(Book# 626)[মুনাফিক কি? ১৩ নং বই]{মু’মিনদের নিয়ে কটাক্ষ করা, উপহাস করা ও অপবাদ দেয়া মুনাফিকদের নিদর্শন।}

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

(Book# 626)[মুনাফিক কি? ১৩ নং বই]{মু’মিনদের নিয়ে কটাক্ষ করা, উপহাস করা ও অপবাদ দেয়া মুনাফিকদের নিদর্শন।}
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
৭৯ নং আয়াত:-
الَّذِينَ يَلْمِزُونَ الْمُطَّوِّعِينَ مِنَ الْمُوْمِنِينَ

মুমিনদের নিয়ে যারা
উপহাস করে…
Hypocrites defame Believers Who give the Little Charity..

اَلَّذِیۡنَ یَلۡمِزُوۡنَ الۡمُطَّوِّعِیۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ فِی الصَّدَقٰتِ وَ الَّذِیۡنَ لَا یَجِدُوۡنَ اِلَّا جُہۡدَہُمۡ فَیَسۡخَرُوۡنَ مِنۡہُمۡ ؕ سَخِرَ اللّٰہُ مِنۡہُمۡ ۫ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۷۹﴾
মুমিনদের মধ্যে যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সদকা দেয় এবং যারা নিজ শ্রম ছাড়া কিছুই পায় না, তাদেরকে যারা দোষারোপ করে । অতঃপর তারা তাদের নিয়ে উপহাস করে, আল্লাহ্‌ তাদেরকে নিয়ে উপহাস করেন ; আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

Those who criticize the contributors among the believers concerning [their] charities and [criticize] the ones who find nothing [to spend] except their effort, so they ridicule them – Allah will ridicule them, and they will have a painful punishment.

৭৯ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে‌ ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

يَلْمِزُوْنَ অর্থ দোষারোপ করা।

শানে নুযূল:

ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: যখন সদাক্বার আয়াত অবতীর্ণ হল তখন আমরা আমাদের পিঠের ওপর বহন করে সদাক্বাহ নিয়ে আসি। এক লোক এসে অনেক সদাক্বাহ করল। তারা (মুনাফিকরা) বলতে লাগল: এ ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর জন্য দান করছে। আরেক লোক এসে এক সা‘ দান করল। তখন তারা (মুনাফিকরা) বলতে লাগল: আল্লাহ তা‘আলা এরূপ অল্প সদাক্বাহ থেকে অমুখাপেক্ষী। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১৪১৫, সহীহ মুসলিম হা: ১০১৮)

এভাবে মুনাফিকরা মু’মিনদেরকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করত। এ সকল মুনাফিকদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: হে নাবী (সাঃ)! তুমি তাদের জন্য সত্তর বার ক্ষমা প্রার্থনা করলেও আমি ক্ষমা করব না। এখানে মূলত সংখ্যা উদ্দেশ্য নয়, উদ্দেশ্য হল আধিক্যতা বুঝানো। অর্থাৎ যত বেশিই ক্ষমা প্রার্থনা কর আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করবেন না। কেননা তারা আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাথে কুফরী করেছে।

তাই একজন মু’মিন মুসলিম ইসলাম ও তার কোন প্রতীককে নিয়ে ঠাট্টা করতে পারে না, চাই তা যত ছোটই হোক না কেন। এমনকি কোন বিষয়ে আমল করা সত্ত্বেও ঠাট্টা ও অপছন্দীয়তা থাকলে ঈমান বাতিলের জন্য এটাই যথেষ্ট।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. মু’মিনদের নিয়ে কটাক্ষ করা, উপহাস করা ও অপবাদ দেয়া মুনাফিকদের নিদর্শন।
২. মু’মিনদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলার আত্মমর্যাদাবোধ অনেক বেশি।
৩. যে কুফরী অবস্থায় মারা যাবে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কোন কাজে আসবে না।
৪. মানুষ পাপাচারে ও যুলুমে মগ্ন থাকার কারণে হিদায়াত থেকে বঞ্ছিত হয়।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-

এটাও মুনাফিকদের একটি বদ অভ্যাস যে, তাদের মুখের ভাষা থেকে দাতা বা কৃপণ কেউই বাঁচতে পারে না। এই দোষযুক্ত ও কর্কশভাষী লোকগুলো খুবই নিকৃষ্ট শ্রেণীর লোক। যদি কোন ব্যক্তি একটা মোটা অংকের অর্থ আল্লাহর পথে দান করে তবে এরা তাকে রিয়াকার বলতে থাকে। আর কেউ যদি সামান্য মাল নিয়ে আসে তবে তারা বলে যে, এই ব্যক্তির দানের আল্লাহ মুখাপেক্ষী নন। যখন সাদকা দেয়ার আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন সাহাবীগণ নিজ নিজ সাদকা নিয়ে হাযির হয়ে যান। এক ব্যক্তি প্রাণ খুলে খুব বড় অংকের সাদকা দেন। তখন ঐ মুনাফিকরা তার উপাধি দেয় রিয়াকার। অতঃপর একজন দরিদ্র লোক শুধুমাত্র এক সা’ (ঐ সময় আরবে দু’প্রকার সা’-এর প্রচলন ছিল। একটি হিজাযী সা’, যার ওজন ছিল পাকা দু’সের এগারো ছটাক। আর একটি ছিল ইরাকী সা’, যার ওজন ছিল পাকা তিন সের ছয় ছটাক) শস্য নিয়ে আসেন। তা দেখে মুনাফিকরা বলে যে, তার এটুকু জিনিসের আল্লাহ তা’আলার কি প্রয়োজন ছিল। এরই বর্ণনা এই আয়াতে রয়েছে।

একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) বাকী’তে বলেনঃ “যে ব্যক্তি সাদকা প্রদান করবে, আমি কিয়ামতের দিন তার ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রদান করবো।” ঐ সময় একজন সাহাবী নিজের পাগড়ীর মধ্য থেকে কিছু দিতে চাইলেন। কিন্তু পরক্ষণেই তিনি তা বেঁধে নিলেন । ইত্যবসরে একজন অত্যন্ত কালো বর্ণের বেঁটে লোক একটি উন্ত্রী নিয়ে আসলেন, যার চেয়ে উত্তম উস্ত্রী সারা বাকীতে ছিল না । এসে তিনি বলতে লাগলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! এটা আমি আল্লাহর নামে খয়রাত করলাম।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন বললেনঃ “বেশ, বেশ, খুব ভালো।” লোকটি বললেনঃ “নেন, এটা গ্রহণ করুন!” তখন একটি লোক বললোঃ “উষ্ট্ৰীটি তো এর চেয়ে উত্তম।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) এটা শুনতে পেয়ে বলেনঃ “তুমি মিথ্যা বলছো। সে বরং তোমার চেয়ে এবং উজ্জ্বীটির চেয়ে বহুগুণে উত্তম।” অতঃপর তিনি বললেনঃ “তোমার মত শত শত উটের মালিকের জন্যে আফসোস!” এ কথা তিনি তিনবার বললেন। তারপর বললেনঃ “শুধুমাত্র ঐ ব্যক্তি দায়িত্বমুক্ত যে তার মাল দ্বারা এরূপ এরূপ করে (অর্থাৎ দান-খয়রাত করে)।”এ কথা বলার সময় তিনি অঞ্জলি ভরে ভরে নিজের হাত দ্বারা ডানে ও বামে ইশারা করেন। অর্থাৎ আল্লাহর পথে প্রত্যেক ভাল কাজে খরচ করে। অতঃপর তিনি বলেনঃ “ঐ ব্যক্তি সফলকাম হয়েছে যে অল্প মালের অধিকারী এবং অধিক ইবাদতকারী।” এ কথা তিনি তিনবার বলেন।

এ আয়াতের ব্যাপারে আলী ইবনে আবি তালহা (রাঃ) ইবনে আব্বাস (রাঃ)। হতে বর্ণনা করেছেন যে, আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) চল্লিশ ঊকিয়া (উকিয়ার ওজন হচ্ছে এক তোলা সাত মাশা) সোনা নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট আগমন করেন এবং একজন (দরিদ্র) আনসারী এক সা’ খাদ্য নিয়ে আসেন। তখন কোন কোন মুনাফিক বলেঃ “আল্লাহর শপথ! আব্দুর রহমান (রাঃ) যা এনেছে তা রিয়া (লোক-দেখাননা) ছাড়া কিছুই নয়।” আর ঐ আনসারী সম্পর্কে তারা বলেঃ “নিশ্চয়ই আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সাঃ) এই সা’-এর মুখাপেক্ষী নন।”

ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) জন-সম্মুখে বের হয়ে ঘোষণা করেনঃ “তোমরা তোমাদের সাদকাগুলো জমা কর।” তখন জনগণ তাদের সাদকাগুলো জমা করেন। সর্বশেষ একটি লোক এক সা’ খেজুর নিয়ে হাযির হন এবং বলেন- “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! রাত্রে বোঝা বহন করার বিনিময়ে আমি দু’সা’ খেজুর লাভ করেছিলাম। এক সা’ আমার সন্তানদের জন্যে রেখে বাকী এক সা’ আপনার কাছে নিয়ে এসেছি।” রাসুলুল্লাহ (সঃ) তখন তাঁর ঐ মালকে জমাকৃত মালের মধ্যে ঢেলে দিতে বললেন। মুনাফিকরা তখন বলাবলি করতে লাগলো যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এই এক সা’ খেজুরের মুখাপেক্ষী নন। অতঃপর আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বললেনঃ “সাদকা দানকারীদের আর কেউ অবশিষ্ট আছে। কি?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) উত্তরে বললেনঃ “তুমি ছাড়া আর কেউ অবশিষ্ট নেই।” তখন আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) বললেনঃ, “আমার কাছে একশ’ উকিয়া সোনা রয়েছে, সবগুলো আমি সাদকা করে দিলাম।” উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) তখন তাকে বললেনঃ “তুমি কি পাগল?” তখন তিনি উত্তরে বললেনঃ “আমার মধ্যে পাগলামি নেই। আমি যা করলাম সজ্ঞানেই করলাম।” উমার (রাঃ) বললেনঃ “তুমি যা করলে তা চিন্তা করে দেখেছো কি?” তিনি উত্তর দিলেনঃ “হ্যা শুনুন! আমার মাল রয়েছে আট হাজার। চার হাজার আমি আল্লাহ তা’আলাকে ঋণ দিচ্ছি এবং বাকী চার হাজার নিজের জন্য রাখছি।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “তুমি যা রাখলে এবং যা দান করলে তাতে আল্লাহ বরকত দান করুন!” মুনাফিকরা তখন বলতে লাগলোঃ “আল্লাহর কসম! আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) যা দান করলেন তা রিয়া ছাড়া কিছুই নয়।” আল্লাহ তা’আলা আয়াত নাযিল করে বড় ও ছোট দানকারীদের সত্যবাদিতা এবং মুনাফিকদের কষ্টদায়ক কথা প্রকাশ করে দিলেন।

বানু আজলান গোত্রের আসিম ইবনে আদী (রাঃ) নামক একটি লোকও মোটা অংকের দান করেছিলেন। তিনি দান করেছিলেন একশ’ অসক খেজুর । মুনাফিকরা তাঁকে রিয়াকার বলেছিল। আবূ আকীল (রাঃ) নিজের পারিশ্রমিক ও মজুরীর অংশ হতে সামান্য দান করেছিলেন। তিনি ছিলেন বানু আনীফ গোত্রের লোক । তিনি এক সা’ পরিমাণ জিনিস দান করলে মুনাফিকরা তাকে উপহাস ও নিন্দা করে। অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) মুজাহিদদের একটি দলকে যুদ্ধে প্রেরণ করার উদ্দেশ্যে এই চাঁদা আদায় করেছিলেন। তাতে রয়েছে যে, আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) দু’হাজার দিয়েছিলেন এবং দু’হাজাররেখেছিলেন। অন্য একজন দরিদ্র লোক সারা রাত্রির পরিশ্রমের বিনিময়ে দু’সা’ খেজুর লাভ করেছিলেন। এক সা’ নিজের জন্যে রেখে বাকী এক সা’ তিনি দান করেন। এ লোকটির নাম ছিল আবু আকীল (রাঃ)। সারারাত ধরে তিনি নিজের পিঠের উপর বোঝা বহন করেছিলেন। কেউ কেউ বলেন যে, তাঁর নাম ছিল হাবাব (রাঃ), আর একটি উক্তি আছে যে, তাঁর নাম ছিল আব্দুর রহমান ইবনে সা’লাবা (রাঃ)।

ঐ মনাফিকদের এই উপহাসের শাস্তিস্বরূপ আল্লাহ তাআলা তাদের থেকে এই প্রতিশোধই গ্রহণ করলেন। পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। কেননা আমলের শাস্তি তো আমল অনুযায়ীই হয়ে থাকে।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
তাবুক যুদ্ধের সময় যখন নবী (সা.) চাঁদার জন্য আবেদন জানালেন তখন বড় বড় ধনশালী মুনাফিকরা হাত গুটিয়ে বসে রইলো। কিন্তু যখন নিষ্ঠাবান ঈমানদাররা সামনে এগিয়ে এসে চাঁদা দিতে লাগলেন তখন ঐ মুনাফিকরা তাদেরকে বিদ্রূপ করতে লাগলো। কোন সামর্থ্যবান মুসলমান নিজের ক্ষমতা ও মর্যাদা অনুযায়ী বা তার চেয়ে বেশী অর্থ পেশ করলে তারা তাদের অপবাদ দিতো যে, তারা লোক দেখাবার ও সুনাম কুড়াবার জন্য এ পরিমাণ দান করছে। আর যদি কোন গরীব মুসলমান নিজের ও নিজের স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের অভুক্ত রেখে সামান্য পরিমাণ টাকাকড়ি নিয়ে আসতো, অথবা সারা রাত মেহনত মজদুরী করে সামান্য কিছু খেজুর উপার্জন করে তাই এনে রসূলের ﷺ সামনে হাযির করতো, তাহলে এ মুনাফিকরা তাদেরকে এ বলে ঠাট্টা করতো, সাবাস, এবার এক ফড়িং এর ঠ্যাং পাওয়া গেল। এ দিয়ে রোমের দূর্গ জয় করা যাবে।”

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

[১] مُطَََّوِّعََِْينَ শব্দের অর্থ হল ওয়াজেব সাদকাহ (যাকাত) ছাড়াও নিজ খুশী মতে আল্লাহর রাহে অতিরিক্ত ব্যয়কারী। جُهد শব্দের অর্থ হল শ্রম ও কষ্ট। অর্থাৎ, সেই সব মানুষ যারা ধনবান নয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও নিজেদের মেহনত ও কষ্টের সাথে উপার্জিত সামান্য মাল থেকেও অল্প কিছু দান করে থাকে। আলোচ্য আয়াতে মুনাফিক্বদের আরো একটি নোংরা আচরণের কথা উল্লেখ হয়েছে। আর তা এই যে, যখন আল্লাহর রসূল (সাঃ) যুদ্ধ প্রভৃতির ব্যাপারে মুসলিমদেরকে দান করতে আহবান করতেন, তখন তাঁরা তাঁর আহবানে সাড়া দিয়ে ক্ষমতানুযায়ী দান করতেন। কারো কাছে অধিক মাল থাকলে তিনি বেশী বেশী স্বাদক্বাহ করতেন। আর অল্প থাকলে অল্পই দিতেন। এই মুনাফিক্বরা উভয় প্রকার মুসলমানদের প্রতি ভৎর্সনা করত। আর অধিক দানকারীর জন্য বলত, এর উদ্দেশ্য হল লোক দেখানো। আর স্বল্প দানকারীকে বলত, তোমার এই সামান্য মাল স্বাদক্বাহ করায় কি উপকার হবে? অথবা আল্লাহ তাআলা তোমার এই স্বল্প মালের মুখাপেক্ষী নন। (বুখারী সূরা তাওবার ব্যখ্যা পরিচ্ছেদ, মুসলিম যাকাত অধ্যায়) এইভাবে মুনাফিকরা মুসলিমদের সাথে ঠাট্টা-পরিহাস করত।

[২] অর্থাৎ, মু’মিনদের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করার বদলা এইভাবে দিয়ে থাকেন যে, তাদেরকে লাঞ্ছিত করে ছাড়েন। এটি হল (কর্মের অনুরূপ দন্ডদান নীতি এবং) অলংকার শাস্ত্রের সাদৃশ্য সাধনের রীতি। অথবা এটা হল বদদুআস্বরূপ। অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা তাদের সাথেও উপহাস করুন, যেমন তারা মুসলিমদের সাথে করে থাকে।

তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-

[১] আবু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যখন সদকার নির্দেশ দেয়া হলো, তখন আমরা পরস্পর অর্থের বিনিময়ে বহন করতাম। তখন আবু আকীল অর্ধ সা নিয়ে আসল। অন্য একজন আরও একটু বেশী আনল। তখন মুনাফিকরা বলতে লাগল, আল্লাহ এর সদকা থেকে অবশ্যই অমুখাপেক্ষী, আর দ্বিতীয় লোকটিও দেখানোর জন্যই এটা করেছে। তখন এ আয়াত নাযিল হয়। [বুখারী ৪৬৬৮]

[২] আল্লাহ্ তা’আলা কর্তৃক কাফের মুনাফিকদের উপহাসের বিপরীতে উপহাস করা কোন খারাপ গুণ নয়। তাই তাদের উপহাসের বিপরীতে আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহাস হতে পারে। [সিফাতুল্লাহিল ওয়ারিদা ফিল কিতাবি ওয়াস সুন্নাতি] এ উপহাস সম্পর্কে কোন কোন মুফাসসির বলেন, আল্লাহ্ তা’আলা মুমিনদের পক্ষ নিয়ে কাফের ও মুনাফিকদেরকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করবেন। তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন। এভাবেই তিনি তাদের সাথে উপহাস করবেন। কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে তাদের উপর বদদোআ করা হয়েছে যে, যেভাবে তারা মুমিনদের সাথে উপহাস করেছে আল্লাহও তাদের সাথে সেভাবে উপহাস করুন। [ফাতহুল কাদীর]

 

Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 79

الَّذِينَ يَلْمِزُونَ الْمُطَّوِّعِينَ مِنَ الْمُوْمِنِينَ

Hypocrites defame Believers Who give the Little…

Hypocrites defame Believers Who give the Little Charity They can afford

Allah warns;

الَّذِينَ يَلْمِزُونَ الْمُطَّوِّعِينَ مِنَ الْمُوْمِنِينَ فِي الصَّدَقَاتِ وَالَّذِينَ لَا يَجِدُونَ إِلاَّ جُهْدَهُمْ

Those who defame such of the believers who give charity voluntarily, and such who could not find to give charity except what is available to them —

Among the traits of the hypocrites is that they will not leave anyone without defaming and ridiculing him in all circumstances even those who give away charity.

If, for instance, someone gives away a large amount, the hypocrites say that he is showing off. If someone gives away a small amount they say that Allah stands not in need of this man’s charity.

Al-Bukhari recorded that Ubaydullah bin Sa`id said that Abu An-Nu`man Al-Basri said that Shu`bah narrated that Sulayman said that Abu Wa’il said that Abu Mas`ud said,

“When the verses of charity were revealed, we used to work as porters. A man came and distributed objects of charity in abundance and they (hypocrites) said, `He is showing off.’

Another man came and gave a Sa` (a small measure of food grains); they said, `Allah is not in need of this small amount of charity.’

Then the Ayah was revealed;
الَّذِينَ يَلْمِزُونَ الْمُطَّوِّعِينَ
(Those who defame the volunteers…).”

Muslim collected this Hadith in the Sahih.

Al-Awfi narrated that Ibn Abbas said,

“One day, the Messenger of Allah went out to the people and called them to bring forth their charity, and they started bringing their charity. Among the last to come forth was a man who brought a Sa` of dates, saying, `O Allah’s Messenger! This is a Sa` of dates. I spent the night bringing water and earned two Sa` of dates for my work. I kept one Sa` and brought you the other Sa`.’

The Messenger of Allah ordered him to add it to the charity.

Some men mocked that man, saying, `Allah and His Messenger are not in need of this charity. What benefit would this Sa` of yours bring’

Abdur-Rahman bin Awf asked Allah’s Messenger, `Are there any more people who give charity?’

The Messenger of Allah said,

لَمْ يَبْقَ أَحَدٌ غَيْرُك

None besides you!

Abdur-Rahman bin Awf said, `I will give a hundred Uqiyah of gold as a charity.’

Umar bin Al-Khattab said to him, `Are you crazy?’

Abdur-Rahman said, `I am not crazy.’

Umar said, `Have you given what you said would give!’

Abdur-Rahman said, `Yes. I have eight thousand (Dirhams), four thousand I give as a loan to my Lord and four thousand I keep for myself.’

The Messenger of Allah said,

بَارَكَ اللهُ لَكَ فِيمَا أَمْسَكْتَ وَفِيمَا أَعْطَيْت

May Allah bless you for what you kept and what you gave away.

However, the hypocrites defamed him, `By Allah! Abdur-Rahman gave what he gave just to show off.’

They lied, for Abdur-Rahman willingly gave that money, and Allah revealed about his innocence and the innocence of the fellow who was poor and brought only a Sa` of dates.

Allah said in His Book,

الَّذِينَ يَلْمِزُونَ الْمُطَّوِّعِينَ مِنَ الْمُوْمِنِينَ فِي الصَّدَقَاتِ

Those who defame such of the believers who give charity voluntarily.”‘

A similar story was narrated from Mujahid and several others.

Ibn Ishaq said,

“Among the believers who gave away charity were Abdur-Rahman bin Awf who gave four thousand Dirhams and Asim bin Adi from Bani Ajlan.

This occurred after the Messenger of Allah encouraged and called for paying charity.

Abdur-Rahman bin Awf stood and gave away four thousand Dirhams.

Asim bin Adi also stood and gave a hundred Wasaq of dates, but some people defamed them, saying, `They are showing off.’ As for the person who gave the little that he could afford, he was Abu Aqil, from Bani Anif Al-Arashi, who was an ally of Bani Amr bin Awf. He brought a Sa` of dates and added it to the charity. They laughed at him, saying, `Allah does not need the Sa` of Abu Aqil.”‘

Allah said,

فَيَسْخَرُونَ مِنْهُمْ سَخِرَ اللّهُ مِنْهُمْ

so they mock at them (believers); Allah will throw back their mockery on them,

rebuking them for their evil actions and defaming the believers. Truly, the reward, or punishment, is equitable to the action. Allah treated them the way mocked people are treated, to aid the believers in this life. Allah has prepared a painful torment in the Hereafter for the hypocrites, for the recompense is similar to the deed.

وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ

and they shall have a painful torment.

Leave a Reply