেকে নয়, বরং মাটি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছিল। এসব বিষয়ে আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।
কোন কোন আরবী ব্যাকরণবিদের উক্তি অনুসারে (আরবী)-এই স্থানে (আরবী) শব্দটি অতিরিক্ত এবং একে ইনকার বা অস্বীকৃতির প্রতি গুরুত্ব আরোপের জন্যে আনা হয়েছে। যেমন কোন কবি বলেছেন
(আরবী) এখানে (আরবী) -শব্দটি (আরবী)-এর জন্যে এসেছে এবং একে (আরবী)-এর উপর গুরুত্ব বুঝাবার জন্যে আনা হয়েছে। এখানে যেন (আরবী) শব্দটি অতিরিক্ত। (আরবী) আল্লাহ পাকের এই উক্তিটি এর পূর্বেই এসেছে। ইবনে জারীর (রঃ)-এর উক্তি এই যে, (আরবী) অন্য একটি (আরবী) -এর অন্তর্ভুক্ত। যার অর্থ হবে“কোন জিনিসটি তোমাকে বাধ্য করেছিল যে, তুমি সিজদা করবে না, অথচ আমার নির্দেশ বিদ্যমান ছিল?” এ উক্তিটি সবল ও উত্তম। আল্লাহ তাআলাই এসব বিষয়ে সবচেয়ে ভাল জানেন।
ইবলীস উত্তরে বলেছিল-“আমি আদম (আঃ)-এর চেয়ে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ। আর যে শ্রেষ্ঠ সে এমন কাউকে সিজদা করতে পারে না যার উপর তার শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। সুতরাং আমার প্রতি আদম (আঃ)-এর সিজদা করার হুকুম হল কেন?” সে দলীল পেশ করেছিল যে, তাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে। আর আগুন হচ্ছে মাটি হতে বেশী মর্যাদা সম্পন্ন যা দ্বারা আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। সে লক্ষ্য করেছে উপাদানের প্রতি, কিন্তু ঐ শরীফ আদম (আঃ)-এর প্রতি লক্ষ্য করেনি যাকে মহান আল্লাহ নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং তার মধ্যে স্বীয় রূহ ভরে দিয়েছেন! সে একটা বিকৃত অনুমান কায়েম করেছে যা মহান আল্লাহর প্রকাশ্য হুকুমের বিরোধী।
মোটকথা, সমস্ত ফেরেস্তা সিজদায় পড়ে গেলেন। ইবলীস সিজদা না করার কারণে ফেরেশতাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লো এবং আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়ে গেল। এই নৈরাশ্য প্রকৃতপক্ষে হচ্ছে তার নিজের ভুলেরই প্রতিফল এবং সে কিয়াস বা অনুমানেও ভুল করেছিল। তার দাবী ছিল এই যে, আগুন মাটি হতে শ্রেষ্ঠ। কিন্তু মাটির শান হচ্ছে ধৈর্য, সহিষ্ণুতা, নম্রতা এবং কাজে স্থিরতা। তা ছাড়া মাটি হচ্ছে উদ্ভিদ ও লতাপাতা জন্মিবার স্থান। আগুনের শান হচ্ছে পুড়িয়ে দেয়া, ইন্দ্রিয়াবেগ এবং দ্রুততা। ইবলীসের উপাদান তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আর আদম (আঃ)-এর উপাদান রুজু, অপারগতা এবং আনুগত্য স্বীকার করে তার উপকার সাধন করেছিল । হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “ফেরেশতাদেরকে নূর দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে, ইবলীসকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অগ্নিশিখা দ্বারা, আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে মাটি দ্বারা এবং হ্রদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে যাফরান দ্বারা।” ইবলীস কিয়াস বা অনুমান কায়েমকারী। আর সূর্য ও চন্দ্রের ইবাদতও কিয়াসের উপর ভিত্তি করেই শুরু হয়।
আল্লাহ পাক এখানে ইবলীসকে এমন বিষয় সম্পর্কে সম্বোধন করলেন যা অবশ্যই সংঘটিত হবে। তিনি বললেন-তুমি আমার আদেশ অমান্য করা এবং আমার আনুগত্য থেকে বের হয়ে যাওয়ার কারণে এখান থেকে বেরিয়ে যাও। তোমার অহংকার করার কোন অধিকার ছিল না।
অধিকাংশ মুফাসসির (আরবী)-এর (আরবী) সর্বনামটিকে (আরবী)-এর দিকে ফিরিয়ে থাকেন। আবার ইবলীসের (আরবী)-তে যে মর্যাদা ছিল সেইদিকে (আরবী) সর্বনামটির ফিরারও সম্ভাবনা রয়েছে।
মহান আল্লাহ বলেন-তুমি বেরিয়ে যাও। নিশ্চয়ই তুমি লাঞ্ছিত ও ঘৃণিত। এটা ছিল ইবলীসের হঠকারিতারই প্রতিফল। এখানে ইবলীস একটা কথা চিন্তা করলো এবং কিয়ামতের দিবস পর্যন্ত অবকাশ চাইলো। সে আরয করলোঃ হে আল্লাহ! শাস্তি প্রদানে আমাকে কিয়ামত পর্যন্ত অবকাশ দিন। আল্লাহ পাক তখন তাকে বললেন-“যাও তোমাকে অবকাশ দেয়া হলো। এর মধ্যেও আল্লাহ তা’আলার নিপুণতা লুকায়িত ছিল এবং তাঁর ইচ্ছাই কাজ করছিল। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধাচরণ করা যেতে পারে না। তাঁর হুকুমের পর আর কারো হুকুম চলতে পারে না। তিনি সত্বর হিসাব গ্রহণকারী।
তাফসীরে আবুবকর যাকারিয়া বলেছেন:-
এ আয়াতের তাফসীরে ইবন আব্বাস বলেন, এখানে সৃষ্টি করার অর্থ প্রথমে আদমকে সৃষ্টি করা। আর আকৃতি প্রদানের কথা বলে তার সন্তানদেরকে বোঝানো হয়েছে। [তাবারী] মুজাহিদ বলেন, এখানে সৃষ্টি করার কথা বলে আদম এবং আকৃতি প্রদানের কথা বলে, আদমের সন্তানদেরকে আদমের পৃষ্ঠে আকৃতি প্রদানের কথা বোঝানো হয়েছে। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হচ্ছে যে, ইবলীসকে আল্লাহ্ তা’আলা আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন। আর যদি ইবলীসকে সমস্ত জিন জাতির পিতা বলা হয়, তখন তো এ ব্যাপারে আর কোন কথাই থাকে না। কারণ অন্যান্য আয়াতেও জিন জাতিকে আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আল্লাহ বলেন, “আর এর আগে আমরা সৃষ্টি করেছি জিনদেরকে অতি উষ্ণ নিধুম আগুন থেকে” [সূরা আল-হিজর:২৭] তাছাড়া অন্যত্র আরও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, জিন জাতিকে ‘মারেজ’ থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর ‘মারেজ’ হচ্ছে, নির্ধুম অগ্নিশিখা। আল্লাহ বলেন, “এবং জিনকে সৃষ্টি করেছেন নির্ধুম আগুনের শিখা হতে ” [সূরা আর-রহমান ১৫] [আদওয়াউল বায়ান]
‘সাগেরীন’ শব্দটি বহুবচন। এক বচন হলো ‘সাগের’। অর্থ লাঞ্ছনা ও অবমাননার মধ্যে নিজেকে নিয়ে রাখা। শব্দটি মূল হচ্ছে, সাগার যার অর্থ, সবচেয়ে কঠিন লাঞ্ছনা ও অবমাননার শিকার হওয়া। [আদওয়াউল বায়ান] অর্থাৎ যে ব্যক্তি নিজেই লাঞ্ছনা, অবমাননা ও নিকৃষ্টতর অবস্থা অবলম্বন করে। সুতরাং আল্লাহর বাণীর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর বান্দা ও সৃষ্টি হয়েও তোমার অহংকারে মত্ত হওয়া এবং তুমি নিজের মর্যাদা ও শ্রেষ্টত্বের যে ধারণা নিজেই তৈরী করে নিয়েছ তার দৃষ্টিতে তোমার রবের হুকুম তোমার জন্য অবমাননাকর মনে হওয়া ও সে জন্য তা অমান্য করার অর্থ নিজেই নিজেকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করতে দেয়া। শ্রেষ্ঠত্বের মিথ্যা অহমিকা, মর্যাদার ভিত্তিহীন দাবী এবং কোন জন্মগত স্বতঃসিদ্ধ অধিকার ছাড়াই নিজেকে অযথা শ্রেষ্ঠত্বের আসনে সমাসীন মনে করা তোমাকে বড়, শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাশীল করতে পারে না। বরং এর ফলে তুমি মিথু্যক, লাঞ্ছিত ও অপমানিতই হবে এবং তোমার এ লাঞ্ছনা ও অবমাননার কারণ হবে তুমি নিজেই। কুরআনের অন্যত্র মিথ্যা অহঙ্কারের পরিণাম বর্ণিত হয়েছে। কোথাও বলা হয়েছে যে, অহঙ্কারী আল্লাহর আয়াতসমূহ ও তাঁর নিদর্শনাবলী বুঝতে অক্ষম হয়ে যায়। সে তা থেকে হিদায়াত পায় না। আল্লাহ বলেন, “যমীনে যারা অন্যায়ভাবে অহংকার করে বেড়ায় আমার নিদর্শনসমূহ থেকে আমি তাদের অবশ্যই ফিরিয়ে রাখব। আর তারা প্রত্যেকটি নিদর্শন দেখলেও তাতে ঈমান আনবে না এবং তারা সৎপথ দেখলেও সেটাকে পথ বলে গ্রহণ করবে না, কিন্তু তারা ভুল পথ দেখলে সেটাকে পথ হিসেবে গ্রহণ করবে।” [সূরা আল-আ’রাফ: ১৪৬] আবার কোথাও বলা হয়েছে যে, অহঙ্কারীর ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম। আল্লাহ বলেন, “কাজেই তোমরা দরজাগুলো দিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ কর, তাতে স্থায়ী হয়ে। অতঃপর অহংকারীদের আবাসস্থল কত নিকৃষ্ট!” [সূরা আন-নাহল: ২৯] আরও বলেন, “অহংকারীদের আবাসস্থল কি জাহান্নাম নয়?” [সূরা আয-যুমার: ৬০] আরও বলেন, “বলা হবে, ‘জাহান্নামের দরজাসমূহে প্রবেশ কর তাতে স্থায়ীভাবে অবস্থানের জন্য। অতএব অহংকারীদের আবাসস্থল কত নিকৃষ্ট!” [ সূরা আয-যুমার:৭২] “নিশ্চয় যারা অহংকারবশে আমার ইবাদাত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে।” [সূরা গাফির:৬০] আবার বলা হয়েছে যে, অহঙ্কারীদের ঈমান নসীব হয় না। আল্লাহ বলেন, “শুধু তারাই আমার আয়াতসমূহের উপর ঈমান আনে, যারা সেটার দ্বারা উপদেশপ্রাপ্ত হলে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং তাদের রবের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, আর তারা অহংকার করে না।” [সূরা আস-সাজদাহ:১৫] আরও বলেন, “তাদেরকে -অপরাধীদেরকে- ‘আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই’ বলা হলে তারা অহংকার করত।” [সূরা আস-সাফফাত:৩৫] আবার কোথাও এসেছে যে, আল্লাহ অহঙ্কারীকে ভালবাসেন না। “নিশ্চয় তিনি অহংকারীদের পছন্দ করেন না।” [সূরা আন-নাহল:২৩] [আদওয়াউল বায়ান]
এ আয়াতে ইবলীসকে দেয়া সময় সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। শুধু এটুকু বলা হয়েছে যে, তোমাকে অবকাশ দেয়া হল। কিন্তু অন্যান্য সূরায় এ অবকাশ নির্ধারণ করে বলা হয়েছে,
(اِلٰى يَوْمِ الْوَقْتِ الْمَعْلُوْمِ) [সূরা আল-হিজরঃ ৩৮, সোয়াদঃ ৮১]
এ থেকে বাহ্যতঃ বোঝা যায় যে, ইবলীসের প্রার্থিত অবকাশ কেয়ামত পর্যন্ত দেয়া হয়নি, বরং একটি বিশেষ মেয়াদ পর্যন্ত দেয়া হয়েছে। অধিকাংশ আলেমদের নিকট তার অবকাশের মেয়াদ হচ্ছে শিঙ্গায় প্রথম ফুঁক দেয়া পর্যন্ত। [আদওয়াউল বায়ান] সুদ্দি বলেন, তাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দেয়া হয়নি। কারণ, যখন শিঙ্গায় প্রথম ফুঁক দেয়া হবে, তখন
(فَصَعِقَ مَنْ فِي السَّمٰوٰتِ وَمَنْ فِي الْاَرْضِ)
বা আসমান ও যমীনের সবাই মারা পড়বে, আর তখন ইবলীসও মারা যাবে। [তাবারী]
আলোচ্য ইবলিসের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত আয়াতসমূহ থেকে বুঝা যায় যে, কাফেরদের দো’আ কবুল করা হয়। অথচ অন্যত্র আল্লাহর বাণী
(وَمَا دُعَاءُ الْكٰفِرِيْنَ اِلَّا فِيْ ضَلٰلٍ)
“কাফেরদের দো’আ তো ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবেই” [সূরা আর-রা’দঃ ১৪] এ আয়াত থেকে বাহ্যতঃ বুঝা যায় যে, কাফেরের দো’আ কবুল হয় না। এর উত্তর এই যে, দুনিয়াতে কাফেরের দো’আও কবুল হতে পারে। ফলে ইবলীসের মত মহা কাফেরের দো’আও কবুল হয়ে গেছে। কিন্তু আখেরাতে কাফেরের দো’আ কবুল হবে না। উল্লেখিত আয়াত আখেরাতের সাথে সম্পর্কযুক্ত। দুনিয়ার সাথে এর কোন সম্পর্ক নাই। আর কাফেরের কোন কোন দো’আ কবুল হয় বলে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমরা মাযলূমের দো’আ থেকে বেঁচে থাক, যদিও সে কাফের হয়; কেননা তার দোআ কবুলের ব্যাপারে কোন পর্দা নেই।‘ [মুসনাদে আহমাদ: ৩/১৫৩; দিয়া আল-মাকদেসী, হাদীস নং ২৭৪৮]
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
টিকা:১০) তূলনামূলক পাঠের জন্য সূরা বাকারার ৪ রুকূ দেখুন ( আয়াত ৩০ থেকে ৩৯ )।
সূরা বাকারায় যেসব শব্দ সমন্বয়ে সিজদার আদেশ উল্লেখ করা হয়েছে তা থেকে সন্দেহ হতে পারে যে, নিছক এক ব্যক্তি হিসেবেই আদম আলাইহিস সালামের সামনে ফেরেশতাদেরকে সিজদা করার হুকুম দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখান থেকে সে সন্দেহ দূর হয়ে যায়। এখানে যে বর্ণনা পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে তা থেকে পরিষ্কার জানা যায়, আদম আলাইহিস সালামকে আদম হিসেবে নয় বরং মানব জাতির প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে সিজদা করানো হয়েছিল।
আর আমি তোমাদের সৃষ্টির সূচনা করলাম তারপর তোমাদের আকৃতিদান করলাম অতঃপর ফেরশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা করো” একথার অর্থ হচ্ছে আমি প্রথমে তোমাদের সৃষ্টির পরিকল্পনা প্রণয়ন করলাম, তোমাদের সৃষ্টির মৌলিক উপাদান তৈরী করলাম তারপর সেই উপাদানকে মানবিক আকৃতি দান করলাম অতঃপর আদম যখন একজন জীবিত মানুষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো তখন তাকে সিজদা করার জন্য ফেরেশতাদেরকে হুকুম দিলাম। কুরআন মজীদের অন্যান্য স্থানেও এ আয়াতটির এরূপ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যেমন সূরা “সোয়াদ” এর পঞ্চম রুকূ’তে বলা হয়েছেঃ
إِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِنْ طِينٍ – فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِنْ رُوحِي فَقَعُوا لَهُ سَاجِدِينَ
“সেই সময়ের কথা চিন্তা করো যখন তোমার রব ফেরেশতাদের বললেন, আমি মাটি থেকে একটা মানুষ তৈরী করবো। তারপর যখন আমি সেটি পুরোপুরি তৈরী করে ফেলবো এবং তার মধ্যে নিজের রূহ থেকে কিছু ফূঁকে দেবো তখন তোমরা সবাই তার সমানে সিজদাবনত হবে।”
এ আয়াতটিতে ঐ তিনটি পর্যায় বর্ণিত হয়েছে অন্য এক ভংগীমার। এখানে বলা হয়েছেঃ প্রথমে মাটি থেকে একটি মানুষ সৃষ্টি করা হবে, তারপর তার “তাসবীয়া” করা হবে অর্থাৎ তাকে আকার-আকৃতি দান করা হবে এবং তার দেহ-সৌষ্ঠব ও শক্তি-সমর্থের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা হবে এবং সবশেষে নিজের রূহ থেকে কিছু ফুঁকে দিয়ে আদমকে অস্তিত্ব দান করা হবে। এ বিষয়বস্তুটিকেই সূরা হিজর-এর তৃতীয় রুকূ’তে নিম্নলিখিত শব্দাবলীর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছেঃ
وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِنْ صَلْصَالٍ مِنْ حَمَإٍ مَسْنُونٍ – فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِنْ رُوحِي فَقَعُوا لَهُ سَاجِدِينَ
“আর সেই সময়টির কথা ভাবো যখন তোমার রব ফেরেশতাদের বললেন, আমি ছাঁচে ঢালা শুকনো ঠনঠনে মাটি থেকে একটি মানুষ সৃষ্টি করবো, তারপর যখন তাকে পুরোপুরি তৈরী করে ফেলবো এবং তার মধ্যে নিজের রূহ থেকে কিছু ফুঁকে দেবো তখন তোমরা সবাই তার সামনে সিজদাবনত হবে।”
মানব সৃষ্টির এ সূচনা পর্বের বিস্তারিত অবস্থা অনুধাবন করা আমাদের পক্ষে কঠিন। মাটির পিণ্ড থেকে কিভাবে মানুষ বানানো হলো তারপর কিভাবে তাকে আকার আকৃতি দান ও তার মধ্যে ভারসাম্য কায়েম করা হলো এবং তার মধ্যে প্রাণ বায়ু ফুঁকে দেবার ধরনটিই বা কি ছিল এসবের পূর্ণ তাৎপর্য বিশ্লেষণ আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবুও একথা সুস্পষ্ট যে, বর্তমান যুগে ডারউইনের অনুসারীরা বিজ্ঞানের নামে যেসব মতবাদ পেশ করছে মানব সৃষ্টির সূচনা পর্বের অবস্থা সম্পর্কে কুরআন মজীদ তার সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী অবস্থার বর্ণনা দিয়েছে। এসব মতবাদের দৃষ্টিতে মানুষ একটি সম্পূর্ণ অমানবিক বা অর্ধমানবিক অবস্থার বিভিন্ন স্তর থেকে ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে মানবিক স্তরে উপনীত হয়েছে। আর এ ক্রমবিবর্তন ধারার সুদীর্ঘ পথে এমন কোন বিশেষ বিন্দু নেই যেখান থেকে অমানবিক অবস্থার ইতি ঘোষণা করে মানব জাতির সূচনা হয়েছে বলে দাবী করা যেতে পারে। বিপরীত পক্ষে কুরআন আমাদের জানাচ্ছে, মানব বংশধারার সূচনা হয়েছে নির্ভেজাল মানবিক অস্তিত্ব থেকেই। কোন অমানবিক ধারার সাথে তার ইতিহাসের কোন কালেও কোন সম্পর্ক ছিল না। প্রথম দিন থেকে তাকে মানুষ হিসেবেই সৃষ্টি করা হয়েছিল। আল্লাহ পরিপূর্ণ মানবিক চেতনা সহকারে পূর্ণআলোকে তার পার্থিব জীবনের সূচনা করেছিলেন।
মানুষের ইতিহাস সম্পর্কে এ দু’টি ভিন্ন ধর্মী দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষ সম্পর্কে দু’টি সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী চিন্তাধারার উদ্ভব হয়। একটি চিন্তাধারা মানুষকে জীব-জন্তু ও পশু জগতের একটি শাখা হিসেবে পেশ করে। তার জীবনের সমস্ত আইন কানুন এমনকি নৈতিক ও চারিত্রিক আইনের জন্যও মূলনীতির সন্ধান করা হয় ইতর প্রাণীসমূহের জীবন রীতিতে ও পশুদের জীবন ধারায়। তার জন্য পশুদের ন্যায় কর্মপদ্ধতি একটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক কর্মপদ্ধতি মনে হয়। সেখানে মানবিক কর্মপদ্ধতি ও পাশবিক কর্মপদ্ধতির মধ্যে বড় জোড় এতটুকু পার্থক্য দেখার প্রত্যাশা করা হয় যে, মানুষ যন্ত্রপাতি, কল-কারখানা, শিল্প-সভ্যতা-সংস্কৃতির সূক্ষ্ম ও নিপুন কারুকার্য অবলম্বনে কাজ করে। পক্ষান্তরে, পশুরা কাজ করে ঐসবের সহায়তা ছাড়াই। বিপরীত পক্ষে অন্য চিন্তাধারাটি মানুষকে পশুর পরিবর্তে “মানুষ” হিসেবেই উপস্থাপন করে। সেখানে “মানুষ বাকশক্তি সম্পন্ন পশু” বা “সামাজিক ও সংস্কৃতিবান জন্তু” (Social animal) নয় বরং পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি। সেখানে বাকশক্তি বা সামাজিকতাবোধ তাকে অন্যান্য জীব ও প্রাণী থেকে আলাদা করে না। বরং তাকে আলাদা করে তার নৈতিক দায়িত্ব এবং ক্ষমতা ও ইখতিয়ার যা আল্লাহ তাকে দান করেছেন এবং যার ভিত্তিতে তাকে আল্লাহর সামনে জবাবদিহি করতে হবে। এভাবে এখানে মানুষ ও তার সাথে সম্পৃক্ত যাবতীয় বিষয় সম্পর্কিত দৃষ্টিকোণ পূর্ববর্তী দৃষ্টিকোণটি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যায়। এখানে মানুষের জন্য একটি জীবন দর্শন এবং অন্য একটি নৈতিক ব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক জীবন ও আইন বিধানের প্রত্যাশা করা হবে। এ জীবন দর্শন ও নৈতিক-সাংস্কৃতিক ব্যবস্থার মূলনীতি অনুসন্ধান করার জন্য মানুষের দৃষ্টি স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিম্ন জগতের পরিবর্তে উর্ধ জগতের দিকে উঠতে থাকবে।
প্রশ্ন করা যেতে পারে, মানুষ সম্পর্কিত এ দ্বিতীয় ধারণাটি নৈতিক ও মস্ততাত্বিক দিক দিয়ে যতই উন্নত পর্যায়ের হোক না কেন, নিছক কল্পনার ওপর নির্ভর করে যুক্তি-তথ্য দ্বারা প্রমাণিত একটি মতবাদকে কেমন করে রদ করা যেতে পারে? কিন্তু যারা এ ধরনের প্রশ্ন করেন, তাদের কাছে আমার পাল্টা প্রশ্ন, সত্যিই কি ডারউইনের বিবর্তনবাদ বৈজ্ঞানিক যুক্তি-তথ্যের মাধ্যমে প্রমাণিত? বিজ্ঞান সম্পর্কে নিছক ভাসা ভাসা ও স্থুল জ্ঞান রাখে এমন ধরনের লোকেরা অবশ্যি এ মতবাদকে একটি প্রমাণিত তাত্বিক সত্য মনে করার ভ্রান্তিতে লিপ্ত। কিন্তু বিশেষজ্ঞ ও অনুসন্ধান বিশারদরা জানেন, গুটিকয় শব্দ ও হাড়গোড়ের লম্বা চওড়া ফিরিস্তি সত্ত্বেও এখনো এটি একটি মতবাদের পর্যায়েই রয়ে গেছে এবং এর যেসব যুক্তি-তথ্যকে ভুলক্রমে প্রমাণ্য বলা হচ্ছে সেগুলো নিছক সম্ভাব্যতার যুক্তি ছাড়া আর কিছুই নয়। অর্থাৎ সেগুলোর ভিত্তিতে বড় জোর এতটুকু বলা যেতে পারে যে, ডারউইনের বিবর্তনবাদের সম্ভাবনা ঠিক ততটুকুই যতটুকু সম্ভাবনা আছে সরাসরি সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে এক একটি শ্রেণীর পৃথক অস্তিত্ব লাভের।
টিকা:১১) মূলে صَّاغِرِينَ ছগিরিনা শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ছগির صاغِر মানে লাঞ্ছনা ও অবমাননার মধ্যে সন্তুষ্ট থাকা। অর্থাৎ যে ব্যক্তি নিজেই লাঞ্ছনা, অবমাননা ও নিকৃষ্টতর অবস্থা অবলম্বন করে। কাজেই আল্লাহর বানীর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর বান্দা ও সৃষ্টি হয়েও তোমার অহংকারে মত্ত হওয়া এবং তুমি নিজের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের যে ধারণা নিজেই তৈরী করে নিয়েছো তার দৃষ্টিতে তোমার রবের হুকুম তোমার জন্য অবমাননাকর মনে হওয়া ও সেজন্য তা অমান্য করার অর্থ দাঁড়ায় এই যে, তুমি নিজেই নিজেকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করতে দাও। শ্রেষ্ঠত্বের মিথ্যা অহমিকা, মর্যাদার ভিত্তিহীন দাবী এবং কোন জন্মগত ও স্বতসিদ্ধ অধিকার ছাড়াই নিজেকে অযথা শ্রেষ্ঠত্বের আসনে সমাসীন মনে করা তোমাকে বড়, শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাশালী করতে পারে না। বরং এর ফলে তুমি মিথ্যুক লাঞ্ছিত ও অপমানিতই হবে এবং তোমার এ লাঞ্ছনা ও অবমাননার কারণ হবে তুমি নিজেই।