(Book# 686) [فَمَنِ اہۡتَدٰی فَاِنَّمَا یَہۡتَدِیۡ لِنَفۡسِہٖ ۚ যারা সৎপথ অবলম্বন করবে, তারা তো নিজেদের মঙ্গলের জন্য সৎপথ অবলম্বন করবে, Whoever is guided is only guided for his soul.] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 686)
[فَمَنِ اہۡتَدٰی فَاِنَّمَا یَہۡتَدِیۡ لِنَفۡسِہٖ ۚ
যারা সৎপথ অবলম্বন করবে, তারা তো নিজেদের মঙ্গলের জন্য সৎপথ অবলম্বন করবে,
Whoever is guided is only guided for his soul.]
www.motaher21.net
قُلۡ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ قَدۡ جَآءَکُمُ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّکُمۡ ۚ فَمَنِ اہۡتَدٰی فَاِنَّمَا یَہۡتَدِیۡ لِنَفۡسِہٖ ۚ وَ مَنۡ ضَلَّ فَاِنَّمَا یَضِلُّ عَلَیۡہَا ۚ وَ مَاۤ اَنَا عَلَیۡکُمۡ بِوَکِیۡلٍ ﴿۱۰۸﴾ؕ
বলুন, ‘হে লোকসকল ! অবশ্যই তোমাদের রবের কাছ থেকে তোমাদের কাছে সত্য এসেছে। কাজেই যারা সৎপথ অবলম্বন করবে তারা তো নিজেদেরই মঙ্গলের জন্য সৎপথ অবলম্বন করবে এবং যারা পথভ্রষ্ট হবে তারা তো পথভ্রষ্ট হবে নিজেদেরই ধ্বংসের জন্য এবং আমি তোমাদের উপর কর্মবিধায়ক নই।
Say, “O mankind, the truth has come to you from your Lord, so whoever is guided is only guided for [the benefit of] his soul, and whoever goes astray only goes astray [in violation] against it. And I am not over you a manager.”
وَ اتَّبِعۡ مَا یُوۡحٰۤی اِلَیۡکَ وَ اصۡبِرۡ حَتّٰی یَحۡکُمَ اللّٰہُ ۚۖ وَ ہُوَ خَیۡرُ الۡحٰکِمِیۡنَ ﴿۱۰۹﴾٪
আর আপনার প্রতি যে ওহী নাযিল হয়েছে আপনি তার অনুসরণ করুন এবং আপনি ধৈর্য ধারণ করুন যে পর্যন্ত না আল্লাহ্‌ ফয়সালা করেন, আর তিনিই সর্বোত্তম ফয়সালা প্রদানকারী।
And follow what is revealed to you, [O Muhammad], and be patient until Allah will judge. And He is the best of judges.

সুরা: ইউনুস
সুরা:১০
১০৮-১০৯ নং আয়াত:-
فَمَنِ اہۡتَدٰی فَاِنَّمَا یَہۡتَدِیۡ لِنَفۡسِہٖ ۚ
যারা সৎপথ অবলম্বন করবে, তারা তো নিজেদের মঙ্গলের জন্য সৎপথ অবলম্বন করবে,
Whoever is guided is only guided for his soul.
১০৮-১০৯ নং আয়াতের তাফসীর:

তাফসীরে‌ ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

এই আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তোমাদের নিকট সত্য এসে গেছে। এখানে সত্য বলতে কুরআন ও ইসলামকে বুঝানো হয়েছে। সুতরাং যে এই কুরআন অনুপাতে ইসলামের অনুসরণ করবে সে ইহকালে ও আখিরাতে মুক্তি পাবে এবং আল্লাহ তা‘আলার শাস্তি থেকে রক্ষা পাবে। আর যারা ইসলামের অনুসরণ করবে না বরং ভ্রষ্টতাকে বেছে নেবে সে নিজেই নিজের ক্ষতি করবে, তাতে অন্যের কোন ক্ষতি হবে না। বরং সে আখিরাতে এ জন্য শাস্তি ভোগ করবে। এতে আল্লাহ তা‘আলার কোন ক্ষতি নেই। অতএব তোমরা যদি নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করতে চাও এবং জান্নাতে যেতে চাও তাহলে সত্যকে আঁকড়ে ধর আর যদি সত্যকে বর্জন করে ভ্রষ্টতাকেই গ্রহণ করে নাও তাহলে আমি তোমাদের ওপর কর্তৃত্বশীল নই যে, বাধ্য করে সত্য গ্রহণ করাব। কারণ আমাকে তোমাদের ওপর এই দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়নি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَمَآ أَنْتَ عَلَيْهِمْ بِوَكِيْلٍ)

“আর তুমি তাদের অভিভাবকও নও।” (সূরা আ‘রাফ ৭:১০৭)

আমার দায়িত্ব শুধু আমার প্রতিপালকের বাণী তোমাদের কাছে পৌঁছে দেয়া তা ছাড়া আর কিছুই নয়। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ওয়াহীর অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন: তোমার প্রতি যা ওয়াহী করা হয়েছে তার অনুসরণ কর এবং তার ওপর ধৈর্য ধারণ কর। মূলত নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে উম্মাতকে নির্দেশ দিয়েছেন। ওয়াহীর অনুসরণ ও তার ওপর ধৈর্য ধারণ করতে হবে আল্লাহ তা‘আলার ফায়সালা আসার পূর্ব পর্যন্ত। এ ফায়সালা হল শত্র“দের ওপর জয় এবং সকল দীনের ওপর ইসলামকে বিজয়ী করা।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(إِذَا جَا۬ءَ نَصْرُ اللّٰهِ وَالْفَتْحُ لا وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُوْنَ فِيْ دِيْنِ اللّٰهِ أَفْوَاجًا)‏‏

“যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয় আসবে। তখন মানুষদেরকে তুমি দেখবে, তারা দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করছে।” (সূরা নাসর ১১০:১-২)

সুতরাং সর্বদা ওয়াহীর অনুসরণ করতে হবে। অন্য কোন মত, পথ ও তরীকার অনুসরণ করা যাবে না। আর এ ওয়াহীর পথে চলতে গিয়ে যত বাধা-বিপত্তি আসবে তাতে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. ইসলাম, কুরআন এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্য, সকলকে এ সত্যের অনুসরণ করতে হবে।
২. মানুষ তার কৃতকর্মের জন্য সৌভাগ্যবান অথবা দুর্ভাগা হয়।
৩. ওয়াহীর আনুগত্য করা ফরয।
৪. ধৈর্যের মাধ্যমে সফলতা আসে, আর আল্লাহ তা‘আলা ধৈর্যধারণকারীদের সহযোগিতা করেন।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
১০৮-১০৯ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ তাআলা নবী (সঃ)-কে নির্দেশ দিচ্ছেন- হে নবী (সঃ)! তুমি লোকদেরকে বলে দাও যে, আল্লাহ তা’আলার নিকট হতে যেসব অহী এসেছে তা সত্য। তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। যে ব্যক্তি হিদায়াত প্রাপ্ত হয়েছে এবং তার অনুসরণ করেছে, তার উপকার সে নিজেই লাভ করবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি হিদায়াত লাভ করেনি, তার কুফল তাকেই ভোগ করতে হবে। আমি আল্লাহর ফৌজদার নই যে, তোমাদেরকে জোরপূর্বক মুমিন বানিয়ে দিব। আমি তো শুধু তোমাদেরকে আল্লাহর শাস্তি হতে ভয় প্রদর্শনকারী। হিদায়াত দান করার কাজ একমাত্র আল্লাহর। আল্লাহ পাক বলেন- হে নবী (সঃ)! তুমি নিজেই অহীর অনুসরণ কর এবং তাকে শক্ত করে ধরে থাক। যারা তোমার বিরোধিতা করছে ওর উপর ধৈর্যধারণ কর, যে পর্যন্ত না আল্লাহর ফায়সালা চলে আসে। তিনি উত্তম ফায়সালাকারী। অর্থাৎ স্বীয় ইনসাফ ও হিকমতের মাধ্যমে তিনি উত্তম মীমাংসাকারী।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

[১] হক বা সত্য হল কুরআন ও দ্বীন ইসলাম। যাতে আল্লাহর একতত্ত্ববাদ ও মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর রিসালাতের উপর ঈমান অন্তর্ভুক্ত।

[২] অর্থাৎ তার ফল সে নিজেই ভোগ করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা পাবে।

[৩] তার ক্ষতি ও শাস্তি তার নিজের উপরেই বর্তাবে, কিয়ামতের দিন জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে। সুতরাং কেউ হিদায়াতের পথ অনুসরণ করলে তাতে আল্লাহর শক্তিতে কোন বৃদ্ধিলাভ হবে না এবং যদি কেউ কুফরী ও ভ্রষ্টতাকে বেছে নেয়, তবে তাতে আল্লাহর সার্বভৌমতত্ত্ব ও শক্তিতে কোন পার্থক্য পড়বে না। সুতরাং ঈমান ও হিদায়াতের জন্য অনুপ্রাণিত করা এবং কুফরী ও ভ্রষ্টতা থেকে বিরত থাকার জন্য তাকীদ ও ভীতি-প্রদর্শন করা, উভয়েরই উদ্দেশ্য হল, মানুষের মঙ্গল কামনা করা। আল্লাহর নিজস্ব কোন উদ্দেশ্য বা স্বার্থ নেই।

[৪] অর্থাৎ, আমাকে এই দায়িতত্ত্ব দেওয়া হয়নি যে, আমি তোমাদেরকে সর্বাবস্থাতে মুসলিম বানিয়ে ছাড়ব। বরং আমি তো শুধু সুসংবাদদাতা, সতর্ককারী, দ্বীনপ্রচারক ও তার আহবায়ক। আমার কাজ হল শুধু মু’মিনদেরকে সুসংবাদ দেওয়া, অবাধ্যদেরকে আল্লাহর আযাব ও তাঁর পাকড়াও থেকে ভীতি-প্রদর্শন করা এবং আল্লাহর বাণীর দাওয়াত ও তবলীগ করা। এই দাওয়াত মেনে কেউ ঈমান আনলে ভাল। আর কেউ না মানলে, আমার দায়িতত্ত্ব এ নয় যে, আমি তাকে জোর করে তা মানাবো।

# [১] আল্লাহ তাআলা যা প্রত্যাদেশ করেন, তা শক্তভাবে ধর, যা আদেশ করেন, তা পালন কর, যে জিনিস থেকে নিষেধ করেন, সে জিনিস থেকে বিরত থাক এবং কোন বিষয়ে শৈথিল্য করো না। আর অহী অনুযায়ী চলতে যে কষ্ট হবে, বিরোধীদের পক্ষ থেকে যে কষ্ট আসবে এবং দাওয়াত ও তবলীগের পথে যে সমস্যার সম্মুখীন হবে, সব কিছুর উপর ধৈর্য ধারণ কর এবং শক্তভাবে সব কিছুর মোকাবিলা কর।

[২] কারণ, তাঁর জ্ঞান পরিপূর্ণ, তাঁর ক্ষমতা ও শক্তি অপরিসীম এবং তাঁর করুণাও সর্বব্যাপী। ফলে তাঁর থেকে উত্তম বিচারক ও ফায়সালাদাতা আর কে হতে পারে?

তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
# অন্যত্রও আল্লাহ তা’আলা এ কথা বলেছেন। যেমন, “যে সৎপথ অবলম্বন করবে সে তো নিজেরই মংগলের জন্য সৎপথ অবলম্বন করে এবং যে পথভ্রষ্ট হবে সে তো পথভ্রষ্ট হবে নিজেরই ধ্বংসের জন্য।” [সূরা আল-ইসরা: ১৫]

# আল্লামা শানকীতী বলেন, এখানে নবী ও তার শক্রদের মাঝে কি ফয়সালা করেছেন সেটা বর্ণনা করেন নি। অন্য আয়াতে অবশ্য তা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, তিনি কাফেরদের উপর নবী ও তার অনুসারীদেরকে বিজয় দিয়েছেন। তাঁর দ্বীনকে অপরাপর সমস্ত দ্বীনের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ বলেন, “যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আর আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন, তখন আপনি আপনার রবের প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন, নিশ্চয় তিনি তাওবা কবুলকারী” [সূরা আন-নাসর] আরও বলেন, “নিশ্চয় আমরা আপনাকে দিয়েছি সুস্পষ্ট বিজয় যেন আল্লাহ আপনার অতীত ও ভবিষ্যত ক্রটিসমূহ মার্জনা করেন এবং আপনার প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করেন ও আপনাকে সরল পথে পরিচালিত করেন , এবং আল্লাহ আপনাকে বলিষ্ঠ সাহায্য দান করেন।” [সূরা আল-ফাতহঃ ১-৪] আরও বলেন, “তারা কি দেখে না যে, আমরা এ যমীনকে চতুর্দিক থেকে সংকুচিত করে আনছি ? আর আল্লাহ্‌ই আদেশ করেন, তাঁর আদেশ রদ করার কেউ নেই এবং তিনি হিসেব গ্রহণে তৎপর।” [সূরা আর-রা’দ: ৪১] অনুরূপ “তারা কি দেখছে না যে, আমরা যমীনকে চারদিক থেকে সংকুচিত করে আনছি।” [সূরা আল-আম্বিয়া: ৪৪] [আদওয়াউল বায়ান]

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Yunus
Sura: 10
Verses :- 108-109
فَمَنِ اہۡتَدٰی فَاِنَّمَا یَہۡتَدِیۡ لِنَفۡسِہٖ ۚ
Whoever is guided is only guided for his soul.

Allah says;

قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءكُمُ الْحَقُّ مِن رَّبِّكُمْ فَمَنِ اهْتَدَى فَإِنَّمَا يَهْتَدِي لِنَفْسِهِ وَمَن ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا

Say:”O people! Now the truth has come to you from your Lord. So whoever receives guidance, he does so for the good of himself. And whoever goes astray, he does so at his own loss.

Allah, the Exalted, commands His Messenger to inform the people that that which he has brought them from Allah is the truth. It is a message concerning which there is no doubt or suspicion. Therefore, whoever is guided by it and follows it, then he only benefits himself by doing so. Likewise, whoever is misguided away from this message, then he will suffer the consequences against his own self.

وَمَا أَنَاْ عَلَيْكُم بِوَكِيلٍ

And I am not set over you as a guardian.

This means, `I am not a guardian over you in order for you to become believers. I am only a warner to you and guidance belongs to Allah, the Exalted.’

Concerning Allah’s statement.

وَاتَّبِعْ مَا يُوحَى إِلَيْكَ وَاصْبِرْ

And follow what has been revealed to you, and be patient,

This means, `Adhere to that which Allah has revealed to you, and inspired you with, and be patient with the opposition that you meet from the people.’

حَتَّىَ يَحْكُمَ اللّهُ

until Allah gives judgment,

This means, `Until Allah judges between you and them.’

وَهُوَ خَيْرُ الْحَاكِمِينَ

And He is the best of judges.

This means that He is the best of those who pass judgment, due to His Justice and His wisdom.

This is the end of the Tafsir of Surah Yunus, and all praises and thanks are due to Allah.

Leave a Reply