أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 723)
[ فَأَمَّا الَّذِينَ شَقُواْ فَفِي النَّارِ
অতএব যারা হতভাগ্য তারা তো হবে দোযখে;
As for those who are wretched, they will be in the Fire,]
www.motaher21.net
فَاَمَّا الَّذِیۡنَ شَقُوۡا فَفِی النَّارِ لَہُمۡ فِیۡہَا زَفِیۡرٌ وَّ شَہِیۡقٌ ﴿۱۰۶﴾ۙ
অতএব যারা হতভাগ্য তারা তো হবে দোযখে;তাতে তাদের চীৎকারও আর্তনাদ হতে থাকবে।
As for those who were [destined to be] wretched, they will be in the Fire. For them therein is [violent] exhaling and inhaling.
خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَ الۡاَرۡضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّکَ ؕ اِنَّ رَبَّکَ فَعَّالٌ لِّمَا یُرِیۡدُ ﴿۱۰۷﴾
তারা অনন্তকাল সেখানে থাকবে, যতকাল আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকবে;যদি না তোমার প্রতিপালকের অন্য ইচ্ছা হয়।নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক যা ইচ্ছা করেন, তা সম্পাদনে সুনিপুণ।
[They will be] abiding therein as long as the heavens and the earth endure, except what your Lord should will. Indeed, your Lord is an effecter of what He intends.
وَ اَمَّا الَّذِیۡنَ سُعِدُوۡا فَفِی الۡجَنَّۃِ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَ الۡاَرۡضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّکَ ؕ عَطَآءً غَیۡرَ مَجۡذُوۡذٍ ﴿۱۰۸﴾
পক্ষান্তরে যারা সৌভাগ্যবান, তারা থাকবে বেহেশ্তে। সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে, যতকাল আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকবে; যদি না তোমার প্রতিপালকের অন্য ইচ্ছা হয়। এ হবে অফুরন্ত অনুদান।
And as for those who were [destined to be] prosperous, they will be in Paradise, abiding therein as long as the heavens and the earth endure, except what your Lord should will – a bestowal uninterrupted.
فَلَا تَکُ فِیۡ مِرۡیَۃٍ مِّمَّا یَعۡبُدُ ہٰۤؤُلَآءِ ؕ مَا یَعۡبُدُوۡنَ اِلَّا کَمَا یَعۡبُدُ اٰبَآؤُہُمۡ مِّنۡ قَبۡلُ ؕ وَ اِنَّا لَمُوَفُّوۡہُمۡ نَصِیۡبَہُمۡ غَیۡرَ مَنۡقُوۡصٍ ﴿۱۰۹﴾٪
কাজেই তারা যাদের ইবাদত করে তাদের সম্বন্ধে সংশয়ে থাকবেন না, আগে তাদের পিতৃপুরুষেরা যেভাবে ‘ইবাদত করত তারাও তাদেরই মত ‘ইবাদত করে। আর নিশ্চয় আমরা তাদেরকে তাদের প্রাপ্য পুরোপুরি দেব—কিছুমাত্র কম করবো না।
So do not be in doubt, [O Muhammad], as to what these [polytheists] are worshipping. They worship not except as their fathers worshipped before. And indeed, We will give them their share undiminished.
সুরা: হুদ।
সুরা:১১
১০৬-১০৯ নং আয়াত:-
فَأَمَّا الَّذِينَ شَقُواْ فَفِي النَّارِ
অতএব যারা হতভাগ্য তারা তো হবে দোযখে;
As for those who are wretched, they will be in the Fire,
১০৬-১০৯ নং আয়াতের তাফসীর :-
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে দু‘টো দল থাকবে। একটি হল দুর্ভাগ্যবান এবং অপরটি সৌভাগ্যবান।
অতঃপর যারা দুর্ভাগ্যবান তথা কাফির তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে আর তারা তথায় আর্তনাদ ও চিৎকার করবে। তারা জাহান্নামে আকাশ-জমিন যতদিন থাকবে ততদিন অবস্থান করবে। এই বাক্য দ্বারা অনেকে এই অর্থ গ্রহণ করেন যে, কোন কাফির-মুশরিকও জাহান্নামে স্থায়ী হবে না। কিন্তু এই অর্থ গ্রহণ করা মোটেও ঠিক হবে না। এটি মূলত আরবদের পরিভাষা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ আরবরা যখন কোন কিছুর চিরস্থায়ীত্ব বুঝাত তখন এইরূপ বলত যে,
هذا دائم دوام السموات والأرض
অর্থাৎ এই বস্তু আকাশ ও পৃথিবীর মত চিরস্থায়ী। এর দ্বারা মূলত তারা চিরস্থায়ী জিনিসকেই বুঝাত। সুতরাং কাফির-মুশরিকরা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে। এই অর্থই সঠিক। আর যারা সৌভাগ্যবান তারা জান্নাতে চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে। আর সেখানে তাদেরকে এমন জিনিস দান করা হবে যা কোন দিন শেষ হওয়ার নয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(خٰلِدِيْنَ فِيْهَا لَا يَبْغُوْنَ عَنْهَا حِوَلًا)
“সেথায় তারা স্থায়ী হবে, তা হতে স্থানান্তর কামনা করবে না।” (সূরা কাহ্ফ ১৮:১০৮)
আর যারা পাপী তাদেরকে এমনভাবে শাস্তি দেয়া হবে যেমন শাস্তি দেয়া হয়েছিল তাদের পূর্বপুরুষদেরকে। তাদের পূর্বপুরুষদেরকে যেমন ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল তাদের ক্ষেত্রেও অনুরূপ করা হবে; এর চেয়ে একটুও কম করা হবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
যারা ভাল কাজ করবে তারা জান্নাতে যাবে আর যারা খারাপ কাজ করবে তারা জাহান্নামে যাবে এবং তথায় চিরস্থায়ী হবে।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
১০৬-১০৭ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ (আরবি) (জাহান্নামে কাফির ও পাপীদের অবস্থা এইরূপ হবে যে,) তাতে তাদের চীৎকার ও আর্তনাদ হতে থাকবে। হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, (আরবি) হয় কষ্ঠে এবং (আরবি) হয় বক্ষে। জাহান্নামের শাস্তির কারণেই তাদের অবস্থা এইরূপ হবে। আমরা এর থেকে আল্লাহ তাআ’লার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
(আরবি) এ ব্যাপারে ইমাম আবু জাফর ইবনু জারীর (রঃ) বলেনঃ কোন কিছু চিরস্থায়ীত্ব বুঝাবার সময় আরববাসীদের পরিভাষায় বলা হতো: (আরবি) অর্থাৎ “এটা আসমান ও যমীনের চিরস্থায়ীত্বের মতো চিরস্থায়ী। অনুরূপভাবে তারা বলতোঃ (আরবি) অর্থাৎ যতদিন পর্যন্ত রাত্রি ও দিবসের বিবর্তন চলবে, ততদিন পর্যন্ত সে বাকী ও স্থায়ী থাকবে।” সুতরাং (আরবি) দ্বারা আল্লাহ তাআ’লা চিরস্থায়ীত্ব বুঝাতে চেয়েছেন, শর্ত হিসেবে তিনি এ শব্দগুলি ব্যবহার করেন নাই তাছাড়া এও হতে পারে যে, এই আসমান ও যমীনের পরে আখেরাতে অন্য আসমান ও যমীন হবে। সুতরাং এখানে (আরবি) উদ্দেশ্য। কেননা, হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, প্রত্যেক জান্নাতের আসমান ও যমীন রয়েছে। এরপরে আল্লাহ তাআ’লার অভিপ্রায়ের বর্ণনা রয়েছে। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ (আরবি)
অর্থাৎ “তোমাদের অবস্থান স্থল হচ্ছে জাহান্নাম। তোমরা তার মধ্যে চিরকাল থাকবে, তবে যদি আল্লাহ (জাহান্নাম হতে বের করতে) চান তাহলে সেটা অন্য কথা, নিশ্চয় আল্লাহ বিজ্ঞানময়, মহাজ্ঞাতা।” (৬: ১২৮) এই স্বাতন্ত্রকরণের ব্যাপারে বহু উক্তি রয়েছে, যা শায়েখ আবুল ফারাজ ইবনু জাওযী (রঃ) তাঁর ‘যাদুস্ সায়ের’ নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন এবং আরও অনেক তাফসীরকারক নকল করেছেন। ইমাম আবু জাফর ইবনু জারীর (রঃ) হযরত খা’লিদ ইবনু মা’দান (রঃ), যহ্হাক (রঃ), কাতাদা’ (রঃ) এবং ইবনু সিনানের (রঃ) এই উক্তিটি পছন্দ করেছেন যে, এই পৃথকিকরণ বা স্বাতন্ত্র্য প্রত্যাবর্তিত হবে একত্ববাদী পাপীদের দিকে। এর তাফসীরে পূর্ববর্তী কয়েকজন মনীষী হতে বড়ই গারীব উক্তি বর্ণিত হয়েছে। কাতাদা’ (রঃ) বলেন যে, এ সম্পর্কে পূর্ণজ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তাআ’লারই রয়েছে।
# আল্লাহ তাআ’লা বলেন যে, ভাগ্যবানরা অর্থাৎ রাসূলদের অনুসারীরা বেহেশতে অবস্থান করবে। সেখান থেকে তাদেরকে বের করা হবে না। আসমান ও যমীনের অস্তিত্ব যতদিন বাকী থাকবে ততদিন তারাও বেহেশতে থাকবে। কিন্তু যদি আল্লাহরই ইচ্ছা হয় তবে সেটা আলাদা কথা। অর্থাৎ তাদেরকে চিরদিন বেহেশতে রাখা আল্লাহর সত্ত্বার উপর ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক নয়। বরং এটা তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। যহ্হাক (রঃ) ও হাসানের (রঃ) উক্তি এই যে, এটাও একত্ববাদী পাপীদের ব্যাপারেই প্রযোজ্য। তারা কিছুকাল জাহান্নামে অবস্থান করবে। অতঃপর তাদেরকে সেখান থেকে বের করা হবে। এটা হচ্ছে আল্লাহর দান যা কখনো শেষ হবার নয়। মহান আল্লাহ এ কথা এ জন্যই বললেন যে, বেহেশতীরা জান্নাতে চিরকাল থাকবে না এরূপ খটকা বা সন্দেহ যেন না থাকে। যেমন তিনি জাহান্নামীদের চিরস্থায়িত্বের বর্ণনার পরেও ওটা নিজের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের দিকে ফিরিয়েছেন। এ সবই তাঁর নিপূণতা ও ইনসাফই বটে।
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে এসেছে যে, মৃত্যুকে সাদা কালো মিশ্রিত রং এর ভেড়ার আকারে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর ওটাকে জান্নাতী ও জাহান্নামীদের মধ্যস্থানে যবাহ করা হবে। তারপর বলা হবেঃ “হে জান্নাতবাসী! তোমাদের এখানে চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করতে হবে। তোমাদের আর মৃত্যু হবে না। আর হে জাহান্নামবাসী! তোমাদেরকে এখানে চিরকাল অবস্থান করতে হবে এবং আর তোমাদের মরণ হবে না”।
সহীহ হাদীসে আরো রয়েছে যে, বলা হবেঃ হে জান্নাতবাসী তোমাদের জন্য এই ফায়সালা করা হলো যে, তোমরা এখানে চিরকাল বাস করবে এবং তোমাদের কখনো মৃত্যু হবে না। তোমরা যুবক অবস্থাতেই থাকবে এবং কখনো বৃদ্ধ হবে না, তোমরা সুস্থ থাকবে এবং কখনো রোগাক্রান্ত হবে না, তোমরা খুশী থাকবে এবং কখনো দুঃখিত হবে না।
# আল্লাহ তাআ’লা বলছেনঃ হে নবী (সঃ)! মুশরিকরা যে শরীক স্থাপন করছে তা যে সম্পূর্ণ রূপে বাতিল ও ভিত্তিহীন এ ব্যাপারে তুমি মোটেই সন্দেহ করোনা। তাদের কাছে তাদের বাপ-দাদাদের প্রচলিত রীতি ছাড়া আর কোন দলীল নেই। তাদের সৎ কার্যের বিনিময় তাদেরকে দুনিয়াতেই দিয়ে দেয়া হবে। আখেরাতে তাদের কোনই অংশ নেই। সুতরাং সেখানে তাদের প্রাপ্য হবে কঠিন শাস্তি। নিশ্চয় আমি তাদেরকে তাদের অংশ পূর্ণভাবে দিয়ে দেবো, একটুও কম না করে আল্লাহ পাকের এই উক্তি সম্পর্কে হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, এর ভাবার্থ হচ্ছেঃ তাদের সঙ্গে ভাল ও মন্দের যে ওয়াদা করা হয়েছে তা পুরোপুরিভাবে প্রদান করা হবে, একটুও কম করা হবে না। তাদের নির্ধারিত অংশ তারা অবশ্যই পাবে।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
এ শব্দগুলোর অর্থ পরকালীন জগতের আকাশ ও পৃথিবী হতে পারে। অথবা এমনও হতে পারে যে, নিছক সাধারণ বাগধারা হিসেবে একে চিরকালীন স্থায়িত্ব অর্থে বর্ণনা করা হয়েছে। মোটকথা এর অর্থ বর্তমান পৃথিবী ও আকাশ তো কোনক্রমেই হতে পারে না। কারণ কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী কিয়ামতের দিন এগুলো বদলে দেয়া হবে এবং এখানে যেসব ঘটনার কথা বলা হচ্ছে সেগুলো কিয়ামতের পরে ঘটবে।
# তাদেরকে এ চিরন্তন আযাব থেকে বাঁচাবার মতো আর কোন শক্তিই তো নেই। তবে আল্লাহ নিজেই যদি কারোর পরিণতি বদলাতে চান অথবা কাউকে চিরন্তন আযাব দেবার পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আযাব দিয়ে মাফ করে দেবার ফায়সালা করে নেন তাহলে এমনটি করার পূর্ণ ইখতিয়ার তাঁর আছে। কারণ তিনি নিজেই নিজের আইন রচয়িতা। তাঁর ইখতিয়ার ও ক্ষমতাকে সীমিত করে দেবার মতো কোন উচ্চতর আইন নেই।
# তাদের জান্নাতে অবস্থান করাও এমন কোন উচ্চতর আইনের ভিত্তিতে হবে না, যা আল্লাহকে এমনটি করতে বাধ্য করে রেখেছে। বরং আল্লাহ যে তাদেরকে সেখানে রাখবেন এটা হবে সরাসরি তাঁর অনুগ্রহ। যদি তিনি তাদের ভাগ্য বদলাতে চান, তা করার পূর্ণ ক্ষমতা তাঁর আছে।
# এর অর্থ এ নয় যে, এ মাবুদদের ব্যাপারে সত্যিই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মনে কোন প্রকার সন্দেহ ছিল। বরং আসলে এ কথাগুলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে সাধারণ মানুষকে শুনানো হচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে, এরা যে এসব মাবুদের পূজা করছে এবং এদের কাছে প্রার্থনা করছে ও ভিক্ষা মাগছে, নিশ্চয়ই এরা কিছু দেখে থাকবে যে কারণে এরা এদের থেকে উপকৃত হবার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে— কোন বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তির মনে এ ধরনের কোন সংশয় থাকা উচিত নয়। সত্যি কথা হচ্ছে এই যে, এ পূজা-অর্চনা, নযরানা ও প্রার্থনা আসলে কোন অভিজ্ঞতা ও সত্যিকার পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে নয় বরং এসব কিছু করা হচ্ছে নিছক অন্ধ অনুসৃতির ভিত্তিতে। এসব বেদী ও আস্তানা পূর্ববর্তী জাতিদেরও ছিল এবং তাদের এ ধরনের কেরামতি ও অলৌকিক কার্যকলাপ তাদের মধ্যেও লোকমুখে খুব বেশী শোনা যেতো। কিন্তু যখন আল্লাহর আযাব এলো তখন তারা ধ্বংস হয়ে গেলো এবং বেদী ও আস্তানাগুলো কোন কাজে লাগলো না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
# [১] এই বাক্য দ্বারা কিছু মানুষ এই বিভ্রান্তির শিকার হয়েছে যে, জাহান্নামের আযাব কাফেরদের জন্যও চিরস্থায়ী নয়; বরং সাময়িক। অর্থাৎ, ততদিন থাকবে, যতদিন আকাশ ও পৃথিবী থাকবে। (তারপর শেষ হয়ে যাবে।) কিন্তু এই কথা ঠিক নয়। কারণ এখানে مَا دَامَتِ السَّمَوَاتُ وَالأرضُ কথাটি আরববাসীদের দৈনন্দিন কথাবার্তা ও পরিভাষা অনুযায়ী অবতীর্ণ হয়েছে। আরববাসীদের অভ্যাস ছিল যে, যখন তারা কোন বস্তুর চিরস্থায়িতত্ত্ব প্রমাণ করার উদ্দেশ্য হত, তখন তারা বলত,(هذا دائمٌ دوام السموات والأرض) “এই বস্তু আকাশ ও পৃথিবীর মত চিরস্থায়ী।” সেই পরিভাষাকে কুরআনে বর্ণনা করা হয়েছে, যার অর্থ কাফের ও মুশরিকরা চিরকালব্যাপী জাহান্নামে থাকবে, যা কুরআন বিভিন্ন স্থানে, خَالِدِينَ فِيهَآ أَبَدًا শব্দ দ্বারা বর্ণনা করেছে। তার দ্বিতীয় এক অর্থ এও করা হয়েছে যে, আকাশ ও পৃথিবী থেকে উদ্দেশ্য হল ‘জিনস’ (শ্রেণী)। অর্থাৎ, ইহলৌকিক আকাশ ও পৃথিবী; যা ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু এ ছাড়া পারলৌকিক আকাশ ও পৃথিবী পৃথক হবে। যেমন কুরআনে তার পরিষ্কার বর্ণনা এসেছে। يوم تبدل الأرض غير الأرض والسموات অর্থাৎ, যেদিন এই পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবী হবে এবং আকাশমন্ডলীও।” (সূরা ইবরাহীম ১৪:৪৮) আর পারলৌকিক উক্ত আকাশ ও পৃথিবী, জান্নাত ও জাহান্নামের মত চিরস্থায়ী হবে। এই আয়াতে সেই পারলৌকিক আকাশ-পৃথিবীর কথা বলা হয়েছে, ইহলৌকিক আকাশ-পৃথিবীর কথা নয়, যা ধ্বংস হয়ে যাবে। (ইবনে কাসীর) এই উভয় অর্থের যে কোন অর্থ নেওয়া হলে আয়াতের উদ্দেশ্য পরিষফুটিত হয়ে যাবে এবং উপস্থাপিত সমস্যা দূর হয়ে যাবে। ইমাম শওকানী (রঃ) এর আরো কয়েকটি অর্থ বর্ণনা করেছেন, যা জ্ঞানীরা দেখতে পারেন। (ফাতহুল কাদীর)
[২] এই ব্যতিক্রমেরও কয়েকটি অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। তার মধ্যে সব থেকে সঠিক অর্থ এই যে উক্ত ব্যতিক্রম তওহীদবাদী মু’মিন পাপীদের জন্য। এই অর্থ অনুযায়ী এর পূর্ব আয়াতে شقي (দুর্ভাগ্যবান) শব্দটি ব্যাপক ধরতে হবে। অর্থাৎ কাফের ও পাপী মু’মিন উভয়কে বুঝাবে। আর إلا مَا شَاءَ رَبُّكَ দ্বারা পাপী মু’মিনরা ব্যতিক্রম হয়ে যাবে। আর ما شاء তে مَا হরফটি مَن এর অর্থে ব্যবহার হয়েছে।
# [১] এই ব্যতিক্রমও পাপী মু’মিনদের জন্য। অর্থাৎ, অন্য মু’মিনদের মত এই গোনাহগার মু’মিনরা প্রথম থেকে শেষ অবধি জান্নাতে থাকবে না। বরং শুরুতে কিছু দিন তাদেরকে জাহান্নামে থাকতে হবে, পরে আল্লাহর ইচ্ছায় আম্বিয়া ও মু’মিনদের সুপারিশে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, যেমন সহীহ হাদীস দ্বারা এ কথা প্রমাণিত।
[২] غير مجذوذ এর অর্থ হল غير مقطوع অর্থাৎ, এমন অফুরন্ত অনুদান যা শেষ হওয়ার নয়। এই বাক্য দ্বারা এই কথা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, যে সকল পাপী মু’মিনদেরকে জাহান্নাম থেকে বে’র করে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তারা ক্ষণস্থায়ী নয়, বরং চিরস্থায়ী হবে এবং সকল জান্নাতীগণ আল্লাহ প্রদত্ত অনুদান ও তাঁর নিয়ামত দ্বারা উপকৃত হতে থাকবে, তা কোন কালে কখনও শেষ হবে না।
# এর অর্থ সেই আযাব, তারা যার হকদার হবে, তাতে কোন কম করা হবে না।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
# [১] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মৃত্যুকে হাশরের মাঠে একটি সাদা-কালো ছাগলের সূরতে নিয়ে আসা হবে তারপর একজন আহবানকারী আহবান করবেন, হে জান্নাতবাসী। ফলে তারা ঘাড় উচু করবে এবং তাকাবে। তারপর তাদেরকে বলা হবে, তোমরা কি এটাকে চিন? তারা বলবেঃ হ্যাঁ, এটা হলো, মৃত্যু ৷ তাদের প্রত্যেকেই তা দেখেছে। তারপর আহবানকারী আহবান করে ডাকবেন, হে জাহান্নামবাসী! তখন তারা ঘাড় উঁচু করে তাকাবে। তখন তাদের বলা হবে, তোমরা কি এটাকে চিন? তারা বলবে, হ্যাঁ, আর তারা প্রত্যেকে তা দেখেছে, তারপর সেটাকে জবেহ করা হবে। তারপর বলবেনঃ হে জান্নাতবাসী! স্থায়ীভাবে তোমরা এখানে থাকবে সুতরাং কোন মৃত্যু নেই। আর হে জাহান্নামবাসী! স্থায়ীভাবে এখানে থাকবে সুতরাং কোন মৃত্যু নেই। তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেনঃ তাদেরকে সতর্ক করে দিন পরিতাপের দিন সম্বন্ধে, যখন সব সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। এখন তারা গাফিল এবং তারা বিশ্বাস করে না। (সূরা মারইয়ামঃ ৩৯) [বুখারীঃ ৪৭৩০]
[২] এ শব্দগুলোর অর্থ আখেরাতের আসমান ও যমীন হতে পারে। এ জন্যই হাসান বসরী বলেন, সেদিন আসমান ও যমীন তো পরিবর্তিত হবে। আর সে আসমান ও যমীন স্থায়ী হবে। তাই তাদের অবস্থারও পরিবর্তন হবে না। [ইবন কাসীর] অথবা এমনও হতে পারে যে, প্রতিটি জান্নাত ও জাহান্নামেরই আলাদা আসমান ও যমীন রয়েছে সে অনুসারে এটা বলা হয়েছে। এটি ইবন আব্বাস থেকে বর্ণিত। [ইবন কাসীর] অথবা এর অর্থ যতক্ষণ আসমান আসমান থাকবে আর যতক্ষণ যমীন যমীন থাকবে। আর আখেরাতে সেটা অপরিবর্তনীয়। এটি আব্দুর রহমান ইবন যায়দ বলেছেন। [ইবন কাসীর] অথবা নিছক সাধারণ বাকধারা হিসেবে একে চিরকালীন স্থায়িত্ব অর্থে বর্ণনা করা হয়েছে। [ইবন কাসীর]
[৩] অর্থাৎ তাদেরকে এ চিরন্তন আযাব থেকে বাঁচাবার মতো আর কোন শক্তিই তো নেই। তবে আল্লাহ নিজেই কিছু ইচ্ছে করেন সেটা ভিন্ন। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, কাফেরের আযাব তো কখনো শেষ হবে না, তা হলে এখানে ব্যতিক্রম কি হতে পারে? এ ব্যাপারে আলেমগণ বিভিন্ন মত দিয়েছেন। তবে সবেচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত হচ্ছে তাই যা ইমাম ইবন জারীর তাবারীসহ অধিকাংশ সত্যনিষ্ঠ আলেম গ্রহণ করেছেন। আর তা হচ্ছে, এখানে গোনাহগার ঈমানদারদের কথা বলা হয়েছে। যাদেরকে আল্লাহর অনুমতিক্রমে নবী-রাসূল, ফিরিশতা ও মুমিনদের সুপারিশের মাধ্যমে আল্লাহ্ তাআলা জাহান্নাম থেকে বের করবেন। তারপর রহমতের মালিক আল্লাহ তা’আলা নিজ হাতে এমন লোকদেরকে বের করবেন, যাদের অন্তরে সামান্যতম ঈমানও অবশিষ্ট ছিল। এ ব্যাপারে বিভিন্ন হাদীসে বিস্তারিত এসেছে। [ইবন কাসীর]
# তাদের জান্নাতে অবস্থান করাও এমন কোন কিছুর উপর নির্ভরশীল নয় যে তা আল্লাহকে এমনটি করতে বাধ্য করে রেখেছে। বরং আল্লাহ যে তাদেরকে সেখানে রাখবেন এটা হবে সরাসরি তাঁর অনুগ্রহ। যদি তিনি তাদের ভাগ্য বদলাতে চান, তা করার পূর্ণ ক্ষমতা তাঁর আছে। [ইবন কাসীর] তাই তাদেরকে সর্বদা তাঁর জন্য তাসবীহ ও তাহমীদ পাঠ করার ইলহাম করা হবে, যেমনি তাদেরকে নিঃশ্বাস নেয়ার ইলহাম করা হবে। [ইবন কাসীর] হাসান বসরী ও দাহহাক বলেন, এখানেও ব্যতিক্রম বলে গোনাহগার ঈমানদারদের বোঝানো হয়েছে। কারণ তারা কিছু সময় জাহান্নামে অবস্থান করবে তারপর তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। [ইবন কাসীর]
# এর অর্থ এ নয় যে, এ মাবুদদের ব্যাপারে সত্যিই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মনে কোন প্রকার সন্দেহ ছিল। বরং আসলে একথাগুলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে সাধারণ মানুষকে শুনানো হচ্ছে। [কুরতুবী] এর অর্থ হচ্ছে, এরা যে এসব মাবুদের ইবাদত করছে এবং এদের কাছে প্রার্থনা করছে ও ভিক্ষা চাচ্ছে, নিশ্চয়ই এরা কিছু দেখে থাকবে যে কারণে এরা এদের থেকে উপকৃত হবার আকাংখা পোষণ করে-কোন বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তির মনে এ ধরনের কোন সংশয় থাকা উচিত নয়। সত্যি কথা হচ্ছে এই যে, এদের যাবতীয় ইবাদত, নযরানা ও প্রার্থনা আসলে কোন অভিজ্ঞতা ও সত্যিকার পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে নয় বরং এসব কিছু করা হচ্ছে নিছক অন্ধ অনুসৃতির ভিত্তিতে। এসব বেদী ও আস্তানা পূর্ববর্তী জাতিদেরও ছিল। কিন্তু যখন আল্লাহর আযাব এলো তখন তারা ধ্বংস হয়ে গেলো এবং বেদী ও আস্তানাগুলো কোন কাজে লাগলো না।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- HUD.
Sura: 11
Verses :- 106-109
فَأَمَّا الَّذِينَ شَقُواْ فَفِي النَّارِ
As for those who are wretched, they will be in the Fire,
The Condition of the Wretched People and their Destination
Allah, the Exalted, says,
فَأَمَّا الَّذِينَ شَقُواْ فَفِي النَّارِ
As for those who are wretched, they will be in the Fire,
Then Allah explains the situation of the wretched people and the happy people.
He says,
لَهُمْ فِيهَا زَفِيرٌ وَشَهِيقٌ
in it they will experience Zafir and Shahiq.
Ibn Abbas said,
“Az-Zafir is a sound in the throat and Ash-Shahiq is a sound in the chest. This means that their exhaling will be Zafir and their inhaling will Shahiq.”
This will be due to the torment that they will be experiencing. We seek refuge with Allah from such evil.
خَالِدِينَ فِيهَا مَا دَامَتِ السَّمَاوَاتُ وَالَارْضُ
They will dwell therein for all the time that the heavens and the earth endure,
Imam Abu Jafar bin Jarir said,
“It was from the customs of the Arabs that when they wanted to describe something that would last forever, they would say, `This is as enduring as the heavens and the earth.’
Or, `It will last as until the night and day separate.’
They would say, `As long as talkers at night continue to chat.’ They meant by these statements the condition of eternity. Therefore, Allah addressed them in a manner that they were familiar with among themselves. Thus, He said,
خَالِدِينَ فِيهَا مَا دَامَتِ السَّمَاوَاتُ وَالَارْضُ
(They will dwell therein for all the time that the heavens and the earth endure).
The literal meaning is also intended with; “for all the time that the heavens and the earth endure.”
This is due to the fact that there will be heavens and earth in the life of the next world, just as Allah said,
يَوْمَ تُبَدَّلُ الاٌّرْضُ غَيْرَ الاٌّرْضِ وَالسَّمَـوَتُ
On the Day when the earth will be changed to another earth and so will be the heavens. (14:48)
For this reason, Al-Hasan Al-Basri said concerning the statement of Allah,
مَا دَامَتِ السَّمَاوَاتُ وَالَارْضُ
(the heavens and the earth endure),
“Allah is referring to a heaven other than this heaven (which we see now) and an earth other than this earth. That (new) heaven and earth will be eternal.”
Concerning Allah’s statement,
إِلاَّ مَا شَاء رَبُّكَ
إِنَّ رَبَّكَ فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيدُ
except as your Lord wills. Verily, your Lord is the doer of whatsoever He intends.
This is similar to His statement,
النَّارُ مَثْوَاكُمْ خَـلِدِينَ فِيهَأ إِلاَّ مَا شَأءَ اللَّهُ إِنَّ رَبَّكَ حَكِيمٌ عَلِيمٌ
The Fire be your dwelling place, you will dwell therein forever, except as Allah may will. Certainly your Lord is All-Wise, All-Knowing. (6:128)
It has been said that the exception mentioned in this verse refers to the disobedient among the people of Tawhid. It is these whom Allah will bring out of the Fire by the intercession of the interceders.
Those who will be allowed to intercede are the angels, the Prophets and the believers. They will intercede even on behalf of those who committed major sins. Then, the generous mercy of Allah will remove from the Fire those who have never done any good, except for saying La ilaha illallah one day of their life.
This has been mentioned in numerous authentic reports from the Messenger of Allah, including narrations from Anas bin Malik, Jabir bin Abdullah, Abu Sa`id Al-Khudri, Abu Hurayrah and other Companions.
No one remains in the Fire after this final intercession, except those who will remain there forever without escape. This is the opinion held by many of the scholars, both past and present, concerning the explanation of this verse.
The Condition of the Happy People and their Destination
Allah, the Exalted, says,
وَأَمَّا الَّذِينَ سُعِدُواْ
And those who are blessed.
These are the followers of the Messengers.
فَفِي الْجَنَّةِ
they will be in Paradise,
This means that their final abode will be Paradise.
خَالِدِينَ فِيهَا
abiding therein for all the time,
This means that they will remain there forever.
مَا دَامَتِ السَّمَاوَاتُ وَالَارْضُ إِلاَّ مَا شَاء رَبُّكَ
that the heavens and the earth endure, except as your Lord wills:
The meaning of the exception that is made here is that the condition of eternal pleasure that they will experience therein is something that is not mandatory by itself. Rather, it is something that is dependent upon the will of Allah. Unto Him belongs the favor of immortality upon them. For this reason they are inspired to glorify and praise Him, just as they are inspired to breathe.
Ad-Dahhak and Al-Hasan Al-Basri both said,
“It is about the right of the disobedient people of Tawhid who were in the Fire and then brought out of it.”
Then Allah finished this statement by saying,
عَطَاء غَيْرَ مَجْذُوذٍ
a gift without an end.
This means that it will never be cut off.
This has been mentioned by Mujahid, Ibn Abbas, Abu Al-Aliyah and others.
This has been mentioned so that the suspicious person will not doubt after the mention of the will of Allah. Someone may think that the mention of Allah’s will here means that the pleasure of Paradise may end or change. To the contrary, it has been decreed that this pleasure will truly be forever and will never end. Likewise, Allah has clarified here that the eternal torment of the people of the Fire in Hell also is due to His will. He explains that He punishes them due to His justness and wisdom. This is why He says,
إِنَّ رَبَّكَ فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيدُ
(Verily, your Lord is the doer of whatsoever He intends).
Similarly, Allah says,
لَا يُسْأَلُ عَمَّا يَفْعَلُ وَهُمْ يُسْـَلُونَ
He cannot be questioned as to what He does, while they will be questioned. (21:23)
Here, Allah soothes the hearts and affirms the intent, by His saying,
عَطَأءً غَيْرَ مَجْذُوذٍ
a gift without an end.)
It has been recorded in the Two Sahihs that the Messenger of Allah said,
يُوتَى بِالْمَوْتِ فِي صُورَةِ كَبْشٍ أَمْلَحَ فَيُذْبَحُ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ ثُمَّ يُقَالُ يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ خُلُودٌ فَلَ مَوْتَ وَيَا أَهْلَ النَّارِ خُلُودٌ فَلَ مَوْت
Death will be brought in the form of a handsome ram (on the Day of Judgement) and it will be slaughtered between Paradise and the Hellfire. Then, it will be said, “O people of Paradise! Eternity and no death! O people of Hellfire! Eternity and no death!”
In the Sahih it is recorded that the Messenger of Allah said,
فَيُقَالُ يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ إِنَّ لَكُمْ أَنْ تَعِيشُوا فَلَ تَمُوتُوا أَبَدًا وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ تَشِبُّوا فَلَ تَهْرَمُوا أَبَدًا وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ تَصِحُّوا فَلَ تَسْقَمُوا أَبَدًا وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ تَنْعَمُوا فَلَ تَبْأَسُوا أَبَدًا
It will be said, `O people of Paradise, verily you will live and you will never die. You will remain young and you will never grow old. You will remain healthy and you will never become ill. You will be happy and you will never grieve.
Associating Partners with Allah is no doubt Misguidance
Allah, the Exalted, says,
فَلَ تَكُ فِي مِرْيَةٍ مِّمَّا يَعْبُدُ هَـوُلاء
So be not in doubt as to what these people worship.
This refers to the polytheists. Verily, what they are doing is falsehood, ignorance and misguidance.
مَا يَعْبُدُونَ إِلاَّ كَمَا يَعْبُدُ ابَاوُهُم مِّن قَبْلُ
They worship nothing but what their fathers worshipped before (them).
This means that they have no support for their Shirk. They are only mimicking their fathers in ignorance. Therefore, Allah will give them due recompense for that and He will punish them with a punishment the likes of which none can give besides Him. If they did any good deeds, then Allah will reward them for those good works in this life, before the life of the Hereafter.
Concerning Allah’s statement,
وَإِنَّا لَمُوَفُّوهُمْ نَصِيبَهُمْ غَيْرَ مَنقُوصٍ
And verily, We shall repay them in full their portion without diminution.
Abdur-Rahman bin Zayd bin Aslam said,
“We will pay them in full their portion of punishment without diminution.