(Book# 658) [ وَ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ তারা বলে, ‘তার রবের কাছ থেকে তার কাছে কোন নিদর্শন নাযিল হয় না কেন? They say, “Why is a sign not sent down to him from his Lord?” www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 658)

[

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 658)

[ وَ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ
তারা বলে, ‘তার রবের কাছ থেকে তার কাছে কোন নিদর্শন নাযিল হয় না কেন?
They say, “Why is a sign not sent down to him from his Lord?”
www.motaher21.net

সুরা: ইউনুস
সুরা:১০
২০ নং আয়াত:-
وَ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ
তারা বলে, ‘তার রবের কাছ থেকে তার কাছে কোন নিদর্শন নাযিল হয় না কেন?
They say, “Why is a sign not sent down to him from his Lord?”
وَ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ فَقُلۡ اِنَّمَا الۡغَیۡبُ لِلّٰہِ فَانۡتَظِرُوۡا ۚ اِنِّیۡ مَعَکُمۡ مِّنَ الۡمُنۡتَظِرِیۡنَ ﴿٪۲۰﴾
তারা বলে, ‘তাঁর প্রতি তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ হতে কোন নিদর্শন অবতীর্ণ করা হয়নি কেন?’ সুতরাং তুমি বলে দাও, ‘অদৃশ্যের খবর শুধুমাত্র আল্লাহই জানেন। অতএব তোমরা প্রতীক্ষায় থাক, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষায় থাকলাম।’

And they say, “Why is a sign not sent down to him from his Lord?” So say, “The unseen is only for Allah [to administer], so wait; indeed, I am with you among those who wait.”

২০ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

অত্র আয়াত দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের একটি দাবীর কথা তুলে ধরেছেন যে, যখন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর কোন বিধান নাযিল করা হয় তখন তারা বলে: যদি তাকে নাবী হিসেবে প্রেরণই করা হয় তাহলে তাঁর ওপর তাঁর রবের পক্ষ থেকে সামূদ সম্প্রদায়ের ন্যায় উষ্ট্রী প্রেরণ করা হয় না কেন, এই সাফা পাহাড় স্বর্ণে পরিণত হয় না কেন, অথবা মক্কার পাহাড়গুলো অন্যত্র সরে যায় না কেন? মূলত তারা আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে বড় ধরনের মু‘জিযাহ কামনা করছে। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা ভাল করেই জানেন যে, মু‘জিযাহ প্রকাশ করা হলে কে ঈমান আনবে আর কে ঈমান আনবে না। আল্লাহ তা‘আলা সকল বিষয়েই সক্ষম। যেমন

আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

(تَبٰرَکَ الَّذِیْٓ اِنْ شَا۬ئَ جَعَلَ لَکَ خَیْرًا مِّنْ ذٰلِکَ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِھَا الْاَنْھٰرُﺫ وَیَجْعَلْ لَّکَ قُصُوْرًاﭙ بَلْ کَذَّبُوْا بِالسَّاعَةِ وَاَعْتَدْنَا لِمَنْ کَذَّبَ بِالسَّاعَةِ سَعِیْرًا)

“কত মহান তিনি যিনি ইচ্ছা করলে তোমাকে দিতে পারেন এটা অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর বস্তু উদ্যানসমূহ যার নিম্নদেশে নদী-নালাসমূহ প্রবাহিত হয় এবং তিনি দিতে পারেন তোমাকে প্রাসাদসমূহ! কিন্তু তারা কিয়ামতকে অস্বীকার করেছে আর যারা কিয়ামতকে অস্বীকার করে তাদের জন্য আমি প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত অগ্নি।” (সূরা ফুরকান ২৫:১০-১১)

সুতরাং তিনি জানেন যে, মু‘জিযাহ প্রকাশ করা হলেও তা তাদের কোন উপকারে আসবে না। কক্ষনো তারা তাতে ঈমান আনবে না, যার কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে এই ধরনের মু‘জিযাহ প্রকাশ করে দেখান নি।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(إِنَّ الَّذِيْنَ حَقَّتْ عَلَيْهِمْ كَلِمَتُ رَبِّكَ لَا يُؤْمِنُوْنَ)

“নিশ্চয়ই যাদের বিরুদ্ধে তোমার প্রতিপালকের বাক্য সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে, তারা ঈমান আনবে না।” (সূরা ইউনুস ১০: ৯৬)

আর দাবী অনুপাতে মুজিযাহ দেখানোর পরেও যদি কোন জাতি ঈমান না আনে তাহলে তাদেরকে সত্বর ধ্বংস করে দেয়া হবে। তাই আল্লাহ তা‘আলার হিকমত তাদের দাবী অনুপাতে মুজিযাহ না দিয়ে অবকাশ দিলেন, তারা অপেক্ষা করুক, অচিরেই বুঝতে পারবে সত্য প্রত্যাখ্যানের পরিণতি কত ভয়াবহ।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. অদৃশ্যের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার নিকটই রয়েছে, অন্য কেউ তা জানে না।
২. আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করলে যেকোন ধরনের মু‘জিযাহ প্রকাশ করতে পারেন।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
এই মিথ্যাবাদী কাফিররা বলে যে, মুহাম্মাদ (সঃ)-কেও কেন এমন (নবুওয়াতের) নিদর্শন দেয়া হয়নি, যেমন সামূদ সম্প্রদায়কে উষ্ট্ৰী দেয়া হয়েছিল? অথবা সাফা পাহাড় কেন সোনা হয়ে যায় না? অথবা কেন মক্কার পাহাড় মক্কা হতে সরে যায় না এবং ঐ জায়গায় বাগান ও নদী কেন হয় না? আল্লাহ যখন মহা শক্তিশালী তখন এরূপ হওয়া উচিত ছিল ইত্যাদি। কিন্তু সঠিক কথা তো এই যে, আল্লাহ তাআলা নিজের কাজে বড়ই ক্ষমতাবান ও মহাবিজ্ঞ। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “সেই সত্তা অতি মহান, যিনি ইচ্ছে করলে তোমাকে তদপেক্ষা উৎকৃষ্ট বস্তু প্রদান করবেন অর্থাৎ উদ্যানসমূহ- যার নিম্নদেশে নহরসমূহ বইতে থাকবে এবং তোমাকে বহু বালাখানাও দিবেন। বরং তারা কিয়ামতকে মিথ্যা মনে করেছে, আর আমি এইরূপ লোকদের জন্যে জাহান্নাম নির্ধারণ করে রেখেছি যারা কিয়ামতকে মিথ্যা মনে করেছে।” (২৫:১০-১১) অন্য জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমাকে এটা ছাড়া অন্য কিছুই নিদর্শন পাঠানো হতে বিরত রাখেনি যে, পূর্ববর্তী লোকেরা তা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল।” (১৭:৫৯)।

আল্লাহ তা’আলা বলেন, মাখলুকের ব্যাপারে আমার নীতি এই যে, তারা মুজিযা চায়, আর আমি তাদেরকে তা দিয়ে থাকি। এখন তারা যদি মু’জিযা দেখে আমার উপর ঈমান আনে তবে তো ভালই নচেৎ সত্ত্বরই আমি তাদের উপর শাস্তি অবতীর্ণ করে থাকি এবং কিয়ামত পর্যন্ত আর অবকাশ দেই না। এ জন্যেই আল্লাহ পাক যখন স্বীয় নবী (সঃ)-কে স্বাধীনতা দিয়ে বললেনঃ “দু’টির যে কোন একটি গ্রহণ কর। প্রথম হলো এই যে, তাদের আবেদন অনুযায়ী আমি তাদেরকে মু’জিযা দিচ্ছি। যতি তারা মু’জিযা দেখে ঈমান আনয়ন করে তবে তো ভালই। নতুবা আমি তাদেরকে অতি তাড়াতাড়ি শাস্তি প্রদান করবো। আর দ্বিতীয় হলো- আমি তাদেরকে তাদের মৃত্যু পর্যন্ত অবকাশ দেবো, যাতে তারা সংশোধিত হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বীয় উম্মতের জন্যে দ্বিতীয়টিই গ্রহণ করলেন। যেমন ঐ কাফিরদের ব্যাপারে বহুবার তাঁর ধৈর্য ও সহনশীলতা প্রমাণিত হয়েছে।

আল্লাহ পাক স্বীয় নবী (সঃ)-কে বলেন, তুমি বলে দাও- সব কিছুই আল্লাহর অধিকারে রয়েছে। কাজের পরিণতি সম্পর্কে তিনিই পূর্ণ ওয়াকিফহাল। তোমরা যদি চোখে না দেখা পর্যন্ত ঈমান আনতে না চাও তবে আমার ও তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহর হুকুমের অপেক্ষা কর। তারা তো নবী (সঃ)-এর এমন কতগুলো মু’জিযাও দেখেছিল যেগুলো তাদের আকাঙিক্ষত মু’জিযার চেয়ে বড় ছিল । যেমন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদের চোখের সামনে চৌদ্দ তারিখের চাদকে অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করেন এবং সাথে সাথে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। এটা তো যমীনে প্রকাশিত মু’জিযা হতে বহুগুণে বড় ছিল। আর জিজ্ঞাসিত ও অজিজ্ঞাসিত সমস্ত নিদর্শন অপেক্ষা উত্তম ছিল। এখনও যদি আল্লাহ তা’আলা জানতেন যে, তারা কোন মু’জিযা সুপথ প্রাপ্তির ইচ্ছায় দেখতে চাচ্ছে তবে তিনি অবশ্যই তা দেখাতেন। কিন্তু তিনি জানেন যে, তারা জিদ ও অবাধ্যতার মন নিয়েই মু’জিযা দেখতে চাচ্ছে। তাই তাদের আবেদন মঞ্জুর করা হচ্ছে না। মহান আল্লাহ এটা জ্ঞাত ছিলেন যে, এখনও তারা ঈমান আনবে না। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “নিশ্চয়ই যাদের উপর তোমার প্রতিপালকের দলীল অবধারিত হয়ে গেছে, তাদের উপর যতই নিদর্শন পেশ করা হাক না কেন তারা ঈমান আনবে না।” (১০:৯৬) অন্য জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ
অর্থাৎ “যদি আমি তাদের কাছে ফেরেশতাও অবতীর্ণ করি এবং মৃতেরা তাদের সাথে কথা বলতেও শুরু করে দেয়, আর সমস্ত জিনিস তাদের কাছে জমা করে দেয়াও হয় এবং প্রত্যেকটা মু’জিযাও দেখানো হয় তথাপি তারা কখনো ঈমান আনবে না।” (৬:১১১) কেননা শুধু জিদ করাই হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য। যেমন তিনি বলেনঃ … (আরবী) (১৫:১৪) আরো বলেনঃ (আরবী) (৫২:৪৪) এবং আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যদি আমি তাদের উপর আসমানের দরজাও খুলে দেই বা তারা আকাশের একটা টুকরা খসে পড়তেও দেখে নেয় এবং তাদের উপর যদি আমি এমন কোন আসমানী কিতাবও অবতীর্ণ করি যা কাগজে লিখিত অবস্থায় থাকে, অতঃপর তারা তা তাদের হাত দ্বারা স্পর্শও করে, তবুও সেই কাফিররা অবশ্যই বলবে- এটা তো স্পষ্ট যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়।” (৬:৭) সুতরাং তাদেরকে কাম্য বস্তু প্রদান করে লাভ কি? কেননা তারা যা কিছুই দেখতে চাচ্ছে তা শুধু জিদের বশবর্তী হয়ে। এজন্যেই মহান আল্লাহ বলেনঃ “অতএব তোমরাও প্রতীক্ষায় থাকো, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষায় থাকলাম।”

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

এ ব্যাপারে নিদর্শন যে, তিনি যথার্থই সত্য নবী এবং যা কিছু তিনি পেশ করেছেন তা পুরোপুরি ঠিক। এ প্রসঙ্গে একটি কথা মনে রাখতে হবে। সেটি হচ্ছে, নিদর্শন পেশ করার দাবী তারা এ জন্য করেননি যে, তারা সাচ্চা দিলে সত্যের দাওয়াত গ্রহণ করতে এবং তার দাবী অনুযায়ী নিজেদের স্বভাব-চরিত্র, আচার-আচরণ ,সমাজ ব্যবস্থা ও সাংস্কৃতিক জীবন তথা নিজেদের সমগ্র জীবন ঢেলে সাজাতে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু নবীর সমর্থনে এ পর্যন্ত তারা এমন কোন নিদর্শন দেখেনি যা দেখে তাঁর নবুওয়াতের প্রতি তাদের বিশ্বাস জন্মাতে পারে। কেবলমাত্র এ জন্যই তারা হাত পা গুটিয়ে বসেছিল। আসলে নিশানীর এ দাবী শুধুমাত্র ঈমান না আনার জন্য জন্য একটি বাহানা হিসেবে পেশ করা হচ্ছিল। তাদেরকে যাই কিছু দেখানো হতো তা দেখার পরও তারা একথাই বলতো, আমাদের কোন নিশানাই দেখানো হয়নি। কারণ তারা ঈমান আনতে চাচ্ছিল না। দুনিয়ার জীবনের বাহ্যিক কাঠামো অবলম্বন করে প্রবৃত্তির খায়েশ ও পছন্দ অনুযায়ী যেভাবে ইচ্ছা কাজ করার এবং যে জিনিসের মধ্যে স্বাদ বা লাভ অনুভব করে তার পেছনে দৌড়াবার যে স্বাধীনতা তাদের ছিল তা পরিত্যাগ করে তারা এমন কোন অদৃশ্য সত্য (তাওহীদ ও আখেরাত) মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল না যা মেনে নেবার পর তাদের সমগ্র জীবন ব্যবস্থাকে স্থায়ী ও স্বতন্ত্র নৈতিক বিধানের বাঁধনে বেঁধে ফেলতে হতো।

* আল্লাহ যা কিছু নাযিল করেছেন তা আমি পেশ করে দিয়েছি। আর যা তিনি নাযিল করেননি তা আমার ও তোমাদের জন্য “অদৃশ্য” এর ওপর আল্লাহ‌ ছাড়া আর কারোর ইখতিয়ার নেই। তিনি চাইলে তা নাযিল করতে পারেন আবার চাইলে নাও করতে পারেন। এখন আল্লাহ‌ যা কিছু নাযিল করেননি তা আগে তিনি নাযিল করুন- একথার ওপর যদি তোমাদের ঈমান আনার বিষয়টি আটকে থাকে তাহলে তোমরা তার অপেক্ষায় বসে থাকো। আমিও দেখবো, তোমাদের এ জিদ পুরো করা হয় কিনা।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

[১] এদের উদ্দেশ্য হল, কোন বড় ও স্পষ্ট নিদর্শন বা মু’জিযাহ; যেমন সামুদ জাতির জন্য উটনী প্রকাশ করা হয়েছিল। অনুরূপ তাদের দাবী ছিল, এ (মক্কার কাফের)-দের জন্য সাফা পাহাড়কে সোনার পাহাড়ে পরিবর্তন করে অথবা মক্কার সমস্ত পর্বতমালা দূর করে তার স্থলে নদী ও বাগান তৈরী করে অথবা অনুরূপ কোন মু’জিযাহ (অলৌকিক বস্তু) প্রকাশ করে দেখানো হোক।

[২] অর্থাৎ আল্লাহ যদি চান, তবে তাদের চাহিদা অনুযায়ী মু’জিযা প্রকাশ করে দেখাতে পারেন। কিন্তু তার পরেও যদি তারা ঈমান না আনে, তবে আল্লাহর নীতি এই যে, এরূপ জাতিকে তিনি অতি সতত্ত্বর ধ্বংস করে দেন। ফলে একমাত্র তিনিই জানেন যে, কোন জাতির জন্য তাদের চাহিদা মত মু’জিযা প্রকাশ করে দেওয়া তাদের জন্য মঙ্গল হবে, না অমঙ্গল। অনুরূপ এটাও একমাত্র তিনিই জানেন যে, যদি তাদের চাহিদা মত মু’জিযা না দেখানো হয়, তাহলে তাদেরকে কতটা অবকাশ দেওয়া হবে? যার ফলে আয়াতের শেষাংশে বলেছেন, “তোমরা অপেক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রইলাম।”

তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-

[১] অর্থাৎ এ ব্যাপারে নিদর্শন যে, তিনি যথার্থই সত্য নবী এবং যা কিছু তিনি পেশ করছেন তা পুরোপুরি ঠিক। এ প্রসঙ্গে একটি কথা মনে রাখতে হবে। সেটি হচ্ছে, নিদর্শন পেশ করার দাবী তারা এ জন্য করেনি যে, তারা সাচ্চা দিলে সত্যের দাওয়াত গ্রহণ করতে প্রস্তুত ছিল। আসলে নিদর্শনের এ দাবী শুধুমাত্র ঈমান না আনার জন্য একটি বাহানা হিসেবে পেশ করা হচ্ছিল। তাদেরকে যাই কিছু দেখানো হতো তা দেখার পরও তারা একথাই বলতো, আমাদের কোন নিদর্শনই দেখানো হয়নি। কারণ তারা ঈমান আনতে চাচ্ছিল না। আল্লাহ বলেনঃ “কত মহান তিনি যিনি ইচ্ছে করলে আপনাকে দিতে পারেন এর চেয়ে উৎকৃষ্ট বস্তু-উদ্যানসমূহ যার নিম্নদেশে নদী-নালা প্রবাহিত এবং তিনি দিতে পারেন আপনাকে প্রাসাদসমূহ! কিন্তু তারা কিয়ামতকে অস্বীকার করেছে এবং যে কিয়ামতকে অস্বীকার করে তার জন্য আমি প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত আগুন”। [সূরা আল-ফুরকানঃ ১০] অন্য আয়াতে বলেনঃ “পূর্ববর্তীগণের নিদর্শন অস্বীকার করাই আমাকে নিদর্শন পাঠান থেকে বিরত রাখে।” [সূরা আল-ইসরাঃ ৫৯] কারণ, তাদের চাহিদা মোতাবেক নিদর্শন পাঠানোর পর যদি ঈমান না আনে তাহলে তাদের ধ্বংস অনিবার্য। কারণ, আল্লাহর নিয়ম হচ্ছে যে, সুনির্দিষ্ট কোন নিদর্শন চাওয়া হলে সেটা দেয়ার পর যদি ঈমান না আনে তবে তাদের ধ্বংস করা হয়। আর এ জন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যখন নিদর্শন দেয়া ও অবকাশ না দেয়া আর নিদর্শন না দিয়ে অবকাশ দেয়ার মধ্যে কোন একটি গ্রহণ করার অধিকার প্রদান করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বিতীয়টি গ্রহণ করেছিলেন [ইবন কাসীর] কিন্তু এর অর্থ এ নয় যে, আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে মোটেই কোন নিদর্শন দেখাননি। তাদেরকে অনেক বড় নিদর্শন দেখিয়েছেন। যেমন তাদের চাহিদা মোতাবেক চাঁদকে এমনভাবে দ্বিখণ্ডিত করে দেখিয়েছেন যে, কাফেরগন দুখণ্ডের মাঝে পাহাড় দেখতে পেয়েছিল। [বুখারীঃ ৩৬৩৬, মুসলিমঃ ২৮০০] কিন্তু তারপরও তারা ঈমান আনেনি। বরং আরো বেশী নিদর্শন দাবী করতে লাগল। আসলে তাদের উদ্দেশ্য ঈমান আনা নয়, তাদের উদ্দেশ্য হঠকারিতা। আল্লাহ বলেনঃ “তারা যত নিদর্শনই দেখুক না কেন ঈমান আনবে না”। [সূরা আল-আনআমঃ ২৫] আরো বলেনঃ “তারা যাবতীয় নিদর্শন দেখলেও ঈমান আনবে না”। [সূরা আল-আরাফঃ ১৪৬] আরো বলেনঃ “নিশ্চয়ই যাদের বিরুদ্ধে আপনার প্রতিপালকের বাক্য সাব্যস্ত হয়ে গেছে, তারা ঈমান আনবে না। যদিও তাদের কাছে সবগুলো নিদর্শন আসে, যতক্ষন পর্যন্ত না তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেখতে পাবে”। [সূরা ইউনুসঃ ৯৬-৯৭] অন্য আয়াতে বলেনঃ “আমরা তাদের কাছে ফিরিশতা পাঠালেও, মৃতেরা তাদের সাথে কথা বললেও এবং সকল বস্তুকে তাদের সামনে হাজির করলেও তারা কখনো ঈমান আনবে না; তবে যদি আল্লাহর ইচ্ছে হয়” [সূরা আল-আনআমঃ ১১১] অহংকার ও সত্যকে অস্বীকার করা তাদের মজ্জাগত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা সুস্পষ্ট বিষয়কেও জেনে বুঝে অস্বীকার করতে দ্বিধা করে না। আল্লাহ বলেনঃ “যদি তাদের জন্য আকাশের দরজা খুলে দেই এবং তারা সারাদিন তাতে আরোহন করতে থাকে, তবুও তারা বলবে, আমাদের দৃষ্টি সম্মোহিত করা হয়েছে; না, বরং আমরা এক জাদুগ্ৰস্ত সম্প্রদায় [সূরা আল-হিজরঃ ১৪-১৫] আরো বলেনঃ “তারা আকাশের কোন খন্ড ভেংগে পড়তে দেখলে বলবে, এটা তো এক পুঞ্জিভূত মেঘ ” [সূরা আত-তুরঃ ৪৪] আল্লাহ আরো বলেনঃ “আমরা যদি আপনার প্রতি কাগজে লিখিত কিতাবও নাযিল করতাম আর তারা যদি সেটা হাত দিয়ে স্পর্শও করত তবুও কাফিররা বলত, এটা স্পষ্ট জাদু ছাড়া আর কিছু নয়।” [সূরা আল-আনআমঃ ৭]

[২] অর্থাৎ আয়াত নাযিল করা একান্ত গায়েবী বিষয়। [কুরতুবী] আল্লাহ যা কিছু নাযিল করেছেন তা আমি পেশ করে দিয়েছি। আর যা তিনি নাযিল করেননি তা আমার ও তোমাদের জন্য “গায়েবী বিষয়” এর ওপর আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইখতিয়ার নেই। তিনি চাইলে তা নাযিল করতে পারেন। এখন আল্লাহ যা কিছু নাযিল করেননি তা আগে তিনি নাযিল করুন-একথার ওপর যদি তোমাদের ঈমান আনার বিষয়টি আটকে থাকে তাহলে তোমরা তার অপেক্ষায় বসে থাকো। [কুরতুবী] অথবা আয়াতের অর্থ, তোমরা আমাদের আল্লাহর ফয়সালার অপেক্ষা কর। তিনি হককে অবশ্যই বাতিলের উপর প্রকাশ করে দিবেন। [বাগভী]

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Yunus
Sura: 10
Verses :- 20
وَ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ
They say, “Why is a sign not sent down to him from his Lord?”
The Idolators requested a Miracle

Allah tells;

وَيَقُولُونَ لَوْلَا أُنزِلَ عَلَيْهِ ايَةٌ مِّن رَّبِّهِ

And they say:”How is it that not a sign is sent down on him from his Lord!”

These stubborn, lying disbelievers said, “Why would not a sign be revealed to Muhammad from his Lord.”

They meant a sign such as given to Salih. Allah sent the she-camel to Thamud.

They wanted Allah to change the mount of As-Safa into gold or remove the mountains of Makkah and replace them with gardens and rivers. Allah is capable of doing all of that, but He is All-Wise in His actions and statements.

Allah said:

تَبَارَكَ الَّذِى إِن شَأءَ جَعَلَ لَكَ خَيْراً مِّن ذلِكَ جَنَّـتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا الاٌّنْهَـرُ وَيَجْعَل لَّكَ قُصُوراً

بَلْ كَذَّبُواْ بِالسَّاعَةِ وَأَعْتَدْنَا لِمَن كَذَّبَ بِالسَّاعَةِ سَعِيراً

Blessed be He Who, if He wills, will assign you better than (all) that — Gardens under which rivers flow (Paradise) and will assign you palaces (in Paradise). Nay, they deny the Hour, and for those who deny the Hour, We have prepared a flaming Fire. (25:10-11)

He also said:

وَمَا مَنَعَنَأ أَن نُّرْسِلَ بِالاٌّيَـتِ إِلاَّ أَن كَذَّبَ بِهَا الاٌّوَّلُونَ

And nothing stops Us from sending the Ayat but that the people of old denied them. (17:59)

Allah’s way of dealing with His creatures is that He would give to them if they asked things from Him. But if they then didn’t believe He would expedite punishment for them.

When Allah’s Messenger was given the choice of Allah giving the people what they requested but if they didn’t believe they would be punished, or that their request would not be answered immediately, Allah’s Messenger chose the latter.

Allah guided His Prophet to answer their question by saying:

فَقُلْ إِنَّمَا الْغَيْبُ لِلّهِ

Say:”The Unseen belongs only to Allah…”

This Ayah means that the matter in its entirety is for Allah. He is well aware of the outcome of all matters.

فَانْتَظِرُواْ إِنِّي مَعَكُم مِّنَ الْمُنتَظِرِينَ

“…so wait you, verily, I am with you among those who wait.”

If you would not believe unless you witness that which you asked for, then wait for Allah’s judgement for me, as well as for yourselves.

Nonetheless, they had witnessed some of the signs and miracles of the Prophet, which were even greater than what they had asked for.

In their presence, the Prophet pointed to the moon when it was full and it split into two parts, one part behind the mountain and the other before them.

If they were seeking the guidance and firm knowledge by asking for signs, Allah would have known that and would have granted them what had been requested. But Allah knew that it was their obstinacy that was behind their request. Therefore Allah left them to suffer in their suspicion and doubt. Allah knew that none of them would believe.

This is similar to Allah’s statements:

إِنَّ الَّذِينَ حَقَّتْ عَلَيْهِمْ كَلِمَةُ رَبِّكَ لَا يُوْمِنُونَ

وَلَوْ جَأءَتْهُمْ كُلُّ ءايَةٍ

Truly, those, against whom the Word (Wrath) of your Lord has been justified, will not believe. Even if every sign should come to them. (10:96-97)

and;

وَلَوْ أَنَّنَا نَزَّلْنَأ إِلَيْهِمُ الْمَلَـيِكَةَ وَكَلَّمَهُمُ الْمَوْتَى وَحَشَرْنَا عَلَيْهِمْ كُلَّ شَىْءٍ قُبُلً مَّا كَانُواْ لِيُوْمِنُواْ إِلاَّ أَن يَشَأءَ اللَّهُ

And even if We had sent down unto them angels, and the dead had spoken unto them, and We had gathered together all things before their very eyes, they would not have believed, unless Allah willed. (6:111)

This was in addition to their arrogance. As Allah said in another Ayah:

وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَاباً مِّنَ السَّمَاءِ

And even if We opened to them a gate from the heaven. (15:14)

And He said:

وَإِن يَرَوْاْ كِسْفاً مِّنَ السَّمَأءِ سَـقِطاً

And if they were to see a piece of the heaven falling down. (52:44)

He also said:

وَلَوْ نَزَّلْنَا عَلَيْكَ كِتَـباً فِى قِرْطَاسٍ فَلَمَسُوهُ بِأَيْدِيهِمْ لَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُواْ إِنْ هَـذَا إِلاَّ سِحْرٌ مُّبِينٌ

And even if We had sent down unto you (O Muhammad) a Message written on paper so that they could touch it with their hands, the disbelievers would have said:`This is nothing but obvious magic!’ (6:7)

Such people don’t deserve to have their requests answered, for there is no benefit in answering them. These people are obstinate and stubborn as a result of their corruption and immorality. Therefore Allah told His Messenger to say:

فَانْتَظِرُواْ إِنِّي مَعَكُم مِّنَ الْمُنتَظِرِينَ

So wait you, verily, I am with you among those who wait.

وَ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ
তারা বলে, ‘তার রবের কাছ থেকে তার কাছে কোন নিদর্শন নাযিল হয় না কেন?
They say, “Why is a sign not sent down to him from his Lord?”
www.motaher21.net

সুরা: ইউনুস
সুরা:১০
২০ নং আয়াত:-
وَ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ
তারা বলে, ‘তার রবের কাছ থেকে তার কাছে কোন নিদর্শন নাযিল হয় না কেন?
They say, “Why is a sign not sent down to him from his Lord?”
وَ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ فَقُلۡ اِنَّمَا الۡغَیۡبُ لِلّٰہِ فَانۡتَظِرُوۡا ۚ اِنِّیۡ مَعَکُمۡ مِّنَ الۡمُنۡتَظِرِیۡنَ ﴿٪۲۰﴾
তারা বলে, ‘তাঁর প্রতি তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ হতে কোন নিদর্শন অবতীর্ণ করা হয়নি কেন?’ সুতরাং তুমি বলে দাও, ‘অদৃশ্যের খবর শুধুমাত্র আল্লাহই জানেন। অতএব তোমরা প্রতীক্ষায় থাক, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষায় থাকলাম।’

And they say, “Why is a sign not sent down to him from his Lord?” So say, “The unseen is only for Allah [to administer], so wait; indeed, I am with you among those who wait.”

২০ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

অত্র আয়াত দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের একটি দাবীর কথা তুলে ধরেছেন যে, যখন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর কোন বিধান নাযিল করা হয় তখন তারা বলে: যদি তাকে নাবী হিসেবে প্রেরণই করা হয় তাহলে তাঁর ওপর তাঁর রবের পক্ষ থেকে সামূদ সম্প্রদায়ের ন্যায় উষ্ট্রী প্রেরণ করা হয় না কেন, এই সাফা পাহাড় স্বর্ণে পরিণত হয় না কেন, অথবা মক্কার পাহাড়গুলো অন্যত্র সরে যায় না কেন? মূলত তারা আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে বড় ধরনের মু‘জিযাহ কামনা করছে। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা ভাল করেই জানেন যে, মু‘জিযাহ প্রকাশ করা হলে কে ঈমান আনবে আর কে ঈমান আনবে না। আল্লাহ তা‘আলা সকল বিষয়েই সক্ষম। যেমন

আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

(تَبٰرَکَ الَّذِیْٓ اِنْ شَا۬ئَ جَعَلَ لَکَ خَیْرًا مِّنْ ذٰلِکَ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِھَا الْاَنْھٰرُﺫ وَیَجْعَلْ لَّکَ قُصُوْرًاﭙ بَلْ کَذَّبُوْا بِالسَّاعَةِ وَاَعْتَدْنَا لِمَنْ کَذَّبَ بِالسَّاعَةِ سَعِیْرًا)

“কত মহান তিনি যিনি ইচ্ছা করলে তোমাকে দিতে পারেন এটা অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর বস্তু উদ্যানসমূহ যার নিম্নদেশে নদী-নালাসমূহ প্রবাহিত হয় এবং তিনি দিতে পারেন তোমাকে প্রাসাদসমূহ! কিন্তু তারা কিয়ামতকে অস্বীকার করেছে আর যারা কিয়ামতকে অস্বীকার করে তাদের জন্য আমি প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত অগ্নি।” (সূরা ফুরকান ২৫:১০-১১)

সুতরাং তিনি জানেন যে, মু‘জিযাহ প্রকাশ করা হলেও তা তাদের কোন উপকারে আসবে না। কক্ষনো তারা তাতে ঈমান আনবে না, যার কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে এই ধরনের মু‘জিযাহ প্রকাশ করে দেখান নি।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(إِنَّ الَّذِيْنَ حَقَّتْ عَلَيْهِمْ كَلِمَتُ رَبِّكَ لَا يُؤْمِنُوْنَ)

“নিশ্চয়ই যাদের বিরুদ্ধে তোমার প্রতিপালকের বাক্য সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে, তারা ঈমান আনবে না।” (সূরা ইউনুস ১০: ৯৬)

আর দাবী অনুপাতে মুজিযাহ দেখানোর পরেও যদি কোন জাতি ঈমান না আনে তাহলে তাদেরকে সত্বর ধ্বংস করে দেয়া হবে। তাই আল্লাহ তা‘আলার হিকমত তাদের দাবী অনুপাতে মুজিযাহ না দিয়ে অবকাশ দিলেন, তারা অপেক্ষা করুক, অচিরেই বুঝতে পারবে সত্য প্রত্যাখ্যানের পরিণতি কত ভয়াবহ।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. অদৃশ্যের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার নিকটই রয়েছে, অন্য কেউ তা জানে না।
২. আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করলে যেকোন ধরনের মু‘জিযাহ প্রকাশ করতে পারেন।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
এই মিথ্যাবাদী কাফিররা বলে যে, মুহাম্মাদ (সঃ)-কেও কেন এমন (নবুওয়াতের) নিদর্শন দেয়া হয়নি, যেমন সামূদ সম্প্রদায়কে উষ্ট্ৰী দেয়া হয়েছিল? অথবা সাফা পাহাড় কেন সোনা হয়ে যায় না? অথবা কেন মক্কার পাহাড় মক্কা হতে সরে যায় না এবং ঐ জায়গায় বাগান ও নদী কেন হয় না? আল্লাহ যখন মহা শক্তিশালী তখন এরূপ হওয়া উচিত ছিল ইত্যাদি। কিন্তু সঠিক কথা তো এই যে, আল্লাহ তাআলা নিজের কাজে বড়ই ক্ষমতাবান ও মহাবিজ্ঞ। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “সেই সত্তা অতি মহান, যিনি ইচ্ছে করলে তোমাকে তদপেক্ষা উৎকৃষ্ট বস্তু প্রদান করবেন অর্থাৎ উদ্যানসমূহ- যার নিম্নদেশে নহরসমূহ বইতে থাকবে এবং তোমাকে বহু বালাখানাও দিবেন। বরং তারা কিয়ামতকে মিথ্যা মনে করেছে, আর আমি এইরূপ লোকদের জন্যে জাহান্নাম নির্ধারণ করে রেখেছি যারা কিয়ামতকে মিথ্যা মনে করেছে।” (২৫:১০-১১) অন্য জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমাকে এটা ছাড়া অন্য কিছুই নিদর্শন পাঠানো হতে বিরত রাখেনি যে, পূর্ববর্তী লোকেরা তা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল।” (১৭:৫৯)।

আল্লাহ তা’আলা বলেন, মাখলুকের ব্যাপারে আমার নীতি এই যে, তারা মুজিযা চায়, আর আমি তাদেরকে তা দিয়ে থাকি। এখন তারা যদি মু’জিযা দেখে আমার উপর ঈমান আনে তবে তো ভালই নচেৎ সত্ত্বরই আমি তাদের উপর শাস্তি অবতীর্ণ করে থাকি এবং কিয়ামত পর্যন্ত আর অবকাশ দেই না। এ জন্যেই আল্লাহ পাক যখন স্বীয় নবী (সঃ)-কে স্বাধীনতা দিয়ে বললেনঃ “দু’টির যে কোন একটি গ্রহণ কর। প্রথম হলো এই যে, তাদের আবেদন অনুযায়ী আমি তাদেরকে মু’জিযা দিচ্ছি। যতি তারা মু’জিযা দেখে ঈমান আনয়ন করে তবে তো ভালই। নতুবা আমি তাদেরকে অতি তাড়াতাড়ি শাস্তি প্রদান করবো। আর দ্বিতীয় হলো- আমি তাদেরকে তাদের মৃত্যু পর্যন্ত অবকাশ দেবো, যাতে তারা সংশোধিত হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বীয় উম্মতের জন্যে দ্বিতীয়টিই গ্রহণ করলেন। যেমন ঐ কাফিরদের ব্যাপারে বহুবার তাঁর ধৈর্য ও সহনশীলতা প্রমাণিত হয়েছে।

আল্লাহ পাক স্বীয় নবী (সঃ)-কে বলেন, তুমি বলে দাও- সব কিছুই আল্লাহর অধিকারে রয়েছে। কাজের পরিণতি সম্পর্কে তিনিই পূর্ণ ওয়াকিফহাল। তোমরা যদি চোখে না দেখা পর্যন্ত ঈমান আনতে না চাও তবে আমার ও তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহর হুকুমের অপেক্ষা কর। তারা তো নবী (সঃ)-এর এমন কতগুলো মু’জিযাও দেখেছিল যেগুলো তাদের আকাঙিক্ষত মু’জিযার চেয়ে বড় ছিল । যেমন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদের চোখের সামনে চৌদ্দ তারিখের চাদকে অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করেন এবং সাথে সাথে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। এটা তো যমীনে প্রকাশিত মু’জিযা হতে বহুগুণে বড় ছিল। আর জিজ্ঞাসিত ও অজিজ্ঞাসিত সমস্ত নিদর্শন অপেক্ষা উত্তম ছিল। এখনও যদি আল্লাহ তা’আলা জানতেন যে, তারা কোন মু’জিযা সুপথ প্রাপ্তির ইচ্ছায় দেখতে চাচ্ছে তবে তিনি অবশ্যই তা দেখাতেন। কিন্তু তিনি জানেন যে, তারা জিদ ও অবাধ্যতার মন নিয়েই মু’জিযা দেখতে চাচ্ছে। তাই তাদের আবেদন মঞ্জুর করা হচ্ছে না। মহান আল্লাহ এটা জ্ঞাত ছিলেন যে, এখনও তারা ঈমান আনবে না। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “নিশ্চয়ই যাদের উপর তোমার প্রতিপালকের দলীল অবধারিত হয়ে গেছে, তাদের উপর যতই নিদর্শন পেশ করা হাক না কেন তারা ঈমান আনবে না।” (১০:৯৬) অন্য জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ
অর্থাৎ “যদি আমি তাদের কাছে ফেরেশতাও অবতীর্ণ করি এবং মৃতেরা তাদের সাথে কথা বলতেও শুরু করে দেয়, আর সমস্ত জিনিস তাদের কাছে জমা করে দেয়াও হয় এবং প্রত্যেকটা মু’জিযাও দেখানো হয় তথাপি তারা কখনো ঈমান আনবে না।” (৬:১১১) কেননা শুধু জিদ করাই হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য। যেমন তিনি বলেনঃ … (আরবী) (১৫:১৪) আরো বলেনঃ (আরবী) (৫২:৪৪) এবং আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যদি আমি তাদের উপর আসমানের দরজাও খুলে দেই বা তারা আকাশের একটা টুকরা খসে পড়তেও দেখে নেয় এবং তাদের উপর যদি আমি এমন কোন আসমানী কিতাবও অবতীর্ণ করি যা কাগজে লিখিত অবস্থায় থাকে, অতঃপর তারা তা তাদের হাত দ্বারা স্পর্শও করে, তবুও সেই কাফিররা অবশ্যই বলবে- এটা তো স্পষ্ট যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়।” (৬:৭) সুতরাং তাদেরকে কাম্য বস্তু প্রদান করে লাভ কি? কেননা তারা যা কিছুই দেখতে চাচ্ছে তা শুধু জিদের বশবর্তী হয়ে। এজন্যেই মহান আল্লাহ বলেনঃ “অতএব তোমরাও প্রতীক্ষায় থাকো, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষায় থাকলাম।”

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

এ ব্যাপারে নিদর্শন যে, তিনি যথার্থই সত্য নবী এবং যা কিছু তিনি পেশ করেছেন তা পুরোপুরি ঠিক। এ প্রসঙ্গে একটি কথা মনে রাখতে হবে। সেটি হচ্ছে, নিদর্শন পেশ করার দাবী তারা এ জন্য করেননি যে, তারা সাচ্চা দিলে সত্যের দাওয়াত গ্রহণ করতে এবং তার দাবী অনুযায়ী নিজেদের স্বভাব-চরিত্র, আচার-আচরণ ,সমাজ ব্যবস্থা ও সাংস্কৃতিক জীবন তথা নিজেদের সমগ্র জীবন ঢেলে সাজাতে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু নবীর সমর্থনে এ পর্যন্ত তারা এমন কোন নিদর্শন দেখেনি যা দেখে তাঁর নবুওয়াতের প্রতি তাদের বিশ্বাস জন্মাতে পারে। কেবলমাত্র এ জন্যই তারা হাত পা গুটিয়ে বসেছিল। আসলে নিশানীর এ দাবী শুধুমাত্র ঈমান না আনার জন্য জন্য একটি বাহানা হিসেবে পেশ করা হচ্ছিল। তাদেরকে যাই কিছু দেখানো হতো তা দেখার পরও তারা একথাই বলতো, আমাদের কোন নিশানাই দেখানো হয়নি। কারণ তারা ঈমান আনতে চাচ্ছিল না। দুনিয়ার জীবনের বাহ্যিক কাঠামো অবলম্বন করে প্রবৃত্তির খায়েশ ও পছন্দ অনুযায়ী যেভাবে ইচ্ছা কাজ করার এবং যে জিনিসের মধ্যে স্বাদ বা লাভ অনুভব করে তার পেছনে দৌড়াবার যে স্বাধীনতা তাদের ছিল তা পরিত্যাগ করে তারা এমন কোন অদৃশ্য সত্য (তাওহীদ ও আখেরাত) মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল না যা মেনে নেবার পর তাদের সমগ্র জীবন ব্যবস্থাকে স্থায়ী ও স্বতন্ত্র নৈতিক বিধানের বাঁধনে বেঁধে ফেলতে হতো।

* আল্লাহ যা কিছু নাযিল করেছেন তা আমি পেশ করে দিয়েছি। আর যা তিনি নাযিল করেননি তা আমার ও তোমাদের জন্য “অদৃশ্য” এর ওপর আল্লাহ‌ ছাড়া আর কারোর ইখতিয়ার নেই। তিনি চাইলে তা নাযিল করতে পারেন আবার চাইলে নাও করতে পারেন। এখন আল্লাহ‌ যা কিছু নাযিল করেননি তা আগে তিনি নাযিল করুন- একথার ওপর যদি তোমাদের ঈমান আনার বিষয়টি আটকে থাকে তাহলে তোমরা তার অপেক্ষায় বসে থাকো। আমিও দেখবো, তোমাদের এ জিদ পুরো করা হয় কিনা।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

[১] এদের উদ্দেশ্য হল, কোন বড় ও স্পষ্ট নিদর্শন বা মু’জিযাহ; যেমন সামুদ জাতির জন্য উটনী প্রকাশ করা হয়েছিল। অনুরূপ তাদের দাবী ছিল, এ (মক্কার কাফের)-দের জন্য সাফা পাহাড়কে সোনার পাহাড়ে পরিবর্তন করে অথবা মক্কার সমস্ত পর্বতমালা দূর করে তার স্থলে নদী ও বাগান তৈরী করে অথবা অনুরূপ কোন মু’জিযাহ (অলৌকিক বস্তু) প্রকাশ করে দেখানো হোক।

[২] অর্থাৎ আল্লাহ যদি চান, তবে তাদের চাহিদা অনুযায়ী মু’জিযা প্রকাশ করে দেখাতে পারেন। কিন্তু তার পরেও যদি তারা ঈমান না আনে, তবে আল্লাহর নীতি এই যে, এরূপ জাতিকে তিনি অতি সতত্ত্বর ধ্বংস করে দেন। ফলে একমাত্র তিনিই জানেন যে, কোন জাতির জন্য তাদের চাহিদা মত মু’জিযা প্রকাশ করে দেওয়া তাদের জন্য মঙ্গল হবে, না অমঙ্গল। অনুরূপ এটাও একমাত্র তিনিই জানেন যে, যদি তাদের চাহিদা মত মু’জিযা না দেখানো হয়, তাহলে তাদেরকে কতটা অবকাশ দেওয়া হবে? যার ফলে আয়াতের শেষাংশে বলেছেন, “তোমরা অপেক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রইলাম।”

তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-

[১] অর্থাৎ এ ব্যাপারে নিদর্শন যে, তিনি যথার্থই সত্য নবী এবং যা কিছু তিনি পেশ করছেন তা পুরোপুরি ঠিক। এ প্রসঙ্গে একটি কথা মনে রাখতে হবে। সেটি হচ্ছে, নিদর্শন পেশ করার দাবী তারা এ জন্য করেনি যে, তারা সাচ্চা দিলে সত্যের দাওয়াত গ্রহণ করতে প্রস্তুত ছিল। আসলে নিদর্শনের এ দাবী শুধুমাত্র ঈমান না আনার জন্য একটি বাহানা হিসেবে পেশ করা হচ্ছিল। তাদেরকে যাই কিছু দেখানো হতো তা দেখার পরও তারা একথাই বলতো, আমাদের কোন নিদর্শনই দেখানো হয়নি। কারণ তারা ঈমান আনতে চাচ্ছিল না। আল্লাহ বলেনঃ “কত মহান তিনি যিনি ইচ্ছে করলে আপনাকে দিতে পারেন এর চেয়ে উৎকৃষ্ট বস্তু-উদ্যানসমূহ যার নিম্নদেশে নদী-নালা প্রবাহিত এবং তিনি দিতে পারেন আপনাকে প্রাসাদসমূহ! কিন্তু তারা কিয়ামতকে অস্বীকার করেছে এবং যে কিয়ামতকে অস্বীকার করে তার জন্য আমি প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত আগুন”। [সূরা আল-ফুরকানঃ ১০] অন্য আয়াতে বলেনঃ “পূর্ববর্তীগণের নিদর্শন অস্বীকার করাই আমাকে নিদর্শন পাঠান থেকে বিরত রাখে।” [সূরা আল-ইসরাঃ ৫৯] কারণ, তাদের চাহিদা মোতাবেক নিদর্শন পাঠানোর পর যদি ঈমান না আনে তাহলে তাদের ধ্বংস অনিবার্য। কারণ, আল্লাহর নিয়ম হচ্ছে যে, সুনির্দিষ্ট কোন নিদর্শন চাওয়া হলে সেটা দেয়ার পর যদি ঈমান না আনে তবে তাদের ধ্বংস করা হয়। আর এ জন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যখন নিদর্শন দেয়া ও অবকাশ না দেয়া আর নিদর্শন না দিয়ে অবকাশ দেয়ার মধ্যে কোন একটি গ্রহণ করার অধিকার প্রদান করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বিতীয়টি গ্রহণ করেছিলেন [ইবন কাসীর] কিন্তু এর অর্থ এ নয় যে, আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে মোটেই কোন নিদর্শন দেখাননি। তাদেরকে অনেক বড় নিদর্শন দেখিয়েছেন। যেমন তাদের চাহিদা মোতাবেক চাঁদকে এমনভাবে দ্বিখণ্ডিত করে দেখিয়েছেন যে, কাফেরগন দুখণ্ডের মাঝে পাহাড় দেখতে পেয়েছিল। [বুখারীঃ ৩৬৩৬, মুসলিমঃ ২৮০০] কিন্তু তারপরও তারা ঈমান আনেনি। বরং আরো বেশী নিদর্শন দাবী করতে লাগল। আসলে তাদের উদ্দেশ্য ঈমান আনা নয়, তাদের উদ্দেশ্য হঠকারিতা। আল্লাহ বলেনঃ “তারা যত নিদর্শনই দেখুক না কেন ঈমান আনবে না”। [সূরা আল-আনআমঃ ২৫] আরো বলেনঃ “তারা যাবতীয় নিদর্শন দেখলেও ঈমান আনবে না”। [সূরা আল-আরাফঃ ১৪৬] আরো বলেনঃ “নিশ্চয়ই যাদের বিরুদ্ধে আপনার প্রতিপালকের বাক্য সাব্যস্ত হয়ে গেছে, তারা ঈমান আনবে না। যদিও তাদের কাছে সবগুলো নিদর্শন আসে, যতক্ষন পর্যন্ত না তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেখতে পাবে”। [সূরা ইউনুসঃ ৯৬-৯৭] অন্য আয়াতে বলেনঃ “আমরা তাদের কাছে ফিরিশতা পাঠালেও, মৃতেরা তাদের সাথে কথা বললেও এবং সকল বস্তুকে তাদের সামনে হাজির করলেও তারা কখনো ঈমান আনবে না; তবে যদি আল্লাহর ইচ্ছে হয়” [সূরা আল-আনআমঃ ১১১] অহংকার ও সত্যকে অস্বীকার করা তাদের মজ্জাগত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা সুস্পষ্ট বিষয়কেও জেনে বুঝে অস্বীকার করতে দ্বিধা করে না। আল্লাহ বলেনঃ “যদি তাদের জন্য আকাশের দরজা খুলে দেই এবং তারা সারাদিন তাতে আরোহন করতে থাকে, তবুও তারা বলবে, আমাদের দৃষ্টি সম্মোহিত করা হয়েছে; না, বরং আমরা এক জাদুগ্ৰস্ত সম্প্রদায় [সূরা আল-হিজরঃ ১৪-১৫] আরো বলেনঃ “তারা আকাশের কোন খন্ড ভেংগে পড়তে দেখলে বলবে, এটা তো এক পুঞ্জিভূত মেঘ ” [সূরা আত-তুরঃ ৪৪] আল্লাহ আরো বলেনঃ “আমরা যদি আপনার প্রতি কাগজে লিখিত কিতাবও নাযিল করতাম আর তারা যদি সেটা হাত দিয়ে স্পর্শও করত তবুও কাফিররা বলত, এটা স্পষ্ট জাদু ছাড়া আর কিছু নয়।” [সূরা আল-আনআমঃ ৭]

[২] অর্থাৎ আয়াত নাযিল করা একান্ত গায়েবী বিষয়। [কুরতুবী] আল্লাহ যা কিছু নাযিল করেছেন তা আমি পেশ করে দিয়েছি। আর যা তিনি নাযিল করেননি তা আমার ও তোমাদের জন্য “গায়েবী বিষয়” এর ওপর আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইখতিয়ার নেই। তিনি চাইলে তা নাযিল করতে পারেন। এখন আল্লাহ যা কিছু নাযিল করেননি তা আগে তিনি নাযিল করুন-একথার ওপর যদি তোমাদের ঈমান আনার বিষয়টি আটকে থাকে তাহলে তোমরা তার অপেক্ষায় বসে থাকো। [কুরতুবী] অথবা আয়াতের অর্থ, তোমরা আমাদের আল্লাহর ফয়সালার অপেক্ষা কর। তিনি হককে অবশ্যই বাতিলের উপর প্রকাশ করে দিবেন। [বাগভী]

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Yunus
Sura: 10
Verses :- 20
وَ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ
They say, “Why is a sign not sent down to him from his Lord?”
The Idolators requested a Miracle

Allah tells;

وَيَقُولُونَ لَوْلَا أُنزِلَ عَلَيْهِ ايَةٌ مِّن رَّبِّهِ

And they say:”How is it that not a sign is sent down on him from his Lord!”

These stubborn, lying disbelievers said, “Why would not a sign be revealed to Muhammad from his Lord.”

They meant a sign such as given to Salih. Allah sent the she-camel to Thamud.

They wanted Allah to change the mount of As-Safa into gold or remove the mountains of Makkah and replace them with gardens and rivers. Allah is capable of doing all of that, but He is All-Wise in His actions and statements.

Allah said:

تَبَارَكَ الَّذِى إِن شَأءَ جَعَلَ لَكَ خَيْراً مِّن ذلِكَ جَنَّـتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا الاٌّنْهَـرُ وَيَجْعَل لَّكَ قُصُوراً

بَلْ كَذَّبُواْ بِالسَّاعَةِ وَأَعْتَدْنَا لِمَن كَذَّبَ بِالسَّاعَةِ سَعِيراً

Blessed be He Who, if He wills, will assign you better than (all) that — Gardens under which rivers flow (Paradise) and will assign you palaces (in Paradise). Nay, they deny the Hour, and for those who deny the Hour, We have prepared a flaming Fire. (25:10-11)

He also said:

وَمَا مَنَعَنَأ أَن نُّرْسِلَ بِالاٌّيَـتِ إِلاَّ أَن كَذَّبَ بِهَا الاٌّوَّلُونَ

And nothing stops Us from sending the Ayat but that the people of old denied them. (17:59)

Allah’s way of dealing with His creatures is that He would give to them if they asked things from Him. But if they then didn’t believe He would expedite punishment for them.

When Allah’s Messenger was given the choice of Allah giving the people what they requested but if they didn’t believe they would be punished, or that their request would not be answered immediately, Allah’s Messenger chose the latter.

Allah guided His Prophet to answer their question by saying:

فَقُلْ إِنَّمَا الْغَيْبُ لِلّهِ

Say:”The Unseen belongs only to Allah…”

This Ayah means that the matter in its entirety is for Allah. He is well aware of the outcome of all matters.

فَانْتَظِرُواْ إِنِّي مَعَكُم مِّنَ الْمُنتَظِرِينَ

“…so wait you, verily, I am with you among those who wait.”

If you would not believe unless you witness that which you asked for, then wait for Allah’s judgement for me, as well as for yourselves.

Nonetheless, they had witnessed some of the signs and miracles of the Prophet, which were even greater than what they had asked for.

In their presence, the Prophet pointed to the moon when it was full and it split into two parts, one part behind the mountain and the other before them.

If they were seeking the guidance and firm knowledge by asking for signs, Allah would have known that and would have granted them what had been requested. But Allah knew that it was their obstinacy that was behind their request. Therefore Allah left them to suffer in their suspicion and doubt. Allah knew that none of them would believe.

This is similar to Allah’s statements:

إِنَّ الَّذِينَ حَقَّتْ عَلَيْهِمْ كَلِمَةُ رَبِّكَ لَا يُوْمِنُونَ

وَلَوْ جَأءَتْهُمْ كُلُّ ءايَةٍ

Truly, those, against whom the Word (Wrath) of your Lord has been justified, will not believe. Even if every sign should come to them. (10:96-97)

and;

وَلَوْ أَنَّنَا نَزَّلْنَأ إِلَيْهِمُ الْمَلَـيِكَةَ وَكَلَّمَهُمُ الْمَوْتَى وَحَشَرْنَا عَلَيْهِمْ كُلَّ شَىْءٍ قُبُلً مَّا كَانُواْ لِيُوْمِنُواْ إِلاَّ أَن يَشَأءَ اللَّهُ

And even if We had sent down unto them angels, and the dead had spoken unto them, and We had gathered together all things before their very eyes, they would not have believed, unless Allah willed. (6:111)

This was in addition to their arrogance. As Allah said in another Ayah:

وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَاباً مِّنَ السَّمَاءِ

And even if We opened to them a gate from the heaven. (15:14)

And He said:

وَإِن يَرَوْاْ كِسْفاً مِّنَ السَّمَأءِ سَـقِطاً

And if they were to see a piece of the heaven falling down. (52:44)

He also said:

وَلَوْ نَزَّلْنَا عَلَيْكَ كِتَـباً فِى قِرْطَاسٍ فَلَمَسُوهُ بِأَيْدِيهِمْ لَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُواْ إِنْ هَـذَا إِلاَّ سِحْرٌ مُّبِينٌ

And even if We had sent down unto you (O Muhammad) a Message written on paper so that they could touch it with their hands, the disbelievers would have said:`This is nothing but obvious magic!’ (6:7)

Such people don’t deserve to have their requests answered, for there is no benefit in answering them. These people are obstinate and stubborn as a result of their corruption and immorality. Therefore Allah told His Messenger to say:

فَانْتَظِرُواْ إِنِّي مَعَكُم مِّنَ الْمُنتَظِرِينَ

So wait you, verily, I am with you among those who wait.

Leave a Reply