(Book# 114/٣٢٢) -৫২৫ www.motaher21.net সুরা: আল্‌ আরাফ সুরা:৭ ১০১-১০২ নং আয়াত:- وَ مَا وَجَدۡنَا لِاَکۡثَرِہِمۡ مِّنۡ عَہۡدٍ ۚ আমি তাদের অধিকাংশকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারীরূপে পাইনি, And most of them We found not true to their covenant,

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٣٢٢) -৫২৫
www.motaher21.net
সুরা: আল্‌ আরাফ
সুরা:৭
১০১-১০২ নং আয়াত:-
وَ مَا وَجَدۡنَا لِاَکۡثَرِہِمۡ مِّنۡ عَہۡدٍ ۚ
আমি তাদের অধিকাংশকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারীরূপে পাইনি,
And most of them We found not true to their covenant,
تِلۡکَ الۡقُرٰی نَقُصُّ عَلَیۡکَ مِنۡ اَنۡۢبَآئِہَا ۚ وَ لَقَدۡ جَآءَتۡہُمۡ رُسُلُہُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ ۚ فَمَا کَانُوۡا لِیُؤۡمِنُوۡا بِمَا کَذَّبُوۡا مِنۡ قَبۡلُ ؕ کَذٰلِکَ یَطۡبَعُ اللّٰہُ عَلٰی قُلُوۡبِ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۱۰۱﴾

ঐ জনপদগুলির কিছু ঘটনা আমি তোমার নিকট বর্ণনা করছি, তাদের কাছে রাসূলগণ সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণসহ এসেছিল, কিন্তু পূর্বে তারা যা প্রত্যাখ্যান করেছিল তার প্রতি তারা ঈমান আনার ছিলনা, এমনিভাবেই আল্লাহ অবিশ্বাসীদের অন্তঃকরণের উপর মোহর মেরে দিয়েছেন।
وَ مَا وَجَدۡنَا لِاَکۡثَرِہِمۡ مِّنۡ عَہۡدٍ ۚ وَ اِنۡ وَّجَدۡنَاۤ اَکۡثَرَہُمۡ لَفٰسِقِیۡنَ ﴿۱۰۲﴾
আমি তাদের অধিকাংশকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারীরূপে পাইনি, তবে তাদের অধিকাংশকে পাপাচারী রূপে পেয়েছি।

১০১-১০২ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে‌ ইবনে কাসীর বলেছেন:-

নূহ (আঃ), হূদ (আঃ), সালিহ্ (আঃ), লূত (আঃ) ও শশাআ’ইব (আঃ)-এর কওমের ধ্বংস সাধন, মুমিনদেরকে রক্ষাকরণ, রাসূলদের মাধ্যমে মু’জিযা ও দলীল প্রমাণাদি পেশ করতঃ হুজ্জত পূর্ণকরণ ইত্যাদি বিষয়ের বর্ণনা দেয়ার পর এখানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “হে মুহাম্মাদ (সঃ)! ঐ বস্তিগুলোর অবস্থার কথা আমি তোমাকে শুনিয়ে দিচ্ছি। তাদের কাছে নবী রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করেছিল। আমি তো রাসূল প্রেরণের মাধ্যমে হুজ্জত পূর্ণ করা ছাড়া কখনও কাউকে শাস্তি প্রদান করি না। এটা হচ্ছে ঐ বস্তিগুলোর ঘটনা যেগুলোর মধ্যে কতকগুলো এখনও বিদ্যমান রয়েছে এবং কতকগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি এটা করে তাদের উপর অত্যাচার করিনি, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের উপর অত্যাচার করেছিল। এজন্যে তারা নিজেরাই দায়ী।

(আরবী) অর্থাৎ পূর্বে তারা যা প্রত্যাখ্যান করেছিল তার প্রতি তারা ঈমান আনবার ছিল না। (আরবী) -এর (আরবী) অক্ষরটি হচ্ছে কারণ প্রকাশক। অর্থাৎ অহীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার কারণে তারা ঈমান আনয়ন করার হকদারই থাকলো না। যেমন অন্যত্র তিনি বলেনঃ “তোমরা তো জানই যে, মু’জিযা পেশ করলেও এরা ঈমান আনবে না।” এ জন্যেই এখানে তিনি বলেনঃ “এভাবেই আল্লাহ অবিশ্বাসীদের অন্তঃকরণের উপর মোহর লাগিয়ে দেন।

আমি তাদের অধিকাংশকে অর্থাৎ পূর্ববর্তী উম্মতের অধিকাংশকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারীরূপে পাইনি, বরং অধিকাংশকে পাপাচারীরূপে পেয়েছি। তারা ছিল আনুগত্য স্বীকার ও হুকুম মেনে চলার বহির্ভূত। এটা ছিল ঐ অঙ্গীকার যা রোযে আযলে আল্লাহ তা’আলা তাদের নিকট থেকে গ্রহণ করেছিলেন। ওরই উপর তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে এবং ঐ কথাটিই তাদের প্রকৃতি ও স্বভাবের মধ্যেও রাখা হয়েছে। সেই অঙ্গীকার ছিল এই-আল্লাহই হচ্ছেন তাদের প্রতিপালক ও মালিক। তিনি ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। এটা তারা স্বীকার করেও নিয়েছিল এবং সাক্ষ্য প্রদানও করেছিল। কিন্তু পরে তারা এর বিরুদ্ধাচরণ করতঃ ঐ অঙ্গীকারকে পৃষ্ঠ-পিছনে নিক্ষেপ করে এবং আল্লাহর সাথে অন্যদেরকেও শরীক করতে শুরু করে, যার না আছে কোন দলীল, না আছে। কোন ইজ্জত। এটা জ্ঞান ও শরীয়ত উভয়েরই পরিপন্থী । নিষ্কলুষ প্রতি তো এই প্রতিমা পূজাকে সমর্থন করে না। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত নবী ও রাসূল এই প্রতিমা পূজা থেকে মানুষকে বিরত রেখেছেন। যেমন সহীহ হাদীসে রয়েছে। যে, আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “আমি আমার বান্দাদেরকে মূর্তিপূজা থেকে পৃথক করে সৃষ্টি করেছিলাম। অতঃপর শয়তান এসে তাদেরকে সত্য দ্বীন থেকে সরিয়ে দেয় এবং আমি যা কিছু হালাল করেছিলাম তা তারা হারাম করে নেয়।” সহীহ বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “প্রত্যেক সন্তান স্বীয় ইসলামী প্রকৃতির উপর সৃষ্ট হয় । কিন্তু তার (ইয়াহূদী বা খ্রীষ্টান) পিতামাতাই তাকে ইয়াহূদী বা খ্রীষ্টান অথবা মাজুসী বানিয়ে দেয়।” আল্লাহ তা’আলা স্বীয় সম্মানিত গ্রন্থে বলেনঃ “আমি তোমাদের পূর্বে যতজন নবী পাঠিয়েছি তারা সবাই (আরবী)-এর তলকীন করতে থেকেছে।” ইরশাদ হচ্ছে- হে মুহাম্মাদ (সঃ!)। তোমার পূর্বে আমি যে রাসূলদেরকে পাঠিয়েছিলাম তাদেরকে আমি জিজ্ঞেস করবো- আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকেও কি উপাসনার যোগ্য বলা হয়েছিল? আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ “প্রত্যেক কওমের কাছে রাসূল পাঠিয়ে আমি বলেছিলাম- তোমরা শুধুমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করবে এবং তাগুত ও শয়তান থেকে দূরে থাকবে।”

এই ধরনের বহু আয়াত রয়েছে। (আরবী) -এই আয়াত সম্পর্কে হযরত উবাই ইবনে কা’ব (রাঃ) বলেন যে, অঙ্গীকার গ্রহণের দিন বান্দাগণ আল্লাহর একত্ববাদকে যে স্বীকার করে নিয়েছিল তা আল্লাহর গোচরে রয়েছে। এজন্যে আল্লাহর ইলমের ভিত্তিতেই তারা ঈমান আনছে না এবং এটাই হতে রয়েছে যে, দলীল প্রমাণাদি সামনে থাকা সত্ত্বেও তারা ঈমান আনছে না, যদিও তারা অঙ্গীকার গ্রহণের দিন ঈমান কবুল করেছিল। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা জানতেন যে, ওটা তাদের আন্তরিকতার সাথে ছিল না। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “যদি তাদেরকে দ্বিতীয়বার দুনিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হয় তবে পুনরায় তারা মূর্তিপূজা, শিরক ও পাপকার্য করতে থাকবে যা থেকে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল।”

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Araf
Sura:7
Verses :- 101-102
وَ مَا وَجَدۡنَا لِاَکۡثَرِہِمۡ مِّنۡ عَہۡدٍ ۚ
And most of them We found not true to their covenant,

After narrating the stories of the people of Prophets Nuh, Hud, Salih, Lut and Shu`ayb, destroying the disbelievers, saving the believers, warning these nations by explaining the truth to them with the evidence sent in the words of His Messengers, may Allah’s peace and blessings be on them all, Allah said;

تِلْكَ الْقُرَى نَقُصُّ عَلَيْكَ

Those were the towns that We relate to you (O Muhammad),

مِنْ أَنبَأيِهَا

their story, (and news),

وَلَقَدْ جَاءتْهُمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ

And there came indeed to them their Messengers with clear proofs,

and evidences of the truth of what they brought them.

Allah said in other Ayah,

وَمَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّى نَبْعَثَ رَسُولاً

And We never punish until We have sent a Messenger (to give warning). (17:15)

and,

ذَلِكَ مِنْ أَنْبَأءِ الْقُرَى نَقُصُّهُ عَلَيْكَ مِنْهَا قَأيِمٌ وَحَصِيدٌ وَمَا ظَلَمْنَـهُمْ وَلَـكِن ظَلَمُواْ أَنفُسَهُمْ

That is some of the news of the towns which We relate unto you; of them, some are standing, and some have been reaped. We wronged them not, but they wronged themselves. (11:100-101)

Allah said

فَمَا كَانُواْ لِيُوْمِنُواْ بِمَا كَذَّبُواْ مِن قَبْلُ

but they were not such who would believe in what they had rejected before.

According to the Tafsir of Ibn Atiyyah,

meaning they would not have later on believed in what the Messengers brought them, because they denied the truth when it first came to them (although they recognized it),

This explanation is sound, and is supported by Allah’s statement,

وَمَا يُشْعِرُكُمْ أَنَّهَأ إِذَا جَأءَتْ لَا يُوْمِنُونَ

وَنُقَلِّبُ أَفْيِدَتَهُمْ وَأَبْصَـرَهُمْ كَمَا لَمْ يُوْمِنُواْ بِهِ أَوَّلَ مَرَّةٍ

And what will make you perceive that if it came, they will not believe. And We shall turn their hearts and their eyes away (from guidance), as they refused to believe therein for the first time. (6:109-110)

This is why Allah said here,

كَذَلِكَ يَطْبَعُ اللّهُ عَلَىَ قُلُوبِ الْكَافِرِينَ

وَمَا وَجَدْنَا لَاكْثَرِهِم

Thus Allah does seal up the hearts of the disbelievers. And most of them We found not…

meaning, We did not find most of the previous nations,

مِّنْ عَهْدٍ وَإِن وَجَدْنَا أَكْثَرَهُمْ لَفَاسِقِينَ

true to their covenant, but most of them We found to indeed be rebellious.

This Ayah means, We found most of them to be rebellious, deviating away from obedience and compliance.

The covenant mentioned here is the Fitrah that Allah instilled in them while still in their fathers’ loins, and taking their covenant, that He is their Lord, King, and that there is no deity worthy of worship except Him. They affirmed this covenant and testified against themselves to this fact. However, they defied this covenant, threw it behind their backs and worshipped others besides Allah, having no proof or plea, nor support from rationality or by divine law. Surely, the pure Fitrah defies these actions, while all the honorable Messengers, from beginning to end, forbade them.

Muslim collected the Hadith,

يَقُولُ اللهُ تَعَالَى إِنِّي خَلَقْتُ عِبَادِي حُنَفَاءَ فَجَاءَتْهُمُ الشَّيَاطِينُ فَاجْتَالَتْهُمْ عَنْ دِينِهِمْ وَحَرَّمَتْ عَلَيْهِمْ مَا أَحْلَلْتُ لَهُم

Allah said, “I created My servants Hunafa (monotheists), but the devils came to them and deviated them from their religion and prohibited them what I allowed them.”

It is recorded in the Two Sahihs,

كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ وَيُنَصِّرَانِهِ وَيُمَجِّسَانِه

Every child is born upon the Fitrah, it is only his parents who turn him into a Jew, a Christian or a Zoroastrian.

তাফসীরে আবুবকর ‌যাকারিয়া‌ বলেছেন:-
[১] অর্থাৎ তাদের অন্তর মানবিক বুদ্ধিবৃত্তির এমন একটি মনস্তাত্বিক নিয়মের আওতাধীন হয়ে যায়, যার দৃষ্টিতে একবার জাহেলী বিদ্বেষ বা হীন ব্যক্তি স্বার্থের ভিত্তিতে সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবার পর মানুষ নিজের জিদ ও হঠকারিতার শৃংখলে এমনভাবে আবদ্ধ হয়ে যেতে থাকে যে, তারপর কোন প্রকার যুক্তি-প্রমাণ, প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা, নিরীক্ষাই সত্যকে গ্রহণ করার জন্য তার মনের দুয়ার খুলে দেয় না। কোন কোন মুফাসসির বলেন, এর অর্থ, যদি আমরা তাদেরকে আবার জীবিতও করতাম, তারপরও তারা ঈমান আনত না। কারণ কুফরী ও শির্ক করা তাদের স্বভাবে পরিণত হয়েছিল। [ফাতহুল কাদীরা] কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে উদ্দেশ্য এই যে, তারা পূর্বে যখন আমি তাদের থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম, তখনই মিথ্যারোপ করেছিল। আল্লাহকে রব ও রাসূলদের মেনে ঈমান আনতে তখনও স্বতঃস্ফূর্তভাবে চায়নি। বরং তারা অনিচ্ছাসত্বেই ঈমানের কথা বলেছিল। সুতরাং যাতে তারা পূর্বে ঈমান আনতে অস্বীকার করেছিল তাতে তারা কখনও ঈমান আনবে না। [তাবারী: আত-তাফসীরুস সহীহ ]
[২] অর্থাৎ কোন ধরনের অংগীকার পালনের পরোয়াই তাদের নেই। আল্লাহর পালিত বান্দা হবার কারণে জন্মগতভাবে প্রত্যেকটি মানুষ আল্লাহর সাথে যে অংগীকারে আবদ্ধ, তা প্রতিপালনের কোন পরোয়াই তাদের নেই। তারা সামাজিক অংগীকার পালনেরও কোন পরোয়া করে না, মানব সমাজের একজন সদস্য হিসেবে প্রত্যেক ব্যক্তি যার সাথে একটি সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ অন্যদিকে নিজের বিপদ-আপদ ও দুঃখকষ্টের মুহুর্তগুলোতে অথবা কোন সদিচ্ছা ও মহৎ বাসনা পোষণের মুহুর্তে মানুষ ব্যক্তিগতভাবে আল্লাহর সাথে যে অংগীকারে আবদ্ধ হয়, তাও তারা পালন করে না। এ ধরনের অংগীকার ভঙ্গ করাকে এখানে ফাসেকী বলা হয়েছে। [সা’দী] কোন কোন মুফাসসিরের মতে, এখানে অঙ্গীকার বলে সে অঙ্গীকারই উদ্দেশ্য যা আল্লাহ্ তাআলা আদমের পিঠে মানুষ থেকে নিয়েছিলেন। [আত-তাফসীরুস সহীহ]

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٣٢٢) -৫২৫
www.motaher21.net
সুরা: আল্‌ আরাফ
সুরা:৭
১০১-১০২ নং আয়াত:-
وَ مَا وَجَدۡنَا لِاَکۡثَرِہِمۡ مِّنۡ عَہۡدٍ ۚ
আমি তাদের অধিকাংশকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারীরূপে পাইনি,
And most of them We found not true to their covenant,
تِلۡکَ الۡقُرٰی نَقُصُّ عَلَیۡکَ مِنۡ اَنۡۢبَآئِہَا ۚ وَ لَقَدۡ جَآءَتۡہُمۡ رُسُلُہُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ ۚ فَمَا کَانُوۡا لِیُؤۡمِنُوۡا بِمَا کَذَّبُوۡا مِنۡ قَبۡلُ ؕ کَذٰلِکَ یَطۡبَعُ اللّٰہُ عَلٰی قُلُوۡبِ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۱۰۱﴾

ঐ জনপদগুলির কিছু ঘটনা আমি তোমার নিকট বর্ণনা করছি, তাদের কাছে রাসূলগণ সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণসহ এসেছিল, কিন্তু পূর্বে তারা যা প্রত্যাখ্যান করেছিল তার প্রতি তারা ঈমান আনার ছিলনা, এমনিভাবেই আল্লাহ অবিশ্বাসীদের অন্তঃকরণের উপর মোহর মেরে দিয়েছেন।
وَ مَا وَجَدۡنَا لِاَکۡثَرِہِمۡ مِّنۡ عَہۡدٍ ۚ وَ اِنۡ وَّجَدۡنَاۤ اَکۡثَرَہُمۡ لَفٰسِقِیۡنَ ﴿۱۰۲﴾
আমি তাদের অধিকাংশকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারীরূপে পাইনি, তবে তাদের অধিকাংশকে পাপাচারী রূপে পেয়েছি।

১০১-১০২ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে‌ ইবনে কাসীর বলেছেন:-

নূহ (আঃ), হূদ (আঃ), সালিহ্ (আঃ), লূত (আঃ) ও শশাআ’ইব (আঃ)-এর কওমের ধ্বংস সাধন, মুমিনদেরকে রক্ষাকরণ, রাসূলদের মাধ্যমে মু’জিযা ও দলীল প্রমাণাদি পেশ করতঃ হুজ্জত পূর্ণকরণ ইত্যাদি বিষয়ের বর্ণনা দেয়ার পর এখানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “হে মুহাম্মাদ (সঃ)! ঐ বস্তিগুলোর অবস্থার কথা আমি তোমাকে শুনিয়ে দিচ্ছি। তাদের কাছে নবী রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করেছিল। আমি তো রাসূল প্রেরণের মাধ্যমে হুজ্জত পূর্ণ করা ছাড়া কখনও কাউকে শাস্তি প্রদান করি না। এটা হচ্ছে ঐ বস্তিগুলোর ঘটনা যেগুলোর মধ্যে কতকগুলো এখনও বিদ্যমান রয়েছে এবং কতকগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি এটা করে তাদের উপর অত্যাচার করিনি, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের উপর অত্যাচার করেছিল। এজন্যে তারা নিজেরাই দায়ী।

(আরবী) অর্থাৎ পূর্বে তারা যা প্রত্যাখ্যান করেছিল তার প্রতি তারা ঈমান আনবার ছিল না। (আরবী) -এর (আরবী) অক্ষরটি হচ্ছে কারণ প্রকাশক। অর্থাৎ অহীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার কারণে তারা ঈমান আনয়ন করার হকদারই থাকলো না। যেমন অন্যত্র তিনি বলেনঃ “তোমরা তো জানই যে, মু’জিযা পেশ করলেও এরা ঈমান আনবে না।” এ জন্যেই এখানে তিনি বলেনঃ “এভাবেই আল্লাহ অবিশ্বাসীদের অন্তঃকরণের উপর মোহর লাগিয়ে দেন।

আমি তাদের অধিকাংশকে অর্থাৎ পূর্ববর্তী উম্মতের অধিকাংশকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারীরূপে পাইনি, বরং অধিকাংশকে পাপাচারীরূপে পেয়েছি। তারা ছিল আনুগত্য স্বীকার ও হুকুম মেনে চলার বহির্ভূত। এটা ছিল ঐ অঙ্গীকার যা রোযে আযলে আল্লাহ তা’আলা তাদের নিকট থেকে গ্রহণ করেছিলেন। ওরই উপর তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে এবং ঐ কথাটিই তাদের প্রকৃতি ও স্বভাবের মধ্যেও রাখা হয়েছে। সেই অঙ্গীকার ছিল এই-আল্লাহই হচ্ছেন তাদের প্রতিপালক ও মালিক। তিনি ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। এটা তারা স্বীকার করেও নিয়েছিল এবং সাক্ষ্য প্রদানও করেছিল। কিন্তু পরে তারা এর বিরুদ্ধাচরণ করতঃ ঐ অঙ্গীকারকে পৃষ্ঠ-পিছনে নিক্ষেপ করে এবং আল্লাহর সাথে অন্যদেরকেও শরীক করতে শুরু করে, যার না আছে কোন দলীল, না আছে। কোন ইজ্জত। এটা জ্ঞান ও শরীয়ত উভয়েরই পরিপন্থী । নিষ্কলুষ প্রতি তো এই প্রতিমা পূজাকে সমর্থন করে না। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত নবী ও রাসূল এই প্রতিমা পূজা থেকে মানুষকে বিরত রেখেছেন। যেমন সহীহ হাদীসে রয়েছে। যে, আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “আমি আমার বান্দাদেরকে মূর্তিপূজা থেকে পৃথক করে সৃষ্টি করেছিলাম। অতঃপর শয়তান এসে তাদেরকে সত্য দ্বীন থেকে সরিয়ে দেয় এবং আমি যা কিছু হালাল করেছিলাম তা তারা হারাম করে নেয়।” সহীহ বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “প্রত্যেক সন্তান স্বীয় ইসলামী প্রকৃতির উপর সৃষ্ট হয় । কিন্তু তার (ইয়াহূদী বা খ্রীষ্টান) পিতামাতাই তাকে ইয়াহূদী বা খ্রীষ্টান অথবা মাজুসী বানিয়ে দেয়।” আল্লাহ তা’আলা স্বীয় সম্মানিত গ্রন্থে বলেনঃ “আমি তোমাদের পূর্বে যতজন নবী পাঠিয়েছি তারা সবাই (আরবী)-এর তলকীন করতে থেকেছে।” ইরশাদ হচ্ছে- হে মুহাম্মাদ (সঃ!)। তোমার পূর্বে আমি যে রাসূলদেরকে পাঠিয়েছিলাম তাদেরকে আমি জিজ্ঞেস করবো- আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকেও কি উপাসনার যোগ্য বলা হয়েছিল? আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ “প্রত্যেক কওমের কাছে রাসূল পাঠিয়ে আমি বলেছিলাম- তোমরা শুধুমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করবে এবং তাগুত ও শয়তান থেকে দূরে থাকবে।”

এই ধরনের বহু আয়াত রয়েছে। (আরবী) -এই আয়াত সম্পর্কে হযরত উবাই ইবনে কা’ব (রাঃ) বলেন যে, অঙ্গীকার গ্রহণের দিন বান্দাগণ আল্লাহর একত্ববাদকে যে স্বীকার করে নিয়েছিল তা আল্লাহর গোচরে রয়েছে। এজন্যে আল্লাহর ইলমের ভিত্তিতেই তারা ঈমান আনছে না এবং এটাই হতে রয়েছে যে, দলীল প্রমাণাদি সামনে থাকা সত্ত্বেও তারা ঈমান আনছে না, যদিও তারা অঙ্গীকার গ্রহণের দিন ঈমান কবুল করেছিল। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা জানতেন যে, ওটা তাদের আন্তরিকতার সাথে ছিল না। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “যদি তাদেরকে দ্বিতীয়বার দুনিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হয় তবে পুনরায় তারা মূর্তিপূজা, শিরক ও পাপকার্য করতে থাকবে যা থেকে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল।”

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Araf
Sura:7
Verses :- 101-102
وَ مَا وَجَدۡنَا لِاَکۡثَرِہِمۡ مِّنۡ عَہۡدٍ ۚ
And most of them We found not true to their covenant,

After narrating the stories of the people of Prophets Nuh, Hud, Salih, Lut and Shu`ayb, destroying the disbelievers, saving the believers, warning these nations by explaining the truth to them with the evidence sent in the words of His Messengers, may Allah’s peace and blessings be on them all, Allah said;

تِلْكَ الْقُرَى نَقُصُّ عَلَيْكَ

Those were the towns that We relate to you (O Muhammad),

مِنْ أَنبَأيِهَا

their story, (and news),

وَلَقَدْ جَاءتْهُمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ

And there came indeed to them their Messengers with clear proofs,

and evidences of the truth of what they brought them.

Allah said in other Ayah,

وَمَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّى نَبْعَثَ رَسُولاً

And We never punish until We have sent a Messenger (to give warning). (17:15)

and,

ذَلِكَ مِنْ أَنْبَأءِ الْقُرَى نَقُصُّهُ عَلَيْكَ مِنْهَا قَأيِمٌ وَحَصِيدٌ وَمَا ظَلَمْنَـهُمْ وَلَـكِن ظَلَمُواْ أَنفُسَهُمْ

That is some of the news of the towns which We relate unto you; of them, some are standing, and some have been reaped. We wronged them not, but they wronged themselves. (11:100-101)

Allah said

فَمَا كَانُواْ لِيُوْمِنُواْ بِمَا كَذَّبُواْ مِن قَبْلُ

but they were not such who would believe in what they had rejected before.

According to the Tafsir of Ibn Atiyyah,

meaning they would not have later on believed in what the Messengers brought them, because they denied the truth when it first came to them (although they recognized it),

This explanation is sound, and is supported by Allah’s statement,

وَمَا يُشْعِرُكُمْ أَنَّهَأ إِذَا جَأءَتْ لَا يُوْمِنُونَ

وَنُقَلِّبُ أَفْيِدَتَهُمْ وَأَبْصَـرَهُمْ كَمَا لَمْ يُوْمِنُواْ بِهِ أَوَّلَ مَرَّةٍ

And what will make you perceive that if it came, they will not believe. And We shall turn their hearts and their eyes away (from guidance), as they refused to believe therein for the first time. (6:109-110)

This is why Allah said here,

كَذَلِكَ يَطْبَعُ اللّهُ عَلَىَ قُلُوبِ الْكَافِرِينَ

وَمَا وَجَدْنَا لَاكْثَرِهِم

Thus Allah does seal up the hearts of the disbelievers. And most of them We found not…

meaning, We did not find most of the previous nations,

مِّنْ عَهْدٍ وَإِن وَجَدْنَا أَكْثَرَهُمْ لَفَاسِقِينَ

true to their covenant, but most of them We found to indeed be rebellious.

This Ayah means, We found most of them to be rebellious, deviating away from obedience and compliance.

The covenant mentioned here is the Fitrah that Allah instilled in them while still in their fathers’ loins, and taking their covenant, that He is their Lord, King, and that there is no deity worthy of worship except Him. They affirmed this covenant and testified against themselves to this fact. However, they defied this covenant, threw it behind their backs and worshipped others besides Allah, having no proof or plea, nor support from rationality or by divine law. Surely, the pure Fitrah defies these actions, while all the honorable Messengers, from beginning to end, forbade them.

Muslim collected the Hadith,

يَقُولُ اللهُ تَعَالَى إِنِّي خَلَقْتُ عِبَادِي حُنَفَاءَ فَجَاءَتْهُمُ الشَّيَاطِينُ فَاجْتَالَتْهُمْ عَنْ دِينِهِمْ وَحَرَّمَتْ عَلَيْهِمْ مَا أَحْلَلْتُ لَهُم

Allah said, “I created My servants Hunafa (monotheists), but the devils came to them and deviated them from their religion and prohibited them what I allowed them.”

It is recorded in the Two Sahihs,

كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ وَيُنَصِّرَانِهِ وَيُمَجِّسَانِه

Every child is born upon the Fitrah, it is only his parents who turn him into a Jew, a Christian or a Zoroastrian.

তাফসীরে আবুবকর ‌যাকারিয়া‌ বলেছেন:-
[১] অর্থাৎ তাদের অন্তর মানবিক বুদ্ধিবৃত্তির এমন একটি মনস্তাত্বিক নিয়মের আওতাধীন হয়ে যায়, যার দৃষ্টিতে একবার জাহেলী বিদ্বেষ বা হীন ব্যক্তি স্বার্থের ভিত্তিতে সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবার পর মানুষ নিজের জিদ ও হঠকারিতার শৃংখলে এমনভাবে আবদ্ধ হয়ে যেতে থাকে যে, তারপর কোন প্রকার যুক্তি-প্রমাণ, প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা, নিরীক্ষাই সত্যকে গ্রহণ করার জন্য তার মনের দুয়ার খুলে দেয় না। কোন কোন মুফাসসির বলেন, এর অর্থ, যদি আমরা তাদেরকে আবার জীবিতও করতাম, তারপরও তারা ঈমান আনত না। কারণ কুফরী ও শির্ক করা তাদের স্বভাবে পরিণত হয়েছিল। [ফাতহুল কাদীরা] কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে উদ্দেশ্য এই যে, তারা পূর্বে যখন আমি তাদের থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম, তখনই মিথ্যারোপ করেছিল। আল্লাহকে রব ও রাসূলদের মেনে ঈমান আনতে তখনও স্বতঃস্ফূর্তভাবে চায়নি। বরং তারা অনিচ্ছাসত্বেই ঈমানের কথা বলেছিল। সুতরাং যাতে তারা পূর্বে ঈমান আনতে অস্বীকার করেছিল তাতে তারা কখনও ঈমান আনবে না। [তাবারী: আত-তাফসীরুস সহীহ ]
[২] অর্থাৎ কোন ধরনের অংগীকার পালনের পরোয়াই তাদের নেই। আল্লাহর পালিত বান্দা হবার কারণে জন্মগতভাবে প্রত্যেকটি মানুষ আল্লাহর সাথে যে অংগীকারে আবদ্ধ, তা প্রতিপালনের কোন পরোয়াই তাদের নেই। তারা সামাজিক অংগীকার পালনেরও কোন পরোয়া করে না, মানব সমাজের একজন সদস্য হিসেবে প্রত্যেক ব্যক্তি যার সাথে একটি সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ অন্যদিকে নিজের বিপদ-আপদ ও দুঃখকষ্টের মুহুর্তগুলোতে অথবা কোন সদিচ্ছা ও মহৎ বাসনা পোষণের মুহুর্তে মানুষ ব্যক্তিগতভাবে আল্লাহর সাথে যে অংগীকারে আবদ্ধ হয়, তাও তারা পালন করে না। এ ধরনের অংগীকার ভঙ্গ করাকে এখানে ফাসেকী বলা হয়েছে। [সা’দী] কোন কোন মুফাসসিরের মতে, এখানে অঙ্গীকার বলে সে অঙ্গীকারই উদ্দেশ্য যা আল্লাহ্ তাআলা আদমের পিঠে মানুষ থেকে নিয়েছিলেন। [আত-তাফসীরুস সহীহ]

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
আগের আয়াতে বলা হয়েছিলঃ “আমি তাদের দিলে মোহর মেরে দেই, তারপর তারা কিছুই শুনতে পায় না”-এর ব্যাখ্যা আল্লাহ‌ নিজেই এ আয়াতটিতে করে দিয়েছেন। এ ব্যাখ্যা থেকে একথা সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, দিলে মোহর মারার অর্থ হচ্ছেঃ মানবিক বুদ্ধিবৃত্তির এমন একটি মনস্তাত্বিক নিয়মের আওতাধীন হয়ে যাওয়া, যার দৃষ্টিতে একবার জাহেলী বিদ্বেষ বা হীন ব্যক্তি স্বার্থের ভিত্তিতে সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবার পর মানুষ নিজের জিদ ও হঠকারিতার শৃংখলে এমনভাবে আবদ্ধ হয়ে যেতে থাকে যে, তারপর কোন প্রকার যুক্তি-প্রমাণ, প্রত্যক্ত পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষাই সত্যকে গ্রহণ করার জন্য তার মনের দুয়ার খুলে দেয় না।

কারোর মধ্যে অঙ্গীকার পালনের মনোভাব পাইনি”-অর্থাৎ কোন ধরনের অঙ্গীকার পালনের পরোয়াই তাদের নেই। আল্লাহর পালিত বান্দা হবার কারণে জন্মগতভাবে প্রত্যেকটি মানুষ আল্লাহর সাথে যে অঙ্গীকারে আবদ্ধ, তা প্রতিপালনের কোন পরোয়াই তাদের নেই। তারা সামাজিক অঙ্গীকার পালনেরও কোন পরোয়া করে না। মানব সমাজের একজন সদস্য হিসেবে প্রত্যেক ব্যক্তি যার সাথে একটি সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ, অন্যদিকে নিজের বিপদ-আপদ ও দুঃখ-কষ্টের মুহূর্তগুলোতে অথবা কোন সদিচ্ছা ও মহৎ বাসনা পোষনের মুহূর্তে মানুষ ব্যক্তিগতভাবে আল্লাহর সাথে যে অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়, তাও তারা পালন করে না। এ তিন ধরনের অঙ্গীকার ভঙ্গ করাকে এখানে ফাসেকী বলা হয়েছে।

তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-

১০১-১০২ নং আয়াতের তাফসীরঃ

আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাঃ)-এর কাছে নূহ, হূদ, সালেহ, লূত এবং শু‘য়াইব (আঃ) ও তাদের সম্প্রদায়ের ঘটনা বর্ণনা করলেন এ উম্মাতকে শিক্ষা দেয়ার জন্য। তাদের কাছে রাসূলগণ হিদায়াতের বাণী নিয়ে এসেছিলেন কিন্তু তারা ঈমান না আনার কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদের অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন। অতএব যারা তাদের পথ অবলম্বন করবে তাদের পরিণতিও তা-ই হবে। আর নাবী (সাঃ)-এর অন্তরকে মজবুত করার জন্য, যাতে জাতির কাছে দাওয়াত দিতে কষ্টের সম্মুখীন হয়ে মনোবল হারিয়ে না ফেলেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَکُلًّا نَّقُصُّ عَلَیْکَ مِنْ اَنْۭبَا۬ئِ الرُّسُلِ مَا نُثَبِّتُ بِھ۪ فُؤَادَکَﺆ وَجَا۬ءَکَ فِیْ ھٰذِھِ الْحَقُّ وَمَوْعِظَةٌ وَّذِکْرٰی لِلْمُؤْمِنِیْنَ ‏)

“রাসূলদের যে সকল বৃত্তান্ত‎ আমি তোমার নিকট বর্ণনা করছি, যা দ্বারা আমি তোমার হৃদয়কে দৃঢ় করি, এর মাধ্যমে তোমার নিকট এসেছে সত্য এবং মু’মিনদের জন্য এসেছে উপদেশ ও সাবধান বাণী।” (সূরা হূদ ১১:১২০)

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. পূর্ববর্তী জাতির ঘটনা বর্ণনা করায় শরীয়তের মূলনীতি জানা যায়।
২. নাবী (সাঃ)-এর সত্যতার প্রমাণ এবং তিনি গায়েবও জানতেন না তারও প্রমাণ পেলাম, তিনি পূর্ববর্তী জাতির সকল সংবাদ জেনেছেন ওয়াহীর মাধ্যমে।
৩. পূর্ববর্তী নাবীদের সাথে তাদের জাতিরা কী আচরণ করেছিল তা জানা গেল।

Leave a Reply