(Book# 786) সুরা: হিজর সুরা:১৫ ৯৪-৯৯ নং আয়াত:- [ فَاصْدَعْ بِمَا تُوْمَرُ অতএব আপনি যে বিষয়ে আদেশপ্রাপ্ত হয়েছেন তা প্রকাশ্যে প্রচার করুন। Therefore openly proclaim what you have been commanded,] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 786)
সুরা: হিজর
সুরা:১৫
৯৪-৯৯ নং আয়াত:-
[ فَاصْدَعْ بِمَا تُوْمَرُ
অতএব আপনি যে বিষয়ে আদেশপ্রাপ্ত হয়েছেন তা প্রকাশ্যে প্রচার করুন।
Therefore openly proclaim what you have been commanded,]
www.motaher21.net
فَاصۡدَعۡ بِمَا تُؤۡمَرُ وَ اَعۡرِضۡ عَنِ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿۹۴﴾
অতএব আপনি যে বিষয়ে আদেশপ্রাপ্ত হয়েছেন তা প্রকাশ্যে প্রচার করুন এবং মুশরিকদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন।
Then declare what you are commanded and turn away from the polytheists.
اِنَّا کَفَیۡنٰکَ الۡمُسۡتَہۡزِءِیۡنَ ﴿ۙ۹۵﴾
বিদ্রূপকারীদের বিরুদ্ধে আমিই তোমার জন্য যথেষ্ট।
Indeed, We are sufficient for you against the mockers
الَّذِیۡنَ یَجۡعَلُوۡنَ مَعَ اللّٰہِ اِلٰہًا اٰخَرَ ۚ فَسَوۡفَ یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۹۶﴾
যারা আল্লাহর সাথে অপর উপাস্য প্রতিষ্ঠা করে। সুতরাং শীঘ্রই তারা জানতে পারবে।
Who make [equal] with Allah another deity. But they are going to know.
وَ لَقَدۡ نَعۡلَمُ اَنَّکَ یَضِیۡقُ صَدۡرُکَ بِمَا یَقُوۡلُوۡنَ ﴿ۙ۹۷﴾
আমি তো অবশ্যই জানি যে, তারা যা বলে তাতে তোমার হৃদয় সংকুচিত হয়।
And We already know that your breast is constrained by what they say.
فَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّکَ وَ کُنۡ مِّنَ السّٰجِدِیۡنَ ﴿ۙ۹۸﴾
সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।
So exalt [ Allah ] with praise of your Lord and be of those who prostrate [to Him].
وَ اعۡبُدۡ رَبَّکَ حَتّٰی یَاۡتِیَکَ الۡیَقِیۡنُ ﴿٪۹۹﴾
আর তোমার মৃত্যু উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদত কর।
And worship your Lord until there comes to you the certainty (death).

সুরা: হিজর
সুরা:১৫
৯৪-৯৯ নং আয়াত:-
[ فَاصْدَعْ بِمَا تُوْمَرُ
অতএব আপনি যে বিষয়ে আদেশপ্রাপ্ত হয়েছেন তা প্রকাশ্যে প্রচার করুন।
Therefore openly proclaim what you have been commanded,]
www.motaher21.net

৯৪-৯৯ নং আয়াতের তাফসীর:-
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি যেন তাঁর প্রতি যে প্রত্যাদেশ করা হয়েছে তা প্রচার করেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(يٰٓأَيُّهَا الرَّسُوْلُ بَلِّغْ مَآ أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ)

“হে রাসূল! তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার কর।” (সূরা মায়িদা ৫:৬৭)

সুতরাং তাবলীগ করতে হবে আল্লাহ তা‘আলা যা নাযিল করেছেন তার। আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করেছেন কুরআন ও সুন্নাহ।

আর তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আরো নির্দেশ দিচ্ছেন, যেন তিনি কাফির-মুশরিকদেরকে উপেক্ষা করে চলেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:

(فَتَوَلَّ عَنْهُمْ فَمَآ أَنْتَ بِمَلُوْمٍ)‏

“অতএব, তুমি তাদের দিক হতে মুখ ফিরিয়ে নাও, এতে তুমি তিরস্কৃত হবে না।” (সূরা যারিয়াত ৫১:৫৪)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:

(اِتَّبِعْ مَآ أُوْحِيَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ ج لَآ إِلٰهَ إِلَّا هُوَ ج وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِيْنَ)‏

“তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে তোমার প্রতি যা ওয়াহী করা হয় তুমি তারই অনুসরণ কর, তিনি ব্যতীত অন্য কোন সত্যিকার ইলাহ নেই এবং মুশরিকদের হতে মুখ ফিরিয়ে নাও।” (সূরা আনয়াম ৬:১০৬)

(إِنَّا كَفَيْنٰكَ الْمُسْتَهْزِئيْنَ)

অর্থাৎ যারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ, ব্যঙ্গ ও উপহাস করে তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। অর্থাৎ তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তি দেয়া এবং পাকড়াও করার জন্য আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(أَلَيْسَ اللّٰهُ بِكَافٍ عَبْدَه)

“আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন?” (সূরা যুমার ৩৯:৩৬)

আর এখানে উপহাসকারী বলতে যাদেরকে বুঝানো হয়েছে তারা হল ওলীদ বিন মুগিরা, আস বিন ওয়েল, হারেস বিন কায়েস আস-সাহমী, আসউয়াদ বিন আব্দ ইয়াগুছ এবং আসউয়াদ বিন ম্ত্ত্বুালিব। (আযওয়াউল বায়ান, অত্র আয়াতের তাফসীর) তবে উপহাসকারীদের মাঝেই কেবল সীমাবদ্ধ নয় কিয়ামত পর্যন্ত যত ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ ও উপহাসকারী আসবে সবাই এতে শামিল।

(وَلَقَدْ نَعْلَمُ أَنَّكَ)- আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, তিনি জানেন মানুষের খারাপ কথা-বার্তায় তাঁর রাসূলের মন সংকীর্ণ হয়ে যায়।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(قَدْ نَعْلَمُ إِنَّه۫ لَيَحْزُنُكَ الَّذِيْ يَقُوْلُوْنَ)

“আমি অবশ্য জানি যে, তারা যা বলে তা তোমাকে নিশ্চিতই কষ্ট দেয়; (সূরা আন‘আম ৬:৩৩)

এরূপ সূরা আন‘আমের ৩৩ নং, সূরা হুদের ১২ নং এবং সূরা কাহফের ৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে।

তাই তিনি তাঁর রাসূলকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন: তিনি যেন তাঁর রবের ইবাদত করেন, তিনিই তাদের এ ব্যপারে অবগত আছেন। তাদের কৃতকর্মের উপযুক্ত শাস্তি দেয়া হবে।

(وَاعْبُدْ رَبَّكَ) এখানে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে দুনিয়ার সকল মু’মিন মুসলিমদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন তারা যেন ইয়াকীন আসা পর্যন্ত ইবাদত করে। এখানে “يقين” দ্বারা উদ্দেশ্য হল মৃত্যু।

দলীল: উম্মু ‘আলার হাদীস, সেখানে বর্ণিত রয়েছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উসমান বিন মাযউন সম্পর্কে বলেছেন:

أَمَّا هُوَ فَقَدْ جَاءَهُ اليَقِينُ، وَاللّٰهِ إِنِّي لَأَرْجُو لَهُ الخَيْرَ، وَاللّٰهِ مَا أَدْرِي، وَأَنَا رَسُولُ اللّٰهِ، مَا يُفْعَلُ بِه

তার ইয়াকীন চলে এসেছে অর্থাৎ মৃত্যু চলে এসেছে। আমি আল্লাহ তা‘আলার কাছে তার জন্য কল্যাণ আশা করছি। আল্লাহ তা‘আলার শপথ আমি আল্লাহ তা‘আলার রাসূল হওয়া সত্ত্বেও জানিনা তার সাথে কী ব্যবহার করা হবে। (সহীহ বুখারী হা: ১২৪৩, ৭০১৮)

কিন্তু কোন কোন ভ্রান্ত সম্প্রদায় এর দ্বারা উদ্দেশ্য গ্রহণ করেন যে, যখন “ইয়াক্বীন” চলে আসবে তখন আর আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করার প্রয়োজন নেই। যার ফলে অনেকে এই “ইয়াক্বীন” বা “খাঁটি বিশ্বাস” অর্থ গ্রহণ করে ইবাদত করা ছেড়ে দিয়েছে। তাদের এই উদ্দেশ্যটি ভুল। বরং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করতে হবে।

যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি হাদীসে বলেন, “তুমি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় কর যদি তাতে সক্ষম না হও তাহলে বসে। আর যদি তাতেও সক্ষম না হও তাহলে ইশারা দিয়ে সালাত আদায় কর”। (সহীহ বুখারী হা: ১২৪৩)

সুতরাং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ইবাদত করে যেতে হবে, যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবাদত করেছেন। যারা এর ব্যতিক্রম বলে তারা সঠিক পথে নেই।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. তাবলীগ করতে হবে কুরআন ও সুন্নাহর।
২. যারা রাসূল ও মু’মিনদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করবে তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট, তিনি তাদের জন্য উপযুক্ত শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।
৩. মু’মিন ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তা‘আলা একাই যথেষ্ট।
৪. মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করতে হবে।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
সত্যের বাণী প্রচার এবং সংস্কার প্রচেষ্টা চালাবার ক্ষেত্রে তোমাকে অশেষ কষ্ট ও বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। এগুলোর মোকাবিলা করার শক্তি তুমি একমাত্র নামায ও আল্লাহর বন্দেগী করার ক্ষেত্রে অবিচল দৃঢ়তার পথ অবলম্বন করার মাধ্যমেই অর্জন করতে পারো। এ জিনিসটি তোমার মনকে প্রশান্তিতে ভরে তুলবে, তোমার মধ্যে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার জন্ম দেবে, তোমার সাহস ও হিম্মত বাড়িয়ে দেবে এবং তোমাকে এমন যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তুলবে যার ফলে সারা দুনিয়ার মানুষের গালিগালাজ, নিন্দাবাদ ও প্রতিরোধের মুখে তুমি দৃঢ়ভাবে এমন দায়িত্ব পালন করে যেতে থাকবে যার মধ্যে তোমার রবের রেজামন্দি রয়েছে।

ফী জিলালিল কুরআন:

*প্রকাশ্য দাওয়াতের আদেশ প্রসংগ : এই পর্যন্ত পৌছার পর এখন আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং রসূলকে উদ্দেশ্য করে বলছেন, তিনি যেন নিজের পথেই থাকেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে যে সব নির্দেশ প্রাপ্ত হন তা যেন প্রকাশ্যে ঘােষণা দিয়ে সবাইকে জানিয়ে দেন। এই ঘােষণা বজ্রকণ্ঠে দিতে হবে, এ ব্যাপারে কোনাে কাফের-মােশরেককে তােয়াকা করলে চলবে না। কারণ মােশরেকদের ভয়াবহ পরিণতির ব্যাপারটি তারা নিজেরাই পরে জানতে পারবে। এই ঘােষণা দিতে গিয়ে কোনাে ঠাট্টা-বিদ্রুপকারীকে পরােয়া করাও চলবে না। কারণ ওদের জন্যে আল্লাহ তায়ালাই যথেষ্ট। তাছাড়া ওদের ওই ঠাট্টা-বিদ্রুপ কখনও দাওয়াতী কাজকে প্রভাবিত করতে পারবে না। এ প্রসংগটিই নিচের আয়াতে আলােচিত হয়েছে। ‘অতএব তোমাকে যে আদেশ দেয়া হয়েছে তুমি… যারা আজ আল্লাহর সাথে অন্যকে মাবুদ বানিয়ে নিয়েছে তারা অচিরেই জানতে পারবে (কতাে গােমরাহীতে তারা নিমজ্জিত ছিলাে)'(আয়াত ৯৪-৯৬) বলার অপেক্ষা রাখে না যে, রসূল(স.) একজন মানুষ ছিলেন। দুঃখ-কষ্টে তাঁর মনও ব্যথিত হতাে। বিশেষ করে যখন আল্লাহর সাথে প্রকাশ্যে শিরক করা হতাে এবং দাওয়াত ও তাবলীগের কাজকে উপহাস করা হতাে তখন তিনি ব্যথিত ও মর্মাহত না হয়ে পারতেন না। শিরক ও গােমরাহীপূর্ণ কর্মকান্ড দেখে তিনি মনে আঘাত পেতেন। তাই তাঁকে স্বীয় প্রভুর প্রশংসা ও এবাদাত বন্দেগীতে মশগুল থাকার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। এর ফলে মনের ব্যথা লাঘব হবে, মনের কষ্ট দূর হবে। পরম বিশ্বাস অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত এই এবাদাত-বন্দেগীতে সদা মশগুল থাকতে হবে । এর পর স্বয়ং মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ হবে। এই বিষয়টিই নিচের আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। ‘(হে নবী) আমি (একথা) ভালো করেই জানি যে,ওরা তা কিছু… এবং তোমার (নিশ্চিত) মৃত্যু আসা পর্যন্ত তুমি তােমার মালিকের এবাদাত করতে থাকো।'(আয়াত ৯৭-৯৯) আলােচ্য সূরাটি সমাপ্ত হয়েছে দুটো বিষয়কে কেন্দ্র করে। একটি হচ্ছে কাফের মােশরেকদেরকে এড়িয়ে চলতে হবে। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে আল্লাহর সান্নিধ্যে আশ্রয় খুঁজতে হবে। নিশ্চয়ই এমন একটি দিন আসবে যেদিন কাফেররা মােমেন মুসলমান হওয়ার বাসনা ব্যক্ত করবে।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৯৪-৯৯ নং আয়াতের তাফসীর

আল্লাহ তাআলা স্বীয় রাসূলকে (সঃ) নির্দেশ দিচ্ছেনঃ হে রাসূল (সঃ)! তুমি জনগণের কাছে আমার বাণী স্পষ্টভাবে পৌছিয়ে দাও। এ ব্যাপারে কোনই ভয় করবে না। মুশরিকদের কাছে তুমি একত্ববাদ খোলাখুলি ভাবে প্রচার করো। নামাযে কুরআন কারীম উচ্চ স্বরে পাঠ করো।

এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সঃ) গোপনীয় ভাবে প্রচার কার্য চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর তিনি এবং তার সাহাবীগণ প্রকাশ্য ভাবে তাবলীগের কাজ চালিয়ে যেতে শুরু করেন।

আল্লাহ পাক বলেনঃ “হে নবী (সঃ)! এ কাজে মুশরিকদের ঠাট্টা বিদ্রুপকে। তুমি উপেক্ষা করো। বিদ্রুপকারীদের বিরুদ্ধে তোমার জন্যে আমিই যথেষ্ট। প্রচার কার্যে তুমি মোটেই অবহেলা প্রদর্শন করো না। এরা তো চায় যে, তুমি তাবলীগের কাজে অমনোযোগী হয়ে যাও। সুতরাং তোমার কর্তব্য হচ্ছে দ্বিধাসংকোচহীন ভাবে পুরোমাত্রায় প্রচারকার্য চালিয়ে যাওয়া এবং তাদেরকে মোটেই ভয় না করা। আমি আল্লাহ স্বয়ং তোমার রক্ষক ও সাহায্যকারী। আমিই তোমাকে তাদের ক্ষতি ও দুষ্টামি থেকে রক্ষা করবো। যেমন অন্য জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ “হে রাসূল (সঃ)! তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা তুমি পৌছিয়ে দাও, আর তা যদি তুমি না কর তাহলে তুমি তাঁর রিসালাতকে পৌছিয়ে দিলে না। আর আল্লাহ তোমাকে মানুষ (এর অনিষ্ট) থেকে রক্ষা করবেন।”

হযরত আনাস (রাঃ) (আরবি) আয়াত সম্পর্কে বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) পথ দিয়ে গমন করছিলেন। এমতাবস্থায় মুশরিকরা তাঁকে জ্বালাতন করে। তখন তার রক্ষক হিসেবে হযরত জিবরাঈল (আঃ) আগমন করেন এবং তাদেরকে চওকা মারেন। ফলে তাদের দেহ এমন ক্ষত বিক্ষত হয় যে, যেন তাতে বর্শা দ্বারা আঘাত করা হয়েছে। তাতেই তারা মৃত্যু মুখে পতিত হয়। তারা ছিল মুশরিকদের বড় বড় নেতা। তারা ছিল বেশ বয়স্ক লোক এবং তাদেরকে খুবই সম্ভ্রান্ত মনে করা হতো। আসওয়াদ ইবনু আবদিল মুত্তালিব আবু যামআ ছিল বানু আসাদ গোত্রভূক্ত। সে ছিল রাসূলুল্লাহর (সঃ) চরমতম শত্রু। সে তাঁকে খুবই দুঃখ-কষ্ট দিতো এবং ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতো। তিনি অসহ্য হয়ে তার জন্যে বদদুআ’ও করেছিলেন। তিনি বলেছিলেনঃ “হে আল্লাহ! আপনি তাকে অন্ধ ও সন্তানহীন করে দিন।” আসওয়াদ ছিল বানু যাহরার অন্তর্ভূক্ত। বানু মাখযুম গোত্রভূক্ত ছিল ওয়ালীদ। আস ইবনু ওয়ায়েল ছিল বানু সাহমের অন্তর্ভূক্ত। হারিস ছিল খুযাআ গোত্রভূক্ত। এই লোকগুলি সদা সর্বদা রাসূলুল্লাহর (সঃ) ক্ষতি করতেই থাকতো। তারা জনগণকেও তাঁর বিরুদ্ধে উত্তেজিত করতো। যতদূর কষ্ট দেয়ার শক্তি তাদের ছিল তাতে তারা মোটেই ত্রুটি করতো না। তাদের উৎপীড়ন যখন চরম পর্যায়ে পৌছে গেল এবং কথায় কথায় রাসূলুল্লাহকে (সঃ) বিদ্রুপ করতে থাকলো তখন আল্লাহ তাআলা (আরবি) হতে (আরবি) পর্যন্ত আয়াত নাযিল করলেন। (এটা হাফিয আবু বকর আল বায্যার (রঃ) বর্ণনা করেছেন)

বর্ণিত আছে যে, একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করছিলেন। এমন সময় হযরত জিবরাঈল (আঃ) এসে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে যান। এমন সময় আসওয়াদ ইবনু আবদে ইয়াছ তার পার্শ্ব দিয়ে গমন করে। তখন হযরত জিবরাঈল (আঃ) তার পেটের দিকে ইশার করেন। এর ফলে তার পেটের অসুখ হয়ে যায় এবং তাতেই তার মৃত্যু ঘটে। ইতিমধ্যে ওয়ালীদ ইবনু মুগীরা গমন করে। খোযা’ গোত্ৰীয় একটি লোকের তীরের ফলকের সামান্য আঘাতে তার পায়ের গোড়ালী কিছুটা আহত হয়েছিল। এরপর সুদীর্ঘ দু’ বছর কেটে গিয়েছিল। হযরত জিবরাঈল (আঃ) ঐ দিকেই ইশারা করেন। এর ফলে ঐ ক্ষতস্থানটুকু ফুলে যায় ও পেকে ওঠে এবং তাতেই সে মৃত্যু বরণ করে। এরপর গমন করে আস ইবনু ওয়ায়েল। হযরত জিবরাঈল (আঃ) তার পায়ের পাতার দিকে ইশারা করেন। কিছু দিন আগে তায়েফ গমনের উদ্দেশ্য সে তার গাধার উপর আরোহণ করে। পথে সে গাধার পিঠ থেকে পড়ে যায় এবং তার পায়ের পাতায় কাটা ঢুকে যায়। তাতেই তার জীবন লীলা শেষ হয়। হযরত জিবরাঈল (আঃ) হারিছের মাথার দিকে ইশারা করেন। এর ফলে তার মাথা দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করে। তাতেই তার মৃত্যু হয়। এই সব কষ্টদাতাদের নেতা ছিল ওয়ালীদ ইবনু মুগীরা। সেই তাদেরকে একত্রিত করেছিল। তারা ছিল সংখ্যায় পাঁচ জন বা সাতজন। তারাই ছিল প্রধান এবং তাদের ইঙ্গিতেই ইতর লোকেরা ইতরামি করতো। এই লোকগুলি এই সব বাজে ও জঘন্য ব্যবহারের সাথে সাথে একাজও করতো যে, তারা আল্লাহ তাআলার সাথে অন্যদেরকে শরীক করতো। তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের শাস্তি এখনই ভোগ করতে হবে। আরো যারা রাসূলের (সঃ) বিরুদ্ধাচরণ করবে এবং আল্লাহর সাথে অন্যদেরকে শরীক করবে তাদেরও অবস্থা অনুরূপই হবে।

মহান আল্লাহ বলেনঃ “হে নবী (সঃ) আমি তো জানি যে, তারা যা বলে তাতে তোমার অন্তর সংকুচিত হয়। কিন্তু তুমি তাদের কথার প্রতি মোটেই ভ্রুক্ষেপ করো না। আমি তোমার সাহায্যকারী। তুমি তোমার প্রতিপালকের যিকর, পবিত্রতা ঘোষণা এবং গুণকীর্তনে লেগে থাকো। মন ভরে তাঁর ইবাদত কর, নামাযের খেয়াল রেখো এবং সিজদাকারীদের সঙ্গ লাভ কর।”

হযরত নাঈম ইবনু আম্মার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহকে (সঃ) বলতে শুনেছেনঃ আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “হে আদম সন্তান! তুমি দিনের প্রথমভাগে চার রাকআত নামায হতে অপারগ হয়ো না, তা হলে আমি তোমার জন্যে ওর শেষ ভাগ যথেষ্ট করবো।” (এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন)

এজন্যেই রাসূলুল্লাহর (সঃ) অভ্যাস ছিল এই যে, যখন তিনি কোন ব্যাপারে হতবুদ্ধি হয়ে পড়তেন তখন নামায শুরু করে দিতেন।

এই শেষ আয়াতে (আরবি) শব্দ দ্বারা মৃত্যুকে বুঝানো হয়েছে। এর দলীল হচ্ছে সূরায়ে (আরবি) এর ঐ আয়াতগুলি যেগুলিতে বর্ণিত হয়েছে যে, জাহান্নামীরা নিজেদের অপরাধ বর্ণনা করতে গিয়ে বলবেঃ (আরবি) অর্থাৎ “তারা বলবেঃ আমরা নামাযীদের অন্তর্ভূক্ত ছিলাম না। আমরা অভাবগ্রস্তকে আহার্য দান করতাম না। আর আমরা আলোচনাকারীদের সাথে। আলোচনায় নিমগ্ন থাকতাম। আমরা কর্মফল দিবসকে অস্বীকার করতাম, আমাদের নিকট মৃত্যুর আগমন পর্যন্ত।” (৭৪:৪৩-৪৭) এখানেও এর স্থলে (আরবি) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।

একটি সহীহ, হাদীসেও রয়েছে যে, হযরত উসমান ইবনু মাঊনের (রাঃ) মৃত্যুর পর যখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর নিকট গমন করেন তখন উম্মুল আ’লা (রাঃ) নাম্নী আনসারের একটি মহিলা বলেনঃ “হে আবুস সায়েব (রাঃ) । আপনার উপর আল্লাহর করুণা বর্ষিত হোক, নিশ্চয়ই আল্লাহ আপনাকে সম্মান দান করেছেন।” তাঁর একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করেনঃ “তুমি কি করে জানলে যে, আল্লাহ তাকে সম্মান দান করেছেন?” উত্তরে মহিলাটি বলেনঃ “আমার পিতা-মাতা আপনার উপর উৎসর্গিত হোক! তার উপর আল্লাহ তাআলা দয়া না করলে আর কার উপর করবেন?” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “জেনে রেখো যে, তার মৃত্যু হয়ে গেছে এবং আমি তার মঙ্গলেরই আশা রাখি।” এই হাদীসেও (আরবি) এর স্থলে (আরবি) শব্দ রয়েছে।

এই আয়াত দ্বারা দলীল গ্রহণ করা হয়েছে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের জ্ঞান থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত নামায ইত্যাদি ইবাদত তার উপর ফরয। তার অবস্থা যেমন থাকবে সেই অনুযায়ী সে নামায আদায় করবে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “দাঁড়িয়ে নামায পড়তে সক্ষম না হলে বসে পড়বে এবং বসে পড়তে না পারলে শুয়ে শুয়েই পড়বে।”

এর দ্বারা বদমাযহাবীরা নিজেদের উদ্দেশ্য সিদ্ধির লক্ষ্যে একটি কথা বানিয়ে নিয়েছে। তা এই যে, তাদের মতে মানুষ যে পর্যন্ত পূর্ণতার পর্যায়ে না পৌছে সেই পর্যন্ত তার উপর ইবাদত ফরয থাকে। কিন্তু যখনই সে মারেফাতে মনযিলগুলো অতিক্রম করে ফেলে তখন তার উপর থেকে ইবাদতের কষ্ট লোপ পেয়ে যায়। এটা সরাসরি বিভ্রান্তি ও অজ্ঞতামূলক কথা। এই লোকগুলি কি এটুকুও বুঝে না যে, নবীগণ, বিশেষ করে নবীকূল শিরমণি হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এবং তাঁর সাহাবীবর্গ মারেফাতের সমস্ত মনযিল অতিক্রম করেছিলেন এবং তারা খোদায়ী বিদ্যা এবং পরিচিতির ক্ষেত্রে সারা দুনিয়া অপেক্ষা পূর্ণতম ছিলেন। মহান আল্লাহর গুণাবলী এবং তাঁর পবিত্র সত্তা সম্পর্কে তাঁরাই সবচেয়ে বেশী জ্ঞান রাখতেন। এতত্সত্ত্বেও তারা সকলের চেয়ে বেশী ইবাদত করতেন এবং দুনিয়ার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাতেই লেগে রয়েছিলেন। তাঁরা মহান প্রতিপালকের আনুগত্যের কাজে সমস্ত দুনিয়া হতে বেশী নিমগ্ন ছিলেন। সুতরাং এটা প্রমাণিত হলো যে, এখানে (আরবি) দ্বারা (আরবি) উদ্দেশ্য। সমস্ত মুফাসির, সাহাবী, তাবিঈ প্রভৃতির এটাই মাযহাব। অতএব, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। আমরা তারই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি যে, তিনি আমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন। আমরা তার কাছে ভাল কাজে সাহায্য চাচ্ছি। তার পবিত্র সত্তার উপরই আমাদের ভরসা। আমরা সেই মালিক ও হাকিমের কাছে এই প্রার্থনা জানাই যে, তিনি যেন আমাদেরকে পূর্ণ ইসলাম ও ঈমান এবং পুণ্য কাজের উপর আমাদের মৃত্যু ঘটান। তিনি বড় দাতা এবং পরম দয়ালু।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- Al-Hijr
Sura: 15
Verses :- 94-99
[ فَاصْدَعْ بِمَا تُوْمَرُ
Therefore openly proclaim what you have been commanded,]
The Command to proclaim the Truth openly

Allah commanded His Messenger:

فَاصْدَعْ بِمَا تُوْمَرُ

Therefore openly proclaim what you have been commanded,

Allah commanded His Messenger to convey what He sent him with, to proclaim and spread the Message, which means confronting the idolators with it.

Ibn Abbas said that the Ayah,
فَاصْدَعْ بِمَا تُوْمَرُ
(Therefore openly proclaim that what you have been commanded), means,

“Go ahead with it.”

According to another report it means,

افْعَلْ

مَا تُوْمَرُ
(Therefore proclaim that which you commanded).

Mujahid said,

“It is reciting the Qur’an aloud during prayer.”

Abu Ubaydah reported that Abdullah bin Mas`ud said,

“The Prophet was still practicing and preaching Islam secretly until this Ayah was revealed:
فَاصْدَعْ بِمَا تُوْمَرُ
(Therefore openly proclaim that which you are commanded), then he and his Companions came out into the open.”
The Command to turn away from the Idolators, and the Guarantee of Protection against the Mockers

Allah’s statement,

وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِينَ

and turn away from idolators.

meaning – convey that which has been revealed to you by your Lord, and do not pay attention to the idolators who want to turn you away from the signs of Allah.

وَدُّواْ لَوْ تُدْهِنُ فَيُدْهِنُونَ

They wish that you should compromise for them, so that they would compromise for you. (68:9)

إِنَّا كَفَيْنَاكَ الْمُسْتَهْزِيِينَ
Truly, We will suffice you against the mockers.

Do not fear them because Allah will suffice you against them, and He will protect you from them.

This is like the Ayah:

يَـأَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَأ أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ وَإِن لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللَّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ

O Messenger! Proclaim that which has been revealed to you from your Lord. And if you do not do it, then you have not conveyed His Message. Allah will protect you from mankind. (5:67)

Muhammad bin Ishaq said:

“The great ones of the mockers were five people, who were elders and noblemen among their people.

From Bani Asad bin Abd Al-Uzza bin Qusayy there was Al-Aswad bin Al-Muttalib Abu Zam`ah.

According to what I heard, the Messenger of Allah had supplicated against him because of the pain and mockery he had suffered at his hands. He had said,

اللَّهُمَّ أَعِمْ بَصَرَهُ وَأَثْكِلْهُ وَلَدَه

O Allah, make him blind and take (the life of) his son.

From Bani Zahrah there was Al-Aswad bin Abd Yaghuth bin Wahb bin Abd Manaf bin Zahrah.

From Bani Makhzum there was Al-Walid bin Al-Mughirah bin Abdullah bin Umar bin Makhzum.

From Bani Sahm bin Amr bin Husays bin Ka`b bin Lu’ayy there was Al-`As bin Wa’il bin Hisham bin Sa`id bin Sa`d.

From Khuza`ah there was Al-Harith bin At-Talatilah bin Amr bin Al-Harith bin Abd Amr bin Malkan.

When their evil went to extremes and their mockery of the Messenger of Allah went too far, Allah revealed:

فَاصْدَعْ بِمَا تُوْمَرُ

وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِينَ

إِنَّا كَفَيْنَاكَ الْمُسْتَهْزِيِينَ

الَّذِينَ يَجْعَلُونَ مَعَ اللّهِ إِلـهًا اخَرَ فَسَوْفَ يَعْمَلُونَ

Therefore openly proclaim that which you are commanded, and turn away from the idolators. Truly, We will suffice you against the mockers, who make another god along with Allah; but they will come to know.

Ibn Ishaq said:

Yazid bin Ruman told me that Urwah bin Az-Zubayr or one of the other scholars said that Jibril came to the Messenger of Allah when he was performing Tawaf around the House (the Ka`bah). He stood and the Messenger of Allah stood next to him.

Al-Aswad Ibn Al-Mutalib passed by, and he threw a green leaf in his face, and he became blind.

Al-Aswad bin Abd Yaghuth passed by, and he pointed to his stomach, which swelled up and he died (of dropsy).

Al-Walid bin Al-Mughirah passed by, and he pointed at a wound on lower of his ankle, which he got two years earlier when He once was trailing his garment and he passed by a man who was feathering his arrows. One of the arrows got caught in his garment and scratched his foot. It was an insignificant wound, but now it opened again and he died of it.

Al-`As bin Wa’il passed by, and he pointed to the instep of his foot. He (Al-`As) set off on his donkey, heading for At-Ta’if. He rested by a thorny tree, a thorn pierced his foot and he died from it.

Al-Harith bin At-Talatilah passed by and he pointed at his head. It filled with pus and killed him.”

Allah said,

الَّذِينَ يَجْعَلُونَ مَعَ اللّهِ إِلـهًا اخَرَ فَسَوْفَ يَعْمَلُونَ
Who make another god along with Allah; but they will come to know.

This is a strong warning and grave threat against those who have other deities along with Allah.
Encouragement to bear Difficulties, and the Command to glorify and worship Allah until Death

Allah said,

وَلَقَدْ نَعْلَمُ أَنَّكَ يَضِيقُ صَدْرُكَ بِمَا يَقُولُونَ
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُن مِّنَ السَّاجِدِينَ
Indeed, We know that your breast becomes tight because of what they say. So glorify the praises of your Lord and be of those who prostrate themselves (to Him).

meaning `We know, O Muhammad, that you are distressed by their insults towards you, but do not let that weaken your resolve or cause you to give up conveying the Message of Allah. Put your trust in Him, for He will suffice you and will support you against them. Keep yourself busy with remembering Allah, praising Him, glorifying Him, and worshipping Him (which means Salah, or prayer)’

Hence Allah says:
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُن مِّنَ السَّاجِدِينَ
(So glorify the praises of your Lord and be of those who prostrate themselves (to Him).

Imam Ahmad reported from Nu`aym bin Hammar that he heard the Messenger of Allah say:

قَالَ اللهُ تَعَالَى

يَا ابْنَ ادَمَ لَاا تَعْجَزْ عَنْ أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ مِنْ أَوَّلِ النَّهَارِ أَكْفِكَ اخِرَه

Allah said,

“O son of Adam! It is not too difficult for you to perform four Rak`ah at the beginning of the day, (and if you do them,) I will take care of you until the end of it.”

وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ

And worship your Lord until the certainty comes to you.

Al-Bukhari said:

“Salim said, `(This means) death.”‘

This Salim is Salim bin Abdullah bin Umar.

Ibn Jarir also recorded from Salim bin Abdullah,
وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ
(And worship your Lord until the Yaqin comes to you).

He said, “Death.”

It is reported in the Sahih from Umm Al-Ala’ (one of the women of the Ansar) that when the Messenger of Allah entered upon Uthman bin Maz`un after he had died, Umm Al-Ala’ said,

“May the mercy of Allah be upon you, Abu As-Sa`ib. My testimony over you is that Allah has honored you.”

The Messenger of Allah said,

وَمَا يُدْرِيكَ أَنَّ اللهَ أَكْرَمَهُ

How do you know that Allah has honored him?

I said, “May my father and mother be sacrificed for you, O Messenger of Allah! If not him, then who else?”

He said,

أَمَّا هُوَ فَقَدْ جَاءَهُ الْيَقِينُ وَإِنِّي لَاَرْجُو لَهُ الْخَيْر

As far as he is concerned, the death has come to him, and I hope for good for him.

This is evidence that the meaning of this Ayah,
وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ
(And worship your Lord until the certainty comes to you),

is that acts of worship, such as prayer and the like, are obligatory on man so long as his mind is sound, so he should pray according to his best ability.

It was reported in Sahih Al-Bukhari from Imran bin Husayn that the Messenger of Allah said:

صَلِّ قَايِمًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْب

Pray standing, and if you cannot, then sitting, and if you cannot, then on your side.

From this we may understand that it is a mistake to interpret Yaqin (the certainty) as Ma`rifah (“spiritual knowing”) as some of the Sufis do.

According to them, when one of them attains the level of Ma`rifah, they consider him to be free of these obligations.

This is disbelief, misguidance and ignorance.

The Prophets – peace be upon them – and their companions, were the most knowledgeable of people about Allah, about His rights, His attributes, and the glorification that He deserves. But at the same time, they were the people who worshipped Him the most, continuing in good deeds until the time they died.

Therefore, what is meant by Yaqin here is death, as we have stated above.

To Allah be praise and thanks. Praise be to Allah for His guidance. It is to Him that we turn for help and it is in Him that we put our trust. He is the One Whom we ask to help us to reach the best of circumstances, for He is the Most Generous and Kind.

This is the end of the Tafsir of Surah Al-Hijr. Praise be to Allah, the Lord of all that exists.

Leave a Reply