أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 683)
[ أَفَأَنتَ تُكْرِهُ النَّاسَ
মানুষের উপর জবরদস্তি করবে?
So, will you then compel mankind?]
www.motaher21.net
وَ لَوۡ شَآءَ رَبُّکَ لَاٰمَنَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ کُلُّہُمۡ جَمِیۡعًا ؕ اَفَاَنۡتَ تُکۡرِہُ النَّاسَ حَتّٰی یَکُوۡنُوۡا مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۹۹﴾
আর যদি তোমার প্রতিপালক ইচ্ছা করতেন, তাহলে বিশ্বের সকল লোকই বিশ্বাস করত;তাহলে তুমি কি বিশ্বাসী হওয়ার জন্য মানুষের উপর জবরদস্তি করবে?
And had your Lord willed, those on earth would have believed – all of them entirely. Then, [O Muhammad], would you compel the people in order that they become believers?
وَ مَا کَانَ لِنَفۡسٍ اَنۡ تُؤۡمِنَ اِلَّا بِاِذۡنِ اللّٰہِ ؕ وَ یَجۡعَلُ الرِّجۡسَ عَلَی الَّذِیۡنَ لَا یَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۰۰﴾
অথচ আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কারো বিশ্বাস স্থাপন করার সাধ্য নেই; আর আল্লাহ নির্বোধ লোকদের উপর (কুফরীর) অপবিত্রতা স্থাপন করে দেন।
And it is not for a soul to believe except by permission of Allah, and He will place defilement upon those who will not use reason.
সুরা: ইউনুস
সুরা:১০
৯৯-১০০ নং আয়াত:-
أَفَأَنتَ تُكْرِهُ النَّاسَ
মানুষের উপর জবরদস্তি করবে?
So, will you then compel mankind?
৯৯-১০০ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলা বলছেন যে, যদি তিনি ইচ্ছা করতেন তবে পৃথিবীর সকল লোকই ঈমান আনত। কিন্তু এটা আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করেননি। কারণ এটা তাঁর সেই হিকমত ও কৌশলের বিপরীত, যা পূর্ণভাবে তিনিই জানেন। এ কথা এজন্যই বলেছেন যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বড় আকাক্সক্ষা হত যে, সকল মানুষ মুসলিম হয়ে যাক। আল্লাহ তা‘আলা বললেন, এটা হতে পারে না। যেমন
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِجَهَنَّمَ كَثِيْرًا مِّنَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ)
“আমি তো বহু জিন ও মানবকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি, (সূরা আ‘রাফ ৭:১৭৯)
এ আয়াত থেকে বাতিল বিশ্বাস পোষণকারীদের ন্যায় এ বিশ্বাস পোষণ করা যাবে না যে, তাহলে মানুষেরই বা কী দোষ। আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করেননি তাই তারা ঈমান আনেনি। আমরা বলব: না, এমনটি নয়; বরং আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে ভাল-মন্দ দু‘টো দিকই দেখিয়ে স্বাধীনতা দিয়েছেন, সে ইচ্ছানুযায়ী পছন্দ করে নেবে। তাকে ভাল বা মন্দ কোন কিছুর জন্য বাধ্য করা হয়নি। সুতরাং কেউ যদি স্বেচ্ছায় মন্দ পথ বেছে নেয় তাহলে কি আল্লাহ তা‘আলার কোন দোষ?
এ জন্য পরের আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ত‘আলা বলছেন; তুমি কি মানুষকে ঈমান আনতে বাধ্য করবে? কেউ যদি স্বেচ্ছায় ঈমান না আনতে চায় তাহলে তাকে বাধ্য করলে পরীক্ষার বিষয় থাকলো না। মূলত আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছা ছাড়া কেউ ঈমান আনতে পারে না। যেমন সূরা মায়িদার ৪১ নং আয়াতে, সূরা নামলের ৪৭ নং আয়াতে এবং সূরা আ‘রাফের ১৮৬ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করতে হবে, হে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে ঈমান দিয়ে তার ওপর অটল রাখ।
আর আয়াতে যে অপবিত্রতার কথা বলা হয়েছে তা দ্বারা উদ্দেশ্য হল আযাব বা কুফরী। অর্থাৎ যারা আল্লাহ তা‘আলার আয়াত নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে না তারা কুফরীতেই নিমজ্জিত থাকে এবং এভাবেই তারা আযাবের উপযুক্ত হয়ে যায়।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলাকে দোষারোপ করা যাবে না।
২. মানুষকে ঈমান আনার ব্যাপারে বাধ্য করা যাবে না।
৩. মানুষকে ভাল-মন্দ দু‘টো দিকই দেয়া হয়েছে। সে হয় ঈমান আনবে অন্যথায় কুফরী করবে।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# আল্লাহ যদি চাইতেন যে, এ পৃথিবীতে শুধুমাত্র তার আদেশ পালনকারী অনুগতরাই বাস করবে এবং কুফরী ও নাফরমানীর কোন অস্তিত্বই থাকবে না তাহলে তার জন্য সারা দুনিয়াবাসীকে মু’মিন ও অনুগত বানানো কঠিন ছিল না এবং নিজের একটি মাত্র সৃজনী ইঙ্গিতের মাধ্যমে তাদের অন্তর ঈমান ও আনুগত্যে ভরে তোলাও তার পক্ষে সহজসাধ্য ছিল। কিন্তু মানব জাতিকে সৃষ্টি করার পেছনে তার যে প্রজ্ঞাময় উদ্দেশ্য কাজ করছে এ প্রাকৃতিক বল প্রয়োগে তা বিনষ্ট হয়ে যেতো। তাই আল্লাহ নিজেই ঈমান আনা বা না আনা এবং আনুগত্য করা বা না করার ব্যাপারে মানুষকে স্বাধীন রাখতে চান।
# এর অর্থ এ নয় যে, নবী (সা.) লোকদেরকে জোর করে মু’মিন বানাতে চাচ্ছিলেন এবং আল্লাহ তাকে এমনটি করতে বাধা দিচ্ছিলেন। আসলে কুরআনের বিভিন্ন স্থানে আমরা যে বর্ণনা পদ্ধতি পাই এ বাক্যও সেই একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। সেখানে আমরা দেখি, সম্বোধন করা হয়েছে বাহ্যত নবী (সা.) কে কিন্তু আসলে নবীকে সম্বোধন করে যে কথা বলা হয় তা লোকদেরকে শুনানোই উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। এখানে যা কিছু বলতে চাওয়া হয়েছে তা হচ্ছে এই যে, হে লোকেরা! যুক্তি প্রমাণের সাহায্যে হেদায়াত ও গোমরাহীর পার্থক্য স্পষ্ট করে তুলে ধরার এবং সঠিক পথ পরিষ্কারভাবে দেখিয়ে দেবার যে দায়িত্ব ছিল তা আমার নবী পুরোপরি পালন করেছেন। এখন যদি তোমরা নিজেরাই সঠিক পথে চলতে না চাও এবং তোমাদের সঠিক পথে চলা যদি এর ওপর নির্ভরশীল হয় যে, কেউ তোমাদের ধরে বেঁধে সঠিক পথে চালাবে, তাহলে তোমাদের জেনে রাখা উচিত, নবীকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়নি। এভাবে জবরদস্তি ঈমান আনা যদি আল্লাহর অভিপ্রেত হতো তাহলে এ জন্য নবী পাঠাবার কি প্রয়োজন ছিল? এ কাজ তো তিনি নিজেই যখন ইচ্ছা করতে পারতেন।
# সমস্ত নিয়ামত যেমন আল্লাহর একচ্ছত্র মালিকানাধীন এবং আল্লাহর হুকুম ছাড়া কোন ব্যক্তি কোন নেয়ামতও নিজে লাভ করতে বা অন্যকে দান করতে পারে না ঠিক তেমনভাবে এ ঈমানের নিয়ামতও আল্লাহর একচ্ছত্র মালিকানাধীন। অর্থাৎ কোন ব্যক্তির ঈমানদার হওয়া এবং তার সত্য সঠিক পথের সন্ধান লাভ করাও আল্লাহর অনুমতির ওপর নির্ভরশীল। আল্লাহর হুকুম ছাড়া কোন ব্যক্তি এ নিয়ামতটি নিজে লাভ করতে পারে না এবং কোন মানুষ ইচ্ছা করলে কাউকে এ নিয়ামতটি দান করতেও পারে না। কাজেই নবী যদি লোকদেরকে মু’মিন বানাবার জন্য একান্ত আন্তরিকভাবে কামনাও করেন তাহলেও তার জন্য আল্লাহর হুকুম এবং তার পক্ষ থেকে এ কাজের জন্য সুযোগ দানেরও প্রয়োজন হয়।
# এখানে পরিষ্কার বলে দেয়া হয়েছে, আল্লাহর অনুমতি ও তার সুযোগ দান অন্ধভাবে বিচার-বিবেচনা ছাড়াই সম্পন্ন হয় না। কোন রকম মহৎ উদ্দেশ্য ছাড়া এবং কোন প্রকার যুক্তিসঙ্গত নিয়ম কানুন ছাড়াই যেভাবে ইচ্ছা এবং যাকে ইচ্ছা এ নিয়ামতটি লাভ করার সুযোগ দেয়াও হয় না এবং যাকে ইচ্ছা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত ও করা হয়না। বরং এর একটি অত্যন্ত জ্ঞানগর্ভ নিয়ম হচ্ছে, যে ব্যক্তি সত্যের সন্ধানে নিজের বুদ্ধিবৃত্তিকে নির্দ্বিধায় যথাযথভাবে ব্যবহার করে তার জন্য তো আল্লাহর পক্ষ থেকে সত্যে পৌঁছে যাবার কার্যকরণ ও উপায়উপকরণ তার- নিজের প্রচেষ্টা ও চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ করে দেয়া হয় এবং তাকেই সঠিক জ্ঞান লাভ করার ঈমান আনার সুযোগ দান করা হয়। আর যারা সত্যসন্ধানি নয় এবং নিজেদের বুদ্ধিকে অন্ধগোষ্ঠী প্রীতি ও সংকীর্ণ স্বার্থ-বিদ্বেষের ফাঁদে আটকে রাখে অথবা আদৌ তাকে সত্যের সন্ধানে ব্যবহারই করে না তাদের জন্য আল্লাহর নিয়তির ভাণ্ডারে মূর্খতা, অজ্ঞতা, ভ্রষ্টতা, ত্রুটিপূর্ণ দৃষ্টি ও ত্রুটিপূর্ণ কর্মের আবর্জনা ছাড়া আর কিছুই নেই। তারা নিজেদেরকে এ ধরনের আবর্জনা ও অপবিত্রতার যোগ্য করে এবং এটিই হয়ে যায় তাদের নিয়তির লিখন।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৯৯-১০০ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা’আলা বলেন, হে মুহাম্মাদ (সঃ)! যদি আল্লাহ চাইতেন তবে দুনিয়ার সমস্ত মানুষই ঈমান আনতো। কিন্তু তিনি যা কিছু করেন তাতে নিপুণতা রয়েছে। আল্লাহর ইচ্ছা হলে সবাই এক খেয়ালেরই হতো। কিন্তু পৃথিবীতে বিভিন্ন মতের লোক রয়েছে। সঠিক মতের উপর তারাই রয়েছে যাদের উপর আল্লাহর করুণা বর্ষিত হয়েছে। আর তাদের স্বভাবও এভাবেই বানানো হয়েছে। হে নবী (সঃ)! তোমার প্রতিপালকের এ কথাটি পূর্ণ হয়েই থাকবে। তা হচ্ছে এই যে, তিনি বলেনঃ “আমি অবশ্যই জাহান্নামকে দানব ও মানব উভয় জাতি দ্বারা পূর্ণ করবো।” যদি সকলকেই আল্লাহ হিদায়াত করতেন, তবে কি ঈমান অর্থহীন হয়ে যেতো না? তাই আল্লাহ তাআলা বলেন, হে নবী (সঃ)! তুমি কি জোর করে তাদেরকে মুমিন বানাতে চাও? না, এটা তোমার জন্যে শোভনীয় নয় এবং ওয়াজিবও নয়। আল্লাহই যাকে চান পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান হিদায়াত দান করেন। তুমি তাদের জন্যে আফসোস করে করে নিজেকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না এই মনে করে যে, তারা ঈমান আনছে না। আল্লাহ পাক এক জায়গায় বলেনঃ “হে নবী (সঃ)! তুমি যাকে ভালবাস তাকে হিদায়াত দান। করতে পার না।” অন্য জায়গায় তিনি বলেনঃ “হে রাসূল (সঃ)! তোমার দায়িত্ব। হচ্ছে শুধু পৌছিয়ে দেয়া, আর হিসাব গ্রহণের দায়িত্ব আমার।” আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ “হে নবী (সঃ)! তুমি শুধু উপদেশ দিতে থাকো, কেননা, তুমি তো শুধু উপদেষ্টা মাত্র। তুমি তাদের উপর দায়গ্রস্ত অধিকারী নও।” এ আয়াতগুলো এটাই প্রমাণ করছে যে, আল্লাহ তা’আলা যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কেউই ঈমান আনতে পারে না। জ্ঞান ও বিবেক দ্বারা যে কাজ করে না তাকে পথভ্রষ্ট করে দেয়া হয়। হিদায়াত করা ও না করার ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা ন্যায়পরায়ণ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
# কিন্তু আল্লাহ তাআলা সে ইচ্ছা করেননি। কারণ এটা তাঁর সেই হিকমত ও কৌশলের বিপরীত, যা পূর্ণরূপে তিনিই জানেন। এ কথা এই জন্য বলেছেন যে, নবী (সাঃ)-এর বড় আকাঙ্ক্ষা হত যে, সকল মানুষ মুসলিম হয়ে যাক। আল্লাহ তাআলা বললেন, এটা হতে পারে না। কারণ আল্লাহর পরিপূর্ণ হিকমত এবং প্রজ্ঞাময় কৌশলের উপর প্রতিষ্ঠিত ইচ্ছার চাহিদা তা নয়। এই জন্য পরে বলেছেন যে, তুমি মানুষকে ঈমান আনার জন্য কিভাবে বাধ্য করতে পার? যেহেতু তোমার মাঝে না তার ক্ষমতা আছে, আর না তুমি তার ভারপ্রাপ্ত।
# অপবিত্রতা’ থেকে উদ্দেশ্য হল আযাব বা কুফরী। অর্থাৎ, যারা আল্লাহর নিদর্শনাবলী নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে না, তারা কুফরীতেই নিমজ্জিত থাকে এবং এই ভাবেই আযাবের উপযুক্ত হয়ে যায়।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
# আল্লাহ যদি চাইতেন যে, এ পৃথিবীতে শুধুমাত্র তাঁর আদেশ পালনকারী অনুগতরাই বাস করবে এবং কুফরী ও নাফরমানীর কোন অস্তিত্বই থাকবে না তাহলে তাঁর জন্য সারা দুনিয়াবাসীকে মুমিন ও অনুগত বানানো কঠিন ছিল না এবং নিজের একটি মাত্র সৃজনী ইংগিতের মাধ্যমে তাদের অন্তর ঈমান ও আনুগত্যে ভরে তোলাও তাঁর পক্ষে সহজ ছিল। কিন্তু মানব জাতিকে সৃষ্টি করার পেছনে তাঁর যে প্রজ্ঞাময় উদ্দেশ্য কাজ করছে এ প্রাকৃতিক বল প্রয়োগ তা বিনষ্ট করে দিতো। তাই আল্লাহ নিজেই ঈমান আনা বা না আনা এবং আনুগত্য করা বা না করার ব্যাপারে মানুষকে স্বাধীন রাখতে চান। [এ ব্যাপারে আরো দেখুন, সূরা হুদঃ ১১৮, ১১৯, সূরা আর-রা’দঃ৩১]
[২] ইবন আব্বাস বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঐকান্তিক ইচ্ছা ছিল যে, সমস্ত মানুষই ঈমান আনুক। তখন আল্লাহ্ তা’আলা জানিয়ে দিলেন যে, যাদের ঈমানের কথা পূর্বেই প্রথম যিকর তথা মানুষের তাকদীরে লিখা হয়েছে কেবল তারাই ঈমান আনবে, আর যাদের দূর্ভাগ্যের কথা প্রথম যিকর তথা প্রথম তাকদীর নির্ধারণে লিখা হয়েছে কেবল তারাই দূর্ভাগা হবে। [তাবারী; কুরতুবী] এর অর্থ প্রমাণের সাহায্যে হেদায়াত ও গোমরাহীর পার্থক্য স্পষ্ট করে তুলে ধরার এবং সঠিক পথ পরিষ্কারভাবে দেখিয়ে দেবার যে দায়িত্ব ছিল তা আমার নবী পুরোপুরি পালন করেছেন। এখন যদি তোমরা নিজেরাই সঠিক পথে চলতে না চাও এবং তোমাদের সঠিক পথে যদি এর ওপর নির্ভরশীল হয় যে, কেউ তোমাদের ধরে বেঁধে সঠিক পথে চালাবে, তাহলে তোমাদের জেনে রাখা উচিত, নবীকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়নি। যাকে আল্লাহ হিদায়াত করবেন না তার জন্য কোন হিদায়াতকারী নেই। এমন কেউ নেই যে, তার মনের উপর জোর করে ঈমানের জন্য সেটাকে প্রশস্ত করে দেবে। তবে যদি আল্লাহ সেটা চান তবে ভিন্ন কথা। [আদওয়াউল বায়ান] অন্য আয়াতেও আল্লাহ সেটা বর্ণনা করেছেন যে, “আর আল্লাহ যাকে ফিতনায় ফেলতে চান তার জন্য আল্লাহর কাছে আপনার কিছুই করার নেই।” [সূরা আল-মায়িদাহ: ৪১] আরও বলেন, “আপনি যাকে ভালবাসেন ইচ্ছে করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবেন না। তবে আল্লাহই যাকে ইচ্ছে সৎপথে আনয়ন করেন এবং সৎপথ অনুসারীদের সম্পর্কে তিনিই ভাল জানেন। ” [সূরা আল-কাসাস: ৫৬] অনুরূপ আরও অন্যান্য আয়াতেও এসেছে, যেমন, সূরা আন-নিসা: ৮৮, ১৪৩; সূরা আর-আ’রাফ: ১৭৮; সূরা আর-রা’দ: ৩৩; সূরা আল-ইসরা: ৯৭; সূরা আল-কাহাফ: ১৭; সূরা আয-যুমার: ২৩, ৩৬; সূরা গাফির: ৩৩; সূরা আশ-শূরা: ৪৪, ৪৬।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Yunus
Sura: 10
Verses :- 99-100
أَفَأَنتَ تُكْرِهُ النَّاسَ
So, will you then compel mankind?
It is not Part of Allah’s Decree to compel Belief
Allah said:
وَلَوْ شَاء رَبُّكَ
And had your Lord willed,
meaning `O Muhammad, if it had been the will of your Lord, He would make all the people of the earth believe in what you have brought to them. But Allah has wisdom in what He does.’
لاامَنَ مَن فِي الَارْضِ كُلُّهُمْ جَمِيعًا
those on earth would have believed, all of them together.
Similarly, Allah said:
وَلَوْ شَأءَ رَبُّكَ لَجَعَلَ النَّاسَ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلَا يَزَالُونَ مُخْتَلِفِينَ
إِلاَّ مَن رَّحِمَ رَبُّكَ وَلِذلِكَ خَلَقَهُمْ وَتَمَّتْ كَلِمَةُ رَبِّكَ لاّمْلّنَّ جَهَنَّمَ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ
And if your Lord had so willed, He could surely have made mankind one Ummah, but they will not cease to disagree. Except him on whom your Lord has bestowed His mercy and for that did He create them. And the Word of your Lord has been fulfilled (His saying):”Surely, I shall fill Hell with Jinn and men all together.” (11:118-119)
He also said,
أَفَلَمْ يَاْيْـَسِ الَّذِينَ ءَامَنُواْ أَن لَّوْ يَشَأءُ اللَّهُ لَهَدَى النَّاسَ جَمِيعًا
Have not then those who believed yet known that had Allah willed, He could have guided all mankind. (13:31)
Therefore, Allah said:
أَفَأَنتَ تُكْرِهُ النَّاسَ
So, will you then compel mankind,
and force them to believe.
حَتَّى يَكُونُواْ مُوْمِنِينَ
until they become believers.
meaning, it is not for you to do that. You are not commanded to do that either.
It is Allah Who
يُضِلُّ مَن يَشَأءُ وَيَهْدِى مَن يَشَأءُ
sends astray whom He wills, and guides whom He wills. (35:8)
فَلَ تَذْهَبْ نَفْسُكَ عَلَيْهِمْ حَسَرَتٍ
So do not destroy yourself in sorrow for them. (35:8)
لَّيْسَ عَلَيْكَ هُدَاهُمْ وَلَـكِنَّ اللَّهَ يَهْدِى مَن يَشَأءُ
It is not up to you to guide them, but Allah guides whom He wills. (2:272)
لَعَلَّكَ بَـخِعٌ نَّفْسَكَ أَلاَّ يَكُونُواْ مُوْمِنِينَ
It may be that you would kill yourself with grief because they are not believers. (26:3)
إِنَّكَ لَا تَهْدِى مَنْ أَحْبَبْتَ
you guide not who you like.. (28:56)
فَإِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلَـغُ وَعَلَيْنَا الْحِسَابُ
Your duty is only to convey, and it is up to Us to reckon. (13:40)
فَذَكِّرْ إِنَّمَأ أَنتَ مُذَكِّرٌ
لَّسْتَ عَلَيْهِم بِمُسَيْطِرٍ
So remind, you are only one who reminds. You are not a dictator over them. (88:21-22)
There are other Ayat besides these which prove that Allah is the doer of what He wants, guiding whom He wills, leading whom He wills to stray, all out of His knowledge, wisdom, and justice.
Similarly, He said.
وَمَا كَانَ لِنَفْسٍ أَن تُوْمِنَ إِلاَّ بِإِذْنِ اللّهِ وَيَجْعَلُ الرِّجْسَ
It is not for any person to believe, except by the leave of Allah, and He will put the Rijs,
That is, disorder and misguidance,
عَلَى الَّذِينَ لَا يَعْقِلُونَ
upon those who do not reason.
meaning, Allah’s proofs and evidences, and He is the Just in all matters, guiding whom He wills to guide, and leading whom He wills astray.