(Book# 661) [ لِّلَّذِينَ أَحْسَنُواْ الْحُسْنَى যারা কল্যাণকর কাজ করে,তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ। For those who have done good is the best,] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 661)
[ لِّلَّذِينَ أَحْسَنُواْ الْحُسْنَى
যারা কল্যাণকর কাজ করে,তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ।
For those who have done good is the best,]
www.motaher21.net

সুরা: ইউনুস
সুরা:১০
২৬-২৭ নং আয়াত:-

لِّلَّذِينَ أَحْسَنُواْ الْحُسْنَى
যারা কল্যাণকর কাজ করে,তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ।
For those who have done good is the best,
لِلَّذِیۡنَ اَحۡسَنُوا الۡحُسۡنٰی وَ زِیَادَۃٌ ؕ وَ لَا یَرۡہَقُ وُجُوۡہَہُمۡ قَتَرٌ وَّ لَا ذِلَّۃٌ ؕ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۶﴾
যারা কল্যাণকর কাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ (জান্নাত) এবং আরো অধিক (আল্লাহর দীদার)। তাদের মুখমন্ডলকে মলিনতা আচ্ছন্ন করবে না এবং লাঞ্ছনাও না; তারাই হচ্ছে জান্নাতের অধিবাসী, তারা ওর মধ্যে অনন্তকাল বাস করবে।
For them who have done good is the best [reward] and extra. No darkness will cover their faces, nor humiliation. Those are companions of Paradise; they will abide therein eternally.

وَ الَّذِیۡنَ کَسَبُوا السَّیِّاٰتِ جَزَآءُ سَیِّئَۃٍۭ بِمِثۡلِہَا ۙ وَ تَرۡہَقُہُمۡ ذِلَّۃٌ ؕ مَا لَہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ مِنۡ عَاصِمٍ ۚ کَاَنَّمَاۤ اُغۡشِیَتۡ وُجُوۡہُہُمۡ قِطَعًا مِّنَ الَّیۡلِ مُظۡلِمًا ؕ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۷﴾
পক্ষান্তরে যারা মন্দ কাজ করে, তারা তাদের মন্দ কাজের শাস্তি পাবে ওর অনুরূপ মন্দ। আর লাঞ্ছনা তাদেরকে আচ্ছাদিত করে নেবে। আল্লাহ (এর শাস্তি) হতে তাদের রক্ষাকর্তা কেউই থাকবে না। তাদের মুখমন্ডল যেন অন্ধকার রাত্রির আস্তরণে আচ্ছাদিত। এরা হচ্ছে জাহান্নামের অধিবাসী, তারা ওর মধ্যে অনন্তকাল থাকবে।
But they who have earned [blame for] evil doings – the recompense of an evil deed is its equivalent, and humiliation will cover them. They will have from Allah no protector. It will be as if their faces are covered with pieces of the night – so dark [are they]. Those are the companions of the Fire; they will abide therein eternally.

২৬ ও ২৭ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

আল্লাহ তা‘আলা পূর্বে জান্নাতের কথা আলোচনা করার পর এখানে বর্ণনা করছেন যে, জান্নাত সকলের জন্য নয়। বরং যারা সৎ কাজ করে তাদের প্রতিদান সৎ, আর যারা অসৎ কাজ করে তাদের প্রতিদান অসৎ। যারা সৎ আমল করবে তারা তাদের সৎ কাজের প্রতিদান হিসেবে জান্নাত লাভ করবে, আর যারা মন্দ কাজ করবে তাদের প্রতিদান হিসেবে তারা জাহান্নামের আযাব ভোগ করবে। যারা ভাল কাজ করবে তাদেরকে তাদের প্রতিদান দেয়ার পরও আরো বৃদ্ধি করে দেয়া হবে। হাদীসে এসেছে, তাদেরকে দশ গুণ এমনকি সাতশত গুণ বেশি করে দেয়া হবে, বরং এর চেয়েও বেশি যা আল্লাহ তা‘আলার অন্যান্য দানের অন্তর্ভুক্ত। যেমন জান্নাতে হুর পাবে, পাবে প্রাসাদ ও আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি। আর এমন মনমুগ্ধকর জিনিস যা এ পর্যন্ত তার কাছে অজানা।

হাদীসে কুদসীতে এসেছে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِينَ مَا لَا عَيْنٌ رَأَتْ، وَلَا أُذُنٌ سَمِعَتْ، وَلَا خَطَرَ عَلَي قَلْبِ بَشَرٍ

আমি আমার সৎ বান্দাদের জন্য এমন কিছু তৈরি করে রেখেছি যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি এবং কোন মানুষের অন্তর কল্পনাও করতে পারেনি। (সহীহ বুখারী হা: ৩২৪৪, সহীহ মুসলিম হা: ২৮২৪)

এখানে زيادة বা বৃদ্ধি বলতে মূলত জান্নাতীরা যে আল্লাহ তা‘আলাকে দেখবে তা বুঝোনো হয়েছে। কারণ জান্নাতীদের জন্য এর চেয়ে বড় আর কোন পুরস্কার থাকবে না।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন, অতঃপর বললেন: যখন জান্নাতীগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে আর জাহান্নামীগণ জাহান্নামে প্রবেশ করবে, একজন ঘোষক ঘোষণা দেবে হে জান্নাতবাসীরা! আল্লাহ তা‘আলার কাছে তোমাদের জন্য একটি প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তিনি চান তা পূর্ণ করতে। জান্নাতীরা বলবে: তা কী? তিনি কি আমাদের নেকীর পাল্লা ভারী করে দেননি? আমাদের চেহারাকে উজ্জ্বল করে দেননি? আমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাননি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেননি? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর পর্দা তুলে নেবেন, তারা আল্লাহ তা‘আলাকে দেখবে। আল্লাহ তা‘আলার শপথ, আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে যা কিছু দান করেছেন তার মধ্যে আল্লাহ তা‘আলাকে দর্শন করার চেয়ে অধিক প্রিয় আর কিছুই নেই। এটাই হবে সবচেয়ে চক্ষু ঠাণ্ডাকারী ও মনে শান্তিদায়ক। (সহীহ মুসলিম হা: ১৮১)

সুতরাং মু’মিনরা কিয়ামতের মাঠে ও জান্নাতে আল্লাহ তা‘আলাকে দেখতে পাবে, এ সম্পর্কে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। (বিস্তারিত আকীদাহ তাহাবীয়া ও তাফসীর ইবনে কাসীর দ্রঃ)

قَتَرٌ وَّلَا ذِلَّةٌ অর্থাৎ কিয়ামতের মাঠে মু’মিনদের চেহারায় কোন প্রকার কালিন্য ও মলিনতা স্পর্শ করবে না। অর্থাৎ কোন দুশ্চিন্তা ও হয়রানি আক্রান্ত হবে না, যার কারণে চেহারায় মলিনতা ও দুশ্চিন্তা প্রকাশ পাবে এবং তারা সেখানে কোন প্রকার অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার হবে না। বরং সসম্মানে জান্নাতে চলে যাবে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(فَوَقٰهُمُ اللّٰهُ شَرَّ ذٰلِكَ الْيَوْمِ وَلَقَّاهُمْ نَضْرَةً وَّسُرُوْرًا)‏

“পরিণামে আল্লাহ তাদেরকে রক্ষা করবেন সে দিবসের অনিষ্ট হতে এবং তাদেরকে উৎফুল্লতা ও আনন্দ দান করবেন।” (সূরা দাহর ৭৬:১১)

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(تَعْرِفُ فِيْ وُجُوْهِهِمْ نَضْرَةَ النَّعِيْمِ ج يُسْقَوْنَ مِنْ رَّحِيْقٍ مَّخْتُوْمٍ)‏‏

“তুমি তাদের মুখমণ্ডলে স্বাচ্ছন্দ্যের দীপ্তি দেখতে পাবে, তাদেরকে মোহর করা বিশুদ্ধতম শরাব হতে পান করানো হবে।” (সূরা মুতাফফিফীন ৮৩:২৪)

আর যারা মন্দ আমল করবে তাদের প্রতিও কোন জুলুম বা অত্যাচার করা হবে না। তারা যা আমল করবে তার সমপরিমাণ শাস্তিই তাদেরকে দেয়া হবে। তাদেরকে কোন দ্বিগুণ, তিনগুণ দেয়া হবে না। তাদেরকে কিয়ামতের মাঠে অপমান ও লাঞ্ছনা আক্রান্ত করে নেবে। রাতের অন্ধকার কোন কিছু ছেয়ে নিলে যেমন তা দেখা যায় না তেমনি তাদের চেহারাগুলো এমন কালো আকার ধারণ করবে যে, চেহারার দিকে তাকানোই যাবে না। যেমন

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وُجُوْھٌ یَّوْمَئِذٍ مُّسْفِرَةٌﭵﺫ ضَاحِکَةٌ مُّسْتَبْشِرَةٌﭶﺆ وَوُجُوْھٌ یَّوْمَئِذٍ عَلَیْھَا غَبَرَةٌﭷﺫ تَرْھَقُھَا قَتَرَةٌﭸﺚ اُولٰ۬ئِکَ ھُمُ الْکَفَرَةُ الْفَجَرَةُ)‏

“এবং কতক মুখমণ্ডল হবে সেদিন ধূলি মিশ্রিত। সেগুলোকে আচ্ছন্ন করবে কালো বর্ণ। তারাই কাফির ও পাপাচারী।” (সূরা আবাসা ৮০:৩৮-৪২)

সুতরাং নিয়ামতপূর্ণ জান্নাত পেতে হলে এবং কঠিন শাস্তির জায়গা জাহান্নাম থেকে বাঁচতে হলে ঈমান ও সৎ আমলের কোন বিকল্প নেই। তাই আমরা অবশ্যই আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের প্রতি সঠিক বিশ্বাস রাখব এবং বেশি বেশি সুন্নাত অনুযায়ী আমল করব, তবেই সফলতা সম্ভব।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. যারা সৎ আমল করবে তারা ভাল প্রতিদান পাবে আর যারা অসৎ আমল করবে তারা মন্দ প্রতিফল পাবে।
২. জান্নাতীরা জান্নাতে আনন্দে থাকবে আর জাহান্নামীরা জাহান্নামে কষ্টে থাকবে ।
৩. জান্নাতীদের চেহারা থাকবে উজ্জ্বল আর পাপীদের চেহারা থাকবে মলিন ও কালো।
৪. জান্নাতীরা আল্লাহ তা‘আলা কে দেখতে পাবে কিয়ামতের মাঠে এবং জান্নাতে। আর জাহান্নামীরা কোথাও আল্লাহ তা‘আলাকে দেখতে পাবে না।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-

আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন যে, যে ব্যক্তি ভাল কাজ করলো সে পরকালে উত্তম প্রতিদান পাবে। কেননা, পুণ্যের বিনিময়ে পুণ্য পাওয়া যায়। বরং আরো কিছু বেশী পাওয়া যাবে। অর্থাৎ কমপক্ষে দশগুণ এমন কি সাতশ’ গুণ পর্যন্ত প্রাপ্ত হবে, বরং এর চেয়েও কিছু বেশী, যেগুলো আল্লাহ তা’আলার অন্যান্য দানের অন্তর্ভুক্ত। যেমন জান্নাতে সে পাবে হুর ও প্রাসাদ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর এমন মনোমুগ্ধকর জিনিস যা এই পর্যন্ত তার কাছে অজানা রয়েছে। কিন্তু সর্বোপরি নিয়ামত হচ্ছে মহান আল্লাহর দর্শন লাভ। এটা হবে সমস্ত করুণার মধ্যে বড় করুণা। কেননা, সে তার আমলের কারণে এর যোগ্য হবে না, বরং এটা হবে একমাত্র আল্লাহ পাকের সীমাহীন দয়ার কারণে। পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বিভিন্ন মনীষী হতে (আরবী) শব্দের যে তাফসীর বর্ণিত হয়েছে, তা হচ্ছে আল্লাহ পাকের পবিত্র চেহারার প্রতি দৃষ্টিপাত। ঐ মনীষীগণ হচ্ছেন আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ), হুযাইফা ইবনে ইয়ামান (রাঃ), আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ), সাঈদ ইবনে মুসাইয়াব (রাঃ), আবদুর রহমান ইবনে আবি লাইলা (রাঃ), আবদুর রহমান ইবনে সাবিত (রাঃ), মুজাহিদ (রঃ), ইকরামা (রঃ), আমির ইবনে সাদ (রঃ), আতা (রঃ), যহ্হাক (রঃ), হাসান (রঃ), কাতাদা (রঃ), সুদ্দী (রঃ), মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (রঃ) প্রমুখ। এই মতের সমর্থনে নবী (সঃ) হতে বহু হাদীসও বর্ণিত আছে। সুহাইব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) (আরবী)-এই আয়াতটি পাঠ করে বলেন, যখন জান্নাতবাসী জান্নাতে এবং জাহান্নামবাসী জাহান্নামে প্রবেশ করবে, তখন একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবেনঃ “হে জান্নাতবাসীরা! আল্লাহ তাআলা তোমাদের সাথে যে ওয়াদা করেছিলেন তা তিনি পূরণ করতে চান।” তখন জান্নাতবাসীরা বলবেঃ “সেই ওয়াদা কি? দাঁড়িপাল্লায় আমাদের (পুণ্যের) ওজন ভারী হয়েছে, আমাদের চেহারা উজ্জ্বল করা হয়েছে, আমরা জান্নাতে প্রবেশ করেছি এবং জাহান্নাম হতে মুক্তি পেয়েছি। (সুতরাং আল্লাহ পাকের ওয়াদা পূরণ হতে আর বাকী থাকলো কি?)।” এমন সময় হঠাৎ তাদের উপর থেকে পর্দা উঠিয়ে নেয়া হবে এবং তাদের দষ্টি আল্লাহ তা’আলার উপর পড়ে যাবে। আল্লাহর শপথ! জান্নাতীদের জন্যে এর চেয়ে বড় দান আর কিছুই হবে না। এটাই হবে সবচেয়ে বেশী চক্ষু ঠান্ডাকারী ও মনে শান্তিদায়ক। (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন) মোটকথা, বিভিন্ন হাদীসে রয়েছে যে, (আরবী) শব্দ দ্বারা আল্লাহ তা’আলার দর্শন বুঝানো হয়েছে।

আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ হাশরের ময়দানে জান্নাতাবাসীদের মুখমণ্ডল মলিন ও কালিমাময় হবে না। পক্ষান্তরে কাফিরদের চেহারা হবে ধূলিমলিন ও কালিমাযুক্ত। জান্নাতীরা কোনক্রমেই লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে না, প্রকাশ্যেও না, অপ্রকাশ্যেও না। বরং আল্লাহ পাক তো এই জান্নাতীদের সম্পর্কেই বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আল্লাহ তাদেরকে ঐ দিবসের কঠোরতা হতে নিরাপদে রাখবেন এবং তাদেরকে স্ফুর্তি ও আনন্দ দান করবেন।” (৭৬:১১) আল্লাহ দয়া করে আমাদেরকে এই লোকদেরই অন্তর্ভুক্ত করুন। আমীন।

আল্লাহ তা’আলা যখন সৌভাগ্যবানদের সম্পর্কে খবর দিলেন যে, তাদের পুণ্যের বিনিময় বহুগুণ দেয়া হয়ে থাকে তখন এখানে তিনি হতভাগ্য, পাপী ও মুশরিকদের অবস্থার বর্ণনা দিচ্ছেন যে, তাদের প্রতি ন্যায় বিচার করা হবে। আর তা হলো এই যে, তাদের পাপ ও অপরাধের শাস্তি দ্বিগুণ, চারগুণ দেয়া হবে না, বরং সমান সমান দেয়া হবে। আল্লাহ পাক বলেন- যখন ঐ পাপীদেরকে পেশ করা হবে তখন তোমরা তাদেরকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত অবস্থায় দেখতে পাবে। তোমরা এটা ধারণা করো না যে, আল্লাহ তা’আলা ঐ সব যালিমের আমল থেকে উদাসীন ও অমনোযোগী রয়েছেন। কিয়ামতের দিন পর্যন্ত তাদের শাস্তি বিলম্বিত করা হয়েছে। তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি হতে কেউ বাচাতেও পারবে না এবং তাদের জন্যে কোন সুপারিশকারীও হবে না। সেই দিন মানুষ বলবে- পালাবার স্থান কোথায়? কখনও সম্ভব নয়, কোথাও আশ্রয়ের স্থান নেই। সেই দিন শুধুমাত্র তোমার প্রতিপালকের সমীপেই ঠিকানা আছে। তাদেরকে আল্লাহর সামনে হাযির হতেই হবে। ঐ দিন তাদের মুখমণ্ডল এতো কালো হবে যে, যেন তাদের চেহারার উপর রাত্রির অন্ধকারের চাদর চড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেই দিন কতকগুলো মুখমণ্ডল হবে উজ্জ্বল, আর কতকগুলো চেহারা হবে কালো ও মলিন । যাদের চেহারা মলিন হবে তাদেরকে বলা হবে- তোমরাই কি ঈমান আনয়নের পর কুফরী করেছিলে? তাহলে এখন কুফরীর স্বাদ গ্রহণ কর। আর যাদের চেহারা উজ্জ্বল হবে তারা আল্লাহর করুণার মধ্যে থাকবে এবং ঐ করুণার মধ্যে তারা চিরকালই থাকবে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছে- “কতকগুলো চেহারা হবে উজ্জ্বল ও হাস্যময় এবং তারা থাকবে সদা প্রফুল্ল। আর কতকগুলো চেহারার উপর মলিনতা হেঁয়ে যাবে (অর্থাৎ কতকগুলো লোকের মুখমণ্ডল রাত্রির অন্ধকারের মত কালো দেখাবে)।”

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

* এই زِيَادَةٌ -‘অধিক’এর কয়েকটি অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু হাদীসে এর ব্যাখ্যা আল্লাহ তাআলার দীদার বা দর্শনসুখ বর্ণনা করা হয়েছে। জান্নাতীদেরকে জান্নাত ও জান্নাতের সকল নিয়ামত দান করার পর এই দীদার দ্বারা সম্মানিত করা হবে। (মুসলিম)

[১] পূর্ব আয়াতে জান্নাতীদের আলোচনা ছিল, তাতে বলা হয়েছিল যে, তাদেরকে তাদের নেক আমলের কয়েকগুণ বদলা দেওয়া হবে এবং পরে আল্লাহর দীদার লাভে ধন্য হবে। এই আয়াতে বলা হচ্ছে যে, অসৎ কর্মের বদলা তার সমপরিমাণ দেওয়া হবে। سَيِّئَاتٌ (মন্দ)এর অর্থ হলঃ কুফর, শিরক এবং অন্যান্য গুনাহের কাজ।

[২] যেমন আল্লাহ তাআলা মু’মিনদেরকে রক্ষা করবেন, অনুরূপ সেদিন তাদেরকে তাঁর বিশেষ অনুগ্রহ প্রদান করবেন, এ ছাড়া তাদের জন্য আল্লাহ তাআলা তাঁর বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরকে সুপারিশ করার অনুমতিও দেবেন, তাঁদের সুপারিশও তিনি গ্রহণ করবেন।

[৩] এটা এ কথার অতিশয়োক্তি যে, তাদের মুখমন্ডল খুবই কালো হবে। এর বিপরীত মু’মিনদের মুখমন্ডল সতেজ ও উজ্জ্বল হবে; যেমন সূরা আলে ইমরানের ৩:১০৬ নং আয়াত (يَوْمَ تَبْيَضُّ وُجُوهٌ وَتَسْوَدُّ وُجُوه), সূরা আবাসার ৮০:৩৮-৪১ নং আয়াত এবং সূরা কিয়ামাহ ৭৫:২২ নং আয়াতে এ কথা বর্ণিত হয়েছে।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
* তারা কেবল তাদের নেকী অনুযায়ীই প্রতিদান পাবে না বরং আল্লাহ‌ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে পুরস্কৃতও করবেন।

* নেককারদের মোকাবিলায় বদকারদের সাথে যে ব্যবহার করা হবে তা হচ্ছে এই যে, তারা যে পরিমাণ খারাপ কাজ করেছে তাদেরকে সেই পরিমাণ শাস্তি দেয়া হবে। অপরাধের চাইতে একটু সামান্য পরিমাণ বেশী শাস্তিও তাদেরকে দেয়া হবে না। (আরো বেশী জানার জন্য দেখুন সূরা নামল ১০৯(ক) টীকা)।
সুরা:- নমল ।
আয়াত নং :-৯০

وَ مَنْ جَآءَ بِالسَّیِّئَةِ فَكُبَّتْ وُجُوْهُهُمْ فِی النَّارِ١ؕ هَلْ تُجْزَوْنَ اِلَّا مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ

আর যারা অসৎকাজ নিয়ে আসবে, তাদের সবাইকে অধোমুখে আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে। তোমরা কি যেমন কর্ম তেমন ফল— ছাড়া অন্য কোন প্রতিদান পেতে পারো?

তাফসীর :

* কুরআন মজীদের বহু জায়গায় একথা সুস্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে যে, আখেরাতে অসৎ কাজের প্রতিদান ঠিক ততটাই দেয়া উচ্চ হবে যতটা কেউ অসৎ কাজ করেছে এবং সৎকাজের প্রতিদান আল্লাহ‌ মানুষের প্রকৃত কাজের তুলনায় অনেক বেশী দেবেন। এ সম্পর্কিত আরো বেশী দৃষ্টান্তের জন্য দেখুন সূরা ইউনুস ২৬-২৭ , আল কাসাস-৮৪ , আনকাবুত-৭ , সাবা ৩৭-৩৮ এবং আল মু’মিন ৪০ আয়াত।

* পাকড়াও হবার এবং উদ্ধার পাওয়ার সকল আশা তিরোহিত হবার পর অপরাধীদের চেহারার ওপর যে অন্ধকার ছেয়ে যায়।

তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-

* [১] এ আয়াতে (اَحْسَنُوا) বলে বুঝানো হয়েছে ঐ সমস্ত লোকদেরকে যারা ইহসানের সাথে তাদের সৎকাজ করেছে। আর ইহ্‌সানের অর্থ যা হাদীসে এসেছে তা হলো, এমনভাবে আল্লাহ্‌র ইবাদাত করা যেন সে আল্লাহকে দেখছে, যদি তা সম্ভব না হয় তবে এটা যেন বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ তো তাকে দেখছেন। সুতরাং যারা ইহসানের সাথে তাদের ইবাদাত সম্পাদন করেছে তারা হলো পরিপূর্ণ তাওহীদ বাস্তবায়নকারী তাদের জন্য দুটি পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে- [১] (الْحُسْنٰى) যার অর্থ জান্নাত। [২] (زِيَادَةٌ) যার অর্থ বাড়তি পাওনা। এর অর্থ এও হতে পারে যে, তাদেরকে শুধু তাদের কাজ অনুসারেই প্রতিফল দেয়া হবে না বরং তাদের আমলের সওয়াব দশগুণ ও ততোধিক বহুগুণ যেমন সত্তরগুণে বর্ধিত করে দেয়া হবে। এ ছাড়া তাদের জন্য সেখানে অট্টালিকা, উদ্যান ও সুন্দর সুন্দর স্ত্রীসমূহ থাকবে। [ইবন কাসীর]। তাছাড়া আরো থাকবে আল্লাহর দীদার। এ সম্পর্কে হাদীসে এসেছে যে, যখন জান্নাতবাসীগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং জাহান্নামবাসীগণ জাহান্নামে প্রবেশ করবে তখন একজন আহবানকারী ডেকে বলবেঃ হে জান্নাতবাসীগণ! তোমাদের সাথে আল্লাহর একটি ওয়াদা রয়েছে যা তিনি পূরণ করতে চান। তারা বলবেঃ সেটা কি? তিনি কি আমাদের মীযানের পাল্লা ভারী করে দেননি? আমাদের চেহারা শুভ্র করে দেন নি? আমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান নি? আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন নি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তারপর তাদের জন্য তাঁর পর্দা খুলে দেয়া হবে ফলে তারা তার দিকে তাকাবে। আল্লাহর শপথ করে বলছিঃ আল্লাহ তাদেরকে তাঁর দিকে তাকানোর চেয়ে প্রিয় এবং চক্ষু শীতলকারী আর কোন জিনিস দেননি। [সহীহ মুসলিমঃ ১৮১, তিরমিয়ীঃ ২৫৫২, মুসনাদে আহমাদ ৪/৩৩৩] সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যে, এখানে (زِيَادَةٌ) বা বাড়তি পাওনার মধ্যে আল্লাহর দীদার তথা তার চেহারা মুবারকের দিকে তাকানো ও আল্লাহ্ তা’আলাকে দেখার সৌভাগ্যও শামিল। সাহাবা, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীন, মুজতাহেদীনসহ পূর্ববতী ও পরবর্তী অনেক আলেম থেকে এ তাফসীর বর্ণিত হয়েছে। [তাবারী; বাগভী; কুরতুবী; ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]

[২] বরং তাদের চেহারা হবে শুভ্ৰ, মন হবে আনন্দে উদ্বেলিত। যেমনটি সূরা আল-ইনসানের ১১ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
* ‌[১] আল্লাহ তা’আলা হাশরের মাঠে কাফেরদের চেহারা কেমন হবে তা এ আয়াতসহ আরো বিভিন্ন আয়াতে বর্ণনা করেছেন। [যেমন সূরা আশ-শূরাঃ ৪৫, সূরা ইবরাহীমঃ 8২-88] |

[২] যেমনটি সূরা আল-কিয়ামাহ এর ১০-১২ নং আয়াতেও বর্ণিত হয়েছে।

[৩] যেমনটি সূরা আলে ইমরান এর ১০৬-১০৭ এবং সূরা আবাসা এর ৩৮-৪২ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।

 

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Yunus
Sura: 10
Verses :- 26-27
لِّلَّذِينَ أَحْسَنُواْ الْحُسْنَى
For those who have done good is the best,

The Reward of the Good-Doers

Allah says;

لِّلَّذِينَ أَحْسَنُواْ الْحُسْنَى

For those who have done good is the best,

Allah states that those who do good in this world — by having faith and performing righteous deeds — will be rewarded with a good reward in the Hereafter.

Allah said:

هَلْ جَزَاءُ الاِحْسَـنِ إِلاَّ الاِحْسَـنُ

Is there any reward for good other than good. (55:60)

Then Allah said:

وَزِيَادَةٌ

and even more.

the reward on the good deeds multiplied ten times to seven hundred times and even more on top of that.

This reward includes what Allah will give them in Paradise, such as the palaces, Al-Hur (virgins of Paradise), and His pleasure upon them.

He will give them what He has hidden for them of the delight of the eye.

He will grant them on top of all of that and even better, the honor of looking at His Noble Face.

This is the increase that is greater than anything that had been given. They will not deserve that because of their deeds, but rather, they will receive it by the grace of Allah and His mercy.

The explanation that this refers to looking at Allah’s Noble Face was narrated from Abu Bakr, Hudhayfah bin Al-Yaman, Abdullah bin Abbas, Sa`id bin Al-Musayyib, Abdur-Rahman bin Abu Layla, Abdur-Rahman bin Sabit, Mujahid, Ikrimah, Amir bin Sa`ad, Ata’, Ad-Dahhak, Al-Hasan, Qatadah, As-Suddi, Muhammad bin Ishaq, and others from the earlier and later scholars.

There are many Hadiths that contain the same interpretation. Among these Hadiths is what Imam Ahmad recorded from Suhayb that Allah’s Messenger recited this Ayah,

لِّلَّذِينَ أَحْسَنُواْ الْحُسْنَى وَزِيَادَةٌ

For those who have done good is the best and even more.

And then he said:

إِذَا دَخَلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ وَأَهْلُ النَّارِ النَّارَ نَادَى مُنَادٍ يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ إِنَّ لَكُمْ عِنْدَ اللهِ مَوْعِدًا يُريدُ أَنْ يُنْجِزَكُمُوهُ

فَيَقُولُونَ وَمَا هُوَ

أَلَمْ يُثَقِّلْ مَوَازِينَنَا

أَلَمْ يُبَيِّضْ وُجُوهَنَا وَيُدْخِلْنَا الْجَنَّــةَ وَيُجِرْنَا مِنَ النَّارِ

قَالَ فَيَكْشِفُ لَهُمُ الْحِجَابَ فَيَنْظُرُونَ إِلَيهِ فَوَاللهِ مَا أَعْطَاهُمْ اللهُ شَيْيًا أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِنَ النَّظَرِ إِلَيْهِ وَلَاا أَقَرَّ لاِاَعْيُنِهِم

When the people of Paradise enter Paradise, a caller will say:`O people of Paradise, Allah has promised you something that He wishes to fulfill.’

They will reply:`What is it?

Has He not made our Scale heavy?

Has He not made our faces white and delivered us from Fire?’

Allah will then remove the veil and they will see Him. By Allah, they have not been given anything dearer to them and more delightful than looking at Him.

Muslim and a group of Imams also related this Hadith.

Allah then said:

وَلَا يَرْهَقُ وُجُوهَهُمْ قَتَرٌ

Neither darkness nor dust shall cover their faces…

meaning, no blackness or darkness will be on their faces during the different events of the Day of Judgment. But the faces of the rebellious disbelievers will be stained with dust and darkness.

وَلَا ذِلَّةٌ

nor any humiliating disgrace,

meaning, they will be covered with degradation and disgrace. The believers, however will not be humiliated internally or externally, on the contrary, they will be protected and honored.

For as Allah has said:

فَوَقَـهُمُ اللَّهُ شَرَّ ذَلِكَ الْيَومِ وَلَقَّـهُمْ نَضْرَةً وَسُرُوراً

So Allah saved them from the evil of that Day, and gave them Nadrah (brightness) and joy. (76:11)

meaning, light in their faces and delight in their hearts.

May Allah make us among those by His grace and mercy.

أُوْلَـيِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
They are the dwellers of Paradise, they will abide therein forever.

 

The Reward of the Wicked Criminals

Allah says;

وَالَّذِينَ كَسَبُواْ السَّيِّيَاتِ جَزَاء سَيِّيَةٍ بِمِثْلِهَا وَتَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ

And those who have earned evil deeds, the recompense of an evil deed is the like thereof, and humiliating disgrace will cover them (their faces).

After Allah told us about the state of those happy people who have done right and He promised increase in reward, He continued to tell us about the unlucky, miserable ones.

He told us about His justice with them. He will reward them with similar evil, without any increase

وَتَرْهَقُهُمْ
(and will cover them),

meaning that their faces will be covered and overtaken by humiliation because of their sins and their fear from these sins.

Similarly Allah said:

وَتَرَاهُمْ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا خَـشِعِينَ مِنَ الذُّلِّ

And you will see them brought forward to it, (Hell) made humble by disgrace. (42:45)

He also said:

وَلَا تَحْسَبَنَّ اللَّهَ غَـفِلً عَمَّا يَعْمَلُ الظَّـلِمُونَ إِنَّمَا يُوَخِّرُهُمْ لِيَوْمٍ تَشْخَصُ فِيهِ الَابْصَـرُ

مُهْطِعِينَ مُقْنِعِى رُءُوسِهِمْ

Consider not that Allah is unaware of that which the wrongdoers do, but He gives them respite up to a Day when the eyes will stare in horror.

(They will be) hastening forward with necks outstretched, their heads raised up (towards the sky). (14:42�43)

Allah then said:

مَّا لَهُم مِّنَ اللّهِ مِنْ عَاصِمٍ

No defender will they have from Allah.

meaning, there will be no protectors to prevent them from punishment as Allah said:

يَقُولُ الاِنسَـنُ يَوْمَيِذٍ أَيْنَ الْمَفَرُّ

كَلَّ لَا وَزَرَ

إِلَى رَبِّكَ يَوْمَيِذٍ الْمُسْتَقَرُّ

On that Day man will say:”Where (is the refuge) to flee!”

No! There is no refuge! Unto your Lord (alone) will be the place of rest that Day. (75:10-12)

Allah’s statement:

كَأَنَّمَا أُغْشِيَتْ وُجُوهُهُمْ قِطَعًا مِّنَ اللَّيْلِ مُظْلِمًا

Their faces will be covered as it were pieces from the darkness of night.

means that their faces will be dark in the Hereafter.

This is similar to His statement:

يَوْمَ تَبْيَضُّ وُجُوهٌ وَتَسْوَدُّ وُجُوهٌ فَأَمَّا الَّذِينَ اسْوَدَّتْ وُجُوهُهُمْ أَكْفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَـنِكُمْ فَذُوقُواْ الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُونَ

وَأَمَّا الَّذِينَ ابْيَضَّتْ وُجُوهُهُمْ فَفِى رَحْمَةِ اللَّهِ هُمْ فِيهَا خَـلِدُونَ

On the Day (the Day of Resurrection) when some faces will become white and some faces will become black; as for those whose faces will become black (to them will be said):”Did you reject faith after accepting it! Then taste the torment (in Hell) for rejecting faith.”

And for those whose faces will become white, they will be in Allah’s mercy (Paradise), therein they shall dwell forever. (3:106-107)

He also said:

وُجُوهٌ يَوْمَيِذٍ مُّسْفِرَةٌ

ضَـحِكَةٌ مُّسْتَبْشِرَةٌ

وَوُجُوهٌ يَوْمَيِذٍ عَلَيْهَا غَبَرَةٌ

Some faces that Day will be bright, laughing, rejoicing at good news (of Paradise). And other faces that Day will be dust-stained. (80:38-40)

أُوْلَـيِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ

They are the dwellers of the Fire, they will abide therein forever.

Leave a Reply