Book# 114/٣٤)-২৩৬

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

 

 

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

 

  • (Book# 114/٣٤)-২৩৬

www.motaher21.net

 

بِيَدِكَ الْخَيْرُ ۖ

 

 

তোমার হাতেই যাবতীয় কল্যাণ।

 

In your hand is the good.

 

সুরা: আলে-ইমরান

আয়াত নং :-২৬-২৭

 

قُلِ اللَّهُمَّ مٰلِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِى الْمُلْكَ مَن تَشَآءُ وَتَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَآءُ وَتُعِزُّ مَن تَشَآءُ وَتُذِلُّ مَن تَشَآءُ ۖ بِيَدِكَ الْخَيْرُ ۖ إِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ

 

বল, ‘হে আল্লাহ! তুমি সমুদয় রাজ্যের মালিক, যাকে ইচ্ছে রাজ্য দান কর আর যার থেকে ইচ্ছে রাজ্য কেড়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছে সম্মানিত কর আর যাকে ইচ্ছে অপদস্থ কর, তোমারই হাতে সব রকম কল্যাণ, নিশ্চয়ই তুমি সকল বস্তুর উপর ক্ষমতাবান’।

 

تُولِجُ ٱلَّيْلَ فِى ٱلنَّهَارِ وَتُولِجُ ٱلنَّهَارَ فِى ٱلَّيْلِۖ وَتُخْرِجُ ٱلْحَىَّ مِنَ ٱلْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ ٱلْمَيِّتَ مِنَ ٱلْحَىِّۖ وَتَرْزُقُ مَن تَشَآءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ

 

২৬-২৭ নং আয়াতের তাফসীর:

 

তাফসীরে ফাতহুল ‌মাজীদ‌ বলেছেন:-

 

এ আয়াত দু’টিতে আল্লাহ তা‘আলার সীমাহীন শক্তি, সার্বভৌমত্ব ও মালিকানার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। তিনি সমস্ত কর্তৃত্বের মালিক। তিনি বাদশাকে ফকির করেন ফকিরকে বাদশা বানান। যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করেন যাকে ইচ্ছা অপমানিত করেন। তাঁর হাতেই সকল কল্যাণ। সকল ক্ষমতার উৎস একমাত্র তিনি, তিনিই সার্বভৌমত্বের মালিক। তিনি যেভাবে ইচ্ছা পৃথিবী পরিচালনা করেন, যখন যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারেন। তাঁকে কারো কাছে কৈফিয়ত দিতে হয় না; বরং তাঁর কাছে সকলেই কৈফিয়ত দিতে বাধ্য।

 

দিন রাতের আবর্তন, দিন রাত ছোট-বড়করণ, ঋতুর পরিবর্তন ইত্যাদি তিনিই করেন।

 

মৃতকে জীবিত করেন ও জীবিতকে করেন মৃত। যেমন মৃত বীর্য থেকে জীবন্ত মানুষ বের করেন আবার সেই জীবন্ত মানুষ থেকে মৃত বীর্য বের হয়। অনুরূপ মৃত ডিম থেকে প্রথমে মুরগী, তারপর জীবন্ত মুরগী থেকে মৃত ডিম। আবার কাফির থেকে মু’মিন এবং মু’মিন থেকে কাফির সৃষ্টি করেন।

 

কোন কোন বর্ণনায় এসেছে যে, মুয়ায (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ার অভিযোগ করলে তিনি তাকে বললেন: তুমি

 

(اللّٰھُمَّ مٰلِکَ الْمُلْکِ)

 

আয়াতটি তেলাওয়াত করে এ দু‘আটি পাঠ কর:

 

اللّٰھُمَّ مٰلِکَ الْمُلْکِ تُؤْتِی الْمُلْکَ مَنْ تَشَا۬ئُﺑ وَتَنْزِعُ الْمُلْکَ مِمَّنْ تَشَا۬ئُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَا۬ئُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَا۬ئُﺚ بِیَدِکَ الْخَیْرُﺚ اِنَّکَ عَلٰی کُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ، رَحْمَانُ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ ، تُعْطِيهُمَا مَنْ تَشَاءُ ، وَتَمْنَعُ مِنْهُمَا مَنْ تَشَاءُ ، ارْحَمْنِي رَحْمَةً تُغْنِينِي بِهَا عَنْ رَحْمَةِ مَنْ سِوَاكَ

 

হে আল্লাহ! আপনিই রাজত্বের মালিক, যাকে চান রাজত্ব দান করেন, আবার যার থেকে চান রাজত্ব কেড়ে নেন। আর যাকে ইচ্ছা সম্মানিত করেন আবার যাকে চান অপদস্থ করেন। আপনার হাতেই সকল কল্যাণ। নিশ্চয়ই আপনি সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান। আপনি দুনিয়া ও পরকালে দয়ালু ও দয়াময়। আপনি যাকে ইচ্ছা উভয় জগতের কল্যাণ দান করেন আবার যাকে ইচ্ছা বঞ্চিত করেন। আমাকে এমনভাবে দয়া করুন যাতে অন্যের দয়ার মুখাপেক্ষী না হতে হয়। (তাবারানী হা: ৩২৩) অপর এক বর্ণনায় এসেছে এটা এমন একটি দু‘আ যে, তোমার উহুদ পাহাড় সমান ঋণ থাকলেও আল্লাহ তা‘আলা তা আদায় করার ব্যবস্থা করে দেবেন। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ১০/১৮৬, হাদীসের বর্ণনাকারীরা সবাই নির্ভরযোগ্য)

 

 

তাফসীরে ইব্ন্ ‌কাসীর‌ বলেছেন:-

 

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “হে মুহাম্মদ (সঃ)! তুমি তোমার প্রভুর সম্মানার্থে এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্যে ও সমস্ত কাজ তাঁর নিকট সমর্পণের উদ্দেশ্যে তাঁর পবিত্র সত্তার উপর নির্ভর করতঃ উপরোক্ত শব্দগুলো দ্বারা তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা কর।’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! আপনি সাম্রাজ্যের অধিপতি। সমস্ত সাম্রাজ্য আপনারই অধিকারে রয়েছে। আপনি যাকে ইচ্ছে সাম্রাজ্য প্রদান করে থাকেন এবং যার নিকট হতে ইচ্ছে রাজ্য কেড়ে নেন। আপনিই প্রদানকারী। আপনি যা চান না তা হতে পারে না। এ আয়াতে এ কথার দিকেও ইঙ্গিত রয়েছে এবং ঐ নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশেরও নির্দেশ রয়েছে যা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উম্মতকে দান করা হয়েছে। তা এই যে, বানী ইসরাঈল হতে নবুওয়াত ছিনিয়ে নিয়ে মক্কার নিরক্ষর, কুরায়েশী আরবী নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সঃ)-কে প্রদান করা হয়েছে। আর তাকে সাধারণভাবে নবীদের (আঃ) সমাপ্তকারী এবং সমস্ত মানব ও দানবের রাসূল করে পাঠান। হয়েছে। পূর্বের সমস্ত নবীর গুণাবলী তার মধ্যে পুঞ্জীভূত করা হয়েছে এবং তাঁকে ঐসব ফযীলত দান করা হয়েছে যা হতে অন্যান্য নবীগণ (আঃ) বঞ্চিত ছিলেন। ঐ ফযীলত আল্লাহ তা’আলার জ্ঞান সম্বন্ধেই হোক বা ঐ মহান প্রভুর শরীয়তের ব্যাপারেই হোক অথবা অতীত ও ভবিষ্যতের সংবাদ সম্পর্কেই হোক, আল্লাহ পাক তাঁর উপর পরকালের সমস্ত রহস্য খুলে দিয়েছেন, তাঁর উম্মতকে পূর্ব হতে পশ্চিমে ছড়িয়ে দিয়েছেন, তার দ্বীন ও শরীয়তকে সমস্ত দ্বীন ও সমস্ত মাযহাবের উপর জয়যুক্ত করেছেন। আল্লাহ তা’আলার দরূদ ও সালাম তার প্রতি বর্ষিত হোক, আজ হতে কিয়ামত পর্যন্ত যতদিন দিবস-রজনীর আবর্তন চালু থাকবে, আল্লাহ তাআলা তার উপর যেন স্বীয় করুণা সদাসর্বদার জন্যে বর্ষণ করতে থাকেন। আমীন!

 

অতঃপর আল্লাহ তাআলা বলেন-হে নবী (সঃ)! তুমি বল-“হে আল্লাহ! আপনিই স্বীয় সৃষ্টির মধ্যে আবর্তন বিবর্তন এনে থাকেন। আপনি যা চান তাই করে থাকেন। যারা বলেছিলঃ “দু’টি গ্রামের কোন একজন বড়লোকের উপর কেন আল্লাহ তাআলা এ কুরআন অবতীর্ণ করেননি। তাদের এ কথা খণ্ডন করতঃ আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ তারাই কি তোমার প্রভুর করুণা বন্টন করছে?’ (৪৩:৩২) অর্থাৎ ‘আমি যখন তাদের আহার্যেরও মালিক, যাকে চাই কম দেই এবং যাকে চাই বেশী দেই, তখন এরা আমার উপর হুকুম চালাবার কে যে, আমি অমুককে কেন নবী করলাম? নবুওয়াতও আমারই অধিকারের জিনিস। নবুওয়াত প্রাপ্তির যোগ্য কোন ব্যক্তি তা আমিই জানি।’ যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ যেখানেই আল্লাহ তা’আলা তাঁর রিসালাত অবতীর্ণ করেন তা তিনিই। ভাল জানেন।’ (৬:১২৪) অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ ‘তুমি লক্ষ্য কর যে, কিরূপে তাদের পরস্পরের মধ্যে এককে অপরের উপর উৎকৃষ্টতা দান করেছি।’ (১৭:২১)।

 

অতঃপর বলা হচ্ছে- ‘আপনিই রাত্রির অতিরিক্ত অংশ দিনের কমতির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিয়ে দিন-রাত্র সমান করে থাকেন। আবার এদিকের অংশ ওদিকে দিয়ে ঐ দু’টোকেই ছোট বড় করেন এবং পুনরায় সমান সমান করে থাকেন। আকাশ ও পৃথিবীর উপর এবং সূর্য ও চন্দ্রের উপর পূর্ণ আধিপত্য আপনারই রয়েছে। অনুরূপভাবে গ্রীষ্মকে শীতের সাথে পরিবর্তন করারও পূর্ণ ক্ষমতা আপনারই আছে। বসন্তকাল ও শরৎকালের উপর আপনিই ক্ষমতাবান। আপনিই জীবিত হতে মতকে এবং মত হতে জীবিতকে বের করে থাকেন। ক্ষেত্র শস্য হতে এবং শস্য ক্ষেত্র হতে বের করারও ক্ষমতা আপনারই। খেজুর গাছ আঁটি হতে এবং আঁটি খেজুর হতে আপনিই সৃষ্টি করে থাকেন। মুমিনকে কাফিরের ঔরষে এবং কাফিরকে মুমিনের ঔরষে আপনিই জন্মদান করে থাকেন এবং মুরগী ডিম হতে এবং ডিম মুরগী হতে সৃষ্টি করাও আপনারই কাজ। এ রকমই সমস্ত জিনিসই আপনার অধিকারে রয়েছে। আপনি যাকে ইচ্ছে করেন। এত ধন-সম্পদ প্রদান করেন যা গণনা করে ও পরিমাপ করে শেষ করা যায় না। আবার যাকে ইচ্ছে করেন ক্ষুধা নিবারণের আহার্য পর্যন্ত প্রদান করেন না। আমরা বিশ্বাস করি যে, আপনার এ সমস্ত কাজ নিপুণতায় পরিপূর্ণ এবং সবকিছুই আপনারই ইচ্ছানুযায়ী সংঘটিত হয়ে থাকে। তাবরানীর হাদীসে রয়েছে যে, (আরবী)-এ আয়াতের মধ্যে আল্লাহ তাআলার ‘ইসম-ই-আযম’ রয়েছে। এ নামের মাধ্যমে তাঁর নিকট প্রার্থনা জানালে তিনি তা কবূল করে থাকেন।

 

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

মানুষ যখন একদিকে কাফের ও নাফরমানদের কার্যকলাপ দেখে এবং তারপর দেখে কিভাবে দিনের পর দিন তাদের বিত্ত ও প্রাচুর্য বেড়ে যাচ্ছে, আবার অন্যদিকে দেখে ঈমানদারদের আনুগত্যের পসরা এবং তারপর তাদের দারিদ্র্য, অভাব অনাহারে জর্জরিত জীবন, আর দেখে তাদের একের পর এক বিপদ মুসিবত ও দুঃখ দুর্দশার শিকার হতে, নবী (সাঃ) ও তার সাহাবীগণ তৃতীয় হিজরী ও তার কাছাকাছি সময়ে যার শিকার হয়েছিলেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই তার মনের মধ্যে একটি অদ্ভুত আক্ষেপ মিশ্রিত জিজ্ঞাসা জেগে উঠে। আল্লাহ‌ এখানে এই জিজ্ঞাসার জবাব দিয়েছেন। এমন সূক্ষ্মভাবে দিয়েছেন, যার চেয়ে বেশী সূক্ষ্মতার কথা কল্পনাই করা যায় না।

 

তাফসীরে আবুবকর যাকারিয়া বলেছেন:-

আয়াতে আল্লাহ্‌কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছেঃ “আপনার হাতেই রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ”। আয়াতের প্রথমাংশে রাজত্ব দান করা ও ছিনিয়ে নেয়া এবং সম্মান ও অপমান উভয়দিক উল্লেখ করা হয়েছিল। এতে রয়েছে কল্যাণ ও অকল্যাণ। কিন্তু আয়াতে শুধু আল্লাহ্‌র হাতেই রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ একথা বলা হয়েছে। অকল্যাণ আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে হয় এধরণের শব্দ ব্যবহার করা হয়নি। তার কারণ হল, সহীহ আকীদা অনুসারে আল্লাহ্‌র প্রতি অকল্যাণের সম্পর্ক দেখানো জায়েয নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদীসে বলেছেনঃ “অকল্যাণ আপনার পক্ষ থেকে নয়। ’ [মুসলিমঃ ৭৭১] কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলা বান্দার জন্য অকল্যাণ চান না। মানুষের যাবতীয় অকল্যাণ মানুষের হাতের কামাই করা।

 

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

 

এই আয়াতে রয়েছে মহান আল্লাহর সীমাহীন শক্তি ও তাঁর মহা কুদরতের প্রকাশ। তিনি বাদশাহকে ফকীর করেন এবং ফকীরকে বাদশাহ। তিনিই সমস্ত কর্তৃত্বের মালিক। الْخَيْرُ بِيَدِكَ (যাবতীয় কল্যাণ তোমার হাতে) না বলে, بِيَدِكَ الْخَيْرُ (তোমারই হাতে যাবতীয় কল্যাণ) বলা হয়েছে। অর্থাৎ, বিধেয় পদকে আগে আনা হয়েছে। উদ্দেশ্য নির্দিষ্টীকরণ। অর্থাৎ, সমস্ত কল্যাণ কেবল তোমার হাতেই। তুমি ছাড়া কল্যাণদাতা আর কেউ নেই। অকল্যাণের স্রষ্টা যদিও মহান আল্লাহই, তবুও এখানে কেবল কল্যাণের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে, অকল্যাণের নয়। কারণ, কল্যাণ আল্লাহর নিছক অনুগ্রহ। পক্ষান্তরে অকল্যাণ হল মানুষের কর্মের ফল যা তাদেরকে ভুগতে হয়। অথবা অকল্যাণও যেহেতু তাঁরই নির্ধারিত নিয়তির অংশ, সুতরাং তাতেও কোন না কোন প্রকার মঙ্গল আছে। এই দিক দিয়ে তাঁর সমস্ত কাজই কল্যাণময়। (ফাতহুল ক্বাদীর)

 

 

রাতকে দিনে এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করানোর অর্থ হল ঋতুর পরিবর্তন। যখন রাত লম্বা হয়, তখন দিন ছোট হয়ে যায়। আবার অন্য ঋতুতে যখন দিন বড় হয়, তখন রাত ছোট হয়ে যায়। অর্থাৎ, কখনো রাতের অংশকে দিনের মধ্যে এবং দিনের অংশকে রাতের মধ্যে ঢুকিয়ে দেন। যার কারণে রাত ও দিন ছোট-বড় হয়ে যায়।

 

যেমন (মৃত) বীর্য যা জীবন্ত মানুষ থেকে বের হয়। অতঃপর সেই মৃত (বীর্য) থেকে বের হয় জীবন্ত মানুষ। অনুরূপ মৃত ডিম থেকে প্রথমে মুরগী, তারপর জীবন্ত মুরগী থেকে (মৃত) ডিম অথবা কাফের থেকে মু’মিন এবং মু’মিন হতে কাফের সৃষ্টি হয়। কোন কোন বর্ণনায় এসেছে যে, মুআ’য (রাঃ) নবী করীম (সাঃ)-কে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ার অভিযোগ করলে তিনি তাকে বললেন, তুমি [اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ] আয়াতটি পাঠ করে এই দু’আটি করো, ((رَحْمَنَ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَرَحِيْمَهُمَا تُعْطِيْ مَنْ تَشَاءُ مِنْهُمَا وَتَمْنَعُ مَنْ تَشَاءُ، ارْحَمْنِيْ رَحْمَةً تُغْنِيْنِيْ بِهَا عَنْ رَحْمَةِ مَنْ سِوَاكَ، اللَّهُمَّ أَغْنِنِيْ مِنَ الْفَقْرِ، وَاقْضِ عَنِّيْ الدَّيْنَ)) অপর আর এক বর্ণনায় এসেছে, “এটা এমন একটি দু’আ যে, তোমার উপর উহুদ পাহাড় সমানও যদি ঋণ থাকে, মহান আল্লাহ সে ঋণকেও তোমার জন্য আদায় করার ব্যবস্থা করে দিবেন।”

 

(মাজমাউয্ যাওয়ায়েদ ১০/১৮৬ হাদীসের বর্ণনাকারীরা সবাই নির্ভরযোগ্য)

 

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:

 

১. আল্লাহ তা‘আলার হাত আছে তার প্রমাণ পেলাম, তবে কোন মাখলুকের সাথে এর তুলনা হয় না বরং মহান আল্লাহ তা‘আলার জন্য যেমন শোভা পায় তেমনই তাঁর হাত রয়েছে।

২. সকল কল্যাণের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা; কোন গাউস, কুতুব, পীর-ফকির নয়। তাই সব কিছু শুধু আল্লাহ তা‘আলার কাছেই চাইতে হবে।

৩. দিন-রাত, ঋতু ও যুগের পরিবর্তন আল্লাহ তা‘আলার কর্তৃত্বাধীন। কালের পরিক্রমায় নয়।

৪. পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের একমাত্র মালিক আল্লাহ তা‘আলা।

Leave a Reply