(Book# 758) Sura:- Ibrahim Sura: 14 Verses :- 6-8 [ لَيِن شَكَرْتُمْ لَازِيدَنَّكُمْ If you give thanks, I will give you more;] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 758)
Sura:- Ibrahim
Sura: 14
Verses :- 6-8
[ لَيِن شَكَرْتُمْ لَازِيدَنَّكُمْ

If you give thanks, I will give you more;]
www.motaher21.net
وَ اِذۡ قَالَ مُوۡسٰی لِقَوۡمِہِ اذۡکُرُوۡا نِعۡمَۃَ اللّٰہِ عَلَیۡکُمۡ اِذۡ اَنۡجٰکُمۡ مِّنۡ اٰلِ فِرۡعَوۡنَ یَسُوۡمُوۡنَکُمۡ سُوۡٓءَ الۡعَذَابِ وَ یُذَبِّحُوۡنَ اَبۡنَآءَکُمۡ وَ یَسۡتَحۡیُوۡنَ نِسَآءَکُمۡ ؕ وَ فِیۡ ذٰلِکُمۡ بَلَآءٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ عَظِیۡمٌ ٪﴿۶﴾
And [recall, O Children of Israel], when Moses said to His people, “Remember the favor of Allah upon you when He saved you from the people of Pharaoh, who were afflicting you with the worst torment and were slaughtering your [newborn] sons and keeping your females alive. And in that was a great trial from your Lord.
وَ اِذۡ تَاَذَّنَ رَبُّکُمۡ لَئِنۡ شَکَرۡتُمۡ لَاَزِیۡدَنَّکُمۡ وَ لَئِنۡ کَفَرۡتُمۡ اِنَّ عَذَابِیۡ لَشَدِیۡدٌ ﴿۷﴾
And [remember] when your Lord proclaimed, ‘If you are grateful, I will surely increase you [in favor]; but if you deny, indeed, My punishment is severe.’ ”
وَ قَالَ مُوۡسٰۤی اِنۡ تَکۡفُرُوۡۤا اَنۡتُمۡ وَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ جَمِیۡعًا ۙ فَاِنَّ اللّٰہَ لَغَنِیٌّ حَمِیۡدٌ ﴿۸﴾
And Moses said, “If you should disbelieve, you and whoever is on the earth entirely – indeed, Allah is Free of need and Praiseworthy.”

সুরা: ইব্রাহিম
সুরা:১৪
৬-৮ নং আয়াত:-
[ لَيِن شَكَرْتُمْ لَازِيدَنَّكُمْ
তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই অধিক দান করব,
If you give thanks, I will give you more;]

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Ibrahim
Sura: 14
Verses :- 6-8
لَيِن شَكَرْتُمْ لَازِيدَنَّكُمْ

If you give thanks, I will give you more;
Allah states:

وَإِذْ قَالَ مُوسَى لِقَوْمِهِ اذْكُرُواْ نِعْمَةَ اللّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ أَنجَاكُم مِّنْ الِ فِرْعَوْنَ يَسُومُونَكُمْ سُوءَ الْعَذَابِ وَيُذَبِّحُونَ أَبْنَاءكُمْ وَيَسْتَحْيُونَ نِسَاءكُمْ

And (remember) when Musa said to his people:”Call to mind Allah’s favor to you, when He delivered you from Fir`awn’s people who were afflicting you with horrible torment, and were slaughtering your sons and letting your women live;

Allah states that Musa reminded his people about Allah’s annals and days and of Allah’s favors and bounties that He bestowed on them, when He saved them from Fir`awn and his people and the torment and disgrace they used to exert on them.

They used to slaughter whomever they could find among their sons and let their females live. Allah delivered them from all this torment, and this is a great bounty, indeed.

This is why Allah described this affliction,

وَفِي ذَلِكُم بَلء مِّن رَّبِّكُمْ عَظِيمٌ

and in it was a tremendous trial from your Lord.

`for He granted you (O Children of Israel) a great favor for which you are unable to perfectly thank Him.’

Some scholars said that this part of the Ayah means,

`what Fir`awn used to do to you was a tremendous
بَلء
(trial).’

Both meanings might be considered here and Allah knows best.

Allah said in another Ayah,

وَبَلَوْنَـهُمْ بِالْحَسَنَـتِ وَالسَّيِّيَاتِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ

And We tried them with good and evil in order that they might turn (to Allah). (7:168)

Allah’s statement next
وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ

And (remember) when your Lord proclaimed,

means, proclaimed and made known His promise to you.

It is possible that this Ayah means, your Lord has vowed and sworn by His might, grace and exaltness.

Allah said in a similar Ayah,

وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكَ لَيَبْعَثَنَّ عَلَيْهِمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَـمَةِ

And (remember) when your Lord declared that He would certainly keep on sending against them (i.e. the Jews), till the Day of Resurrection. (7:167)

Allah said,

لَيِن شَكَرْتُمْ لَازِيدَنَّكُمْ

If you give thanks, I will give you more;

meaning, `if you appreciate My favor on you, I will give you more of it,

وَلَيِن كَفَرْتُمْ

but if you are thankless,

if you are not thankful for My favors, covering and denying, then,

إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ

verily, My punishment is indeed severe,

by depriving you of the favor and punishing you for being unappreciative of it.’

A Hadith states that,

إِنَّ الْعَبْدَ لَيُحْرَمُ الرِّزْقَ بِالذَّنْبِ يُصِيبُه

A servant might be deprived of a provision (that was written for him) because of a sin that he commits.

Allah said,

وَقَالَ مُوسَى إِن تَكْفُرُواْ أَنتُمْ وَمَن فِي الَارْضِ جَمِيعًا فَإِنَّ اللّهَ لَغَنِيٌّ حَمِيدٌ
And Musa said:”If you disbelieve, you and all on earth together, then verily, Allah is Rich (free of all needs), Worthy of all praise.”

Allah does not need the gratitude of His servants, and He is worthy of all praise even if the disbelievers disbelieve in Him,

إِن تَكْفُرُواْ فَإِنَّ اللَّهَ غَنِىٌّ عَنكُمْ

If you disbelieve, then verily, Allah is not in need of you. (39:7)

and,

فَكَفَرُواْ وَتَوَلَّواْ وَّاسْتَغْنَى اللَّهُ وَاللَّهُ غَنِىٌّ حَمِيدٌ

So they disbelieved and turned away. But Allah was not in need (of them). And Allah is Rich (free of all needs), Worthy of all praise. (64:6)

In his Sahih, Muslim recorded that Abu Dharr said that the Messenger of Allah said that his Lord the Exalted and Most Honored said,

يَا عِبَادِي

لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَاخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَتْقَى قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مِنْكُمْ مَا زَادَ ذَلِكَ فِي مُلْكِي شَيْيًا

يَا عِبَادِي

لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَاخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَفْجَرِ قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مِنْكُمْ مَا نَقَصَ ذَلِكَ فِي مُلْكِي شَيْيًا

يَا عِبَادِي

لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَاخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ قَامُوا فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ فَسَأَلُونِي فَأَعْطَيْتُ كُلَّ إِنْسَانٍ مَسْأَلَتَهُ مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِنْ مُلْكِي شَيْيًا إِلاَّ كَمَا يَنْقُصُ المِخْيَطُ إِذَا أُدْخِلَ الْبَحْر

O My servants!

If the first and the last among you, mankind and Jinns among you, had the heart of the most pious and righteous man among you, that will not increase my kingdom in the least.

O My servants!

If the first and the last among you, mankind and the Jinns among you, had the heart of the most wicked man among you, that will not decrease My kingdom in the least.

O My servants!

If the first and the last among you, the mankind and Jinns among you, stood in one flat area and each asked me (what they wish), and I gave each one of them what they asked, that will not decrease My kingdom except by that which the needle carries (of water) when inserted in the ocean.”

Verily, all praise and glory are due to Allah, the Rich (free of need), the Worthy of all praise.

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِي

(Book# 758)
সুরা: ইব্রাহিম
সুরা:১৪
৬-৮ নং আয়াত:-
[ لَيِن شَكَرْتُمْ لَازِيدَنَّكُمْ
তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই অধিক দান করব,
If you give thanks, I will give you more;]
www.motaher21.net
وَ اِذۡ قَالَ مُوۡسٰی لِقَوۡمِہِ اذۡکُرُوۡا نِعۡمَۃَ اللّٰہِ عَلَیۡکُمۡ اِذۡ اَنۡجٰکُمۡ مِّنۡ اٰلِ فِرۡعَوۡنَ یَسُوۡمُوۡنَکُمۡ سُوۡٓءَ الۡعَذَابِ وَ یُذَبِّحُوۡنَ اَبۡنَآءَکُمۡ وَ یَسۡتَحۡیُوۡنَ نِسَآءَکُمۡ ؕ وَ فِیۡ ذٰلِکُمۡ بَلَآءٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ عَظِیۡمٌ ٪﴿۶﴾
যখন মূসা তার সম্প্রদায়কে বলেছিল, ‘তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহকে স্মরণ কর; যখন তিনি তোমাদেরকে রক্ষা করেছিলেন ফিরআউনীয় সম্প্রদায়ের কবল হতে, যারা তোমাদেরকে নিকৃষ্ট শাস্তি দিত, তোমাদের পুত্রদেরকে যবেহ করত এবং তোমাদের নারীদেরকে জীবিত রাখত। আর এতে ছিল তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে এক মহাপরীক্ষা।

And [recall, O Children of Israel], when Moses said to His people, “Remember the favor of Allah upon you when He saved you from the people of Pharaoh, who were afflicting you with the worst torment and were slaughtering your [newborn] sons and keeping your females alive. And in that was a great trial from your Lord.
وَ اِذۡ تَاَذَّنَ رَبُّکُمۡ لَئِنۡ شَکَرۡتُمۡ لَاَزِیۡدَنَّکُمۡ وَ لَئِنۡ کَفَرۡتُمۡ اِنَّ عَذَابِیۡ لَشَدِیۡدٌ ﴿۷﴾
যখন তোমাদের প্রতিপালক ঘোষণা করেছিলেন, তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই অধিক দান করব, আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’
And [remember] when your Lord proclaimed, ‘If you are grateful, I will surely increase you [in favor]; but if you deny, indeed, My punishment is severe.’ ”
وَ قَالَ مُوۡسٰۤی اِنۡ تَکۡفُرُوۡۤا اَنۡتُمۡ وَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ جَمِیۡعًا ۙ فَاِنَّ اللّٰہَ لَغَنِیٌّ حَمِیۡدٌ ﴿۸﴾
মূসা বলেছিল, ‘তোমরা এবং পৃথিবীর সকলেই যদি অকৃতজ্ঞ হও; তবুও নিঃসন্দেহে আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং সর্বপ্রশংসিত।’
And Moses said, “If you should disbelieve, you and whoever is on the earth entirely – indeed, Allah is Free of need and Praiseworthy.”

সুরা: ইব্রাহিম
সুরা:১৪
৬-৮ নং আয়াত:-
[ لَيِن شَكَرْتُمْ لَازِيدَنَّكُمْ
তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই অধিক দান করব,
If you give thanks, I will give you more;]

৬-৮ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে‌ ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
(وَإِذْ قَالَ مُوْسٰي…)

পূর্বের আয়াতে মূসা (عليه السلام) ও বানী ইসরাঈলদেরকে প্রদত্ত নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার পর অত্র আয়াতে কয়েকটি নেয়ামতের বিবরণ দেয়া হচ্ছে। তা হল ফির‘আউন ও তার ক্ষমতাসীন দল বানী ইসরাঈলদেরকে নিকৃষ্টতম শাস্তি দিত, দাস বানিয়ে রাখত, ছেলেদেরকে জবাই করে ফেলত আর মেয়েদেরকে জীবিত রাখত। আল্লাহ তা‘আলা তাদের হাত থেকে বানী ইসরাঈলদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। এটা আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে একদিক থেকে যেমন পরীক্ষা ছিল তেমনি অনুগ্রহও ছিল। এ সম্পর্কে সূরা বাক্বারার ৪৯ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।

(وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ…)- تَأَذَّنَ

অর্থ ঘোষণা দেয়া, জানিয়ে দেয়া। অর্থাৎ আল্লাহ জানিয়ে দিলেন যদি তোমরা আমার নেয়ামত পেয়ে শুকরিয়া আদায় কর তাহলে আমার নেয়ামত ও কৃতজ্ঞাতর পুরস্কার আরো বাড়িয়ে দেব। আর যদি কুফরী কর তথা নেয়ামত অস্বীকার কর, দাবী কর এটা আমার যোগ্যতায় পেয়েছি, আমার বাপ-দাদাদের থেকে পেয়েছি, আল্লাহর নেয়ামত বলতে কিছু নেই, আমার প্রচেষ্টা বা বাপ-দাদা না থাকলে এসব হতো না তাহলে জেনে রেখ, আল্লাহর শাস্তি বড় কঠিন। তাই মানুষের উচিত নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা ও ভাল-মন্দ সর্বাবস্থায় الحمد لله (আল হামদুলিল্লাহ) পাঠ করা এবং অকৃতজ্ঞ হওয়া থেকে বিরত থাকা। উল্লেখ্য যে, অধিকাংশ নারীরাই তাদের স্বামীর অকৃতজ্ঞ।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিরাজের রাতে অধিকাংশ নারীদেরকে জাহান্নামে দেখতে পান। কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন: তারা স্বামীর অকৃতজ্ঞ, সারা বছর তাদের সাথে ভাল আচরণ করেও কোন দিন সামান্য কিছুর অভাব হলেই বলে, আমি তোমার কাছে কোন দিন সুখ পায়নি। (সহীহ বুখারী হা: ২৯, মুসলিম হা: ৯০৭)

তাই মূসা (عليه السلام) তাঁর জাতিকে সম্বোধন করে বলেন: শুধু তোমরা নও, সারা পৃথিবীর মানুষ যদি আল্লাহ তা‘আলার সাথে কুফরী করে, আল্লাহ তা‘আলাকে অস্বীকার করে, আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামতকে অস্বীকার করে তাহলেও আল্লাহ তা‘আলার কিছু আসে যায় না। তিনি পৃথিবীবাসী থেকে অমুখাপেক্ষী, কেননা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি বিশ্বাস করা, তাঁর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার অর্থ হল নিজের উপকার করা, নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া। পক্ষান্তরে আল্লাহ তা‘আলার সাথে কুফরী করা হল নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারা।

হাদীসে কুদসীতে এসেছে: আল্লাহ তা‘আলা বলেন, হে আমার বান্দারা! তোমাদের পূর্বের ও পরের মানব ও দানব সকলেই যদি আমার বান্দাদের মধ্যে সর্বাধিক তাকওয়াবান একজন ব্যক্তির হৃদয়ের মত হয়ে যায়, তাহলে আমার রাজত্বের সামান্য বাড়বে না। হে আমার বান্দারা! তোমাদের পূর্বের ও পরের মানব ও দানব সকলেই যদি আমার বান্দাদের মধ্যে সর্বাধিক পাপীষ্ট একজন ব্যক্তির হৃদয়ের মত হয়ে যায় তাহলে আমার রাজত্বের সামান্য কমবে না। তোমাদের পূর্বের ও পরের মানব ও দানব সকলেই যদি এক জায়গায় একত্রিত হয়ে আমার কাছে চায় আর আমি তাদের সকল চাহিদা পূরণ করি, তাহলেও আমার রাজত্বের সামান্য কমবে না, তবে সমুদ্রে সুঁই ডুবিয়ে তা তুললে যতটুকু পানি সমুদ্র থেকে কমে ততটুকু কমবে। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৭৭)

সুতরাং সারা বিশ্বের মানুষ মিলেও যদি আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর দেয়া বিধানের প্রতি কুফরী করে তাতে আল্লাহ তা‘আলার কিছুই যায় আসে না। আল্লাহ তা‘আলা এগুলো থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। তাই অকৃতজ্ঞ হওয়া থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলে নেয়ামত বৃদ্ধি করে দেয়া হয় আর কুফরী করলে তার জন্য শাস্তির অধিকারী হতে হয় এবং নেয়ামতও কমে যায়।
২. মানুষের ঈমান আনা ও কুফরী করাতে আল্লাহ তা‘আলার কোন লাভ বা ক্ষতি নেই।
৩. আল্লাহ তা‘আলা যাবতীয় জিনিস থেকে অভাব মুক্ত।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৬-৮ নং আয়াতের তাফসীর

আল্লাহ তাআলা হযরত মূসা (আঃ) সম্পর্কে খবর দিচ্ছেন যে, আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে হযরত মূসা (আঃ) স্বীয় কওমকে আল্লাহ তাআলার নিয়ামতসমূহ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যেমন ফিরআউনী সম্প্রদায়ের কবল হতে তাদেরকে রক্ষা করা, যারা তাদেরকে শক্তিহীন করে তাদের উপর বিভিন্ন প্রকারের উৎপীড়ন চালাতো, এমনকি তাদের সমস্ত পুত্র সন্তানদেরক হত্যা করতো এবং কন্যা সন্তানদেরকে জীবিত ছাড়তো। হযরত মূসা (আঃ) তাই স্বীয় কওমকে বলছেনঃ এটা তোমাদের উপর আল্লাহর তাআলার এত বড় নিয়ামত যে, এর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা তোমাদের ক্ষমতার বাইরে। এই বাক্যটির ভাবার্থ এরূপও হতে পারেঃ ফিরাআউনীদের কষ্ট প্রদান প্রকৃতপক্ষে তোমাদের উপর একটা মহাপরীক্ষা ছিল। আবার সম্ভাবনা এও রয়েছে যে, অর্থ দুটোই হবে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী। যেমন আল্লাহ তাআলার বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “আমি তাদেরকে ভাল ও মন্দ দ্বারা পরীক্ষা করেছি, যাতে তারা ফিরে আসে।” (৭:১৬৮)

মহান আল্লাহর উক্তিঃ (আরবি) “যখন তোমাদের প্রতিপালক। তোমাদেরকে অবহিত করলেন। আবার এরূপ অর্থও হতে পারেঃ ‘যখন তোমাদের প্রতিপালক তার মর্যাদা, শ্রেষ্ঠত্ব ও বিরাটত্বে কসম খেলেন। যেমন অন্য জায়গায় তিনি বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎঃ “যখন তোমার প্রতিপালক শপথ করে বললেন যে, অবশ্যই তিনি তাদের উপর কিয়ামত পর্যন্ত পাঠাতে থাকবেন।” (৭:১৬৭)

সুতরাং আল্লাহ তাআলার অলংঘনীয় ওয়াদা এবং তাঁর ঘোষণাও বটে যে, তিনি কৃতজ্ঞ বান্দাদের নিয়ামত আরো বাড়িয়ে দিবেন এবং অকৃতজ্ঞ ও নিয়ামত অস্বীকারকারী ও গোপনকারীদের নিয়ামত সমূহ ছিনিয়ে নিবেন, আর তাদেরকে কঠিন শাস্তি প্রদান করবেন। হাদীসে এসেছেঃ “বান্দা পাপের কারণে আল্লাহর রুজী থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে।” বর্ণিত আছে যে, একজন ভিক্ষুক রাসূলুল্লাহর (সঃ) পার্শ্ব দিয়ে গমন করে। তিনি তাকে একটি খেজুর দেন। সে তাতে রাগান্বিত হয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে। অতঃপর অন্য একজন ভিক্ষুক তাঁর পার্শ্ব দিয়ে গেলে তিনি তাকেও একটি খেজুর দেন। সে খুশী হয়ে তা গ্রহণ করে এবং বলেঃ “এটা হচ্ছে আল্লাহর রাসূলের (সঃ) দানা” এরপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে চল্লিশ দিরহাম প্রদানের হুকুম দেন।

অন্য একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) দাসীকে বলেনঃ “লোকটিকে উম্মে সালমার (রাঃ) নিকট নিয়ে যাও এবং তার কাছে যে। চল্লিশটি দিরহাম রয়েছে তা নিয়ে একে দিয়ে দাও।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ) স্বীয় মুসনাদে হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন)

হযরত মূসা (আঃ) বানী ইসরাঈলকে বলেনঃ “তোমরা ভূ-পৃষ্ঠের সমস্ত লোকও যদি আল্লাহ তাআলার অকৃতজ্ঞ বান্দা হয়ে যাও তবে তাঁর কি ক্ষতি হবে? তিনি তো তাঁর বান্দাদের হতে এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ হতে সম্পূর্ণরূপে বেপরোয়া। তিনি তাদের মোটেই মুখাপেক্ষী নন। একমাত্র তিনিই প্রশংসার যোগ্য। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “তোমরা যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে (জেনে রেখো যে, আল্লাহ। তোমাদের হতে বেপরোয়া।” (৩৯:৭) অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “তারা অকৃতজ্ঞ হলো এবং মুখ ফিরিয়ে নিলো, আর আল্লাহ তাদের থেকে বেপরোয়া হয়ে গেলেন, আল্লাহ হলেন অভাবমুক্ত, প্রশংসাৰ্য।” (৬৪:৬)

হযরত আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) আল্লাহ। তাআলার উক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেছেঃ “হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের প্রথম এবং শেষ মানব ও দানব সবাই মিলিতভাবে পরহেযগারহয়ে যায় তবুও আমার রাজ্যের একটুও বৃদ্ধি পাবে না। পক্ষান্তরে হে আমার বান্দারা! তোমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মানব এবং দানব সবাই যদি পাপিষ্ঠ হয়ে যায় তবুও এই কারণে আমার রাজ্য অনুপরিমাণ ও হ্রাস পাবে না। হে আমার বান্দাগণ! তোমাদের প্রথম এবং শেষ মানব ও দানব সবাই যদি একত্রিত ভাবে একটা ময়দানে দাঁড়িয়ে যায়, অতঃপর আমার কাছে চাইতে থাকে, আর আমি প্রত্যেকের চাহিদা পূর্ণ করে দিই তবুও আমার ভাণ্ডার হতে এই পরিমাণ কমবে যে পরিমাণ পানি সমুদ্র হতে কমে যায় যখন তাতে সুঁই ডুবিয়ে উঠিয়ে নেয়া হয়। (এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ) স্বীয় সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন) সুতরাং আল্লাহ তাআলা পবিত্র অভাব মুক্ত এবং প্রশংসাৰ্হ।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# যদি আমার নিয়ামতসমূহের অধিকার ও মর্যাদা চিহ্নিত করে সেগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবহার করো, আমার বিধানের মোকাবিলায় অহংকারে মত্ত হতে ও বিদ্রোহ করতে উদ্বুদ্ধ না হও এবং আমার অনুগ্রহের অবদান স্বীকার করে নিয়ে আমার বিধানের অনুগত থাকো।

# এ বিষয়বস্তু সম্বলিত ভাষণ বাইবেলের “দ্বিতীয় বিবরণ” পুস্তকে বিস্তারিতভাবে উদ্ধৃত হয়েছে। এ ভাষণে হযরত মূসা (আ) তাঁর ইন্তিকালের কয়েকদিন আগে বনী ইসলরাঈলকে তাদের ইতিহাসের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তারপর মহান আল্লাহ‌ তাঁর মাধ্যমে বনী ইসরাঈলের নিকট তাওরাতের যেসব বিধান পাঠিয়েছিলেন তিনি সেগুলোরও পুনরাবৃত্তি করেছেন। এরপর একটি সুদীর্ঘ ভাষণ দিয়েছেন। এ ভাষণে তিনি বলেছেন, যদি তারা তাদের রবের হুকুম মেনে চলে তাহলে তাদেরকে কিভাবে পুরস্কৃত করা হবে আর যদি নাফরমানির পথ অবলম্বন করে তাহলে কেমন কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। এ ভাষণটি দ্বিতীয় বিবরণের ৪, ৬, ১০, ১১ ও ২৮ থেকে ৩০ অধ্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে। এর কোন কোন স্থান অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী ও শিক্ষণীয়। উদাহরণস্বরূপ এর কিছু অংশ এখানে উদ্ধৃত করছি। এ থেকে সমগ্র ভাষণটির ব্যাপারে একটা ধারণা করা যাবে।

“হে ইসরায়েল শুন; আমাদের সদাপ্রভু একই সদাপ্রভু ; আর তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত শক্তি দিয়া আপন সদাপ্রভুকে প্রেম করিবে। আর এই যে সকল কথা আমি অদ্য তোমাকে আজ্ঞা করি, তাহা তোমার হৃদয়ে থাকুক। আর তোমরা প্রত্যেকে আপন আ‌পন সন্তানগণকে এ সকল যত্নপূর্বক শিক্ষা দিবে এবং গৃহে বসিবার কিংবা পথে চলিবার সময়ে এবং শয়ন কিংবা গাত্রোত্থানকালে ঐ সমস্তের বিষয়ে কথোপকথন করিবে।” (২: ৪-৭)

“এখন হে ঈসরায়েল, তোমার সদাপ্রভু তোমার কাছে কি চাহেন? কেবল এই, যেন তুমি আপন সদাপ্রভুকে ভয় করো, তাঁহার সকল পথে চল ও তাঁহাকে প্রেম কর এবং তোমার সমস্ত হৃদয় ও তোমার সমস্ত প্রাণের সহিত তোমার সদাপ্রভুর সেবা কর, অদ্য আমি তোমার মঙ্গলার্থে সদাপ্রভুর যে যে আজ্ঞা ও বিধি তোমাকে দিতেছি, সেই সকল যেন পালন কর। দেখ স্বর্গ এবং পৃথিবী ও তন্মধ্যস্থ যাবতীয় বস্তু তোমার সদাপ্রভুর।” (১০: ১২-১৪)

“আমি তোমাকে অদ্য যে সকল আজ্ঞা আদেশ করিতেছি, যত্নপূর্বক সেই সকল পালন করিবার জন্য যদি তুমি আপন সদাপ্রভুর রবে মনোযোগ সহকারে কর্ণপাত কর, তবে তোমার সদাপ্রভু পৃথিবীস্থ সমস্ত জাতির উপরে তোমাকে উন্নত করিবেন; আর তোমার সদাপ্রভুর রবে কর্ণপাত করিলে এ সকল আশীর্বাদ তোমার উপর বর্তিবে ও তোমাকে আশ্রয় করিবে। তুমি নগরে আশীর্বাদযুক্ত হইবে ও ক্ষেত্রে আশীর্বাদযুক্ত হইবে। ………… তোমার যে শত্রুগণ তোমার ওপর আক্রমণ চালায় তাহাদিগকে সদাপ্রভু তোমার সম্মুখে আঘাত করাইবেন……. সদাপ্রভু আজ্ঞা করিয়া তোমার গোলাঘর সম্বন্ধে ও তুমি যে কোন কার্যে হস্তক্ষেপ কর তৎসম্বন্ধে আশীর্বাদকে তোমার সহচর করিবেন;…….. সদাপ্রভু আপন দিব্যানুসারে তোমাকে আপন পবিত্র প্রজা বলিয়া স্থাপন করিবেন; কেবল তোমার সদাপ্রভুর আজ্ঞা পালন ও তাহার পথে গমন করিতে হইবে। আর পৃথিবীর সমস্ত জাতি দেখিতে পাইবে যে, তোমার উপরে সদা প্রভুর নাম কীর্তিত হইয়াছে এবং তাহারা তোমা হইতে ভীত হইবে। ……… এবং তুমি অনেক জাতিকে ঋণ দিবে, কিন্তু আপনি ঋণ লইবে না। আর সদাপ্রভু তোমাকে মস্তক স্বরূপ করিবেন, পুচ্ছ স্বরূপ করিবেন না; তুমি অবনত না হইয়া কেবল উন্নত হইবে।”(২৮: ১-১৩)

“কিন্তু যদি তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কর্ণপাত না কর, আমি অদ্য তোমাকে যে সকল আজ্ঞা ও বিধি আদেশ করিতেছি, যত্নপূর্বক সেই সকল পালন না কর, তবে এ সমস্ত অভিশাপ তোমার প্রতি বর্তিবে ও তোমাকে আশ্রয় করিবে। তুমি নগরে শাপগ্রস্ত হইবে ও ক্ষেত্রে শাপগ্রস্ত হইবে। …………. যে কোন কার্যে তুমি হস্তক্ষেপ কর, সেই কার্যে সদাপ্রভু তোমার উপর অভিশাপ, উদ্বেগ ও ভর্ৎসনা প্রেরণ করিবেন। ……… তুমি যে দেশ অধিকার করিতে যাইতেছ, সেই দেশ হইতে যাবৎ উচ্ছিন্ন না হও, তাবৎ সদাপ্রভু তোমাকে মহামারীর আশ্রয় করিবেন। ………… তোমার মস্তকের উপরিস্থিত আকাশ পিত্তল ও নিম্নস্থিত ভূমি লৌহস্বরূপ হইবে। …………সদাপ্রভু তোমার শত্রুদের সম্মুখে তোমাকে পরাজিত করাইবেন; তুমি একপথ দিয়া তাহাদের বিরুদ্ধে যাইবে, কিন্তু সাত পথ দিয়া তাহাদের সম্মুখে হইতে পলায়ন করিবে। ……… তোমার সাথে কন্যার বিবাহ হইবে, কিন্তু অন্য পুরুষ তাহার সহিত সঙ্গম করিবে। তুমি গৃহ নির্মাণ করিবে, কিন্তু তাহাতে বাস করিতে পারিবে না। দ্রাক্ষাক্ষেত্র প্রস্তুত করিবে, কিন্তু তাহার ফল ভোগ করিবে না। তোমার গরু তোমার সম্মুখে জবাই হইবে, …….সদাপ্রভু তোমার বিরুদ্ধে যে শত্রুগণকে তুমি পাঠাইবেন, ক্ষুধায়, তৃষ্ণায়, উলংগতায় ও সকল বিষয়ের অভাব ভোগ করিতে করিতে তাহাদের দাসত্ব করিবে; এবং যে পর্যন্ত তিনি তোমার বিনাশ না করেন, সে পর্যন্ত শত্রুরা তোমার গ্রীবাতে লৌহের জোয়াল দিয়া রাখিবে। …………আর সদাপ্রভু তোমাকে পৃথীবীর এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্যন্ত সমগ্র জাতির মধ্যে ছিন্ন ভিন্ন করিবেন।”(২৮: ১৫-১৬)

# এখানে হযরত মূসা (আ) ও তাঁর জাতির ইতিহাসের প্রতি এ সংক্ষিপ্ত ইঙ্গিত করার একটি বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। তা হচ্ছে, মক্কাবাসীদেরকে একথা জানানো যে, আল্লাহ‌ যখন কোন জাতির প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং এর জবাবে সংশ্লিষ্ট জাতি বিশ্বাসাঘাতকতা ও বিদ্রোহ করে তখন এ ধরনের জাতির এমন মারাত্মক ও ভয়াবহ পরিণামের সম্মুখীন হতে হয় যার সম্মুখীন আজ তোমাদের চোখের সামনে বনী ইসলাঈলরা হচ্ছে। কাজেই তোমরাও কি আল্লাহর নিয়ামত ও তাঁর অনুগ্রহের জবাবে যে অকৃতজ্ঞ মনোভাব প্রদর্শন করে নিজেদের এ একই পরিণাম দেখতে চাও?

এ প্রসঙ্গে একথাও মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহ‌ তাঁর যে নিয়ামতের কদর করার জন্য এখানে কুরাইশদের কাছে দাবী জানাচ্ছেন তা বিশেষভাবে তাঁর এ নিয়ামতটি যে, তিনি মুহাম্মাদ ﷺ কে তাদের মধ্যে পয়দা করেছেন এবং তাঁর মাধ্যমেই তাদের কাছে এমন মহিমান্বিত শিক্ষা পাঠিয়েছেন যে সম্পর্কে নবী (সা.) বারবার কুরাইশদেরকে বলতেন-

كَلِمَةٍ وَاحِدَةٍ تعطو نيها تَمْلِكُونَ بِهَا الْعَرَبُ تَدِينُ لَكمْ الْعَجَمُ-

“আমার একটি মাত্র কথা মেনে নাও। আরব ও আজম সব তোমাদের করতলগত হয়ে যাবে।”

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
#অর্থাৎ, যেরূপ এটা আল্লাহর এক বিরাট পরীক্ষা ছিল, অনুরূপ এ থেকে মুক্তিলাভ আল্লাহর বিরাট অনুগ্রহ ছিল। এ জন্যই কোন কোন অনুবাদক بَلَاءٌ এর অনুবাদ ‘পরীক্ষা’ এবং কেউ কেউ এর অনুবাদ ‘অনুগ্রহ’ করেছেন।

# [১] تَأذَّنَ এর অর্থ أعْلَمَكُمْ بِوَعْدِهِ لَكُمْ তিনি তোমাদেরকে তাঁর প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন। আর এও হতে পারে যে, এটা শপথের অর্থে, অর্থাৎ যখন তোমাদের প্রতিপালক স্বীয় গৌারব-মর্যাদার শপথ করে বলেছিলেন। (ইবনে কাসীর)

[২] অর্থাৎ, নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা করলে তোমাদেরকে অধিক পুরস্কারে পুরস্কৃত করব।

[৩] এর অর্থ এই যে, নিয়ামতের অকৃতজ্ঞতা আল্লাহ অত্যন্ত অপছন্দ করেন। যার জন্য তিনি কঠিন শাস্তির ধমক দিয়েছেন। এই জন্য নবী (সাঃ)ও বলেছেন যে, অধিকাংশ মহিলারা স্বামীর অকৃতজ্ঞ হওয়ার কারণে জাহান্নামে যাবে। (মুসলিম, আল-ঈদাইন)

# এই যে মানুষ আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে তাতে তারই লাভ রয়েছে, আর অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে তাতে আল্লাহর কি ক্ষতি? তিনি তো অমুখাপেক্ষী। সারা বিশ্ব অকৃতজ্ঞ হয়ে গেলে তাঁর কি আসে যায়? যেমন হাদীসে কুদসীতে এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন, “হে আমার বান্দারা! তোমাদের পূর্বের ও পরের মানব ও দানব সকলেই যদি আমার বান্দাদের মধ্যে সর্বাধিক তাকওয়ার অধিকারী একজন ব্যক্তির হৃদয়ের মত হয়ে যায়, তাহলে আমার সাম্রাজ্যের একটুও শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে না। হে আমার বান্দারা! তোমাদের পূর্বের ও পরের মানব ও দানব সকলেই যদি আমার বান্দাদের মধ্যে সর্বাধিক বড় পাপী একজন ব্যক্তির হৃদয়ের মত হয়ে যায়, তাহলে আমার সাম্রাজ্যের কিছুই কম হবে না। হে আমার বান্দারা! তোমাদের পূর্বের ও পরের মানব ও দানব যদি একটি জায়গাতে সমবেত হয় এবং প্রত্যেকেই আমার নিকট প্রার্থনা করে, আর আমি প্রত্যেকের চাহিদা পূরণ করি, তাহলে আমার সাম্রাজ্যের ততটুকু পরিমাণ কম হবে, যতটুকু সমুদ্রে সুচ ডুবিয়ে তা তুলে নিলে তা থেকে কমে যায়। (মুসলিম, কিতাবুল বির্র) সুতরাং তিনি পূত-পবিত্র, মহিমান্বিত, অভাবমুক্ত ও সর্বপ্রশংসনীয়।

 

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Ibrahim
Sura: 14
Verses :- 6-8
لَيِن شَكَرْتُمْ لَازِيدَنَّكُمْ

If you give thanks, I will give you more;
Allah states:

وَإِذْ قَالَ مُوسَى لِقَوْمِهِ اذْكُرُواْ نِعْمَةَ اللّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ أَنجَاكُم مِّنْ الِ فِرْعَوْنَ يَسُومُونَكُمْ سُوءَ الْعَذَابِ وَيُذَبِّحُونَ أَبْنَاءكُمْ وَيَسْتَحْيُونَ نِسَاءكُمْ

And (remember) when Musa said to his people:”Call to mind Allah’s favor to you, when He delivered you from Fir`awn’s people who were afflicting you with horrible torment, and were slaughtering your sons and letting your women live;

Allah states that Musa reminded his people about Allah’s annals and days and of Allah’s favors and bounties that He bestowed on them, when He saved them from Fir`awn and his people and the torment and disgrace they used to exert on them.

They used to slaughter whomever they could find among their sons and let their females live. Allah delivered them from all this torment, and this is a great bounty, indeed.

This is why Allah described this affliction,

وَفِي ذَلِكُم بَلء مِّن رَّبِّكُمْ عَظِيمٌ

and in it was a tremendous trial from your Lord.

`for He granted you (O Children of Israel) a great favor for which you are unable to perfectly thank Him.’

Some scholars said that this part of the Ayah means,

`what Fir`awn used to do to you was a tremendous
بَلء
(trial).’

Both meanings might be considered here and Allah knows best.

Allah said in another Ayah,

وَبَلَوْنَـهُمْ بِالْحَسَنَـتِ وَالسَّيِّيَاتِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ

And We tried them with good and evil in order that they might turn (to Allah). (7:168)

Allah’s statement next
وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ

And (remember) when your Lord proclaimed,

means, proclaimed and made known His promise to you.

It is possible that this Ayah means, your Lord has vowed and sworn by His might, grace and exaltness.

Allah said in a similar Ayah,

وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكَ لَيَبْعَثَنَّ عَلَيْهِمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَـمَةِ

And (remember) when your Lord declared that He would certainly keep on sending against them (i.e. the Jews), till the Day of Resurrection. (7:167)

Allah said,

لَيِن شَكَرْتُمْ لَازِيدَنَّكُمْ

If you give thanks, I will give you more;

meaning, `if you appreciate My favor on you, I will give you more of it,

وَلَيِن كَفَرْتُمْ

but if you are thankless,

if you are not thankful for My favors, covering and denying, then,

إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ

verily, My punishment is indeed severe,

by depriving you of the favor and punishing you for being unappreciative of it.’

A Hadith states that,

إِنَّ الْعَبْدَ لَيُحْرَمُ الرِّزْقَ بِالذَّنْبِ يُصِيبُه

A servant might be deprived of a provision (that was written for him) because of a sin that he commits.

Allah said,

وَقَالَ مُوسَى إِن تَكْفُرُواْ أَنتُمْ وَمَن فِي الَارْضِ جَمِيعًا فَإِنَّ اللّهَ لَغَنِيٌّ حَمِيدٌ
And Musa said:”If you disbelieve, you and all on earth together, then verily, Allah is Rich (free of all needs), Worthy of all praise.”

Allah does not need the gratitude of His servants, and He is worthy of all praise even if the disbelievers disbelieve in Him,

إِن تَكْفُرُواْ فَإِنَّ اللَّهَ غَنِىٌّ عَنكُمْ

If you disbelieve, then verily, Allah is not in need of you. (39:7)

and,

فَكَفَرُواْ وَتَوَلَّواْ وَّاسْتَغْنَى اللَّهُ وَاللَّهُ غَنِىٌّ حَمِيدٌ

So they disbelieved and turned away. But Allah was not in need (of them). And Allah is Rich (free of all needs), Worthy of all praise. (64:6)

In his Sahih, Muslim recorded that Abu Dharr said that the Messenger of Allah said that his Lord the Exalted and Most Honored said,

يَا عِبَادِي

لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَاخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَتْقَى قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مِنْكُمْ مَا زَادَ ذَلِكَ فِي مُلْكِي شَيْيًا

يَا عِبَادِي

لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَاخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَفْجَرِ قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مِنْكُمْ مَا نَقَصَ ذَلِكَ فِي مُلْكِي شَيْيًا

يَا عِبَادِي

لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَاخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ قَامُوا فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ فَسَأَلُونِي فَأَعْطَيْتُ كُلَّ إِنْسَانٍ مَسْأَلَتَهُ مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِنْ مُلْكِي شَيْيًا إِلاَّ كَمَا يَنْقُصُ المِخْيَطُ إِذَا أُدْخِلَ الْبَحْر

O My servants!

If the first and the last among you, mankind and Jinns among you, had the heart of the most pious and righteous man among you, that will not increase my kingdom in the least.

O My servants!

If the first and the last among you, mankind and the Jinns among you, had the heart of the most wicked man among you, that will not decrease My kingdom in the least.

O My servants!

If the first and the last among you, the mankind and Jinns among you, stood in one flat area and each asked me (what they wish), and I gave each one of them what they asked, that will not decrease My kingdom except by that which the needle carries (of water) when inserted in the ocean.”

Verily, all praise and glory are due to Allah, the Rich (free of need), the Worthy of all praise.

Leave a Reply