(Book# 809) সুরা: আন- নহল সুরা:১৬ ৬৬-৬৭ নং আয়াত:- [ مِن بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَّبَنًا خَالِصًا তার পেটের গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে তোমাদেরকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, From between excretions and blood, pure milk;] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 809)
সুরা: আন- নহল
সুরা:১৬
৬৬-৬৭ নং আয়াত:-
[ مِن بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَّبَنًا خَالِصًا
তার পেটের গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে তোমাদেরকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ,
From between excretions and blood, pure milk;]
www.motaher21.net
وَ اِنَّ لَکُمۡ فِی الۡاَنۡعَامِ لَعِبۡرَۃً ؕ نُسۡقِیۡکُمۡ مِّمَّا فِیۡ بُطُوۡنِہٖ مِنۡۢ بَیۡنِ فَرۡثٍ وَّ دَمٍ لَّبَنًا خَالِصًا سَآئِغًا لِّلشّٰرِبِیۡنَ ﴿۶۶﴾
আর নিশ্চয় গবাদি পশুর মধ্যে তোমাদের জন্য শিক্ষা রয়েছে। তার পেটের গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে তোমাদেরকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যকর।
And indeed, for you in grazing livestock is a lesson. We give you drink from what is in their bellies – between excretion and blood – pure milk, palatable to drinkers.
وَ مِنۡ ثَمَرٰتِ النَّخِیۡلِ وَ الۡاَعۡنَابِ تَتَّخِذُوۡنَ مِنۡہُ سَکَرًا وَّ رِزۡقًا حَسَنًا ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّقَوۡمٍ یَّعۡقِلُوۡنَ ﴿۶۷﴾
আর খেজুর গাছের ফল ও আঙ্গুর হতে তোমরা মাদক ও উত্তম খাদ্য গ্রহণ করে থাক ; নিশ্চয় এতে বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন।
And from the fruits of the palm trees and grapevines you take intoxicant and good provision. Indeed in that is a sign for a people who reason.

সুরা: আন- নহল
সুরা:১৬
৬৬-৬৭ নং আয়াত:-
[ مِن بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَّبَنًا خَالِصًا
তার পেটের গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে তোমাদেরকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ,
From between excretions and blood, pure milk;]
www.motaher21.net

৬৬-৬৭ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে‌ ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

… الْأَنْعَامِ তথা চতুষ্পদ জন্তু যেমন উট, গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদির মাঝে রয়েছে মানুষের জন্য শিক্ষা। এসব জন্তু যা কিছু খায় তা পেটে চলে যায়, আর তা থেকে দূধ, রক্ত, গোবর ও প্রস্রাব তৈরি হয়। রক্ত শিরা-উপশিরায়, দুধ স্তনে, অনুরূপ গোবর ও প্রস্রাব নিজ নিজ জায়াগায় চলে যায়। দুধের সাথে রক্ত মিশ্রিত হয় না, গোবর ও প্রস্রাবও মিশ্রণ হয় না, বরং প্রত্যেকটাকে আলাদা আলাদা পথে বের করে দুধকে নির্মল সাদা ও পরিস্কার করে বের করে আনেন। এত সূক্ষ্ম ও নিপুণতার সাথে আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ কি সৃষ্টি করতে পারে? না, আল্লাহ ছাড়া কেউ সৃষ্টি করতে পারে না। সুতরাং যে আল্লাহ তা‘আলা এত সুক্ষ্ম করে সৃষ্টি করতে পারেন তিনি ছাড়া কি অন্য কেউ ইবাদত পাওয়ার হকদার? না, অন্য কেউই পেতে পারে না। তাই সকল ইবাদত আল্লাহ তা‘আলার জন্যই করতে হবে।

এরূপ অনেক আয়াতে রয়েছে যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَإِنَّ لَكُمْ فِي الْأَنْعَامِ لَعِبْرَةً ط نُسْقِيْكُمْ مِّمَّا فِيْ بُطُوْنِهَا وَلَكُمْ فِيْهَا مَنَافِعُ كَثِيْرَةٌ وَّمِنْهَا تَأْكُلُوْنَ)

“এবং তোমাদের জন্য অবশ্যই শিক্ষণীয় বিষয় আছে চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে, তোমাদেরকে আমি পান করাই তাদের উদরে যা আছে তা হতে এবং তাতে তোমাদের জন্য রয়েছে প্রচুর উপকারিতা; তোমরা তা হতে আহার কর‎।” (সূরা মু’মিনুন ২৩:২১)

অনুরূপভাবে মানুষের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার অন্যতম অনুগ্রহ হল তাদেরকে খেজুর, আঙ্গুর ইত্যাদি ফল-ফলাদি দিয়েছেন, তারা এসব থেকে মদ ও উত্তম খাদ্য যেমন শুকনো খেজুর, কিসমিস গ্রহণ করে। এ সকল জিনিস আল্লাহ তা‘আলাই সৃষ্টি করেছেন, অন্য কেউ নয়।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَجَعَلْنَا فِیْھَا جَنّٰتٍ مِّنْ نَّخِیْلٍ وَّاَعْنَابٍ وَّفَجَّرْنَا فِیْھَا مِنَ الْعُیُوْنِﭱﺫلِیَاْکُلُوْا مِنْ ثَمَرِھ۪ﺫ وَمَا عَمِلَتْھُ اَیْدِیْھِمْﺚ اَفَلَا یَشْکُرُوْنَﭲسُبْحٰنَ الَّذِیْ خَلَقَ الْاَزْوَاجَ کُلَّھَا مِمَّا تُنْۭبِتُ الْاَرْضُ وَمِنْ اَنْفُسِھِمْ وَمِمَّا لَا یَعْلَمُوْنَﭳ)

“আমি তাতে সৃষ্টি করি খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান এবং প্রবাহিত করি তাতে ঝরণাধারা। যেন তারা এর ফলমূল থেকে খাদ্য গ্রহণ করতে পারে। তাদের হাত এটা সৃষ্টি করেনি। তবুও কি তারা কৃতজ্ঞ হবে না?” (সূরা ইয়াসীন ৩৬:৩৪-৩৫)

سَكَرًا অর্থ মদ, এটাই অধিকাংশ আলেমের মত। মদ হারাম হওয়ার পূর্বে তা এ উম্মাতের জন্য একটি নেয়ামত ছিল। তাই হালাল (পবিত্র) জিনিসের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। এ আয়াতটি মাক্কী, এরপরে তিনটি মাদানী আয়াত অবতীর্ণ হয়ে মদকে সম্পূর্ণ হারাম করে দেয়া হয়। যেমন সূরা বাকারার ২১৯, সূরা নিসার ৪৩ এবং সূরা মায়িদার ৯০-৯১ নং আয়াত।

অতএব মানুষের উচিত আল্লাহ তা‘আলার দেয়া এই সমস্ত নেয়ামত ভোগ করার পর কেবল তাঁরই ইবাদত করা। আর তাঁর সাথে কাউকে অংশীদার না করা।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. দুধ একটি স্বচ্ছ ও নির্মল সুস্বাদু খাদ্য যা আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে দিয়েছেন।
২. যিনি সকল কিছুর স্রষ্টা, তিনিই সকল ইবাদত পাওয়ার হকদার।
তাফসীরে‌‌ তাফহীমুল কুরআন‌ বলেছেন:-

# “গোবর ও রক্তের মধ্যস্থিত”—এর অর্থ হচ্ছে, পশু যে খাদ্য খায় তা থেকে তো একদিকে রক্ত তৈরী হয় এবং অন্যদিকে তৈরী হয় মলমূত্র। কিন্তু এ পশুদের স্ত্রী জাতির মধ্যে আবার এ একই খাদ্য থেকে তৃতীয় একটি জিনিসও তৈরী হয়। বর্ণ, গন্ধ, গুণ উপকারিতা ও উদ্দেশ্যের দিক দিয়ে আগের দু’টি থেকে এটি সম্পূর্ণ আলাদা। তারপর বিশেষ করে গবাদি পশুর মধ্যে এর উৎপাদন এত বেশী হয় যে, তারা নিজেদের সন্তানদের প্রয়োজন পূর্ণ করার পর মানুষের জন্য এ উৎকৃষ্টতম খাদ্য বিপুল পরিমাণে সরবরাহ করতে থাকে।
# এখানে আনুসঙ্গিকভাবে এ ব্যাপারেও একটি পরোক্ষ আভাস দেয়া হয়েছে যে, ফলের এ রসের মধ্যে এমন উপাদানও রয়েছে যা মানুষের জন্য জীবনদায়ী খাদ্য পরিণত হতে পারে, আবার এমন উপাদানও আছে যা পচে মাদক দ্রব্যে পরিণত হয়। এখন মানুষ এ উৎসটি থেকে পাক-পবিত্র রিযিক গ্রহণ করবে, না বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তিকে বিনষ্টকারী মদ গ্রহণ করবে, তা তার নিজের নির্বাচন ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। শরাব বা মদ যে পাক-পবিত্র রিযিক নয়, এখানে তাও জানা গেলো এবং এটি তার হারাম হওয়ার দিকে আর একটি পরোক্ষ ইঙ্গিত।

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-

সকল গৃহ পালিত পশুর মধ্যেও রয়েছে আর একটি শিক্ষা,যা মহান-সৃষ্টিকর্তার বিস্ময়কর সৃষ্টি কৌশলের দিকে ইংগীত করছে এবং এইসব আজব সৃষ্টিনৈপুণ্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে আমাদেরকে সঠিক চেতনা দান করছে। দেখুন, এ বিষয়ে এরশাদ হচ্ছে, ‘অবশ্যই তােমাদের জন্যে জন্তু জানােয়ারের মাঝে (প্রচুর) শিক্ষার বিষয় রয়েছে। তাদের উদরস্থিত গােবর ও রক্তের মধ্যে থেকে নিঃসৃত খাটি দুধ আমি তােমাদের পান করাই…’ এখন চিন্তা করুন, এই সুপেয় দুধ কিভাবে এই পশুগুলাের ওলানের মধ্যে এসে জড়ো হয়? গােবরের আধার পাকস্থলি এবং এর পাশাপাশি শিরাসমূহের মধ্য দিয়ে প্রবাহমান রক্তের স্রোত ধারার মধ্যবর্তী এক পথ বেয়ে দুধের প্রস্রবণ ওলানের মধ্যে গিয়ে জড়ো হয়; আর ঘাস পাতা হজম হয়ে যাওয়ার পর কুচকানাে নাড়িভুড়ির মধ্যে গিয়ে গােবরে পরিণত হয় এবং এ সব মুক্ত দ্রব্য হজম করার জন্যে পাকস্থলীর মধ্যে সংকোচন ও সম্প্রসারণ চলতে থাকে, যার ফলে সেগুলাের এক অংশ রক্তে পরিণত হয়ে, তা প্রবাহিত হয়ে শরীরের সকল কোষের মধ্যে পৌছে যায়। তারপর এই রক্ত যখন স্তন বা ওলানের মধ্যে অবস্থিত দুধের নালির মধ্যে প্রবেশ করে তখন আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এক আশ্চর্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই রক্ত দুধে পরিণত হয়ে যায়, কিন্তু কিভাবে এই রূপান্তরের কাজটা সংঘটিত হয় তা একমাত্র তিনি ছাড়া আর কেউ জানেন না। যে প্রক্রিয়ায় খাদ্যের নির্যাস শরীরের মধ্যে এসে রক্তে রূপান্তরিত হয়, আর এই রক্তের কোষ থেকে যে প্রক্রিয়ায় নির্যাস বের হয়ে দুধে পরিণত হয় তা বড়ই আশ্চর্যজনক। এ প্রক্রিয়া পর্যায়ক্রমে চলতে থাকে যেমন চলতে থাকে অন্ত্রের মধ্যে জ্বালানীর কাজ। আর প্রতিমুহূর্তে এই আশ্চর্য প্রস্তুতি পর্যায়ের কাজ চলতে থাকে। শরীর থেকে রূহ বেরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত শরীরের অভ্যন্তরে এই ভাংগা-গড়ার কাজ অব্যাহত গতিতে সারাক্ষণই চলছে। মানুষ শুধু সৃষ্টি জগতের নিরন্তর ক্রিয়াশীল এই গতিকে বুঝতে পারে কিন্তু ইচ্ছা করলেও তারা এর কোনাে একটিকে থামাতে বা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করাতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে মহান স্রষ্টার আনুগত্য করতে গিয়ে প্রত্যেকটি বস্তু যে নিজ নিজ কাজ করে চলেছে এইটিই তাে হচ্ছে তাদের নীরব তাসবীহ জপা। এইভাবে প্রতিটি অনু-পরমাণু চব্বিশ ঘন্টা আল্লাহর তাসবীহ চলেছে সৃষ্টির সেরা মানুষকে তার মালিকের আনুগত্যের কাজে সাহায্য করার জন্যে। এমন অচিন্তনীয়ভাবে এসব কিছু মানুষকে সাহায্য করে চলেছে যা মানুষ ইচ্ছা করলেও বুঝতে পারে না, অর্থাৎ শরীরের প্রতিটি কোষ নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রতি মুহূর্তে যে কাজগুলাে করে চলেছে তা একমাত্র আল্লাহরই ইচ্ছায় এবং তারই নিয়ন্ত্রণে সম্ভব হচ্ছে। এটা কোনাে মানুষ করাতে পারে না। এরকম অসংখ্য কোষ শরীরের মধ্যে কাজ করে চলেছে যার ফলে মানুষ তার প্রয়ােজনীয় সব কিছুর সময়মতাে সরবরাহ পাচ্ছে। পাকস্থলির মধ্যে খাদ্য দ্রব্য সম্পর্কিত মানুষের বােধগম্য যে সংকোচন সম্প্রসারণ চলছে বলে মানুষ জানে তার বাইরে আরাে এমনও কিছু কাজ চলছে যা মানুষের কল্পনার বাইরে। ওই সব রহস্যপূর্ণ গতিক্রিয়াকে বুঝার চেষ্টা করতে গিয়ে মানুষ হয়রান হয়ে যায় যে এতাে সুনিপুণ ও নিয়ম শৃংখলার সাথে একটি বিশেষ উদ্দেশ্যকে সফল করার জন্যে সব কোষগুলাে কী চমৎকারভাবে পারস্পরিক সহযােগিতা করে চলেছে। পাকস্থলির মধ্যে এসব ক্রিয়া আজও মানুষের কাছে এক কঠিন রহস্য হয়ে রয়ে গেছে। একটু চিন্তা করে দেখুন, চৌদ্দ শত বছর পূর্বে, গােবর ও রক্তের মধ্য থেকে এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় দুধ তৈরি হওয়ার যে বৈজ্ঞানিক সত্যটি উঘাটিত হয়েছিলাে, তা ইতিপূর্বে কোনাে মানুষ জানতাে না। এই অতি সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক ক্রিয়ার মাধ্যমে স্তনের মধ্যে দুধ তৈরীর দূরের কথা কোরআন নাযেল হওয়ার যুগে একথাগুলাের কল্পনাও কারাে মাথায় আসেনি। এ বিষয় সম্পর্কে চিন্তা করা, যুক্তিতর্ক পেশ করা এবং এ রহস্যটি উদ্ঘাটন করার জন্যে কোনাে পরিকল্পনাও কখনও কেউ গ্রহণ করেনি। আসলে শয়তান মানুষকে বর্তমান জীবন ও এর ভােগ বিলাসের মধ্যে এমনভাবে ব্যস্ত রাখে এবং এমনভাবে সর্বক্ষণ ক্ষণস্থায়ী বস্তুগত লাভের জন্যে প্রতিযােগিতা করায় যে সে তার সৃষ্টি রহস্য, দায়িত্ব-কর্তব্য ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তা করার কোনাে অবসরই পায় না। মাঝে মাঝে গ্রীক দার্শনিকরা কিছু কিছু চিন্তা-ভাবনা করেছে, কিন্তু তাও এমন আন্দাজ-অনুমান-ভিত্তিক যে তার অধিকাংশই বিভ্রান্তিন্তে নিমজ্জিত। অতি নিকট অতীত পর্যন্ত ও এই সৃষ্টি রহস্যটা অজানার গহবরে লুকিয়ে ছিলাে আর আজকে আল কোরআন এই বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলাে তুলে ধরে পাঠকদের সামনে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করছে যে, মােহাম্মাদ(স)-এর কাছে আগত ওহী অবশ্যই আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। এ ছাড়াও এর আরাে যেসব বৈশিষ্ট্য আছে সেগুলােও তুলনাহীন। অবশ্য এগুলাে তারাই বুঝতে পারবে যারা এগুলাে জানার ও বুঝার জন্যে চেষ্টা করবে। তারা দেখতে পাবে যে আল কোরআনের সত্যতা প্রমাণ করার জন্যে এবং এর সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ পােষণকারীদের জবাব দেয়ার জন্যে এই একটি তথ্যই যথেষ্ট। এ বিষয়ে দেখুন আল কোরআনের ভাষ্য: ‘আর খেজুর ও আংগুর গাছ থেকে তােমরা যে ফল পাও তার থেকে তােমরা তৈরী করাে।’ আকাশ থেকে বর্ষিত পানি থেকে উৎপন্ন এই সব ফলমূলের দিকে একবার গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখুন পৃথিবীর বুকে অবস্থিত প্রাণীকুলের জন্যে এসব উৎপন্ন দ্রব্যাদি কি ভূমিকা পালন করে চলেছে। এগুলােকে আল্লাহর হুকুম মতাে ব্যবহার না করে তোমরা এ নেয়ামতের না শােকরী করছো, এগুলাে থেকে পবিত্র পরিচ্ছন্ন ও সুস্বাদু পানীয় হাসিল না করে তােমরা এসব ফল থেকে মাদকদ্রব্য তৈরী করাে আরাে তৈরী করো, শরীরের জন্যে গঠন উপাদান সমৃদ্ধ উত্তম শরবত। আল কোরআনের আয়াতে একথা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, ‘খামর’ অর্থাৎ মাদকদ্রব্য বিশেষ করে আংগুরের তৈরী মাদকদ্রব্য ‘রিযকে হাসান’ (উত্তম দ্রব্য) নয়। ‘খামর’ ব্যতীত অন্যান্য পানীয় যাতে মাদকতা আসে না, সেইগুলােই হচ্ছে উত্তম পানীয়। এই আয়াতের মধ্যে ওই নিষিদ্ধ ঘােষণার পূর্বপ্রস্তুতি ব্যক্ত করা হয়েছে যার চূড়ান্ত ঘোষণা পরবর্তীতে এসেছে। যে সময়ে এই আয়াতটি নাযিল হয়েছে। সে সময়ে ওই আংগুর ও খেজুর দিয়ে তৈরী মদকে খামর বলা হতাে, আর এই মদের হালাল হওয়া সম্পর্কে কোরআন হাদীসে কোনাে প্রমাণ পাওয়া যায় না; বরং হারাম হওয়া সম্পর্কে কিছু পরিচয় পাওয়া যায় । এরশাদ হচ্ছে, অবশ্যই এর মধ্যে ওই জাতির জন্যে নিদর্শন রয়েছে যারা বুঝে… এতে তারা বুঝতে পারে যে, যিনি এই রিযিকের ভান্ডার প্রস্তুত করছেন তিনিই নিঃশর্ত ও নিরংকুশ আনুগত্য পাওয়ার যােগ্য, আর তিনিই হলেন একমাত্র আল্লাহ তায়ালা।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
৬৬-৬৭ নং আয়াতের তাফসীর

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “আনআম অর্থাৎ উট, গরু, ছাগল ইত্যাদিও আমার ক্ষমতা ও নিপুণতার নিদর্শন। (আরবি) এর সর্বনাম টি কে হয়তোবা নিয়ামতের অর্থের দিকে ফিরানো হয়েছে অথবা (আরবি) এর দিকে ফিরানো হয়েছে। চতুষ্পদ জন্তুগুলিও (আরবি) -ই বটে। এই চতুষ্পদ জন্তুগুলির পেটের মধ্যে যে আজে বাজে খারাপ জিনিস রয়েছে ওরই মধ্য হতে বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ তোমাদের জন্যে অত্যন্ত সৃদৃশ্য ও সুস্বাদু দুগ্ধ পান করিয়ে থাকেন। অন্য জায়গায় (আরবি) রয়েছে। দু’টোই জায়েয। যেমন রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “না, এই আচরণ অনুচিত, এটা তো উপদেশ বাণী। যে ইচ্ছা করবে সে এটা স্মরণ করবে।” (৮০:১১) অন্য এক জায়গায় রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “আমি তাদের নিকট উপঢৌকন পাঠাচ্ছি; দেখি, দূতেরা কি নিয়ে ফিরে আসে।” (২৭:৩৫-৩৬) এরপর বলা হয়েছে (আরবি) ব্যাপক ক্ষমতা এবং মহিমার পরিচয় পেতে পারে। প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানই হচ্ছে মানুষের প্রকৃতগুণ, তাই ইসলামী শরীয়ত এই জ্ঞানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্যেই নেশা আনয়নকারী ও জ্ঞান লোপকারী জিনিসকে হারাম করেছে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “ওতে (যমীনে) আমি সৃষ্টি করি খজুর ও আঙ্গুরের উদ্যান এবং উৎসারিত করি প্রস্রবণ। যাতে তারা ভক্ষণ করতে পারে এর ফলমূল হতে, অথচ তাদের হস্ত ওটা সৃষ্টি করে নাই; তবুও কি তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে না? পবিত্র ও মহান তিনি, যিনি উদ্ভিদ, মানুষ এবং তারা যাদেরকে জানে না তাদের প্রত্যেককে সৃষ্টি করেছেন জোড়া জোড়া করে।”

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura:- An-Nahl
Sura: 16
Verses :- 66-67
[ مِن بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَّبَنًا خَالِصًا
From between excretions and blood, pure milk;]

Lessons and Blessings in Cattle and the Fruit of the Date-palm and Grapevine

Allah says,

وَإِنَّ لَكُمْ

there is for you (- O mankind -)

فِي الَانْعَامِ

in the cattle,

meaning camels, cows and sheep,

لَعِبْرَةً

a lesson,

meaning a sign and an evidence of the wisdom, power, mercy and kindness of the Creator.

نُّسْقِيكُم مِّمَّا فِي بُطُونِهِ

We have made a drink for you out of what is in its belly,

meaning its singular forms refers to one cattle, or it could refer to the whole species. For cattle are the creatures which provide a drink from what is in their bellies and in another Ayah it is `in their bellies.’ Either way is plausible.

He said,

مِن بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَّبَنًا خَالِصًا

from between excretions and blood, pure milk;

meaning it is free of blood, and is pure in its whiteness, taste and sweetness.

It is between excrement and blood in the belly of the animal, but each of them goes its own way after the food has been fully digested in its stomach. The blood goes to the veins, the milk goes to the udder, the urine goes to the bladder and the feces goes to the anus. None of them gets mixed with another after separating, and none of them is affected by the other.

لَّبَنًا خَالِصًا

سَأيِغًا لِلشَّارِبِينَ

pure milk; palatable to the drinkers.

meaning nothing to cause one to choke on it.

When Allah mentions milk and how He has made it a palatable drink for mankind, He follows this with a reference to the drinks that people make from the fruits of the date palm and grapevine, and what they used to do with intoxicating Nabidh (drink made from dates) before it was forbidden.

Thus He reminds them of His blessings, and says:

وَمِن ثَمَرَاتِ النَّخِيلِ وَالَاعْنَابِ تَتَّخِذُونَ مِنْهُ سَكَرًا

And from the fruits of date palms and grapes, you derive strong drink,

This indicates that it was permissible to drink it before it was forbidden.

It also indicates that strong drink (i.e., intoxicating drink) derived from dates is the same as strong drink derived from grapes.

Also forbidden are strong drinks derived from wheat, barley, corn and honey, as is explained in detail in the Sunnah.

سَكَرًا وَرِزْقًا حَسَنًا

strong drink and a goodly provision.

Ibn Abbas said:

“Strong drink is the product of these two fruits that is forbidden, and the good provision is what is permitted of them.”

According to another report:

“Strong drink is its unlawful, and the goodly provision is its lawful,”

referring to the fruits when they are dried, like dates and raisins, or products derived from them such as molasses, vinegar and wine (of grapes, dates) which are permissible to drink before they become strong (becomes alcoholic), as was stated in the Sunnah.

إِنَّ فِي ذَلِكَ لايَةً لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ

There is indeed a sign in this for those of reason.

It is appropriate to mention reason here, because it is the noblest feature of man. Hence Allah forbade this Ummah from drinking intoxicants, in order to protect their ability to reason.

Allah says:

وَجَعَلْنَا فِيهَا جَنَّـتٍ مِّن نَّخِيلٍ وَأَعْنَـبٍ وَفَجَّرْنَا فِيهَا مِنَ الْعُيُونِ

لِيَأْكُلُواْ مِن ثَمَرِهِ وَمَا عَمِلَتْهُ أَيْدِيهِمْ أَفَلَ يَشْكُرُونَ

سُبْحَـنَ الَّذِى خَلَق الاٌّزْوَجَ كُلَّهَا مِمَّا تُنبِتُ الاٌّرْضُ وَمِنْ أَنفُسِهِمْ وَمِمَّا لَا يَعْلَمُونَ

And We placed gardens of date palms and grapes in it, and We caused springs of water to gush forth in it. So that they may eat of its fruit – while their hands did not make it. Will they not then give thanks Glory be to Him Who created all the pairs of that which the earth produces, as well as their own (human) kind (male and female), and of that which they know not. (36:34-36).

Leave a Reply