أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 114/٦٩)-২৭২
www.motaher21.net
يَرُدُّوكُم بَعْدَ إِيمٰنِكُمْ كٰفِرِينَ
তোমাদেরকে কাফির বানিয়ে ছাড়বে।
The would render you disbelievers after you have believed!
সুরা: আলে-ইমরান
আয়াত নং :-১০০-১০১
يٰٓأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُوٓا إِن تُطِيعُوا فَرِيقًا مِّنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتٰبَ يَرُدُّوكُم بَعْدَ إِيمٰنِكُمْ كٰفِرِينَ
হে মু’মিনগণ! তোমরা যদি কিতাবীদের মধ্য হতে কোন দলের কথা মেনে নাও, তবে তারা তোমাদের ঈমান আনার পর আবার তোমাদেরকে কাফির বানিয়ে ছাড়বে।
وَكَيْفَ تَكْفُرُونَ وَأَنتُمْ تُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ ءَايَٰتُ ٱللَّهِ وَفِيكُمْ رَسُولُهُۥۗ وَمَن يَعْتَصِم بِٱللَّهِ فَقَدْ هُدِىَ إِلَىٰ صِرَٰطٍ مُّسْتَقِيمٍ
আর তোমরা কেমন করে কুফরী করতে পার যখন তোমাদেরকে আল্লাহর আয়াতসমূহ পড়ে শুনানো হচ্ছে এবং তোমাদের মাঝে তাঁর রসূলও মওজুদ আছেন? যে ব্যক্তি আল্লাহকে সুদৃঢ়ভাবে গ্রহণ করে, নিশ্চয়ই সে সরল পথের দিকে পরিচালিত হবে।
১০০-১০১ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ইবনে কাসীর বলেছেন:-
মহান আল্লাহ স্বীয় মুমিন বান্দাদেরকে আহলে কিতাবের ঐ দলটির অনুসরণ করতে নিষেধ করছেন যাদের অন্তর কালিমাযুক্ত। কেননা, তারা হিংসুটে ও ঈমানের শত্রু। আল্লাহ তা’আলা যে আরবে নবী পাঠিয়েছেন এটা তাদের নিকট অসহ্য হয়ে উঠেছে এবং তারা হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরছে। যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “আহলে কিতাবের অনেকে তোমাদের প্রতি হিংসা বশতঃ তোমাদের ঈমান আনার পর পুনরায় তোমাদেরকে কাফির বানিয়ে দেয়া পছন্দ করে। এখানেও আল্লাহ তাআলা এ কথাই বলেন- “হে মুমিনগণ! তোমরা যদি আহলে কিতাবের একটি দলের অনুসরণ কর তবে অবশ্যই তারা তোমাদেরকে তোমাদের ঈমান আনয়নের পর পুনরায় কাফির বানিয়ে দেয়ার ব্যাপারে চেষ্টার ত্রুটি মোটেই করবে না। আমি জানি যে, তোমরা কুফর হতে বহু দূরে রয়েছে, তথাপি আমি তোমাদেরকে সতর্ক করে দিচ্ছি। তাদের প্রতারণায় তত তোমাদের পড়ার কথা নয়। কেননা, তোমরা রাত দিন আল্লাহ তা’আলার নিদর্শনাবলী পাঠ করতে রয়েছে এবং স্বয়ং তাঁর রাসূল তোমাদের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছেন। যেমন অন্য স্থানে রয়েছেঃ “তোমরা কেন বিশ্বাস স্থাপন করবে না? অথচ রাসূল (সঃ) তোমাদেরকে তোমাদের প্রভুর উপর ঈমান আনয়নের জন্যে আহ্বান করতে রয়েছেন এবং তোমাদের সঙ্গে অঙ্গীকারও করা হয়েছে, যদি তোমরা মুমিন হও। হাদীস শরীফে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) একদা তাঁর সহচরবৃন্দকে জিজ্ঞেস করেনঃ “তোমাদের নিকট সবচেয়ে বড় ঈমানদার কে? তাঁরা বলেনঃ “ফেরেশতাগণ।’ তিনি বলেনঃ তারা ঈমান আনবেন না কেন? স্বয়ং তাদের উপর তো অহী অবতীর্ণ হচ্ছে’। সাহাবীগণ (রাঃ) বলেনঃ “অতঃপর আমরা।’ তিনি বলেনঃ “তোমরা ঈমান আনবে না। কেন? স্বয়ং আমি তো তোমাদের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছি। তখন তারা বলেনঃ ‘দয়া করে আপনিই বলুন।’ তিনি বলেনঃ ‘সবচেয়ে ঈমানদার তারাই যারা তোমাদের পরে আসবে। তারা গ্রন্থে লিখিত পাবে এবং ওর উপরেই বিশ্বাস স্থাপন করবে। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা বলেন যে, আল্লাহর দ্বীনকে দৃঢ়রূপে ধারণ করে থাকা বান্দাদের কর্তব্য এবং তার উপর পূর্ণ ভরসা করলেই তারা সরল সঠিক পথপ্রাপ্ত হবে এবং ভ্রান্ত পথ হতে দূরে থাকবে। এটাই হচ্ছে পুণ্য লাভ ও আল্লাহর সন্তুষ্টির কারণ। এর দ্বারাই সঠিক পথ লাভ করা যায় এবং উদ্দেশ্য সফল হয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] ইয়াহুদীদের চক্রান্ত ও প্রতারণা এবং তাদের পক্ষ হতে মুসলিমদের ভ্রষ্ট করার নিকৃষ্টতম প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করার পর মুসলিমদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে যে, তোমরাও তাদের কূট-চক্রান্তের ব্যাপারে হুঁশিয়ার থাকবে। সাবধান! কুরআন তেলাঅত এবং রসূল (সাঃ)-এর বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও তোমরা যেন তাদের জালে ফেঁসে না যাও। তফসীরের বর্ণনায় এর প্রেক্ষাপট এইভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে, আনসারের দু’টি গোত্র আউস এবং খাযরাজ কোন এক মজলিসে এক সাথে বসে আলাপ-আলোচনা করছিল। ইত্যবসরে শাস বিন ক্বাইস ইয়াহুদী তাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের পারস্পরিক এই সৌহার্দ্য দেখে জ্বলে উঠল। যারা একে অপরের কঠোর শত্রু ছিল, তারা আজ ইসলামের বর্কতে দুধে চিনির মত পরস্পর অন্তরঙ্গ বন্ধুতে পরিণত হয়েছে! সে একজন যুবককে দায়িত্ব দিল যে, তুমি তাদের মাঝে গিয়ে সেই ‘বুআষ’ যুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দাও, যা হিজরতের পূর্বে তাদের মাঝে সংঘটিত হয়েছিল এবং সেই যুদ্ধে তারা একে অপরের বিরুদ্ধে যে বীরত্ব প্রকাশক কবিতাগুলো পড়েছিল, তা ওদেরকে শুনাও। সে যুবক গিয়ে তা-ই করল। ফলে উভয় গোত্রের পূর্বের আক্রোশ-আগুন পুনরায় জ্বলে উঠলো এবং পরস্পরকে গালাগালি করতে লাগল। এমন কি অস্ত্র ধারণের জন্য একে অপরকে ডাকাডাকি শুরু করে দিল। আপোসে যুদ্ধের জন্য প্রস্ত্তত হয়ে পড়েছিল। এমন সময় রসূল (সাঃ) উপস্থিত হয়ে তাদেরকে বুঝালেন। তারা বিরত হয়ে গেলো। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত এবং পরের আয়াতও নাযিল হয়। (ইবনে কাসীর ও ফাতহুল ক্বাদীর ইত্যাদি)
[২] اعْتِصَامٌ بِاللهِ (আল্লাহকে অবলম্বন করা)র অর্থ হল, আল্লাহর দ্বীনকে সুদৃঢ়ভাবে ধারণ করা এবং তাঁর আনুগত্যে গড়িমসি না করা।
এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা মুমিনদেরকে সাবধান করছেন যে, তারা যেন আহলে কিতাব তথা ইয়াহুদী ও নাসারাদের আনুগত্য না করে। কেননা তারা মুমিনদেরকে আল্লাহ তা’আলা যে নবী ও কিতাবের নেয়ামত প্রদান করেছেন সেটার হিংসায় জ্বলে যাচ্ছে। কারণ তাদের অনুসরণ করলে তারা মুমিনদেরকে কাফের বানিয়ে ছাড়বে। অন্য আয়াতেও আল্লাহ তা’আলা সেটা ঘোষণা করেছেন। যেমন, “কিতাবীদের অনেকেই চায়, যদি তারা তোমাদেরকে তোমাদের ঈমান আনার পর কাফেররূপে ফিরিয়ে নিতে পারত। সত্য স্পষ্ট হওয়ার পরও তাদের নিজেদের পক্ষ থেকে বিদ্বেষবশতঃ (তারা এটা করে থাকে)” [সূরা আল-বাকারাহ: ১০৯]।
কাতাদা বলেন, আয়াতের অর্থ, আল্লাহ তোমাদেরকে ইয়াহুদী-নাসারাদের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন যেমনটি তোমরা শুনলে, তোমাদেরকে তাদের ভ্রষ্টতা সম্পর্কেও সাবধান করেছেন, সুতরাং তোমরা কোনভাবেই তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে নিরাপদ ভেবো না। আর তোমাদের জানের ব্যাপারেও কল্যাণকামী মনে করো না। প্রকৃতপক্ষেই তারা পথ ভ্রষ্ট হিংসুটে শক্র। কিভাবে তোমরা এমন এক সম্প্রদায়কে নিরাপদ মনে করতে পার যারা তাদের কিতাবের সাথে কুফরী করেছে, রাসূলদের হত্যা করেছে, দ্বীনের ব্যাপারে বিভ্রান্তিতে লিপ্ত রয়েছে এবং নিজেরা অপরাগ হয়ে গেছে। আল্লাহ্র শপথ, এরা নিঃসন্দেহে অবিশ্বাস্য ও শত্রু। [তাবারী]
অর্থাৎ তোমাদের দ্বারা কুফরী হওয়া এটা কিভাবে সম্ভব হতে পারে? তোমাদের কাছে তো আল্লাহ্র আয়াতসমূহ দিন-রাত্রি নাযিল হচ্ছেই। তাছাড়া তোমাদের সাথে আছেন আল্লাহ্র নবী যিনি সেটা তোমাদেরকে তেলাওয়াত করে শোনাচ্ছেন এবং তোমাদের কাছে প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। এমতাবস্থায় তোমাদের পক্ষ থেকে কুফরী হওয়া আশ্চর্যজনক নয় কি? অন্য আয়াতেও আল্লাহ্ তা’আলা এ কথাটি বলেছেন, “আর তোমাদের কি হল যে, তোমরা আল্লাহ্র উপর ঈমান আন না? অথচ রাসূল তোমাদেরকে তোমাদের রবের প্রতি ঈমান আনার জন্য ডাকছেন এবং আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে অংগীকার গ্রহণ করেছেন” –[সূরা আল-হাদীদ: ৮]
কাতাদা বলেন, কুফরী না করার পক্ষে দুটি বড় নিদর্শন রয়েছে। একটি আল্লাহ্র নবী অপরটি আল্লাহ্র কিতাব। তন্মধ্যে আল্লাহ্র নবী চলে গেছেন কিন্তু তাঁর কিতাব অবশিষ্ট রয়েছে। যাতে রয়েছে আল্লাহ্র রহমত ও অনুগ্রহ হিসেবে হালাল-হারাম, আনুগত্য ও অবাধ্যতার বিষয়ে যাবতীয় বিধি-বিধান। [ইবনে আবী হাতেম] কোন কোন বর্ণনায় এ আয়াতের শানে নুযুল সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আউস ও খাযরাজ গোত্রে অন্ধকার যুগে যে সমস্ত যুদ্ধ বিগ্রহ সংঘটিত হয়েছিল কোন এক মজলিসে তারা সেটা স্মরণ করে পরস্পর মারমুখী হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেন। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে আহলে কিতাবদের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। কারণ মু’মিনদের ওপর কোন কল্যাণ নাযিল হোক এটা তারা চায় না; বরং তারা চায় মুসলিমরা আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসুক, নিজেদের মাঝে ঝগড়া-বিবাদে লেগেই থাকুক, তারা মুরতাদ হয়ে যাক। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَدَّ کَثِیْرٌ مِّنْ اَھْلِ الْکِتٰبِ لَوْ یَرُدُّوْنَکُمْ مِّنْۭ بَعْدِ اِیْمَانِکُمْ کُفَّارًاﺊ حَسَدًا مِّنْ عِنْدِ اَنْفُسِھِمْ)
“আহলে কিতাবের অনেকে তাদের প্রতি সত্য প্রকাশিত হবার পর তারা তাদের অন্তর্নিহিত বিদ্বেষবশত তোমাদেরকে ঈমান আনার পরে মুরতাদ বানাতে ইচ্ছা করে;” (সূরা বাকারাহ ২:১০৯)
ইয়াহূদীদের চক্রান্ত ও মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ কত জঘন্য তা সুস্পষ্ট হয়ে যায় এ ঘটনা থেকে- একদা আউস এবং খাযরাজ নামক দু’টি আনসার গোত্র কোন এক মাজলিসে এক সাথে বসে আলাপ-আলোচনা করছিল। ইত্যবসরে শাস বিন কাইস নামক একজন ইয়াহূদী তাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের পারস্পরিক এ সৌহার্দ দেখে হিংসায় জ্বলে উঠল। এটা সে সহ্য করতে পারল না। যারা একে অপরের চিরশত্র“ ছিল, সর্বদা বিবাদে লিপ্ত থাকত তারা আজ ইসলামের বরকতে দুধে চিনির মত পরস্পর অন্তরঙ্গ বন্ধুতে পরিণত হয়েছে। সে একজন যুবককে দায়িত্ব দিল যে, তুমি তাদের মাঝে গিয়ে সেই ‘বুআস’ যুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দাও, যা হিজরতের পূর্বে তাদের মাঝে সংঘটিত হয়েছিল এবং সে যুদ্ধে তারা একে অপরের বিরুদ্ধে যে বীরত্ব প্রকাশক কবিতাগুলো পড়েছিল, তা ওদেরকে শুনাও। সে যুবক গিয়ে তা-ই করল। ফলে উভয় গোত্রের পূর্বের আক্রোশ-আগুন পুনরায় জ্বলে উঠলো এবং পরস্পরকে গালি দিতে লাগল। এমন কি অস্ত্র ধারণের জন্য একে অপরকে ডাকাডাকি শুরু করে দিল। তারা আপোষে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে পড়েছিল। এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপস্থিত হয়ে তাদেরকে বললেন: আমি তোমাদের মাঝে থাকতেই এমন শুরু করে দিয়েছ? তখন তারা ভুল বুঝতে পেরে অস্ত্র-সস্ত্র ছেড়ে পরস্পর গলাগলি ধরে কান্নাকাটি শুরু করে দিল। বলা হয় এ প্রেক্ষিতে এ আয়াত নাযিল হয়। (ফাতহুল কাদীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমরা কিভাবে আল্লাহ তা‘আলার সাথে কুফরী কর অথচ তোমাদের কাছে আল্লাহ তা‘আলার আয়াত তেলাওয়াত করা হয় এবং তোমাদের মাঝে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদ্যমান রয়েছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَا لَكُمْ لَا تُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ ج وَالرَّسُوْلُ يَدْعُوْكُمْ لِتُؤْمِنُوْا بِرَبِّكُمْ وَقَدْ أَخَذَ مِيْثَاقَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ)
“তোমাদের কী হল যে, তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনছ না? অথচ রাসূল তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আনতে আহ্বান করছে এবং তিনি (আল্লাহ) তোমাদের নিকট হতে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন, তোমরা যদি বিশ্বাস করতে।” (সূরা হাদীদ ৫৭:৮)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন সাহাবীদেরকে বললেন, কোন্ মু’মিনের ঈমান তোমাদের কাছে আশ্চর্য মনে হয়? তারা বলল: ফেরেশতা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কেন তারা ঈমানদার হবে না অথচ তারা তাদের রবের নিকট থাকে। তারপর তারা নাবীদের কথা উল্লেখ করল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাদের কাছে ওয়াহী আসে, তাদের ঈমানে আশ্চর্য হবার কিছুই নেই। তারপর তারা বলল, তাহলে আমরা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি তোমাদের কাছে রয়েছি, অতএব তোমাদের ঈমানও কোন আশ্চর্য নয়। তারা বলল: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তাহলে কারা? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তারা হল এমন সম্প্রদায় যারা পরবর্তীতে আসবে, তারা কিতাব পাবে আর তাতে ঈমান আনবে। (সনদটি ইবনে মাসউদ পর্যন্ত সহীহ, তাফসীর ইবনে কাসীর, ২/৯৪)
সুতরাং ইয়াহূদীদের চক্রান্ত থেকে সাবধান, তাদের কাজ মুসলিমদের মাঝে বিবাদ সৃষ্টি করে দিয়ে তাদের মাঝেই হানাহানি সৃষ্টি করা।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইয়াহূদী-খ্রিস্টানদের অনুসরণ করলে আমরা আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাব।
২. মুসলিমদের প্রতি ইয়াহূদীদের বিদ্বেষ কিভাবে তাদেরকে উস্কানি দিয়ে পরস্পরের মাঝে বিবাদ সৃষ্টি করে ধ্বংস করা যায়।
৩. কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরলে সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত থাকা যাবে, তাই আকীদা ও আমল সকল ক্ষেত্রে একমাত্র কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ আঁকড়ে ধরতে হবে, অন্য কোন মত ও পথ নয়।