أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 744)[মুনাফিক কি?বই নং ২২]
(Book# 635)[তোমাদের আশপাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফিক।]{মুনাফিক কি? ১৯ নং বই} www.motaher21.net
Sura: 13
Verses :- 25
[ وَيَقْطَعُونَ مَأ أَمَرَ اللّهُ
যে সম্পর্ক অক্ষুণ´ রাখতে আল্লাহ আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে,
Sever that which Allah has commanded to be joined,]
www.motaher21.net
وَ الَّذِیۡنَ یَنۡقُضُوۡنَ عَہۡدَ اللّٰہِ مِنۡۢ بَعۡدِ مِیۡثَاقِہٖ وَ یَقۡطَعُوۡنَ مَاۤ اَمَرَ اللّٰہُ بِہٖۤ اَنۡ یُّوۡصَلَ وَ یُفۡسِدُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ ۙ اُولٰٓئِکَ لَہُمُ اللَّعۡنَۃُ وَ لَہُمۡ سُوۡٓءُ الدَّارِ ﴿۲۵﴾
পক্ষান্তরে যারা আল্লাহ্র সাথে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখতে আল্লাহ্ আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং যমীনে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের জন্যই রয়েছে লা’নত এবং তাদের জন্য রয়েছে আখেরাতের মন্দ আবাস।
But those who break the covenant of Allah after contracting it and sever that which Allah has ordered to be joined and spread corruption on earth – for them is the curse, and they will have the worst home.
সুরা: রাদ
সুরা:১৩
২৫ নং আয়াত:-
وَيَقْطَعُونَ مَأ أَمَرَ اللّهُ
যে সম্পর্ক অক্ষুণ´ রাখতে আল্লাহ আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে,
Sever that which Allah has commanded to be joined,
২৫ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
মুমিনমু’মিনদের গুণাবলী উপরে বর্ণনা করার পর এখানে ঐ হতভাগ্যদের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে, যারা মুমিনমু’মিনদের বিপরীত স্বভাব বিশিষ্ট। তারা আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদার প্রতি না কোন ভ্রুক্ষেপ করতো, না তারা আত্মীয়তার সম্পর্ক যুক্ত রাখতো, না আল্লাহ তাআ’লার আদেশ নিষেধের প্রতি কোন খেয়াল রাখতো। এরা হচ্ছে অভিশপ্ত দল এবং এদের পরিণাম বড়ই মন্দ। যেমন হাদীসে এসেছেঃ “মুনাফিকের নিদর্শন তিনটি। যখন তারা কথা বলে মিথ্যা বলে, যখন কোন ওয়াদা করে তখন খেলাফ করে এবং যখন তাদের কাছে কোন আমানত রাখা হয় তখন তারা খেয়ানত করে।” আর একটি রিওয়াইয়াতে আছেঃ “যখন কোন চুক্তি করে তখন তা ভঙ্গ করে, যখন ঝগড়া করে তখন কটু ও অশ্লীল বাক্য প্রয়োগ করে।” এই শ্রেণীর লোক আল্লাহ তাআ’লার করুণা লাভ করবে না। এবং এদের পরিণাম হবে খুবই মন্দ। এরা হচ্ছে জাহান্নামী দল।
(আরবি) এই আয়াতের ব্যাপারে আবুল আ’লিয়া (রঃ) বলেন যে, মুনাফিকদের মধ্যে ছ’টি অভ্যাস প্রকাশ পায় যখন তারা বিজয়ী হয়। অভ্যাসগুলি হচ্ছেঃ মিথ্যা কথা বলা,ওয়াদা খেলাফ করা, আমানতের খিয়ানত করা, আল্লাহর সাথে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করা, আল্লাহ তাআ’লা যে সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখতে আদেশ করেছেন তা অক্ষুন্ন না রাখা এবং ভূ-পৃষ্ঠে বিশৃংখলা ও অশান্তি ছড়িয়ে দেয়া। আর যখন তারা বিজিত হয় তখন তাদের তিনটি স্বভাব প্রকাশ পায়ঃ যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে খেলাফ করে এবং আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে।
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
(وَالَّذِیْنَ یَنْقُضُوْنَ عَھْدَ اللہِ…)
পূর্ববর্তী আয়াতগুলোতে মু’মিনদের অন্যতম একটি গুণ উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহ তা‘আলা যাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন তারা তাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে। এখানে বিপরীত দোষের অধিকারী ব্যক্তির কথা বলা হয়েছে। তারা আল্লাহ তা‘আলার সাথে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তাদেরকে যে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য নিদের্শ দেয়া হয়েছে তা তারা বজায় রাখে না। এবং তারা জমিনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বেড়ায়। অথচ তারা নিজেদের ব্যাপারে মনে করে যে, তারা ভাল কাজ করছে। মূলত তারা হল মুনাফিক, আর এদের সম্পর্কে সূরা বাক্বারার প্রথম দিকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এরা অভিশপ্ত সম্প্রদায়, আল্লাহ তা‘আলার রহমত থেকে বঞ্চিত। ফলে তাদের জন্য আখিরাতে রয়েছে নিকৃষ্ট আবাসস্থল। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। সেখান থেকে নিষ্কৃতি লাভ করবে না।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
[১] এ আয়াতে সে সমস্ত অপরিণামদর্শী লোকদের আলোচনা করা হচ্ছে, যারা পূর্ববর্তী গুণগুলোর বিপরীত কাজ করে। তাদের জন্য কি শাস্তি রয়েছে তাও বর্ণনা করা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর]
এ সমস্ত অবাধ্য বান্দাদের স্বভাব হলো যে, তারা আল্লাহ্ তা’আলার অঙ্গীকারকে পাকাপোক্ত করার পর তা ভংগ করে থাকে। হাদীসে অঙ্গীকার ভঙ্গ করাকে মুনাফিকের একটি আলামত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। [ইবন কাসীর]
অবাধ্য বান্দাদের দ্বিতীয় স্বভাব এরূপ বর্ণিত হয়েছে যে, তারা ঐসব সম্পর্ক ছিন্ন করে, যেগুলো বজায় রাখতে আল্লাহ্ নির্দেশ দিয়েছেন। আত্মীয়তার সম্পর্কও আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া সমস্ত নবী-রাসূলদের উপর ঈমান আনাও এর অন্তর্ভুক্ত। [কুরতুবী]
তৃতীয় স্বভাব এই যে, তারা পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করে। তারা কুফরি ও গোনাহ করে যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করে। [কুরতুবী] যারা আল্লাহ্ তা’আলা ও মানুষের অঙ্গীকারের পরওয়া করে না এবং কারো অধিকার ও সম্পর্কের প্রতি লক্ষ্য করে না, তাদের কর্মকাণ্ড যে অপরাপর লোকদের ক্ষতি ও কষ্টের কারণ হবে, তা বলাই বাহুল্য। ঝগড়া-বিবাদ ও মারামারি-কাটাকাটির বাজার গরম হবে। এটা এক বিরাট ফাসাদ।
আবুল আলীয়া রাহেমাহুল্লাহ বলেন, মুনাফিক শ্রেণীর লোক যখন মানুষের উপর কর্তৃত্ব করে তখন ছয়টি খারাপ অভ্যাস ও কর্ম করে থাকেঃ কথা বললে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে তার বিপরীত কাজ করে, তাদের কাছে আমানত রাখা হলে তা খেয়ানত করে, আল্লাহ্র নেয়া অঙ্গীকারকে ভঙ্গ করে, আল্লাহ্ যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন তা কর্তন করে এবং যমীনের মধ্যে বিপর্যয় ও ফেতনা-ফাসাদ সৃষ্টি করে। আর যখন তারা কর্তৃত্বে থাকে না বা অন্যরা তাদের উপর কর্তৃত্ব করে তখন তারা তিনটি কাজ করেঃ কথা বললে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে তার বিপরীত করে এবং আমানতের খেয়ানত করে। [ইবন কাসীর] হাদীসেও তাদের কর্মকাণ্ডের কথা বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মুনাফিকের আলামত তিনটি, যখন কথা বলবে মিথ্যা বলবে, যখন ওয়াদা করবে তার বিপরীত করবে এবং যখন আমানত রাখা হবে তখন তার খেয়ানত করবে’৷ [বুখারীঃ ৩৩, মুসলিমঃ ৫৯] অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যখন অঙ্গীকার করবে তা ভঙ্গ করবে, যখন ঝগড়া করবে গালি-গালাজ করবে’। [বুখারীঃ ৩৪, মুসলিমঃ ৫৮]
অবাধ্য বান্দাদের এই সমস্ত স্বভাব বর্ণনা করার পর তাদের শাস্তি উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, তাদের জন্য লা’নত ও মন্দ আবাস রয়েছে। লা’নতের অর্থ আল্লাহ্র রহমত থেকে দূরে থাকা এবং বঞ্ছিত হওয়া। [কুরতুবী] বলাবাহুল্য, আল্লাহ্র রহমত থেকে দূরে থাকাই সর্বাপেক্ষা বড় আযাব এবং সব বিপদের বড় বিপদ। পূর্ববর্তী আয়াতসমূহে যেমন অনুগত বান্দাদের প্রতিদান উল্লেখ করে বলা হয়েছিল যে, তাদের স্থান হবে জান্নাতে, ফিরিশতারা তাদেরকে সালাম করে বলবে যে, এসব নেয়ামত তোমাদের সবর ও আনুগত্যের ফলশ্রুতি, তেমনিভাবে এ আয়াতে অবাধ্যদের অশুভ পরিণতি বর্ণনা করে বলা হয়েছে যে, তাদের উপর আল্লাহ্র লা’নত অর্থাৎ তারা আল্লাহ্র রহমত থেকে দূরে এবং তাদের জন্য জাহান্নামের আবাস অবধারিত। এতে বুঝা যায় যে, অঙ্গীকার ভঙ্গ করা এবং আত্মীয় ও স্বজনদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা অভিসম্পাত ও জাহান্নামের কারণ।
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Ar-Ra’d
Sura: 13
Verses :- 25
وَيَقْطَعُونَ مَأ أَمَرَ اللّهُ
Sever that which Allah has commanded to be joined,
Characteristics of the Wretched Ones which will lead to the Curse and the Evil Home
This is the destination of the Wretched ones and these are their characteristics. Allah mentioned their end in the Hereafter, to contrast the end that the believers earned, since their characteristics were to the opposite of the believer’s qualities in this life. The latter used to keep Allah’s covenant and join that which Allah has ordained on them to join.
As for the former, they used to,
وَالَّذِينَ يَنقُضُونَ عَهْدَ اللّهِ مِن بَعْدِ مِيثَاقِهِ
وَيَقْطَعُونَ مَأ أَمَرَ اللّهُ بِهِ أَن يُوصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِي الَارْضِ
And those who break the covenant of Allah, after its ratification, and sever that which Allah has commanded to be joined, and work mischief in the land,
An authentic Hadith states that,
ايَةُ الْمُنَافِقِ ثَلَثٌ
إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ
وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ
وَإِذَا اوْتُمِنَ خَان
The signs of a hypocrite are three:
Whenever he speaks, he tells a lie;
whenever he promises, he always breaks it (his promise);
if you entrust him, he proves to be dishonest.”
In another narration, the Prophet said,
وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ
وَإِذَا خَاصَمَ فَجَر
If he enters into a covenant, he betrays it; and
if he disputes, he proves to be most quarrelsome.
This is why Allah said next,
أُوْلَيِكَ لَهُمُ اللَّعْنَةُ
on them is the curse,
they will be cast away from Allah’s mercy,
وَلَهُمْ سُوءُ الدَّارِ
and for them is the unhappy home.
the evil end and destination,
وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَبِيْسَ الْمِهَادُ
Their dwelling place will be Hell; and worst indeed is that place for rest. (13:18).