أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
(Book# 622)[মুনাফিক কি? ১০ নং বই]
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
৬৭-৭০ নং আয়াত:-
الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ بَعْضُهُم مِّن بَعْضٍ
মুনাফিক পুরুষেরা এবং মুনাফিক নারীরা এক অপরের অনুরূপ।
The hypocrites, men and women, are one from another;
اَلۡمُنٰفِقُوۡنَ وَ الۡمُنٰفِقٰتُ بَعۡضُہُمۡ مِّنۡۢ بَعۡضٍ ۘ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمُنۡکَرِ وَ یَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَقۡبِضُوۡنَ اَیۡدِیَہُمۡ ؕ نَسُوا اللّٰہَ فَنَسِیَہُمۡ ؕ اِنَّ الۡمُنٰفِقِیۡنَ ہُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ ﴿۶۷﴾ মুনাফিক পুরুষেরা এবং মুনাফিক নারীরা এক অপরের অনুরূপ।তারা অসৎকর্মের নির্দেশ দেয়, সৎকর্ম হতে বিরত রাখে এবং নিজেদের হাতগুলিকে (আল্লাহর পথে ব্যয় করা হতে) বন্ধ করে রাখে। তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে, সুতরাং তিনিওতাদেরকে ভুলে গেছেন।] নিঃসন্দেহে মুনাফিকরাই হচ্ছে অতি অবাধ্য।
The hypocrite men and hypocrite women are of one another. They enjoin what is wrong and forbid what is right and close their hands. They have forgotten Allah, so He has forgotten them [accordingly]. Indeed, the hypocrites – it is they who are the defiantly disobedient.
وَعَدَ اللّٰہُ الۡمُنٰفِقِیۡنَ وَ الۡمُنٰفِقٰتِ وَ الۡکُفَّارَ نَارَ جَہَنَّمَ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ ہِیَ حَسۡبُہُمۡ ۚ وَ لَعَنَہُمُ اللّٰہُ ۚ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ مُّقِیۡمٌ ﴿ۙ۶۸﴾
আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী ও কাফেরদেরকে জাহান্নামের আগুনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে, এটা তাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাদেরকে অভিশাপ করেছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী শাস্তি।
Allah has promised the hypocrite men and hypocrite women and the disbelievers the fire of Hell, wherein they will abide eternally. It is sufficient for them. And Allah has cursed them, and for them is an enduring punishment.
کَالَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ کَانُوۡۤا اَشَدَّ مِنۡکُمۡ قُوَّۃً وَّ اَکۡثَرَ اَمۡوَالًا وَّ اَوۡلَادًا ؕ فَاسۡتَمۡتَعُوۡا بِخَلَاقِہِمۡ فَاسۡتَمۡتَعۡتُمۡ بِخَلَاقِکُمۡ کَمَا اسۡتَمۡتَعَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ بِخَلَاقِہِمۡ وَ خُضۡتُمۡ کَالَّذِیۡ خَاضُوۡا ؕ اُولٰٓئِکَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ۚ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ ﴿۶۹﴾
তাদের মত, যারা তোমাদের পূর্বে ছিল, তারা শক্তিতে তোমাদের চেয়ে প্রবল ছিল এবং তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি ছিল তোমাদের চেয়ে বেশী। অতঃপর তারা তাদের ভাগ্যে যা ছিল তা ভোগ করেছে; আর তোমরাও তোমাদের ভগ্যে যা ছিল তা ভোগ করলে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীরা তাদের ভাগ্যে যা ছিল তা ভোগ করেছে। আর তোমরাও সেরূপ অনর্থক আলাপ-আলোচনায় লিপ্ত রয়েছ যেরূপ অনর্থক আলাপ-আলোচনায় তারা লিপ্ত ছিল । ওরা তারাই যাদের আমল দুনিয়া ও আখেরাতে নিস্ফল হয়ে গিয়েছে, আর তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।
[You disbelievers are] like those before you; they were stronger than you in power and more abundant in wealth and children. They enjoyed their portion [of worldly enjoyment], and you have enjoyed your portion as those before you enjoyed their portion, and you have engaged [in vanities] like that in which they engaged. [It is] those whose deeds have become worthless in this world and in the Hereafter, and it is they who are the losers.
اَلَمۡ یَاۡتِہِمۡ نَبَاُ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ قَوۡمِ نُوۡحٍ وَّ عَادٍ وَّ ثَمُوۡدَ ۬ۙ وَ قَوۡمِ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ اَصۡحٰبِ مَدۡیَنَ وَ الۡمُؤۡتَفِکٰتِ ؕ اَتَتۡہُمۡ رُسُلُہُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ ۚ فَمَا کَانَ اللّٰہُ لِیَظۡلِمَہُمۡ وَ لٰکِنۡ کَانُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۷۰﴾
তাদের পূর্ববর্তী নূহ, ‘আদ ও সামূদের সম্প্রদায়, ইবরাহীমের সম্প্রদায় এবং মাদ্ইয়ান ও বিধ্বস্ত নগরের অধিবাসীদের সংবাদ কি তাদের কাছে আসেনি? তাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ তাদের রাসূলগণ এসেছিলেন। অতএব, আল্লাহ্ এমন নন যে, তাদের উপর যুলম করেন, কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করছিল।
Has there not reached them the news of those before them – the people of Noah and [the tribes of] ‘Aad and Thamud and the people of Abraham and the companions of Madyan and the towns overturned? Their messengers came to them with clear proofs. And Allah would never have wronged them, but they were wronging themselves.
৬৭-৭০ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
এ আয়াতগুলোতে মুনাফিক নর-নারীদের পারস্পারিক সম্পর্ক, পরকালে তাদের অবস্থান এবং তাদের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হয়েছে।
মুনাফিক নর-নারী পরস্পর পরস্পরের বন্ধু, একে অপরকে খারাপ কাজের নির্দেশ দেয়। তারা আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করা থেকে নিজেদের হাতকে সঙ্কুচিত করে রাখে।
(نَسُوا اللّٰهَ فَنَسِيَهُمْ)
‘তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে, ফলে তিনিও তাদেরকে ভুলে গেছেন’ অর্থাৎ তারা আল্লাহ তা‘আলাকে ভুলে গেছে ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের সাথে এমন আচরণ করবেন যেন তিনি তাদেরকে ভুলে গেছেন।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَقِيْلَ الْيَوْمَ نَنْسٰكُمْ كَمَا نَسِيْتُمْ لِقَا۬ءَ يَوْمِكُمْ هٰذَا وَمَأْوَاكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُمْ مِّنْ نّٰصِرِيْنَ)
“আর বলা হবেঃ আজ আমি তোমাদেরকে ভুলে যাব যেমন তোমরা এই দিবসের সাক্ষাতকে ভুলে গিয়েছিলে। তোমাদের আশ্রয়স্থল জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না।”(সূরা জাসিয়া ৪৫:৩৪)
এসব কাফির মুনাফিকদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছেন। এদের অবস্থা ও কর্ম এবং পরিণামের দিক দিয়ে পূর্ববর্তী কাফিরদের মতই।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ! তোমরা অবশ্যই তাদের অনুসরণ করবে- বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে ও গজে গজে। এমনকি যদি তারা গুই সাপের গর্তে প্রবেশ করে তাহলে তোমরাও তাতে প্রবেশ করবে (অর্থাৎ হুবহু অনুসরণ করবে)। সাহাবীগণ বললেন: তারা কারা? তারা কি আহলে কিতাব (ইয়াহূদ ও খ্রিস্টান)? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, তাহলে আর কারা? আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন: তোমরা ইচ্ছা করলে এ আয়াত
(كَالَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ كَانُوْآ أَشَدَّ مِنْكُمْ قُوَّةً …..كَمَا اسْتَمْتَعَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ بِخَلَاقِهِمْ)
“তোমরাও তোমাদের পূর্ববর্তীদের মত যারা শক্তিতে তোমাদের অপেক্ষা প্রবল ছিল এবং যাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি ছিল তোমাদের অপেক্ষা অধিক, এবং তারা তাদের ভাগ্যে যা ছিল তা ভোগ করেছে; তোমাদের ভাগ্যে যা ছিল তোমরাও তা ভোগ করলে।” (সূরা তাওবাহ ৯:৬৯) তেলাওয়াত করতে পার। (সহীহ বুখারী হা: ৭৩২০, সহীহ মুসলিম হা: ২৬৬৯)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা এসব কাফির-মুনাফিকদেরকে পূর্ববর্তী অবাধ্য জাতিসমূহের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, তাদের কাছে নাবী-রাসূলগণ আমার নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করেছিল কিন্তু তারা তাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। ফলে তাদের জুলুমের কারণে তাদের ওপর মর্মান্তিক শাস্তি আপতিত হয়েছিল। তাদের অন্যতম নূহ (আঃ)-এর জাতি ও কওমে আদ তথা হূদ (আঃ)-এর জাতি। আল্লাহ তা‘আলার গযবে ধ্বংসপ্রাপ্ত বিশ্বের প্রধান ছয়টি জাতির মধ্যে নূহ (আঃ)-এর পরে আ‘দ ছিল দ্বিতীয় জাতি। এরা খুব দুর্ধর্ষ, শক্তিশালী, সুঠামদেহী ও বিরাট বপুস¤পন্ন ছিল। হূদ (আঃ) তাদেরকে শির্ক বর্জন করে সার্বিক জীবনে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে মূর্তিপূজা ত্যাগ করার এবং জুলুম ও অত্যাচার পরিহার করে ন্যায় সুবিচারের পথে চলার উদাত্ত আহ্বান জানান। হূদ (আঃ) একজন তাদের মতই মানুষ, কিন্তু তারা বাপ-দাদা ইত্যাদির দোহাই দিয়ে দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করে। ফলে প্রবল ঝড়ঝঞ্ঝার শাস্তি দিয়ে তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। যা সাত রাত ও সাত দিন একাধারে প্রবাহমান ছিল। এতে তাদের লাশগুলো খেজুর গাছের কাণ্ডের মত মাটিতে পড়েছিল। এদের কথা বিস্তারিতভাবে সূরা আ‘রাফের ৬৫-৭২নং আয়াাতের আলোচনা করা হয়েছে।
وَّثَمُوْدَ কওমে সামূদ সালেহ (আঃ)-এর জাতি। আদ জাতির ধ্বংসের প্রায় ৫০০ বছর পরে সালেহ (আঃ) সামূদ জাতির প্রতি নাবী হিসেবে প্রেরিত হন। (তারীখুল আম্বিয়া ১/৪৯) আদ জাতির ধ্বংসের পর সামূদ জাতি তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়। তারাও আদ জাতির মত শক্তিশালী ও বীরের জাতি ছিল। তারা প্রস্তর খোদাই ও স্থাপত্য বিদ্যায় খুবই পারশর্দী ছিল। ভীষণ ভূমিকম্প এবং ওপর থেকে বিকট ও ভয়াবহ এক গর্জন দিয়ে তাদেরকে ধ্বংস করা হয়। ফলে সবাই যার যার স্থানে একযোগে অধোমুখী হয়ে ভূতলশায়ী হল (সূরা আ‘রাফ ৭৮, হূদ ৬৭-৬৮) এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত হল এমনভাবে যেন তারা কোনদিন সেখানে বসবাস করেনি। এ সম্পর্কে সূরা আ‘রাফের ৭৩-৭৯ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় আলোচনা করা হয়েছে।
(اَصْحٰبِ مَدْیَنَ)
‘মাদইয়ান অধিবাসী’ উদ্দেশ্য হল শুআইব (আঃ)-এর জাতি। পবিত্র কুরআনের ১০টি সূরায় ৫৩টি আয়াতে তাঁর সম্পর্কে আলোচনা উল্লেখ রয়েছে। লূত (আঃ)-এর অবাধ্য জাতি ধ্বংসের অনতিকাল পরেই তাঁকে নবুওয়াত দিয়ে মাদইয়ানবাসীর হিদায়াতের জন্য প্রেরণ করা হয়েছিল। মাদইয়ান হল লূত সাগরের নিকটবর্তী সিরিয়া ও হিজাযের সীমান্তবর্তী একটি জনপদের নাম। যা অদ্যাবধি পূর্ব জর্ডানের সামুদ্রিক বন্দর ‘মো‘আন’ (معان ) এর অদূরে বিদ্যমান রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলার গযবে ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রধান ছয়টি প্রাচীন জাতির মধ্যে ৫ম জাতি হল ‘আহলে মাদইয়ান’। তাদের অপরাধ ছিল তারা আল্লাহ তা‘আলার সাথে শির্ক করত, রাহাজানি করত, লোকদেরকে ওজনে কম দিত এবং নিজেরা মানুষের নিকট থেকে নেয়ার সময় বেশি নিত। তাদের এই সীমালংঘনের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছেন। এমনকি তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এদের সম্পর্কে সূরা আ‘রাফের ৮৫-৯৩ ও হূদের ৮৪-৯৫ নং আয়াতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
الْمُؤْتَفِکٰتِ অর্থাৎ উল্টো-পাল্টাকৃত। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল লূত (আঃ)-এর সম্প্রদায় যাদের জনপদের নাম ছিল সামূদ। এদেরকে প্রথমত আকাশ থেকে পাথর বর্ষণ করা হয়েছিল। দ্বিতীয়ত: তাদের জনপদকে উল্টো-পাল্টা করে দেয়া হয়েছিল। এ কারণে তাদেরকে আসহাবে মুতাফিকাত বলা হয়। সুতরাং এসব ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত, আল্লাহ তা‘আলা কেন তাদের বিবরণ আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন? তা এজন্যই যে, যাতে আমরা সতর্ক হই এবং তাদের মত আচরণ না করি।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুনাফিকরা পরস্পর পরস্পরের সহযোগী এবং তাদের কাজ-কর্ম ও চাল-চলন সাদৃশ্যপূর্ণ।
২. সৎ কাজে বাধা দেয়া অসৎ কাজের নির্দেশ দেয়া মুনাফিকদের আলামত।
৩. অনেকে সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির কারণে সত্য গ্রহণে বাধাগ্রস্ত হয়।
৪. পূর্ববর্তী জাতিদের পরিণতি থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিত।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
সমস্ত মুনাফিকের এটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য। তারা সবাই খারাপ কাজের ব্যাপারে আগ্রহী এবং ভাল কাজের প্রতি তাদের প্রচণ্ড অনীহা ও শত্রুতা। কোন ব্যক্তি খারাপ কাজ করতে চাইলে তারা তার প্রতি সহানুভূতিশীল হয়। তাকে পরামর্শ দেয়। তার মনে সাহস যোগায়। তাকে সাহায্য-সহায়তা দান করে। তার জন্য সুপারিশ পেশ করে। তার প্রশংসা করে। মোটকথা তার জন্য নিজেদের সব কিছুই তারা ওয়াকফ করে দেয়। মনেপ্রাণে তারা তার ঐ খারাপ কাজে শরীক হয়। অন্যদেরকে ও তাতে অংশগ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করে। আর যে ব্যক্তি খারাপ কাজ করে এরা তার সাহস বাড়াতে থাকে। তাদের প্রতিটি অঙ্গ ভাঙ্গি ও নড়াচড়া থেকে একথা প্রকাশ হতে থাকে যে, এ অসৎ কাজটির বিস্তার ঘটলে তাদের হৃদয়ে কিছুটা প্রশান্তি অনুভূত হতে থাকে এবং তাদের চোখ জুড়িয়ে যায়। অন্যদিকে কোন ভাল কাজ হতে থাকলে তার খবর শুনে তারা মনে ব্যথা অনুভব করতে থাকে। একথার কল্পনা করতেই তাদের মন বিষিয়ে ওঠে। এ সম্পর্কিত কোন প্রস্তাবও তারা শুনতে পারে না। এর দিকে কাউকে এগিয়ে যেতে দেখলে তারা অস্থির হয়ে পড়ে। সম্ভাব্য সকল পদ্ধতিতে তার পথে বাধা সৃষ্টি করতে সক্ষম নাহলে যাতে সে এ কাজে সফলকাম না হতে পারে এ জন্য তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। তাছাড়া ভাল কাজে অর্থ ব্যয় করার জন্য তাদের হাত কখনো এগিয়ে আসে না, এটাও তাদের একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য। তারা কৃপণ হোক বা দানশীল সর্বাবস্থায় এটা দেখা যায়। তাদের অর্থ সিন্দুকে জমা থাকে, আর নয়তো হারাম পথে আসে হারাম পথে ব্যয় হয়। অসৎ কাজের ব্যাপারে তারা যেন নিজেদের যুগের কারূন (অর্থাৎ দেদার অর্থ ব্যয় করতে পারঙ্গম) সৎকাজের ব্যাপারে তারা চরম দরিদ্র।
* মুনাফিকদের সম্পর্কে আলোচনা প্রথম পুরুষে করতে করতে হঠাৎ এখানথেকে আবার তাদেরকে সরাসরি সম্বোধন করা শুরু হয়েছে।
* এখান থেকে আবার তাদের আলোচনা শুরু হয়েছে প্রথম পুরুষে।
* লূত জাতির জনবসতিগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
* তাদের সাথে আল্লাহর কোন শত্রুতা ছিল এবং তিনি তাদেরকে ধ্বংস করতে চাচ্ছিলেন বলে তারা ধ্বংস হয়নি। বরং প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেরাই এমন ধরনের জীবন যাপন প্রণালী পছন্দ করে নিয়েছিল যা তাদেরকে ধ্বংসের দিকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। আল্লাহ তাদের চিন্তা-ভাবনা করারও সামলে নেবার পূর্ণ সুযোগ দিয়েছিলেন। তাদেরকে উপদেশ দেবার ও পরিচালনা করার জন্য রসূল পাঠিয়েছিলেন। রসূলদের মাধ্যমে ভুল পথে অবলম্বন করার অনিষ্টকর ফলাফল সম্পর্কে তাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন এবং কোন প্রকার রাখ ঢাক না করে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে তাদেরকে সাফল্য ও ধ্বংসের পথ বাতলে দিয়েছিলেন। কিন্তু যখন তারা অবস্থার সংশোধনের কোন একটি সুযোগেরও সদ্ব্যবহার করলো না এবং ধ্বংসের পথে চলার ওপর অবিচল থাকলো তখন তাদের অনিবার্য পরিণতির সম্মুখীন হতেই হলো। তাদের ওপর এ জুলুম আল্লাহ করেননি বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছিল।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
আল্লাহ তা’আলা বলেন, এ লোকগুলো সে রকম আযাবই পেয়েছে যে রকম আযাব তাদের পূর্ববর্তীরা পেয়েছে। অথচ তারা এদের চেয়ে বেশী শক্তিশালী ও বেশী সম্পদ ও সন্তান সন্ততির অধিকারী ছিল। অতঃপর তারা ভোগ করেছে তাদের অংশ। হাসান বসরী বলেন, এখানে অংশ বলে দ্বীন বোঝানো হয়েছে। তারা তাদের দ্বীনেরস অংশ অনুসারে আমল করে চলেছে। যেমনিভাবে তোমরা তোমাদের দ্বীনের অংশ অনুসারে আমল করে চলছ। অনুরূপভাবে তোমরা মিথ্যা ও অসার আলোচনায় লিপ্ত হয়ে পড়েছ যেমনি তারা মিথ্যা ও অসার আলোচনায় লিপ্ত হয়েছিল। [ইবন কাসীর] ইবনুল কাইয়্যেম বলেন, এর অর্থ তারা প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে তোমরাও তা-ই করছ। আর তারা সন্দেহের বশবর্তী হয়ে দ্বীনের মধ্যে না জেনে কথা বলেছে, তোমরাও তা বলছ। তোমাদের ও তাদের পথভ্রষ্টতার ধরণ একই। কারণ দ্বীন নষ্ট হয় দু’ভাবে। কখনও বাতিল বিশ্বাস ও সে অনুসারে কথা বলার মাধ্যমে, আবার কখনও সঠিক জ্ঞানের বাইরে চলে বাতিল আমল করার মাধ্যমে। প্রথমটি হচ্ছে, বিদ’আত। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, খারাপ আমল। প্রথমটি সন্দেহ থেকে আসে আর দ্বিতীয়টি আসে প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে। বর্তমান যুগের ফাসেক লোকরাও পূর্ববর্তী লোকদের মতই এ দুটিতে লিপ্ত হয়ে পথভ্রষ্ট হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে। [ইগাসাতুল লাহফানঃ ২/১৬৬-১৬৭] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, গজে প্রতি হাতে হাতে তাদের অনুসরণ করবে। এমনকি যদি তারা ‘দব’ তথা ষাণ্ডার গর্তেও প্রবেশ করে থাকে তবে তোমরাও তাতে প্রবেশ করবে। সাহাবায়ে কিরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! ইয়াহুদী ও নাসারা সম্প্রদায়? তিনি বললেন, তবে আর কারা? [বুখারী ৩৪৫৬]
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
* [১] মুনাফিক্বরা যে কসম খেয়ে মুসলিমদেরকে জানাত যে, ‘আমরা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত’ আল্লাহ পাক তাদের এই কথার খন্ডন করলেন যে, ঈমানদারদের সাথে এদের কি সম্পর্ক? অবশ্য এরা হল সবাই মুনাফিক্ব, চাহে পুরুষ হোক অথবা মহিলা, তারা সকলে সমান। অর্থাৎ, কুফরী ও মুনাফিক্বীতে উভয়েই তুল্যমূল্য। পরবর্তীতে তাদের গুণ বর্ণনা করা হচ্ছে যা মু’মিনদের গুণের সম্পূর্ণ উল্টো ও বিপরীত।
[২] এ থেকে উদ্দেশ্য হল কৃপণতা করা। অর্থাৎ, মু’মিনদের গুণ হল; তারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে থাকে। কিন্তু মুনাফিক্বদের গুণ এর বিপরীত; তারা কৃপণতা করে থাকে। অর্থাৎ, আল্লাহর পথে ব্যয় করে না।
[৩] আল্লাহ তাআলাও তাদের সাথে এমন ব্যবহার করবেন যে, যেন তিনি তাদেরকে ভুলে গেছেন। যেমন, অন্যত্র আল্লাহ পাক বলেন, “আজ আমি তোমাদেরকে ভুলে যাব, যেমন তোমরা এ দিনের সাক্ষাৎকে ভুলে গিয়েছিলে।” (সূরা জাষিয়াহ ৪৫:৩৪ আয়াত) তার মানে হল, যেমন তারা দুনিয়াতে আল্লাহর হুকুম-আহকামকে বর্জন করেছিল, তেমনি কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাদেরকে নিজ অনুগ্রহ ও দয়া হতে বঞ্চিত করবেন। এখানে আল্লাহর ভুলে যাওয়া (কর্মের অনুরূপ দন্ডদান নীতি এবং) অলংকার শাস্ত্রের রীতি অনুযায়ী সাদৃশ্য সাধনের জন্য বলা হয়েছে। নচেৎ আল্লাহর সত্তা ভুলে যাওয়া থেকে পাক ও পবিত্র। (ফাতহুল ক্বাদীর)
* [১] তোমাদের অবস্থাও কর্ম এবং পরিণামের দিক দিয়ে পূর্ববর্তী কাফেরদের মতই। এখন অদৃশ্যভাবে বলার পরিবর্তে মুনাফিক্বদেরকে সরাসরি সম্বোধন করা হচ্ছে।
[২] خَلاق এর দ্বিতীয় অর্থ পার্থিব অংশও করা হয়েছে। অর্থাৎ, তোমাদের তকদীরে পার্থিব যতটা অংশ লিখে দেওয়া হয়েছিল তা উপভোগ করে নাও, যেমন তোমাদের পূর্বেকার লোকেরা নিজেদের পার্থিব অংশ উপভোগ করে নিয়েছে। অতঃপর মৃত্যু অথবা আযাবের শিকার হয়েছিল।
[৩] আল্লাহর আয়াত এবং তাঁর পয়গম্বরদেরকে মিথ্যা জানার ব্যাপারে। অথবা দ্বিতীয় অর্থ হল যে, দুনিয়ার ভোগ-বিলাস ও খেল-তামাশায় যেমন তারা মগ্ন ছিল, তোমাদের অবস্থাও ঠিক তাই। আয়াতে পূর্ববর্তী লোক বলতে ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদেরকে বুঝানো হয়েছে। যেমন এক হাদীসে মহানবী (সাঃ) বলেছেন “অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির পথ অনুসরণ করবে বিঘত বিঘত এবং হাত হাত পরিমাণ (সম্পূর্ণরূপে) এমনকি তারা যদি গোসাপের গর্তে প্রবেশ করে, তবে তোমরাও তাদের অনুসরণ করবে।” সাহাবাগণ বললেন, ‘আল্লাহর রসূল ইয়াহুদ ও খ্রীষ্টানরা?’ তিনি বললেন, “তবে আবার কারা?” (বুখারী, মুসলিম ও হাকেম)
[৪] أولئك (ওরাই) বলতে উদ্দেশ্য সেই লোকেরা যারা উল্লিখিত অভ্যাসে ও গুণে গুণান্বিত; যাদের উপমা দেওয়া হচ্ছে তারা এবং যাদের জন্য উপমা দেওয়া হচ্ছে তারাও। অর্থাৎ, যেমন তারা ক্ষতিগ্রস্ত ও অসফল, তোমরাও সেইরূপ হবে। অথচ তারা তোমাদের চাইতে অধিক শক্তিশালী এবং মাল-ধন ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা অধিক সমৃদ্ধ ছিল। এ সত্ত্বেও তারা আল্লাহর আযাব থেকে পরিত্রাণ পায়নি; তাহলে তোমরা, যারা তাদের চাইতে সব দিক দিয়ে কম, তারা কেমন করে আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচতে পারবে?
*[১] এখানে সেই ছয় সম্প্রদায়ের দৃষ্টান্ত পেশ করা হচ্ছে যাদের বাসস্থান ছিল শাম দেশে। এ দেশ আরব দেশের সন্নিকটেই অবস্থিত। আর তাদের কিছু কথা হতে পারে তারা তাদের বাপ-দাদাদের কাছ থেকে শুনেও ছিল। নূহ নবী (আঃ)-এর সম্প্রদায়; যাদেরকে তুফানে ডুবিয়ে মারা হয়েছিল। আ’দ সম্প্রদায়; যাদেরকে বল ও শক্তিতে প্রবল থাকা সত্ত্বেও প্রচন্ড ঝড় দ্বারা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। সামূদ সম্প্রদায়; যাদেরকে এক আসমানী গর্জন দ্বারা ধ্বংস করা হয়েছিল। ইবরাহীম (আঃ)-এর সম্প্রদায়; যাদের বাদশাহ নমরূদ বিন কিনআন বিন কূশকে মশা দ্বারা মারা হয়েছিল। মাদয়্যানবাসী (শুআইব (আঃ)-এর সম্প্রদায়); যাদেরকে বিকট শব্দ ও ভূমিকম্প দ্বারা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। মু’তাফিকাতবাসী (বিধ্বস্ত জনপদের অধিবাসী) লূত (আঃ)-এর সম্প্রদায়’ যাদের জনপদের নাম ছিল ‘সাদুম’। ‘মু’তাফিকাত’এর অর্থ হল, উল্টো-পাল্টাকৃত। এদের উপরে প্রথমতঃ আসমান থেকে পাথর বর্ষণ করা হয়েছিল, আর দ্বিতীয়তঃ তাদের জনপদকে উল্টো-পাল্টা করে দেওয়া হয়েছিল। যার কারণে বস্তিটার উপরিভাগ নিম্নে এবং নিম্নভাগ উপরে হয়ে গিয়েছিল। এই কারণেই তাদেরকে ‘আসহাবে মু’তাফিকাত’ বলা হয়।
[২] এ সকল সম্প্রদায়ের কাছে তাদেরই মধ্য হতে একজন করে পয়গম্বর এসেছিলেন, কিন্তু তারা তাঁদের কথার গুরুত্ব দেয়নি। বরং মিথ্যাজ্ঞান ও শত্রুতার পথ অবলম্বন করেছিল। যার পরিণামে আল্লাহর আযাব এসেছিল।
[৩] এই আযাব ছিল তাদের যুলুম, অত্যাচার ও সীমালংঘনে অবিচল থাকার পরিণাম। এমনি অকারণে কেউ আল্লাহর আযাবের শিকার হয়নি।
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 67-70
الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ بَعْضُهُم مِّن بَعْضٍ
The hypocrites, men and women, are one from another;
Other Characteristics of Hypocrites
Allah says;
الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ بَعْضُهُم مِّن بَعْضٍ
The hypocrites, men and women, are one from another;
Allah admonishes the hypocrites who, unlike the believers, who enjoin righteousness and forbid evil,
يَأْمُرُونَ بِالْمُنكَرِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمَعْرُوفِ وَيَقْبِضُونَ أَيْدِيَهُمْ
they enjoin evil, and forbid the good, and they close their hands,
from spending in Allah’s cause,
نَسُواْ اللّهَ
They have forgotten Allah,
they have forgotten the remembrance of Allah,
فَنَسِيَهُمْ
so He has forgotten them.
by treating them as if He has forgotten them. Allah also,
وَقِيلَ الْيَوْمَ نَنسَاكُمْ كَمَا نَسِيتُمْ لِقَأءَ يَوْمِكُمْ هَـذَا
And it will be said:”This Day We will forget you as you forgot the meeting of this Day of yours. (45:34)
Allah said,
إِنَّ الْمُنَافِقِينَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
Verily, the hypocrites are the rebellious!
the rebellious from the way of truth who embrace the wicked way.
وَعَدَ الله الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ
Allah has promised the hypocrites — men and women — and the disbelievers, the fire of Hell,
on account of their evildoing mentioned here,
خَالِدِينَ فِيهَا
therein shall they abide.
for eternity, they and the disbelievers,
هِيَ حَسْبُهُمْ
It will suffice them.
as a torment,
وَلَعَنَهُمُ اللّهُ
Allah has cursed them,
He expelled and banished them (from His mercy),
وَلَهُمْ عَذَابٌ مُّقِيمٌ
and for them is the lasting torment.
Allah says,
كَالَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ كَانُواْ أَشَدَّ مِنكُمْ قُوَّةً وَأَكْثَرَ أَمْوَالاً وَأَوْلَادًا فَاسْتَمْتَعُواْ بِخَلقِهِمْ فَاسْتَمْتَعْتُم بِخَلَقِكُمْ كَمَا اسْتَمْتَعَ الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ
Like those before you:they were mightier than you in power, and more abundant in wealth and children. They had enjoyed their portion (a while), so enjoy your portion (a while) as those before you enjoyed,
Allah says, these people were touched by torment in this life and the Hereafter, just as those before them.
Allah’s statement,
بِخَلَقِهِمْ
their portion,
According to Al-Hasan Al-Basri,
means, (they mocked) their religion.
Allah’s statement,
وَخُضْتُمْ كَالَّذِي خَاضُواْ
and you indulged in play and pastime as they indulged in play and pastime,
indulged in lies and falsehood,
أُوْلَـيِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ
Such are they whose deeds are in vain,
their deeds are annulled; they will not acquire any rewards for them because they are invalid,
فِي الُّدنْيَا وَالاخِرَةِ وَأُوْلَيِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ
in this world and in the Hereafter. Such are they who are the losers.
because they will not acquire any rewards for their actions.
Ibn Abbas commented,
“How similar is this night to the last night,
كَالَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ
(Like those before you…). These are the Children of Israel, with whom we were compared.
The Prophet said,
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَتَتَّبِعُنَّهُمْ حَتَّى لَوْ دَخَلَ الرَّجُلُ مِنْهُمْ جُحْرَ ضَبَ لَدَخَلْتُمُوه
By He in Whose Hand is my life! You will imitate them, and even if a man of them entered the den of a lizard, you will enter it likewise!”
Abu Hurayrah narrated that the Messenger of Allah said,
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَتَتَّبِعُنَّ سَنَنَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ شِبْرًا بِشِبْرٍ وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ وَبَاعًا بِبَاعٍ حَتَّى لَوْ دَخَلُوا جُحْرَ ضَبَ لَدَخَلْتُمُوه
By He in Whose Hand is my soul! You will follow the traditions of those who were before you a hand span for a hand-span and forearm’s length for forearm’s length, and an arm’s length for an arm’s length. And even if they enter the den of a lizard, you will also enter it.
They asked, “Who, O Allah’s Messenger, the People of the Book?”
He said, Who else.”
This Hadith is similar to another Hadith collected in the Sahih.
Advising the Hypocrites to learn a Lesson from Those before Them
Allah advises the hypocrites who reject the Messengers,
أَلَمْ يَأْتِهِمْ نَبَأُ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ
Has not the story reached them of those before them!
have you (hypocrites) not learned the end of the nations before you who rejected the Messengers,
قَوْمِ نُوحٍ
The people of Nuh,
and the flood that drowned the entire population of the earth, except those who believed in Allah’s servant and Messenger Nuh, peace be upon him,
وَعَادٍ
and `Ad,
who perished with the barren wind when they rejected Hud, peace be upon him,
وَثَمُودَ
and Thamud,
who were overtaken by the Sayhah (awful cry) when they denied Salih, peace be upon him, and killed the camel,
وَقَوْمِ إِبْرَاهِيمَ
and the people of Ibrahim,
over whom He gave Ibrahim victory and the aid of clear miracles. Allah destroyed their king Nimrod, son of Canaan, son of Koch from Canaan, may Allah curse him,
وِأَصْحَابِ مَدْيَنَ
and the dwellers of Madyan,
the people of Shu`ayb, peace be upon him, who were destroyed by the earthquake and the torment of the day of the Shade,
وَالْمُوْتَفِكَاتِ
and the overturned cities,
the people of Lut who used to live in Madyan.
Allah said in another Ayah,
وَالْمُوْتَفِكَةَ أَهْوَى
And He destroyed the overturned cities. (53:53),
meaning the people of the overturned cities in reference to Sadum (Sodom), their major city. Allah destroyed them all because they rejected Allah’s Prophet Lut, peace be upon him, and because they committed the sin that none before them had committed (homosexuality).
أَتَتْهُمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ
to them came their Messengers with clear proofs.
and unequivocal evidence,
فَمَا كَانَ اللّهُ لِيَظْلِمَهُمْ
So it was not Allah Who wronged them,
when He destroyed them, for He established the proofs against them by sending the Messengers and dissipating the doubts,
وَلَـكِن كَانُواْ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
but they used to wrong themselves.
on account of their denying the Messengers and defying the Truth; this is why they earned the end, torment and punishment, that they did.