أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٥٩)-২৬১
www.motaher21.net
يَغْلِبُوٓا أَلْفَيْنِ بِإِذْنِ اللَّهِ…
আল্লাহর হুকুমে দু’হাজার লোকের উপর জয়ী হবে।….
They shall overcome two thousand with the leave of Allah…..
সুরা আল আনফাল
৬৫-৬৬ নং আয়াত
یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِیْنَ عَلَى الْقِتَالِؕ اِنْ یَّكُنْ مِّنْكُمْ عِشْرُوْنَ صٰبِرُوْنَ یَغْلِبُوْا مِائَتَیْنِۚ وَ اِنْ یَّكُنْ مِّنْكُمْ مِّائَةٌ یَّغْلِبُوْۤا اَلْفًا مِّنَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا بِاَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا یَفْقَهُوْنَ
হে নবী! মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করো। তোমাদের মধ্যে বিশজন সবরকারী থাকলে তারা দু’শ জনের ওপর বিজয়ী হবে। আর যদি এমনি ধরনের একশ জন থাকে, তাহলে তারা সত্য অস্বীকারকারীদের মধ্য থেকে এক হাজার জনের ওপর বিজয়ী হবে। কারণ তারা এমন এক ধরনের লোক যাদের বোধশক্তি নেই।
اَلْـٰٔنَ خَفَّفَ اللّٰهُ عَنْكُمْ وَ عَلِمَ اَنَّ فِیْكُمْ ضَعْفًاؕ فَاِنْ یَّكُنْ مِّنْكُمْ مِّائَةٌ صَابِرَةٌ یَّغْلِبُوْا مِائَتَیْنِۚ وَ اِنْ یَّكُنْ مِّنْكُمْ اَلْفٌ یَّغْلِبُوْۤا اَلْفَیْنِ بِاِذْنِ اللّٰهِؕ وَ اللّٰهُ مَعَ الصّٰبِرِیْنَ
বেশ, এখন আল্লাহ তোমাদের বোঝা হালকা করে দিয়েছেন এবং তিনি জেনেছেন যে, এখনো তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে। কাজেই যদি তোমাদের মধ্যে একশ জন সবরকারী হয়, তাহলে তারা দু’শ জনের ওপর এবং এক হাজার লোক এমনি পর্যায়ের হলে, তারা দু’হাজারের ওপর আল্লাহর হুকুমে বিজয়ী হবে। আর আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন।
৬৫-৬৬ নং আয়াতের তাফসীরঃ
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
আল্লাহ তা’আলা স্বীয় নবী (সঃ)-কে সম্বোধন করে বলছেনঃ “হে নবী! যদি তোমার মুশরিক ও কাফিরদের খিয়ানতের ভয় হয় তবে সমতা রক্ষা করে তাদেরকে চুক্তি ও সন্ধিপত্র বাতিল করে দেয়ার সংবাদ অবহিত করতঃ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দাও। অতঃপর তারা যদি যুদ্ধের প্রতি উত্তেজনা প্রকাশ করে তবে আল্লাহ তা’আলার উপর ভরসা করতঃ যুদ্ধ শুরু করে দাও। আর যদি আবার তারা সন্ধির প্রস্তাব দেয় তবে পুনরায় সন্ধি করে নাও।” এই আয়াতের উপর আমল করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ) হুদায়বিয়ায় মক্কার কুরায়েশদের সাথে কয়েকটি শর্তের উপর নয় বছরের মেয়াদে সন্ধি করেন। আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “সত্বরই মতভেদ সৃষ্টি হবে বা অন্য কোন ব্যাপার ঘটবে। সুতরাং পারলে সন্ধিই করে নাও।” (এ হাদীসটি মুসনাদে আহমাদে রয়েছে)
মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, এ আয়াতটি বানু কুরাইযার ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। কিন্তু এতে চিন্তা ভাবনার অবকাশ রয়েছে। কেননা, এ সমুদয় হচ্ছে বদরের ঘটনা। ইবনে আব্বাস (রাঃ), মুজাহিদ (রঃ), যায়েদ ইবনে আসলাম (রঃ), আতা খুরাসানী (রঃ), ইকরামা (রাঃ), হাসান (রাঃ) এবং কাতাদা (রঃ) বলেন যে, এ আয়াতটি সূরায়ে বারাআতের সাঈফ’-এর (আরবী) (৯:২৯) এই আয়াত দ্বারা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে। কিন্তু এটাও চিন্তার বিষয়। কেননা, এই আয়াতে শক্তি ও সাধ্যের উপর জিহাদের হুকুম রয়েছে। কিন্তু শক্রদের সংখ্যাধিক্যের সময় তাদের সাথে সন্ধি করে নেয়া নিঃসন্দেহে জায়েয, যেমন এই আয়াতে কারীমায় রয়েছে এবং যেমন রাসূলুল্লাহ (সঃ) হুদায়বিয়ার দিন করেছিলেন। সুতরাং কোন বৈপরীত্য, কোন বিশেষত্ব এবং কোন রহিতকরণ নেই। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।
মহান আল্লাহ বলেনঃ “হে নবী, আল্লাহর উপর ভরসা কর, তিনিই তোমার জন্যে যথেষ্ট। তিনিই তোমার সাহায্যকারী। যদি এ মুশরিকরা তোমার সাথে প্রতারণা করে এই সন্ধির মধ্যে নিজেদের শান শওকত ও যুদ্ধাস্ত্র বৃদ্ধি করে তবে তুমি নিশ্চিন্ত থাকবে। আল্লাহ তোমার পক্ষ অবলম্বন করবেন। তোমার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। তাঁর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কেউই নেই।”
এরপর আল্লাহ তা’আলা নিজের বড় নিয়ামতের বর্ণনা দিচ্ছেন। তিনি বলছেন- “আমি স্বীয় ফল ও করমে মুহাজির ও আনসারদের মাধ্যমে তোমার সাহায্য করেছি। তাদেরকে তোমার প্রতি ঈমান আনার ও তোমার আনুগত্য করার তাওফীক দান করেছি। তুমি যদি সারা দুনিয়ার ধন ভাণ্ডারও ব্যয় করে দিতে তবুও তাদের মধ্যে সেই প্রেম-প্রীতি সৃষ্টি করতে পারতে না যা আল্লাহ করেছেন। আল্লাহ তা’আলা তাদের পুরাতন শক্রতা দূর করে দিয়েছেন। আউস ও খাযরাজ নামক আনসারদের দু’টি গোত্রের মধ্যে অজ্ঞতার যুগে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। তারা সবসময় কাটাকাটি মারামারি করতো। ঈমানের আলো তাদের সেই শক্রতাকে বন্ধুত্বে পরিণত করে। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “তোমরা আল্লাহর ঐ নিয়ামতের কথা স্মরণ কর যা তোমাদের উপর রয়েছে, যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে, অতঃপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ভালবাসা সৃষ্টি করে দিয়েছেন, ফলে তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহে পরস্পর ভাই ভাই হয়ে গিয়েছে, আর তোমরা জাহান্নামের গর্তের তীরে ছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন, এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে স্বীয় বিধানসমূহ পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করে থাকেন, যেন তোমরা (সঠিক) পথে থাকো।”
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, হুনায়েনের যুদ্ধলব্ধ মাল বন্টন করার সময় রাসূলুল্লাহ (সঃ) আনসারদেরকে সম্বোধন করে বলেনঃ “হে আনসারের দল! আমি কি তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট অবস্থায় পেয়ে আল্লাহর অনুগ্রহে। সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করিনি? তোমরা দরিদ্র ছিলে, অতঃপর আমার মাধ্যমে আল্লাহ কি তোমাদেরকে সম্পদশালী করেননি? তোমরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলে, তারপর আমার মাধ্যমে কি আল্লাহ তোমাদের পরস্পরের মধ্যে মিলন ঘটাননি? “এভাবে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তরে আনসারগণ বলতেছিলেনঃ “নিশ্চয়ই আমাদের উপর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর ইহসান এর চেয়েও বেশী রয়েছে। মোটকথা, আল্লাহ তাআলা স্বীয় ইনআ’ম ও ইকরামের বর্ণনা দেয়ার পর তাঁর মর্যাদা ও নৈপুণ্যের বর্ণনা দিয়েছেন যে, তিনি মহান ও সর্বোচ্চ এবং যে ব্যক্তি তার রহমতের আশা রাখে সে নিরাশ হয় না। যে তাঁর উপর ভরসা করে তার ইহজীবন ও পরজীবন সুখময় হয়। তিনি স্বীয় কাজেকর্মে ও হুকুম দানে মহাজ্ঞানী ও বিজ্ঞানময়। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হয় এবং নিয়ামতের প্রতিও কৃতঘ্নতা দেখা যায়, কিন্তু অন্তরের মিল মহব্বতের মত আর কিছুই দেখা যায়নি। আল্লাহ পাক বলেনঃ “হে নবী! তুমি যদি দুনিয়ার ধনভাণ্ডারও শেষ করতে তবুও তোমার এ শক্তি ছিল না যে, তুমি তাদের অন্তরে প্রেম-প্রীতি ও ভালবাসা সৃষ্টি করবে।” কবি বলেনঃ “তোমাকে প্রতারণাকারী এবং তোমার প্রতি অশ্রুক্ষেপকারী তোমার আত্মীয় নয়, বরং তোমার প্রকৃত আত্মীয় হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে তোমার আহ্বানে সাভা দেয় এবং তোমার শত্রুকে দমন করার কাজে তোমাকে সহায়তা করে।” অনুরূপভাবে অন্য এক কবি বলেনঃ “আমি লোকদের সাথে মেলামেশা করে তাদেরকে পরীক্ষা করেছি এবং বুঝেছি যে, অন্তরের মিল আত্মীয়তার চেয়েও বড়।” ইমাম বায়হাকী (রঃ) বলেনঃ “এসব উক্তি ইবনে আব্বাসেরই (রাঃ) না কি তাঁর পরবর্তী অন্য কোন বর্ণনাকারীর তা আমার জানা নেই।” ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন যে, তাদের এ মহব্বত ছিল আল্লাহর পথে এবং সেটা ছিল তাওহীদ ও সুন্নাহর ভিত্তির উপর। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, আত্মীয়তার সম্পর্কও ছিন্ন হয়ে যায় এবং ইহসানেরও না শুকরী করা হয়, কিন্তু আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে অন্তরকে যে মিলিয়ে দেয়া হয় তা কেউই পৃথক করতে পারে না। অতঃপর তিনি …. (আরবী)-এই আয়াতটি পাঠ করেন।
আবদা ইবনে আবি লুবাবা (রঃ) বলেন, একদা মুজাহিদ (রঃ)-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়। তিনি আমার সাথে মুসাফাহা (কর মর্দন) করে বলেনঃ “আল্লাহর পথে মহব্বতকারী দু’টি লোক যখন পরস্পর মিলিত হয় এবং হাসিমুখে একে অপরের হাতে হাত মিলায়, তখন গাছের শুষ্ক পাতা ঝরে পড়ার মত তাদের উভয়ের পাপরাশি ঝরে পড়ে। তার এ কথা শুনে আমি বললাম, এটা তো খুবই সহজ কাজ। তখন তিনি বললেন, এ কথা বলো না। এটা হচ্ছে সেই মহব্বত যে সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেনঃ “(হে নবী)! তুমি যদি সারা দুনিয়ার ধন ভাণ্ডারও খরচ করে দাও তবুও তোমার সাধ্য নেই যে, তুমি তাদের অন্তরে মহব্বত বা প্রেম-প্রীতি সৃষ্টি করতে পার।” তাঁর এ কথা শুনে আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে গেল যে, তিনি আমার চেয়ে অনেক বেশী বুদ্ধিমান। ওয়ালীদ ইবনে আবি মুগীস (রঃ) বলেনঃ “আমি মুজাহিদ (রঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, যখন দু’জন মুসলমান পরস্পর মিলিত হয় ও মুসাফাহা করে তখন তাদের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি- শুধু মুসাফাহা করলেই কি? তিনি উত্তরে বলেনঃ “তুমি কি আল্লাহর এই কথা শুননি?” অতঃপর তিনি এই আয়াতটি পাঠ করেন। তখন আমি বলি, আপনি আমার চেয়ে বড় আলেম। উমাইর ইবনে ইসহাক (রঃ) বলেন যে, মানুষের মধ্য থেকে প্রথম যে জিনিস উঠে যাবে তা হচ্ছে মহব্বত বা ভালবাসা। তিবরানী (রঃ)-এর হাদীস গ্রন্থে সালমান ফারসী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যখন কোন মুসলমান তার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে মিলিত হয়, অতঃপর তার সাথে মুসাফাহা করে তখন তাদের দুজনের গুনাহ এমনভাবে ঝরে পড়ে যেমনভাবে প্রবল বাতাসের দিনে গাছের শুষ্ক পাতাগুলো ঝরে যায়। তাদের সমস্ত গুনাহ্ মাফ করে দেয়া হয় যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমানও হয়।”
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
আধুনিক পরিভাষায় যাকে আভ্যন্তরীণ সূক্ষ্মতর শক্তি, নৈতিক শক্তি বা মনোবল (Morale) বলা হয়, আল্লাহ তাকেই ফিকাহ, বোধ, উপলব্ধি, বুদ্ধি ও ধী-শক্তি (Understanding) বলেছেন। এ অর্থ ও ভাবধারা প্রকাশের জন্য এ শব্দটি আধুনিক পরিভাষার তুলনায় বেশী বিজ্ঞানসম্মত। যে ব্যক্তি নিজের উদ্দেশ্যের ব্যাপারে সঠিকভাবে সচেতন এবং ঠাণ্ডা মাথায় ভালভাবে ভেবে-চিন্তে এ জন্য সংগ্রাম করতে থাকে যে, যে জিনিসের জন্য সে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করতে এসেছে তা তার ব্যক্তিগত জীবনের চেয়ে অনেক বেশী মূল্যবান এবং তা নষ্ট হয়ে গেলে তার জন্য বেঁচে থাকা অর্থহীন হয়ে পড়বে, সে এ ধরনের চেতনা ও উপলব্ধি থেকে বঞ্চিত একজন যোদ্ধার চেয়ে কয়েকগুণ বেশী শক্তিশালী। যদিও শরীরিক শক্তির প্রশ্নে উভয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তারপর যে ব্যক্তি সত্যের জ্ঞান রাখে, যে ব্যক্তি নিজের অস্তিত্ব, আল্লাহর অস্তিত্ব, আল্লাহর সাথে নিজের সম্পর্ক এবং পার্থিব জীবনের তাৎপর্য, মৃত্যুর তাৎপর্য ও মৃত্যুর পরের জীবনের তাৎপর্য ভালভাবে উপলব্ধি করে এবং যে ব্যক্তি হক ও বাতিলের পার্থক্য আর এই সাথে বাতিলের বিজয়ের ফলাফল সম্পর্কেও সঠিকভাবে জ্ঞাত, তার শক্তির ধারে কাছেও এমন সব লোক পৌঁছতে পারবে না যারা জাতীয়তাবাদ, স্বাদেশিকতাবাদ বা শ্রেণী সংগ্রামের চেতনা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে নেমে আসে। এ জন্যই বলা হয়েছে, একজন বোধশক্তি সম্পন্ন সজাগ মু’মিন ও একজন কাফেরের মধ্যে সত্যের জ্ঞান ও সত্য সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই প্রকৃতিগতভাবে এক ও দশের অনুপাত সৃষ্টি হয়। কিন্তু শুধুমাত্র উপলব্ধি ও জ্ঞানের সাহায্যে এই অনুপাত প্রতিষ্ঠিত হয় না বরং সেই সাথে সবরের গুণও এর একটি অপরিহার্য শর্ত।
এর অর্থ এ নয় যে, প্রথমে এক ও দশের অনুপাত ছিল এবং এখন যেহেতু তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা এসে গেছে তাই এক ও দুইয়ের অনুপাত কায়েম করা হয়েছে। বরং এর সঠিক অর্থ হচ্ছে, নীতিগত ও মানগতভাবে মু’মিন ও কাফেরের মধ্যেতো এক ও দশেরই অনুপাত বিদ্যমান। কিন্তু যেহেতু এখন তোমাদের নৈতিক প্রশিক্ষণ পূর্ণতা লাভ করেনি এবং এখনো তোমাদের চেতনা, উপলব্ধি ও অনুধাবন ক্ষমতা পরিপক্কতা অর্জন করেনি, তাই আপাতত সর্বনিম্ন মান ধরেই তোমাদের কাছে দাবী করা হচ্ছে যে, নিজেদের চাইতে দ্বিগুণ শক্তিধরদের বিরুদ্ধে লড়তে তো তোমাদের ইতস্তত করা উচিত নয়। মনে রাখতে হবে, ২য় হিজরীতে এ বক্তব্য উপস্থাপিত হয়। তখন মুসলমানদের মধ্যে বহু লোক সবেমাত্র নতুন নতুন ইসলাম গ্রহণ করেছিল এবং তাদের প্রশিক্ষণ ছিল প্রাথমিক অবস্থায়। পরে নবী (সা.) এর নেতৃত্বে যখন তারা পরিপক্কতা অর্জন করলেন, তখন প্রকৃতপক্ষে তাদের ও কাফেরদের মধ্যে এক ও দশের অনুপাতই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। বস্তুত নবী (সা.) এর আমলের শেষের দিকে এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগের বিভিন্ন যুদ্ধে বারবার এর সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে।
তাফসীরে আহসানুল বয়ান বলেছেন:-
[১] تحريض শব্দের অর্থ হল উদ্বুদ্ধকরণে অতিরঞ্জন করা। অর্থাৎ, খুব বেশী উদ্বুদ্ধ করা, আগ্রহ ও উৎসাহ সৃষ্টি করা। কেননা, এই নির্দেশ মোতাবেক নবী (সাঃ) যুদ্ধের পূর্বে সাহাবাদেরকে জিহাদের জন্য অতিশয় উদ্বুদ্ধ করতেন এবং তার মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব বর্ণনা করতেন। যেমন, বদর যুদ্ধের সময় যখন মুশরিকরা নিজেদের ভারী সংখ্যা নিয়ে যথেষ্ট পরিমাণ যুদ্ধসামগ্রীসহ ময়দানে উপস্থিত হল, তখন নবী (সাঃ) বললেন, “এমন জান্নাতে যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও, যার প্রস্থ আকাশ-পৃথিবী সমান।” এক সাহাবী উমাইর বিন হুমাম (রাঃ) বললেন, ‘জান্নাতের প্রস্থ আকাশ-পৃথিবী সমান? হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, “হ্যাঁ!” তা শুনে তিনি ‘ওহো’ বললেন। অর্থাৎ, খুশী প্রকাশ করলেন এবং এই আশা ব্যক্ত করলেন যে, ‘আমিও জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত হতে চাই।’ তিনি বললেন, “তুমি তাদের একজন হবে।” অতএব তিনি নিজের তরবারির খাপকে ভেঙ্গে ফেললেন এবং কিছু খেজুর বের করে খেতে লাগলেন। খেতে খেতে অবশিষ্ট খেজুর তিনি মাটিতে ফেলে দিয়ে বললেন, ‘এগুলি খাবার জন্য জীবিত থাকলে সে জীবন তো বড় দীর্ঘ জীবন!’ অতঃপর তিনি জিহাদ করার জন্য বীরত্বের সাথে সামনের দিকে অগ্রসর হলেন। পরিশেষে তিনি কাফেরদের সাথে লড়তে লড়তে শহীদ হয়ে গেলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হন। (মুসলিমঃ ইমারাহ অধ্যায়)
[২] এটা মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ যে, তোমাদের মধ্যে দৃঢ়তার সাথে যুদ্ধকারী ২০ জন যোদ্ধা ২০০ জন কাফের সৈন্যের বিরুদ্ধে এবং ১০০ জন যোদ্ধা তাদের এক হাজার সৈন্যের বিরুদ্ধে যথেষ্ট হয়ে বিজয়ী থাকবে।
[৩] পূর্বের হুকুম সাহাবাদের উপর ভারী মনে হল। কেননা, এর অর্থ ছিল ১ জন মুসলিম ১০ জন কাফের, ২০ জন মুসলিম ২০০ কাফের এবং ১০০ জন মুসলিম ১০০০ জন কাফেরের মোকাবেলার জন্য যথেষ্ট। আর তার মানেই হল কাফেরদের তুলনায় মুসলিমদের সংখ্যা অনুরূপ (১০ গুণ কম) হলে জিহাদ করা ফরয এবং তা ত্যাগ করা কোন প্রকারে বৈধ নয়। সুতরাং আল্লাহ তাআলা এই সংখ্যাকে হালকা করে ১/১০ থেকে কম করে ১/২ (অর্থাৎ আধা-আধি) সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিলেন। (বুখারীঃ তফসীর সূরা আনফাল) এখন এই তুলনামূলক উক্ত সংখ্যা হলে জিহাদ ফরয; তার থেকে কম হলে ফরয নয়।
[৪] এই বলে সবর ও অবিচলতার গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর মদদ লাভ করার জন্য উভয়ের প্রতি যত্ন নেওয়া জরুরী।
তাফসীরে আবুবকর যাকারিয়া বলেছেন:-
আয়াতে সাধারণ নীতি আকারে বলা হয়েছে (وَ اللّٰہُ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ) অর্থাৎ আল্লাহ্ তাআলা ধৈর্যশীল লোকদের সাথে রয়েছেন। এতে যুদ্ধক্ষেত্রে দৃঢ়তা অবলম্বনকারীও অন্তর্ভুক্ত এবং শরীআতের সাধারণ হুকুম-আহকামের অনুবর্তিতায় দৃঢ়তা অবলম্বনকারীরাও শামিল তাদের সবার জন্যই আল্লাহ তা’আলার সাহায্য ও সহযোগিতার এ প্রতিশ্রুতি। আর এটাই প্রকৃতপক্ষে তাদের কৃতকার্যতা ও বিজয়ের মূল রহস্য। কারণ, যে ব্যক্তি একক ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহ রাববুল আলামীন-এর সাহায্য ও সহযোগিতা লাভে সমর্থ হবে, তাকে সারা বিশ্বের সমবেত শক্তিও নিজের জায়গা থেকে এক বিন্দু নাড়াতে পারে না। সুতরাং আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে থাকার সাথে কোন কিছুর তুলনা চলে না। কোন আল্লাহওয়ালা লোক বলেছেন, সবরকারীগণ দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় কল্যাণ অর্জন করতে সমর্থ হয়েছে। কেননা, তারা আল্লাহর সাথে থাকার গৌরব অর্জন করেছে। এর দ্বারা বোঝা যাচ্ছে যে, তিনি তাদের হিফাযত করবেন, তত্ত্বাবধান করবেন, সংরক্ষণ করবেন। অন্যত্র তিনি সবরকারীদেরকে তিনটি বস্তুর ওয়াদা করেছেন, যার প্রতিটি দুনিয়া ও তাতে যা আছে তা থেকে উত্তম। তিনি তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদেরকে স্মরণ, রহমত এবং হিদায়াতপ্রাপ্তি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “এরাই তারা, যাদের প্রতি তাদের রব-এর কাছ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ এবং রহমত বর্ষিত হয়, আর তারাই সৎপথে পরিচালিত।” [সূরা আল-বাকারাহঃ ১৫৭] [ইবনুল কাইয়্যেম, ‘উদ্দাতুস সাবেরীন:৯২]
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
এ আয়াতে মু’মিনদেরকে আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করার প্রতি প্রেরণা দেয়ার ব্যাপারে নাবী (সাঃ) কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কুরআন ও সহীহ হাদীসে জিহাদের প্রেরণামূলক অনেক বর্ণনা রয়েছে। যেমন- আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ اللہَ اشْتَرٰی مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ اَنْفُسَھُمْ وَاَمْوَالَھُمْ بِاَنَّ لَھُمُ الْجَنَّةَﺚ یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللہِ فَیَقْتُلُوْنَ وَیُقْتَلُوْنَﺤ وَعْدًا عَلَیْھِ حَقًّا فِی التَّوْرٰٿةِ وَالْاِنْجِیْلِ وَالْقُرْاٰنِﺚ وَمَنْ اَوْفٰی بِعَھْدِھ۪ مِنَ اللہِ فَاسْتَبْشِرُوْا بِبَیْعِکُمُ الَّذِیْ بَایَعْتُمْ بِھ۪ﺚ وَذٰلِکَ ھُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহ মু’মিনদের নিকট হতে তাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন, তার বিনিময়ে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা আল্লাহর পথে স্বসস্ত্র যুদ্ধ করে, হত্যা করে ও নিহত হয়। তাওরাত, ইন্জীল ও কুরআনে এ সম্পর্কে তাদের দৃঢ় প্রতিশ্র“তি রয়েছে। নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর কে আছে? তোমরা যে সওদা করেছ সে সওদার জন্য আনন্দিত হও আর এটাই মহাসাফল্য।”(সূরা তাওবাহ ৯:১১১)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় একমাত্র জিহাদ করার উদ্দেশ্যে বের হবে, আল্লাহ তা‘আলার প্রতি বিশ্বাস রেখে এবং রাসূলগণকে সত্য বলে জানবে সে আল্লাহ তা‘আলার যিম্মায়, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন অথবা যে বাড়ি থেকে বের হয়েছে প্রতিদান ও গনীমতসহ সেখানে ফিরিয়ে আনবেন। তারপর বলেন: সে সত্তার শপথ করে বলছি যার হাতে আমার প্রাণ! যদি মুসলিমদের কষ্ট না হত তাহলে আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় যত জিহাদ হয় তার একটি হতেও পিছপা হতাম না। কিন্তু আমি এমন কোন বাহন পাই না যা মুসলিমদের দেব এবং তাদের কাছেও এমন কোন বাহন নেই যে তারা আমার অনুসরণ করবে। আমাকে ছেড়ে তারা সন্তুষ্ট মনে বসেও থাকতে পারবে না। যার হাতে মুহাম্মাদের আত্মা রয়েছে তাঁর শপথ! আমার ইচ্ছা হয় আমি আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদ করে শহীদ হই, আবার জিহাদ করি আবার শহীদ হই, আবার জিহাদ করি আবার শহীদ হই। (সহীহ মুসলিম হা: ১৮৭৬, ইবনু মাযাহ হা: ২৭৫২)
পক্ষান্তরে যারা দুনিয়ার ধন-সম্পদ, আত্মীয়-স্বজন ইত্যাদির মায়া ছেড়ে জিহাদে যেতে পারে না, তাদের তিরস্কার করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قُلْ اِنْ کَانَ اٰبَا۬ؤُکُمْ وَاَبْنَا۬ؤُکُمْ وَاِخْوَانُکُمْ وَاَزْوَاجُکُمْ وَعَشِیْرَتُکُمْ وَاَمْوَالُ اۨقْتَرَفْتُمُوْھَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ کَسَادَھَا وَمَسٰکِنُ تَرْضَوْنَھَآ اَحَبَّ اِلَیْکُمْ مِّنَ اللہِ وَرَسُوْلِھ۪ وَجِھَادٍ فِیْ سَبِیْلِھ۪ فَتَرَبَّصُوْا حَتّٰی یَاْتِیَ اللہُ بِاَمْرِھ۪ﺚ وَاللہُ لَا یَھْدِی الْقَوْمَ الْفٰسِقِیْنَ)
“বল: ‘তোমাদের নিকট যদি আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করা অপেক্ষা অধিক প্রিয় হয় তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভ্রাতা, তোমাদের পতœী, তোমাদের স্বগোষ্ঠী, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যার মন্দা পড়ার আশংকা কর এবং তোমাদের বাসস্থান যা তোমরা ভালবাস, তবে অপেক্ষা কর আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত’ আল্লাহ সত্যত্যাগী সম্প্রদায়কে সৎপথ প্রদর্শন করেন না।”(সূরা তাওবাহ ৯:২৪)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের সুসংবাদ দিচ্ছেন যে, তোমাদের মধ্যে যদি দৃঢ়তার সাথে বিশজন যুদ্ধ করে তাহলে কাফিরদের দু’শত জন সৈন্যের বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারবে। আর একশত জন হলে তাদের এক হাজার জনের বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারবে।
(الْاٰنَ خَفَّفَ اللّٰهُ عَنْكُمْ)
‘আল্লাহ এখন তোমাদের ভার লাঘব করলেন।’অর্থাৎ পূর্বের বিধান মু’মিনদের ওপর কঠিন ছিল। তার মানে হল একশত জন মুসলিম বাহিনী থাকলে এক হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা আবশ্যক। এখন আল্লাহ তা‘আলা হালকা করে দিলেন যে, একশত জন ধৈর্যের সাথে জিহাদ করলে দুইশত জনের বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারবে। অর্থাৎ প্রতি একজন মুসলিম দু’জন কাফিরের সমান। মূলত আয়াতের এ অংশটুকু জিহাদের প্রতি প্রেরণা দিচ্ছে।
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহ তা‘আলার রাসূল (সাঃ) খন্দকের দিকে বের হলেন, হিম শীতল সকালে আনসার ও মুহাজিররা পরিখা খনন করছেন, আর তাদের এ কাজ করার জন্য তাদের কোন কর্মচারী ছিল না। যখন তিনি তাদের দেখতে পেলেন যে, তারা কষ্ট এবং ক্ষুধায় আক্রান্ত, তখন বললেন:
اللّٰهُمَّ إِنَّ العَيْشَ عَيْشُ الآخِرَةِ، فَاغْفِرْ لِلْأَنْصَارِ وَالمُهَاجِرَةِ
হে আল্লাহ! সুখের জীবন তো আখিরাতের জীবন। তুমি আনসার ও মুহাজিরদের ক্ষমা করে দাও। এর উত্তরে তারা বললেন:
نَحْنُ الَّذِينَ بَايَعُوا مُحَمَّدَا … عَلَي الجِهَادِ مَا بَقِينَا أَبَدَا
আমরা সেই ব্যক্তি যারা মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর হাতে জিহাদের বাইয়াত গ্রহণ করেছি, যতদিন আমরা জীবিত আছি। (সহীহ বুখারী হা: ২৮৩৪, সহীহ মুসলিম হা: ১৮০৫)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(مِّائَةٌ صَابِرَةٌ یَّغْلِبُوْا مِائَتَیْنِ)
‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে একশত জন ধৈর্যশীল থাকলে (কাফিরদের) দু’শত জনের ওপর বিজয়ী হবে।’ যখন অবতীর্ণ হল। তখন দশজন কাফিরের বিপরীত একজন মুসলিম থাকলেও পলায়ন না করা ফরয করে দেয়া হল। সুফইয়ান ইবনু উয়াইনাহ (রাঃ) আবার বর্ণনা করেন, দু’শ জন কাফিরের বিপক্ষে বিশজন মুসলিম থাকলেও পলায়ন করা যাবে না। তারপর এ আয়াতটি নাযিল হল- ‘আল্লাহ তা‘আলা এখন তোমাদের বোঝা হালকা করে দিয়েছেন এবং তিনি জানেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। সুতরাং যদি তোমাদের মধ্যে একশ’জন দৃঢ়পদ লোক থাকে তবে তারা দু’শজনের ওপর জয়লাভ করবে আর তোমাদের মধ্যে একহাজার থাকলে তারা দু’জাহারের ওপর জয়লাভ করবে। আর আল্লাহ তা‘আলা আছেন দৃঢ়পদ লোকেদের সঙ্গে।……হাদীসের শেষ পর্যন্ত। (সহীহ বুখারী হা: ৪৬৫২, ৪৬৫৩)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আলিমদের উচিত নাবী (সাঃ)-এর ওয়ারিশ হিসেবে মু’মিনদেরকে সঠিক পন্থায় জিহাদের প্রতি অনুপ্রেরণা দেয়া এবং নিজেরাও শরীক হওয়া।
২. স্থান, কাল ও পাত্রভেদে মু’মিনদের জিহাদের অংশগ্রহণ করা আবশ্যক।
৩. যুদ্ধের ময়দানে দৃঢ়পদে অটল থাকা আবশ্যক।
৪. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সাহায্য-সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।