أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
(Book# 625)[মুনাফিক কি? ১২ নং বই]
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
৭৫-৭৮ নং আয়াত:-
مِن فَضْلِهِ لَنَصَّدَّقَنَّ
যদি তিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদের ধন্য করেন তাহলে আমরা দান করবো।
Hypocrites seek Wealth but are Stingy with Alms
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ عٰہَدَ اللّٰہَ لَئِنۡ اٰتٰىنَا مِنۡ فَضۡلِہٖ لَنَصَّدَّقَنَّ وَ لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۷۵﴾
তাদের মধ্যে এমন কতিপয় লোক রয়েছে, যারা আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেছিল, আল্লাহ যদি আমাদেরকে নিজ অনুগ্রহ হতে দান করেন, তাহলে অবশ্যই আমরা দান-খয়রাত করব এবং সৎলোকদের অন্তর্ভুক্ত হবো।
And among them are those who made a covenant with Allah, [saying], “If He should give us from His bounty, we will surely spend in charity, and we will surely be among the righteous.”
فَلَمَّاۤ اٰتٰہُمۡ مِّنۡ فَضۡلِہٖ بَخِلُوۡا بِہٖ وَ تَوَلَّوۡا وَّ ہُمۡ مُّعۡرِضُوۡنَ ﴿۷۶﴾
অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে নিজে অনুগ্রহ হতে দান করলেন, তখন তারা এ বিষয়ে কার্পণ্য করল এবং বিমুখ হয়ে ফিরে গেল।
But when he gave them from His bounty, they were stingy with it and turned away while they refused.
فَاَعۡقَبَہُمۡ نِفَاقًا فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ اِلٰی یَوۡمِ یَلۡقَوۡنَہٗ بِمَاۤ اَخۡلَفُوا اللّٰہَ مَا وَعَدُوۡہُ وَ بِمَا کَانُوۡا یَکۡذِبُوۡنَ ﴿۷۷﴾
পরিণামে তিনি তাদের অন্তরে মুনাফেকী রেখে দিলেন আল্লাহ্র সাথে তাদের সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত, তারা আল্লাহ্র কাছে যে অঙ্গীকার করেছিল তার ভঙ্গ করার কারণে এবং তারা যে মিথ্যা বলেছিল সে কারণে।
So He penalized them with hypocrisy in their hearts until the Day they will meet Him – because they failed Allah in what they promised Him and because they [habitually] used to lie.
اَلَمۡ یَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ یَعۡلَمُ سِرَّہُمۡ وَ نَجۡوٰىہُمۡ وَ اَنَّ اللّٰہَ عَلَّامُ الۡغُیُوۡبِ ﴿ۚ۷۸﴾
তারা কি জানে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ্ তাদের অন্তরের গোপন কথা ও তাদের গোপন পরামর্শ জানেন এবং নিশ্চয় আল্লাহ্ গায়েবসমূহের ব্যাপারে সম্যক জ্ঞাত?
Did they not know that Allah knows their secrets and their private conversations and that Allah is the Knower of the unseen?
৭৫-৭৮ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
এ আয়াতগুলো সাহাবী সা‘লাবাহ বিন হাতিব (রাঃ)-এর ব্যাপারে নাযিল হয়েছে বলে কোন কোন মুফাসসির উল্লেখ করেছেন। কিন্তু হাদীসটি অত্যন্ত দুর্বল যা গ্রহণযোগ্য নয়। (তাফসীর তাবারী, ১৯৯৮৭, ১৪/৯৭০-৯৭২)
অতএব সাহাবীদের ব্যাপারে এরূপ দূষণীয় ঘটনা বর্ণনা করা থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। মূলত আয়াতগুলো মুনাফিকদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। যেমন পূর্ব থেকে তাদের আলোচনা চলে আসছে।
তারা আল্লাহ তা‘আলার সাথে ওয়াদা দেয় যে, আল্লাহ তা‘আলা যদি অনুগ্রহ করে আমাদের কিছু সম্পদ দান করেন তাহলে তা থেকে সদাক্বাহ করব এবং সৎ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব। তারা যা বলেছে তা পালন করেনি বরং সম্পদ পেয়ে কৃপণ হয়ে গেছে। যার দরুন তাদের জন্য উল্লিখিত শাস্তি বদ্ধমূল করে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: মুনাফিকদের আলামাত তিনটি যখন কথা বলবে মিথ্যা বলবে, যখন ওয়াদা করবে ভঙ্গ করবে এবং যখন আমানত রাখা হবে খিয়ানত করবে। (সহীহ বুখারী হা: ৩৩) অন্য বর্ণনায় রয়েছে: চারটি বিষয় যার মাঝে থাকবে সে প্রকৃত মুনাফিক, আর যার মাঝে এগুলোর যে পরিমাণ থাকবে তার মাঝে সে পরিমাণ মুনাফিকি থাকবে যতক্ষণ না তা বর্জন করে। উপরের তিনটির পর আরেকটি হল যখন ঝগড়া করবে তখন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করবে। (সহীহ বুখারী হা: ২৪৫৯, সহীহ মুসলিম হা: ৫৮)
সুতরাং সাহাবীদের ব্যাপারে না জেনে কোনরূপ মন্তব্য করা উচিত নয়। বরং একজন মু’মিনের মুখ ও অন্তর সাহাবীদের ব্যাপারে সর্বদা সতর্ক থাকবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শরীয়তসম্মত বিষয়ে অঙ্গীকার পূর্ণ করা আবশ্যক।
২. আয়াতে কৃপণ ব্যক্তি ও কৃপণ স্বভাবকে তিরষ্কার করা হয়েছে।
৩. মানুষের কর্মের ফলে বিপদ আপতিত হয়।
৪. সাহাবীদের ব্যাপারে না জেনে বা কোন বানোয়াট বর্ণনার আলোকে কথা বলা বড় ধরনের অপরাধ।
৫. প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সবকিছুই আল্লাহ তা‘আলা জানেন।
৬. সাহাবীদের মানহানী হয় এমন কোন ধারণা করা ও কথা বলা যাবে না।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৭৫-৭৮ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা’আলা বলেন, এই মুনাফিকদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেছে যে, যদি তিনি তাদেরকে সম্পদশালী করে দেন। তবে তারা খুবই দান-খয়রাত করবে এবং সৎ লোক হয়ে যাবে । অতঃপর যখন আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ধনী বানিয়ে দিলেন এবং তাদের অবস্থা স্বচ্ছল হয়ে গেল তখন সে অঙ্গীকার ভঙ্গ করে দিলো ও কৃপণতা করতে শুরু করলো। এর শাস্তি স্বরূপ আল্লাহ তা’আলা তাদের অন্তরে চিরদিনের জন্যে নিফাক বা কপটতা সৃষ্টি করে দিলেন।
এ আয়াতটি সা’লাবা ইবনে হাতিব আনসারীর ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। যে নবী (সঃ)-কে বলেঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন, তিনি যেন আমাকে ধন-সম্পদ দান করেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেনঃ “যে অল্প মালের তুমি শাকরিয়া আদায় করবে তা ঐ অধিক মাল হতে উত্তম যার তুমি শাকরিয়া আদায় করতে সক্ষম হবে না।” সে দ্বিতীয়বার ঐ প্রার্থনাই করলো । তখন নবী (সঃ) তাকে বললেনঃ “তুমি কি নিজের অবস্থা আল্লাহর নবী (সঃ)-এর মত রাখা পছন্দ কর নী? যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে। তার শপথ! আমি যদি ইচ্ছা করি যে, পাহাড়গুলো সোনা ও রূপা হয়ে আমার সাথে চলতে থাকুক তবে অবশ্যই সেগুলো সেভাবেই চলতে থাকবে। সে বললোঃ “যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন তাঁর শপথ! যদি আপনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেন, অতঃপর তিনি আমাকে ধন-সম্পদ দান করেন তবে আমি অবশ্যই প্রত্যেক হকদারকে তার হক প্রদান করবো।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “হে আল্লাহ! আপনি সা’লাবাকে ধন-সম্পদ দান করুন। ফলে তার বকরীগুলো এতো বেশী বৃদ্ধি পায় যেমনভাবে পোকা মাকড়গুলো বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এমন কি মদীনা শরীফ তার পশুগুলোর পক্ষে সংকীর্ণ হয়ে গেল। সুতরাং সে মদীনা থেকে দূরে চলে গেলো। যোহর ও আসরের সালাত সে জামাআতের সাথে আদায় করতো বটে, কিন্তু অন্যান্য সালাত জামাআতের সাথে আদায় করতে পারতো না। তার পশুগুলো আরো বৃদ্ধি পায়, ফলে তাকে আরো দূরে চলে যেতে হয়। এখন শুধু জুমআ ছাড়া তার সমস্ত জামাআত ছুটে যায়। মাল আরো বেড়ে গেল। ক্রমে ক্রমে সে জুমআর জামাআতে হাযির হওয়াও ছেড়ে দিলো। যেসব যাত্রীদল জুমআয় হাযির হতো তাদেরকে সে জুমআর আলোচিত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতো। একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) সম্পর্কে লোকদেরকে জিজ্ঞেস করলে তারা সব কিছু বর্ণনা করে দেয়। তখন তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। আর এদিকে আয়াত নাযিল হয়ে যায়। (আরবী) অর্থাৎ “তাদের মাল থেকে সাদকা (যাকাত) নিয়ে নাও।” (৯৪ ১০৩) সাদকার আহকামও নাযিল হয়। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (সঃ) মুসলিমদের নিকট থেকে যাকাত আদায় করার জন্যে দু’জন লোককে প্রেরণ করেন। একজন ছিলেন জুহাইনা গোত্রের লোক এবং অপরজন ছিলেন সুলাইম গোত্রের লোক। কিভাবে তারা মুসলিমদের নিকট থেকে যাকাত আদায় করবেন তা তিনি তাঁদেরকে লিখে দেন। আর তাদেরকে বলেনঃ “তোমরা দু’জন সালাবার নিকট থেকে এবং বানু সুলাইমের অমুক ব্যক্তির নিকট থেকে যাকাত গ্রহণ কর।” সুতরাং তারা দু’জন সা’লাবার কাছে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নির্দেশনামা দেখালেন এবং যাকাত চাইলেন। সে তখন বললোঃ “এটা তো জিযিয়ার বোন ছাড়া কিছুই নয়! এটা কি তা আমি বুঝতে পারছি না। আচ্ছা। এখন যাও, ফিরবার পথে এসো।” তখন তারা দু’জন চলে আসলেন। তাঁদের সংবাদ সুলাইম গোত্রের লোকটির নিকট পৌঁছলে তিনি উত্তম উটগুলো বের করে আনলেন এবং ওগুলো নিয়ে নিজেই তাদের কাছে আসলেন। তাঁরা ঐ জন্তুগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করে বললেনঃ “এগুলো তোমার উপর ওয়াজিবও নয় এবং আমরা এগুলো তোমার নিকট থেকে গ্রহণ করতেও চাই না।” তিনি বললেনঃ “আমি তো খুশী মনে আমার উত্তম পশুগুলো দিতে চাচ্ছি, সুতরাং আপনারা এগুলো কবুল করে নিন। শেষ পর্যন্ত তারা ওগুলো গ্রহণ করলেন। অন্যান্যদের নিকট থেকেও তারা যাকাত আদায় করলেন। ফিরবার পথে তারা সা’লাবার কাছে। আসলেন। সে বললোঃ “যে নির্দেশনামা তোমাদেরকে দেয়া হয়েছে তা আমাকে পড়তে দাও দেখি।” পড়ে সে বলতে লাগলোঃ “এটা তো স্পষ্ট জিযিয়া । কাফিরদের উপর যে ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয় এটাতো একেবারে ঐরূপই। আচ্ছা, তোমরা এখন যাও, আমি চিন্তা ভাবনা করে দেখি।” তাঁরা দু’জন ফিরে চলে আসলেন। তাদেরকে দেখা মাত্রই রাসূলুল্লাহ (সঃ) সা’লাবার উপর দুঃখ প্রকাশ করলেন এবং সুলাইম গোত্রের লোকটির উপর বরকতের দুআ করলেন। এখন তারাও সা’লাবা ও সুলাইম গোত্রের লোকটির ঘটনা বর্ণনা করে শুনালেন। তখন মহামহিমান্বিত আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করলেন। সা’লাবার একজন নিকটতম আত্মীয় এ সবকিছু শুনে সালাবার কাছে গিয়ে বর্ণনা করলো এবং আয়াতটিও পড়ে শুনিয়ে দিলো। সা’লাবা তখন নবী (সঃ)-এর কাছে এসে যাকাত ককূল করার প্রার্থনা জানালো। নবী (সঃ) তাকে বললেনঃ “আল্লাহ তা’আলা আমাকে তোমার যাকাত কবুল করতে নিষেধ করে দিয়েছেন। সে তখন নিজের মাথার উপর মাটি নিক্ষেপ করতে লাগলো। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বললেনঃ “এটা তো তোমারই কর্মের ফল। আমি তোমাকে আদেশ করেছিলাম। কিন্তু তুমি আমার আদেশ অমান্য করেছে। সে তখন নিজের জায়গায় ফিরে আসলো। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত সা’লাবার কোন কিছুই ককূল করেননি। অতঃপর সে আবু বকর (রাঃ)-এর খিলাফতকালে তার কাছে আগমন করে এবং বলেঃ “রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট আমার যে মর্যাদা ছিল এবং আনসারদের মধ্যে আমার যে সম্মান রয়েছে তা আপনি ভালরূপেই জানেন। সুতরাং আমার সাদকা ককূল। করুন।” তিনি উত্তর দিলেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন কবুল করেননি তখন আমি কে?” মোটকথা, তিনি অস্বীকার করলেন। অতঃপর যখন তিনি ইন্তেকাল করলেন এবং উমার (রাঃ) মুসলিমদের খলীফা নির্বাচিত হলেন তখন সা’লাবা তাঁর কাছে এসে বললোঃ “হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি আমার সাদকা কবুল করুন!” উমর (রাঃ) উত্তর দিলেনঃ “রাসূলুল্লাহ ও প্রথম খলীফা যখন ককূল করেননি তখন আমি কিরূপে ককূল করতে পারি?” সুতরাং তিনিও অস্বীকৃতি জানালেন। তারপর উসমান (রাঃ)-এর ফিলাফতকালে আবার ঐ চিরদিনের মুনাফিক তাঁর কাছে আসলো এবং তার সাদকা কবূল করার জন্যে তাকে অনুরোধ করলো। কিন্তু তিনি জবাব দিলেনঃ “স্বয়ং আল্লাহর রাসূল (সঃ) এবং তাঁর দু’জন খলীফা যখন তোমার সাদকা গ্রহণ করেননি তখন আমি কি করে তা গ্রহণ করতে পারি? সুতরাং তিনিও তা কবুল করলেন না। ঐ অবস্থাতেই লোকটি ধ্বংস হয়ে যায়। মোটকথা, প্রথমে তো সে শপথ করে বলেছিল যে, সে সাদকা ও দান-খয়রাত করবে, কিন্তু পরে ফিরে গেল এবং দান-খয়রাতের পরিবর্তে কার্পণ্য করতে শুরু করলো ও অঙ্গীকার ভঙ্গ করে দিলো। এই অঙ্গীকার ভঙ্গের প্রতিফল হিসেবে তার অন্তরে নিফাক বা কপটতা জড়িয়ে পড়লো, যা ঐ সময় থেকে নিয়ে তার পূর্ণ জীবন পর্যন্ত তার সাথে থেকেই গেল। হাদীসে রয়েছে যে, মুনাফিকের লক্ষণ হচ্ছে তিনটি- (১) যখন সে কথা বলে মিথ্যা বলে, (২) যখন কোন ওয়াদা করে তখন তা খিলাফ করে এবং (৩) তার কাছে কোন কিছু আমানত রাখা হলে তা খিয়ানত করে।
আল্লাহ পাক বলেনঃ তারা কি জানে না যে, আল্লাহ তাদের মনের গুপ্ত কথা এবং গোপন পরামর্শ সবই অবগত আছেন? তিনি পূর্ব হতেই জানতেন যে, এটা শুধু তাদের মুখের কথা যে, তারা সম্পদশালী হয়ে গেলে এরূপ এরূপ দান-খয়রাত করবে, এমন এমন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে এবং এরূপ সৎকাজ করবে। কিন্তু তাদের অন্তরের উপর দৃষ্টিপাতকারী তো হচ্ছেন আল্লাহ । তিনি তো জানেন যে, মালধন পেলেই তারা তাতে মত্ত হয়ে যাবে, আমোদ আহলাদ করবে, অকৃতজ্ঞ হবে এবং কার্পণ্য করতে শুরু করবে।
আল্লাহ তা’আলা সমস্ত গায়েবের খবর খুবই জ্ঞাত আছেন। তিনি সমস্ত প্রকাশ্য ও গোপনীয় বিষয় সম্পর্কে সম্যক অবগত। সব কিছুই তাঁর সামনে উজ্জ্বল। কিছুই তার অগোচরে নেই।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
উপরের আয়াতে মুনাফিকদের যে অকৃতজ্ঞতা ও কৃতঘ্ন আচরণের নিন্দা করা হয়েছিল তার আর একটি প্রমাণ তাদের নিজেদেরই জীবন থেকে পেশ করে এখানে সুস্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে যে, আসলে এরা দাগী অপরাধী। এদের নৈতিক বিধানে কৃতজ্ঞতা, অনুগ্রহের স্বীকৃতি ও অঙ্গীকার পালন ইত্যাদি গুণাবলীর নামগন্ধও পাওয়া যায় না।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
আল্লাহ্ তা’আলা তাদের অপকর্ম ও অঙ্গীকার লংঘনের ফলে তাদের অন্তরসমূহে মুনাফিকী বা কুটিলতাকে আরো পাকাপোক্ত করে বসিয়ে দেন, যাতে তাদের তাওবাহ করার ভাগ্যও হবে না। হাদীসে মুনাফিকদের আলামত বর্ণিত হয়েছে, “মুনাফিকের আলামত হচ্ছে, তিনটি, কথা বললে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে, আমানত রাখলে খিয়ানত করে।” [বুখারী: ৩৩: মুসলিম: ৫৯]
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
এই আয়াতটি সাহাবী সা’লাবাহ বিন হাত্বেব আনসারী (রাঃ)-এর ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে বলে কোন কোন মুফাসসির উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সনদের দিক থেকে এটা শুদ্ধ নয়। সঠিক মত হল এই যে, এতেও মুনাফিক্বদের আরো একটি মন্দ আচরণ বর্ণনা করা হয়েছে।
এতে সেই সমস্ত মুনাফিক্বদের প্রতি তিরস্কার ও ধমক রয়েছে যারা আল্লাহ তাআলার সাথে অঙ্গীকার করে থাকে, অতঃপর তার পরোয়া করে না। যেন তারা ভাবে যে, আল্লাহ তাআলা তাদের গোপন কথা এবং অন্তরের রহস্য জানেন না। অথচ আল্লাহ তাআলা সব কিছুর ব্যাপারে অবগত, তিনি অদৃশ্যজ্ঞাতা, তিনি গায়েবের সমস্ত খবর জানেন।
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 75-78
مِن فَضْلِهِ لَنَصَّدَّقَنَّ
Hypocrites seek Wealth but are Stingy with Alms.
Hypocrites seek Wealth but are Stingy with Alms
Allah says,
وَمِنْهُم مَّنْ عَاهَدَ اللّهَ لَيِنْ اتَانَا مِن فَضْلِهِ لَنَصَّدَّقَنَّ وَلَنَكُونَنَّ مِنَ الصَّالِحِينَ
فَلَمَّا اتَاهُم مِّن فَضْلِهِ بَخِلُواْ بِهِ وَتَوَلَّواْ وَّهُم مُّعْرِضُونَ
فَأَعْقَبَهُمْ نِفَاقًا فِي قُلُوبِهِمْ إِلَى يَوْمِ يَلْقَوْنَهُ
And of them are some who made a covenant with Allah (saying):”If He bestowed on us of His bounty, we will verily, give Sadaqah and will be certainly among the righteous.”
Then when He gave them of His bounty, they became stingy, and turned away, averse. So He punished them by putting hypocrisy into their hearts till the Day whereon they shall meet Him,
Allah says, some hypocrites give Allah their strongest oaths that if He enriches them from His bounty, they will give away alms and be among the righteous. However, they did not fulfill their vows or say the truth with their words. The consequence of this action is that hypocrisy was placed in their hearts until the Day they meet Allah the Exalted, on the Day of Resurrection.
We seek refuge with Allah from such an end.
Allah said,
بمَا أَخْلَفُواْ اللّهَ مَا وَعَدُوهُ
because they broke that (covenant) with Allah which they had promised to Him)
He placed hypocrisy in their hearts because they broke their promise and lied.
وَبِمَا كَانُواْ يَكْذِبُونَ
and because they used to tell lies.
In the Two Sahihs, it is recorded that the Messenger of Allah said,
ايَةُ الْمُنَافِقِ ثَلَثٌ
إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ
وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ
وَإِذَا ايْتُمِنَ خَان
There are three signs for a hypocrite:
if he speaks, he lies;
if he promises, he breaks the promise; and
if he is entrusted, he betrays the trust.
Allah said
أَلَمْ يَعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ يَعْلَمُ سِرَّهُمْ وَنَجْوَاهُمْ
Know they not that Allah knows their secret ideas, and their Najwa,
Allah states that He knows the secret and what is more hidden than the secret. He has full knowledge of what is in their hearts, even when they pretend that they will give away alms, if they acquire wealth, and will be grateful to Allah for it. Truly,
Allah knows them better than they know themselves, for He is the All-Knower of all unseen and apparent things, every secret, every session of counsel, and all that is seen and hidden.
وَأَنَّ اللّهَ عَلَّمُ الْغُيُوبِ
and that Allah is the All-Knower of things unseen.