أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
(Book# 638)[তুমি বলে দাও, তোমরা কাজ করতে থাক!]
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
১০৫ নং আয়াত:-
وَقُلِ اعْمَلُواْ
তুমি বলে দাও, তোমরা কাজ করতে থাক!
Say “Do deeds”!
وَ قُلِ اعۡمَلُوۡا فَسَیَرَی اللّٰہُ عَمَلَکُمۡ وَ رَسُوۡلُہٗ وَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ؕ وَ سَتُرَدُّوۡنَ اِلٰی عٰلِمِ الۡغَیۡبِ وَ الشَّہَادَۃِ فَیُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۰۵﴾ۚ
তুমি বলে দাও, তোমরা কাজ করতে থাক। অচিরেই তোমাদের কার্যকলাপ আল্লাহ দেখবেন এবং তাঁর রসূল ও বিশ্বাসীগণও দেখবে।আর অচিরেই তোমাদেরকে অদৃশ্য ও প্রকাশ্য বিষয়ের জ্ঞাতা (আল্লাহর) দিকে প্রত্যাবর্তিত করা হবে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তোমাদের সকল কৃতকর্ম জানিয়ে দেবেন।’
And say, “Do [as you will], for Allah will see your deeds, and [so, will] His Messenger and the believers. And you will be returned to the Knower of the unseen and the witnessed, and He will inform you of what you used to do.”
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
এখানে মিথ্যা ঈমানের দাবীদার ও গোনাহগার মু’মিনের পার্থক্য, পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। যে ব্যক্তি ঈমানের দাবী করে, কিন্তু আসলে আল্লাহ, তাঁর রসূল ও মুমিদের জামায়াতের ব্যাপারে আন্তরিক নয়, তার এ আন্তরিকতাহীনতার প্রমাণ যদি তার কার্যকলাপের মাধ্যমে পাওয়া যায়, তাহলে তার সাথে কঠোর ব্যবহার করা হবে। আল্লাহর পথে ব্যয় করার জন্য সে কোন সম্পদ পেশ করলে তা প্রত্যাখ্যান করা হবে। সে মারা গেলে কোন মুসলমান তার জানাযার নামায পড়বে না এবং তার গোনাহ মাফের জন্য দোয়াও করবে না, সে তার বাপ বা ভাই হলেও। অন্যদিকে যে ব্যক্তি সত্যিকার মু’মিন কিন্তু এ সত্ত্বেও সে এমন কিছু কাজ করে বসেছে যা তার আন্তরিকাতাহীনতার প্রমাণ করে, এক্ষেত্রে সে যদি নিজের ভুল স্বীকার করে নেয় তাহলে তাকে মাফ করে দেয়া হবে। তার সদকা, দান-খয়রাত গ্রহণ করা হবে এবং তার ওপর রহমত নাযিলের জন্য দোয়াও করা হবে। এখন কোন ব্যক্তির আন্তরিকতাবিহীন কার্যকলাপের পরও তাকে নিছক একজন গোনাহগার মু’মিন গণ্য করতে হলে তাকে তিনটি মানদণ্ডে যাচাই করতে হবে। আলোচ্য আয়াতে বর্ণিত এ মানদণ্ডগুলোর নিম্নরূপঃ
(১) নিজের ভুলের জন্য সে খোঁড়া অজুহাত ও মনগড়া ব্যাখ্যা পেশ করবে না। বরং যে ভুল হয়ে গেছে সহজ সরলভাবে তা মেনে নেবে।
(২) তার আগের কার্যকলাপ দেখা হবে। সে আন্তরিকতাহীনতার দাগী ও অপরাধী কিনা তা যাচাই করা হবে। যদি আগে সে ইসলামের জামায়াতের এক সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে থাকে এবং তার জীবনের সমস্ত কার্যকলাপে আন্তরিক সেবা, ত্যাগ, কুরবানী ও ভালো কাজে অগ্রবর্তী থাকার রেকর্ড থেকে থাকে, তাহলে ধরে নেয়া হবে যে, বর্তমানে যে ভুল সে করেছে তা ঈমান ও আন্তরিকতাহীনতার ফল নয় বরং তা নিছক সাময়িক সৃষ্ট একটি দুর্বলতা বা পদস্খলন ছাড়া আর কিছুই নয়।
(৩) তার ভবিষ্যত কার্যকলাপের ওপর নজর রাখা হবে। দেখতে হবে, তার ভুলের স্বীকৃতি কি নিছক মৌখিক, না তার মধ্যে লজ্জার গভীর অনুভূতি রয়েছে। যদি নিজের ভুল সংশোধনের জন্য তাকে অস্থির ও উৎকণ্ঠিত দেখা যায় এবং তার প্রতিটি কথা থেকে এ কথা প্রকাশ হয় যে, তার জীবনে যে ঈমানী ত্রুটির চিত্র ভেসে উঠেছিল তাকে মুছে ফেলার ও তা সংশোধন করার জন্য সে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তাহলে সে যথার্থই লজ্জিত হয়েছে বলে মনে করা হবে। এ লজ্জা ও অনুশোচনাই হবে তার ঈমান ও আন্তরিকতার প্রমাণ।
মুহাদ্দিসগণ এ আয়াতগুলো নাযিলের পটভূমী হিসেবে যে ঘটনা বর্ণনা করেছেন তা থেকে এ বিষয়বস্তুটি আয়নার মতো স্বচ্ছ হয়ে ওঠে। তাঁরা বলেন, এ আয়াতগুলো আবু লুবাবাহ ইবনে আবদুল মুনযির ও তাঁর ছজন সাথীর প্রসঙ্গে নাযিল হয়েছিল। হিজরতের আগে আকাবার বাইআতের সময় যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন আবু লুবাবাহ ছিলেন তাদের একজন। বদর, ওহোদ ও অন্যান্য যুদ্ধে তিনি বরাবর অংশ গ্রহণ করেন। কিন্তু তাবুক যুদ্ধের সময় মানসিক দুর্বলতার তার ওপর প্রধান্য বিস্তার করে এবং কোন প্রকার শরয়ী ওযর ছাড়াই তিনি ঘরে বসে থাকেন। তার অন্য সাথীরাও ছিলেন তারই মতো আন্তরিকতা সম্পন্ন। তারাও এ একই প্রকার দুর্বলতার শিকার হন। নবী (সা.) যখন তাবুক যুদ্ধ থেকে ফিরে এলেন এবং যারা পিছনে থেকে গিয়েছিল তাদের সম্পর্কে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের মতামত কি তা তারা জানতে পারলেন তখন তারা ভীষণভাবে অনুতপ্ত হলেন। কোন প্রকার জিজ্ঞাসাবাদের আগেই তারা নিজেদেরকে একটি খুঁটির সাথে বেঁধে নেন এবং বলেন, আমাদের মাফ না করে দেয়া পর্যন্ত আমাদের জন্য আহার নিদ্রা হারাম। এ অবস্থায় আমাদের প্রাণ বায়ু বের হয়ে গেলেও আমরা তার পরোয়া করবো না। কয়েক দিন পর্যন্ত এভাবেই তারা বাঁধা অবস্থায় অনাহার অনিদ্রায় কাটান। এমনকি একদিন তারা বেহুশ হয়ে পড়ে যান। শেষে তাদের জানানো হলো, আল্লাহ ও তাঁর রসূল তোমাদের মাফ করে দিয়েছেন। তারা নবী (সা.) কে বলেন, ঘরের যে আরাম আয়েশ আমাদের ফরয থেকে গাফেল করে দিয়েছিল তা এবং নিজেদের সমস্ত ধন-সম্পদ আমরা আল্লাহর পথে দান করে দেবো, এটাও আমাদের তাওবার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু নবী (সা.) বলেন, সমস্ত ধন-সম্পদ দান করে দেবার দরকার নেই, শুধুমাত্র এক তৃতীয়াংশই যথেষ্ট। তদনুসারে তখনই তারা সেগুলো আল্লাহর পথে ওয়াকফ করে দেন। এ ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলে পরিষ্কার জানা যায়, কোন ধরনের দুর্বলতা আল্লাহ মাফ করেন। উল্লিখিত মহান সাহাবীগণ এ ধরনের আন্তরিকতাহীন আচরণে অভ্যস্ত ছিলেন না। বরং তাদের বিগত জীবনের কার্যকলাপ তাদের ঈমানী নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও দৃঢ়তার দৃষ্টান্তে পরিপূর্ণ ছিল। এবারেও রসূল ﷺ এর নিকট তাদের কেউ মিথ্যা অজুহাত পেশ করেননি। বরং নিজেদের ভুলকে নিজেরাই অকপটে ভুল হিসেবে স্বীকৃতি দেন। তাঁরা ভুলের স্বীকারোক্তি সহকারে নিজেদের কার্য ধারার মাধ্যমে একথা প্রমাণ করে দিয়েছের যে, তারা যথার্থই লজ্জিত হয়েছেন এবং নিজেদের গোনাহ মাফ করাবার জন্য অত্যন্ত অস্থির ও উদ্ধিগ্ন।
এখানে আলোচ্য আয়াতটিতে আর একটি মূল্যবান কথা বলা হয়েছে। সে কথাটি হচ্ছে, গোনাহ মাফের জন্য মুখ ও অন্তর দিয়ে তাওবা করার সাথে সাথে বাস্তব কাজের মাধ্যমেও তাওবা করতে হবে। আর আল্লাহর পথে ধন-সম্পদ দান করা হচ্ছে বাস্তব তাওবার একটি পদ্ধতি। এভাবে নফসের মধ্যে যে দূষিত ময়লা আবর্জনা লালিত হচ্ছিল এবং যার কারণে মানুষ গোনাহে লিপ্ত হয়েছিল তা দূর হয়ে যায় এবং ভালো ও কল্যাণের দিকে ফিরে যাবার যোগ্যতা বেড়ে যায়। গোনাহ করার পর তা স্বীকার করার ব্যাপারটি এমন যেমন এক ব্যক্তি গর্তের মধ্যে পড়ে যায় এবং নিজের পড়ে যাওয়াটা সে অনুভব করতে পারে। তারপর নিজের গোনাহের ওপর তার লজ্জিত হওয়াটা এ অর্থ বহন করে যে, এ গর্তকে সে নিজের অবস্থানের জন্য বড়ই খারাপ জায়গা মনে করে এবং
চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রতিটি বিষয় সম্পূর্ণরূপে স্বয়ং আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত। আর আল্লাহ এমন এক সত্তা যার কাছে কোন কিছু গোপন থাকতে পারে না। এ জন্য কোন ব্যক্তি দুনিয়ায় তার ভন্ডামী ও মুনাফিকী গোপন করতে সক্ষমও হয় এবং মানুষ যেসব মানদণ্ডে কারোর ঈমান ও আন্তরিকতা পরখ করতে পারে সেসবগুলোতে পুরোপুরি উত্তির্ণ হলেও একথা মনে করা উচিত নয় যে, সে মুনাফিকীর শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে গেছে।
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
(وَقُلِ اعْمَلُوا فَسَيَرَي اللّه عَمَلَكُمْ)
‘আর বল: ‘তোমরা কর্ম করতে থাকো; আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ করবেন’- মুজাহিদ (রাঃ) বলেন: এটা আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণকারীদের জন্য ভীতিপ্রদর্শন যে তাদের কার্যাবলী আল্লাহ তা‘আলার সামনে পেশ করা হবে। আর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও মু’মিনদের মধ্যে তাদের কাজ প্রকাশিত হয়ে পড়বে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(يَوْمَئِذٍ تُعْرَضُوْنَ لَا تَخْفٰي مِنْكُمْ خَافِيَةٌ)
“সেই দিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে এবং তোমাদের কিছুই গোপন থাকবে না। (সূরা হাককাহ: ৬৯/১৮)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(يَوْمَ تُبْلَي السَّرَآئِرُ)
“যেদিন গোপন বিষয়সমূহ প্রকাশ করা হবে” (সূরা তারেক: ৮৫/৯)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: তোমাদের কেউ যদি দরজা ও ছিদ্রহীন কোন শক্ত পাথরের মধ্যে গোপনে কোন কাজ করে তবুও আল্লাহ ওটাকে লোকেদের সামনে এমনভাবে প্রকাশ করবেন যেন সে ঐসব কাজ তাদের সামনেই করেছে। (আহমাদ: ৩য় খণ্ড, ২৮পৃঃ)
ইমাম বুখারী (রাঃ) বলেন; আয়িশাহ বলেন: যদি কোন মুসলিম ব্যক্তির ভাল আমল তোমাকে মুগ্ধ করে তাহলে বল:
(اعْمَلُوْا فَسَيَرَي اللّٰهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُوْلُهُ وَالْمُؤْمِنُوْنَ)
‘‘তোমরা কর্ম করতে থাকো; আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং মু’মিনগণ তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ করবেন’। (সহীহ বুখারী ,তাওহীদ অধ্যায় ৪৬ নং অনুচ্ছেদ)
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
মুজাহিদ (রঃ)-এর উক্তি এই যে, এটা আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণকারীদের জন্যে ভীতি প্রদর্শন যে, তাদের কার্যাবলী আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলার সামনে পেশ করা হবে। আর রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও মুমিনদের মধ্যেও তাদের কার্য প্রকাশিত হয়ে পড়বে। কিয়ামতের দিন এটা অবশ্যই হবে। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “সেই দিন (কিয়ামতের দিন) তোমাদের কোন গোপন বিষয়ও গোপন থাকবে না।” (৬৯:১৮) অন্য জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ অর্থাৎ “যেই দিন সকলের গুপ্ত বিষয় প্রকাশ হয়ে যাবে।” (৮৬:৯) আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আর যা কিছু অন্তরসমূহের মধ্যে রয়েছে তা প্রকাশ হয়ে পড়বে।” (১০০:১০) দুনিয়ার লোক তা জেনে নিবে। যেমন ইমাম আহমাদ (রঃ) বলেন- হাসান ইবনে মূসা (রঃ) আবু সাঈদ (রাঃ) হতে মারফু রূপে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের কেউ যদি দরযা ও ছিদ্র বিহীন কোন শক্ত পাথরের মধ্যে গোপনে কোন কাজ করে তবুও আল্লাহ তা’আলা ওটাকে লোকদের সামনে এমনভাবে প্রকাশ করে দিবেন যে, যেন সে ঐ কাজ তাদের সামনেই করেছে। হাদীসে এসেছে যে, জীবিতদের আমলগুলো তাদের মৃত বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এবং গোত্রীয় লোকদের সামনে পেশ করা হয়, যারা আলমে বারযাখে রয়েছে।
সাতাত ইবনে দীনার (রঃ) হাসান (রঃ) হতে এবং তিনি জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের আমলগুলো তোমাদের মৃত আত্মীয়-স্বজন ও গোত্রীয় লোকদের কবরে পেশ করা হয়। আমলগুলো ভাল হলে তারা খুশী হয়। আর সেগুলো খারাপ হলে তারা বলেঃ “হে আল্লাহ! তাদেরকে আপনার অনুগত হওয়ার তাওফীক প্রদান করুন।” (এ হাদীসটি আবু দাউদ তায়ালেসী (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
সুফইয়ান (রঃ) আনাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন যে, নবী (সঃ) বলেছেন, তোমাদের আমলগুলো তোমাদের মৃত আত্মীয়-স্বজন ও গোত্রীয় লোকদের সামনে পেশ করা হয় । আমলগুলো ভাল হলে ঐ মৃত লোকগুলো খুশী হয়। আর সেগুলো ভাল না হলে তারা বলেঃ “হে আল্লাহ! আপনি তাদেরকে মৃত্যু মুখে পতিত করবেন না যে পর্যন্ত না তারা ঐ রূপ হিদায়াত লাভ করে যেরূপ হিদায়াত আপনি আমাদেরকে দান করেছেন।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)
ইমাম বুখারী (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, আয়েশা (রাঃ) বলেন, যখন তোমরা কোন মুসলিমের নেক আমলে সন্তুষ্ট হও তখন তাদেরকে বলঃ “তোমরা আমল করে যাও, অনন্তর তোমাদের আমল অচিরেই আল্লাহ, তাঁর রাসূল (সঃ) এবং মুমিনগণ দেখে নিবেন।” এ ধরনের আর একটি হাদীস এসেছে, ইমাম আহমাদ (রঃ) বলেন, ইসনাদসহ আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমরা কারো ভাল আমল দেখে খুশী হয়ো না, বরং অপেক্ষা কর, তার সমাপ্তি ভাল আমলের উপর হচ্ছে কি না। কেননা, একজন আমলকারী দীর্ঘদিন পর্যন্ত নেক আমল করতে থাকে এবং ঐ নেক আমলের উপর মারা গেলে সে জান্নাতে চলে যেতো। কিন্তু হঠাৎ করে তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটে যায় এবং সে খারাপ আমল করতে শুরু করে। আর এক বান্দা এরূপই হয় যে, কিছুকাল ধরে সে খারাপ আমল করতে থাকে। ঐ আমলের উপর মারা গেলে নিশ্চিতরূপে সে জাহান্নামে চলে যেতো। কিন্তু অকস্মাৎ তার কার্য পরিবর্তন হয়ে যায় এবং সে ভাল আমল করতে শুরু করে। আল্লাহ যখন কোন বান্দার প্রতি কল্যাণের ইচ্ছা করেন তখন মৃত্যুর পূর্বে তিনি তাকে পুণ্য লাভের তাওফীক দান করেন এবং সে ঐ পুণ্যের উপরই মৃত্যুবরণ করে।” জনগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! এটা কিরূপে হয়?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “তাকে ভাল কাজের তাওফীক দান করা হয়, তারপর তার রূহ কবয করা হয়।” (এ হাদীসটি এই ধারায় ইমাম আহমাদ (রঃ) একাকী বর্ণনা করেছেন)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
يرى এর অর্থ হল দেখা ও জানা। অর্থাৎ তোমাদের কর্ম শুধু আল্লাহ তাআলাই দেখেন না; বরং সে বিষয়ে (অহী দ্বারা) আল্লাহর রসূল (সাঃ) এবং মু’মিনগণও অবগত হন। (এ কথা মুনাফিক্বদের ব্যাপারেই বলা হচ্ছে।) এই শ্রেণীর আয়াত পূর্বেও (৯৪ নম্বরে) উক্ত হয়েছে। এখানে ঈমানদারদের কথা অতিরিক্ত ব্যক্ত হয়েছে। আল্লাহর রসূল (সাঃ)-এর খবর দেওয়াতে তারাও মুনাফিকদের (মুনাফিকি) আমল জানতে পারে।
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 105
وَقُلِ اعْمَلُواْ
Say “Do deeds”!
Warning the Disobedient
Allah says;
وَقُلِ اعْمَلُواْ فَسَيَرَى اللّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُ وَالْمُوْمِنُونَ وَسَتُرَدُّونَ إِلَى عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّيُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
And say “Do deeds! Allah will see your deeds, and (so will) His Messenger and the believers. And you will be brought back to the All-Knower of the unseen and the seen. Then He will inform you of what you used to do.”
Mujahid said that;
this Ayah carries a warning from Allah to those who defy His orders. Their deeds will be shown to Allah, Blessed and Most Honored, and to the Messenger and the believers. This will certainly occur on the Day of Resurrection, just as Allah said,
يَوْمَيِذٍ تُعْرَضُونَ لَا تَخْفَى مِنكُمْ خَافِيَةٌ
That Day shall you be brought to Judgement, not a secret of you will be hidden. (69:18)
يَوْمَ تُبْلَى السَّرَايِرُ
The Day when all the secrets will be examined. (86:9)
and,
وَحُصِّلَ مَا فِى الصُّدُورِ
And that which is in the breasts (of men) shall be made known. (100:10)
Allah might also expose some deeds to the people in this life.
Al-Bukhari said that Aishah said,
“If the good deeds of a Muslim person please you, then say,
اعْمَلُواْ فَسَيَرَى اللّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُ وَالْمُوْمِنُونَ
Do deeds! Allah will see your deeds, and (so will) His Messenger and the believers.”
There is a Hadith that carries a similar meaning.
Imam Ahmad recorded that Anas said that the Messenger of Allah said,
لَاا عَلَيْكُمْ أَنْ تُعْجَبُوا بِأَحَدٍ حَتَّى تَنْظُرُوا بِمَ يُخْتَمُ لَهُ فَإِنَّ الْعَامِلَ يَعْمَلُ زَمَانًا مِنْ عُمْرِهِ أَوْ بَــرهَةً مِنْ دَهْرِهِ بِعَمَلٍ صَالِحٍ لَوْ مَاتَ عَلَيْهِ دَخَلَ الْجَنَّةَ ثُمَّ يَتَحَوَّلُ فَيَعْمَلُ عَمَلًا سَيِّيًا
وَإِنَّ الْعَبْدَ لَيَعْمَلُ الْبُرْهَةَ مِنْ دَهْرِهِ بِعَمَلٍ سَيِّءٍ لَوْ مَاتَ عَلَيْهِ دَخَلَ النَّارَ ثُمَّ يَتَحَوَّلُ فَيَعْمَلُ عَمَلًإ صَالِحًا وَإِذَا أَرَادَ اللهُ بِعَبْدِهِ خَيْرًا اسْتَعْمَلَهُ قَبْلَ مَوْتِه
Do not be pleased with someone’s deeds until you see what his deeds in the end will be like. Verily, one might work for some time of his life with good deeds, so that if he dies while doing it, he will enter Paradise. However, he changes and commits evil deeds.
one might commit evil deeds for some time in his life, so that if he dies while doing them he will enter the Fire. However, he changes and performs good deeds. If Allah wants the good of a servant He employs him before he dies.
He was asked, “How would Allah employ him, O Allah’s
Messenger!” He said,
يُوَفِّقُهُ لِعَمِلٍ صَالِحٍ ثُمَّ يَقْبِضُهُ عَلَيْه
He directs him to perform good deeds and takes his life in that condition.
Only Imam Ahmad collected this Hadith.