أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 712)
[ وَ اَخَذَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوا الصَّیۡحَۃُ
আর যারা যুলুম করেছিল বিকট চীৎকার তাদেরকে পাকড়াও করল;
And the shriek seized those who had wronged.]
www.motaher21.net
وَ یٰقَوۡمِ ہٰذِہٖ نَاقَۃُ اللّٰہِ لَکُمۡ اٰیَۃً فَذَرُوۡہَا تَاۡکُلۡ فِیۡۤ اَرۡضِ اللّٰہِ وَ لَا تَمَسُّوۡہَا بِسُوۡٓءٍ فَیَاۡخُذَکُمۡ عَذَابٌ قَرِیۡبٌ ﴿۶۴﴾
‘হে আমার সম্প্রদায়! এটা আল্লাহ্র উষ্ট্রী তোমাদের জন্য নিদর্শনস্বরূপ। সুতরাং এটাকে আল্লাহ্র জমিতে চরে খেতে দাও। এটাকে কোন কষ্ট দিও না, কষ্ট দিলে আশু শাস্তি তোমাদের উপর আপতিত হবে।’
And O my people, this is the she-camel of Allah – [she is] to you a sign. So let her feed upon Allah ‘s earth and do not touch her with harm, or you will be taken by an impending punishment.”
فَعَقَرُوۡہَا فَقَالَ تَمَتَّعُوۡا فِیۡ دَارِکُمۡ ثَلٰثَۃَ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِکَ وَعۡدٌ غَیۡرُ مَکۡذُوۡبٍ ﴿۶۵﴾
কিন্তু তারা ওকে মেরে ফেলল। তখন সে বলল, ‘তোমরা নিজেদের ঘরে আরো তিনটি দিন জীবন উপভোগ করে নাও। এ একটি এমন প্রতিশ্রুতি যাতে বিন্দুমাত্র মিথ্যা নেই।’
But they hamstrung her, so he said, “Enjoy yourselves in your homes for three days. That is a promise not to be denied.”
فَلَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّیۡنَا صٰلِحًا وَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ بِرَحۡمَۃٍ مِّنَّا وَ مِنۡ خِزۡیِ یَوۡمِئِذٍ ؕ اِنَّ رَبَّکَ ہُوَ الۡقَوِیُّ الۡعَزِیۡزُ ﴿۶۶﴾
অতঃপর যখন আমাদের নির্দেশ আসল তখন আমরা সালেহ্ ও আর সঙ্গে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমাদের অনুগ্রহে রক্ষা করলাম এবং রক্ষা করলাম সে দিনের লাঞ্ছনা হতে। নিশ্চয় আপনার রব, তিনি শক্তিমান, মহাপরাক্রমশালী।
So when Our command came, We saved Salih and those who believed with him, by mercy from Us, and [saved them] from the disgrace of that day. Indeed, it is your Lord who is the Powerful, the Exalted in Might.
وَ اَخَذَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوا الصَّیۡحَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دِیَارِہِمۡ جٰثِمِیۡنَ ﴿ۙ۶۷﴾
আর যারা যুলুম করেছিল বিকট চীৎকার তাদেরকে পাকড়াও করল; ফলে তারা নিজ নিজ ঘরে নতজানু অবস্থায় শেষ হয়ে গেল।
And the shriek seized those who had wronged, and they became within their homes [corpses] fallen prone
کَاَنۡ لَّمۡ یَغۡنَوۡا فِیۡہَا ؕ اَلَاۤ اِنَّ ثَمُوۡدَا۠ کَفَرُوۡا رَبَّہُمۡ ؕ اَلَا بُعۡدًا لِّثَمُوۡدَ ﴿٪۶۸﴾
যেন তারা সেখানে কখনো বসবাস করেনি। জেনে রাখ! সামূদ সম্প্রদায় তো তাদের রবের সাথে কুফরী করেছিল। জেনে রাখ! ধ্বংসই হল সামূদ সম্প্রদায়ের পরিণাম।
As if they had never prospered therein. Unquestionably, Thamud denied their Lord; then, away with Thamud.
সুরা: হুদ।
সুরা:১১
৬৪-৬৮ নং আয়াত:-
وَ اَخَذَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوا الصَّیۡحَۃُ
আর যারা যুলুম করেছিল বিকট চীৎকার তাদেরকে পাকড়াও করল;
And the shriek seized those who had wronged.
৬৪-৬৮ নং আয়াতের তাফসীর :-
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
সালেহ (عليه السلام) তাদের দাবী অনুপাতে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে নিদর্শনস্বরূপ একটি উটনী এনে দিলেন এবং বললেন, হে আমার সম্প্রদায়! এই হল আল্লাহ তা‘আলার উটনী একে কোন প্রকার কষ্ট দিও না। একে জমিনে চরে খেতে দাও। যদি তাকে মন্দ উদ্দেশ্যে স্পর্শ কর তাহলে তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি পাকড়াও করবে। এটা ছিল আল্লাহ তা‘আলার মু‘জিযাহ স্বরূপ তাদের প্রতি নিদর্শন। যা আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য পাহাড় থেকে বের করেছিলেন। কিন্তু এই হতভাগারা এত সুস্পষ্ট নিদর্শন দেখার পরও এই উটনীর পা কেটে দিয়ে হত্যা করে ফেলল।
তাদের এই সীমালঙ্ঘন করার কারণে তাদেরকে পৃথিবীতে তিনদিনের সময় দেয়া হয়েছিল যে, তোমাদেরকে তিন দিন পর আল্লাহ তা‘আলা আযাব দ্বারা ধ্বংস করে দেবেন। সেই কথা অনুপাতে চতুর্থদিন তাদের নিকট শাস্তি এসে গেল। সেখানে সালেহ (عليه السلام) এবং তাঁর অনুসারীরা ব্যতীত সকলকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। তাদেরকে যে শাস্তি দেয়া হয়েছিল এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَأَخَذَتْهُمُ الرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُوْا فِيْ دَارِهِمْ جٰثِمِيْنَ)
“সুতরাং তাদেরকে একটি প্রলয়ংকারী ভূমিকম্প এসে গ্রাস করে নিলো, ফলে তারা তাদের নিজেদের গৃহের মধ্যেই (মৃত অবস্থায়) উপুড় (অধোমুখী) হয়ে পড়ে রইল।” (সূরা আ‘রাফ ৭:৭৮)
তাদেরকে এমনভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল যে, মনে হয় যেন তারা সেখানে তাদের গৃহে কোনদিন বসবাস করেনি। এ সামুদ জাতিরা আল্লাহ তা‘আলাকে অস্বীকার করার কারণে তাদেরকে এভাবে ধ্বংস করা হল সুতরাং তাদের পরিণতি কতই না খারাপ। আরো বিস্তারিত সূরা আ‘রাফের ৭৩-৭৯ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. অন্যান্য জাতির মত সামুদ জাতিরাও তাদের নাবীকে অমান্য করেছিল।
২. সকল জাতির নাবীরাই সচ্চরিত্রবান ও সমাজের ভাল লোক ছিলেন।
৩. সামূদ জাতিকে প্রচণ্ড গর্জন দ্বারা ধ্বংস করা হয়েছিল।
৪. সত্যের পথ জানা ও চেনার পর তা প্রকৃত মুসলিম বর্জন করতে পারে না যেমন নাবীরা করেননি।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
# এটা সেই উটনী যা আল্লাহ তাআলা তাদের কথা অনুযায়ী তাদের চক্ষুর সামনে এক পর্বত বা একটি পাথর থেকে বের করেছিলেন। এই জন্যই তাকে ناقة الله (আল্লাহর উটনী) বলা হয়েছে। কারণ তা একমাত্র আল্লাহর আদেশে মু’জিযা স্বরূপ অস্বাভাবিক পদ্ধতিতে উল্লিখিত পন্থায় আবির্ভূত হয়েছিল। তার ব্যাপারে তাদেরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল যে, তাকে যেন কেউ কোন কষ্ট না দেয়, নচেৎ তোমরা আল্লাহর শাস্তিতে পতিত হবে।
# কিন্তু সেই যালেমরা এমন উত্তম মু’জিযা দেখার পরেও শুধু ঈমান থেকে দূরেই থাকেনি; বরং প্রকাশ্যভাবে আল্লাহর আদেশের সীমালঙ্ঘন করে (সেই উটনীর পা কেটে) তাকে মেরে ফেলল। তার পরে তাদেরকে তিন দিন সময় দেওয়া হল এই বলে যে, তিন দিন পর তোমাদেরকে আল্লাহর আযাব দ্বারা ধ্বংস করে দেওয়া হবে।
# এর উদ্দেশ্য সেই আযাব, যা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চতুর্থ দিনে এসেছিল এবং সালেহ (আঃ) ও তাঁর প্রতি বিশ্বাসীদের ছাড়া সকলকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল।
# এই আযাব صيحة (প্রচন্ড শব্দ, মেঘগর্জন) রূপে এসেছিল। অনেকের মতে এটা জিবরীল (আঃ) এর প্রচন্ড গর্জন ছিল এবং অনেকের নিকট তা আকাশ থেকে আসা কোন গর্জন ছিল। যে গর্জনে তাদের অন্তর ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এবং পরিশেষে তাদের মৃত্যু সংঘটিত হয়েছিল। তার পরে বা তার সাথে সাথেই ভূমিকম্প (رجفة) এসেছিল। যা সমস্ত বস্তুকে তছনছ করে দিয়েছিল; যেমন সূরা আ’রাফের ৭:৭৮ নং আয়াতে (فَأَخَذَتْهُمُ الرَّجْفَة) শব্দ এসেছে।
# পাখি মরার পর যেরূপ মাটিতে পড়ে থাকে, অনুরূপ এরাও মৃত্যুবরণ করে মাটিতে উবুড় হয়ে পড়ে ছিল।
# তাদের গ্রামকে অথবা তাদেরকে অথবা উভয়কে মুদ্রিত ভুল অক্ষরের মত এমনভাবে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে, ঠিক যেন তারা সেখানে কখনও বসবাস করেনি।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# সিনাই উপদ্বীপে প্রচলিত কিংবদন্তী অনুসারে জানা যায়, যখন সামূদ জাতির ওপর আযাব আসে তখন হযরত সালেহ (আ) হিজরত করে সেখান থেকে চলে গিয়েছিলেন। এ জন্যই “হযরত মূসার পাহাড়ের” কাছেই একটি ছোট পাহাড়ের নাম “নবী সালেহের পাহাড়” এবং কথিত আছে যে, এখানেই তিনি অবস্থান করেছিলেন।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
# তারা যখন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে উস্ত্রীকে হত্যা করল তখন তাদেরকে নির্দিষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হল যে, মাত্র তিন দিন তোমাদিগকে অবকাশ দেয়া হল এ তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তোমরা ধ্বংস হয়ে যাবে। আর সেটা ঘটবেই। [মুয়াসসার]।
# ঐ পাপিষ্ঠদেরকে এক ভয়ঙ্কর গর্জন এসে পাকড়াও করল। এ ছিল জিবরীল আলাইহিস সালামের গর্জন, যা হাজার হাজার বজ্রধ্বনির সম্বিলিত শক্তির চেয়েও ভয়াবহ। যা সহ্য করার ক্ষমতা মানুষ বা কোন জীবজন্তুর নেই। এরূপ প্রাণ কাঁপানো গর্জনেই সকলে মৃত্যুবরণ করেছিল। এ আয়াত থেকে বুঝা যায় যে, ‘কাওমে সামূদ’ ভয়ঙ্কর গর্জনে ধ্বংস হয়েছিল। অপর দিকে সূরা আ’রাফ এর ৭৮ নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, “অতঃপর ভূমিকম্প তাদেরকে পাকড়াও করল”। এতে বোঝা যায় যে ভূমিকম্পের ফলে তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল। মুফাসসিরগণ বলেনঃ উভয় আয়াতের মমার্থে কোন বিরোধ নেই। হয়ত প্রথমে ভূমিকম্প শুরু হয়েছিল। এবং তৎসঙ্গেই ভয়ঙ্কর গর্জনে সবাই ধ্বংস হয়েছিল। [ফাতহুল কাদীর]
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- HUD.
Sura: 11
Verses :- 64-68
وَ اَخَذَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوا الصَّیۡحَۃُ
And the shriek seized those who had wronged.
Salih said:
وَيَا قَوْمِ هَـذِهِ نَاقَةُ اللّهِ لَكُمْ ايَةً فَذَرُوهَا تَأْكُلْ فِي أَرْضِ اللّهِ
وَلَا تَمَسُّوهَا بِسُوءٍ فَيَأْخُذَكُمْ عَذَابٌ قَرِيبٌ
“And O my people! This she-camel of Allah is a sign to you, so leave her to graze in Allah’s land, and touch her not with evil, lest a near torment should seize you.”
Allah tells:
فَعَقَرُوهَا فَقَالَ تَمَتَّعُواْ فِي دَارِكُمْ ثَلَثَةَ أَيَّامٍ
ذَلِكَ وَعْدٌ غَيْرُ مَكْذُوبٍ
But they slaughtered her. So he said:”Enjoy yourselves in your homes for three days. This is a promise (a threat) that will not be belied.”
فَلَمَّا جَاء أَمْرُنَا نَجَّيْنَا صَالِحًا وَالَّذِينَ امَنُواْ مَعَهُ بِرَحْمَةٍ مِّنَّا وَمِنْ خِزْيِ يَوْمِيِذٍ
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ الْقَوِيُّ الْعَزِيزُ
So when Our commandment came, We saved Salih and those who believed with him by a mercy from Us, and from the disgrace of that Day. Verily, your Lord — He is the All-Strong, the All-Mighty.
وَأَخَذَ الَّذِينَ ظَلَمُواْ الصَّيْحَةُ فَأَصْبَحُواْ فِي دِيَارِهِمْ جَاثِمِينَ
And As-Sayhah (awful cry) overtook the wrongdoers, so they lay (dead), prostrate in their homes.
كَأَن لَّمْ يَغْنَوْاْ فِيهَا أَلَا إِنَّ ثَمُودَ كَفرُواْ رَبَّهُمْ
أَلَا بُعْدًا لِّثَمُودَ
As if they had never lived there. No doubt! Verily, Thamud disbelieved in their Lord. So away with Thamud!
A discussion of this story has already preceded in Surah Al-A`raf and it is sufficient without having to be repeated here.
Allah is the Giver of success.