أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 751)
Sura: 13
Verses :- 36-37
[ مِنَ الۡاَحۡزَابِ مَنۡ یُّنۡکِرُ بَعۡضَہٗ ؕ
আর কোন কোন দল ওর কতক অংশকে অস্বীকার করে।
But among the [opposing] factions are those who deny part of it.]
www.motaher21.net
وَ الَّذِیۡنَ اٰتَیۡنٰہُمُ الۡکِتٰبَ یَفۡرَحُوۡنَ بِمَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ وَ مِنَ الۡاَحۡزَابِ مَنۡ یُّنۡکِرُ بَعۡضَہٗ ؕ قُلۡ اِنَّمَاۤ اُمِرۡتُ اَنۡ اَعۡبُدَ اللّٰہَ وَ لَاۤ اُشۡرِکَ بِہٖ ؕ اِلَیۡہِ اَدۡعُوۡا وَ اِلَیۡہِ مَاٰبِ ﴿۳۶﴾
আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি তারা যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে তাতে আনন্দিত হয়, আর কোন কোন দল ওর কতক অংশকে অস্বীকার করে। তুমি বল, ‘আমি তো কেবল আল্লাহরই ইবাদত করতে এবং তাঁর কোন শরীক না করতে আদিষ্ট হয়েছি। আমি তাঁরই প্রতি আহবান করি এবং তাঁরই নিকট আমার প্রত্যাবর্তন।’
And [the believers among] those to whom We have given the [previous] Scripture rejoice at what has been revealed to you, [O Muhammad], but among the [opposing] factions are those who deny part of it. Say, “I have only been commanded to worship Allah and not associate [anything] with Him. To Him I invite, and to Him is my return.”
وَ کَذٰلِکَ اَنۡزَلۡنٰہُ حُکۡمًا عَرَبِیًّا ؕ وَ لَئِنِ اتَّبَعۡتَ اَہۡوَآءَہُمۡ بَعۡدَ مَا جَآءَکَ مِنَ الۡعِلۡمِ ۙ مَا لَکَ مِنَ اللّٰہِ مِنۡ وَّلِیٍّ وَّ لَا وَاقٍ ﴿٪۳۷﴾
আর এভাবে আমি এ (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি আরবী ভাষায় জীবন-বিধান স্বরূপ; জ্ঞান প্রাপ্তির.পর তুমি যদি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহর বিরুদ্ধে তোমার কোন অভিভাবক ও রক্ষাকর্তা থাকবে না।
And thus We have revealed it as an Arabic legislation. And if you should follow their inclinations after what has come to you of knowledge, you would not have against Allah any ally or any protector.
সুরা: রাদ
সুরা:১৩
৩৬-৩৭.নং আয়াত:-
[ مِنَ الۡاَحۡزَابِ مَنۡ یُّنۡکِرُ بَعۡضَہٗ ؕ
আর কোন কোন দল ওর কতক অংশকে অস্বীকার করে।
But among the [opposing] factions are those who deny part of it.]
৩৬-৩৭ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
এখানে মু’মিনদের একটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে যে, তারা কুরআনের সত্যতার দলীল-প্রমাণ দেখে অধিক আনন্দিত হয়। তারা কুরআন সুন্দরভাবে পাঠ করে। আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
( اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰھُمُ الْکِتٰبَ یَتْلُوْنَھ۫ حَقَّ تِلَاوَتِھ۪ﺚ اُولٰ۬ئِکَ یُؤْمِنُوْنَ بِھ۪ﺚ وَمَنْ یَّکْفُرْ بِھ۪ فَاُولٰ۬ئِکَ ھُمُ الْخٰسِرُوْنَ )
“আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি তা যারা সত্যভাবে বুঝবার মত পাঠ করে তারাই এর প্রতি ঈমান আনে আর যে এটা অবিশ্বাস করবে আসলে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” (সূরা বাক্বারা ২:১২১)
আর কতক মানুষ বা দল রয়েছে তারা এই কুরআনের কিয়দাংশ অস্বীকার করে। তারা হল ইয়াহূদী, খ্রিস্টান। তাদের এ অস্বীকার পোষণ করায় কিছুই যায় আসে না। আপনি বলুন: আমি একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করার জন্যই আদিষ্ট হয়েছি এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করার জন্য। তাই আমি কেবল আল্লাহ তা‘আলারই ইবাদত করব, অন্য কারো নয়।
আর পূর্ববর্তী সকল নবী-রাসূলগণকে এ নির্দেশই দেয়া হয়েছিল। তাই আমি ঐ আল্লাহ তা‘আলার দিকেই সকলকে আহ্বান করছি। কারণ তাঁর দিকেই আমাদের সকলকে ফিরে যেতে হবে।
পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিষেধ করলেন, তিনি যেন তার প্রতি স্পষ্ট ও আরবি ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার পর কাফির, মুশরিকদের প্রবৃত্তির অনুসরণ না করেন। আর এই কুরআন আরবি ভাষায় অবতীর্ণ করার কারণ হল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বপ্রথম যাদেরকে ইসলামের দিকে আহ্বান করেন তারা ছিল আরবি ভাষাভাষী। তাই তাদের বুঝার সুবিধার্থে আরবি ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। আর এটাই হল মানুষের একমাত্র জীবন-বিধান। সুতরাং তুমি যদি কুরআনের বিধানকে উপেক্ষা করে তাদের বিধান মত চল তাহলে তোমাকে আল্লাহ তা‘আলার শাস্তি থেকে রক্ষা করার কেউ থাকবে না। এখানে মূলত ঐ লোকদেরকে বুঝানো হয়েছে যারা সঠিক জিনিস জানার পর তা ছেড়ে দিয়ে গোমরাহীর পথ অবলম্বন করে।
অনেককেই লক্ষ্য করা যায়, তারা পার্থিব স্বার্থ ছুটে যাওয়ার ভয়ে বা কিছু হাসিল করার জন্য সঠিক কথা বলা ও আমল করা থেকে বিরত থাকে। এরূপ কখনো উচিত নয়, এরূপ করলে আখিরাতে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কুরআন মানুষের জীবন-বিধান হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে।
২. সত্য জানার পর তা থেকে বিরত থাকা যাবে না।
৩. ভাল আমল না থাকলে আল্লাহ তা‘আলার শাস্তি থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৩৬-৩৭ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তাআ’লা স্বীয় নবীকে (সঃ) বলছেনঃ এর পূর্বে যাদেরকে (আসমানী) কিতাব দেয়া হয়েছিল এবং তারা ওর উপর আমলকারী, তারা তোমার উপর কুরআন কারীম অবতীর্ণ হওয়ায় খুশী হচ্ছে। কেননা, স্বয়ং তাদের কিতাবে এর সুসংবাদ ও সত্যতা বিদ্যমান রয়েছে। যেমন আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ “যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা ওটাকে যথাযোগ্য পাঠ করে, তারা এই শেষ কিতাবের (কুরআনের) উপরও ঈমান আনয়ন করে।” (২: ১২১) অন্য আয়াতে রয়েছেঃ “তোমরা ঈমান আন আর নাই আন, পূর্ববর্তী কিতাবধারীরা তো এর সত্য অনুসারী হয়েছে। কেননা, তাদের কিতাবগুলিতে রাসূলুল্লাহর (সঃ) রিসালাতের খবর রয়েছে। আর তারা ঐ ওয়াদাকে পূর্ণ হতে দেখে সন্তুষ্ট চিত্তে এটাকে মেনে নিয়েছে। আল্লাহ তাআ’লার প্রতিশ্রুতি যে ভুল হবে এর থেকে তিনি পবিত্র এবং এর থেকেও তিনি পবিত্র যে, তার ফরমান সঠিকরূপে প্রমাণিত হবে না ।
সুতরাং তারা খুশী মনে আল্লাহর সামনে সিজদায় পতিত হয়। হাঁ, তবে ঐ দলগুলির মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা এই কুরআনের কতকগুলি কথাকে স্বীকার করে না। মোট কথা, আহলে কিতাবের মধ্যে কতকগুলি লোক মুসলমান এবং কতকগুলি মুসলমান নয়।
অতএব, হে নবী (সঃ)! তুমি জনগণের সামনে ঘোষণা করে দাওঃ আমাকে শুধু এক আল্লাহর উপাসনা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং আমাকে এই আদেশও করা হয়েছে যে, আমি যেন তাঁর সাথে অন্য কাউকেও শরীক না করি এবং একমাত্র তাঁরই একত্ববাদ প্রকাশ করি। এই নির্দেশই আমার পূর্ববতী সমস্ত নবী ও রাসূলকে দেয়া হয়েছিল। আমি ঐ পথের দিকেই, ঐ আল্লাহরই ইবাদতের দিকে সকলকে আহবান করছি এবং আমার প্রত্যাবর্তন তাঁর কাছেই।
আল্লাহ পাক বলেনঃ হে নবী (সঃ)! যেমন আমি তোমার পূর্বে নবী রাসূল পাঠিয়েছিলাম এবং তাদের উপর আমার কিতাবসমূহ অবতীর্ণ করেছিলাম, অনুরূপভাবে এই কুরআন, যা সুরক্ষিত ও মজবুত, তোমার ও তোমার কওমের মাতৃভাষা আরবীতে তোমার উপর অবতীর্ণ করেছি। এটাও তোমার প্রতি একটা বিশেষ অনুগ্রহ যে, এই প্রকাশ্য, বিশ্লেষিত এবং সুরক্ষিত কিতাবসহ তোমাকে আমি প্রেরণ করেছি। এর সামনে থেকে বা পিছন থেকে কোন বাতিল এসে এর সাথে মিলিত হতে পারে না এটা বিজ্ঞানময় ও প্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ “হে নবী (সঃ)! তোমার কাছে আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান ও আসমানী ওয়াহী এসে গেছে। সুতরাং এখনও যদি তুমি এই কাফিরদের প্রবৃত্তির অনুসরণ কর তবে জেনে রেখোঁরেখো যে, তোমাকে আল্লাহর আযাব থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। এবং তোমার সাহায্যের জন্যে কেউই এগিয়ে আসবে না। নবীর (সঃ) সুন্নাত এবং তাঁর পন্থা সম্পর্কে জ্ঞান লাভের পরেও যে সব আলেম পথভ্রষ্টদের পন্থা অবলম্বন করে তাদেরকে এই আয়াত দ্বারা ভীষণ ভাবে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
এ সময় বিরোধীদের পক্ষ থেকে যে একটি বিশেষ কথা বলা হচ্ছিল এটি তার জবাব। তারা বলতো, এ ব্যক্তি নিজের দাবী অনুযায়ী যদি সত্যিসত্যিই সেই একই শিক্ষা নিয়ে এসে থাকেন যা ইতিপূর্বেকার সকল নবী এনেছিলেন, তাহলে আগের নবীদের অনুসারী ইহুদী ও খৃস্টানরা অগ্রবর্তী হয়ে এঁকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে না কেন? এর জবাবে বলা হচ্ছে, তাদের মধ্য থেকে কেউ এতে খুশী এবং কেউ অখুশী, কিন্তু হে নবী! কেউ খুশী হোক বা অখুশী, তুমি পরিষ্কার বলে দাও, আমাকে তো আল্লাহর পক্ষ থেকে এ শিক্ষা দান করা হয়েছে এবং আমি সর্বাবস্থায় এর অনুসারী থাকবো।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] এর অর্থ মুসলমান; যারা কুরআনের আদেশ মোতাবেক আমল করে।
[২] অর্থাৎ কুরআনের সত্যতার দলীল-প্রমাণ দেখে অধিক আনন্দিত হয়।
[৩] এ থেকে ইয়াহুদী, খ্রিষ্টান, কাফের ও মুশরিকদেরকে বুঝানো হয়েছে। কতিপয় উলামার নিকট কিতাবের অর্থ তাওরাত ও ইঞ্জীল। তাদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে তারা আনন্দিত হয়। অস্বীকারকারী সেই ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানরা, যারা ইসলাম গ্রহণ করেনি।
# [১] অর্থাৎ, যেমন তোমার পূর্ববর্তী রসূলদের প্রতি স্থানীয় ভাষায় গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছিলাম, তেমনই তোমার উপর কুরআন আরবী ভাষায় অবতীর্ণ করলাম। কেননা তোমার প্রথম সম্বোধিত লোকেরা আরব, যারা কেবল আরবী ভাষাই জানে। যদি এই কুরআন অন্য কোন ভাষায় অবতীর্ণ করা হত, তাহলে তারা বুঝতে সক্ষম হতো না, ফলে হিদায়াত গ্রহণ করার ব্যাপারে তাদের জন্য ওজর রয়ে যেত। সুতরাং আমি আরবী ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ করে তাদের এই ওজর খন্ডন করে দিলাম।
[২] এর অর্থ সেই জ্ঞান যা অহীর মাধ্যমে নবী (সাঃ)-কে প্রদান করা হয়েছে, যাতে ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের আকীদা-বিশ্বাসের বাস্তব রূপও তাঁর কাছে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
[৩] এ থেকে ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের কতিপয় খেয়াল-খুশী ও আকাঙ্ক্ষাকে বুঝানো হয়েছে, যার সম্বন্ধে তারা চেয়েছিল যে, শেষ নবী যেন তা পূরণ করেন, যেমন; বাইতুল মাকদিসকে সর্বদা কিবলা করে রাখা এবং তাদের আকীদা-বিশ্বাসের বিরোধিতা না করা প্রভৃতি।
[৪] এটা বাস্তবে উম্মতের উলামাদের জন্য সতর্কবাণী যে, তারা যেন পার্থিব ক্ষণস্থায়ী সুখ-স্বার্থ লাভের জন্য কুরআন ও হাদীসের মোকাবিলায় লোকেদের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষার অনুসরণ না করে। যদি তারা এমনটি করে, তাহলে তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না।
তাফসীরে আবুবকর জাকারিয়া বলেছেন:-
# [১] আল্লাহ্ তা’আলা এখানে জানাচ্ছেন যে, যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে, তারা যা নাযিল হয়েছে তা দেখে খুশী হয়। এখানে ‘যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে’ বলে কি বোঝানো হয়েছে সে ব্যাপারে দু’টি মত রয়েছে। এক. কিতাবধারী বলে আহলে কিতাব তথা ইয়াহূদী ও নাসারাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদের উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। তখন অর্থ হবে, কিতাবীদের মধ্যে যারা কিতাবের বিধানকে আঁকড়ে আছে, তার উপর প্রতিষ্ঠিত, তারা আপনার কাছে যা নাযিল হয়েছে অর্থাৎ কুরআন সেটা দেখলে খুশী হয়। কারণ, তাদের কিতাবে এ রাসূলের সত্যতা ও সুসংবাদ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সন্নিবেশিত আছে। [ইবন কাসীর] যেমন, আব্দুল্লাহ ইবন সালাম, সালমান প্রমুখ। [কুরতুবী] দুই. কাতাদা বলেন, এখানে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথী তথা সাহাবীদের কথা বলা হয়েছে। তারা কুরআনের আলো নাযিল হতে দেখলেই খুশী হত। [তাবারী; কুরতুবী]
[২] দলগুলো বলে এখানে কাদের উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে কয়েকটি মত রয়েছে, এক. তারা মক্কার মুশরিক কুরাইশরা এবং ইয়াহূদী ও নাসারাদের মধ্যে যারা ঈমান আনেনি তারা। [কুরতুবী] দুই. অথবা এখানে শুধু ইয়াহূদী ও নাসারাদেরকেই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। [ইবন কাসীর] তিন. অথবা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে যারা জোট বেঁধেছিল তারা সবাই এখানে উদ্দেশ্য। [কুরতুবী]
# [১] অর্থাৎ যেভাবে আপনার পূর্বে আমরা অনেক নবী-রাসূল পাঠিয়েছি এবং আপনার পূর্বে যখনই প্রয়োজন মনে করেছি তখনই কিতাব পাঠিয়েছি সেভাবে আমরা আপনাকে রাসূল হিসেবে পাঠিয়েছি এবং আমরা আপনাকে কুরআন নামক গ্রন্থখানি দিয়েছি, তাকে আরবী ভাষায় নাযিল করেছি। [ইবন কাসীর; মুয়াসসার]
এ কিতাব আপনার উপর নাযিল করে আমি আপনাকে সম্মানিত করেছি এবং অন্যদের উপর আপনার শ্ৰেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছি। কারণ, এ কুরআনের বৈশিষ্ট্য অন্যগুলোর চেয়ে আলাদা। এটি এমন যে, “বাতিল এতে অনুপ্রবেশ করতে পারে না-সামনে থেকেও না, পিছন থেকেও না। এটা প্রজ্ঞাময়, স্বপ্রশংসিতের কাছ থেকে নাযিলকৃত।” [সূরা ফুসসিলাতঃ ৪২] [ইবন কাসীর]
অথবা আয়াতের অর্থ যেভাবে প্রত্যেক নবী ও রাসূলকে তাদের নিজস্ব ভাষায় কিতাব দিয়েছি তেমনি আপনাকে আরবী ভাষায় এ কুরআন প্রদান করলাম। [কুরতুবী]
[২] অর্থাৎ আল্লাহ্র শাস্তি ও পাকড়াও এর বিপরীতে আপনার কোন সাহায্যকারী থাকবে না। [মুয়াসসার]
[৩] তাদের খেয়ালখুশীর কোন শেষ নেই। তবে বিশেষ করে আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করা। [কুরতুবী] রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবশ্যই কারও খেয়াল-খুশী ও কোন মনগড়া মতের অনুসারী হতে পারেন না। এখানে রাসূলের উম্মতদেরকে সাবধান করা হচ্ছে। বিশেষ করে এ উম্মতের আলেম সম্প্রদায়কেই এখানে বেশী উদ্দেশ্য করা হয়েছে। তারা যেন আল্লাহ্র নির্দেশ, কুরআন ও সুন্নাহ বোঝার পর অন্য কোন কারণে সেটা বাস্তবায়ন করতে পিছপা না হয়। অন্য কোন মত ও পথের অনুসারী না হয়। অন্যথা তাদের পরিণাম হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের কোন সাহায্যকারী, উদ্ধারকারী ও অভিভাবক থাকবে না। [দেখুন, ইবন কাসীর]
English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Ar-Ra’d
Sura: 13
Verses :- 36-37
مِنَ الۡاَحۡزَابِ مَنۡ یُّنۡکِرُ بَعۡضَہٗ ؕ
But among the [opposing] factions are those who deny part of it.
The Truthful Ones from among the People of the Scriptures rejoice at what Allah has revealed to Muhammad
Allah said,
وَالَّذِينَ اتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ
Those to whom We have given the Book,
and they adhere by it,
يَفْرَحُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ
rejoice at what has been revealed unto you,
i.e. the Qur’an, because they have evidence in their Books affirming the truth of the Qur’an and conveying the good news of its imminent revelation, just as Allah said in another Ayah,
الَّذِينَ اتَيْنَـهُمُ الْكِتَـبَ يَتْلُونَهُ حَقَّ تِلَوَتِهِ
Those to whom We gave the Book recite it as it should be recited. (2:121)
Allah said,
قُلْ امِنُواْ بِهِ أَوْ لَا تُوْمِنُواْ إِنَّ الَّذِينَ أُوتُواْ الْعِلْمَ مِن قَبْلِهِ إِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ يَخِرُّونَ لِلَذْقَانِ سُجَّدًا
وَيَقُولُونَ سُبْحَانَ رَبِّنَا إِن كَانَ وَعْدُ رَبِّنَا لَمَفْعُولاً
Say:”Believe in it or do not believe (in it). Verily, those who were given knowledge before it, when it is recited to them, fall down on their chins (faces) in humble prostration.”
And they say:”Glory be to our Lord! Truly, the promise of our Lord must be fulfilled.” (17:107-108)
meaning, Allah’s promise to us in our Books to send Muhammad is true. It is certain and will surely come to pass and be fulfilled, so all praise to our Lord, how truthful is His promise, all the thanks are due to Him,
وَيَخِرُّونَ لِلٌّذْقَانِ يَبْكُونَ وَيَزِيدُهُمْ خُشُوعًا
And they fall down on their faces weeping and it increases their humility. (17:109)
Allah said next,
وَمِنَ الَاحْزَابِ مَن يُنكِرُ بَعْضَهُ
but there are among the Ahzab (Confederates) those who reject a part thereof.
meaning, `There are those among the sects who disbelieve in some of what was revealed to you (O Muhammad).’
Mujahid said that,
وَمِنَ الَاحْزَابِ
(but there are among the Ahzab (Confederates),
refers to Jews and Christians,
مَن يُنكِرُ بَعْضَهُ
(those who reject a part thereof),
meaning, `They reject a part of the truth that came down to you – O Muhammad.’
Similar was reported from Qatadah and Abdur-Rahman bin Zayd bin Aslam.
Allah said in similar Ayat,
وَإِنَّ مِنْ أَهْلِ الْكِتَـبِ لَمَن يُوْمِنُ بِاللَّهِ
And there are, certainly, among the People of the Scripture, those who believe in Allah. (3:199)
Allah said next,
قُلْ إِنَّمَا أُمِرْتُ أَنْ أَعْبُدَ اللّهَ وَلا أُشْرِكَ بِهِ
Say:”I am commanded only to worship Allah and not to join partners with Him…”
meaning, `I (Muhammad) was sent with the religion of worshipping Allah alone without partners, just as the Messengers before me,
إِلَيْهِ أَدْعُو
To Him (alone) I call,
I call the people to His path,
وَإِلَيْهِ مَأبِ
and to Him is my return.
final destination and destiny.’
Allah said.
وَكَذَلِكَ أَنزَلْنَاهُ حُكْمًا عَرَبِيًّا
And thus have We sent it (the Qur’an) down to be a judgement of authority in Arabic.
Allah says, `Just as We sent Messengers before you and revealed to them Divine Books from heaven, We sent down to you the Qur’an, a judgement of authority in Arabic, as an honor for you, and We preferred you among all people with this clear, plain and unequivocal Book that,
لااَّ يَأْتِيهِ الْبَـطِلُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَلَا مِنْ خَلْفِهِ تَنزِيلٌ مِّنْ حَكِيمٍ حَمِيدٍ
Falsehood cannot come to it from before it or behind it:(it is) sent down by the All-Wise, Worthy of all praise.’ (41:42)
Allah’s statement,
وَلَيِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءهُم
Were you to follow their (vain) desires,
means, their opinions,
بَعْدَ مَا جَاءكَ مِنَ الْعِلْمِ
after the knowledge which has come to you,
from Allah, all praise to Him,
مَا لَكَ مِنَ اللّهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا وَاقٍ
then you will not have any Wali (protector) or defender against Allah.
This part of the Ayah warns people of knowledge against following the paths of misguidance after they had gained knowledge in (and abided by) the Prophetic Sunnah and the path of Muhammad, may Allah’s best peace and blessings be on him.