أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 664)
[ قُلْ هَلْ مَّن يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ
কেউ আছে, যে সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনে ও পরে সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটায়?’
Say:”Is there one that originates the creation and then repeats it!”]
www.motaher21.net
সুরা: ইউনুস
সুরা:১০
৩৪-৩৬ নং আয়াত:-
[ قُلْ هَلْ مَّن يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ
কেউ আছে, যে সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনে ও পরে সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটায়?’
Say:”Is there one that originates the creation and then repeats it!”
قُلۡ ہَلۡ مِنۡ شُرَکَآئِکُمۡ مَّنۡ یَّبۡدَؤُا الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ ؕ قُلِ اللّٰہُ یَبۡدَؤُا الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ فَاَنّٰی تُؤۡفَکُوۡنَ ﴿۳۴﴾
বলুন, ‘তোমরা যাদের শরীক কর তাদের মধ্যে কি এমন কেউ আছে, যে সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনে ও পরে সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটায়?’ বলুন, ‘আল্লাহ্ই সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনেন ও পরে সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন ’। কাজেই (সত্য থেকে) তোমাদেরকে কোথায় ফেরানো হচ্ছে?
Say, “Are there of your ‘partners’ any who begins creation and then repeats it?” Say, ” Allah begins creation and then repeats it, so how are you deluded?”
قُلۡ ہَلۡ مِنۡ شُرَکَآئِکُمۡ مَّنۡ یَّہۡدِیۡۤ اِلَی الۡحَقِّ ؕ قُلِ اللّٰہُ یَہۡدِیۡ لِلۡحَقِّ ؕ اَفَمَنۡ یَّہۡدِیۡۤ اِلَی الۡحَقِّ اَحَقُّ اَنۡ یُّتَّبَعَ اَمَّنۡ لَّا یَہِدِّیۡۤ اِلَّاۤ اَنۡ یُّہۡدٰی ۚ فَمَا لَکُمۡ ۟ کَیۡفَ تَحۡکُمُوۡنَ ﴿۳۵﴾
বলুন, ‘তোমরা যাদেরকে শরীক কর তাদের মধ্যে কি এমন কেউ আছে, যে সত্যের পথ নির্দেশ করে?’ বলুন, ‘আল্লাহ্ই সত্য পথ নির্দেশ করেন। যিনি সত্যের পথ নির্দেশ করেন তিনি আনুগত্যের অধিকতর হকদার, না যাকে পথ না দেখালে পথ পায় না সে ? সুতরাং তোমাদের কি হয়েছে ? তোমরা কেমন বিচার করছ?’
Say, “Are there of your ‘partners’ any who guides to the truth?” Say, ” Allah guides to the truth. So is He who guides to the truth more worthy to be followed or he who guides not unless he is guided? Then what is [wrong] with you – how do you judge?”
وَ مَا یَتَّبِعُ اَکۡثَرُہُمۡ اِلَّا ظَنًّا ؕ اِنَّ الظَّنَّ لَا یُغۡنِیۡ مِنَ الۡحَقِّ شَیۡئًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌۢ بِمَا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۳۶﴾
আর তাদের অধিকাংশ কেবল অনুমানেরই অনুসরণ করে, সত্যের পরিবর্তে অনুমান তো কোন কাজে আসে না, তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ্ সে বিষয়ে সবিশেষ অবগত।
And most of them follow not except assumption. Indeed, assumption avails not against the truth at all. Indeed, Allah is Knowing of what they do.
৩৪-৩৬ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
মুশরিকদের বাতিল মা‘বূদের অপারগতা ও দুর্বলতা এবং তাদেরকে মা‘বূদ হিসেবে গুণান্বিত করা হয় তা যে উপযুক্ত নয় তার বিবরণ দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হে নাবী! তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর তোমাদের শরীকদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে, যে সৃষ্টির কোন কিছুর সূচনা করছে অতঃপর তা ফিরিয়ে আনতে পারবে? তাদের কোন জবাব থাকবে না, এসব কেউ করেনি একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া। আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টির সূচনা করেছেন এবং পূনরায় তা সৃষ্টি করবেন। এতে তাঁর কোন অংশীদার লাগবে না, কোন সাহায্যকারী লাগবে না, বরং তিনি প্রথমবার যেমন একাই সৃষ্টি করেছেন শেষবারে তিনিই একা সৃষ্টি করবেন। সুতরাং এ সত্য মা‘বূদের ইবাদত করা থেকে কোন্ দিকে ফিরে যাচ্ছো?
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِه۪ٓ اٰلِهَةً لَّا يَخْلُقُوْنَ شَيْئًا وَّهُمْ يُخْلَقُوْنَ وَلَا يَمْلِكُوْنَ لِأَنْفُسِهِمْ ضَرًّا وَّلَا نَفْعًا وَّلَا يَمْلِكُوْنَ مَوْتًا وَّلَا حَيٰوةً وَّلَا نُشُوْرًا)
“আর তারা তাঁর পরিবর্তে মা‘বূদরূপে গ্রহণ করেছে অন্যদেরকে, যারা কিছুই সৃষ্টি করে না, বরং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং তারা নিজেদের অপকার অথবা উপকার করার ক্ষমতা রাখে না এবং মৃত্যু, জীবন ও পুরুত্থানের ওপরও কোন ক্ষমতা রাখে না।” (সূরা ফুরকান ২৫:৩)
এ ছাড়াও সূরা রূমের ৪০ নং আয়াতে, সূরা ফাতিরের ৩ নং আয়াতে, সূরা নাহলের ১৭ নং আয়াতে সূরা আনকাবুতের ১৭ নং আয়াতে এ সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে।
পরের আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদের কাছে আরো সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরছেন, হে মুশরিকরা! তোমাদের এমন কোন শরীক আছে কি, যে সত্য পথের সন্ধান দিতে পারে? তাদের কাছে এমন কোন কিতাব বা পথ প্রদর্শক আছে কি? কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা সঠিক পথের সন্ধান দিয়ে থাকেন। তিনি মানুষদেরকে সঠিক পথের দিশা দিতে যুগে যুগে নাবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন এবং কিতাব দিয়েছেন। সুতরাং কে অনুসরণের যোগ্য? যিনি সঠিক পথের দিশা দিতে পারেন তিনি, নাকি যাকে পথ না দেখালে পথ দেখে না সে? আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِذْ قَالَ لِأَبِيْهِ يٰٓأَبَتِ لِمَ تَعْبُدُ مَا لَا يَسْمَعُ وَلَا يُبْصِرُ وَلَا يُغْنِيْ عَنْكَ شَيْئًا)
যখন তার পিতাকে বলেছিল: হে আমার পিতা! তুমি কেন এমন বস্তুর ইবাদত কর যা শোনে না দেখে না আর তোমার কোন কাজে আসে না। (সূরা মারইয়াম ১৯:৪২)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(قَالَ اَتَعْبُدُوْنَ مَا تَنْحِتُوْنَﮮﺫوَاللہُ خَلَقَکُمْ وَمَا تَعْمَلُوْنَﮯ)
“সে (ইবরাহীম) বলল: তোমরা কি তাদেরই উপাসনা কর, যাদেরকে তোমরা নিজেরাই নির্মাণ কর? অথচ আল্লাহ তা‘আলাই সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমরা যা কর তা-ও।” (সূরা সফফাত ৩৭:৯৫-৯৬)
অতএব সতর্ক হওয়া উচিত কিভাবে আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে অন্যের ইবাদত করছো এবং কিভাবে আল্লাহ তা‘আলার সাথে শরীক স্থাপন করছো। এরূপ ফায়সালা কখনো ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না।
মূলত যারা মুশরিক তাদের অধিকাংশই ধারণার অনুসরণ করে থাকে। তাদের মা‘বূদদের ব্যাপারে তাদের ধারণা এরা আল্লাহ তা‘আলার ওলী, এরা অনেক কিছু করতে পারে, এদের কাছে চাইলে আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে এনে দিতে পারবে। আমরা যে পাপ করছি তাতে আল্লাহ তা‘আলার কাছে চাইলে আল্লাহ তা‘আলা নাও দিতে পারেন। সুতরাং তাদের নৈকট্য অর্জন করার জন্য মাঝে মাঝে তাদের কাছে বিভিন্ন কুরবানী, হাদীয়া ও দান এবং উপহার নিয়ে যাওয়া ভাল কাজ। এ ধারণা করে কবরে শায়িত ওলীর কবরে টাকা, কবরে সিজদা ও চুমা খাওয়া ইত্যাদি কাজ করে থাকে। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা বলছেন, সত্যের কাছে ধারণা কোন উপকারে আসতে পারে না। সত্য হল কুরআন, সত্য হল হাদীস। কুরআন ও হাদীসে আল্লাহ তা‘আলা সঠিক পথ বর্ণনা করে দিয়েছেন। সুতরাং কুরআন ও সুন্নাহ বাদ দিয়ে নিজের ধারণা ও খেয়াল-খুশি মতো চললে কোন দিন সফলকাম হওয়া যাবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত কেউ কিছু সৃষ্টি করেনি এবং সৃষ্টি করতেও পারবে না।
২. আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া বাতিল মা‘বূদেরা কোন কিছুর ক্ষমতা রাখে না।
৩. ধারণাপ্রসূত আমল অধিকাংশই মিথ্যা।
৪. আল্লাহ তা‘আলাকে তার সৃষ্টির সাথে সমান মনে করা যাবে না।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
সৃষ্টির সূচনা সম্পর্কে মুশরিকরাও স্বীকার করতো যে, এটা একমাত্র আল্লাহরই কাজ। তার সাথে যাদেরকে তারা শরীক করে তাদের কারো এ কাজে কোন অংশ নেই। আর সৃষ্টির পুনরাবৃত্তির ব্যাপারটিও সুস্পষ্ট। অর্থাৎ প্রথমে যিনি সৃষ্টি করেন তার পক্ষেই দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করা সম্ভব। কিন্তু যে প্রথমবারই সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়নি সে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করতে পারে কেমন করে? এটি যদিও একটি অকাট্য যুক্তিসঙ্গত কথা এবং মুশরিকদের মন ও ভেতর থেকে এর সত্যতার সাক্ষ্য দিতো তবুও তারা শুধুমাত্র এ কারণে একথা স্বীকার করতে ইতস্তত করতো যে, এটা মেনে নিলে পরকাল অস্বীকার করা কঠিন হয়ে পড়বে। এ কারণেই পূর্ববর্তী প্রশ্নের জবাবে তো আল্লাহ বললেন যে, তারা নিজেরাই বলবে, যে এটা আল্লাহর কাজ। কিন্তু এখানে এর পরিবর্তে নবী (সা.) কে বলা হচ্ছে, তুমি জোরালো কণ্ঠে বলে দাও প্রথমবার সৃষ্টি এবং সৃষ্টির পুনরাবৃত্তি সবই একমাত্র আল্লাহর কাজ।
* যখন তোমাদের জীবনের সূচনার প্রান্তভাগ আল্লাহর হাতে এবং শেষের প্রান্ত ভাগও তাঁরই হতে। তখন নিজেদের কল্যাণকামী হয়ে একবার ভেবে দেখো, তোমাদের কিভাবে একথা বুঝানো হয়েছে, এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আল্লাহ ছাড়া অন্য জন তোমাদের বন্দেগী ও নযরানা লাভের অধিকার লাভ করেছে?
* এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। একটু বিস্তারিতভাবে এটিকে বুঝে নিতে হবে। দুনিয়ায় মানুষের প্রয়োজন শুধুমাত্র তার খাদ্য, পানীয়, পোশাক ও জীবন যাপনের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি লাভ করা এবং বিপদ-আপদ ও ক্ষতি থেকে সংরক্ষিত থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং জীবন যাপন করার সঠিক পদ্ধতি জানাও তার একটি প্রয়োজন (এবং সবচেয়ে বড় প্রয়োজন)। তার আরো জানতে হবে, নিজের ব্যক্তিগত সত্তার সাথে, নিজের শক্তি, সমার্থ, যোগ্যতা ও কর্মক্ষমতার সাথে, পৃথিবীতে যে উপায় উপকরণ ও সাজ-সরঞ্জাম তার কর্তৃত্বাধীনে আছে তার সাথে, যে অসংখ্য মানুষের সাথে বিভিন্নভাবে তাকে জড়িত হতে হয় তাদের সাথে এবং সামগ্রিকভাবে যে বিশ্ব ব্যবস্থার আওতাধীনে তাকে কাজ করতে হয় তার সাথে তার কি ব্যবহার করতে হবে এবং কিভাবে করতে হবে। এটা জানা এ জন্য প্রয়োজন যেন তার জীবন সামগ্রিকভাবে সফলকাম হয় এবং তার প্রচেষ্টা ও পরিশ্রম বিভিন্ন ভুল পথে নিয়োজিত হয়ে ধ্বংস হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। এ সঠিক পদ্ধতির নাম হক বা সত্য আর যে পথ নিদর্শনা মানুষকে এ পদ্ধতির দিকে নিয়ে সেটিই হকের হেদায়াত বা সত্যের পথ নির্দেশনা। কুরআন সমস্ত মুশরিককে এবং নবীর শিক্ষা মেনে নিতে অস্বীকার করেছে এমন সকল লোককে জিজ্ঞেস করে, তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের বন্দেগী করো তাদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি যার মাধ্যমে তোমরা সত্যের পথ নির্দেশনা লাভ করতে পার? অবশ্যই সবাই জানে, এর জবাব না ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ মানুষ আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে বন্দেগী করে তারা দু’টি বড় বড় ভাগে বিভক্ত।
একঃ দেব-দেবী, জীবিতও মৃত মানুষ, যাদের পূজা করা হয়। তারা অলৌকিক পদ্ধতিতে মানুষের প্রয়োজন পূর্ণ করবে এবং তাকে বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করবে এ উদ্দেশ্যেই মানুষ তাদের দিকে রুজু হয়। আর সত্যের পথ নির্দেশনার ব্যাপারে বলা যায়, এ জিনিসটা কখনো ঐসব দেব-দেবী ইত্যাদির পক্ষ থেকে আসেওনি, মুশরিকরাও কখনো এজন্য তাদের কাছে ধর্ণা দেয়নি এবং কোন মুশরিক একথা বলেও না যে, তার দেবতারা তাকে নৈতিকতা, সামাজিক জীবন যাপন পদ্ধতি, সাংস্কৃতি, বিধান, অর্থনীতি, রাজনীতি, আইন আদালত, ইত্যাদির মূলনীতি শেখায়।
দুইঃ এমন ধরনের মানুষ যাদের রচিত নীতিমালা ও আইনের আনুগত্য করা হয়। এ দিক দিয়ে তারা যে নেতা এবং পথপ্রদর্শক, তাতে কোনই সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে তারা কি সত্য পন্থী নেতা বা নেতা হতে পারে? মানুষের জীবন যাপনের সঠিক মূলনীতি রচনা করার জন্য যেসব তত্ত্ব জানা প্রয়োজন তাদের কেউ কি সেসব সম্পর্কে পুরোপুরি জ্ঞান রাখে? মানুষের জীবনের সাথে সম্পর্কিত সমস্যাগুলো যে বিস্তীর্ণ পরিসরে ছড়িয়ে আছে তাদের কারো দৃষ্টি কি তার সবটার ওপর পৌঁছে যায়? তাদের কেউ কি এমন সব দুর্বলতা, স্বার্থ প্রীতি, একদেশদর্শিতা, গোষ্ঠিপ্রীতি, ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠিগত আশা আকাঙ্ক্ষা লোভ লালসা ও ঝোক প্রবণতা থেকে মুক্ত যা মানুষের সমাজ জীবনের জন্য ন্যায়নিষ্ঠা আইন প্রণয়নের পথে বাধা হয়ে থাকে? জবাব যদি না বাচক হয় এবং এ কথা সুস্পষ্ট যে, কোন সুস্থ বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তি এ প্রশ্নগুলোর হাঁ বাচক জবাব দিতে পারবেন না তাহলে এরা কি সত্য পথ নির্দেশনার উৎস হতে পারে?
এ কারণে কুরআন এ প্রশ্ন করে, হে লোকেরা! তোমাদের এ ধর্মীয় ও তামাদ্দুনিক প্রভুদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি যে তোমাদের সত্য সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করতে পারে? ওপরের প্রশ্নগুলোর সাথে মিলে এ শেষ প্রশ্নটি দ্বীন ও ধর্মের সমগ্র বিষয়ের ফয়সালা করে দেয়। মানুষের সমস্ত প্রয়োজন দুই ধরনের, এক ধরনের প্রয়োজন হচ্ছে, তার একজন প্রতিপালক হবে, একজন আশ্রয়দাতা হবে, একজন প্রার্থনা শ্রবণকারী ও অভাব পূরণকারী হবে। এ কার্যকারণের জগতের অস্থায়ী ও অস্থিতিশীল সহায়গুলোর মধ্যে অবস্থান করে সে তার স্থায়ী সহায় অবলম্বন করতে পারবে। বস্তুত ওপরের প্রশ্নগুলো এ ফয়সালা করে দিয়েছে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ এ প্রয়োজন পূর্ণ করতে পারবে না। আর এক ধরনের প্রয়োজন হচ্ছে এই যে, এমন একজন পথ প্রদর্শক থাকতে হবে যিনি দুনিয়ায় বসবাস করার সঠিক নীতি নির্ধারণ করে দেবেন এবং যার দেয়া জীবন বিধানের আনুগত্য পরিপূর্ণ আস্থার সাথে করা যেতে পারে। এই শেষ প্রশ্নটি এ ব্যাপারটিরও মীমাংসা করে দিয়েছে যে, একমাত্র আল্লাহই সেই পথ প্রদর্শক হতে পারেন। এরপরে একমাত্র জিদ ও হঠকারিতা ছাড়া মানুষের মুশরিকী ধর্ম ও ধর্মনিরপেক্ষ () তামাদ্দুনিক, নৈতিক ও রাজনৈতিক নীতির সাথে লেপটে থাকার আর কোন কারণ থাকে না।
* যারা বিভিন্ন ধর্ম প্রবর্তন করেছে, দর্শন রচনা করেছে এবং জীবন বিধান তৈরী করেছে, তারাও এসব কিছু জ্ঞানের ভিত্তিতে নয় বরং আন্দাজ অনুমানের ভিত্তিতে করেছে। আর যারা এসব ধর্মীয় ও দ্বীনি নেতৃবৃন্দের আনুগত্য করেছে তারাও জেনে বুঝে নয় বরং নিছক অনুমানের ভিত্তিতে তাদের পেছনে চলেছে। কারণ তরা মনে করে, এত বড় বড় লোকেরা যখন একথা বলেন এবং আমাদের বাপ দাদারা এসব মেনে আসছেন আবার এ সঙ্গে দুনিয়ার বিপুল সংখ্যক লোক এগুলো মেনে নিয়ে এ অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে তখন নিশ্চয়ই এই লোকেরা ঠিক কথাই বলে থাকবেন।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৩৪-৩৬ নং আয়াতের তাফসীর:
মুশরিকরা যে আল্লাহর সাথে গায়রুল্লাহকে মিলিয়ে দিয়েছে এবং প্রতিমা পূজায় লিপ্ত হয়ে পড়েছে, এটা যে বাতিল পন্থা, এ কথাই এখানে আল্লাহ পাক বলেছেন। তিনি স্বীয় নবী (সঃ)-কে সম্বোধন করে বলছেন- হে নবী! তুমি এই মুশরিকদেরকে জিজ্ঞেস করঃ “হে মুশরিকদের দল! আচ্ছা বলতো, তোমাদের নিরূপিত শরীকদের মধ্যে এমন কি কেউ আছে, যে আসমান ও যমীনকে সৃষ্টি করেছে? অতঃপর এতে যে মাখলুকাত রয়েছে ওগুলোকে অস্তিত্বে এনেছে? আকাশে যা কিছু রয়েছে ওগুলোকে অস্তিত্বে এনেছে? আকাশে যা কিছু রয়েছে। ওগুলোকে তারা স্ব স্ব স্থান থেকে সরাতে পারবে কি? বা ওগুলোর কোন পরিবর্তনে সক্ষম হবে কি? অথবা ওগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে পুনরায় নতুন মাখলুক সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখে কি? হে নবী (সঃ)! তুমি তাদেরকে বল যে, তারা এরূপ কাউকেও পেশ করতে পারবে না। এটা তো একমাত্র আল্লাহরই কাজ। এটা জানা সত্ত্বেও কেন তোমরা সঠিক পথ ছেড়ে ভুল পথের দিকে ঝুঁকে পড়ছো? সত্য পথের সন্ধান দেয় এমন কেউ আছে কি? এরূপ পথ প্রদর্শন তো করতে পারেন একমাত্র আল্লাহ। এটা তোমরা নিজেরাও জান যে, তোমাদের শরীকরা একজনকেও ভ্রান্ত পথ হতে সঠিক পথে আনতে পারে না। একমাত্র আল্লাহ তাআলাই পথভ্রষ্টকে সুপথ প্রদর্শন করতে সক্ষম। তিনি ভ্রান্ত পথ হতে সঠিক পথের দিকে মানুষের মনকে ফিরিয়ে দিতে পারেন। সত্য পথের পথিকের যে অনুসরণ করে এবং যার অন্তদৃষ্টি রয়েছে সেই ভাল, না ঐ ব্যক্তি ভাল, যে একটু হিদায়াতও করতে পারে না, বরং নিজের অন্ধত্বের কারণে এরই মুখাপেক্ষী যে, কেউ যেন তারই হাত ধরে নিয়ে চলে? ইবরাহীম (আঃ) স্বীয় পিতাকে সম্বোধন করে বলেছিলেনঃ “হে পিতঃ! আপনি অন্ধ ও বধির মাবুদের উপাসনা করছেন কেন, যে আপনার কোনই উপকারে আসে না?” স্বীয় কওমকেও তিনি লক্ষ্য করে বলেছিলেনঃ “তোমরা তোমাদের নিজেদেরই নির্মিত বস্তুর ইবাদত করছো! অথচ তোমাদেরকে ও তোমাদের মাবুদদেরকে আল্লাহ তা’আলাই সৃষ্টি করেছেন! তোমাদের সিদ্ধান্ত কতই না ভুল সিদ্ধান্ত! তোমাদের জ্ঞান লোপ পেয়ে গেছে। তোমরা কি করে আল্লাহকে ও তার মাখলুককে সমান করে দিলে? একেও মানছো, তাকেও মানছো! অতঃপর আল্লাহ থেকে সরে গিয়ে তোমাদের শরীকদের দিকে তোমরা ঝুঁকে পড়ছো? মহামর্যাদাপূর্ণ প্রতিপালক আল্লাহকেই কেন তোমরা ইবাদতের জন্যে বিশিষ্ট করে নিচ্ছ না? একমাত্র তাঁরই ইবাদত করলেই তো তোমরা বিভ্রান্ত পথ থেকে ফিরে আসতে পারতে! আর বিশেষ করে আল্লাহর কাছেই কেন প্রার্থনা করছো না?” এ লোকগুলো কোন দলীলকেই কাজে লাগাচ্ছে না। বিশ্বাস ছাড়াই শুধু কল্পনার উপরেই তারা প্রতিমা পূজার ভিত্তি স্থাপন করেছে। কিন্তু এতে তাদের কোনই লাভ হবে না। আল্লাহ তাআলা তাদের সমস্ত কাজ সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফহাল। এটা এই কাফিরদের জন্যে হুমকি ও কঠিন ভয় প্রদর্শন। কেননা, তিনি সংবাদ দিচ্ছেন যে, সত্বরই তারা তাদের এই বোকামির শাস্তি পাবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
* মুশরিকদের শিরক কর্মের অসারতাকে পরিষফুটিত করার জন্য তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে যে, বল, ‘তোমরা যাদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক করছ, তারা কি এই বিশ্বজগৎকে প্রথমে সৃষ্টি করেছে? অথবা পুনরায় তা সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখে?’ কক্ষনই না। প্রথম সৃষ্টিকারীও আল্লাহ এবং কিয়ামতের দিন তিনিই পুনরায় সকলকে জীবিত করবেন। সুতরাং তোমরা হিদায়াতের পথ ছেড়ে কোথায় ফিরে যাচ্ছ?
*[১] অর্থাৎ, পথ ভুলে যাওয়া মুসাফিরদের পথ দানকারী এবং অন্তরকে ভ্রষ্টতা থেকে হিদায়াতের দিশা দানকারীও একমাত্র আল্লাহ। ওরা যাদেরকে শরীক করে, তারা এরূপ করতে সক্ষম নয়।
[২] অর্থাৎ, অনুসরণীয় ব্যক্তি কে? যে ব্যক্তি দর্শন করে, শ্রবণ করে এবং মানুষকে সঠিক পথের দিশা দেয় সে, নাকি ঐ ব্যক্তি যে অন্ধ ও বধির হওয়ার কারণে নিজে ততক্ষণ পথ চলতেও পারে না, যতক্ষণ না তাকে অন্য লোক পথে না রেখে আসে বা হাত ধরে না নিয়ে যায়?
[৩] অর্থাৎ, তোমাদের জ্ঞানের কি হয়ে গেছে? তোমরা কিভাবে আল্লাহ ও তাঁর সৃষ্টিকে সমান ভাবছ? এবং ইবাদতে আল্লাহর সাথে অন্যদেরকেও শরীক করছ? অথচ এই সব দলীলের দাবী হচ্ছে যে, একমাত্র সেই আল্লাহকেই একমাত্র উপাস্য মানা হোক এবং সব রকমের ইবাদত একমাত্র তারই জন্য নির্দিষ্ট মানা হোক।
* [১] সার কথা হল যে, মানুষ শুধু ধারণাবশে চলে অথচ তারা জানে যে, হক, সত্য, বাস্তব ও প্রমাণপুঞ্জের মোকাবেলায় খেয়াল-খুশি এবং অনুমান ও ধারণার কোন মূল্যই নেই। কুরআন শরীফে ظن শব্দটি একীন (দৃঢ়বিশ্বাস) এবং ধারণা দুই অর্থে ব্যবহার হয়েছে। এখানে উদ্দেশ্য হল, দ্বিতীয় অর্থ; অর্থাৎ (ধারণা)।
[২] অর্থাৎ, তিনি তাদের এই হঠকারিতার শাস্তি দেবেন। কারণ প্রমাণ না থাকার পরেও, তারা শুধু উদ্ভট কল্পনা ও বিকৃত ধারণার পিছনে পড়েছিল এবং জ্ঞান বুদ্ধি দ্বারা কোন কাজ নেয়নি ।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
* সৃষ্টির সূচনা সম্পর্কে মুশরিকরাও স্বীকার করতো যে, এটা একমাত্র আল্লাহরই কাজ। তাঁর সাথে যাদেরকে তারা শরীক করে তাদের কারো এ কাজে কোন অংশ নেই। আর সৃষ্টির পুনরাবৃত্তির ব্যাপারটিও সুস্পষ্ট। অর্থাৎ প্রথমে যিনি সৃষ্টি করেন তাঁর পক্ষেই দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করা সম্ভব। কিন্তু যে প্রথমবারই সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়নি সে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করতে পারে কেমন করে? অন্য আয়াতেও আল্লাহ তা ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, “আল্লাহ, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তোমাদেরকে রিযক দিয়েছেন, তারপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন অবশেষে তিনি তোমাদেরকে জীবিত করবেন। (আল্লাহ্র সাথে শরীক সাব্যস্তকৃত) তোমাদের মা’বুদগুলোর এমন কেউ আছে কি, যে এসবের কোন কিছু করতে পারে? তারা যাদেরকে শরীক করে, তিনি (আল্লাহ) সে সব (শরীক) থেকে মহিমাময়-পবিত্র ও অতি উর্ধ্বে।” [সূরা আর-রুম: ৪০] আরও বলেন, “আর তারা তার পরিবর্তে ইলাহরূপে গ্রহণ করেছে অন্যদেরকে, যারা কিছুই সৃষ্টি করে না, বরং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং তারা নিজেদের অপকার কিংবা উপকার করার ক্ষমতা রাখে না এবং মৃত্যু, জীবন ও উত্থানের উপরও কোন ক্ষমতা রাখে না।” [সূরা আল-ফুরকান: ৩]
* আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা সমস্ত মুশরিককে এবং নবীর শিক্ষা মেনে নিতে অস্বীকার করেছে এমন সকল লোককে জিজ্ঞেস করে, তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের বন্দেগী করো তাদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি যার মাধ্যমে তোমরা সত্যের পথনির্দেশনা লাভ করতে পারো? অবশ্যি সবাই জানে, এর জবাব না’ ছাড়া আর কিছুই নয়। যদি না পারে তবে কেবলমাত্র যিনি পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত কে হিদায়াত দিতে পারেন তিনি হচ্ছেন আল্লাহ। যিনি ব্যতীত কোন হক ইলাহ নেই। তাহলে বান্দা কি তার অনুসরণ করবে যে হকের দিকে পথ দেখাতে পারে, যে অন্ধত্ব থেকে চক্ষুষ্মান করতে পারে, নাকি অনুসরণ করবে তার যে তার অন্ধ ও বোবা হওয়ার কারণে কোন কিছুর দিকেই পথ দেখাতে পারে না? [ইবন কাসীর] এ ব্যাপারটিই ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তার পিতাকে বলেছিলেন, “হে আমার প্রিয় পিতা! আপনি তার ইবাদাত করেন কেন যে শুনে না, দেখে না এবং আপনার কোন কাজেই আসে না?” [সূরা মারইয়াম: ৪২]
* তাদের নেতারা যারা বিভিন্ন ধর্ম প্রবর্তন করেছে, দর্শন রচনা করেছে তারাও এসব কিছু জ্ঞানের ভিত্তিতে নয় বরং আন্দাজ-অনুমানের ভিত্তিতে এগুলোকে ইলাহ সাব্যস্ত করে নিয়েছে। অনুমান করেই বলছে যে এগুলো শাফা’আত করবে। অথচ এ ব্যাপারে তাদের কোন দলীল-প্রমাণ নেই। আর যারা এসব ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের আনুগত্য করেছে তারাও জেনেবুঝে নয় বরং নিছক অন্ধ অনুকরণের ভিত্তিতে তাদের পেছনে চলেছে। [কুরতুবী] কারণ তারা মনে করে, এত বড় বড় লোকেরা যখন একথা বলেন এবং আমাদের বাপ-দাদারা এসব মেনে আসছেন আবার এ সংগে দুনিয়ার বিপুল সংখ্যক লোক এগুলো মেনে নিয়ে এ অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে তখন নিশ্চয়ই এই লোকেরা ঠিক কথাই বলে থাকবেন।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Yunus
Sura: 10
Verses :- 34-36
[ قُلْ هَلْ مَّن يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ
Say:”Is there one that originates the creation and then repeats it!”
This invalidates and falsifies their claims for committing Shirk with Allah and worshipping different idols and rivals
Allah says:
قُلْ هَلْ مِن شُرَكَأيِكُم مَّن يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ
Say:”Is there of your partners one that originates the creation and then repeats it!”
meaning, who is the one who started the creation of these heavens and earth and created all the creatures in them! Who can place the planets and the stars in their positions! Who can then repeat the process of the creation
قُلِ اللّهُ
Say:”Allah.”
It is He Who does this. He does it by Himself, alone without partners.
قُلِ اللّهُ
يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ
Say:”Allah originates the creation and then He repeats it.
فَأَنَّى تُوْفَكُونَ
“Then how are you deluded away (from the truth)!”
How is it that you are so misled from the right path to falsehood.
قُلْ هَلْ مِن شُرَكَأيِكُم مَّن يَهْدِي إِلَى الْحَقِّ قُلِ اللّهُ يَهْدِي لِلْحَقِّ
Say:”Is there of your partners one that guides to the truth!”
Say:”It is Allah who guides to the truth…”
You know that your deities are incapable of guiding those who are astray. It is Allah alone Who guides the misled and confused ones and turns the hearts from the wrong path to the right path. It is Allah, none has the right to be worshipped but He.
أَفَمَن يَهْدِي إِلَى الْحَقِّ أَحَقُّ أَن يُتَّبَعَ أَمَّن لاَّ يَهِدِّيَ إِلاَّ أَن يُهْدَى
Is then He Who guides to the truth more worthy to be followed, or he who finds not guidance (himself) unless he is guided!
Will the servant then follow the one who guides to the truth so that he may see after he was blind, or follow one who doesn’t guide to anything except towards blindness and muteness Allah said that Ibrahim said:
يأَبَتِ لِمَ تَعْبُدُ مَا لاأَ يَسْمَعُ وَلاأَ يَبْصِرُ وَلاأَ يُغْنِى عَنكَ شَيْياً
O my father! Why do you worship that which hears not, sees not and cannot avail you in anything! (19:42)
And said to his people
قَالَ أَتَعْبُدُونَ مَا تَنْحِتُونَ
وَاللَّهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ
Worship you that which you (yourselves) carve While Allah has created you and what you make! (37:95-96)
Also, there are many Ayat in this regard.
Allah then said:
فَمَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ
Then, what is the matter with you! How judge you!
What is the matter with you! What has happened to your mind! How did you make Allah’s creatures equal to Him! What kind of judgement did you make to turn away from Allah and worship this or that! Why did you not worship the Lord — Glorified be He, the True King, the Judge and the One Who guides to the truth! Why you call upon Him alone and turn towards Him!
Allah says;
وَمَا يَتَّبِعُ أَكْثَرُهُمْ إِلاَّ ظَنًّا إَنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْيًا
And most of them follow nothing but conjecture. Certainly, conjecture can be of no avail against the truth.
Allah explained that they did not follow their own religion out of evidence and proof. The fact is that they were following mere conjecture and imagination. But conjecture is in no way a substitute for the truth.
He said,
إِنَّ اللّهَ عَلَيمٌ بِمَا يَفْعَلُونَ
Allah is All-Aware of what they do.
This is both a threat and a promise of severe punishment.
Allah said that He would reward them for their actions with a complete reward.