(Book# 114/٣٢٧) -৫৩০ www.motaher21.net সুরা: আল্‌ আরাফ সুরা:৭ ১৩৬-১৩৯ নং আয়াত:- إِنَّ هَـوُلاء مُتَبَّرٌ مَّا هُمْ فِيهِ এ সব লোক যে কাজে লিপ্ত রয়েছে তাতো ধ্বংস করা হবে, “Verily, these people will be destroyed for that which they are engaged in,”

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٣٢٧) -৫৩০
www.motaher21.net
সুরা: আল্‌ আরাফ
সুরা:৭
১৩৬-১৩৯ নং আয়াত:-
إِنَّ هَـوُلاء مُتَبَّرٌ مَّا هُمْ فِيهِ
এ সব লোক যে কাজে লিপ্ত রয়েছে তাতো ধ্বংস করা হবে,
“Verily, these people will be destroyed for that which they are engaged in,”

فَانۡتَقَمۡنَا مِنۡہُمۡ فَاَغۡرَقۡنٰہُمۡ فِی الۡیَمِّ بِاَنَّہُمۡ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ کَانُوۡا عَنۡہَا غٰفِلِیۡنَ ﴿۱۳۶﴾

সুতরাং আমি তাদের হতে প্রতিশোধ নিলাম এবং তাদেরকে অতল সমুদ্রে ডুবিয়ে মারলাম, কেননা তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, আর এই ব্যাপারে তারা ছিল সম্পূর্ণ গাফিল বা উদাসীন।

وَ اَوۡرَثۡنَا الۡقَوۡمَ الَّذِیۡنَ کَانُوۡا یُسۡتَضۡعَفُوۡنَ مَشَارِقَ الۡاَرۡضِ وَ مَغَارِبَہَا الَّتِیۡ بٰرَکۡنَا فِیۡہَا ؕ وَ تَمَّتۡ کَلِمَتُ رَبِّکَ الۡحُسۡنٰی عَلٰی بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ۬ۙ بِمَا صَبَرُوۡا ؕ وَ دَمَّرۡنَا مَا کَانَ یَصۡنَعُ فِرۡعَوۡنُ وَ قَوۡمُہٗ وَ مَا کَانُوۡا یَعۡرِشُوۡنَ ﴿۱۳۷﴾

যে জাতিকে দুর্বল ও দীনহীন ভাবা হত আমি তাদেরকে আমার কল্যাণ প্রাপ্ত রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী বানাই, আর বানী ইসরাঈল জাতি সম্পর্কে তোমার রবের শুভ ও কল্যাণময় বাণী (প্রতিশ্রুতি) পূর্ণ হল যেহেতু তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল। আর ফির‘আউন ও তার সম্প্রদায়ের কীর্তিকলাপ ও উচ্চ প্রাসাদসমূহকে আমি ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছি।

وَ جٰوَزۡنَا بِبَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ الۡبَحۡرَ فَاَتَوۡا عَلٰی قَوۡمٍ یَّعۡکُفُوۡنَ عَلٰۤی اَصۡنَامٍ لَّہُمۡ ۚ قَالُوۡا یٰمُوۡسَی اجۡعَلۡ لَّنَاۤ اِلٰـہًا کَمَا لَہُمۡ اٰلِـہَۃٌ ؕ قَالَ اِنَّکُمۡ قَوۡمٌ تَجۡہَلُوۡنَ ﴿۱۳۸﴾

আমি বানী ইসরাঈলকে সমুদ্র পার করিয়ে দিলাম, অতঃপর তারা মূর্তি পূজারত এক জাতির সংস্পর্শে এল। তারা বললঃ হে মূসা! তাদের যেরূপ মা‘বূদ রয়েছে, আমাদের জন্যও ঐরূপ মা‘বূদ বানিয়ে দাও। সে বললঃ তোমরা একটি মূর্খ সম্প্রদায়।
اِنَّ ہٰۤؤُلَآءِ مُتَبَّرٌ مَّا ہُمۡ فِیۡہِ وَ بٰطِلٌ مَّا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۳۹﴾
এ সব লোক যে কাজে লিপ্ত রয়েছে তাতো ধ্বংস করা হবে, আর তারা যা করছে তা অমূলক ও বাতিল বিষয়।

১৩৬-১৩৯ নং আয়াতের তাফসীর:-
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

অর্থাৎ বনী ইসরাঈলকে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের উত্তরাধিকারী করে দিয়েছি। কেউ কেউ এর এ অর্থ গ্রহণ করেছেন যে, বনী ইসরাঈলকে খোদ মিসরের মালিক বানিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এ অর্থ গ্রহণ করার স্বপক্ষে একে তো কুরআনের ইঙ্গিতগুলো যথেষ্ট পরিমাণে স্পষ্ট নয়। তদুপরি ইতিহাস ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনাবলী থেকেও এর স্বপক্ষে কোন শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাই এ অর্থ গ্রহণ করার ব্যাপারে আমি দ্বিধান্বিত। (দেখুন সূরা আল কাহাফের ৫৭ টীকা এবং আশ শুআরার ৪৫ টীকা )।

[[টিকা:৪৫) কোন কোন তাফসীরকার এ আয়াতের অর্থ এভাবে গ্রহণ করেছেনঃ যেসব উদ্যান, নদী, ধনভাণ্ডার ও উন্নত আবাসগৃহ ত্যাগ করে এ জালেমরা বের হয়েছিল মহান আল্লাহ‌ বনী ইসরাঈলকে সেগুলোরই ওয়ারিশ বানিয়ে দেন। এ অর্থ যদি গ্রহণ করা হয়, তাহলে অবশ্যই মেনে নিতে হবে যে, ফেরাউনের ডুবে মরার পর বনী ইসরাঈল আবার মিসরে পৌঁছে যাবে এবং ফেরাউনের বংশধরদের সমস্ত ধন-দৌলত এবং শক্তি, পরাক্রম ও গৌরবের অধিকারী হবে। কিন্তু এ জিনিসটি প্রথমত ইতিহাস থেকেও প্রমাণিত নয় এবং দ্বিতীয়ত কুরআনের অন্যান্য জায়গায় বিস্তারিত বিবরণও আয়াতের এ অর্থ গ্রহণের অনুকূল নয়। সূরা বাকারাহ, মায়েদাহ, আ’রাফ ও তা-হা-তে যে ইতিবৃত্ত বর্ণনা করা হয়েছে তা থেকে পরিষ্কার জানা যায়, ফেরাউনের ডুবে মরার পর বনী ইসরাঈল মিসরে ফিরে আসার পরিবর্তে নিজেদের অভীষ্ট মনজিলের (ফিলিস্তীন) দিকেই এগিয়ে যেতে থাকে। তারপর থেকে দাউদের আমল (খৃঃ পূঃ ৯০৩-১০১৩) পর্যন্ত তাদের ইতিহাসের সব ঘটনাই আজকের পৃথিবীতে সিনাই উপদ্বীপ, উত্তর আরব, পূর্ব জর্দান (ট্রান্সজর্ডান) ও ফিলিস্তীন নামে পরিচিত এলাকায় ঘটেছে। তাই এর সঠিক ব্যাখ্যা হচ্ছে, আল্লাহ‌ একদিকে ফেরাউনের বংশধরদেরকে এসব নিয়ামত থেকে বঞ্চিত করেন এবং অন্যদিকে বনী ইসরাঈলকে এসব নিয়ামতই দান করেন। অর্থাৎ তারা ফিলিস্তীন ভূখণ্ডে বাগ-বাগীচা, নদ-নদী, ধনভাণ্ডার ও উত্তম আবাসিক ভবন সমূহের অধিকারী হয়। সূরা আরাফের নিন্মোক্ত আয়াতে এ ব্যাখ্যার প্রতি সমর্থন পাওয়া যায়ঃ

فَانْتَقَمْنَا مِنْهُمْ فَأَغْرَقْنَاهُمْ فِي الْيَمِّ بِأَنَّهُمْ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا وَكَانُوا عَنْهَا غَافِلِينَ – وَأَوْرَثْنَا الْقَوْمَ الَّذِينَ كَانُوا يُسْتَضْعَفُونَ مَشَارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا

“তখন আমি তাদের থেকে প্রতিশোধ নিলাম এবং তাদেরকে সাগরে ডুবিয়ে দিলাম। কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা আখ্যায়িত করেছিল এবং তা থেকে বেপরোয়া হয়ে গিয়েছিল। আর তাদের পরিবর্তে আমি যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল তাদেরকে এমন একটি দেশের পূর্ব ও পশ্চিমের ওয়ারিস বানিয়ে দিলাম যাকে আমি সমৃদ্ধিতে ভরে দিয়েছিলাম।” ( ১৩৬-১৩৭ আয়াত )

এ সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ দেশের উপমা কুরআন মজীদে সাধারণত ফিলিস্তীনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। যখন কোন এলাকার নাম না নিয়ে এ গুণটি বর্ণনা করা হয় তখন এ থেকে এ এলাকার কথা বলা হয়েছে বলে মনে করা হয়। যেমন সূরা বনী ইসরাঈলে বলা হয়েছেঃ إِلَىالْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ এবং সূরা আম্বিয়ায়ে বলা হয়েছেঃ

وَنَجَّيْنَاهُ وَلُوطًا إِلَى الْأَرْضِ الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا لِلْعَالَمِينَ

আরো বলা হয়েছেঃ

وَلِسُلَيْمَانَ الرِّيحَ عَاصِفَةً تَجْرِي بِأَمْرِهِ إِلَى الْأَرْضِ الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا এভাবে সূরা সাবা-এ বলা হয়েছে الْقُرَى الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا

এ সবগুলো আয়াতে বরকত শব্দ ফিলিস্তীনের জনপদগুলোর সম্পর্কেই ব্যবহৃত হয়েছে।]]

* বনী ইসরাঈল যে স্থান থেকে লোহিত সাগর অতিক্রম করেছিল সেটি ছিল সম্ভবত বর্তমান সুয়েজ ও ইসমাঈলীয়ার মধ্যবর্তী কোন একটি স্থান। এখান থেকে লোহিত সাগর পার হয়ে তারা সিনাই উপদ্বীপের দক্ষিণ অঞ্চলের দিকে উপকূলের কিনারা ঘেঁষে রওয়ানা হয়েছিল। সে সময় সিনাই উপদ্বীপের পশ্চিম ও উত্তরাংশ মিসরের শাসনাধীন ছিল। দক্ষিণের এলাকায় বর্তমান তূর শহর ও আবু যানীমার মধ্যবর্তী স্থানে তামা ও নীলম পাথরের খনি ছিল। এ খনিজ সম্পদ দ্বারা মিসরবাসী প্রচুর লাভবান হতো। এ খনিগুলো সংরক্ষন করার জন্য মিসরীয়রা কয়েক জায়গায় টহলদার চৌকি স্থাপন করেছিল। মাফকাহ নামক স্থানে এ ধরনের একটি চৌকি ছিল। এখানে ছিল মিসরীয়দের একটি বিরাট মন্দির। উপদ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে এখনো এর ধ্বংসাবশেষে পাওয়া যায়। এর কাছাকাছি আর একটি স্থানে প্রাচীন সিরীয় জাতিসমূহের চন্দ্রদেবীর মন্দির ছিল। সম্ভবত এরই কোন একটি জায়গা দিয়ে যাবার সময় দীর্ঘকাল মিসরীয়দের গোলামীতে জীবন যাপন করার কারণে মিসরীয় পৌত্তলিক ভাবধারায় গভীরভাবে প্রভাবিত বনী ইসরাঈল সম্প্রদায়ের মনে একটি কৃত্রিম খোদার প্রয়োজন অনুভূত হয়ে থাকবে।

মিসরবাসীদের দাসত্ব বনী ইসরাঈলীদের মনমানসকে কিভাবে বিকৃত করে দিয়েছিল নিম্নোক্ত বিষয়টি থেকে তা সহজেই অনুমান করা যায়। মিসর থেকে বের হয়ে আসার ৭০ বছর পর হযরত মূসার প্রথম খলীফা হযরত ইউসা ইবনে নূন বনী ইসরাঈলীদের সাধারণ সমাবেশে তাঁর শেষ ভাষণে বলেনঃ

“তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সৎ সংকল্প ও নিষ্ঠার সাথে তাঁর উপাসনা করো। আর তোমাদের পূর্ব-পুরুষরা বড় নদীর (ফোরাত) ওপারে ও মিসরে যেসব দেবতার পূজা করতো তাদেরকে বাদ দাও। আর একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত যদি তোমাদের খারাপ লাগে তাহলে তোমরা যার উপাসনা করবে আজই তাকে মনোনীত করে নাও। …..এখন রইলো আমার ও আমার পরিবারবর্গের কথা, আমরা শুধুমাত্র আল্লাহরই উপাসনা করতে থাকবো।” (যিহোশূয় ২৪: ১৪-১৫)

এ থেকে বুঝা যায় যে, ফেরাউন শাসিত মিসরের দাসত্বের যুগে এ জাতির শিরা উপশিরা পৌত্তলিকতার যে প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছিল, ৪০ বছর পর্যন্ত হযরত মূসার এবং ২৮ বছর পর্যন্ত হযরত ইউশার অধীনে শিক্ষা ও অনুশীলন লাভ এবং তাঁদের নেতৃত্ব জীবন পরিচালনা করার পরও তা দূর করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় তারা নিজেদের সাবেক প্রভুদেরকে এসব মূর্তির পদতলে মাথা ঘষতে দেখেছে, মিসর থেকে বের হবার সাথে সাথেই সেই ধরনের মূর্তি দেখে তার সামনে মাথা নোয়াতে এসব বিকৃতমনা ও পথভ্রষ্ট মুসলমানরা যে উদগ্রীব হয়ে উঠবে না, সেটা কেমন করেই বা সম্ভব।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Araf
Sura:7
Verses :- 136-139
إِنَّ هَـوُلاء مُتَبَّرٌ مَّا هُمْ فِيهِ

“Verily, these people will be destroyed for that which they are engaged in,”

The People of Fir`awn drown in the Sea; the Children of Israel inherit the Holy Land

Allah tells;

فَانتَقَمْنَا مِنْهُمْ

فَأَغْرَقْنَاهُمْ فِي الْيَمِّ بِأَنَّهُمْ كَذَّبُواْ بِأيَاتِنَا وَكَانُواْ عَنْهَا غَافِلِينَ

وَأَوْرَثْنَا الْقَوْمَ الَّذِينَ كَانُواْ يُسْتَضْعَفُونَ

So We took retribution from them. We drowned them in the sea, because they belied Our Ayat and were heedless with them. And We made the people who were considered weak to inherit…

Allah states that when the people of Fir`awn rebelled and transgressed, even though He inflicted them with consecutive signs, one after another, He took retribution from them by drowning them in the sea that Musa parted by Allah’s power, and he and the Children of Israel passed through. In their pursuit, Fir`awn and his soldiers went in the sea chasing Musa and his people. When they all had gone inside the water, the sea closed in on them and they all drowned, because they belied the Ayat of Allah and were heedless of them. Allah said that He has granted the people who were considered weak, the Children of Israel, to inherit the eastern and western parts of the land.

مَشَارِقَ الَارْضِ وَمَغَارِبَهَا الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا
the eastern parts of the land and the western parts thereof which We have blessed.

Al-Hasan Al-Basri and Qatadah commented that Allah’s statement,

refers to the Sham area (Greater Syria).

وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ الْحُسْنَى عَلَى بَنِي إِسْرَايِيلَ بِمَا صَبَرُواْ

And the fair Word of your Lord was fulfilled for the Children of Israel, because of their endurance.

Mujahid and Ibn Jarir said that Allah’s statement, is explained by Allah’s other statement,

وَنُرِيدُ أَن نَّمُنَّ عَلَى الَّذِينَ اسْتُضْعِفُواْ فِى الاٌّرْضِ وَنَجْعَلَهُمْ أَيِمَّةً وَنَجْعَلَهُمُ الْوَارِثِينَ

وَنُمَكِّنَ لَهُمْ فِى الاٌّرْضِ وَنُرِىَ فِرْعَوْنَ وَهَـمَـنَ وَجُنُودَهُمَا مِنْهُمْ مَّا كَانُواْ يَحْذَرونَ

And We wished to do a favor to those who were weak (and oppressed) in the land, and to make them rulers and to make them the inheritors. And to establish them in the land, and We let Fir`awn and Haman and their hosts receive from them that which they feared. (28:5-6)

Further, Allah’s statement,

وَدَمَّرْنَا مَا كَانَ يَصْنَعُ فِرْعَوْنُ وَقَوْمُهُ

And We destroyed what Fir`awn and his people produced,

meaning, We destroyed what Fir`awn and his people produced, such as agriculture and buildings.

وَمَا كَانُواْ يَعْرِشُونَ

and what they erected.

Ibn Abbas and Mujahid said that
يَعْرِشُونَ
(they erected),

means, they built.

The Children of Israel safely cross the Sea, but still held on to the Idea of Idol Worshipping

Allah tells;

وَجَاوَزْنَا بِبَنِي إِسْرَايِيلَ الْبَحْرَ

And We brought the Children of Israel (with safety) across the sea,

Allah mentions the words that the ignorant ones among the Children of Israel uttered to Musa after they crossed the sea and witnessed Allah’s Ayat and great power.

فَأَتَوْاْ عَلَى قَوْمٍ يَعْكُفُونَ عَلَى أَصْنَامٍ لَّهُمْ

And they came upon a people devoted to some of their idols (in worship).

Some scholars of Tafsir said that the people mentioned here were from Canaan, or from the tribe of Lakhm.

Ibn Jarir commented,

“They were worshipping idols that they made in the shape of cows, and this influenced the Children of Israel later when they worshipped the calf.”

They said here,

قَالُواْ يَا مُوسَى اجْعَل لَّنَا إِلَـهًا كَمَا لَهُمْ الِهَةٌ

They said:”O Musa! Make for us a god as they have gods.”

قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ تَجْهَلُونَ

He said:”Verily, you are an ignorant people.”

Musa replied, you are ignorant of Allah’s greatness and majesty and His purity from any partners or anything resembling Him.

إِنَّ هَـوُلاء مُتَبَّرٌ مَّا هُمْ فِيهِ

“Verily, these people will be destroyed for that which they are engaged in, (they will perish),

وَبَاطِلٌ مَّا كَانُواْ يَعْمَلُونَ

“and all that they are doing is in vain.”

Commenting on this Ayah, Imam Abu Jafar bin Jarir reported from Abu Waqid Al-Laythi that;

they (the Companions) went out from Makkah with the Messenger of Allah for (the battle of) Hunayn. Abu Waqid said, “Some of the disbelievers had a lote tree whose vicinity they used to remain in, and upon which they would hang their weapons on. That tree was called `Dhat Al-Anwat’. So when we passed by a huge, green lote tree, we said, `O Messenger of Allah! Appoint for us a Dhat Al-Anwat as they have.’

He said,

قُلْتُمْ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ كَمَا قَالَ قَوْمُ مُوسَى لِمُوسَى

by He in Whose Hand is my soul! You said just as what the people of Musa said to him:

اجْعَل لَّنَا إِلَـهًا كَمَا لَهُمْ الِهَةٌ قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ تَجْهَلُونَ

إِنَّ هَـوُلاء مُتَبَّرٌ مَّا هُمْ فِيهِ وَبَاطِلٌ مَّا كَانُواْ يَعْمَلُونَ

“Make for us a god as they have gods.” He said:”Verily, you are an ignorant people. Verily, these people will be destroyed for that which they are engaged in, and all that they are doing is in vain.

তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-
১৩৬-১৩৯ নং আয়াতের তাফসীর:

ফিরাউনের কওমের উপর পর্যায়ক্রমে নিদর্শনাবলীর আগমন এবং একের পর এক শাস্তি অবতরণ সত্ত্বেও তারা অবাধ্যতা ও ঔদ্ধত্যের উপরেই প্রতিষ্ঠিত থাকলো। ফলে তাদেরকে সমুদ্রে ডুবিয়ে দেয়া হলো। সেখানে মূসা (আঃ)-এর জন্যে রাস্তা বানিয়ে দেয়া হলো। তিনি ঐ রাস্তায় নেমে পড়লেন। তাকে পার করিয়ে নেয়া হলো। তার সাথে বানী ইসরাঈলও ছিল। অতঃপর ফিরাউন এবং তার সেনাবহিনীও তাদের অনুসরণ করে ঐ পথে নেমে পড়লো। যখনই তারা মাঝ দরিয়ায় পৌঁছেছে তখনই দু’দিকের পানি মিলে গেল এবং তারা ডুবে মরলো। এটা ছিল আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা এবং এগুলোর প্রতি উদাসীন থাকারই ফল। আল্লাহ তা’আলা সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি বানী ইসরাঈলকে ফিরাউনের রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেন, যাদেরকে অত্যন্ত দুর্বল মনে করা হতো এবং যারা দুর্বল হওয়ার কারণে ফিরাউনের গোলামী করতো। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “আমি ঐ কওমের উপর ইহসান করতে চাই যাদেরকে দুর্বল মনে করা হয়। আমি তাদেরকে বাদশাহ্ ও সরদার বানাতে চাই। তাদেরকে আমি আমার যমীনের উত্তরাধিকারীরূপে গণ্য করবো। আর ফিরাউন ও তার কওম যে শাস্তির আশংকা করতো ঐ শাস্তিই আমি তাদের উপর নাযিল করবো।” আর এক জায়গায় তিনি বলেনঃ “তারা ছেড়ে গিয়েছিল কতই না উদ্যান ও প্রস্রবণ! শস্যক্ষেত ও মনোরম আবাস! তারা সানন্দে উপভোগ করতে পার্থিব সম্পদ। আমি অপর গোত্রকে এর উত্তরাধিকারী বানিয়েছি।” হাসান বসরী (রঃ) ও কাতাদা (রঃ) দ্বারা শাম বা সিরিয়া দেশ বুঝিয়েছেন। আল্লাহ তাআলার কল্যাণময় বাণী বানী ইসরাঈল জাতি সম্পর্কে পূর্ণ হলো, কেননা তারা ধৈর্যধারণ করেছিল। আল্লাহ তাআলার সেই কথা ও প্রতিশ্রুতি হচ্ছে- (আরবী) অর্থাৎ “আমি ঐ সম্প্রদায়ের উপর অনুগ্রহ করতে চাই যাদেরকে দুর্বল মনে করা হয়। আমি তাদেরকে বাদশাহ্ ও নেতা বানাতে চাই। (এটাও ইবনে জারীর (রঃ) ও অন্যান্য হতে বর্ণিত হয়েছে এবং এটাই প্রকাশমান) তাদেরকে আমি আমার যমীনের উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেবো। আর ফিরাউন ও তার কওম যে শাস্তির আশঙ্কা করতো ঐ শাস্তিই আমি তাদের উপর নাযিল করবো।” (২৮৫-৬)

(আরবী) অর্থাৎ ফিরাউন ও তার কওম যে অট্টালিকা ও উদ্যানসমূহ তৈরী করেছিল এবং যেসব সুউচ্চ প্রাসাদ নির্মাণ করেছিল, সবগুলোকেই আমি ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছি। (এটা ইবনে আব্বাস ও মুজাহিদ বলেছেন)

বানী ইসরাঈলের অজ্ঞ লোকদের বাসনার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, মূসা (আঃ) যখন তাদেরকে নিয়ে সমুদ্র পার হয়ে গেলেন এবং তারা আল্লাহ তা’আলার এই বিরাট নিদর্শন স্বচক্ষে দেখলো তখন তারা এমন এক সম্প্রদায়ের পার্শ্ব দিয়ে গমন করলো যারা মূর্তিপূজায় লিপ্ত হয়েছিল। কোন কোন মুফাসসির বলেন যে, তারা ছিল কিনআনী গোত্র বা লাখম গোত্র। তারা গাভীর ন্যায় জন্তুর মূর্তি বানিয়ে নিয়েছিল এবং ওরই উপাসনায় লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। এ জন্যেই পরবর্তীতে ওরই সাথে সাদৃশ্যযুক্ত একটি বাছুরের উপাসনায় তারা জড়িয়ে পড়েছিল এবং বলেছিল- “হে মূসা (আঃ)! আমাদের জন্যে একটি মা’রূদ বানিয়ে দিন, যেমন এই লোকগুলোর মা’রূদসমূহ রয়েছে।” মূসা (আঃ) বললেনঃ “তোমরা বড়ই মূর্খ। তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ভুলে বসেছে। তিনি এসব ব্যাপার থেকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র যে, তাঁর শরীক ও সমতুল্য কেউ হতে পারে। তাদের মাযহাবও ভিত্তিহীন এবং আমলও ভিত্তিহীন।”

আবৃ ওয়াফিদিল লাইসী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে মক্কা থেকে হুনাইনের দিকে যাত্রা শুরু করেছিলাম। পথিমধ্যে কাফিরদের একটি কুল বৃক্ষ আমাদের সামনে পড়ে যার পার্শ্বে তারা আসর জমিয়ে বসেছিল। তারা তাদের অস্ত্রশস্ত্র ঐ গাছে বেঁধে রেখেছিল। এভাবে তারা ঐ গাছটির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছিল। ঐ গাছটিকে (আরবী) বলা হতো। আমরা যখন ঐ গাছের নিকট পৌঁছি তখন দেখি যে, ওটা খুবই সবুজ ও জাকজমকপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তখন আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমাদের জন্যেও একটা (আরবী)-এর ব্যবস্থা করে দিন, যেমন তাদের রয়েছে। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! তোমরা তো ঐ কথাই বলেছে যে কথা মূসা (আঃ)-এর কওম তাকে বলেছিল। তারা বলেছিলঃ “হে মূসা (আঃ)! আপনি আমাদের জন্যেও একটি মা’বুদ বানিয়ে দিন, যেমন ঐ লোকদের রয়েছে।” তখন মূসা (আঃ) বলেছিলেনঃ “তোমরা তো বড়ই অজ্ঞ ও মূখ। তাদের পন্থা ও তাদের আমল সবই মিথ্যা ও বাতিল।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “তোমরাও তাদেরই পদাংক অনুসরণ করতে চাচ্ছ।” (১. এটা ইমাম আহমাদ (রঃ) ও ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ) বর্ণনা করেছেন। ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) এটা পেশ করেছেন)

তাফসীরে আবুবকর ‌যাকারিয়া‌ বলেছেন:-
[১] বলা হয়েছেঃ “যে জাতিকে দুর্বল ও হীন বলে মনে করা হত, তাদেরকে আমি সে ভূমির উদয়াচল ও অস্তাচলের অধিপতি বানিয়ে দিয়েছি, যাতে আমি রেখেছি বরকত বা আশীর্বাদ ” কুরআনের শব্দগুলো লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এতে “যে জাতিকে ফিরআউনের সম্প্রদায় দুর্বল ও হীন মনে করেছিল” বলা হয়েছে। এ কথা বলা হয়নি যে, “যে জাতি দুর্বল ও হীন ছিল।” এতে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, আল্লাহ্ তা’আলা যে জাতির সহায়তায় থাকেন প্রকৃতপক্ষে তারা কখনো দুর্বল হয় না। যদিও কোন সময় তাদের বাহ্যিক অবস্থা দেখে অন্যান্য লোক ধোঁকায় পড়ে যায় এবং তাদেরকে দুর্বল বলে মনে করে বসে। কিন্তু শেষ পরিণতির ক্ষেত্রে সবাই দেখতে পায় যে, তারা মোটেই দুর্বল ও হীন ছিল না। কারণ, প্রকৃত শক্তি ও মর্যাদা সম্পূর্ণভাবে আল্লাহরই হাতে।

আর যমীনের মালিক বানিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে (وَاَوْرَثْنَا) শব্দটি ব্যবহার করে বলেছেন যে, তাদেরকে উত্তরাধিকারী বানিয়েছি। (مَشَارِقَ) শব্দটি (مَشْرِقٌ) এর বহুবচন। আর (مَغَارِب) হচ্ছে (مَغْرِبٌ) এর বহুবচন। শীত ও গ্রীষ্মের বিভিন্ন ঋতুতে যেহেতু সূর্যের উদয়াস্ত পরিবর্তিত হয়ে থাকে, সেহেতু এখানে ‘মশারিক’ বা উদয়াচলসমূহ এবং মাগারিব বা অস্তাচলসমূহ বহুবচন জ্ঞাপক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। আর ভূমি ও যমীন বলতে এক্ষেত্রে অধিকাংশ মুফাসসিরীনের মতে শাম বা সিরিয়া ও মিসর ভূমিকেই উদ্দেশ্য করা হয়েছে- যাতে আল্লাহ তা’আলা কওমে-ফিরআউন ও কওমে-আমালেকাকে ধ্বংস করার পর বনী-ইসরাঈলকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন এবং শাসনক্ষমতা দান করেছিলেন। [ইবন কাসীর; সা’দী]
[২] বনী ইসরাঈলদের মত অবস্থা এ উম্মতের মধ্যে ঘটেছে এবং নিত্য ঘটছে। এ উম্মাতের মধ্যেও কিছু না বুঝে না শুনে অন্যান্য জাতির অনুকরণে শির্ক ও কুফরী করার মানসিকতা রয়ে গেছে। আবু ওয়াকিদ আল-লাইসি বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক হাদীসে এসেছে, আবু ওয়াকিদ বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হুনাইনের দিকে এক যুদ্ধে বের হলাম। আমরা একটা বরই গাছের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন আমি বললামঃ হে আল্লাহর নবী। আমাদের জন্য এ গাছটিকে লটকানোর জন্য নির্ধারিত করে দিন যেমনটি নির্ধারিত রয়েছে কাফেরদের জন্য। কারণ কাফেরদের একটি বরই গাছ ছিল যাতে তারা তাদের হাতিয়ার লটকিয়ে রাখত এবং তার চতুষ্পার্শ ঘিরে বসত। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহু আকবার! এটা তো এমন যেমন বনী ইসরাঈল মূসাকে বলেছিলঃ “তাদের যেমন অনেক উপাস্য রয়েছে আমাদের জন্যও তেমন উপাস্য নির্ধারিত করে দিন”। অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতির অনুসরণ করবে।” [ তিরমিয়ীঃ ২১৮০, মুসনাদে আহমাদঃ ৫/২১৮, ইবন হিব্বানঃ ৬৭০২]

তাফসীরে‌ ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
এদের এই হঠকারিতা ও কপট আচরণের কথা আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করেন এভাবে:

(فَاسْتَكْبَرُوْا وَكَانُوْا قَوْمًا مُّجْرِمِيْنَ)

“অতঃপর তারা অহঙ্কার করল আর তারা তো ছিল অপরাধী সম্প্রদায়।”

এছাড়াও আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে অনেক শাস্তি দিয়েছিলেন। সবশেষে তাদেরকে সদলবলে সাগরে ডুবিয়ে মারেন।

(وَأَوْرَثْنَا الْقَوْمَ الَّذِيْنَ كَانُوْا يُسْتَضْعَفُوْنَ)

অর্থাৎ যাদেরকে ফির‘আউন দাস বানিয়ে রেখেছিল এবং যাদের ওপর নানাভাবে জুলুম করত, এদেরকে বরকতময় রাজ্য- শাম দেশের উত্তরাধিকারী বানাতে চান। সেখানে মহান আল্লাহ তা‘আলা আমালিকাদের পর বানী ইসরাঈলকে বিজয়ী করেন। মূসা ও হারূন (আঃ)-এর ইনতিকালের পর বানী ইসরাঈলরা শাম দেশে তখন গেলেন যখন ইউশা বিন নূম আমালেকাদেরকে পরাজিত করে বানী ইসরাঈলদের জন্য রাস্তা সহজ করে দিলেন।

(قَالُوْا يَا مُوسٰي اجْعَلْ لَّنَا إِلٰهًا)

অর্থাৎ যখন মূসা (আঃ) বানী ইসরাঈলকে নিয়ে সমুদ্র পার হয়ে গেলেন আর ফির‘আউন ও তার দলবল সমুদ্রে ডুবে গেল।

Leave a Reply