(Book# 677) [ وَ اتۡلُ عَلَیۡہِمۡ نَبَاَ نُوۡحٍ আর তুমি তাদেরকে নূহের বৃত্তান্ত শোনাও; And recite to them the news of Noah,] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 677)
[ وَ اتۡلُ عَلَیۡہِمۡ نَبَاَ نُوۡحٍ
আর তুমি তাদেরকে নূহের বৃত্তান্ত শোনাও;
And recite to them the news of Noah,]
www.motaher21.net

وَ اتۡلُ عَلَیۡہِمۡ نَبَاَ نُوۡحٍ ۘ اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِہٖ یٰقَوۡمِ اِنۡ کَانَ کَبُرَ عَلَیۡکُمۡ مَّقَامِیۡ وَ تَذۡکِیۡرِیۡ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ فَعَلَی اللّٰہِ تَوَکَّلۡتُ فَاَجۡمِعُوۡۤا اَمۡرَکُمۡ وَ شُرَکَآءَکُمۡ ثُمَّ لَا یَکُنۡ اَمۡرُکُمۡ عَلَیۡکُمۡ غُمَّۃً ثُمَّ اقۡضُوۡۤا اِلَیَّ وَ لَا تُنۡظِرُوۡنِ ﴿۷۱﴾
আর তাদেরকে নূহ্-এর বৃত্তান্ত শোনান । তিনি তার সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমার অবস্থিতি ও আল্লাহ্‌র আয়াতসমূহ দ্বারা আমার উপদেশ প্রদান তোমাদের কাছে যদি দুঃসহ হয় তবে আমি তো আল্লাহ্‌র উপর নির্ভর করি। সুতরাং তোমরা তোমাদের কর্তব্য স্থির করে নাও এবং তোমরা যাদেরকে শরীক করেছ তাদেরকেও ডাক, পরে যেন কর্তব্য বিষয়ে তোমাদের কোন অস্পষ্টতা না থাকে। তারপর আমার সমন্ধে তোমাদের কাজ শেষ করে ফেল এবং আমাকে অবকাশ দিও না।
And recite to them the news of Noah, when he said to his people, “O my people, if my residence and my reminding of the signs of Allah has become burdensome upon you – then I have relied upon Allah . So resolve upon your plan and [call upon] your associates. Then let not your plan be obscure to you. Then carry it out upon me and do not give me respite.

فَاِنۡ تَوَلَّیۡتُمۡ فَمَا سَاَلۡتُکُمۡ مِّنۡ اَجۡرٍ ؕ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ ۙوَ اُمِرۡتُ اَنۡ اَکُوۡنَ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ﴿۷۲﴾

‘অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে তোমাদের কাছে আমি তো কোন পারিশ্রমিক চাইনি, আমরা পারিশ্রমিক আছে তো কেবল আল্লাহ্‌র কাছে, আর আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হতে আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি।
And if you turn away [from my advice] then no payment have I asked of you. My reward is only from Allah, and I have been commanded to be of the Muslims.”

فَکَذَّبُوۡہُ فَنَجَّیۡنٰہُ وَ مَنۡ مَّعَہٗ فِی الۡفُلۡکِ وَ جَعَلۡنٰہُمۡ خَلٰٓئِفَ وَ اَغۡرَقۡنَا الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا ۚ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُنۡذَرِیۡنَ ﴿۷۳﴾

অবশেষে তারা তার প্রতি মিথ্যারোপ করল; ফলে আমরা তাকে ও তার সঙ্গে যারা নৌকাতে ছিল তাদেরকে নাজাত দিলাম এবং তাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করি। আর যারা আমাদের আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করেছিল তাদেরকে নিমজ্জিত করলাম। কাজেই দেখুন, যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল তাদের পরিণাম কি হয়েছিল?
And they denied him, so We saved him and those with him in the ship and made them successors, and We drowned those who denied Our signs. Then see how was the end of those who were warned.

সুরা: ইউনুস
সুরা:১০
৭১-৭৩ নং আয়াত:-
وَ اتۡلُ عَلَیۡہِمۡ نَبَاَ نُوۡحٍ
আর তুমি তাদেরকে নূহের বৃত্তান্ত শোনাও;
And recite to them the news of Noah,

৭১-৭৩ নং আয়াতের তাফসীর:-

তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

পূর্ববর্তী আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা অস্বীকারকারীদের অবস্থা বর্ণনা করার পর এখানে পূর্ববর্তী ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি জাতি, তারা হল নূহ

(عليه السلام)-

এর জাতি, তাদের কিছু কথা বর্ণনা করছেন, যাতে এরা শিক্ষা নিতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা বলছেন হে নাবী! তাদের কাছে নূহ

(عليه السلام)

-এর জাতির ঘটনা শোনাও। তারা তাদের নাবীর অবাধ্য হয়েছিল ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে কিভাবে ধ্বংস করেছেন? সুতরাং তাদের থেকে তোমাদের শিক্ষা নিয়ে সতর্ক হওয়া উচিত। তোমাদের অবাধ্যতার জন্য যেন এরূপ শাস্তি আক্রান্ত না করে। ঘটনা এই যে, নূহ

(عليه السلام)

যখন তাঁর জাতিকে বললেন: যদি তোমাদের কাছে আমার অবস্থান ও আল্লাহ তা‘আলার নিদর্শন দিয়ে দাওয়াত দেয়া ভারী মনে হয় তাহলে জেনে রেখ আমি এটাকে মোটেই গ্রাহ্য করি না। আমি শুধু আল্লাহ তা‘আলার ওপর নির্ভর করি, তোমাদের কাছে কঠিন বোধ মনে হোক আর নাই হোক আমি আমার প্রচার কাজ চালিয়ে যাব। তোমরা এবং তোমাদের বাতিল মা‘বূদরা সবাই একমত হয়ে যাও এবং নিজেদের চেষ্টার কোন ত্র“টি না করে সবদিক দিয়ে নিজেদেরকে দৃঢ় করে নাও। অতঃপর তোমাদের যদি বিশ্বাস থাকে যে, তোমরাই হক পথে রয়েছো, তাহলে আমার ব্যাপারে তোমাদের সিদ্ধান্ত কার্যকরী করে ফেলো, আমাকে অল্প সময়ের জন্যও অবকাশ দিয়ো না। তথাপি তোমরা জেনে রেখ আমি তোমাদেরকে ভয় করি না, কেননা আমি জানি যে, তোমাদের অনুমানের ভিত্তি কোন কিছুর ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়।

আর যদি তোমরা জানা সত্বেও মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে আমি তো তোমাদের কাছে কোন বিনিময় চাই না যে, তোমরা হয়তো বলবে নবুওয়াতের দাবী করে আমার উদ্দেশ্য হল ধন-সম্পদ অর্জন করা। আমার প্রতিদান একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই নিকট। তিনিই আমার প্রতিদান দেবেন। আমাকে শুধু নির্দেশ দেয়া হয়েছে মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হবার জন্য। নূহ

(عليه السلام)

-এর এ কথা থেকে বুঝা যায় যে, সকল নাবীদের ধর্মই এক ছিল। যদিও তার পদ্ধতি ভিন্ন ছিল।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَّمِنْهَاجًا)

“আমি তোমাদের প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছি একটি নির্দিষ্ট শরীয়ত ও একটি নির্দিষ্ট পথ।” (সূরা মায়িদাহ ৫:৪৮)

আর সেই ধর্ম হল ইসলাম। এ ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে সূরা বাক্বারা ১৩১-১৩২, আ‘রাফ ১২৬, মায়িদাহ ৪৮, ১১১ এবং আনয়াম ১৬২-১৬৩ নং আয়াতে।

এই সমস্ত নসীহত শোনার পরও যারা ঈমান আনেনি আমি তাদেরকে মহাপ্লাবন দ্বারা ধ্বংস করে দিয়েছি। আর যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমি নৌকায় আরোহণ করে বাঁচিয়ে দিয়েছি। নিমজ্জিতদের মধ্যে নূহ

(عليه السلام)

-এর এক পুত্রও ছিল। সুতরাং তুমি তোমার জাতিকে তাদেরও দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে শোনাও যে, অস্বীকারকারীদের পরিণতি কেমন হয়েছিল।

নূহ (عليه السلام)

-এর সম্প্রদায়ের কথা বর্ণনা করে শোনানোর মাধ্যমে আরো দু‘টো জিনিস অর্জন হবে।

১. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা ও ধৈর্যের ওপর অটল থাকার উৎসাহ প্রদান করা।
২. মুশরিকদেরকে সতর্ককরণ যদি তারা এই শির্ক ও নাফরমানির কাজে লিপ্ত থাকে তাহলে অন্যদের ন্যায় তাদের ওপরও শাস্তি আবশ্যক হয়ে যাবে।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. বিপদে ধৈর্য ধারণ করতে হবে ও আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা করতে হবে।
২. অস্বীকারকারীদের পরিণতি খুবই মন্দ।
৩. যারা আল্লাহ তা‘আলার দিকে ডাকে তাদের প্রতিদান আল্লাহ তা‘আলাই দেবেন।
৪. পূর্ববর্তীদের বৃত্তান্ত বর্ণনা করার মাধ্যমে পরবর্তীদেরকে শিক্ষা দেয়া অন্যতম একটি উত্তম নীতি।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-

৭১-৭৩ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ তা’আলা স্বীয় নবী (সঃ)-কে বলছেন- হে নবী (সঃ)! মক্কার কাফিরদেরকে, যারা তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে এবং তোমার বিরোধিতা করছে তাদেরকে নূহ (আঃ) এবং তার কওমের ঘটনা শুনিয়ে দাও। তারা তাদের নবীকে অবিশ্বাস করেছিল, ফলে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে কিভাবে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন এবং তাদের সকলকে কিভাবে পানিতে ডুবিয়ে দেন! যাতে পূর্ববর্তীদের এই ভয়াবহ পরিণাম দেখে এ লোকগুলো সতর্ক হয়ে যায় যে, না জানি তাদেরকেও ধ্বংসের সম্মুখীন হতে হয়। ঘটনা এই যে, নূহ (আঃ) যখন তার কওমকে বললেনঃ “যদি তোমাদের কাছে আমার ঘোরাফেরা এবং সঠিক পথে আনয়নের জন্যে তোমাদেরকে উপদেশ দান তোমাদের নিকট ভারী বোধ হয়, তবে জেনে রেখো যে, আমি এটাকে মোটেই গ্রাহ্য করি না। আমি শুধু আল্লাহর উপর নির্ভর করেছি। তোমাদের কাছে কঠিন বোধ হাক বা নাই হাক, আমি কিন্তু প্রচার কার্য থেকে বিরত থাকতে পারি না। আচ্ছা, তোমরা এবং আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদেরকে শরীক বানিয়ে নিয়েছে, অর্থাৎ তোমাদের উপাস্য প্রতিমাগুলো, সবাই একমত হয়ে যাও এবং নিজেদের চেষ্টার কোনই ক্রটি না করে সবদিক দিয়ে নিজেদেরকে দৃঢ় করে নাও। অতঃপর তোমাদের যদি বিশ্বাস থাকে যে, তোমরাই হক পথে রয়েছে, তবে আমার ব্যাপারে তোমাদের সিদ্ধান্ত কার্যকরী করে ফেলো এবং আমাকে এক ঘন্টাকালও অবকাশ দিও না। সাধ্যমত তোমরা সবকিছুই করতে পার। তথাপি জেনে রেখো যে, তোমাদেরকে আমি পরওয়া করি না এবং ভীতও নই। কেননা, আমি জানি যে, তোমাদের অনুমানের ভিত্তি কোন কিছুরই উপর প্রতিষ্ঠিত নয়।”

হুদ (আঃ) স্বীয় কওমকে এরূপই বলেছিলেনঃ “আমিও আল্লাহকে সাক্ষী রাখছি এবং তোমরাও সাক্ষী থাকো যে, তোমরা যে আল্লাহকে ছেড়ে মূর্তিগুলোকে তাঁর শরীক বানিয়ে নিচ্ছ, আমি এ ব্যাপারে তোমাদের থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত। এখন তোমরা যত পার আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকো এবং আমাকে মুহূর্তকালও অবকাশ দিয়ো না। আমার ভরসাস্থল একমাত্র আল্লাহ, যিনি তোমাদেরও প্রতিপালক এবং আমারও প্রতিপালক । যদি তোমরা আমাকে অবিশ্বাস করতঃ আমার দিক থেকে সরে পড়, তবে এতে আমার কি হবে? এমন তো নয় যে, তোমাদের কাছে আমার কিছু পাওয়ার আশা ছিল, যা নষ্ট হওয়ার কারণে আমার দুঃখ হবে? আমি যে তোমাদের কল্যাণ কামনা করছি তার তো কোন বিনিময় তোমাদের কাছে চাচ্ছি না। আমাকে তো বিনিময় প্রদান করবেন আল্লাহ। আমার প্রতি এই গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে যে, আমি যেন সর্বপ্রথম ঈমান আনয়ন করি। আর আমার জন্যে এটা অবশ্য কর্তব্য যে, আমি যেন ইসলামের আহকাম কার্যকর করি। কেননা, প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত সমস্ত নবীর দ্বীন ইসলামই বটে। নীতি ও পন্থা পৃথক হলেও কোন ক্ষতি নেই। তাওহীদের শিক্ষা তো একই।” আল্লাহ পাকের উক্তিঃ “তোমাদের প্রত্যেকের জন্যে আমি এক একটি শরীয়ত এবং পৃথক পৃথক নীতি ও পন্থা বানিয়েছি। এই নূহ (আঃ) বলেনঃ “আমাকে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, আমি যেন মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হই।”

ইবরাহীম (আঃ) সম্পর্কে আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ “যখন তার প্রতিপালক তাকে বললেন, ঈমান আনয়ন কর, তখন সে তৎক্ষণাৎ বলে উঠলো- আমি ঈমান আনলাম বিশ্ব প্রতিপালকের প্রতি। আর এই হুকুম করে গেছে ইবরাহীম (আঃ) নিজ সন্তানদেরকে এবং ইয়াকুব (আঃ), হে আমার সন্তানগণ! আল্লাহ এই দ্বীনকে তোমাদের জন্যে মনোনীত করেছেন, সুতরাং তোমরা ইসলাম ছাড়া আর কোন অবস্থায় মরো না।”

ইউসুফও (আঃ) বলেছিলেনঃ “হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে রাজত্বের বিরাট অংশ দান করেছেন এবং আমাকে স্বপ্নফল বর্ণনা শিক্ষা দিয়েছেন, হে আসমানসমূহের ও যমীনের সৃষ্টিকর্তা! আপনি আমার কার্য নির্বাহক, দুনিয়াতেও এবং আখিরাতেও, আমাকে পূর্ণ আনুগত্যের অবস্থায় দুনিয়া হতে উঠিয়ে নিন এবং আমাকে বিশিষ্ট নেক বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন।”

মূসা (আঃ) বলেছিলেনঃ “হে লোক সকল! যদি তোমরা মুসলিম হও, তবে আল্লাহর উপরই ভরসা কর এবং তাঁরই উপর ঈমান আনয়ন কর।” মূসা (আঃ)-এর যুগের যাদুকরগণ বলেছিলঃ “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের মধ্যে ধৈর্য আনয়ন করুন এবং ইসলামের অবস্থায় আমাদের মৃত্যু দিন!

বিলকিস বলেছিলঃ “হে আমার প্রতিপালক! আমি আমার নিজের উপর যুলুম। করেছি এবং সুলাইমান (আঃ)-এর বিশ্ব প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আনলাম।”

ইরশাদ হচ্ছে- “আমি যে তাওরাত অবতীর্ণ করেছি তা হচ্ছে হিদায়াত ও নূর। নবী এর মাধ্যমে মুসলিমদের উপর হুকুম কায়েম করে থাকে। আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ “আমি যখন (ঈসার আঃ) হাওয়ারীদের উপর অহী করেছিলাম- তোমরা আমার উপর ও আমার রাসূলের উপর ঈমান আনয়ন কর, তখন তারা বলেছিল, আমরা ঈমান আনলাম এবং আপনি সাক্ষী থাকুন যে, আমরা মুসলিম।”

সর্বশেষ নবী, মানব নেতা মুহাম্মাদ (সঃ) বলেছেনঃ “আমার সালাত, আমার ইবাদত, আমার জীবন এবং আমার মরণ সমস্তই বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর জন্যেই। তার কোনই অংশীদার নেই, আমি এ কাজেই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই হলাম প্রথম মুসলিম।” তিনি বলেনঃ “আমরা নবীদের দল যেন বৈমাত্রেয় ভাই। আমাদের সবারই পিতা একজন এবং মাতা পৃথক পৃথক। অর্থাৎ আমাদের সবারই দ্বীন একই। আর সেটা হচ্ছে এক আল্লাহর ইবাদত করা, যদিও আমাদের শরীয়ত পৃথক পৃথক।”

আল্লাহ পাকের উক্তিঃ “আমি নূহ (আঃ)-কে এবং তার অনুসারীদেরকে নৌকার উপর উঠিয়ে মুক্তি দিয়েছিলাম এবং তাদেরকে যমীনের উপর প্রতিনিধি বানিয়েছিলাম। পক্ষান্তরে যারা তাকে (নূহ আঃ-কে) অবিশ্বাস ও মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল তাদেরকে পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছিলাম। দেখো, হতভাগ্যদের পরিণাম কি হয়েছিল! হে মুহাম্মাদ (সঃ)! দেখো, আমি মুমিনদেরকে কিরূপে মুক্তি দিয়েছি এবং নাফরমানদেরকে কিভাবে ধ্বংস করেছি!”

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
এ পর্যন্ত যে আলোচনা হয়েছে তাতে এ লোকদেরকে ন্যায়সঙ্গত যুক্তি ও হৃদয়গ্রাহী উপদেশের মাধ্যমে তাদের আকীদা-বিশ্বাস এবং চিন্তা ও পদ্ধতিতে কি কি ভুল-ভ্রান্তি আছে এবং সেগুলো ভুল কেন আর এর মোকাবিলায় সঠিক পথ কি এবং তা সঠিক কেন, একথা বুঝানো হয়েছিল। এই সহজ, সরল ও সুস্পষ্ট উপদেশের জবাবে তারা যে কর্মনীতি অবলম্বন করেছিল আলোচ্য রুকূ’তে) সে দিকে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। দশ বারো বছর ধরে তারা এ নীতি অবলম্বন করে আসছিল যে এ যুক্তিসঙ্গত সমালোচনা ও সঠিক পথপ্রদর্শনের ব্যাপারে চিন্তা ভাবনার মাধ্যমে নিজেদের ভুল পথ অবলম্বনের ব্যাপারটি পুনর্বিবেচনা না করে উল্টো যে ব্যক্তি নিজের কোন স্বার্থে নয় বরং তাদের ভালোর জন্য একথাগুলো পেশ করেছিলেন তার প্রাণনাশে উদ্যোগী হয়। তারা যুক্তির জবাব পাথরের সাহায্যে এবং নসিহতের জবাব গালির সাহায্যে দিয়ে চলছিল। নিজেদের লোকালয়ে এমন ব্যক্তির অস্তিত্ব তাদের কাছে ভয়ানক বিরক্তিকর বরং অসহ্যকর হয়ে উঠেছিল যিনি মিথ্যাকে মিথ্যা বলেন এবং সঠিক কথা বলার চেষ্টা করেন। তাদের দাবী ছিল, আমাদের এ অন্ধদের সমাজে যদি কোন চক্ষুষ্মান ব্যক্তি থেকে থাকে তবে সে আমাদের চোখ খুলে কানা করে দেবার পরিবর্তে তার নিজের চোখও বন্ধ করে রাখুক। নয়তো আমরা জোর করে তার চোখ কানা করে দেবো, যাতে আমাদের দেশে দৃষ্টিশক্তি নামক কোন জিনিস না থাকে। তারা এই যে কর্মনীতি অবলম্বন করেছিল এ সম্পর্কে আরো কিছু বলার পরিবর্তে আল্লাহ‌ তাঁর নবীকে হুকুম দিচ্ছেন, তাদেরকে নূহের ঘটনা শুনিয়ে দাও, এ ঘটনা থেকেই তারা তোমার ও তাদের মধ্যকার ব্যাপারটির জবাব পেয়ে যাবে।

* এটা একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। বলা হচ্ছে, আমি নিজের কাজ থেকে বিরত হবো না। তোমরা আমার বিরুদ্ধে যা করতে চাও করো। আমি আল্লাহর ওপর ভরসা রাখি। (তুলনামূলক পাঠের জন্য দেখুন সূরা হুদের ৫৫ আয়াত)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
* তোমরা যাদেরকে আল্লাহর শরীক বানিয়ে রেখেছ, তাদের সাহায্য অর্জন কর। (তোমাদের ধারণা অনুযায়ী যদি তারা তোমাদের সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে।)

[২] غمة শব্দটির দ্বিতীয় অর্থ হল, অস্পষ্টতা ও প্রচ্ছন্নতা। অর্থাৎ আমার বিরুদ্ধে তোমাদের কর্তব্য পরিষ্কার ও স্পষ্ট হওয়া দরকার।

* [১] (আমি তো তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না) যে, তার কারণে তোমরা এই অপবাদ দিতে পারবে যে, নবুওয়াতের দাবীদার হয়ে আমার উদ্দেশ্য ধন-সম্পদ অর্জন করা।

[২] নূহ (আঃ)-এর এই কথা দ্বারাও জানা গেল যে, সকল আম্বিয়াগণের দ্বীন ইসলামই ছিল। যদিও শরীয়তের নিয়ম-নীতি ভিন্ন ও তরীকা বিভিন্ন ছিল। যেমন (لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجا) المائدة-৪৮ দ্বারা বুঝা যায়। কিন্তু সকলের দ্বীন ছিল ইসলাম। দেখুনঃ সূরা নামল ২৭:৪৪, ২৭:৯১, সূরা বাক্বারাহ ২:১৩১-১৩২, সূরা ইউসুফ ১২:১০১, সূরা ইউনুস ১০:৮৪, সূরা আ’রাফ ৭:১২৬, সূরা মাইদাহ ৫:৪৮, ৫:১১১ এবং সূরা আনআম ৬:১৬২-১৬৩ নং আয়াত।

* [১] নূহ (আঃ)-এর সম্প্রদায় সব রকমের ওয়ায-নসীহত শোনার পরেও মিথ্যাজ্ঞান করা থেকে বিরত থাকল না। সুতরাং আল্লাহ তাআলা নূহ (আঃ) ও তাঁর প্রতি ঈমান আনয়নকারীদেরকে নৌকায় আরোহণ করিয়ে বাঁচিয়ে নিলেন এবং বাকি সকলকে, এমনকি নূহ (আঃ)-এর একজন পুত্রকেও ডুবিয়ে মারলেন।

[২] সেই সময় যারা জীবিত ছিল, তাদেরকে তাদের পূর্বের মানুষদের স্থলাভিষিক্ত করলাম। মানুষের পরবর্তী প্রজন্ম তাদের বংশ থেকেই, বিশেষ করে নূহ (আঃ)-এর তিন পুত্র থেকে বিস্তার লাভ করেছে। এই জন্য নূহ (আঃ)-কে দ্বিতীয় আদম বলা হয়।

তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-

* [১] এ পর্যন্ত যে আলোচনা হয়েছে তাতে এ লোকদেরকে ন্যায়সংগত যুক্তি ও হৃদয়গ্রাহী উপদেশের মাধ্যমে তাদের আকীদা-বিশ্বাসে কি কি ভুল-ভ্রান্তি আছে এবং সেগুলো ভুল কেন আর এর মোকাবিলায় সঠিক পথ কি এবং তা সঠিক কেন, একথা বুঝানো হয়েছিল। এখানে আল্লাহ তাঁর নবীকে হুকুম দিচ্ছেন, তাদেরকে নূহের ঘটনা শুনিয়ে দিন, এ ঘটনা থেকেই তারা আপনার ও তাদের মধ্যকার ব্যাপারটির জবাব পেয়ে যাবে। যেখানে তারা দেখতে পাবে যে, যারা কুফরিতে নিপতিত ছিল তাদেরকে কিভাবে কঠোর শাস্তি দিয়েছিলেন। [কুরতুবী] সুতরাং যারাই অনুরূপ কাজ করবে, আপনার উপর মিথ্যারোপ করবে, আপনার বিরোধিতা করবে তাদের পরিণতিও তা-ই হবে। [ইবন কাসীর]

[২] এটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। বলা হচ্ছে, আমি নিজের কাজ থেকে বিরত হবো না। তোমরা আমার বিরুদ্ধে যা করতে চাও করো। আমি আল্লাহ্‌র ওপর ভরসা রাখি। এ ব্যাপারে আরো দেখুন সূরা হুদের ৫৫নং আয়াত।

* আমাকে যে ইসলামের আনুগত্য করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে তার আনুগত্য আমি করছি। এর দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, ইসলাম সমস্ত নবী-রাসূলদের দ্বীন। তাদের শরীআত বিভিন্ন ছিল কিন্তু দ্বীন একই ছিল। নূহ আলাইহিস সালামের দ্বীন যে ইসলাম ছিল তা এ আয়াতে তার কথা থেকে আমরা তা জানতে পারলাম। অনুরূপভাবে ইবরাহীম আলাইহিস সালামও ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, “আমি রাববুল আলামীনের জন্য আত্মসমৰ্পন তথা ইসলাম গ্রহণ করেছি” [সূরা আল-বাকারাহঃ ১৩১] তাছাড়া ইয়াকুব আলাইহিসসালামও তার দ্বীনকে ইসলাম বলে ঘোষণা করেছিলেন [দেখুন সূরা আল-বাকারাহঃ ১৩২] আর ইউসুফ ও মূসা আলাইহিমাসসালামও সেটা ঘোষণা করেছিলেন [দেখুন, সূরা ইউসুফঃ ১০১, সূরা ইউনুসঃ ৮৪] বরং মূসা আলাইহিসসালামের উপর ঈমান গ্রহণকারী জাদুকরগণ, রাণী বিলকিস, ঈসা আলাইহিসসালামের হাওয়ারীগণ এরা সবাই তাদের দ্বীনকে ইসলাম বলে জানিয়েছেন [দেখুনঃ সূরা আল-আরাফঃ ১২৬, সূরা আন-নামলঃ ৪৪, সূরা আল-মায়েদাহঃ ৪৪, ১১১] এমনকি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেও আল্লাহ তা’আলা এ দ্বীনের অনুসারী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেনঃ “বলুন, আমার সালাত, আমার ইবাদাত, আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের রব আল্লাহ্‌রই উদ্দেশ্যে। তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি এরই জন্য আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি এবং আমিই প্রথম মুসলিম।” [সূরা আল-আনআমঃ ১৬২, ১৬৩] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “আমরা নবীগোষ্ঠি বৈমাত্রেয় ভাই, আমাদের দ্বীন একই’। [বুখারীঃ ৩৪৪৩, মুসলিমঃ ২৩৬৫]

 

 

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Yunus
Sura: 10
Verses :- 71-73
وَ اتۡلُ عَلَیۡہِمۡ نَبَاَ نُوۡحٍ
And recite to them the news of Noah,
The Story of Nuh and His People

Allah instructed His Prophet, saying:

وَاتْلُ عَلَيْهِمْ

And recite to them,

relate to the disbelievers of the Quraysh who belied you and rejected you,

نَبَأَ نُوحٍ

the news of Nuh,

meaning, his story and news with his people who belied him. Tell them how Allah destroyed them and caused every last one of them all to drown. Let this be a lesson for your people, lest they will be destroyed like them.

إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ يَا قَوْمِ إِن كَانَ كَبُرَ عَلَيْكُم مَّقَامِي وَتَذْكِيرِي بِأيَاتِ اللّهِ فَعَلَى اللّهِ تَوَكَّلْتُ

When he said to his people:”O my people, if my stay (with you), and my reminding (you) of the Ayat of Allah is hard on you, then I put my trust in Allah.”

Meaning, `if you find that it is too much of an offense that I should live among you and preach to you the revelation of Allah and His signs and proofs, then I do not care what you think, and I will not stop inviting you.’

فَأَجْمِعُواْ أَمْرَكُمْ وَشُرَكَاءكُمْ

So devise your plot, you and your partners,

`get together with all of your deities (idols and statues) that you call upon beside Allah,’

ثُمَّ لَا يَكُنْ أَمْرُكُمْ عَلَيْكُمْ غُمَّةً

and let not your plot be in confusion for you,

meaning, and do not be confused about this, rather come and let us settle this together if you claim that you are truthful,’

ثُمَّ اقْضُواْ إِلَيَّ

Then pass your sentence on me,

وَلَا تُنظِرُونِ

and give me no respite.

`Do not give me respite even for one hour. Whatever you can do, go ahead and do it. I do not care, and I do not fear you, because you are not standing on anything.’

This is similar to what Hud said to his people,

إِن نَّقُولُ إِلاَّ اعْتَرَاكَ بَعْضُ ءَالِهَتِنَا بِسُوءٍ قَالَ إِنِّى أُشْهِدُ اللَّهِ وَاشْهَدُواْ أَنِّى بَرِىءٌ مِّمَّا تُشْرِكُونَ

مِن دُونِهِ فَكِيدُونِى جَمِيعًا ثُمَّ لَا تُنظِرُونِ إِنِّى تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ رَبِّى وَرَبِّكُمْ

I call Allah to witness, and you bear witness, that I am free from that which you ascribe as partners in worship with Him (Allah). So plot against me, all of you, and give me no respite. I put my trust in Allah, my Lord and your Lord! (11:54-55)
Islam is the Religion of all of the Prophets

Nuh said.

فَإِن تَوَلَّيْتُمْ

But if you turn away,

if you belie the message and turn away from obedience.

فَمَا سَأَلْتُكُم مِّنْ أَجْرٍ

then no reward have I asked of you,

I have not asked you anything for my advice.

إِنْ أَجْرِيَ إِلاَّ عَلَى اللّهِ وَأُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ مِنَ الْمُسْلِمِينَ

My reward is only from Allah. And I have been commanded to be of the Muslims.

I submit to Islam. Islam is the religion of all of the Prophets from the first to the last. Their laws and their rules may be of different types but the religion is the same.

Allah said:

لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَـجاً

To each among you, We have prescribed a law and a clear way. (5:48)

Ibn Abbas said:

“A way and a Sunnah.”

Here Nuh is saying:

وَأُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ مِنَ الْمُسْلِمِينَ

and I have been commanded to be of the Muslims.

Allah said about His friend, Ibrahim:

إِذْ قَالَ لَهُ رَبُّهُ أَسْلِمْ قَالَ أَسْلَمْتُ لِرَبِّ الْعَـلَمِينَ

وَوَصَّى بِهَأ إِبْرَهِيمُ بَنِيهِ وَيَعْقُوبُ يَـبَنِىَّ إِنَّ اللَّهَ اصْطَفَى لَكُمُ الدِّينَ فَلَ تَمُوتُنَّ إَلاَّ وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ

When his Lord said to him, “Submit (be a Muslim)!”

He said, “I have submitted myself (as a Muslim) to the Lord of all that exists.”

And this was enjoined by Ibrahim upon his sons and by Yaqub (saying), “O my sons! Allah has chosen for you the (true) religion, then die not except as Muslims.” (2:131-132)

Yusuf said:

رَبِّ قَدْ اتَيْتَنِى مِنَ الْمُلْكِ وَعَلَّمْتَنِى مِن تَأْوِيلِ الاٌّحَادِيثِ فَاطِرَ السَّمَـوَتِ وَالاٌّرْضِ أَنتَ وَلِىِّ فِى الدُّنُيَا وَالاٌّخِرَةِ تَوَفَّنِى مُسْلِمًا وَأَلْحِقْنِى بِالصَّـلِحِينَ

My Lord! You have indeed bestowed on me of the sovereignty, and taught me something of the interpretation of dreams — the (Only) Creator of the heavens and the earth! You are my Guardian in this world and in the Hereafter. Cause me to die as a Muslim, and join me with the righteous. (12:101)

Musa said:

يقَوْمِ إِن كُنتُمْ ءامَنْتُمْ بِاللَّهِ فَعَلَيْهِ تَوَكَّلُواْ إِن كُنْتُم مُّسْلِمِينَ

O my people! If you have believed in Allah, then put your trust in Him if you are Muslims. (10:84)

The magicians said:

رَبَّنَأ أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَتَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ

Our Lord! pour out on us patience, and cause us to die as Muslims. (7:126)

Bilqis said:

رَبِّ إِنِّى ظَلَمْتُ نَفْسِى وَأَسْلَمْتُ مَعَ سُلَيْمَـنَ لِلَّهِ رَبِّ الْعَـلَمِينَ

My Lord! Verily, I have wronged myself, and I submit (I have become Muslim) together with Suleiman to Allah, the Lord of all that exists. (27:44)

Allah said:

إِنَّأ أَنزَلْنَا التَّوْرَاةَ فِيهَا هُدًى وَنُورٌ يَحْكُمُ بِهَا النَّبِيُّونَ الَّذِينَ أَسْلَمُواْ

Verily, We did send down the Tawrah, therein was guidance and light, by which the Prophets, judged for the Jews. (5:44)

He also said:

وَإِذْ أَوْحَيْتُ إِلَى الْحَوَارِيِّينَ أَنْ ءَامِنُواْ بِى وَبِرَسُولِى قَالُواْ ءَامَنَّا وَاشْهَدْ بِأَنَّنَا مُسْلِمُونَ

And when I (Allah) inspired Al-Hawariyyin to believe in Me and My Messenger, they said:”We believe. And bear witness that we are Muslims.” (5:111)

The last of the Messengers and the leader of mankind said:

قُلْ إِنَّ صَلَتِى وَنُسُكِى وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِى للَّهِ رَبِّ الْعَـلَمِينَ

لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَاْ أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ

Verily, my Salah, my sacrifice, my living, and my dying are for Allah, the Lord of all that exists. He has no partner. And of this I have been commanded, and I am the first of the Muslims. (6:162-163)

meaning, from this Ummah.

He said, in an authentic Hadith:

نَحْنُ مَعْشَرَ الاَْنِبْيَاءِ أَوْلَادُ عَلَّتٍ وَدِينُنُا وَاحِد

We, the Prophets are brothers with (the same father but) different mothers. Our religion is the same,

meaning, `we should worship Allah alone without partners while having different laws.’
The Evil Goal and End of Criminals

Allah said.

فَكَذَّبُوهُ فَنَجَّيْنَاهُ وَمَن مَّعَهُ

They denied him, but We delivered him, and those with him,

meaning on his religion,

فِي الْفُلْكِ

in the (Fulk) ship,
Fulk refers to the ark, and,

وَجَعَلْنَاهُمْ خَلَيِفَ

We made them generations replacing one after another, (on earth),

وَأَغْرَقْنَا الَّذِينَ كَذَّبُواْ بِأيَاتِنَا فَانظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُنذَرِينَ

while We drowned those who belied Our Ayat. Then see what was the end of those who were warned.

meaning `O Muhammad, see how We saved the believers and destroyed the deniers!

Leave a Reply