أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٥٤)-২৫৬
www.motaher21.net
يٰٓأَهْلَ الْكِتٰبِ لِمَ تُحَآجُّونَ فِىٓ إِبْرٰهِيم
হে আহ্লে কিতাবগণ! ইব্রাহীম সম্বন্ধে কেন তোমরা তর্ক কর,
Why do you dispute about Abraham.
সুরা: আলে-ইমরান
আয়াত নং :-৬৫-৬৮
یٰۤاَهْلَ الْكِتٰبِ لِمَ تُحَآجُّوْنَ فِیْۤ اِبْرٰهِیْمَ وَ مَاۤ اُنْزِلَتِ التَّوْرٰىةُ وَ الْاِنْجِیْلُ اِلَّا مِنْۢ بَعْدِهٖؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ
হে আহলি কিতাব! তোমরা ইব্রাহীমের ব্যাপারে আমার সাথে ঝগড়া করছো কেন? তাওরাত ও ইঞ্জিল তো ইব্রাহীমের পরে নাযিল হয়েছে। তাহলে তোমরা কি এতটুকু কথাও বুঝো না?
هٰٓأَنتُمْ هٰٓؤُلَآءِ حٰجَجْتُمْ فِيمَا لَكُم بِهِۦ عِلْمٌ فَلِمَ تُحَآجُّونَ فِيمَا لَيْسَ لَكُم بِهِۦ عِلْمٌ ۚ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
সাবধান, তোমরা তো সে সব লোক, যে বিষয়ে তোমাদের সামান্য জ্ঞান আছে সে বিষয়ে তোমরা তর্ক করেছ, তবে যে বিষয়ে তোমাদের কোন জ্ঞান নেই সে বিষয়ে কেন তর্ক করছ? আর আল্লাহ্ জানেন এবং তোমরা জান না।
مَا كَانَ إِبْرٰهِيمُ يَهُودِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلٰكِن كَانَ حَنِيفًا مُّسْلِمًا وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ
ইব্রাহীম ইয়াহূদীও ছিলেন না, নাসারাও ছিলেন না; বরং তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিম এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।
إِنَّ أَوْلَى ٱلنَّاسِ بِإِبْرَٰهِيمَ لَلَّذِينَ ٱتَّبَعُوهُ وَهَٰذَا ٱلنَّبِىُّ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ۗ وَٱللَّهُ وَلِىُّ ٱلْمُؤْمِنِينَ
নিশ্চয় ইবরাহীমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতায় সেই লোকেরাই অধিক হকদার যারা তার অনুসরণ করেছে এবং এই নাবী, আর যারা ঈমান এনেছে, বস্তুতঃ আল্লাহ মু’মিনদের অভিভাবক।
৬৫-৬৮ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
ইয়াহূদীরা বলতো যে, হযরত ইবরাহীম (আঃ) ইয়াহূদী ছিলেন এবং খ্রীষ্টানরা বলতো যে, তিনি খ্রীষ্টান ছিলেন এবং একথা নিয়ে তারা পরস্পর তর্ক-বিতর্ক করতো। আল্লাহ তাআলা এ আয়াতসমূহে তাদের এ দাবীকে খণ্ডন করেছেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, নাজরান হতে আগত খ্রীষ্টানদের নিকট ইয়াহূদী আলেমগণ আগমন করে এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সামনেই তারা কলহ আরম্ভ করে দেয়। প্রত্যেক দলেরই এ দাবী ছিল যে, হযরত ইবরাহীম (আঃ) তাদেরই অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তখন আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন। এতে বলা হয়, “হে ইয়াহুদীর দল! তোমরা কি করে হযরত ইবরাহীম (আঃ)-কে তোমাদের অন্তর্ভুক্ত বলছো? অথচ তার যুগে তো হযরত মূসা (আঃ) ছিলেন না এবং তাওরাতও ছিল না। মূসা (আঃ) এবং তাওরাত তো ইবরাহীম (আঃ)-এর পরে এসেছে। অনুরূপভাবে- “হে খ্রীষ্টানের দল! তোমরা ইবরাহীম (আঃ)-কে খ্রীষ্টান কিরূপে বলছো? অথচ খ্রীষ্টান ধর্ম তো তাঁর বহু শতাব্দী পরে প্রকাশ পেয়েছে। এ মোটা কথাটা বুঝার মতও কি তোমাদের জ্ঞান নেই?’ অতঃপর এ দু’টি দল যে কিছু না জেনেও বিতর্কে লিপ্ত হয়েছে এ জন্যে আল্লাহ তা’আলা ভৎসনা করেছেন যে, ধর্মীয় বিষয়ে যে জ্ঞান তাদের রয়েছে তা নিয়ে যদি তারা কলহ করতো তবে কিছুটা খাপ খেতো। কিন্তু তারা এমন বিষয় নিয়ে কলহে লিপ্ত হয়েছে, যে বিষয়ে তাদের মোটেই জ্ঞান নেই। যে বিষয়ে তাদের জ্ঞান নেই সে বিষয়টি সর্বজ্ঞাত আল্লাহকে সমর্পণ করাই তাদের উচিত, যিনি প্রত্যেক জিনিসের মূলতত্ত্ব সম্বন্ধে অবগত রয়েছেন। একমাত্র মহান আল্লাহর প্রত্যেক প্রকাশ্য ও গোপনীয় বিষয়ে জ্ঞান রয়েছে। এ জন্যেই তিনি বলেন-“আল্লাহ তা’আলা পরিজ্ঞাত আছেন এবং তোমারা অবগত নও। প্রকৃতপক্ষে হযরত ইবরাহীম (আঃ) ইয়াহূদীও ছিলেন না এবং খ্রীষ্টানও ছিলেন না। বরং তিনি অংশীবাদকে ঘৃণা করতেন এবং মুশরিকদের হতে বহু দূরে থাকতেন। তিনি ছিলেন খাটি ঈমানদার। তিনি কখনও মুশরিক ছিলেন।’ এ আয়াতটি সূরা-ই-বাকারার নিম্নের আয়াতটির মতঃ (আরবী) অর্থাৎ তারা বলেছিল, তোমরা ইয়াহূদী হয়ে যাও অথবা খ্রীষ্টান হয়ে যাও তবে সুপথ প্রাপ্ত হবে। (২:১৩৫)
অতঃপর আল্লাহ তা’আলা বলেন- হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর অনুসরণের বেশী দাবীদার ঐ সব লোক যারা তাঁর যুগে দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল এবং এখন এ নবী হযরত মুহাম্মাদ মোস্তফা (সঃ) এবং তাঁর অনুসারী মুমিনদের দল, যারা হচ্ছে মুহাজির ও আনসার এবং তাদের পরেও কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর অনুসারী যত লোক আসবে।’ রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ প্রত্যেক নবী (আঃ)-এর অন্তরঙ্গ বন্ধু নবীদের (আঃ) মধ্য হতে হয়ে থাকে এবং আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু হচ্ছেন নবীদের মধ্যে হতে আমার পিতা আল্লাহ তা’আলার বন্ধু হযরত ইবরাহীম (আঃ)। অতঃপর তিনি এ আয়াতটি পাঠ করেন। (জামেউত্ তিরমিযী ইত্যাদি) তারপর আল্লাহ তা’আলা বলেন যে, যে কেউ আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর উপর ঈমান আনয়ন করবে তার অভিভাবক আল্লাহ।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
অর্থাৎ তোমাদের ইহুদীবাদ ও খৃস্টবাদ তাওরাত ও ইঞ্জিল নাযিলের পরে সৃষ্টি হয়েছে। আর ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম যে ধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন সেটি ইহুদীবাদ ও খৃস্টবাদ ছিল না। এরপর যদি হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম সত্য-সঠিক পথে থেকে থাকেন এবং নাজাত লাভ করে থাকেন, তাহলে নিঃসন্দেহে একথা প্রমাণ হয় যে, মানুষের সত্য-সঠিক পথে থাকা ইহুদীবাদ ও খৃস্টবাদের অনুসৃতির ওপর নির্ভরশীল নয়। (সূরা আল বাকারার ১৩৫ ও ১৪১ টীকা দেখুন)
আসলে এখানে ‘হানীফ’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ হয় এমন ব্যক্তি যে, সব দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে একটি বিশেষ পথে চলে। এই অর্থটিকেই আমরা ‘একনিষ্ঠ মুসলিম’ শব্দের মধ্যে আনার চেষ্টা করেছি।
তাফসীরে আবুবকর যাকারিয়া বলেছেন:-
এ আয়াতে ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম সম্পর্কে আহলে কিতাবদের বিবাদবিসম্বাদের বিষয়টি বর্ণিত হয় নি। তবে অন্য স্থানে সেটি এভাবে বিবৃত হয়েছে যে, ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম সম্পর্কে তাদের ঝগড়ার কারণ হচ্ছে, প্রত্যেকেই তাকে তাদের দলে ভিড়ানোর চেষ্টা করছে। ইয়াহুদীরা বলে যে, ইবরাহীম ইয়াহুদী ছিলেন। আর নাসারারা বলে যে, তিনি নাসরানী ছিলেন। এর প্রমাণ আল্লাহ্র বাণী: “তোমরা কি বল যে, অবশ্যই ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তাঁর বংশধরগণ ইয়াহুদী বা নাসারা ছিল’? বলুন, ‘তোমরা কি বেশী জান, না আল্লাহ্?” [সূরা আলবাকারাহ: ১৪০]
তবে পরবর্তী ৬৭ নং আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা আহলে কিতাবদের বিবাদের বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন। কারণ সেখানে বলা হয়েছে, “ইবরাহীম ইয়াহুদীও ছিলেন না, নাসারাও ছিলেন না”।
হাদীসে এসেছে, ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমার মতে, নাজরানের নাসারা ও মদীনার ইয়াহুদী সর্দাররা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে একত্রিত হয়ে বিবাদে লিপ্ত হলো। ইয়াহুদীরা বলতে লাগল যে, ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম ইয়াহুদী ছিলেন, আর নাসারারা বলতে লাগল যে, ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম নাসরানী ছিলেন। তখন আল্লাহ্ তা’আলা আলোচ্য আয়াত নাযিল করে জানিয়ে দিলেন যে, তোমাদের কি হলো যে, একটি প্রকাশ্য বিষয়কে ভিন্ন রূপ দিচ্ছ? তাওরাত ও ইঞ্জীল তো ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের পরে নাযিল হয়েছে। আর সে কিতাবদ্বয়ের নাযিলের পরে ইয়াহুদীবাদ ও খ্রীস্টানবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাহলে ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম কিভাবে ইয়াহুদী বা নাসারা হতে পারে? [তাবারী; আত-তাফসীরুস সহীহ]
অর্থাৎ ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামকে অনুসরণ করার ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠতম হলেন যারা তার আনীত দ্বীনের উপর আছেন ও এই নবী অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং এই নবীর উম্মাতদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে অর্থাৎ মুহাজির আনসার ও অন্যান্য পরবর্তী উম্মাত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘প্রত্যেক নবীরই নবীদের মধ্য থেকে কিছু অভিভাবক থাকেন। আমার অভিভাবক হলেন আমার পিতা, আমার রবের খলীল (অর্থাৎ ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম)’। [তিরমিযীঃ ২৯৯৮, মুস্তাদরাকে হাকেমঃ ২/২৯২, ৫৫৩]
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
ইবরাহীম (আঃ)-এর ব্যাপারে বিতর্কের অর্থ হল, ইয়াহুদী এবং খ্রিষ্টান উভয় জাতিই দাবী করত যে, তিনি তাদের ধর্মাবলম্বি ছিলেন। অথচ তাওরাত যার উপর ইয়াহুদীরা ঈমান রাখতো এবং ইঞ্জীল যেটাকে খ্রিষ্টানরা মান্য করে চলতো, এই উভয় গ্রন্থ ইবরাহীম (আঃ)-এর শত সহস্র বছর পর অবতীর্ণ হয়েছে। কাজেই তিনি ইয়াহুদী বা খ্রিষ্টান কিভাবে হতে পারেন? বলা হয় যে, ইবরাহীম এবং মূসা (আলাইহিমাস্ সালাম)-এর মধ্যে এক হাজার বছরের ব্যবধান ছিল। আর ঈসা ও ইবরাহীম (আলাইহিমাস্ সালাম)-এর মধ্যে দু’হাজার বছরের ব্যবধান ছিল। (ক্বুরত্ববী)
এই তো তোমাদের জ্ঞান ও দ্বীনদারীর অবস্থা যে, যে সম্পর্কে তোমাদের জ্ঞান আছে অর্থাৎ, নিজেদের দ্বীন ও কিতাবের ব্যাপারে, (যে কথা পূর্বোক্ত আয়াতে উল্লেখ হয়েছে) সে ব্যাপারে তোমাদের ঝগড়া করা ভিত্তিহীনও বটে এবং এতে অজ্ঞানতার পরিচয়ও রয়েছে। তাহলে যে ব্যাপারে তোমাদের মোটেই কোন জ্ঞান নেই, সে ব্যাপারে তোমরা কেন ঝগড়া কর? অর্থাৎ, ইবরাহীম (আঃ)-এর মান-মর্যাদা এবং তাঁর একনিষ্ঠ দ্বীনের ব্যাপারে; যার ভিত্তিই ছিল তাওহীদ ও ইখলাস।
[حَنِيْفًا مُّسْلِمًا] (একনিষ্ঠ মুসলিম) অর্থাৎ, শিরক থেকে বিমুখ হয়ে কেবল এক আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী।
এই কারণেই কুরআন মাজীদে (সূরা নাহল ১৬:১২৩ আয়াতে) নবী করীম (সাঃ)-কে ইবরাহীম (আঃ)-এর মিল্লাতের অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।[أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا] এ ছাড়া হাদীসেও মহানবী (সাঃ) বলেছেন, “নবীদের মধ্য থেকে প্রত্যেক নবীর কিছু বন্ধু হয়, তাঁদের মধ্য থেকে আমার বন্ধু হল আমার পিতা এবং আমার মহান প্রতিপালকের খলীল (অতীব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইবরাহীম (আঃ))।” অতঃপর তিনি এই আয়াতটি পাঠ করেন। (তিরমিযী ২৯৯৫নং)
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
এ আয়াতগুলোতে ইবরাহীম (আঃ)-এর ব্যাপারে ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানদের বাদানুবাদ আল্লাহ তা‘আলা তিরস্কারের সাথে উল্লেখ করেছেন।
খ্রিস্টানরা বলে ইবরাহীম (আঃ) খ্রিস্টান ছিলেন আর ইয়াহূদীরা বলে তিনি ইয়াহূদী ছিলেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَمْ تَقُوْلُوْنَ إِنَّ إِبْرَاهِيْمَ وَإِسْمَاعِيْلَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوْبَ وَالْأَسْبَاطَ كَانُوْا هُوْدًا أَوْ نَصٰرٰي)
“তোমরা কি বলছ যে, ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক্ব , ইয়াকুব ও তাদের বংশধর ইয়াহূদী কিংবা খ্রিস্টান ছিলেন?” (সূরা বাকারাহ ২:১৪০)
ইবরাহীম (আঃ) ইয়াহূদীও ছিলেন না, খ্রিস্টানও ছিলেন না; বরং তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَا كَانَ إِبْرَاهِيْمُ يَهُوْدِيًّا وَّلَا نَصْرَانِيًّا وَّلٰكِنْ كَانَ حَنِيْفًا مُّسْلِمًا)
“ইবরাহীম ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান কিছুই ছিলেন না, বরং তিনি একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন।” (সূরা আল-ইমরান ৩:৬৭)
তাছাড়া তাওরাত ও ইঞ্জিল ইবরাহীম (আঃ)-এর তিরোধানের অনেক বছর পর অবতীর্ণ হয়েছে। ইবরাহীম ও মূসা (আঃ)-এর মাঝে এক হাজার বছরের ব্যবধান ছিল, আর ঈসা ও ইবরাহীম (আঃ)-এর মাঝে দু’হাজার বছরের ব্যবধান ছিল। অতএব ইবরাহীম (আঃ)-এর ইয়াহুদী ও খ্রিস্টান হওয়ার প্রশ্নই উঠে না বরং তিনি একজন খাঁটি মুসলিম ছিলেন।
ইবরাহীম (আঃ)-এর ঘনিষ্ঠতর হল তারা যারা তাঁর দীনের অনুসরণ করে এবং আমাদের নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), মুহাজির ও আনসারসহ সকল মু’মিনগণ যারা পরবর্তীতে ঈমান এনেছে ও ইবরাহীম (আঃ)-এর মিল্লাত অনুসরণ করেন।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, প্রত্যেক নাবীর নাবীদের থেকে একজন অন্তরঙ্গ বন্ধু থাকেন। আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু হল আমার পিতা আল্লাহ তা‘আলার বন্ধু ইবরাহীম (আঃ)। অতঃপর এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন। (তিরমিযী হা: ২৯৯৫, মুসতাদরাক হাকেম হা: ৩১৫১, সহীহ)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন বিষয়ে জ্ঞান না থাকলে সে বিষয়ে বিতর্ক করা নিন্দনীয়।
২. মু’মিনগণ পরস্পর বন্ধু যদিও তারা দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকে।
৩. ইবরাহীম (আঃ) একজন খাঁটি মুসলিম ছিলেন, ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না।