(Book# 778) সুরা: হিজর সুরা:১৫ ২১-২৫.নং আয়াত:- [ وَإِن مِّن شَيْءٍ إِلاَّ عِندَنَا خَزَايِنُهُ আমারই কাছে আছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার। And there is not a thing, but the supplies for it are with Us,] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 778)
সুরা: হিজর
সুরা:১৫
২১-২৫.নং আয়াত:-
[ وَإِن مِّن شَيْءٍ إِلاَّ عِندَنَا خَزَايِنُهُ
আমারই কাছে আছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার।
And there is not a thing, but the supplies for it are with Us,]
www.motaher21.net
وَ اِنۡ مِّنۡ شَیۡءٍ اِلَّا عِنۡدَنَا خَزَآئِنُہٗ ۫ وَ مَا نُنَزِّلُہٗۤ اِلَّا بِقَدَرٍ مَّعۡلُوۡمٍ ﴿۲۱﴾
আমারই কাছে আছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার এবং আমি তা প্রয়োজনীয় পরিমাণেই সরবরাহ করে থাকি।
And there is not a thing but that with Us are its depositories, and We do not send it down except according to a known measure.
وَ اَرۡسَلۡنَا الرِّیٰحَ لَوَاقِحَ فَاَنۡزَلۡنَا مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَسۡقَیۡنٰکُمُوۡہُ ۚ وَ مَاۤ اَنۡتُمۡ لَہٗ بِخٰزِنِیۡنَ ﴿۲۲﴾
আমি বৃষ্টিগর্ভ বায়ু প্রেরণ করি অতঃপর আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তা তোমাদেরকে পান করাই এবং ওর ভান্ডার তোমাদের কাছে নেই।
And We have sent the fertilizing winds and sent down water from the sky and given you drink from it. And you are not its retainers.
وَ اِنَّا لَنَحۡنُ نُحۡیٖ وَ نُمِیۡتُ وَ نَحۡنُ الۡوٰرِثُوۡنَ ﴿۲۳﴾
নিশ্চয় আমিই জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই এবং আমিই চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী।
And indeed, it is We who give life and cause death, and We are the Inheritor.
وَ لَقَدۡ عَلِمۡنَا الۡمُسۡتَقۡدِمِیۡنَ مِنۡکُمۡ وَ لَقَدۡ عَلِمۡنَا الۡمُسۡتَاۡخِرِیۡنَ ﴿۲۴﴾
অবশ্যই আমি তোমাদের অগ্রগামীদেরকে জানি এবং অবশ্যই জানি তোমাদের পশ্চাতগামীদেরকেও।
And We have already known the preceding [generations] among you, and We have already known the later [ones to come].
وَ اِنَّ رَبَّکَ ہُوَ یَحۡشُرُہُمۡ ؕ اِنَّہٗ حَکِیۡمٌ عَلِیۡمٌ ﴿٪۲۵﴾
নিশ্চয় তোমার প্রতিপালকই তাদেরকে সমবেত করবেন; নিশ্চয় তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।
And indeed, your Lord will gather them; indeed, He is Wise and Knowing.

সুরা: হিজর
সুরা:১৫
২১-২৫.নং আয়াত:-
[ وَإِن مِّن شَيْءٍ إِلاَّ عِندَنَا خَزَايِنُهُ
আমারই কাছে আছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার।
And there is not a thing, but the supplies for it are with Us,]
www.motaher21.net
২১-২৫ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ তা‘আলা সংবাদ দিচ্ছেন, সব কিছুর মালিক একমাত্র তিনি। প্রত্যেক বস্তুর ভাণ্ডার তাঁর হাতে। সেখান থেকে যখন যতটা ইচ্ছা তিনি অবতীর্ণ করেন। তাঁর হিকমত ও নিপুণতা তিনিই জানেন। বান্দার কল্যাণ সম্পর্কে তিনিই সম্যক অবগত। কেউ خزائن দ্বারা বৃষ্টি অর্থ নিয়েছেন। কারণ বৃষ্টিই শস্য উৎপাদনের মূল উপাদান। কিন্তু এখানে সঠিক অর্থে পৃথিবীর সকল ভাণ্ডারকে বুঝানো হয়েছে। সে সকল আল্লাহ তা‘আলা নিজ ইচ্ছায় দিয়ে থাকেন। আল্লাহ তা‘আলার এ ভাণ্ডার থেকে তিনি নির্ধারিত পরিমাণ মানুষকে দিয়ে থাকেন। এর অন্যতম একটি হিকমত হল

(وَلَوْ بَسَطَ اللّٰهُ الرِّزْقَ لِعِبَادِه۪ لَبَغَوْا فِي الْأَرْضِ وَلٰكِنْ يُّنَزِّلُ بِقَدَرٍ مَّا يَشَا۬ءُ ط إِنَّه۫ بِعِبَادِه۪ خَبِيْرٌۭ بَصِيْرٌ)‏

“আল্লাহ তাঁর (সকল) বান্দাদের রুযী বাড়িয়ে দিলে তারা পৃথিবীতে অবশ্যই সীমালঙ্ঘন করত; কিন্তু তিনি তাঁর ইচ্ছামত পরিমাণেই দিয়ে থাকেন। তিনি তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক জানেন ও দেখেন।” (সূরা শুরা ৪২:২৭)

لَوَاقِحَ বৃষ্টিসঞ্চারি বায়ু বা ভাপরী বায়ু, যেহেতু বায়ু বৃষ্টিভর্তি মেঘমালাকে বহন করে তাই তাকে لَوَاقِحَ বলা হয়। যেমন لقحة এমন উটনীকে বলা হয় যে পেটে বাচ্চা বহন করে নিয়ে চলে। এ বৃষ্টি যা আল্লাহ তা‘আলা বর্ষণ করেন তা তিনি নিজের কাছে জমা করে রাখতে সক্ষম, তাঁর দয়া যে তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করে বিভিন্ন ঝর্ণা, কূপ ও নদী-নালার মাধ্যমে সংরক্ষণ করে রাখেন। তিনি ইচ্ছা করলে পানি ভূগর্ভে নিয়ে যেতে পারতেন ফলে মানুষ নিচ থেকেও পানি সংগ্রহ করতে পারত না। তিনি ইচ্ছা করলে পানি লবণাক্ত করে দিতে পারতেন কিন্তু এসব তাঁর দয়া।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(اَفَرَءَیْتُمُ الْمَا۬ئَ الَّذِیْ تَشْرَبُوْنَﮓﺚ ءَاَنْتُمْ اَنْزَلْتُمُوْھُ مِنَ الْمُزْنِ اَمْ نَحْنُ الْمُنْزِلُوْنَﮔ لَوْ نَشَا۬ئُ جَعَلْنٰھُ اُجَاجًا فَلَوْلَا تَشْکُرُوْنَﮕ )‏

“তোমরা যে পানি পান কর সে বিষয়ে তোমরা চিন্তা করছ কি? তোমরাই কি তা মেঘ হতে বর্ষণ কর, না আমি বর্ষণ করি। আমি ইচ্ছা করলে তাকে লবণাক্ত বানাতে পারি। তবুও তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে না কেন?” (সূরা ওয়াকিয়াহ ৫৬:৬৮-৭০)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:

(هُوَ الَّذِيْٓ أَنْزَلَ مِنَ السَّمَا۬ءِ مَا۬ءً لَّكُمْ مِّنْهُ شَرَابٌ وَّمِنْهُ شَجَرٌ فِيْهِ تُسِيْمُوْنَ)‏

“তিনিই আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন। তাতে তোমাদের জন্য রয়েছে পানীয় এবং তা হতে জন্মায় উদ্ভিদ যাতে তোমরা পশু চারণ করে থাকো।” (সূরা নাহল ১৬:১০)

(وَمَآ اَنْتُمْ لَھ۫ بِخٰزِنِیْنَ)
-এ সমস্ত ভাণ্ডার মানুষের কাছে নেই, তা কেবলমাত্র আল্লাহ তা‘আলার নিকট। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَلِلّٰهِ خَزَآئِنُ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْض)

“আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর ধন-ভাণ্ডার তো আল্লাহরই।” (সূরা মুনাফিকূন ৬৩:৭)

(وَاِنَّا لَنَحْنُ نُحْی۪ وَنُمِیْتُ)

এখানে আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করেছেন যে, তিনিই মানুষকে জীবন দান করেন এবং তিনিই মানুষকে মৃত্যু দান করেন। তিনি ছাড়া কেউ জীবন-মৃত্যুর মালিক নয়।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(إِنَّا نَحْنُ نُحْيِيْ وَنُمِيْتُ وَإِلَيْنَا الْمَصِيْرُ)‏

“আমিই জীবিত করি, আর মৃত্যুও ঘটাই এবং সকলেই ফিরে আসবে আমারই দিকে।” (সূরা ক্বাফ ৫০:৪৩)

জীবন ও মৃত্যুর মালিক কেবল আল্লাহ, অন্য কেউ নয়। আর তিনিই চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী।

আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:

(إِنَّا نَحْنُ نَرِثُ الْأَرْضَ وَمَنْ عَلَيْهَا وَإِلَيْنَا يُرْجَعُوْنَ)‏

“নিশ্চয়ই পৃথিবীর ও তার ওপরে যারা আছে তাদের চূড়ান্ত‎ মালিকানা আমারই রইবে এবং তারা আমারই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে” (সূরা মারইয়াম ১৯:৪০)

এখানে উত্তরাধিকারী কথার অর্থ হচ্ছে যখন সমস্ত মাখলুক শেষ হয়ে যাবে তখন একমাত্র তিনিই এই আকাশে ও জমিনে অবশিষ্ট থাকবেন এবং তিনিই সকলকে তাদের মৃত্যুর পর একত্রিত করবেন।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. পৃথিবীতে যত কিছু অবতীর্ণ করা হয় সব কিছুর ধনভাণ্ডার আল্লাহ তা‘আলার নিকট। মানুষ কোন কিছুরই প্রকৃত মালিক নয়।
২. আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করা মানুষের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার একটি অনুগ্রহ।
৩. জীবন ও মরণ একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার হাতে।
৪. মৃত্যুর পর সকল মানুষকে বিচারের জন্য একত্রিত করা হবে।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
#এখানে এ সত্যটি সম্পর্কে সজাগ করে দেয়া হয়েছে যে, সীমিত ও পরিকল্পিত প্রবৃদ্ধির এই নিয়ম কেবল উদ্ভিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয় বরং যাবতীয় সৃষ্টির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বায়ূ, পানি, আলো, শীত, গ্রীষ্ম, জীব, জড়, উদ্ভিদ তথা প্রত্যেকটি জিনিস, প্রত্যেকটি প্রজাতি, প্রত্যেকটি শ্রেণী ও প্রত্যেকটি শক্তির জন্য একটি সীমা নির্ধারিত রয়েছে। তার মধ্যে তারা অবস্থান করছে। তাদের জন্য একটি পরিমাণও নির্ধারিত রয়েছে, তার চাইতে তারা কখনো বাড়েও না আবার কমেও না। এই নির্ধারিত অবস্থা এবং পরিপূর্ণ প্রজ্ঞামূলক নির্ধারিত অবস্থার বদৌলতেই পৃথিবী থেকে আকাশ পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বব্যবস্থায় এই ভারসাম্য, সমন্বয় ও পারিপাট্য দেখা যাচ্ছে। এই বিশ্বজাহানটি যদি একটি আকস্মিক ঘটনার ফসল হতো অথবা বহু খোদার কর্মকুশলতা ও কর্মতৎপরতার ফল হতো, তাহলে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের অসংখ্য বস্তু ও শক্তির মধ্যে এই পর্যায়ের পূর্ণ ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হওয়া ও অব্যাহতভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকা কেমন করে সম্ভব হতো?

# তোমাদের ধ্বংসের পরে একমাত্র আমিই টিকে থাকবো। তোমরা যা কিছু্‌ পেয়েছো, ওগুলো নিছক সাময়িকভাবে ব্যবহার করার জন্য পেয়েছো। শেষ পর্যন্ত আমার দেয়া সব জিনিস ত্যাগ করে তোমরা এখান থেকে বিদায় নেবে একেবারে খালি হাতে এবং এসব জিনিস যেমনটি ছিল ঠিক তেমনটি আমার ভাণ্ডারে থেকে যাবে।
# তার অপার কর্মকুশলতা ও প্রজ্ঞার বলেই তিনি সবাইকে একত্র করবেন। আবার তাঁর জ্ঞানের পরিধি এত ব্যাপক ও বিস্তৃত যে তার নাগালের বাইরে কেউ নেই। বরং পূর্ববর্তী ও পরবর্তী কোন মানুষের মাটি হয়ে যাওয়া দেহের একটি কণাও তাঁর কাছ থেকে হারিয়ে যেতে পারে না। তাই যে ব্যক্তি পরকালীন জীবনকে দূরবর্তী বা অবাস্তব মনে করে সে মূলত আল্লাহর প্রজ্ঞা ও কুশলতা সম্পর্কেই বেখবর। আর যে ব্যক্তি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে “মরার পরে যখন আমাদের মৃত্তিকার বিভিন্ন অণু-কণিকা বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে তখন আমাদের কিভাবে পুনর্বার জীবিত করা হবে,” সে আসলে আল্লাহর জ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞ।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
২১-২৫ নং আয়াতের তাফসীর

আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন যে, সমস্ত জিনিসের তিনি একাই মালিক। প্রত্যেক কাজই তাঁর কাছে সহজ। সমস্ত কিছুর ভাণ্ডার তাঁর কাছে বিদ্যমান রয়েছে। যেখানে যখন যতটা ইচ্ছা তিনি অবতীর্ণ করে থাকেন। তাঁর হিকমত ও নিপুণতা তিনিই জানেন। বান্দার কল্যাণ সম্পর্কে তিনিই সম্যক অবগত। এটা একমাত্র তাঁর মেহেরবানী, নচেৎ এমন কে আছে যে তাকে বাধ্য করতে বা তার উপর জোর খাটাতে পারে? হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, প্রতি বছর বৃষ্টি বরাবর বর্ষিত হতেই আছে। হাঁ, তবে বন্টন আল্লাহ তাআলার হাতে রয়েছে। অতঃপর তিনি এই আয়াতটিই পাঠ করেন। হাকীম ইবনু উয়াইনা (রঃ) হতেও এই উক্তিই বর্ণিত আছে। তিনি বলেনঃ “বৃষ্টির সাথে এতো ফেরেস্তা অবতীর্ণ হন যাদের সংখ্যা সমস্ত মানবও দানব অপেক্ষা বেশী। তাঁরা বৃষ্টির এক একটি ফোঁটার খেয়াল রাখেন যে, ওটা কোথায় বর্ষিত হচ্ছে এবং তা থেকে কি উৎপন্ন হচ্ছে।”

হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তাআলার ভাণ্ডার হচ্ছে কালাম বা কথা মাত্র। সুতরাং যখন তিনি কোন কিছুর ইচ্ছা করেন তখন বলেনঃ ‘হও, তখন হয়ে যায়।” (এ হাদীসটি বাযয়ার (রঃ) বর্ণনা করেছেন। এর একজন বর্ণনাকারী হচ্ছেন আগনাব। তিনি খুব বিশ্বাসযোগ্য বর্ণনাকারী নন)

মহান আল্লাহ বলেনঃ “আমি মেঘমালাকে বৃষ্টি দ্বারা ভারী করে দিই। তখন তার থেকে বৃষ্টি বর্ষণ হতে শুরু করে। এই বাতাসই প্রবাহিত হয়ে গাছপালাকে সিক্ত করে দেয়। ফলে ওগুলিতে পাতা ও কুঁড়ি ফুটে ওঠে।” এটাও লক্ষ্যণীয় বিষয় যে, এখানে (আরবি) বলা হয়েছে অর্থাৎ এর বিশেষণকে বহু বচন ব্যবহার করা হয়েছে। আর বৃষ্টি শূন্য বায়ুকে বলা হয়েছে। অর্থাৎ (আরবি) এর বিশেষণকে একবচন রূপে ব্যবহার করা হয়েছে। বৃষ্টি পূর্ণ বায়ুর বিশেষণকে বহু বচনরূপে ব্যবহারের উদ্দেশ্য হচ্ছে বেশী ফলদায়ক হওয়া। বৃষ্টি বহন কম পক্ষে দুটি জিনিস ছাড়া সম্ভব নয়। বাতাস প্রবাহিত হয় এবং তা আকাশ থেকে পানি উঠিয়ে নেয়, আর মেঘমালাকে পরিপূর্ণ করে দেয়। এক বায়ু এমন হয় যা যমীনের উৎপাদন শক্তি সৃষ্টি করে। আর এক বায়ু। মেঘমালাকে এদিকে ওদিকে চালিয়ে নিয়ে যায়। আর এক বায়ু ওগুলিকে একত্রিত করে স্তরে স্তরে সাজিয়ে নেয়। আর এক বায়ু ওগুলিকে পানি দ্বারা ভারী করে দেয়। আর এক বায়ু এমন হয় যে, তা গাছপালা ও বৃক্ষরাজিকে ফলদানকারী হওয়ার যোগ্য করে তোলে।

হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “দক্ষিণা বায়ু জান্নাত হতে প্রবাহিত হয়ে থাকে এবং তাতে জনগণের উপকার লাভ হয়।” (এ হাদীসটি ইমাম বনুজারীর (রঃ) বর্ণনা করেছেন। এর ইসনাদ দুর্বল)

হযরত আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “বাতাস সৃষ্টির সাত বছর পরে আল্লাহ তাআলা জান্নাতে এক বায়ু সৃষ্টি করেছেন যা একটি দরজা দ্বারা বন্ধ করা আছে। ঐ দরজা দ্বারাই তোমাদের কাছে বায়ু পৌছে থাকে। যদি ঐ দরজাটি খুলে দেয়া হয় তবে যমীন ও আসমানের সমস্ত জিনিস ওলট পালট হয়ে যাবে। আল্লাহর কাছে ওর নাম হচ্ছে আযইয়াব। তোমরা ওকে দক্ষিণা বায়ু বলে থাকো।” (এ হাদীসটি ইমাম আবু বকর আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর আল হুমাইদী (রঃ) তাঁর ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)

এরপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “আমি তোমাদেরকে তা পান করতে দিই।’ অর্থাৎ আমি তোমাদের উপর মিষ্টি পানি বর্ষণ করি, যাতে তোমরা তা পান করতে পার এবং অন্য কাজে লাগাতে পার। আমি ইচ্ছা করলে ওকে তিক্ত ও লবণাক্ত করে দিতে পারি। যেমন সূরায়ে ওয়াকিয়ার আয়াতে রয়েছেঃ “তোমরা যে পানি পান কর তা সম্পর্কে কি তোমরা চিন্তা করেছো? তোমরাই কি তা মেঘ হতে নামিয়ে আন, না আমি তা বর্ষণ করি? আমি ইচ্ছা করলে তা লবণাক্ত করে দিতে পারি, তবুও কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না?” আর এক জায়গায় রয়েছেঃ “তিনিই আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন; তাতে তোমাদের জন্যে রয়েছে পানীয় এবং তা হতে জন্মে উদ্ভিদ যাতে তোমরা পশু চারণ করে থাকো ।”

(আরবি) (ওর ভাণ্ডার তোমাদের কাছে নেই)। সুফইয়ান সাওয়ারী (রঃ) এর ভাবার্থ করেছেনঃ “তোমরা ওকে আবদ্ধকারী নও।” আর এর ভাবার্থ এও হতে পারে। “তোমরা ওর রক্ষক নও। বরং আমিই তা বর্ষণ করি ও রক্ষা করে থাকি। আমি ইচ্ছা করলে ওটা যমীনে ঢুকিয়ে দিতে পারি। এটা শুধু মাত্র আমার করুণা যে, আমি ওকে বর্ষণ করি, রক্ষা করি, মিষ্ট করি এবং স্বচ্ছ ও নির্মল করি, যেমন তোমরা নিজেরা পান কর এবং তোমাদের জন্তু গুলিকে পান করাও। আর তা জমিতে সেচন কর, বাগান তৈরী কর এবং অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যবহার কর।”

মহান আল্লাহ বলেনঃ “আমিই জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই এবং আমিই চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী। অর্থাৎ সৃষ্টির সূচনা আমিই করেছি এবং পুনরায় সৃষ্টি করতে আমিই সক্ষম। আমিই সব কিছু অস্তিত্বহীনতা থেকে অস্তিত্বে আনয়ন করেছি। আবার সবকে আমি অস্তিত্বহীন করে দেবো। এরপর কিয়ামতের দিন সবকে উঠাবো। যমীন ও যমীনবাসীদের ওয়ারিস আমিই। সবকে-ই আমার কাছে ফিরে আসতে হবে। আমার জ্ঞানের কোন শেষ নেই। পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সবারই খবর আমি রাখি।

পূর্ববর্তীদের দ্বারা এই যামানার পূর্ববর্তী সকল লোককেই বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ হযরত আদম (আঃ) পর্যন্ত সবাই। আর পরবর্তীদের দ্বারা এই যুগ এবং এই যুগের পরবর্তী সমস্ত যুগের লোককে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ কিয়ামত পর্যন্ত যত লোক আসবে সবাই। ইকরামা (রাঃ) , মুজাহিদ (রঃ), যাহহাক (রঃ), কাতাদা (রঃ) মুহাম্মদ ইবনু কা’ব (রঃ), শাবী (রঃ) প্রভৃতি গুরুজন হতে এইরূপ বর্ণিত আছে। এটাই ইমাম ইবনু জারীরের (রঃ) পছন্দনীয় মত মারওয়ান ইবনুল হাকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, কতকগুলি লোক (নামাযে) স্ত্রী লোকদের কারণে পিছনের কাতারে থাকতো। তখন আল্লাহ তাআ’লা (আরবি) এই আয়াতটি অবতীর্ণ করেন। (এটা ইবনু জারীর (রঃ) স্বীয় তাফসীরের বর্ণনা করেছেন)

এ সম্পর্কে একটি অত্যন্ত গারীব বা দুর্বল হাদীসও বর্ণিত হয়েছে। তা এই যে, হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “একটি অত্যন্ত সুন্দরী মহিলা নবীর (সঃ) পিছনে নামায পড়তে আসতো।” হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহর শপথ! আমি ওর মত (সুন্দরী মহিলা কখনো দেখি নাই। কতকগুলি মুসলমান নামায পড়ার সময় এই উদ্দেশ্যে সামনে বেড়ে যেতেন যে, যেন তাকে (মহিলাটিকে দেখতে না পান। আর কতকগুলি লোক পিছনে সরে আসতো। অতঃপর যখন তারা সিজদা করতো তখন তাদের হাতের নীচে দিয়ে তার দিকে তাকাতো।” ঐ সময় আল্লাহ তাআলা (আরবি) এই আয়াতটি অবতীর্ণ করেন। (এটা ইবনু জারীর (রঃ) স্বীয় তাফসীরে, ইমাম আহমদ (রঃ) তাঁর মুসনাদে, ইবনু আবি হাতিম (রঃ) স্বীয় তাফসীরে, এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) ও ইমাম নাসায়ী (রঃ) তাঁদের সুনান গ্রন্থের কিতাবুত তাফসীরে বর্ণনা করেছেন। তবে এতে কঠিন নাকারাত বা অস্বীকৃতি রয়েছে)

এই আয়াতের ব্যাপারে আবুল জাওযার (রঃ) -এর উক্তি বর্ণিত আছে যে, এরা হচ্ছে ওরাই যারা নামাযের কাতারসমূহে আগে বেড়ে যায় এবং পিছনে সরে আসে। (এটা আবদুর রায্যাক (রঃ) বর্ণনা করেছেন) এটা শুধু মাত্র আবুল জাওযার (রঃ)-এর উক্তি। এতে হযরত ইবনু আব্বাসের (রাঃ) কোন উল্লেখ নেই। ইমাম তিরমিযী (রঃ) বলেন, এটাই বেশী সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী।

মুহাম্মদ ইবনু কা’বের (রঃ) সামনে আউন ইবনু আবদিল্লাহ (রঃ) এই ভাবার্থ বর্ণনা করলে তিনি বলেনঃ “ভাবার্থ এটা নয়। বরং অগ্রবর্তীদের দ্বারা বুঝানো হয়েছে এ লোকদেরকে যারা মৃত্যুবরণ করেছে। আর পরবর্তীদের দ্বারা বুঝানো হয়েছে তাদেরকে যারা এখন সৃষ্ট হয়েছে এবং পরে সৃষ্ট হবে। আর তোমার প্রতিপালকই তাদেরকে সমবেত করবেন; তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।” এ কথা শুনে হযরত আউন (রাঃ) মুহাম্মদ ইবনু কা’বকে (রঃ) লক্ষ্য করে বলেনঃ “আল্লাহ তাআলা আপনাকে তাওফীক ও জাযায়ে খায়ের দান করুন।”

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Al-Hijr
Sura: 15
Verses :- 21-25
[ وَإِن مِّن شَيْءٍ إِلاَّ عِندَنَا خَزَايِنُهُ

And there is not a thing, but the supplies for it are with Us,]
www.motaher21.net
The Supplies for All Things are with Allah

Allah says:

وَإِن مِّن شَيْءٍ إِلاَّ عِندَنَا خَزَايِنُهُ

And there is not a thing, but the supplies for it are with Us,

Allah tells us that He is the Owner of all things, and that everything is easy for Him. He has the supplies for all things with Him.

وَمَا نُنَزِّلُهُ إِلاَّ بِقَدَرٍ مَّعْلُومٍ

and We do not send it down but in a known measure.

meaning, as He wills and as He wants. Doing so out of His great wisdom and mercy towards His servants, in a way that He is under no obligation to do. But He has decreed mercy for Himself.

Yazid bin Abi Ziyad reported from Abu Juhayfah that Abdullah said:

“No year has more rain than another, but Allah divides the rain between them as He wills, it rains here a year and there a year. Then he recited:
وَإِن مِّن شَيْءٍ إِلاَّ عِندَنَا خَزَايِنُهُ
(And there is not a thing, but the supplies for it are with Us…).

Reported by Ibn Jarir.
Benefits of the Winds

Allah says.
وَأَرْسَلْنَا الرِّيَاحَ لَوَاقِحَ

And We send the winds fertilizing.

i.e., fertilizing the clouds so that they give rain, and fertilizing the trees so that they open their leaves and blossoms.

These winds are mentioned here in the plural form because they give results, unlike the barren wind (Ar-Rih Al-‘Aqim, see Adh-Dhariyat 51:41), which is mentioned in the singular and described as barren since it does not produce anything; because results can only be produced when there are two or more things.

Abdullah bin Mas`ud said,

“The wind is sent bearing water from the sky, then it fertilizes the clouds until rain begins to generously fall, just as the milk of the pregnant camel flows generously.”

This was also the opinion of Ibn Abbas, Ibrahim An-Nakha`i and Qatadah.

Ad-Dahhak said:

“Allah sends it to the clouds and it gets fertilized and becomes full of water.”

Ubayd bin Umayr Al-Laythi said:

“Allah sends the wind which stirs up the earth, then Allah sends the wind which raises clouds, then Allah sends the wind which forms clouds, then Allah sends the fertilizing wind which pollinates the trees.”

Then he recited,
وَأَرْسَلْنَا الرِّيَاحَ لَوَاقِحَ
(And We sent the winds fertilizing).
Fresh Water is a Blessing from Allah

Allah says:

فَأَنزَلْنَا مِنَ السَّمَاء مَاء

then We cause the water to descend from the sky,

فَأَسْقَيْنَاكُمُوهُ

and We give it to you to drink,

This means, “and We send it down to you fresh and sweet, so that you can drink it; if We had wished, We could have made it salty (and undrinkable)”, as Allah points out in another Ayah in Surah Al-Waqi`ah, where He says:

أَفَرَءَيْتُمُ الْمَأءَ الَّذِى تَشْرَبُونَ

أَءَنتُمْ أَنزَلْتُمُوهُ مِنَ الْمُزْنِ أَمْ نَحْنُ الْمُنزِلُونَ

لَوْ نَشَأءُ جَعَلْنَـهُ أُجَاجاً فَلَوْلَا تَشْكُرُونَ

Tell Me! The water that you drink, is it you who cause it to come down from the rain clouds, or are We the cause of it coming down! If We willed, We verily could make it salty (and undrinkable), why then do you not give thanks (to Allah)! (56:68-70)

And Allah says:

هُوَ الَّذِى أَنْزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَأءً لَّكُم مَّنْهُ شَرَابٌ وَمِنْهُ شَجَرٌ فِيهِ تُسِيمُونَ

He it is Who sends water down from the sky; from it you drink and from it (grows) the vegetation on which you send your cattle to pasture. (16:10)

وَمَا أَنتُمْ لَهُ بِخَازِنِينَ

and it is not you who are the owners of its supply.

The meaning is, “You are not taking care of it; rather We send it down and take care of it for you, making springs and wells flourish on the earth.”

If Allah so willed, He could make it disappear, but by His mercy He sends it down and makes it fresh and sweet, maintaining the springs, wells, rivers and so on, so that they may drink from it all year long, water their livestock and irrigate their crops.
The Power of Allah to initiate and renew Creation

Allah says.
وَإنَّا لَنَحْنُ نُحْيِي وَنُمِيتُ

And certainly We! We it is Who give life, and cause death,

Here Allah tells us of His power to initiate creation and renew it. He is the One Who brings life to creatures out of nothingness, then He causes them to die, then He will resurrect all of them on the Day when He will gather them together.

وَنَحْنُ الْوَارِثُونَ

and We are the Inheritors.

He also tells us that He will inherit the earth and everyone on it, and then it is to Him that they will return.

Then He tells us about His perfect knowledge of them, the first and the last of them.

He says.
وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنكُمْ

And indeed, We know the first generations of you who had passed away….

Ibn Abbas said,

“The first generations are all those who have passed away since the time of Adam. The present generations and those who will come afterward refer to those who are alive now and who are yet to come, until the Day of Resurrection.”

Something similar was narrated from Ikrimah, Mujahid, Ad-Dahhak, Qatadah, Muhammad bin Ka`b, Ash-Sha`bi and others.

Ibn Jarir reported from Muhammad bin Abi Ma`shar, from his father, that;

he heard Awn bin Abdullah discussing the following Ayah with Muhammad bin Ka`b:

وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنكُمْ وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَأْخِرِينَ

And indeed, We know the first generations of you who had passed away, and indeed, We know the present generations of you (mankind), and also those who will come afterwards,

and it was stated that it refers to the rows for prayer.

Muhammad bin Ka`b said, “This is not the case.
وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنكُمْ
(And indeed, We know the first generations of you who had passed away),

it refers to those who are dead or have been killed,

and;

الْمُسْتَأْخِرِينَ
(and also those who will come afterwards),

meaning those who have yet to be created.

وَإِنَّ رَبَّكَ هُوَ يَحْشُرُهُمْ إِنَّهُ حَكِيمٌ عَلِيمٌ
And verily your Lord will gather them together. Truly, He is Most Wise, (and) Knowing).”

Awn bin Abdullah said,

“May Allah help you and reward you with good..

Leave a Reply