أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 666)
[ فَقُل لِّي عَمَلِي وَلَكُمْ عَمَلُكُمْ
বলুন, ‘আমার কাজের দায়িত্ব আমার এবং তোমাদের কাজের দায়িত্ব তোমাদের।
Say:”For me are my deeds and for you are your deeds!”]
www.motaher21.net
সুরা: ইউনুস
সুরা:১০
৪১-৪৪ নং আয়াত:-
فَقُل لِّي عَمَلِي وَلَكُمْ عَمَلُكُمْ
বলুন, ‘আমার কাজের দায়িত্ব আমার এবং তোমাদের কাজের দায়িত্ব তোমাদের।
Say:”For me are my deeds and for you are your deeds!”
وَ اِنۡ کَذَّبُوۡکَ فَقُلۡ لِّیۡ عَمَلِیۡ وَ لَکُمۡ عَمَلُکُمۡ ۚ اَنۡتُمۡ بَرِیۡٓـــُٔوۡنَ مِمَّاۤ اَعۡمَلُ وَ اَنَا بَرِیۡٓءٌ مِّمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۴۱﴾
আর যদি তারা তোমাকে মিথ্যা মনে করতে থাকে, তাহলে তুমি বলে দাও, ‘আমার কর্ম(ফল) আমি পাবো, আর তোমাদের কর্ম(ফল) তোমরা পাবে। আমি যে কর্ম করি, তার সাথে তোমাদের কোন সম্পর্ক নেই এবং তোমরা যে কর্ম কর, তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।
And if they deny you, [O Muhammad], then say, “For me are my deeds, and for you are your deeds. You are disassociated from what I do, and I am disassociated from what you do.”
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّسۡتَمِعُوۡنَ اِلَیۡکَ ؕ اَفَاَنۡتَ تُسۡمِعُ الصُّمَّ وَ لَوۡ کَانُوۡا لَا یَعۡقِلُوۡنَ ﴿۴۲﴾
আর তাদের মধ্যে কিছু লোক আছে, যারা তোমার (কথার) প্রতি কান পেতে রাখে। তবে কি তুমি বধির লোকদেরকে শুনাবে; যদিও তাদের বোধশক্তি না থাকে?
And among them are those who listen to you. But can you cause the deaf to hear, although they will not use reason?
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّنۡظُرُ اِلَیۡکَ ؕ اَفَاَنۡتَ تَہۡدِی الۡعُمۡیَ وَ لَوۡ کَانُوۡا لَا یُبۡصِرُوۡنَ ﴿۴۳﴾
আর তাদের মধ্যে কিছু লোক আছে, যারা তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে। তবে কি তুমি অন্ধকে পথ দেখাবে; যদিও তাদের দৃষ্টিশক্তি না থাকে?
And among them are those who look at you. But can you guide the blind although they will not [attempt to] see?
اِنَّ اللّٰہَ لَا یَظۡلِمُ النَّاسَ شَیۡئًا وَّ لٰکِنَّ النَّاسَ اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۴۴﴾
নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি কোন যুলুম করেন না, পরন্তু মানুষ নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করে থাকে।
Indeed, Allah does not wrong the people at all, but it is the people who are wronging themselves.
৪১-৪৪ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
* অযথা বিরোধ ও কূটতর্ক করার কোন প্রয়োজন নেই। যদি আমি মিথ্যা আরোপ করে থাকি তাহলে আমার কাজের জন্য আমি দায়ী হবো। এর কোন দায়ভার তোমাদের ওপর পড়বে না। আর যদি তোমরা সত্য কথাকে মিথ্যা বলে থাকো তাহলে এর মাধ্যমে আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। বরং এ দ্বারা তোমরা নিজেদেরই ক্ষতি করছো।
* শ্রবণ কয়েক রকমের হতে পারে। পশুরা যেমন আওয়াজ শোনে তেমনি এক ধরনের শ্রবণ আছে। আবার আর এক ধরনের শ্রবণ হয়, যার মধ্যে অর্থের দিকে নজর থাকে এবং এমনি ধরনের একটা প্রবণতা দেখা দেয় যে, যুক্তিসঙ্গত কথা হলে মেনে নেয়া হবে। যারা কোন প্রকার বদ্ধ ধারণা বা অন্ধ বিদ্বেষ আক্রান্ত থাকে এবং যারা আগে থেকেই ফয়সালা করে বসে থাকে, যে নিজের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া আকীদা-বিশ্বাস ও পদ্ধতিসমূহের বিরুদ্ধে এবং নিজের প্রবৃত্তির আশা আকাঙ্ক্ষা ও আগ্রহ বিরোধী কথা যত যুক্তিসঙ্গতই হোক না কেন মেনে নেবো না, তারা সবকিছু শুনেও আসলে কিছুই শোনে না। তেমনিভাবে যারা দুনিয়ায় পশুদের মতো উদাসীন জীবন যাপন করে, চারদিকে বিচরণ করা ছাড়া আর কিছুতেই যাদের আগ্রহ নেই অথবা যারা প্রবৃত্তির স্বাদ-আনন্দের পেছনে এমন পাগলের মতো দৌড়ায় যে, তারা নিজেরা যা কিছু করেছে তার ন্যায় বা অন্যায় হবার কথা চিন্তা করে না তারা শুনেও শোনে না। এ ধরনের লোকদের কান বধির হয় না কিন্তু মন বধির হয়।
* ওপরের বাক্যাংশে যে কথা বলা হয়েছে এখানেও সেই একই কথা বলা হয়েছে। চোখের দৃষ্টি উন্মুক্ত থাকলে কোন লাভ নেই, চোখ দিয়ে তো পশুরাও দেখে। আসল জিনিস হচ্ছে মনের দৃষ্টি উন্মুক্ত থাকা। এ জিনিসটি যদি কারোর অর্জিত না হয়ে থাকে তাহলে সে সবকিছু দেখেও কিছুই দেখে না।
এ আয়াত দু’টিতে নবী (সা.) কে সম্বোধন করা হয়েছে ঠিকই কিন্তু তিনি যাদের সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে নিন্দাবাদ উচ্চারণ করা হচ্ছে। আর এ নিন্দাবাদের উদ্দেশ্য নিছক নিন্দাবাদ নয় বরং বিদ্রূপ বানে বিদ্ধ করে তাদের সুপ্ত মনুষ্যত্বকে জাগিয় তোলা এবং চোখ ও কানের মাধ্যমে তাদের মনের ভেতরে প্রবেশ করার পথ খুলে দেয়াই এর উদ্দেশ্য এভাবে যুক্তিসঙ্গত কথা ও সমবেদনা পূর্ণ উপদেশ সেখানে পৌঁছবে পারবে। এ বর্ণনা পদ্ধতিটি কিছুটা এমনি ধরনের যেমন কোন সৎ লোক অসৎ লোকদের মাঝে উন্নত চারিত্রিক গুণাবলী সহকারে বাস করতে থাকে এবং অত্যন্ত আন্তরিকতা ও দরদ সহকারে তারা যে পতনশীল অবস্থার মধ্যে পড়ে আছে সে সম্পর্ক তাদের মনে অনুভূতি জাগাতে থাকে। তাদের জীবন যাপন প্রণালীতে কি কি গলদ আছে এবং সঠিক জীবন যাপন প্রণালী কি তা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকাররে ও যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতিতে সে তাদেরকে বুঝাবার চেষ্টা করছে। কিন্তু তার পূত-পবিত্র জীবন থেকে কেউ এ শিক্ষা নিচ্ছে না এবং তার এ শুভাবকাংখামূলক উপদেশকেও কেউ গ্রাহ্য করছে না। এ অবস্থায় যখন সে তাদেরকে বুঝাবার কাজে ব্যস্ত রয়েছে এবং তারা তার কথাগুলোর প্রতি কর্ণপাত করছে না ঠিক এমন সময় তার কোন বন্ধু এসে তাকে তাকে বলে, আরে ভাই এ তুমি কি করছো? তুমি এমন লোকদের শুনাচ্ছো যারা কানে শুনে না এবং এমন লোকদের পথ দেখাচ্ছো যারা চোখ দেখে না। এদের মনের কানে তালা লেগেছে এবং এদের হৃদয়ের চোখ কানা হয়ে গেছে। এ সৎ লোককে তার সংস্কার প্রচেষ্টা থেকে বিরত রাখা তার বন্ধুর একথা বলার উদ্দেশ্য নয়। বরং তার উদ্দেশ্য হল, হয়তো এ বিদ্রূপ ও তিরস্কারের ফলে অচেতন লোকদের কিছুটা চেতন ফিরে আসবে।
* আল্লাহ তো তাদের কানও দিয়েছেন এবং মনও দিয়েছেন। হক ও বাতিলের পার্থক্য দেখার ও বুঝার জন্য প্রয়োজন ছিল এমন কোন জিনিস তিনি নিজের পক্ষ থেকে তাদের দিতে কার্পণ্য করেননি। কিন্তু লোকেরা প্রবৃত্তির দাসত্ব ও দুনিয়ার প্রেমে মত্ত হয়ে নিজেরাই নিজেদের চোখ কানা করে নিয়েছে, কানে তোলা লাগিয়েছে এবং অন্তরকে বিকৃত করে ফেলেছে। ফলে তার মধ্যে ভাল মন্দের পার্থক্য ভুল-নির্ভুলের জ্ঞান এবং বিবেকের সজীবতার কোন লক্ষণ খুঁজে পাওয়া যায় না।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৪১-৪৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা’আলা স্বীয় নবী (সঃ)-কে বলেছেন-যদি এই মুশরিকরা তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তবে তুমিও তাদের প্রতি ও তাদের কার্যকলাপের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ কর এবং স্পষ্টভাবে বলে দাও আমার আমল আমার জন্যে এবং তোমাদের আমল তোমাদের জন্যে । আমি তোমাদের মা’বুদগুলোকে কখনই স্বীকার করবো না।
ইবরাহীম খলীল (আঃ) ও তাঁর অনুসারীরা তাদের মুশরিক কওমকে বলেছিলেনঃ “আমরা তোমাদের হতে এবং তোমাদের মা’রূদগণ হতে সম্পূর্ণ মুক্ত।” মহান আল্লাহ স্বীয় রাসূল (আঃ)-কে আরো বলেন-কুরায়েশদের মধ্যেই কতক লোক এমনও রয়েছে যে, তারা তোমার উত্তম কথা ও পবিত্র কুরআন শুনে থাকে এবং তা তাদের হৃদয়গ্রাহী হয়। এটাই ছিল তাদের জন্যে যথেষ্ট। কিন্তু এর পরেও তারা সঠিক পথে আসে না। এতে তোমার কোনই ত্রুটি নেই। কেননা, তুমি বধিরদেরকে শুনাতে সক্ষম নও এবং তাদেরকে হিদায়াত করারও শক্তি তোমার নেই, যে পর্যন্ত না আল্লাহ তাদেরকে হিদায়াত করার ইচ্ছা করেন। আবার তাদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা গভীর দৃষ্টিতে তোমার দিকে তাকাতে থাকে। তোমার নির্মল নিষ্কলুষ চরিত্র, সুন্দর অবয়ব এবং নবুওয়াতের প্রমাণাদি (যার মাধ্যমে চক্ষুষ্মন লোকেরা উপকৃত হতে পারে) স্বচক্ষে অবলোকন করে। কিন্তু এরপরেও কুরআনের হিদায়াত দ্বারা মোটেই উপকৃত হয় না, যেমন বিদ্বান ও অন্তদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তিরা উপকার লাভ করে থাকে। এরূপ মুমিন লোকেরা যখন তোমার দিকে তাকায় তখন তারা অত্যন্ত সম্মানের দৃষ্টিতে তাকায়। পক্ষান্তরে যখন কাফিররা তোমার দিকে তাকায় তখন তারা ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। তারা তোমাকে দেখে উপহাস করে।
আল্লাহ তা’আলা কারো উপর বিন্দুমাত্র অত্যাচার করেন না। কেউ শুনে এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত হয়। আবার অন্য কেউ শুনে, দেখে, অথচ অন্ধ ও বধির হয়ে যায় । সে চোখ থাকতেও অন্ধ এবং কান থাকতেও বধির। তার অন্তঃকরণ রয়েছে, কিন্তু তা মৃত। কেউ লাভবান হলো, আবার কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলো। মহান আল্লাহর পবিত্র সত্তা সম্পূর্ণ স্বাধীন। তিনি সবারই কাছে পুংখানুপুংখরূপে হিসাব গ্রহণ করবেন, কিন্তু তাঁর কাছে কেউ কোন হিসাব চাইতে পারে না। আল্লাহ তো বান্দার উপর যুলুম করেন না। কিন্তু বান্দা নিজেই নিজের উপর যুলুম করে থাকে। হাদীসে কুদসীতে রয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “হে আমার বান্দারা! আমি নিজের উপর যুলুম করাকে হারাম করেছি এবং তোমাদের উপরও এটা হারাম করে দিলাম। সুতরাং তোমরা একে অপরের উপর যুলুম করবে না। তোমাদের কার্যাবলী আমি দেখে যাচ্ছি। আমি তোমাদের প্রতিটি কাজের পূর্ণ প্রতিদান প্রদান করবো। যে ভাল প্রতিদান প্রাপ্ত হবে সে যেন আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আর যে ব্যক্তি শাস্তি প্রাপ্ত হবে সে যেন নিজেকেই ভৎসনা করে।”
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
৪২-৪৪ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা কিছু মিথ্যুকদের ব্যাপারে সংবাদ দিচ্ছেন যারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে মিথ্যা বলে। তারা রাসূলের নিকট এসে তাঁর কথা-বার্তা শ্রবণ করে, কুরআন তেলাওয়াত শ্রবণ করে কিন্তু তারা তা হিদায়েতের উদ্দেশ্যে শ্রবণ করে না, বরং কথার ভুল ধরার জন্য এবং প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোর জন্য, ফলে তাদের কোনই লাভ হয় না। যেমন একজন বধিরের কোন লাভ হয় না। কারণ কী বলা হচ্ছে তা সে শুনতে পায় না। অনুরূপভাবে কতক লোক রয়েছে যারা অন্তর্নিহিত দৃষ্টিতে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে তোমার সুন্দর আচরণ, সৎ চরিত্র অবলোকন করে কিন্তু তাতেও তাদের কোন ফায়দা হয় না। কারণ তারা চোখ থাকতেও অন্ধ। যার কারণে তারা হিদায়াত গ্রহণ করে না। সুতরাং তাদেরকে আপনি এড়িয়ে চলুন যেমন একজন চিকিৎসক তার রুগীকে এড়িয়ে চলে, যখন রুগী ডাক্তারের কথা শুনে না। আর তাদের এ সমস্ত কৃতকর্মের ফলাফল আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে আখিরাতে দান করবেন। তিনি কারো প্রতি বিন্দু পরিমাণও জুলুম করবেন না। বরং মানুষেরা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করে, যার ফলে তারা সঠিক পথের অনুসরণ করে না। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হে আমার বান্দা! আমি নিজের প্রতি জুলুম করা হারাম করে নিয়েছি এবং তা তোমাদের জন্যও হারাম করে দিয়েছি। সুতরাং তোমরা পরস্পর জুলুম করো না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৭৭)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. চোখ দিয়ে ভাল জিনিস দেখতে হবে এবং কান দিয়ে ভালো কথা শ্রবণ করতে হবে।
২. কোন কিছু সঠিক উদ্দেশ্যে শ্রবণ বা দর্শন করলে সে উদ্দেশ্য হাসিল হয়।
৩. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দার প্রতি কোন জুলুম করবেন না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
* সব রকমভাবে বুঝানো ও প্রমাণ পেশ করার পরেও যদি তারা মিথ্যাজ্ঞান করা থেকে বিরত না হয়, তবে তুমি তাদেরকে এই কথা বলে দাও। উদ্দেশ্য হল, আমার কাজ শুধু পৌঁছে দেওয়া, আর তা আমি সম্পন্ন করে ফেলেছি। সুতরাং এখন না তোমরা আমার আমলের যিম্মাদার আর না আমি তোমাদের আমলের যিম্মাদার । সকলকে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হতে হবে, সেখানে সকল ব্যক্তির ভালো ও মন্দ আমলের হিসাব নেওয়া হবে। এটা ঠিক (قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ، لا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ) এর মতই । আর ইবরাহীম (আঃ) ও তাঁর অনুসারীরা বলেছিলেন, {إِنَّا بُرَآءُ مِنْكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ} “তোমাদের সঙ্গে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার উপাসনা কর, তার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদেরকে মানি না। তোমাদের ও আমাদের মধ্যে চিরকালের জন্য সৃষ্টি হল শত্রুতা ও বিদ্বেষ, যতক্ষণ না তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছ।” (সূরা মুমতাহিনাহ ৬০:৪ আয়াত)
* সামনে তারা কুরআন শ্রবণ করে, কিন্তু কুরআন শ্রবণ যেহেতু হিদায়াতের উদ্দেশ্যে নয়, ফলে তাদের কোন লাভ হয় না। যেমন একজন (কালা) বধিরের কোন লাভ হয় না। বিশেষ করে বধির যদি অবুঝ হয়। কারণ বধির জ্ঞানী হলে ইঙ্গিত বা ইশারা দ্বারা কিছু বুঝে নিতে পারে। কিন্তু এরা তো জ্ঞানহীন বধিরের মত, এরা তো বিলকুল অবুঝ বধির।
* অনুরূপ কিছু মানুষ তোমার দিকে তাকিয়ে দেখে, কিন্তু যেহেতু তাদের উদ্দেশ্য অন্য কিছু থাকে, ফলে তাদেরও অন্ধ ব্যক্তিদের মত কোন লাভ হয় না। বিশেষ করে সেই অন্ধ ব্যক্তি, যে চোখ থাকতেও অন্ধ হয়। কারণ অনেক অন্ধ লোক আছে, যারা অন্তর-দৃষ্টি দ্বারা দেখে। তারা চোখের দেখা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পরেও, অনেক কিছু বুঝে নিতে পারে। কিন্তু এরা সেই অন্ধের মত যে অন্ধ অন্তর-দৃষ্টি থেকেও বঞ্চিত। এসব কথার উদ্দেশ্য হল, নবী (সাঃ)-কে সান্তনা দেওয়া। যেমন একজন ডাক্তার যখন জেনে নেন যে, রোগী চিকিৎসা করানোর ব্যাপারে অধৈর্য এবং সে আমার নির্দেশনা ও চিকিৎসার কোন পরোয়া করে না, তখন তিনি তার প্রতি ভ্রূক্ষেপ করেন না এবং তার জন্য সময় নষ্ট করতে পছন্দ করেন না।
* আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সব রকম যোগ্যতা প্রদান করেছেন; চক্ষু দান করেছেন, যার দ্বারা দর্শন করতে পারে, কর্ণ দান করেছেন, যার দ্বারা শ্রবণ করতে পারে, জ্ঞান ও বুঝার শক্তি দান করেছেন যার দ্বারা হক ও বাতিল এবং সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্য করতে পারে। কিন্তু যদি সে সেই যোগ্যতাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে সঠিক পথ বেছে না নেয়, তাহলে সে নিজেই নিজের উপর অত্যাচার করছে। আল্লাহ তাআলা তো তার উপর কোন অত্যাচার করেননি।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
* অযথা বিরোধ ও কুটতর্ক করার কোন প্রয়োজন নেই। যদি আমি মিথ্যা আরোপ করে থাকি তাহলে আমার কাজের জন্য আমি দায়ী হবো। এর কোন দায়ভার তোমাদের ওপর পড়বে না। আর যদি তোমরা সত্য কথাকে মিথ্যা বলে থাকো তাহলে এর মাধ্যমে আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। বরং এর দ্বারা তোমরা নিজেদেরই ক্ষতি করছো। এটা দ্বারা তাদের কাজ-কর্মের স্বীকৃতি নয় বরং তাদের সাথে সম্পর্কচ্যুতির ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। যেমনটি সূরা আল-কাফেরূনে বলা হয়েছে। অনুরূপভাবে ইবরাহীম আলাইহিসসালামও তার জাতির সাথে এ ধরণের সম্পর্কচ্যুতির ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেনঃ “তোমাদের সংগে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদাত কর তার সংগে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদেরকে মানি না। তোমাদের ও আমাদের মধ্যে সৃষ্টি হল শক্রতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য; যদি না তোমরা এক আল্লাহতে ঈমান আনো”। [সূরা আল-মুমতাহিনাহঃ ৪]
* শ্রবণ কয়েক রকমের হতে পারে। পশুরা যেমন আওয়াজ শোনে তেমনি এক ধরনের শ্রবণ আছে। তাদের কথাও আল্লাহ তা’আলা কুরআনে বর্ণনা করেছেন। [যেমন দেখুন, সূরা আল-বাকারাহ: ১৭১] আবার আর এক ধরনের শ্রবণ হয়, যার মধ্যে অর্থের দিকে নজর থাকে এবং এমনি ধরনের একটা প্রবণতা দেখা যায় যে, যুক্তিসংগত কথা হলে মেনে নেয়া হবে। তাদের কথাও আল্লাহ কুরআনের অন্যত্র উল্লেখ করেছেন [যেমন দেখুন, সূরা আল-আনআমঃ ৩৬] তবে যারা কোন প্রকার বদ্ধ ধারণা বা অন্ধ বিদ্বেষে আক্রান্ত থাকে এবং যারা আগে থেকেই ফায়সালা করে বসে থাকে যে, নিজের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া আকীদা-বিশ্বাস ও পদ্ধতিসমূহের বিরুদ্ধে এবং নিজের প্রবৃত্তির আশা-আকাংখা ও আগ্রহ বিরোধী কথা যত যুক্তিসংগতই হোক না কেন মেনে নেবো না, তারা সবকিছু শুনেও আসলে কিছুই শোনে না। তাদের কথাও আল্লাহ্ তা’আলা কুরআনে উল্লেখ করেছেন। [যেমন দেখুন, সূরা আয-যুখরুফ ২২-২৩] তেমনিভাবে যারা দুনিয়ায় পশুদের মত উদাসীন জীবন যাপন করে, চারদিকে বিচরণ করা ছাড়া আর কিছুতেই যাদের আগ্রহ নেই অথবা যারা প্রবৃত্তির স্বাদ-আনন্দের পেছনে এমন পাগলের মতো দৌড়ায় যে, তারা নিজেরা যা কিছু করছে তার ন্যায় বা অন্যায় হবার কথা চিন্তা করে না তারা শুনেও শোনে না। এদেরকে আল্লাহ পশুর সাথে তুলনা করেছেন। [যেমন, সূরা আল-আরাফ: ১৭৯] এ ধরনের লোকদের কান বধির হয় না কিন্তু মন বধির হয়। এ ধরনের বধির লোকদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শোনাতে পারবেন না বলে আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াতে জানিয়ে দিয়েছেন। এখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সান্তুনা প্রদান করা হয়েছে। অর্থাৎ যেভাবে আপনি যাদের শ্রবণেন্দ্রিয় নেই তাদেরকে শোনাতে পারেন না তেমনিভাবে তাদেরকেও হিদায়াতের দিকে নিয়ে আসতে পারবেন না। আর আল্লাহও তাদের উপর লিখে দিয়েছেন যে, তারা ঈমান আনবে না। [কুরতুবী]
* তাদের এ তাকানোর দ্বারা তারা আপনার কাছে নবুওয়াতের যে দলীল-প্রমাণাদি আছে তা দেখতে পায়, কিন্তু তারা এর দ্বারা উপকৃত হয় না। পক্ষান্তরে মুমিনগণ আপনার প্রতি দৃষ্টিপাত করেই আপনার সততার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হতে পারে। তাই আপনার প্রতি সম্মানে তাদের চোখ ভরে যায়। কাফেরগণ আপনার প্রতি দৃষ্টিপাত করলেও সম্মানের সাথে দেখে না। [ইবন কাসীর] আর যারা সম্মানের সাথে দেখবে না তাদের হিদায়াত তাওফীক হবে না। [কুরতুবী] আল্লাহ্ তা’আলা অন্য আয়াতে আরও বলেনঃ “তারা যখন আপনাকে দেখে তখন তারা আপনাকে শুধু ঠাট্টা-বিদ্রুপের পাত্ররূপে গণ্য করে এবং বলে, এই-ই কি সে, যাকে আল্লাহ রাসূল করে পাঠিয়েছেন? ‘সে তো আমাদেরকে আমাদের দেবতাগণ হতে দূরে সরিয়ে দিত, যদি না আমরা তাদের আনুগত্যে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকতাম। যখন তারা শাস্তি দেখতে পাবে তখন তারা জানবে কে বেশী পথভ্রষ্ট। ” [সূরা আল-ফুরকানঃ ৪১-৪২]
* [১] হাদীসে কুদসীতে এসেছে, আল্লাহ বলেন, হে আমার বান্দাগণ! আমি যুলুমকে আমার নিজের উপর হারাম করেছি এবং তা তোমাদের মাঝেও হারাম ঘোষণা করেছি। সুতরাং তোমরা পরস্পর যুলুম করো না। হে আমার বান্দাগণ! তোমাদের মধ্যে যাদেরকে আমি হেদায়াত করেছি তারা ব্যতীত সবাই পথভ্রষ্ট। সুতরাং তোমরা আমার কাছেই হেদায়াত চাও আমি তোমাদের হেদায়াত দিব। হে আমার বান্দাগণ! তোমাদের মধ্যে যাকে আমি খাবার খাওয়াই সে ব্যতীত সবাই অভূক্ত, ক্ষুধার্ত। সুতরাং তোমরা আমার কাছে খাবার চাও আমি তোমাদেরকে খাওয়াব। হে আমার বান্দাগণ! তোমাদের মধ্যে যাকে আমি পরিধান করাই সে ব্যতীত সবাই কাপড়হীন। সুতরাং তোমরা আমার কাছে পরিধেয় বস্ত্র চাও আমি তোমাদেরকে পরিধান করাব। হে আমার বান্দাগণ! তোমরা দিন-রাত অপরাধ করে যাচ্ছ আর আমি তোমাদের সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করি। সুতরাং আমার কাছে ক্ষমা চাও আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব। হে আমার বান্দাগণ! তোমরা আমার ক্ষতি করার কাছেও পৌছতে পারবে না যে আমার ক্ষতি করবে। এমনকি তোমরা আমার কোন উপকার করার নিকটবর্তীও হতে পারবে না যে, আমার কোন উপকার তোমরা করে দেবে। হে আমার বান্দাগণ! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের যাবতীয় মানুষ ও জ্বিন একত্র হয়ে তাকওয়ার দিক থেকে একজনের অন্তরে পরিণত হও তাতেও আমার রাজত্বের সামান্য বৃদ্ধি ঘটবে না। হে আমার বান্দাগণ! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত মানুষ ও জ্বিন একত্র হয়ে অন্যায় করার দিক থেকে একজনের অন্তরে পরিণত হও তাতেও আমার রাজত্বের তথা ক্ষমতার সামান্যও কমতি ঘটবে না। হে আমার বান্দাগণ! যদি তোমাদের পূর্বাপর এবং যাবতীয় মানুষ ও জ্বিন এক মাঠে দাঁড়িয়ে আমার কাছে প্রত্যেকেই চায় তারপর আমি তাদের প্রত্যেককে তার প্রার্থিত বস্তু দেই তাতে আমার ভাণ্ডার থেকে ততটুকুই কমবে যতটুকু সমুদ্রে সুই ঢুকালে কমে। হে আমার বান্দাগণ এগুলো তো শুধু তোমাদের আমল, আমি তা তোমাদের জন্য সংরক্ষন করে রাখি। তারপর তোমাদেরকে তা পূর্ণভাবে দেব। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ভালকিছু পাবে সে যেন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। আর যে অন্য কিছু পায় সে যেন তার নিজেকে ছাড়া আর কাউকে তিরস্কার না করে। [মুসলিমঃ ২৫৭৭]
[২] অর্থাৎ আল্লাহ তো তাদের কানও দিয়েছেন এবং মনও দিয়েছেন। হক ও বাতিলের পার্থক্য দেখার ও বুঝার জন্য প্রয়োজন ছিল এমন কোন জিনিস তিনি নিজের পক্ষ থেকে তাদের দিতে কার্পণ্য করেননি। কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের চোখ কানা করে নিয়েছে, কানে তালা লাগিয়েছে এবং অন্তরকে বিকৃত করে ফেলেছে। ফলে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দিয়েছেন, যাকে ইচ্ছা অন্ধত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে পথ দেখিয়েছেন। কিছু অন্ধ চক্ষু চক্ষুষ্মান করেছেন, কিছু বধিরকে শুনিয়েছেন। কিছু বদ্ধ অন্তরকে খুলে দিয়েছেন। পক্ষান্তরে কিছু লোককে ঈমান থেকে পথভ্রষ্ট করেছেন। তিনি একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। নিজের রাজত্বে তিনি যা ইচ্ছে তা করতে পারেন। তার কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে প্রশ্ন করা যায় না। বরং লোকদেরকে তিনি প্রশ্ন করবেন। কারণ তিনি জ্ঞানী, তিনি প্রজ্ঞাবান, তিনি ইনসাফকারী। [ইবন কাসীর; কুরতুবী]
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Yunus
Sura: 10
Verses :- 41-44
فَقُل لِّي عَمَلِي وَلَكُمْ عَمَلُكُمْ
Say:”For me are my deeds and for you are your deeds!”
The Command to be Free and Clear from the Idolators
Allah says;
وَإِن كَذَّبُوكَ
And if they belie you,
Allah said to His Prophet:`If these idolators belie you, then be clear from them and their deeds.’
فَقُل لِّي عَمَلِي وَلَكُمْ عَمَلُكُمْ
Say:”For me are my deeds and for you are your deeds!”
Similarly, Allah said:
قُلْ يأَيُّهَا الْكَـفِرُونَ
لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ
Say:”O you disbelievers! I worship not that which you worship.” (109:1-2) to the end of the Surah.
Ibrahim Al-Khalil (the Friend) and his followers said to the idolators among their people:
إِنَّا بُرَءاواْ مِّنْكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ
Verily, we are free from you and whatever you worship besides Allah. (60:4)
أَنتُمْ بَرِييُونَ مِمَّا أَعْمَلُ وَأَنَاْ بَرِيءٌ مِّمَّا تَعْمَلُونَ
You are innocent of what I do, and I am innocent of what you do!”
Allah then said:
وَمِنْهُم مَّن يَسْتَمِعُونَ إِلَيْكَ
And among them are some who listen to you,
They listen to your beautiful talk and to the Glorious Qur’an. They listen to your truthful, eloquent and authentic Hadiths that are useful to the hearts, the bodies and their faith. This is indeed a great benefit and is sufficient. But guiding the people to the truth is not up to you or to them. You cannot make the deaf hear. Therefore you cannot guide these people except if Allah wishes.
أَفَأَنتَ تُسْمِعُ الصُّمَّ وَلَوْ كَانُواْ لَا يَعْقِلُونَ
but can you make the deaf to hear — even though they apprehend not!
وَمِنهُم مَّن يَنظُرُ إِلَيْكَ
And among them are some who look at you,
They look at you and at what Allah has given you in terms of dignity, noble personality and great conduct. There is in all of this clear evidence of your Prophethood to those who have reason and insight. Other people also look but they do not receive guidance like them. Believers look at you with respect and dignity while disbelievers regard you with contempt.
وَإِذَا رَأَوْكَ إِن يَتَّخِذُونَكَ إِلاَّ هُزُواً
And when they see you, they treat you only in mockery. (25:41)
أَفَأَنتَ تَهْدِي الْعُمْيَ وَلَوْ كَانُواْ لَا يُبْصِرُونَ
but can you guide the blind — even though they see not!
Then Allah announces that He is never unjust with anyone. He guides whomever He wills and opens the eyes of the blind, makes the deaf hear and removes neglect from the hearts. At the same time He lets others go astray, moving away from faith. He does all of that yet He is always Just, for He is the Ruler and has full authority over His kingdom. He does whatever He wills without any restrictions. No one can question Him as to what He does while he will question everyone else. He is Omniscient, All-Wise, and All-Just.
So Allah said:
إِنَّ اللّهَ لَا يَظْلِمُ النَّاسَ شَيْيًا وَلَـكِنَّ النَّاسَ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
Truly, Allah wrongs not mankind in aught; but mankind wrong themselves.
In the Hadith narrated by Abu Dharr, he states that the Prophet related that His Lord, Exalted and High is He, said:
يَا عِبَادِي إِنِّي حَرَّمْتُ الظُّلْمَ عَلَى نَفْسِي وَجَعَلْتُهُ بَيْنَكُمْ مُحَرَّمًا فَلَا تَظَالَمُوا
O My servant! I have prohibited oppression for Myself and made it prohibited for you, so do not oppress one another,Until He said at the end of the Hadith
يَا عِبَادِي إِنَّمَا هِيَ أَعْمَالُكُمْ أُحْصِيهَا لَكُمْ ثُمَّ أُوفِيكُمْ إِيَّاهَا فَمَنْ وَجَدَ خَيْرًا فَلْيَحْمَدِ اللهَ وَمَنْ وَجَدَ غَيْرَ ذَلِكَ فَلَا يَلُومَنَّ إِلاَّ نَفْسَه
O My servants! It is but your deeds that I reckon for you and then recompense you for. So let him who finds good (in the Hereafter) praise Allah. And let him who finds other than that blame no one but himself.
The complete version was recorded by Muslim.