(Book# 114/٢٩٩)-৫০২ www.motaher21.net সুরা: আল্‌ আরাফ সুরা:৭ ৩৪-৩৬ নং আয়াত:- وَ لِکُلِّ اُمَّۃٍ اَجَلٌ ۚ প্রত্যেক জাতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। And every Ummah has its appointed term;

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٢٩٩)-৫০২
www.motaher21.net
সুরা: আল্‌ আরাফ
সুরা:৭
৩৪-৩৬ নং আয়াত:-

وَ لِکُلِّ اُمَّۃٍ اَجَلٌ ۚ
প্রত্যেক জাতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে।
And every Ummah has its appointed term;

وَ لِکُلِّ اُمَّۃٍ اَجَلٌ ۚ فَاِذَا جَآءَ اَجَلُہُمۡ لَا یَسۡتَاۡخِرُوۡنَ سَاعَۃً وَّ لَا یَسۡتَقۡدِمُوۡنَ ﴿۳۴﴾
প্রত্যেক জাতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে, সুতরাং যখন সেই নির্দিষ্ট সময় সমুপস্থিত হবে তখন তা এক মুহুর্তকালও আগে কিংবা পরে হবেনা।
یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ اِمَّا یَاۡتِیَنَّکُمۡ رُسُلٌ مِّنۡکُمۡ یَقُصُّوۡنَ عَلَیۡکُمۡ اٰیٰتِیۡ ۙ فَمَنِ اتَّقٰی وَ اَصۡلَحَ فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿۳۵﴾
হে আদম সন্তান! তোমাদের মধ্য হতে যদি কোন রাসূল তোমাদের নিকট আগমন করে এবং আমার বাণী ও নিদর্শন তোমাদের কাছে বিবৃত করে; তখন যারা সতর্ক হবে এবং নিজেদেরকে সংশোধন করে নিবে এবং সৎ কাজ করবে, তাদের কোন ভয়-ভীতি থাকবেনা।
وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ اسۡتَکۡبَرُوۡا عَنۡہَاۤ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۳۶﴾
আর যারা আমার নিদর্শন ও বিধানকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং অহংকার করে ওটা হতে দূরে সরে থাকে তারাই হবে জাহান্নামী, সেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে।
৩৪-৩৬ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
এ আয়াতগুলোতে সে সকল ঈমানদারদের শুভ পরিণামের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে যারা আল্লাহভীরু ও নেক আমলেষ সজ্জিত। তাদের কোন চিন্তা নেই, কোন ভয় নেই। পক্ষান্তরে যারা কুফরী করে ঈমান আনতে অহঙ্কার করে তাদের জন্য জাহান্নাম। তাদের বর্ণনা ৪০ নং আয়াতে আরো আসছে।

(وَلِكُلِّ أُمَّةٍ أَجَلٌ)

‘প্রত্যেক জাতির জন্য এক নির্দিষ্ট সময় আছে’ অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়াতে বানী আদমকে পাঠিয়ে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কোন জাতিই আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের আগে দুনিয়া ছেড়ে যাবে না এবং পরেও যাবে না। ৩৭ নং আয়াতের তাফসীর পূর্বের সূরাগুলোতে করা হয়েছে।

(ادْخُلُوْا فِيْٓ أُمَمٍ)

‘তোমাদের পূর্বে যে জিন ও মানবদল গত হয়েছে তাদের সাথে তোমরা জাহান্নামে প্রবেশ কর’। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন মুশরিকদেরকে ঐ সকল জিন ও মানুষের সাথে জাহান্নামে প্রবেশ করতে বলবেন যারা আল্লাহ তা‘আলার আয়াতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করত এবং তাদের মত মুশরিক ছিল।

(لَّعَنَتْ أُخْتَهَا)

‘অপর দলকে তারা অভিসম্পাত করবে’ অর্থাৎ যখনই একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে তখনই অন্যদল তাদের অভিশাপ করবে। কারণ পূর্ববর্তী পথভ্রষ্টরা পরবর্তীদেরকে তাদের পথে ডেকে পথভ্রষ্ট করেছে।

(إِذَا ادَّارَكُوْا فِيْهَا)

‘যখন সকলে তাতে একত্রিত হবে’ অর্থাৎ যখনই পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উভয় দল জাহান্নামে একত্রিত হবে তখনই পরবর্তীরা বলবে পূর্ববর্তীরা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছে। তাই তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দাও।

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(يَوْمَ تُقَلَّبُ وُجُوْهُهُمْ فِي النَّارِ يَقُوْلُوْنَ يٰلَيْتَنَآ أَطَعْنَا اللّٰهَ وَأَطَعْنَا الرَّسُوْلَا – وَقَالُوْا رَبَّنَآ إِنَّآ أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَا۬ءَنَا فَأَضَلُّوْنَا السَّبِيْلَا)

“যেদিন তাদের চেহারা জাহান্নামের আগুনের মধ্যে উলট-পালট করা হবে সেদিন তারা বলবে- হায়! আমরা যদি আল্লাহ ও রাসূলের আদেশ পালন করতাম! তারা আরো বলবে- হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা তো অনুসরণ করেছিলাম আমাদের নেতাদের এবং আমাদের প্রধানদের। অতএব তারাই আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল।” (সূরা আহযাব ৩৩:৬৬-৬৮)

(لِكُلٍّ ضِعْفٌ)

‘প্রত্যেকের জন্য দ্বিগুণ রয়েছে’ অর্থাৎ প্রত্যেককে আল্লাহ তা‘আলা আযাব দ্বিগুণ করে দেবেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(اَلَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَصَدُّوْا عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِ زِدْنٰهُمْ عَذَابًا فَوْقَ الْعَذَابِ بِمَا كَانُوْا يُفْسِدُوْنَ)

“আমি শাস্তি‎র পর শাস্তি‎ বৃদ্ধি করব কাফিরদের ও আল্লাহর পথে বাধাদানকারিদের; কারণ তারা অশান্তি‎ সৃষ্টি করত।” (সূরা নাহল ১৬:৮৮)

(فَمَا كَانَ لَكُمْ عَلَيْنَا مِنْ فَضْلٍ)

‘আমাদের ওপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব ছিল না’ অর্থাৎ পূর্ববর্তী পথভ্রষ্টরা পরবর্তীদের বলবে তোমাদের ওপর আমাদের কোন কর্তৃত্ব ছিল না বরং তোমরা নিজেরাই পথহারা হয়েছ।

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “তুমি যদি দেখতে জালিমদেরকে যখন তাদের প্রতিপালকের সামনে দণ্ডায়মান করা হবে, তখন তারা পরস্পর বাদ-প্রতিবাদ করতে থাকবে, যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তারা অহঙ্কারকারীদেরকে বলবে: তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মু’মিন হতাম। অহঙ্কারীরা যাদেরকে দুর্বল মনে করত তাদেরকে বলবে: তোমাদের নিকট সৎ পথের দিশা আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে তা হতে নিবৃত্ত করেছিলাম? বস্তুতঃ তোমরাই তো ছিলে অপরাধী।” (সূরা সাবা ৩৪:৩১-৩২)

সুতরাং কিয়ামতের মাঠে কারো ওপর দোষ চাপানোর সুযোগ থাকবে না। আজ যে সকল মন-পূজারী লোকেদের সাথে চলছি তারাও সেদিন অস্বীকার করবে। তাই সময় থাকতে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. প্রত্যেকের জন্য নির্ধারিত আয়ু বা সময় বেঁধে দেয়া আছে। এর আগেও নয় এবং পরেও নয় বরং যথাসময়ে তাকে বিদায় নিতে হবে।
২. যারা সত্যিকার মু’মিন পরকালে তাদের কোন ভয় ও কোন দুশ্চিন্তা থাকবে না। আর যারা কাফির তাদের কোন নিরাপত্তা থাকবে না।
৩. সকল পাপাচারীগণ এক সাথে জাহান্নামে থাকবে এবং একে অপরকে দোষারোপ করবে, কিন্তু এতে কোন ফল হবে না।
৪. যারা অন্যের প্ররোচনায় পথভ্রষ্ট হয়েছে সেদিন তাদের দোহাই দিয়ে পার পাওয়া যাবে না।
৫. পথভ্রষ্টকারী ও অনুসারী সকলের জন্য শাস্তি দ্বিগুণ করে দেয়া হবে।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Araf
Sura:7
Verses :- 34-36
وَ لِکُلِّ اُمَّۃٍ اَجَلٌ ۚ
And every Ummah has its appointed term;

Allah said,

وَلِكُلِّ أُمَّةٍ

And every Ummah has,

meaning, each generation and nation,

أَجَلٌ فَإِذَا جَاء أَجَلُهُمْ

its appointed term; when their term comes,

which they were destined for,

لَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلَا يَسْتَقْدِمُونَ

neither can they delay it nor can they advance it an hour (or a moment)

يَا بَنِي ادَمَ إِمَّا يَأْتِيَنَّكُمْ رُسُلٌ مِّنكُمْ يَقُصُّونَ عَلَيْكُمْ ايَاتِي

O Children of Adam! If there come to you Messengers from among you, reciting to you My Ayat,

Allah then warned the Children of Adam that He sent to them Messengers who conveyed to them His Ayat.

Allah also conveyed good news, as well as warning,

فَمَنِ اتَّقَى وَأَصْلَحَ

then whosoever has Taqwa and becomes righteous,

by abandoning the prohibitions and performing acts of obedience,

فَلَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
وَالَّذِينَ كَذَّبُواْ بِأيَاتِنَا وَاسْتَكْبَرُواْ عَنْهَا

on them shall be no fear nor shall they grieve. But those who reject Our Ayat and treat them with arrogance,

meaning, their hearts denied the Ayat and they were too arrogant to abide by them,

أُوْلَـَيِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ

they are the dwellers of the Fire, they will abide therein forever.

without end to their dwelling in it.

৩৪-৩৬ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-

ইরশাদ হচ্ছে- প্রত্যেক দলের জন্যে একটি নির্দিষ্ট দণ্ডায়মান-স্থান এবং নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত রয়েছে। যখনই সেই সময় এসে যাবে তখন মুহূর্তকালও আগা-পিছা হতে পারে না। অতঃপর আল্লাহ পাক আদম সন্তানকে ভয় প্রদর্শন করে বলছেন- দেখ! তোমাদের কাছে আমার রাসূলগণ যাবে। তারা তোমাদেরকে আমার আয়াতসমূহ শুনাবে, শুভ সংবাদও দেবে এবং ভয় প্রদর্শনও করবে। সুতরাং যারা ভয় করবে, নিজেদেরকে সংশোধন করে নেবে, নিষিদ্ধ জিনিসগুলো পরিত্যাগ করবে এবং আনুগত্যের কাজ করবে, তাদের কোন ভয়ও থাকবে না এবং তারা চিন্তিত হবে না। কিন্তু যারা আমার আয়াতগুলো অবিশ্বাস করবে ও মিথ্যা জানবে এবং অহংকার করবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী। তারা তথায় চিরকাল অবস্থান করবে।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

অবকাশের সময় নির্দিষ্ট করার মানে এ নয় যে, প্রত্যেক জাতির জন্য বছর, মাস, দিন ধরে একটি আয়ুস্কাল নির্দিষ্ট করা হয় এবং এ সময়টি শেষ হয়ে যেতেই তাকে অবশ্যিই খতম করে দেয়া হয়। বরং এর অর্থ হচ্ছে, প্রত্যেক জাতিকে দুনিয়ায় কাজ করার যে সুযোগ দেয়া হয়, তার কর্মকাণ্ডের মধ্যে ভাল ও মন্দের আনুপাতিক হার কমপক্ষে কতটুকু বরদাশত করা যেতে পারে, এ অর্থে তার কাজ করার একটি নৈতিক সীমানা চিহ্নিত করা হয়। যতদিন একটি জাতির মন্দ গুণগুলো তার ভাল গুণাবলীর তুলনায় ঐ আনুপাতিক হারের সর্বশেষ সীমার মধ্যে অবস্থান করতে থাকে ততদিন তাকে তার সমস্ত অসৎকর্ম সত্ত্বেও অবকাশ দেয়া হয়, আর যখন তা ঐ সর্বশেষ সীমানা পার হয়ে যায় তখন এ ধরনের অসৎ বৃত্তিসম্পন্ন ও অসৎকর্মশীল জাতিকে আর কোন বাড়তি অবকাশ দেয়া হয়না। (সূরা নূহের ৪-১০-১২ আয়াত দ্রষ্টব্য)।

সুরা: নূহ
আয়াত নং :-4

یَغْفِرْ لَكُمْ مِّنْ ذُنُوْبِكُمْ وَ یُؤَخِّرْكُمْ اِلٰۤى اَجَلٍ مُّسَمًّىؕ اِنَّ اَجَلَ اللّٰهِ اِذَا جَآءَ لَا یُؤَخَّرُۘ لَوْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ

আল্লাহ তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন৩ এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের অবকাশ দেবেন।৪ প্রকৃত ব্যাপার হলো, আল্লাহর নির্ধারিত সময় যখন এসে যায় তখন তা থেকে বাঁচা যায় না।৫ আহ্! যদি তোমরা তা জানতে।৬

তাফসীর :

টিকা:৩) মূল ইবারতে শব্দ আছে يَغْفِرُلَكُمْ مِنْ ذُنُوْبَكُمْ (ইয়াগফিরলাকুম মিন জুনুবিকুম) এ আয়াতাংশের অর্থ এ নয় যে, আল্লাহ‌ তোমাদের কিছু গোনাহ মাফ করে দেবেন। বরং এর সঠিক অর্থ হলো, যে তিনটি বিষয় তোমাদের সামনে পেশ করা হচ্ছে তা যদি তোমরা মেনে নাও তাহলে এতদিন পর্যন্ত যে গোনাহ তোমরা করেছো তা সবই আল্লাহ‌ মাফ করে দেবেন। এখানে مِنْ (মিন) শব্দটি অংশবিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়নি।

টিকা:৪) অর্থাৎ যদি তোমরা এ তিনটি বিষয় মেনে নাও তাহলে আল্লাহ‌ তা’আলা তোমাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য যে সময় নির্ধারিত রেখেছেন সে সময় পর্যন্ত এ পৃথিবীতে তোমাদের বেঁচে থাকার অবকাশ হবে।

টিকা:৫) কোন কওমের ওপর আযাব নাযিল করার জন্য আল্লাহ‌ তা’আলা যে সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন এখানে সে সময়টিকে বুঝানো হয়েছে। কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে এ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, কোন কওমের জন্য আযাবের ফায়সালা হয়ে যাওয়ার পর ঈমান আনলেও তাদের আর মাফ করা হয় না।

টিকা:৬) অর্থাৎ যদি তোমরা এ বিষয়টি বুঝতে যে, আমার মাধ্যমে আল্লাহ‌ তা’আলার বাণী তোমাদের কাছে পৌঁছার পর যে সময়টা অতিবাহিত হচ্ছে তা প্রকৃতপক্ষে তোমাদের জন্য একটা অবকাশ। তোমাদেরকে এ অবকাশ দেয়া হয়েছে ঈমান আনায়নের জন্য। এ অবকাশের জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর আল্লাহর আযাব থেকে তোমাদের নিষ্কৃতি পাওয়ার আর কোন সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় ঈমান আনায়নের জন্য তোমরা দ্রুত এগিয়ে আসবে। আযাব আসার সময় পর্যন্ত তা আর বিলম্বিত করবে না।

কুরআন মজীদের যেখানেই আদম ও হাওয়া আলাইহিমাস সালামের জান্নাত থেকে নামিয়ে দেবার ঘটনা উল্লেখিত হয়েছে (যেমন দেখুন সূরা আল বাকারার ৪ রুকূ ও সূরা তা-হা এর ৬ রুকূ ) সেখানেই একথা বলা হয়েছে। কাজেই এখানেও এটিকে এই একই ঘটনার সাথে সম্পর্কিত মনে করা হবে। অর্থাৎ যখন মানব জাতির জীবনের সূচনা হচ্ছিল ঠিক তখনই একথাটি পরিষ্কাভাবে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছিল। (দেখুন সূরা আলে ইমরান, ৬৯ টীকা)

[[টিকা:৬৯) এর অর্থ হচ্ছে এই যে, প্রত্যেক নবীর কাছ থেকে এই মর্মে অঙ্গীকার নেয়া হয়েছে। আর যে অঙ্গীকার নবীর কাছ থেকে নেয়া হয়েছে তা নিঃসন্দেহে ও অনিবার্যভাবে তাঁর অনুসারীদের ওপরও আরোপিত হয়ে যায়। অঙ্গীকারটি হচ্ছে, যে দ্বীনের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার কাজে তোমাদের নিযুক্ত করা হয়েছে সেই একই দ্বীনের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব দিয়ে আমার পক্ষ থেকে যে নবীকে পাঠানো হবে তার সাথে তোমাদের সহযোগিতা করতে হবে। তার প্রতি কোন হিংসা ও বিদ্বেষ পোষণ করবে না। নিজেদেরকে দ্বীনের ইজারাদার মনে করো না। সত্যের বিরোধিতা করবে না। বরং যেখানে যে ব্যক্তিকেই আমার পক্ষ থেকে সত্যের পতাকা উত্তোলন করার দায়িত্বে নিযুক্ত করা হবে সেখানেই তার পতাকা তলে সমবেত হয়ে যাবে। এখানে আরো এতটুকু কথা জেনে নিতে হবে যে, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্বে যে নবীই এসেছিলেন তাঁর কাছ থেকে এই অঙ্গীকারই নেয়া হয়েছে। আর এরই ভিত্তিতে প্রত্যেক নবী নিজের উম্মাতকে তাঁর পরে যে নবী আসবেন তার খবর দিয়েছেন এবং তাঁর সাথে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছ থেকে এ ধরনের কোন অঙ্গীকার নেয়া হয়েছে এমন কোন কথা কুরআনে ও হাদীসে কোথাও উল্লেখিত হয়নি। অথবা তিনি নিজের উম্মাতকে পরবর্তীকালে আগমনকারী কোন নবীর খবর দিয়ে তার প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দিয়ে গেছেন বলে কোন কথাও জানা যায়নি।]]

Leave a Reply