أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 709)
[ فَقَدْ أَبْلَغْتُكُم
আমি তা তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।
Still I have conveyed the Message.]
www.motaher21.net
فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَقَدۡ اَبۡلَغۡتُکُمۡ مَّاۤ اُرۡسِلۡتُ بِہٖۤ اِلَیۡکُمۡ ؕ وَ یَسۡتَخۡلِفُ رَبِّیۡ قَوۡمًا غَیۡرَکُمۡ ۚ وَ لَا تَضُرُّوۡنَہٗ شَیۡئًا ؕ اِنَّ رَبِّیۡ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ حَفِیۡظٌ ﴿۵۷﴾
অতঃপর যদি তোমরা বিমুখ হয়ে যাও, তাহলে আমাকে যে পয়গাম দিয়ে তোমাদের প্রতি পাঠানো হয়েছে, আমি তা তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। আর আমার প্রতিপালক অন্য কোন জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন এবং তোমরা তাঁর কিছুই ক্ষতি করতে পারবে না; নিশ্চয় আমার প্রতিপালক প্রত্যেক বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকেন।’
But if they turn away, [say], “I have already conveyed that with which I was sent to you. My Lord will give succession to a people other than you, and you will not harm Him at all. Indeed my Lord is, over all things, Guardian.”
وَ لَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّیۡنَا ہُوۡدًا وَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ بِرَحۡمَۃٍ مِّنَّا ۚ وَ نَجَّیۡنٰہُمۡ مِّنۡ عَذَابٍ غَلِیۡظٍ ﴿۵۸﴾
আর যখন আমাদের নির্দেশ আসল তখন আমরা হূদ ও তাঁর সঙ্গে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমাদের অনুগ্রহে রক্ষা করলাম এবং রক্ষা করলাম তাদেরকে কঠিন শাস্তি হতে।
And when Our command came, We saved Hud and those who believed with him, by mercy from Us; and We saved them from a harsh punishment.
وَ تِلۡکَ عَادٌ ۟ۙ جَحَدُوۡا بِاٰیٰتِ رَبِّہِمۡ وَ عَصَوۡا رُسُلَہٗ وَ اتَّبَعُوۡۤا اَمۡرَ کُلِّ جَبَّارٍ عَنِیۡدٍ ﴿۵۹﴾
আর এ ‘আদ জাতি তাদের রবের নিদর্শন অস্বীকার করেছিল এবং অমান্য করেছিল তাঁর রাসূলগণকে এবং তারা প্রত্যেক উদ্ধত স্বৈরাচারীর নির্দেশ অনুসরণ করেছিল।
And that was ‘Aad, who rejected the signs of their Lord and disobeyed His messengers and followed the order of every obstinate tyrant.
وَ اُتۡبِعُوۡا فِیۡ ہٰذِہِ الدُّنۡیَا لَعۡنَۃً وَّ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ عَادًا کَفَرُوۡا رَبَّہُمۡ ؕ اَلَا بُعۡدًا لِّعَادٍ قَوۡمِ ہُوۡدٍ ﴿٪۶۰﴾
আর এ দুনিয়ায় তাদেরকে করা হয়েছিল লা’নতগ্রস্ত এবং লা’নতগ্রস্ত হবে তারা কিয়ামতের দিনেও। জেনে রাখ! ‘আদ সম্প্রদায় তো তাদের রবকে অস্বীকার করেছিল। জেনে রাখ! ধ্বংসই হচ্ছে হূদের সম্প্রদায় ‘আদের পরিণাম।
And they were [therefore] followed in this world with a curse and [as well] on the Day of Resurrection. Unquestionably, ‘Aad denied their Lord; then away with ‘Aad, the people of Hud.
সুরা: হুদ।
সুরা:১১
৫৭-৬০ নং আয়াত:-
فَقَدْ أَبْلَغْتُكُم
আমি তা তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।
Still I have conveyed the Message.
৫৭-৬০ নং আয়াতের তাফসীর :-
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
থেকে আল্লাহ তা‘আলা হূদ (عليه السلام) এবং তার সাথে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে রক্ষা করলেন তাঁর রহমত দ্বারা আর বাকিদেরকে আল্লাহ তা‘আলা কঠিন আযাব দিলেন এবং তাদেরকে ধ্বংস করে দিলেন। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে যে শাস্তি দিয়েছিলেন সে সম্পর্কে বলেন:
(وَفِيْ عَادٍ إِذْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الرِّيْحَ الْعَقِيْمَ ج - مَا تَذَرُ مِنْ شَيْءٍ أَتَتْ عَلَيْهِ إِلَّا جَعَلَتْهُ كَالرَّمِيْمِ)
“এবং (নিদর্শন রয়েছে) ‘আদের ঘটনায়, যখন আমি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম অকল্যাণকর বাতাস। তা যা কিছুর ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল তাকেই জরাজীর্ণ করে দিয়েছিল।” (সূরা যারিয়াত ৫১:৪১-৪২)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَاَمَّا عَادٌ فَاُھْلِکُوْا بِرِیْحٍ صَرْصَرٍ عَاتِیَةٍﭕﺫسَخَّرَھَا عَلَیْھِمْ سَبْعَ لَیَالٍ وَّثَمٰنِیَةَ اَیَّامٍﺫ حُسُوْمًاﺫ فَتَرَی الْقَوْمَ فِیْھَا صَرْعٰیﺫ کَاَنَّھُمْ اَعْجَازُ نَخْلٍ خَاوِیَةٍﭖﺆ)
“আর ‘আদ সম্প্রদায়, তাদেরকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় দ্বারা। যা তিনি তাদের ওপর প্রবাহিত করেছিলেন বিরামহীনভাবে সাত রাত ও আট দিন, তুমি (উপস্থিত থাকলে) সেই সম্প্রদায়কে দেখতে খেজুর কাণ্ডের ন্যায় সেখানে ছিন্ন ভিন্নভাবে পড়ে আছে।” (সূরা হা-ক্বাহ ৬৯:৬-৭)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
(إِنَّآ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِيْحًا صَرْصَرًا فِيْ يَوْمِ نَحْسٍ مُّسْتَمِرٍّ لا تَنْزِعُ النَّاسَ لا كَأَنَّهُمْ أَعْجَازُ نَخْلٍ مُّنْقَعِرٍ)
“আমি তাদের ওপর প্রেরণ করেছিলাম ক্রমাগত প্রবাহমান প্রচণ্ড গতিসম্পন্ন বায়ু, দুর্ভোগের দিনে, মানুষকে তা উৎখাত করেছিল উৎপাটিত খেজুর কাণ্ডের ন্যায়।” (সূরা ক্বামার ৫৪:১৯-২০)
(وَعَصَوْا رُسُلَه۫)
‘তাঁরা রাসূলদের অবাধ্য হল’ ‘আদ জাতির কাছে একজনই নাবী হূদ (عليه السلام)-কে প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্তু এখানে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, তারা তাঁর রাসূলদের অবাধ্য হল। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল একজন রাসূলকে অস্বীকার করা মানে সমস্ত রাসূলকে অস্বীকার করা। কারণ সমস্ত রাসূলের প্রতি ঈমান রাখা আবশ্যক। অথবা উদ্দেশ্য হল এ সম্প্রদায় তাদের কুফরী ও অস্বীকার করাতে এমন অতিরঞ্জন করে ফেলেছিল যে, হূদ (عليه السلام)-এর পরেও যদি আল্লাহ তা‘আলা তাদের মাঝে কোন নাবী প্রেরণ করেন তাহলে তারা সে সকল রাসূলকে অস্বীকার করবে। তাদের এরূপ কুফরী করার কারণে আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়াতেও লা’নত করলেন এবং আখিরাতেও তাদের ওপর লা’নত থাকবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হূদ (عليه السلام)-এর জাতিরাও তাঁকে অমান্য করলে শাস্তি অবধারিত হয়ে যায়।
২. ক্ষমা প্রার্থনা করে আল্লাহ তা‘আলার সৎ বান্দা হতে পারলে দুনিয়ায় শান্তি বিরাজ করবে।
৩. হূদ (عليه السلام)-এর জাতিকে প্রচণ্ড ঝড়-ঝাঞ্ঝা দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
৪. বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে সত্য প্রত্যাখ্যান করার পরিণাম ভাল নয়।
৫. পূর্ববর্তী এসব জাতির বিবরণ তুলে ধরার অন্যতম কারণ হল তাদের থেকে শিক্ষা নিয়ে সতর্ক হওয়া।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৫৭-৬০ নং আয়াতের তাফসীর
হযরত হূদ (আঃ) তাঁর কওমকে বলতে লাগলেনঃ ‘আমার কাজটি আমি পূর্ণ করেছি। আল্লাহর পয়গাম তোমাদের কাছে পৌঁছিয়ে দিয়েছি। এখন তোমরা যদি তা মান্য না কর তবে এর শাস্তি তোমাদের উপর পতিত হবে, আমার উপর নয়। আল্লাহ তাআ’লার এই ক্ষমতা রয়েছে যে, তোমাদের স্থলে তিনি এমন জাতিকে আনয়ন করবেন যারা তার তাওহীদকে স্বীকার করে নেবে এবং তাঁরই ইবাদত করবে। তিনি তোমাদেরকে মোটেই পরওয়া করেন না। তোমাদের কুফরী তাঁর কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। বরং এর শাস্তি তোমাদেরকেই ভোগ করতে হবে। আমার প্রতিপালক স্বীয় বান্দাদেরকে দেখতে রয়েছেন। তাদের কথা ও কাজ তাঁর দৃষ্টির সামনেই রয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাদের উপর আল্লাহর শাস্তি এসেই গেল। কল্যাণ ও বরকত হতে শূন্য এবং শাস্তিতে পরিপূর্ণ ঘূর্ণিবাত্যা তাদের উপর দিয়ে বয়ে গেল। ঐ সময় হযরত হূদ (আঃ) ও তাঁর সঙ্গীয় মু’মিনরা আল্লাহ তাআ’লার দয়া ও অনুগ্রহের বদৌলতে এই শাস্তি থেকে রক্ষা পেয়ে গেলেন। কঠিন শাস্তি তাদের উপর থেকে সরিয়ে নেয়া হলো। এরাই ছিল আ’দ সম্প্রদায় যারা আল্লাহর সাথে কুফরী করেছিল এবং তার নবীকে মানে নাই। এটা স্মরণ রাখার বিষয় যে, একজন নবীকে অমান্যকারী হচ্ছে সমস্ত নবীকেই অমান্যকারী। আ’দ সম্প্রদায় ঐ লোকদেরকেই মেনে চলতো যারা ছিল তাদের মধ্যে একগুঁয়ে ও উদ্ধত। এদের উপর আল্লাহ ও তাঁর মু’মিন বান্দাদের লা’নত বর্ষিত হলো। এই দুনিয়াতেও তাদের আলোচনা হতে থাকলো লা’নতের সাথে এবং কিয়ামতের দিনও হাশরের মাঠে সকলের সামনে তাদের উপর আল্লাহর লা’নত বর্ষিত হবে। সেই দিন ঘোষণা করা হবে যে, আ’দ সম্প্রদায় হচ্ছে আল্লাহকে অস্বীকারকারী।
হযরত সুদ্দীর (রঃ) উক্তি এই যে, এই আ’দ সম্প্রদায়ের পরে দুনিয়ার বুকে যত নবীর আগমন ঘটে সবাই তাদের উপর লা’নত বর্ষণ করতে থাকেন। তাঁদের ভাষায় আল্লাহ তাআ’লার লা’নতও তাদের উপর বর্ষিত হতে থাকে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
# [১] অর্থাৎ, এর পরে আমার দায়িত্ব শেষ এবং তোমাদের উপর সমস্ত প্রমাণ পূর্ণ হয়ে গেছে।
[২] অর্থাৎ, তিনি তোমাদেরকে ধ্বংস করে তোমাদের জমি-সম্পদের মালিক অন্যদেরকে বানিয়ে দেবেন, তিনি এরূপ করার ক্ষমতা রাখেন এবং মোকাবেলায় তোমরা তাঁর কিছুই করতে পারবে না। বরং তিনি আপন ইচ্ছা ও হিকমত অনুযায়ী এরূপ করে থাকেন।
[৩] অবশ্যই তিনি আমাকে তোমাদের প্রতারণা ও চক্রান্ত থেকে সুরক্ষিত রাখবেন এবং শয়তানী চাতুরী থেকে রক্ষা করবেন। তাছাড়া সকল ভাল ও মন্দ ব্যক্তিদেরকে তাদের ভাল ও মন্দ আমল অনুযায়ী প্রতিদান ও প্রতিফল দান করবেন।
# অতি কঠিন শাস্তি থেকে উদ্দেশ্য সেই ‘কল্যাণশূন্য বায়ু’ যার দ্বারা হূদ (আঃ)-এর সম্প্রদায় আ’দকে ধ্বংস করা হয়েছিল এবং যা থেকে হূদ (আঃ) ও তাঁর প্রতি ঈমান আনায়নকারীদের বাঁচিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
# [১] আ’দ সম্প্রদায়ের নিকট <u>একজনই</u> নবী হূদ (আঃ)-কে প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্তু এখানে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তারা তাঁর র<u>সূলদের</u>কে অমান্য করল। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হয় এই কথা প্রকাশ যে, একজন রসূলকে অমান্য ও অস্বীকার করার মানে, যেন সকল রসূলকে অমান্য ও অস্বীকার করা। কারণ সমস্ত রসূলদের প্রতি ঈমান রাখা অপরিহার্য। অথবা উদ্দেশ্য এই যে, এ সম্প্রদায় তাদের কুফরী ও অস্বীকার করাতে এমন অতিরঞ্জন করে ফেলেছিল যে, হূদ (আঃ)-এর পরেও যদি আমি তাদের মাঝে কয়েকজন রসূল প্রেরণ করতাম, তাহলে তারা সেই সকল রসূলদেরকেও অস্বীকার ও মিথ্যাজ্ঞান করত এবং তাদের নিকটে কোন মতেই এই আশা ছিল না যে, তারা কোন একজন রসূলের প্রতি ঈমান আনত। অথবা এও হতে পারে যে, তাদের নিকট আরো রসূল প্রেরণ করা হয়েছিল; কিন্তু তারা সকলকে মিথ্যাজ্ঞান করেছিল।
[২] অর্থাৎ, তারা আল্লাহর পয়গম্বরদেরকে তো মিথ্যাজ্ঞান করেছিল, কিন্তু যারা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করত ও অবাধ্য ছিল, সেই সম্প্রদায় তাদেরই আনুগত্য করল।
# [১] لعنة (লানত, অভিসম্পাত) শব্দটির অর্থ হল আল্লাহর রহমত থেকে দূর হওয়া, মঙ্গলময় বস্তু থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং লোকের অসন্তুষ্টি ও নিন্দার শিকার হওয়া। দুনিয়াতে এই অভিসম্পাত এইভাবে হবে যে, মু’মিনদের মাঝে সর্বদা তাদের আলোচনা নিন্দা ও অসন্তুষ্টির সাথে হবে। আর কিয়ামতের দিন এইভাবে হবে যে, তারা সকলের সামনে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে এবং আল্লাহর শাস্তিতে গ্রেফতার হবে।
[২] بُعْدٌ শব্দটিও রহমত থেকে দূর এবং অভিসম্পাত ও ধ্বংসের অর্থে ব্যবহার হয়, এর পূর্বেও তা বর্ণনা করা হয়েছে।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
# ‘আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনছিনা’ তাদের একথার জবাবে এ উক্তি করা হয়েছে। হুদ আলাইহিসসালাম বললেন, তোমরা যদি এভাবে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করতে থাক তবে জেনে রাখ যে পায়গাম পৌঁছাবার জন্য আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে আমি তা যথাযথভাবে তোমাদের নিকট পৌঁছিয়েছি। অতএব তোমাদের অনিবার্য পরিণতি হচ্ছে যে, তোমাদের উপর আল্লাহর আযাব ও গযব আপতিত হবে, তোমরা সমূলে নিপাত ও নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আর আমার রব তোমাদের স্থলে অন্য জাতিকে এ পৃথিবীতে আবাদ করাবেন। তোমরা যা করছ তাতে তোমাদেরই সর্বনাশ করছ আল্লাহ তা’আলার কোন ক্ষতি করছ না। আমার পালনকর্তা সবকিছু লক্ষ্য রাখেন, রক্ষণাবেক্ষণ করেন। তোমাদের সব ধ্যান-ধারণা ও কার্যকলাপের তিনি খবর রাখেন।
# কিন্তু হতভাগা দল হুদ আলাইহিস সালাম এর কোন কথায় কর্ণপাত করল না। তারা নিজেদের হঠকারিতা ও অবাধ্যতার উপর অবিচল রইল। অবশেষে প্রচন্ড ঝড় তুফান রূপে আল্লাহর আযাব নেমে এল। সাত দিন আট রাত যাবত অনবরত ঝড় তুফান বইতে লাগল। বাড়ী ঘর ধ্বসে গেল, গাছ পালা উপড়ে পড়ল, গৃহ ছাদ উড়ে গেল, মানুষ ও সকল জীবজন্তু শূণ্যে উখিত হয়ে সজোরে যমীনে নিক্ষিপ্ত হল, এভাবেই সুঠাম দেহের অধিকারী শক্তিশালী একটি জাতি সম্পূর্ণ ধ্বংস ও বরবাদ হয়ে গেল। ‘আদ জাতির উপর যখন প্রতিশ্রুত আযাব নাযিল হয় তখন আল্লাহ তা’আলা তার চিরন্তন বিধান অনুযায়ী হুদ আলাইহিস সালাম ও সঙ্গী ঈমানদারগণকে সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে আযাব হতে রক্ষা করেন।
# তাদের কাছে মাত্র একজন রাসূলই এসেছিলেন। কিন্তু যেহেতু তিনি তাদেরকে এমন এক বিষয়ের দাওয়াত দিয়েছিলেন যে দাওয়াত সবসময় সব যুগে ও সকল জাতির মধ্যে আল্লাহর নবীগণ পেশ করতে থেকেছেন, তাই এক রাসূলের কথা না মানাকে সকল রাসূলের প্রতি নাফরমানী হিসেবে গন্য করা হয়েছে।
# আদ জাতির কাহিনী ও আযাবের ঘটনা বর্ণনা করার পর আপরাপর লোকদের শিক্ষা ও সতর্কীকরণের জন্য এরশাদ করেছেন যে কাওমে ‘আদ আল্লাহর আয়াত ও নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করেছে, আল্লাহর রাসূলগণকে অমান্য করেছে, হঠকারী পাপিষ্ঠদের কাজ করেছে। যার ফলে দুনিয়াতে তাদের প্রতি গযব নাযিল হয়েছে এবং আখেরাতে অভিশপ্ত আযাবে নিক্ষিপ্ত হবে।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- HUD.
Sura: 11
Verses :- 57-60
فَقَدْ أَبْلَغْتُكُم
Still I have conveyed the Message.
Allah tells;
فَإِن تَوَلَّوْاْ فَقَدْ أَبْلَغْتُكُم مَّا أُرْسِلْتُ بِهِ إِلَيْكُمْ
So if you turn away, still I have conveyed the Message with which I was sent to you.
Hud says to them, “If you turn away from that which I have brought to you in reference to worship of Allah, Who is your Lord alone, without any partners, then the proof has been established against you. This is because I have conveyed the Message of Allah to you, which He has sent me with.”
وَيَسْتَخْلِفُ رَبِّي قَوْمًا غَيْرَكُمْ
My Lord will make another people succeed you,
This refers to a group of people who will worship Allah alone, without associating anything with Him.
This also implies that the polytheists do not bother Allah and they do not harm Him in the least with their disbelief. To the contrary, their disbelief merely harms their own selves.
وَلَا تَضُرُّونَهُ شَيْيًا
and you will not harm Him in the least.
إِنَّ رَبِّي عَلَىَ كُلِّ شَيْءٍ حَفِيظٌ
Surely, my Lord is Guardian over all things.
This means that Allah is a Witness and Guardian over the statements of His servants and their actions. He will give them due recompense for their actions. If they do good deeds, He will reward them with good. If they do evil, He will punish them with evil.
The Destruction of the People of `Ad and the Salvation of Those among Them Who believed
Allah tells;
وَلَمَّا جَاء أَمْرُنَا
And when Our commandment came,
This is referring to the barren wind with which Allah destroyed them, to the very last of them.
نَجَّيْنَا هُودًا وَالَّذِينَ امَنُواْ مَعَهُ بِرَحْمَةٍ مِّنَّا
وَنَجَّيْنَاهُم مِّنْ عَذَابٍ غَلِيظٍ
We saved Hud and those who believed with him by a mercy from Us, and We saved them from a severe torment.
The mercy and kindness of Allah, the Exalted saved Hud and his followers from this terrible punishment.
وَتِلْكَ عَادٌ جَحَدُواْ بِأيَاتِ رَبِّهِمْ وَعَصَوْاْ رُسُلَهُ
Such were `Ad (people). They rejected the Ayat of their Lord, and disobeyed His Messengers,
This means they disbelieved in the proofs and revelations (of Allah) and they disobeyed the Messengers of Allah.
This is due to the fact that whoever disbelieves in a Prophet, then verily, he has disbelieved in all of the Prophets, peace be upon them. There is no difference between any one of them, in the sense that it is necessary to believe in all of them. Therefore, `Ad disbelieved in Hud and their disbelief was considered disbelief in all of the Messengers.
وَاتَّبَعُواْ أَمْرَ كُلِّ جَبَّارٍ عَنِيدٍ
and followed the command of every proud, obstinate.
This means that they abandoned following their rightly guided Messenger and they followed the command of every proud, obstinate person. Thus, they were followed in this life by a curse from Allah and His believing servants whenever they are mentioned. On the Day of Resurrection a call will be made against them in front of witnesses.
وَأُتْبِعُواْ فِي هَـذِهِ الدُّنْيَا لَعْنَةً وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ
And they were pursued by a curse in this world and (so they will be) on the Day of Resurrection.
أَلا إِنَّ عَادًا كَفَرُواْ رَبَّهُمْ
No doubt! Verily, `Ad disbelieved in their Lord.
أَلَا بُعْدًا لِّعَادٍ قَوْمِ هُودٍ
So away with `Ad, the people of Hud.