(Book# 719) [ إِنِّي مَعَكُمْ رَقِيبٌ আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।’ I too am watching with you. ] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 719)
[ إِنِّي مَعَكُمْ رَقِيبٌ
আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।’
I too am watching with you. ]
www.motaher21.net
قَالُوۡا یٰشُعَیۡبُ مَا نَفۡقَہُ کَثِیۡرًا مِّمَّا تَقُوۡلُ وَ اِنَّا لَنَرٰىکَ فِیۡنَا ضَعِیۡفًا ۚ وَ لَوۡ لَا رَہۡطُکَ لَرَجَمۡنٰکَ ۫ وَ مَاۤ اَنۡتَ عَلَیۡنَا بِعَزِیۡزٍ ﴿۹۱﴾
তারা বলল, ‘হে শুআইব! তুমি যা বল, তার অনেক কথা আমাদের বুঝে আসে না এবং আমরা অবশ্যই নিজেদের মধ্যে তোমাকে দুর্বল দেখছি।তোমার স্বজনবর্গ না থাকলে আমরা তোমাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতাম। আর তুমি আমাদের উপর পরাক্রমশালীও নও।’
They said, “O Shu’ayb, we do not understand much of what you say, and indeed, we consider you among us as weak. And if not for your family, we would have stoned you [to death]; and you are not to us one respected.”
قَالَ یٰقَوۡمِ اَرَہۡطِیۡۤ اَعَزُّ عَلَیۡکُمۡ مِّنَ اللّٰہِ ؕ وَ اتَّخَذۡتُمُوۡہُ وَرَآءَکُمۡ ظِہۡرِیًّا ؕ اِنَّ رَبِّیۡ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ مُحِیۡطٌ ﴿۹۲﴾
তিনি বললেন , ‘হে আমার সম্প্রদায় ! তোমাদের কাছে কি আমার স্বজনবর্গ আল্লাহ্‌র চেয়ে বেশি শক্তিশালী ? আর তোমরা তাকে সম্পূর্ণ পিছনে ফেলে রেখেছ। তোমরা যা কর আমার রব নিশ্চয় তা পরিবেষ্টন করে আছেন।
He said, “O my people, is my family more respected for power by you than Allah ? But you put Him behind your backs [in neglect]. Indeed, my Lord is encompassing of what you do.
وَ یٰقَوۡمِ اعۡمَلُوۡا عَلٰی مَکَانَتِکُمۡ اِنِّیۡ عَامِلٌ ؕ سَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ۙ مَنۡ یَّاۡتِیۡہِ عَذَابٌ یُّخۡزِیۡہِ وَ مَنۡ ہُوَ کَاذِبٌ ؕ وَ ارۡتَقِبُوۡۤا اِنِّیۡ مَعَکُمۡ رَقِیۡبٌ ﴿۹۳﴾
‘আর হে আমার সম্প্রদায় ! তোমরা নিজ নিজ অবস্থানে কাজ করতে থাক, আমিও আমার কাজ করছি। তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে কার উপর আসবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি এবং কে মিথ্যাবাদী। আর তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।’
And O my people, work according to your position; indeed, I am working. You are going to know to whom will come a punishment that will disgrace him and who is a liar. So watch; indeed, I am with you a watcher, [awaiting the outcome].”
وَ لَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّیۡنَا شُعَیۡبًا وَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ بِرَحۡمَۃٍ مِّنَّا وَ اَخَذَتِ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوا الصَّیۡحَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دِیَارِہِمۡ جٰثِمِیۡنَ ﴿ۙ۹۴﴾
আর যখন আমাদের নির্দেশ আসল তখন আমরা, শু’আইব ও তাঁর সঙ্গে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমাদের অনুগ্রহে রক্ষা করেছিলাম। আর যারা যুলুম করেছিল বিকট চিৎকার তাদেরকে আঘাত করল , ফলে তাঁরা নিজ নিজ ঘরে নতজানু অবস্থায় পড়ে রইল।
And when Our command came, We saved Shu’ayb and those who believed with him, by mercy from Us. And the shriek seized those who had wronged, and they became within their homes [corpses] fallen prone.
کَاَنۡ لَّمۡ یَغۡنَوۡا فِیۡہَا ؕ اَلَا بُعۡدًا لِّمَدۡیَنَ کَمَا بَعِدَتۡ ثَمُوۡدُ ﴿٪۹۵﴾
যেন তারা সেখানে কখনো বসবাস করেনি। জেনে রাখ ! ধংসই ছিল মাদ্ইয়ানবাসীর পরিনাম, যেভাবে ধংস হয়েছিল সামূদ সম্প্রদায়।
As if they had never prospered therein. Then, away with Madyan as Thamud was taken away.
সুরা: হুদ।
সুরা:১১
৯১- ৯৫ নং আয়াত:-
إِنِّي مَعَكُمْ رَقِيبٌ
আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।’
I too am watching with you.

৯০-৯৫ নং আয়াতের তাফসীর :-

তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
শুআইব (عليه السلام)-এর এ কথার জবাবে তারা বলল, হে শুয়াইব! তুমি আমাদেরকে যেসব কথাবার্তা বল তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। সুতরাং তুমি এসব কথা বলা বন্ধ কর। আর তুমি তো আমাদের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল। যদি তোমার আত্মীয় স্বজন না থাকত তবে আমরা তোমাকে পাথর মেরে শেষ করে ফেলতাম। আমরা তোমার গোত্রের লোকদেরকে সম্মান করি, তাই কিছু বলছি না। অতএব তুমি তোমার এসব কথাবার্তা বলা থেকে বিরত হও। তাদের এ কথার জবাবে শু‘আইব (عليه السلام) বললেন, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আমাকে আমার স্বজনবর্গের কারণে ছেড়ে দিচ্ছ। কিন্তু যে আল্লাহ তা‘আলা আমাকে নবুওয়াতের মর্যাদা দান করেছেন, তাঁর সম্মান ও মর্যাদার কোন খেয়াল তোমাদের অন্তরে নেই এবং তাঁকে তোমরা পিছনে ফেলে রেখে দিয়েছে। এখানে শু‘আইব

(عليه السلام) أعز عليكم مني

আমার থেকে বেশি মর্যাদাবান, এর স্থানে

أعز عليكم من الله

আল্লাহ তা‘আলা থেকে বেশি মর্যাদাবান বলেছেন। এতে একথা বুঝাতে চেয়েছেন যে, নাবীর অসম্মান করা, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তা‘আলারই অসম্মান করা। কারণ নাবীগণ আল্লাহ তা‘আলারই প্রেরিত পুরুষ, আর এই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে হকপন্থী উলামাদের অসম্মান করা আসলে আল্লাহ তা‘আলার দীনের অসম্মান করা ও তুচ্ছ জ্ঞান করা। মনে রেখ যে, তোমরা যা কর তা সবই আমার প্রতিপালকের আয়ত্তাধীন। তিনি যখন দেখলেন যে, তাঁর ওয়ায-নসীহতে তাদের কোন উপকার হচ্ছে না তখন তিনি আরো বললেন যে, তোমরা তোমাদের মত কাজ করতে থাক আমিও আমার কাজ করে যাই। অচিরেই জানতে পারবে কাদের ওপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আসে এবং কারা মিথ্যাবাদী। সুতরাং তোমরা অপেক্ষা কর আর আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষমান রইলাম। তখন হঠাৎ এক বিকট আওয়াজ ধ্বনিতে তাদের অন্তর ফেটে গেল এবং তারা মৃত্যুবরণ করল। তার পর পরই শুরু হল ভূমিকম্প। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(فَأَخَذَتْهُمُ الرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُوْا فِيْ دَارِهِمْ جٰثِمِيْنَ)‏

“সুতরাং তাদেরকে একটি প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প এসে গ্রাস করে নিলো, ফলে তাদের নিজেদের গৃহের মধ্যেই (মৃত অবস্থায় ) উপুড় (অধোমুখী) হয়ে পড়ে রইল।” (সূরা আ‘রাফ ৭:৯১)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

(فَكَذَّبُوْهُ فَأَخَذَتْهُمُ الرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُوْا فِيْ دَارِهِمْ جٰثِمِيْنَ)

“কিন্তু তারা তার প্রতি মিথ্যারোপ করল, অতঃপর তারা ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হল; ফলে তারা নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় শেষ হয়ে গেল।” (সূরা আনকাবুত ২৯:৩৭)

এভাবেই তারা অভিশপ্ত অবস্থায় দুনিয়া থেকে বিদায় নিল এবং আল্লাহ তা‘আলার রহমত থেকে বঞ্চিত হল।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৯০-৯১ নং আয়াতের তাফসীর

হযরত শুআ’ইবের (আঃ) কওম তাকে বললো: হে শুআ’ইব (আঃ)! তোমার অধিকাংশ কথা আমাদের বোধগম্য হয় না। আর তুমি নিজেও আমাদের মধ্যে অত্যন্ত দুর্বল। হযরত সাঈদ ইবনু জুবাইর (রঃ) এবং হযরত সাওরী (রঃ) বলেন যে, তাঁর দৃষ্টি শক্তি কম ছিল বলেই তাকে দুর্বল বলা হয়েছে। সাওরী (রঃ) বলেন যে, তাঁকে ‘খাতীবুল আমবিয়া’ (নবীদের ভাষণ দাতা) বলা হতো। কেননা, তাঁর ভাষণ ছিল অত্যন্ত পরিষ্কার। সুদী (রঃ) বলেন যে, তিনি একাকী ছিলেন বলেই তাঁকে তারা তুচ্ছ জ্ঞান করে দুর্বল বলেছিল। কেননা, তাঁর আত্মীয় স্বজনরাই তার ধর্মের উপর ছিল না। তারা তাকে বলেনঃ “তোমার ভ্রাতৃত্বের প্রতি লক্ষ্য না করলে আমরা তোমাকে পাথর মেরে চূর্ণ বিচুর্ণ করে দিতাম। বা তোমাকে মন খুলে গালমন্দ দিতাম। আমাদের মধ্যে তোমার কোন মর্যাদা নেই। তাদের একথা শুনে তিনি তাদেরকে বলেনঃ “ভাই সব! আমার ভ্রাতৃত্ব ও আত্মীয়তার প্রতি লক্ষ্য করেই তোমরা আমাকে ছেড়ে দিচ্ছ, আল্লাহর জন্য নয়? তা হলে বুঝা যাচ্ছে যে, তোমাদের কাছে আত্মীয় সম্পর্ক আল্লাহ তাআ’লা অপেক্ষা বেশী গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর নবীকে কষ্ট দেয়ার ব্যাপারে তোমরা তাঁকেই ভয় করছো না? বড়ই পরিতাপের বিষয় যে, তোমরা আল্লাহর কিতাবকে পশ্চাতে নিক্ষেপ করছে! তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও আনুগত্যের প্রতি তোমাদের কোন খেয়ালই নেই। ভাল কথা, আল্লাহ তাআ’লা তোমাদের অবস্থা পূর্ণরূপে অবগত রয়েছেন। তিনিই তোমাদের পুরোপুরি বদলা দান করবেন।
# ৯৩-৯৫ নং আয়াতের তাফসীর

আল্লাহর নবী হযরত শুআ’ইব (আঃ) যখন তাঁর কওমের ঈমান আনয়নের ব্যাপারে নিরাশ হয়ে যান তখন তিনি তাদেরকে বলেনঃ “ঠিক আছে, তোমরা নিজেদের নীতির উপর থাকো, আমিও আমার নীতির উপর থাকলাম। তোমরা সত্বরই জানতে পারবে যে, লাঞ্ছিত ও অপমাণিতকারী শাস্তি কার উপর অবতীর্ণ হচ্ছে এবং আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদী কে? তোমরা এর জন্যে অপেক্ষা করতে থাকো, আমিও অপেক্ষায় রইলাম। শেষ পর্যন্ত তাদের উপর আল্লাহর শাস্তি এসেই গেল। ঐ সময় আল্লাহর নবী হযরত শুআ’ইব কে (আঃ) এবং তাঁর সঙ্গীয় মু’মিনদেরকে বাঁচিয়ে নেয়া হলো। তাঁদের উপর মহান আল্লাহর করুণা বর্ষিত হলো এবং ঐ অত্যাচারীদেরকে তছনছ করে দেয়া হলো। তারা এমন ভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল যে, যেন তারা তাদের বাসভূমিতে কখনো বসবাস করেই নাই। তাদের পূর্বে সামুদ সম্প্রদায় যেমনভাবে আল্লাহর অভিশাপের শিকার হয়েছিল, তেমনিভাবে হযরত শুআ’ইবের (আঃ) কওমও অভিশপ্ত হয়েছিল। সামূদ সম্প্রদায় ছিল তাদের প্রতিবেশী এবং কুফরী ও বিশ্বাসঘাতকতায় তাদের মতই ছিল। তাছাড়া এই উভয় কওমই ছিল আরবীয়।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# হযরত শো’আয়েব কোন বিদেশী ভাষায় কথা বলছিলেন তাই তারা বুঝতে পারছিল না, এমন কোন ব্যাপার ছিল না। অথবা তাঁর কথা কঠিন, সূক্ষ্ম বা জটিলও ছিল না। কথা সবই সোজা ও পরিষ্কার ছিল। সেখানকার প্রচলিত ভাষায়ই কথা বলা হতো। কিন্তু তাদের মানসিক কাঠামো এত বেশী বেঁকে গিয়েছিল যে, হযরত শো’আয়েবের সোজা সরল কথাবার্তা তার মধ্যে কোন প্রকারেই প্রবেশ করতে পারতো না। একথা স্বতঃসিদ্ধ যে, যারা অন্ধপ্রীতি, বিদ্বেষ ও গোষ্ঠী স্বার্থ দোষে দুষ্ট হয় এবং প্রবৃত্তির লালসার পূজা করার ক্ষেত্রে একগুঁয়েমির নীতি অবলম্বন করে, আবার এ সঙ্গে কোন বিশেষ চিন্তাধারার ওপর অনড় হয়ে বসে থাকে তারা তো প্রথমত এমন কোন কথা শুনতেই পারে না যা তাদের চিন্তাধারা থেকে ভিন্নতর আর যদি কখনো শুনেই নিয়ে থাকে তাহলে তারা বুঝতেই পারে না যে, এসব আবার কেমন ধারার কথা!

# একথা অবশ্যি সামনে থাকা দরকার যে, এ আয়াতগুলো যখন নাযিল হয় তখন হুবহু একই রকম অবস্থা মক্কাতেও বিরাজ করছিল। সে সময় কুরাইশরাও একইভাবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রক্ত পিপাসু হয়ে উঠেছিল। তারা তাঁর জীবননাশ করতে চাচ্ছিল। কিন্তু শুধু বনী হাশেম তাঁর পেছনে ছিল বলেই তাঁর গায়ে হাত দিতে ভয় পাচ্ছিল। কাজেই হযরত শো’আয়েব ও তাঁর কওমের এ ঘটনাকে যথাযথভাবে কুরাইশ ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে দিয়ে বর্ণনা করা হচ্ছে এবং সামনের দিকে হযরত শো’আয়েরবের যে চরম শিক্ষণীয় জবাব উদ্ধৃত করা হয়েছে তার মধ্যে এ অর্থ লুকিয়ে রয়েছে যে, হে কুরইশের লোকেরা! তোমাদের জন্যও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষ থেকে এ একই জবাব দেয়া হলো।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

# [১] এই কথা তারা হয় ঠাট্টা-বিদ্রূপ স্বরূপ বলেছিল। কারণ প্রকৃতপক্ষে তাঁর কথা যে তারা বুঝতো না -তা নয়। সুতরাং এই অবস্থাতে এখানে বুঝতে না পারার কথা রূপকার্থে হবে। অথবা তাদের উদ্দেশ্য গায়েব সম্পর্কিত কথা বুঝতে না পারার ওজর প্রকাশ করা। যেমন মরণের পর পুনর্জীবন, হাশর, জান্নাত ও জাহান্নাম ইত্যাদি। এই হিসাবে বুঝতে না পারার কথা প্রকৃতার্থে ধরা হবে।

[২] এ দুর্বলতা শারীরিক দুর্বলতা ছিল, যেমন অনেকের মতে শুআইব (আঃ) চোখে কম দেখতেন অথবা তিনি শারীরিক দিক থেকে শীর্ণকায় ও পাতলা ছিলেন অথবা এই জন্য তাঁকে দুর্বল বলেছে যে, তিনি নিজে একা বিরোধীদের সাথে মুকাবিলা করার ক্ষমতা রাখতেন না।

[৩] বলা হয় যে, শুআইব (আঃ)-এর স্বগোত্র থেকে তাঁর কোন সমর্থক ছিল না, কিন্তু সে গোত্র যেহেতু কুফর ও শিরকের দিক থেকে তাঁর জাতির সাথে ছিল, ফলে একই ধর্মাবলম্বী হওয়ার কারণে সেই গোত্রের খেয়াল শুআ’ইব (আঃ)-এর সাথে কঠিন দুর্ব্যবহার করা এবং তাঁর ক্ষতি সাধন করাতে বাধা হয়ে ছিল।

[৪] যেহেতু তোমার গোত্রের মর্যাদা আমাদের অন্তরে আছে, সেহেতু আমরা ক্ষমার চোখে দেখছি।

# তোমরা আমাকে আমার স্বজনবর্গের কারণে ছেড়ে দিচ্ছ। কিন্তু যে মহান আল্লাহ আমাকে নবুঅতের মর্যাদা দান করেছেন, তাঁর কোন সম্মান ও মর্যাদার কোন খেয়াল তোমাদের অন্তরে নেই এবং তাঁকে তোমরা পিছনে ফেলে রেখে দিয়েছ! এখানে শুআইব (আঃ) أعزُّ عليكم منِّي ‘আমার থেকে বেশী মর্যাদাবান’ এর স্থানে أعزُّ عليكم من الله ‘আল্লাহর থেকে বেশী মর্যাদাবান বা পরাক্রমশালী’ বলেছেন। এতে এ কথা বুঝাতে চেয়েছেন যে, নবীর অসম্মান করা, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহরই অসম্মান করা। কারণ নবীগণ আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ হন। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে হকপন্থী উলামাদের অসম্মান করা ও তাঁদেরকে তুচ্ছজ্ঞান করা আসলে আল্লাহর দ্বীনের অসম্মান ও তাকে তুচ্ছজ্ঞান করার নামান্তর। কারণ তাঁরা আল্লাহর দ্বীনের ধারক ও বাহক। واتَّخذتموه তে ‘ه’ এর লক্ষ্যবস্তু আল্লাহ, অর্থ এই যে, আল্লাহর সেই জিনিস, যা দিয়ে তিনি আমাকে প্রেরণ করেছেন, তাকে তোমরা পিছনে ফেলে রেখেছ, তোমরা তার প্রতি কোন ভ্রূক্ষেপ করনি।

# তিনি যখন দেখলেন যে, এ সম্প্রদায় নিজ কুফরী ও শিরকের উপর অটল এবং তাদের উপর ওয়ায-নসীহতের কোন প্রভাব পড়ছে না, তখন বললেন, ঠিক আছে তোমরা নিজের পথে চলতে থাক। অতি সত্ত্বর সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদী কে এবং লাঞ্ছনাকর শাস্তির উপযুক্ত কে তা অবশ্যই জানতে পারবে।
# সেই চিৎকার শুনে তাদের অন্তর ফেটে চুর চুর হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের মৃত্যু হয়ে গিয়েছিল। তার পরে পরেই ভূমিকম্পও আরম্ভ হয়েছিল। যেমন সূরা আ’রাফের ৭:৯১ নং আয়াত ও সূরা আনকাবূতের ২৯:৩৭ নং আয়াতে আলোচনা হয়েছে।
# অভিশপ্ত হল, আল্লাহর রহমত থেকে দূর ও বঞ্চিত হল।

তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-

# [১] শু’আইব কোন বিদেশী ভাষায় কথা বলছিলেন তাই তারা বুঝতে পারছিল না, এমন কোন ব্যাপার ছিল না। অথবা তাঁর কথা কঠিন, সূক্ষ্ম বা জটিলও ছিল না। কথা সবই সোজা ও পরিষ্কার ছিল। সেখানকার প্রচলিত ভাষায়ই কথা বলা হতো। তাহলে তারা কেন বুঝলো না? এর দু’টি কারণ হতে পারে। এক. তাদের মানসিক কাঠামো এত বেশী বেঁকে গিয়েছিল যে, শু’আইব আলাইহিস সালামের সোজা সরল কথাবার্তা তার মধ্যে কোন প্রকারেই প্রবেশ করতে পারতো না। তাদের চিন্তাধারা থেকে ভিন্নতর কিছু শোনার কারণে তারা বলতে থাকে যে, এসব আবার কেমন ধারার কথা! তারা বলল যে, আমরা বুঝিনা। তারা এটা অপমানসূচক তাদের নবীকে বলেছিল। দুই. অথবা তারা সত্যি সত্যিই বুঝতে চেষ্টা করছিল না। তাদের বক্তব্য হলো, আপনি আমাদেরকে পুনরুত্থান, ও হাশর-নশরের মত গায়েবী বিষয় বলছেন, এমন কিছুর উপদেশ দিচ্ছেন যা আগে আমরা বুঝিনি। [কুরতুবী]

[২] একথা অবশ্যি সামনে থাকা দরকার যে, এ আয়াতগুলো যখন নাযিল হয় তখন হুবহু একই রকম অবস্থা মক্কাতেও বিরাজ করছিল। সে সময় কুরাইশরাও একই ভাবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রক্ত পিপাসু হয়ে উঠেছিল। তারা তাঁর জীবননাশ করতে চাচ্ছিল। কিন্তু শুধু বনী হাশেম তাঁর পেছনে ছিল বলেই তাঁর গায়ে হাত দিতে ভয় পাচ্ছিল। কাজেই শু’আইব আলাইহিস সালাম ও তার কওমের এ ঘটনাকে যথাযথভাবে কুরাইশ ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে দিয়ে বর্ণনা করা হচ্ছে এবং সামনের দিকে শু’আইব আলাইহিস সালামের যে চরম শিক্ষণীয় জবাব উদ্ধৃত করা হয়েছে তার মধ্যে এ অর্থ লুকিয়ে রয়েছে যে, হে কুরাইশের লোকেরা! তোমাদের জন্যও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষ থেকে এ একই জবাব দেয়া হলো।

# কওমের লোকেরা একথা শুনে রাগে অগ্নিশৰ্মা হয়ে বলতে লাগল, আপনার গোষ্ঠীজাতির কারণে আমরা এতদিন আপনাকে কিছু বলিনি। নতুবা অনেক আগেই প্রস্তর আঘাতে আপনাকে হত্যা করে ফেলতাম। এরপরে শু’আইব আলাইহিসসালামের কোন কথা যখন তারা মানল না, তখন তিনি বললেনঃ ঠিক আছে, তোমরা এখন আযাবের অপেক্ষা করতে থাক।’ তারপর আল্লাহ তা’আলা তার চিরন্তন বিধান অনুসারে শু’আইব আলাইহিসসালামকে এবং তার সঙ্গী-সাথী ঈমানদারগণকে উক্ত জনপদ হতে অন্যত্র নিরাপদে সরিয়ে নিলেন এবং জিবরাঈল আলাইহিস সালামের এক ভয়ঙ্কর হাঁকে অবশিষ্ট সবাই এক নিমেষে ধবংস হল।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- HUD.
Sura: 11
Verses :- 91-95
إِنِّي مَعَكُمْ رَقِيبٌ
I too am watching with you.
The Response of Shu`ayb’s People

Allah tells,

قَالُواْ يَا شُعَيْبُ مَا نَفْقَهُ

They said:”O Shu`ayb! We do not understand,

This means that we do not comprehend.

كَثِيرًا

much,

`most of what you say’.

مِّمَّا تَقُولُ
..

what you say,

Ath-Thawri said,

“He (Shu`ayb) was called the orator of the Prophets.”
.
وَإِنَّا لَنَرَاكَ فِينَا ضَعِيفًا

and we see you weak among us.

As-Suddi said,

“They meant, `You are only one person.”‘

Abu Rawq said,

“They meant, `You are despised, because your tribe is not upon your religion.”‘

وَلَوْلَا رَهْطُكَ لَرَجَمْنَاكَ

Were it not for your family, you would have been stoned,

This means, your people. Were it not for their powerful position over the people of Madyan, they would have stoned him to death.

Some said that this means with rocks.

It has also been said that;

this means that they would have cursed and insulted him verbally.

وَمَا أَنتَ عَلَيْنَا بِعَزِيزٍ

and you are not powerful against us.

This means, “You have no position of power over us.”
Shu`ayb’s Refutation of His People

He (Shu`ayb) said.
قَالَ يَا قَوْمِ أَرَهْطِي أَعَزُّ عَلَيْكُم مِّنَ اللّهِ

He said:”O my people! Is then my family of more weight with you than Allah!”

He says:You would leave me alone out of respect for my people but not out of respect for the greatness of the Lord, the Most Blessed and Exalted. Does not your awe of Allah prevent you from harming His Prophet! Indeed you have placed the fear of Allah,

وَاتَّخَذْتُمُوهُ

And you have cast Him away

وَرَاءكُمْ ظِهْرِيًّا

behind your backs.

This means that you have thrown it behind you. You do not obey it, nor do you respect it.

إِنَّ رَبِّي بِمَا تَعْمَلُونَ مُحِيطٌ

Verily, my Lord is surrounding all that you do.

This means that He knows all of your actions and He will reward you according to them.
Shu`ayb’s threatening of His People

When the Prophet of Allah, Shu`ayb, despaired of their response to him, he said,

وَيَا قَوْمِ اعْمَلُواْ عَلَى مَكَانَتِكُمْ

“O my people, Act according to your ability,

This means, “Act according to your current ways.”

This is actually a severe threat.

إِنِّي عَامِلٌ

I am acting.

according to my way.

سَوْفَ تَعْلَمُونَ مَن يَأْتِيهِ عَذَابٌ يُخْزِيهِ وَمَنْ هُوَ كَاذِبٌ

You will come to know who it is on whom descends the torment that will cover him with ignominy, and who is a liar!

meaning, between me and you.

وَارْتَقِبُواْ

And watch you!

This means to wait.

إِنِّي مَعَكُمْ رَقِيبٌ

I too am watching with you.

Allah then says,

وَلَمَّا جَاء أَمْرُنَا نَجَّيْنَا شُعَيْبًا وَالَّذِينَ امَنُواْ مَعَهُ بِرَحْمَةٍ مَّنَّا

وَأَخَذَتِ الَّذِينَ ظَلَمُواْ الصَّيْحَةُ فَأَصْبَحُواْ فِي دِيَارِهِمْ جَاثِمِينَ
And when Our commandment came, We saved Shu`ayb and those who believed with him by a mercy from Us. And As-Sayhah(awful cry) seized the wrongdoers, and they lay (Jathimin) in their homes.

His saying Jathimin means extinct and lifeless without any movement.

Here Allah mentions that a loud cry (Sayhah) came to them.

In Surah Al-A`raf He says a severe quake (Rajfah) came to them.

In Surah Ash-Shu`ara’, He said it was a torment of a cloudy day.

They were one nation upon which all of these punishments were gathered on the day of their destruction.

In each context, Allah only mentioned that which was suitable. In Surah Al-A`rafwhen they said,

لَنُخْرِجَنَّكَ يـشُعَيْبُ وَالَّذِينَ ءَامَنُواْ مَعَكَ مِن قَرْيَتِنَأ

We shall certainly drive you out, O Shu`ayb, and those who have believed with you from our town. (7:88)

In this verse it was suitable to mention a tremor, or quake (Rajfah). The earth in which they practiced their wrongdoing and they wanted to expel their Prophet from it, shook them.

Here, due to their disrespectful manners in speaking to their Prophet, Allah mentioned the awful cry (Sayhah) which overcame them and killed them.

In Surah Ash-Shu`ara’ when they said,

فَأَسْقِطْ عَلَيْنَا كِسَفاً مِّنَ السَّمَأءِ إِن كُنتَ مِنَ الصَّـدِقِينَ

So cause a piece of the heaven to fall on us, if you are of the truthful! (26:187)

Allah said in response,

فَأَخَذَهُمْ عَذَابُ يَوْمِ الظُّلَّةِ إِنَّهُ كَانَ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ

So the torment of the day of Shadow seized them. Indeed that was the torment of a Great Day. (26:189)

This is from the intricate secrets and to Allah belongs all praise and much bounty forever.

Concerning the statement.
كَأَن لَّمْ يَغْنَوْاْ فِيهَا

As if they had never lived there!

This means it was as if they had not lived in their homes before that.

أَلَا بُعْدًا لِّمَدْيَنَ كَمَا بَعِدَتْ ثَمُودُ

So away with Madyan as just as Thamud went away!

They (Thamud) were their neighbors and they did not live far from the homes of the people of Madyan. They were similar in their disbelief and their highway robbery. They were also both Arabs.

Leave a Reply