(Book# 637)[তুমি তাদের ধন-সম্পদ হতে সাদাকাহ গ্রহণ কর,] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

(Book# 637)[তুমি তাদের ধন-সম্পদ হতে সাদাকাহ গ্রহণ কর,]
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
১০৩-১০৪ নং আয়াত:-
خُذۡ مِنۡ اَمۡوَالِہِمۡ صَدَقَۃً
তুমি তাদের ধন-সম্পদ হতে সাদাকাহ গ্রহণ কর,
The Command to collect the Zakah,
خُذۡ مِنۡ اَمۡوَالِہِمۡ صَدَقَۃً تُطَہِّرُہُمۡ وَ تُزَکِّیۡہِمۡ بِہَا وَ صَلِّ عَلَیۡہِمۡ ؕ اِنَّ صَلٰوتَکَ سَکَنٌ لَّہُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۱۰۳﴾
তুমি তাদের ধন-সম্পদ হতে সাদাকাহ গ্রহণ কর, যার দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র ও পরিশোধিত করে দেবে। আর তাদের জন্য দুআ কর, নিঃসন্দেহে তোমার দুআ হচ্ছে তাদের জন্য শান্তির কারণ। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।
Take, [O, Muhammad], from their wealth a charity by which you purify them and cause them increase, and invoke [ Allah ‘s blessings] upon them. Indeed, your invocations are reassurance for them. And Allah is Hearing and Knowing.
اَلَمۡ یَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ ہُوَ یَقۡبَلُ التَّوۡبَۃَ عَنۡ عِبَادِہٖ وَ یَاۡخُذُ الصَّدَقٰتِ وَ اَنَّ اللّٰہَ ہُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۰۴﴾
তারা কি জানে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাঁর বান্দাদের তাওবাহ্ কবুল করেন এবং ‘সদকা’ গ্রহণ করেন , আর নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু?
Do they not know that it is Allah who accepts repentance from His servants and receives charities and that it is Allah who is the Accepting of repentance, the Merciful?

১০৩-১০৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাঃ)-কে নির্দেশ প্রদান করছেন মু’মিনদের সম্পদের যাকাত গ্রহণ কর। এখানে সদাক্বাহ দ্বারা ফরয যাকাত উদ্দেশ্য। (তাফসীর সা‘দী. পৃঃ ৩৬০)

এ ফরয যাকাত গ্রহণ করলে তা তাদেরকে অপরাধ ও অপবিত্রতা থেকে পবিত্র করবে এবং তাদের সৎ আমলও বৃদ্ধি পাবে।

অনেকে মনে করে থাকেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ইন্তিকালের পর যাকাত আদায় করতে হবে না। কারণ আয়াতের সর্বনাম দ্বারা ঐ ব্যক্তিদের সম্বোধন করা হয়েছে যারা সৎ আমলের সাথে অসৎ আমল সংমিশ্রণ করেছে। আর আয়াতে নাবী (সাঃ)-কে সম্বোধন করে বলা হয়েছে, অতএব রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মারা গেছেন, ফলে আর যাকাত দিতে হবে না। আবূ বাকর (রাঃ) ও অন্যান্য সাহাবী এ ভুল ব্যাখ্যা খণ্ডন করে দিয়েছেন। তিনি বললেন: আল্লাহর শপথ! যারা রাসূলের যুগে যাকাত দিয়েছে তারা যদি যাকাতের উটের সাথে রশি দিতেও বাধা দেয় তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। (সহীহ বুখারী হা: ৭২৮৫)

(وَصَلِّ عَلَيْهِمْ)

‘তাদের জন্য দু‘আ করবে’- অর্থাৎ তাদের জন্য দু‘আ করুন, ক্ষমা প্রাথর্না করুন। কেননা আপনার দু‘আ তাদের জন্য রহমতস্বরূপ।

আবদুল্লাহ বিন আবূ আউফা (রাঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট কোন ব্যক্তির যাকাতের সম্পদ নিয়ে আসা হলে তিনি তাদের জন্য দু‘আ করতেন। একদা আমার পিতা যাকাতের সম্পদ নিয়ে আসলে নাবী (সাঃ) বলেন:

اللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰي آلِ أَبِيْ أَوْفَي

হে আল্লাহ! তুমি আবূ আউফার পরিবারের ওপর রহম কর। (সহীহ বুখারী হা: ১৪৯৭)

(أَنَّ اللّٰهَ هُوَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَأْخُذُ)

‘নিশ্চয়ই‎ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের তাওবাহ কবূল করেন’- এখানে তাওবাহ ও দান-খয়রাতের প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। কেননা এ দু’টিই মানুষের পাপকে মোচন ও নিশ্চিহ্ন করে দেয়। যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার কাছে তাওবাহ করে আল্লাহ তা‘আলা তার তাওবাহ কবূল করেন। আর যে হালাল রিযিক থেকে তার পথে ব্যয় করে তিনি তার দান কবূল করেন এবং তা বৃদ্ধি করতে থাকেন এমনকি তা উহুদ পাহাড় সমপরিমাণ হয়ে যায়।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ সদাক্বাহ কবূল করেন এবং ওটাকে ডান হাতে গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি ওটাকে বড় করতে থাকনে। যেমন তোমাদের কেউ তার ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন-পালন করে বড় করে থাকে। এমনকি এক লুকমা সদাক্বাহ উহুদ পাহাড় পরিমাণ হয়ে যায়। (তিরমিযী হা: ৬৬২, সহীহ)

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. যাকাত একটি ফরয ইবাদত, যা নিসাব পরিমাণ সম্পদশালীদের ওপর কিয়ামত পর্যন্ত বহাল থাকবে।
২. ইসলামের কোন রুকনকে অস্বীকার করলে মুসলিম থাকে না।
৩. যার কাছ থেকে যাকাত নেয়া হবে তার জন্য দু‘আ করা মুস্তাহাব।
৪. দান করার ফযীলত জানতে পারলাম।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
১০৩-১০৪ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ তাআলা স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে নির্দেশ দিচ্ছেন-হে নবী! তুমি তাদের মালের যাকাত আদায় কর। এটা তাদেরকে পাক পবিত্র করবে। কতকগুলো লোক (আরবী)- এর সর্বনাম ঐ লোকদের দিকে ফিরিয়েছেন যারা নিজেদের পাপ ও অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছিল এবং ভালো ও মন্দ উভয় আমল করেছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই হুকুম বিশিষ্ট নয়, বরং এটা সাধারণ হুকুম। এ কারণেই আরব গোত্রগুলোর মধ্যে কতকগুলো লোক যাকাত দিতে অস্বীকার করে বসেছিল। তাদের মনে এই বিশ্বাস বদ্ধমূল হয়েছিল যে, ইমামের যাকাত নেয়ার অধিকার নেই। এটা শুধু রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর জন্যেই নির্দিষ্ট ছিল। আর এ জন্যেই তারা আল্লাহ তা’আলার (আরবী)-এই উক্তিকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছিল। কিন্তু আবু বকর (রাঃ) এবং অন্যান্য সমস্ত সাহাবী তাদের ভুল ব্যাখ্যা ও বাজে অনুভূতি খণ্ডন করে দিয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তখন বাধ্য হয়ে তারা সেই সময়ের খলীফাকে যাকাত প্রদান করেছে যেমন তারা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে প্রদান করতো। এমন কি আবু বকর (রাঃ) ঘোষণা করেছিলেনঃ “যদি তারা যাকাতের মালের একটি উষ্ট্রীর বাচ্চা বা রঞ্জুর একটা খণ্ডও আদায় করা থেকে বিরত থাকে তবুও আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো।”

আল্লাহ পাকের উক্তি (আরবী) অর্থাৎ “হে নবী (সঃ)! তুমি তাদের জন্যে দুআ কর এবং ক্ষমা প্রার্থনা কর।” যেমন সহীহ মুসলিমে আব্দুল্লাহ ইবনে আবি আওফা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, যখন কারো কাছে যাকাতের মাল আসতো তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) আল্লাহ তা’আলার নির্দেশ অনুযায়ী তার জন্যে দুআ করতেন। আমার পিতা যখন যাকাতের মাল পেশ করলেন তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) দুআ করলেনঃ “হে আল্লাহ! আবূ আওফার (রাঃ) বংশধরের উপর দয়া করুন।” অন্য একটি হাদীসে আছে যে, একটি স্ত্রীলোক বলেঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমার জন্যে ও আমার স্বামীর জন্যে দুআ করুন।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বললেনঃ “আল্লাহ তোমার উপর ও তোমার স্বামীর উপর রহম করুন।”

আল্লাহ তাআলার উক্তি- (আরবী) অর্থাৎ “নিশ্চয়ই তোমার দুআ হচ্ছে তাদের জন্যে শান্তির কারণ।” কেউ কেউ (আরবী) কে বহুবচন করে (আরবী) পড়েছেন। আবার অন্যেরা একবচন ধরে পড়েছেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, (আরবী) শব্দের অর্থ হচ্ছে রহমত। আর কাতাদা (রঃ) বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে (আরবী) বা পদমর্যাদা।

(আরবী) অর্থাৎ হে নবী! তোমার দুআ আল্লাহ শ্রবণকারী (আরবী) অর্থাৎ (হে নবী সঃ)! কে তোমার দুআ’র দাবীদার তা আল্লাহ খুব ভালই জানেন।

মুসনাদে আহমাদে রয়েছে- ওয়াকী (রঃ) ইসনাদসহ বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সঃ) যখন কারো জন্যে দুআ করতেন তখন তা তার পক্ষে, তার পুত্রদের পক্ষে এবং তার পৌত্রদের পক্ষে ককূল হয়ে যেতো। আবূ নাঈম (রঃ) হতে ইসনাদসহ বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ)-এর দুআ’ কোন মানুষের পক্ষে, তার পুত্রদের পক্ষে এবং তার পৌত্রদের পক্ষে অবশ্যই ককূল হয়ে যেতো। আল্লাহ তা’আলার উক্তিঃ (আরবী) অর্থাৎ তারা কি এটা অবগত নয় যে, আল্লাহই নিজ বান্দাদের তাওবা কবুল করেন, আর তিনিই দান-খয়রাত কবূল করে থাকেন? এর উদ্দেশ্য হচ্ছে তাওবা ও দান খয়রাতের উপর মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। কেননা এ দুটোই মানুষ থেকে পাপকে সরিয়ে দেয় এবং নাফরমানী নিশ্চিহ্ন করে দেয়। আল্লাহ তাআলা খবর দিয়েছেন যে, যে তাঁর কাছে তাওবা পেশ করে তিনি তার সেই তাওবা কবুল করে থাকেন। যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে একটি খণ্ডও সাদকা করে, আল্লাহ সেটা তার ডান হাতে গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি ওটাকে সাদকাকারীর জন্যে বিনিয়োগ করতে থাকেন এবং ছোট থেকে বড় করে দেন। শেষ পর্যন্ত সাদকার ঐ একটি মাত্র খেজুর উহুদ পাহাড়ের মত হয়ে যায়। যেমন এই হাদীসেই রাসূলুল্লাহ (সঃ) হতে বর্ণিত আছে এবং যেমন ওয়াকী (রঃ) ইসনাদসহ আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তা’আলা সাদকা কবুল করে থাকেন এবং ওটাকে নিজের দক্ষিণ হস্তে গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি ওটাকে বড় করতে থাকেন, যেমন তোমরা ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন পালন করে বড় করে থাকো। শেষ পর্যন্ত সাদকার এক লুকমাও উহুদ পাহাড় হয়ে যায়। আল্লাহর কিতাবের দ্বারাও এর সত্যতা প্রমাণিত হয়। মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ “তারা কি জানে না যে, আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের তাওবা কবুল করে থাকেন এবং যাকাত ও সাদকাও নিয়ে থাকেন?” মহান আল্লাহ অন্য জায়গায় বলেন: (আরবী) অর্থাৎ “আল্লাহ সুদকে বরবাদ করে দেন এবং যাকাতকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেন।” (২:২৭৬)

সাওরী (রঃ) ইসনাদসহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, সাদকার মাল ভিক্ষুকের হাতে পড়ার পূর্বেই আল্লাহর হাতে পড়ে যায়। অতঃপর আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) আল্লাহ তা’আলার (আরবী) -এ উক্তিটি পাঠ করেন।

ইবনে আসাকির (রঃ) স্বীয় ইতিহাসের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনুশ শাইর আসসাকীর (রঃ) ইতিহাসকে অন্তর্ভুক্ত করে (যিনি দেমাকী ছিলেন, কিন্তু তার প্রকৃত দেশ ছিল হিমস এবং তিনি ফকীহদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন) বর্ণনা করেছেন যে, মুআবিয়া (রাঃ) -এর যুগে জনগণ জিহাদে গমন করেন, যাঁদের নেতা ছিলেন আব্দুর রহমান ইবনে খালিদ ইবনে ওয়ালীদ (রাঃ)। তখন একজন মুসলিম গনীমতের মালের মধ্য থেকে একশ দীনার (স্বর্ণমদ্রা) আত্মসাৎ করে । অতঃপর যখন সেনাবাহিনী ফিরে যায় এবং লোকেরা নিজ নিজ বাড়ীতে গমন করে তখন ঐ (আত্মসাৎকারী) মুসলিমটি খুবই লজ্জিত হয়। সে তখন ঐ দীনারগুলো সেনাপতির কাছে পৌঁছিয়ে দিতে যায়। কিন্তু সেনাপতি ওগুলো নিতে অস্বীকার করেন এবং বলেনঃ “সৈন্যরা তো নিজ নিজ বাড়ী চলে গেছে যাদের মধ্যে এগুলো বণ্টন করা যেতো। সুতরাং আমিতো এখন এগুলো নিতে পারি না। এগুলো তুমি কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে পেশ করবে।” লোকটি তখন সাহাবীদের প্রত্যেককে জিজ্ঞেস করতে থাকে। কিন্তু সবাই ঐ কথাই বলে। সে তখন দামেস্ক আসে এবং মুআবিয়া (রাঃ)-কে তা কবূল করতে বলে। কিন্তু তিনিও তা কবূল করতে অস্বীকার করেন। সে সেখান থেকে কাঁদতে কাঁদতে ফিরে আসে এবং আব্দুল্লাহ ইবনুশ শাইর আসসাকীর (রঃ) পার্শ্ব দিয়ে গমন করে। তিনি তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “কাঁদছো কেন?” উত্তরে সে সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করে এবং বলে যে, কোন আমীরই তার আত্মসাৎকৃত একশ’টি দীনার গ্রহণ করলেন না। তখন আব্দুল্লাহ (রঃ) তাকে বললেনঃ “তুমি আমার কথা শুনবে কি?” সে উত্তর দিলোঃ “হ্যা অবশ্যই।” তিনি বললেনঃ “তুমি মুআবিয়া (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে বল-বায়তুল মালের হক এক পঞ্চমাংশ আপনি নিয়ে নিন। সুতরাং বিশ দীনার তাকে দিয়ে দাও। আর অবশিষ্ট আশি দীনার ঐ সৈন্যদের পক্ষ থেকে খয়রাত করে দাও যারা এর হকদার ছিল। কেননা, আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদের তাওবা কবুল করে থাকেন। তিনি ঐ সৈন্যদের নাম, বাসস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফ হাল। তিনি তাদেরকে এর সাওয়াব পৌছিয়ে দিবেন।” ঐ লোকটি তখন এই কাজই করলো। মুআবিয়া (রাঃ) বললেনঃ “আমি যদি তাকে এই ফতওয়া দিতাম তবে এটা আমার কাছে আমার সাম্রাজ্যের চাইতেও প্রিয় ছিল। তিনি খুব সুন্দর তদবীর বাতলিয়ে দিয়েছেন।”

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

এটা সাধারণ আদেশ। স্বাদাক্বাহ থেকে উদ্দেশ্য ফরযকৃত স্বাদাক্বাহ অর্থাৎ যাকাত হতে পারে, আবার নফল স্বাদাক্বাহও হতে পারে। এখানে নবী (সাঃ)-কে আদেশ দেওয়া হচ্ছে যে, স্বাদাক্বাহ দ্বারা তুমি মুসলিমদেরকে পবিত্র কর। এতে এই কথা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, যাকাত ও স্বাদাক্বাহ মানুষের আখলাক-চরিত্রকে পবিত্র করার একটি বড় উপায়। এ ছাড়া স্বাদাক্বাহ কে স্বাদাক্বাহ এই জন্য বলা হয় যে, স্বাদাক্বাহ দাতা নিজের ঈমানের দাবীতে সত্যবাদী। দ্বিতীয় বিষয় এটাও বুঝা যাচ্ছে যে, স্বাদাক্বাহ উসুলকারীর উচিত, স্বাদাক্বাহদাতার জন্য দু’আ করা। যেমন এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা নিজ পয়গম্বর (সাঃ)-কে দু’আ করার আদেশ দিয়েছেন এবং নবী (সাঃ) উক্ত আদেশ অনুযায়ী দু’আ করতেন। এই সাধারণ আদেশ থেকে এটাও দলীল নেওয়া হয়েছে যে, যাকাত উসূল করার দায়িতত্ত্ব সমসাময়িক বাদশা বা শাসকের। যদি কেউ তা প্রদান করতে অস্বীকার করে, তবে আবু বাকর (রাঃ) ও সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ)গণের আমল অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে জিহাদ করা অপরিহার্য। (ইবনে কাসীর)

‘তিনিই দান-খয়রাত বা স্বাদাক্বাহ গ্রহণ করেন’ (এই শর্তের উপর যে তা হালাল উপার্জন থেকে হতে হবে) এর অর্থ হল তা বৃদ্ধি করেন। যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে; নবী (সাঃ) বলেছেন “যে ব্যক্তি (তার) বৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ থেকে একটি খেজুর পরিমাণও কিছু দান করে — আর আল্লাহ তো বৈধ অর্থ ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণই করেন না — সে ব্যক্তির ঐ দানকে আল্লাহ ডান হাতে গ্রহণ করেন। অতঃপর তা ঐ ব্যক্তির জন্য লালন-পালন করেন; যেমন তোমাদের কেউ তার অশ্ব-শাবককে লালন-পালন করে থাকে। পরিশেষে তা পাহাড়ের মত হয়ে যায়।” (বুখারী১৪১০নং, মুসলিম ১০১৪নং)

তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-

[১] মুফাসসিরগণ এ সাদকার প্রকৃতি নির্ধারণ নিয়ে দুটি মত দিয়েছেন। কারও কারও মতে, এ আয়াতে পূর্ববর্তী আয়াতে যাদের তাওবাহ কবুল করা হয়েছে তাদের সদকা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। সেটা ফরয বা নফল যে কোন সদকা হতে পারে। [ফাতহুল কাদীর] এ মতের সমর্থনে ইবন আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত আছে যে, যখন পূর্বোক্ত লোকদের তাওবা কবুল করা হয়, তখন তারা তাদের সম্পদ নিয়ে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এগুলো আমাদের সম্পদ, এগুলো গ্রহণ করে আমাদের পক্ষ থেকে সদকা দিন এবং আমাদের জন্য ক্ষমার দো’আ করুন। তিনি বললেন, আমাকে এর নির্দেশ দেয়া হয়নি। তখন এ আয়াত নাযিল হয়। [আত-তাফসীরুস সহীহ] তবে অধিকাংশের মতে, নির্দেশটি ব্যাপক, সবার জন্যই প্রযোজ্য। তবে সেটা ফরয সদকা বা যাকাতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। [ফাতহুল কাদীর] এ মতের সমর্থনে বেশ কিছু হাদীস রয়েছে, যাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকাত প্রদানকারীদের জন্য দোআ করেছেন।

[২] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ নির্দেশ মোতাবেক সাহাবীদের মধ্যে কেউ যাকাত নিয়ে আসলে তাদের পরিবারের জন্য দোআ করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আবি আওফা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে কোন সম্প্রদায়ের লোকেরা যাকাত নিয়ে আসলে তিনি বলতেন, আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা আলে ফুলান’। (হে আল্লাহ! অমুকের বংশধরের জন্য সালাত প্রেরণ করুন) অতঃপর আমার পিতা তার কাছে যাকাত নিয়ে আসলে তিনি দো’আ করলেন, আল্লাহুম্মা সাল্লে ‘আলা আলে আবি আওফা”। (হে আল্লাহ! আৰু আওফার বংশধরের জন্য সালাত প্রেরণ করুন) [বুখারী: ১৪৯৭] অন্য বর্ণনায় এসেছে, জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক মহিলা এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি আমার ও আমার স্বামীর জন্য দোআ করুন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সাল্লাল্লাহু আলাইকে ওয়া ‘আলা যাওজিকে (আল্লাহ তোমার ও তোমার স্বামীর জন্য সালাত প্রেরণ করুন)। [আবু দাউদ: ১৫৩৩]

হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন তার সম্পূর্ণ পবিত্র সম্পদ থেকে কোন একটি খেজুর সদকা করে তখন সেটি আল্লাহ নিজ ডান হাতে গ্রহণ করেন, তারপর সেটা আল্লাহর হাতে এমনভাবে বেড়ে উঠে যে পাহাড়ের মত প্রকাণ্ড হয়ে পড়ে।’ [মুসলিম: ১০১৪]

Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 103-104
خُذۡ مِنۡ اَمۡوَالِہِمۡ صَدَقَۃً
The Command to collect the Zakah,
The Command to collect the Zakah and Its Benefits

Allah says;

خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا

Take Sadaqah from their wealth in order to purify them and sanctify them with it,

Allah commanded His Messenger to take Sadaqah from the Muslims’ money to purify and sanctify them with it.

This Ayah is general, even though some said that it refers specifically to those who mixed good and evil deeds, who admitted to their errors.

Some Bedouin later thought that paying Zakah to the Leader was not legislated except to the Messenger himself, using this Ayah as evidence,
خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً
(Take Sadaqah from their wealth). Abu Bakr As-Siddiq and other Companions refuted this ill comprehension and fought against them until they paid the Zakah to the Khalifah, just as they used to pay it to the Messenger of Allah.

As-Siddiq said, “By Allah! If they abstain from paying a bridle that they used to pay to the Messenger of Allah, I will fight them for refraining from paying it.”

Allah’s statement,

وَصَلِّ عَلَيْهِمْ

and Salli for them,

means, supplicate for them, and ask Allah to forgive them.

In the Sahih, Muslim recorded that Abdullah bin Abi Awfa said,

“Whenever the Prophet was brought charity, he used to invoke Allah for those who brought it. My father also brought his charity and the Prophet said,

اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى الِ أَبِي أَوْفَى

O Allah! I invoke You for the family of Abu Awfa.”

Allah’s statement,

إِنَّ صَلَتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ

Verily, your Salat are a Sakan for them,

means, a mercy for them, according to Ibn Abbas.

Allah said next,

وَاللّهُ سَمِيعٌ

and Allah is All-Hearer,

of your invocation (O Muhammad),

عَلِيمٌ

All-Knower.

in those who deserve your invocation on their behalf, who are worthy of it.

Allah said.

أَلَمْ يَعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ هُوَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَأْخُذُ الصَّدَقَاتِ

Know they not that Allah accepts repentance from His servants and accepts the Sadaqat,

This Ayah encourages reverting to repentance and giving charity, for each of these actions erases, deletes and eradicate sins.

Allah states that He accepts the repentance of those who repent to Him, as well as charity from pure resources, for Allah accepts it with His Right Hand and raises it for its giver until even a date becomes as large as Mount Uhud.

Abu Hurayrah narrated that the Messenger of Allah said,

إِنَّ اللهَ يَقْبَلُ الصَّدَقَةَ وَيَأْخُذُهَا بِيَمِينِهِ فَيُرَبِّيهَا لاَِحَدِكُمْ كَمَا يُرَبِّي أَحَدُكُمْ مُهْرَهُ حَتَّى إِنَّ اللُّقْمَةَ لَتَكُونُ مِثْلَ أُحُد

Verily, Allah accepts charity, receives it in His Right Hand and develops it for its giver, just as one of you raises his pony, until the bite (of food) becomes as large as Uhud.

The Book of Allah, the Exalted and Most Honored, testifies to this Hadith,

أَلَمْ يَعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ هُوَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَأْخُذُ الصَّدَقَاتِ

Know they not that Allah accepts repentance from His servants and accepts the Sadaqat.

and,

يَمْحَقُ اللَّهُ الْرِّبَواْ وَيُرْبِى الصَّدَقَـتِ

Allah will destroy Riba and will give increase for Sadaqat. (2:276)

Abdullah bin Mas`ud said,

“Charity falls in Allah’s Hand before it falls in the needy’s hand,”

he then recited this Ayah,

أَلَمْ يَعْلَمُواْ أَنَّ اللَّهَ هُوَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَأْخُذُ الصَّدَقَـتِ

(Know they not that Allah accepts repentance from His servants and accepts the Sadaqat).

وَأَنَّ اللّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ

and that Allah alone is the One Who forgives and accepts repentance, Most Merciful!

Leave a Reply