Book #613

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

(Book# 613)
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
৪২-৪৩ নং আয়াত:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 42-43

لَوْ كَانَ عَرَضًا قَرِيبًا
যদি সহজে সম্পদ লাভের আশা থাকত,
Had it been a near gain,

لَوۡ کَانَ عَرَضًا قَرِیۡبًا وَّ سَفَرًا قَاصِدًا لَّاتَّبَعُوۡکَ وَ لٰکِنۡۢ بَعُدَتۡ عَلَیۡہِمُ الشُّقَّۃُ ؕ وَ سَیَحۡلِفُوۡنَ بِاللّٰہِ لَوِ اسۡتَطَعۡنَا لَخَرَجۡنَا مَعَکُمۡ ۚ یُہۡلِکُوۡنَ اَنۡفُسَہُمۡ ۚ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ اِنَّہُمۡ لَکٰذِبُوۡنَ ﴿٪۴۲﴾
যদি সহজে সম্পদ লাভের আশা থাকত ও সফর সহজ হত তবে তারা অবশ্যই আপনার অনুসরণ করত, কিন্তু তাদের কাছে যাত্রাপথ সুদীর্ঘ মনে হল। আর অচিরেই তারা আল্লাহ্‌র নামে শপথ করে বলবে, ‘পারলে আমরা নিশ্চই তোমাদের সাথে বের হতাম।‘ তারা তাদের নিজেদেরকেই ধ্বংস করে। আর আল্লাহ্‌ জানেন নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী।
Had it been an easy gain and a moderate trip, the hypocrites would have followed you, but distant to them was the journey. And they will swear by Allah, “If we were able, we would have gone forth with you,” destroying themselves [through false oaths], and Allah knows that indeed they are liars.
عَفَا اللّٰہُ عَنۡکَ ۚ لِمَ اَذِنۡتَ لَہُمۡ حَتّٰی یَتَبَیَّنَ لَکَ الَّذِیۡنَ صَدَقُوۡا وَ تَعۡلَمَ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۴۳﴾
আল্লাহ্‌ আপনাকে ক্ষমা করেছেন। কারা সত্যবাদী তা আপনার কাছে স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত এবং কারা মিথ্যাবাদী তা না জানা পর্যন্ত আপনি কেন তাদেরকে অব্যাহতি দিলেন?
May Allah pardon you, [O Muhammad]; why did you give them permission [to remain behind]? [You should not have] until it was evident to you who were truthful and you knew [who were] the liars.

৪২-৪৩ নং আয়াতের তাফসীর:

لَوْ كَانَ عَرَضًا قَرِيبًا وَسَفَرًا قَاصِدًا

‘আশু সম্পদ লাভের সম্ভাবনা থাকলে ও সফর সহজ হলে..’ পূর্বের আয়াতগুলোতে জিহাদের প্রতি যে প্রেরণা দেয়া হয়েছে মূলত তা ছিল তাবুক যুদ্ধের প্রেক্ষাপট। তাবুক যুদ্ধের প্রেক্ষাপটের সাথে সম্পৃক্ত হলেও সকল যুগ ও অবস্থায় তা প্রযোজ্য। কেননা শব্দের ব্যাপকতাই ধতর্ব্য, নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপট ধতর্ব্য নয়।

যারা তাবুক যুদ্ধে নাবী (সাঃ)-এর সাথে যায়নি তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা এখানে ভর্ৎসনা করে বলেছেন: সহজেই গনীমত পাওয়া গেলে ও সফর দূরবর্তী না হলে তারা তোমার সাথে যুদ্ধে যেত, কিন্তু (এ ফসল কাটার মওসুমে) তাদের জন্য শাম (সিরিয়া) সফর করা দুঃসাধ্য হয়ে গেছে। এখন তোমার কাছে অহেতুক ওজর পেশ করবে। আল্লাহ তা‘আলা জানেন তারা মিথ্যুক।

(عَفَا اللَّهُ عَنْكَ)

‘আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করেছেন’এখানে নাবী (সাঃ)-কে সম্বোধন করে বলা হচ্ছে যে, জিহাদে শরীক না হওয়ার অনুমতিপ্রার্থীদেরকে তাদের ওজরের সত্যতা যাচাই না করেই কেন অনুমতি দিয়ে দিলে? কিন্তু এ তিরস্কারেও স্নেহের প্রভাব বেশি ছিল। এ জন্যই উক্ত ত্র“টির ক্ষমা প্রথমেই স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এ তিরস্কার এ জন্যই করা হয়েছে যে, অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে তাড়াহুড়ার সাথে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং পূর্ণভাবে সত্যতা যাচাই করে দেখার প্রয়োজন মনেকরা হয়নি। নচেৎ তদন্তের পর সত্যিই যার ওজর আছে তাকে অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলার তরফ থেকে তাকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(إِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِاللّٰهِ وَرَسُوْلِه۪ وَإِذَا كَانُوْا مَعَه۫ عَلٰٓي أَمْرٍ جَامِعٍ لَّمْ يَذْهَبُوْا حَتّٰي يَسْتَأْذِنُوْهُ ط إِنَّ الَّذِيْنَ يَسْتَأْذِنُوْنَكَ أُولٰ۬ئِكَ الَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَرَسُوْلِه۪ ۪ ج فَإِذَا اسْتَأْذَنُوْكَ لِبَعْضِ شَأْنِهِمْ فَأْذَنْ لِّمَنْ شِئْتَ مِنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمُ اللّٰهَ ط إِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ)‏

“মু’মিন তো তারাই যারা আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর রাসূলে ঈমান আনে এবং রাসূলের সঙ্গে সমষ্টিগত ব্যাপারে একত্র হলে তারা অনুমতি ব্যতীত সরে পড়ে না; নিশ্চয়ই‎ যারা তোমার অনুমতি প্রার্থনা করে তারাই আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাসী। অতএব তারা তাদের কোন কাজে বাইরে যাওয়ার জন্য তোমার অনুমতি চাইলে তাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা তুমি অনুমতি দাও এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমাও প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা নূর ২৪:৬২)

সুতরাং জিহাদের ডাক আসলে মু’মিন কোন প্রকার অজুহাত দেখিয়ে বসে থাকতে পারে না, বরং সে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে কিভাবে এ ফযীলতের কাজে অংশ গ্রহণ করা যায়।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

* গনীমত পাওয়া যাবে অথবা কিছু দেয়া হবে এ আশা নিয়ে জিহাদে শরীক হওয়া ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য নয়, বরং জিহাদের মুখ্য উদ্দেশ্য থাকবে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ও দীন প্রতিষ্ঠা করা।
* ভালবাসার পাত্রকে অপরাধের জন্য ধমক দেয়া শরীয়তসম্মত।
* আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং মুজাহিদদের দায়িত্বশীল, তারা দুনিয়াতে কোন সম্পদ বা সম্মান না পেলেও পরকালে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
যারা তাবুকের যুদ্ধে গমন না করে বাড়ীতেই রয়েছিল এবং পরে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কাছে এসে বানানো মিথ্যা ওযর পেশ করেছিল এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ধমকের সুরে বলছেন- প্রকৃতপক্ষে তাদের কোনই ওর ছিল না। যদি সহজ লভ্য গনীমতের আশা থাকতো এবং নিকটের সফর হতো তবে এই লোভীদের দল অবশ্যই সঙ্গে যেতো। কিন্তু সিরিয়া পর্যন্ত দীর্ঘ সফর তাদের মন ভেঙ্গে দেয়। তাই তারা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কাছে এসে মিথ্যা শপথ করে তাঁকে প্রতারিত করছে যে, তাদের যদি ওযর না থাকতো তবে অবশ্যই তারা তার সঙ্গে যুদ্ধে গমন করতো। আল্লাহ তা’আলা বলছেন, তারা মিথ্যা কথা বলে নিজেদেরকে ধ্বংস করছে। তিনি জানেন যে, তারা মিথ্যাবাদী।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] এখান থেকে সেই সব লোকদের কথা আরম্ভ হচ্ছে, যারা ওজর পেশ করে নবী (সাঃ) থেকে অনুমতি নিয়েছিল; অথচ বাস্তবে তাদের ওজর বলতে কিছু ছিল না। عَرَضٌ থেকে উদ্দেশ্যঃ পার্থিব স্বার্থ, অর্থাৎ, গনীমতের মাল।

[২] অর্থাৎ, তোমার সাথে জিহাদে শরীক হতো। কিন্তু দূর সফর তাদেরকে বাহানা খুঁজতে বাধ্য করল।

[৩] অর্থাৎ, মিথ্যা কসম খেয়ে। কেননা, মিথ্যা কসম খাওয়া মহাপাপ।
* এখানে নবী (সাঃ)-কে সম্বোধন করে বলা হচ্ছে যে, জিহাদে শরীক না হওয়ার অনুমতি প্রার্থীদেরকে তাদের ওজর সত্য ছিল কি না, তা তদন্ত করে না দেখে কেন অনুমতি দিয়ে দিলে? কিন্তু এই তিরস্কারেও স্নেহের প্রভাব বেশী ছিল। এই জন্য উক্ত ত্রুটির ক্ষমার কথা প্রথমেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। জেনে রাখা দরকার যে, এই তিরস্কার এই জন্য করা হয়েছে যে, অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে তাড়াহুড়ার সাথে কাজ নেওয়া হয়েছে এবং পূর্ণভাবে সত্যতা যাচাই করে দেখার প্রয়োজন মনে করা হয়নি। নচেৎ তদন্তের পর যার সত্যই ওজর আছে তাকে অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে মহান আল্লাহর তরফ থেকে তাঁকে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। যেমন তিনি বলেছেন, {فَإِذَا اسْتَأْذَنُوكَ لِبَعْضِ شَأْنِهِمْ فَأْذَن لِّمَن شِئْتَ مِنْهُمْ} “অতএব তারা তোমার কাছে তাদের কোন কাজের অনুমতি চাইলে তুমি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুমতি দাও।” (সূরা নূর ২৪:৬২ আয়াত) ‘যাকে ইচ্ছা’ মানে হল, যার কাছে সত্যিকারে ওজর আছে, তাকে অনুমতি দেওয়ার অধিকার তোমার রয়েছে।

তাফসীরে‌ আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-

এ আয়াতে অলসতার দরুন জিহাদ থেকে বিরত রয়েছে এমন লোকদের একটি ওযরকে প্রত্যাখ্যান করে বলা হয়েছে যে, এ ওযর গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, আল্লাহ যে শক্তি সামর্থ্য তাদের দান করেছেন, তা আল্লাহর রাহে সাধ্যমত ব্যয় করেনি। তাই তাদের অসমর্থ থাকার ওযর গ্রহণযোগ্য নয়।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

মোকাবিলা রোমের মতো বড় শক্তির সাথে। একদিকে প্রচণ্ড গ্রীষ্মের মওসুম এসে গেছে এবং দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। তার ওপর নতুন বছরের বহু প্রত্যাশিত ফসল কাটার সময় এসে গেছে। এসব কারণে তাবুকের সফর তাদের কাছে বড়ই কঠিন ও চড়ামূল্যের বলে মনে হচ্ছিল।

কোন কোন মুনাফিক বানোয়াট ওযর পেশ করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যুদ্ধে যাওয়া থেকে অব্যাহতি চেয়েছিল। তিনিও নিজের স্বভাবগত কোমলতা ও উদারতার ভিত্তিতে তারা যে নিছক ভাওতাবাজী করেছে, তা জানা সত্ত্বেও তাদের অব্যাহতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আল্লাহ‌ এটা পছন্দ করেননি। এ ধরনের উদার নীতি সঙ্গত নয় বলে তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছেন। অব্যাহতি দেবার কারণে এ মুনাফিকরা নিজেদের মুনাফিকী ও প্রতারণামূলক কার্যকলাপ গোপন করার সুযোগ পেয়ে গেলো। যদি তাদের অব্যাহতি না দেয়া হতো এবং তারপর তারা ঘরে বসে থাকতো তাহলে তখন তাদের মিথ্যা ঈমানের দাবী সর্বসম্মুখে প্রকাশ হয়ে পড়তো।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 42-43

لَوْ كَانَ عَرَضًا قَرِيبًا

Had it been a near gain,

Why Hypocrites would not join in Jihad

Allah admonishes those who lagged behind and did not join the Prophet for the battle of Tabuk, those who asked the Prophet for permission to remain behind, falsely pretending to have legitimate reasons to do so,

لَوْ كَانَ عَرَضًا قَرِيبًا

Had it been a near gain,

According to Ibn Abbas, booty right in front of them,

وَسَفَرًا قَاصِدًا

and an easy journey,

travel for only a short distance,

لااَّتَّبَعُوكَ

they would have followed you.

وَلَـكِن بَعُدَتْ عَلَيْهِمُ الشُّقَّةُ

but, the distance was long for them), to Ash-Sham,

وَسَيَحْلِفُونَ بِاللّهِ

and they would swear by Allah,

when you return to them,

لَوِ اسْتَطَعْنَا لَخَرَجْنَا مَعَكُمْ

If we only could, we would certainly have come forth with you,

had not there been a valid excuse, we would have gone out with you,

يُهْلِكُونَ أَنفُسَهُمْ وَاللّهُ يَعْلَمُ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ

They destroy themselves, and Allah knows that they are liars.

Moderately criticizing the Prophet for allowing the Hypocrites to stay behind

Allah says;

عَفَا اللّهُ عَنكَ لِمَ أَذِنتَ لَهُمْ

May Allah forgive you. Why did you grant them leave,

Ibn Abi Hatim recorded that Awn said,

“Have you heard criticism softer than this, starting with forgiveness before criticism,”

Muwarriq Al-Ijli and others said similarly.

Qatadah said,

“Allah criticized him as you read here, then later revealed to him the permission to allow them to lag behind if he wants, in Surah An-Nur,

فَإِذَا اسْتَـْذَنُوكَ لِبَعْضِ شَأْنِهِمْ فَأْذَن لِّمَن شِيْتَ مِنْهُمْ

So if they ask your permission for some affairs of theirs, give permission to whom you will of them.” (24:62)

Ata’ Al-Khurasani said similarly.

Mujahid said,

“This Ayah was revealed about some people who said,

`Ask permission from the Messenger of Allah (to stay behind), and whether he agrees, or disagrees, remain behind!”‘

Allah said,

حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكَ الَّذِينَ صَدَقُواْ
until those who told the truth were manifest to you,

in reference to valid excuses,

وَتَعْلَمَ الْكَاذِبِينَ

and you had known the liars.

Allah says, `Why did you not refuse to give them permission to remain behind when they asked you, so that you know those who truly obey you and the liars, who were intent on remaining behind even if you do not give them permission to do so.

Allah asserts that none who believe in Allah and His Messenger seek his permission to remain behind from fighting.

Leave a Reply