أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book# 823)
সুরা: আন- নহল
সুরা:১৬
১০৩ নং আয়াত:-
[ ہٰذَا لِسَانٌ عَرَبِیٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۰۳﴾
আর এ তো স্পষ্ট আরবী ভাষা।
Qur’an is [in] a clear Arabic language.]
www.motaher21.net
وَ لَقَدۡ نَعۡلَمُ اَنَّہُمۡ یَقُوۡلُوۡنَ اِنَّمَا یُعَلِّمُہٗ بَشَرٌ ؕ لِسَانُ الَّذِیۡ یُلۡحِدُوۡنَ اِلَیۡہِ اَعۡجَمِیٌّ وَّ ہٰذَا لِسَانٌ عَرَبِیٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۰۳﴾
আমি তো জানিই, তারা বলে, ‘তাকে শিক্ষা দেয় এক মানুষ।’তারা যার প্রতি এটা আরোপ করে তার ভাষা তো আরবী নয়; আর এ তো স্পষ্ট আরবী ভাষা।
And We certainly know that they say, “It is only a human being who teaches the Prophet.” The tongue of the one they refer to is foreign, and this Qur’an is [in] a clear Arabic language.
১০৩ নং আয়াতের তাফসীর:
তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ বলেছেন:-
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নিজের সত্তার শপথ করে বলছেন যে, তিনি জানেন কাফির-মুশরিকরা বলবে: এ কুরআন আল্লাহ তা‘আলার কিতাব নয় বরং তাকে একজন লোক শিক্ষা দেয় আর সে তা এসে আমাদের নিকট বর্ণনা করে।
তারা বলত, যেমন তাদের কথা আল্লাহ তা‘আলা তুলে ধরে বলেন:
(وَقَالُوْآ أَسَاطِيْرُ الْأَوَّلِيْنَ اكْتَتَبَهَا فَهِيَ تُمْلٰي عَلَيْهِ بُكْرَةً وَّأَصِيْلًا)
“তারা বলে: ‘এগুলো তো সেকালের উপকথা, যা সে লিখিয়ে নিয়েছে; এগুলো সকাল-সন্ধ্যা তার নিকট পাঠ করা হয়।’’ (সূরা ফুরক্বান ২৫:৫) তারা আরো বলত,
(فَقَالَ إِنْ هٰذَآ إِلَّا سِحْرٌ يُّؤْثَرُ)
“এবং বলল: এটা চিরাচরিত জাদু ছাড়া আর কিছু নয়, (সূরা মুদ্দাচ্ছির ৭৪:২৪)
يُلْحِدُوْنَ অর্থ হক থেকে বিচ্যুত, অর্থাৎ যে সকল মানুষের কথা সত্য নয়, সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়, এমনকি তারা আরবি ভাষায় কথাও বলতে পারে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কুরআন কারো শিক্ষা দেয়া কিতাব নয়, বরং আল্লাহ তা‘আলার কালাম, তিনিই এটি নাযিল করেছেন।
২. কুরআন আরবি ভাষায় অবতীর্ণ যার ভাষা অলঙ্কার ও সাহিত্যশৈলী সুউচ্চ।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-
# হাদীসে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, মক্কার কাফেররা তাদের মধ্য থেকে কারো সম্পর্কে এ ধারণা করতো। এক হাদীসে তার নাম বলা হয়েছে ‘জাবার’। সে ছিল আমের আল হাদ্রামীর রোমীয় ক্রীতদাস। অন্য এক হাদীসে খুয়াইতিব ইবনে আবদুল উযযার এক গোলামের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তার নাম ছিল ‘আইশ’ বা ইয়া’ঈশ। তৃতীয় এক হাদীসে ইয়াসারের নাম নেয়া হয়েছে। তার ডাকনাম ছিল আবু ফাকাইহাহ্। সে ছিল মক্কার এক মহিলার ইহুদী গোলাম। অন্য একটি হাদীসে বাল’আন বা বাল’আম নামক এক রোমীয় গোলামের কথা বলা হয়েছে। মোটকথা এদের মধ্য থেকে যেই হোক না কেন, মক্কার কাফেররা শুধুমাত্র এক ব্যক্তি তাওরাত ও ইনজীল পড়ে এবং তার সাথে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাক্ষাতও হয়েছে শুধুমাত্র এটা দেখেই নিঃসংকোচে এ অপবাদ তৈরী করে ফেললো যে, আসলে এ ব্যক্তিই এ কুরআন রচনা করছে এবং মুহাম্মাদ ﷺ আল্লাহর নাম নিয়ে নিজের পক্ষ থেকে এটিই পেশ করছেন। এ থেকে নবী করীমের ﷺ বিরোধীরা তাঁর ওপর দোষারোপ করার ব্যাপারে কত নির্লজ্জ নির্ভীক ছিল, কেবল তাই অনুমিত হয় না বরং নিজেদের সমকালীনদের মূল্য ও মর্যাদা নির্ণয় করার ক্ষেত্রে মানুষ যে কতটা ন্যায়নীতিহীন ও ইনসাফ বিবর্জিত হয়ে থাকে সে শিক্ষাও পাওয়া যায়। তাদের সামনে ছিল মানব ইতিহাসের এমন এক বিরাট ব্যক্তিত্ব যার নজির সে সময় সারা দুনিয়ায় কোথাও ছিল না এবং আজ পর্যন্তও কোথাও পাওয়া যায়নি। কিন্তু সেই কাণ্ডজ্ঞানহীন নির্বোধেরা সামান্য কিছু তাওরাত ও ইনজীল পড়তে পারতো এমন একজন অনারব গোলামকে এ মহান ব্যক্তিত্বের মোকাবিলায় যোগ্যতর বিবেচনা করছিল। তারা ধারণা করছিল, এ দুর্লভ রত্নটি ঐ কয়লা খণ্ড থেকেই দ্যুতি লাভ করছে।
তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-
আল্লাহ তাআলা মুশরিকদের একটা মিথ্যারোপের বর্ণনা দিচ্ছেন যে, তারা বলেঃ “মুহাম্মদকে (সঃ) একজন লোক কুরআন শিক্ষা দিয়ে থাকে। একথা বলে যে লোকটির দিকে তারা ইঙ্গিত করতো সে ছিল কুরায়েশের কোন এক গোত্রের একজন ক্রীতদাস। সে ‘সাফা পাহাড়ের কাছে বেচা-কেনা করতো। রাসূলুল্লাহ (সঃ) কোন কোন সময় তার কাছে বসতেন এবং কিছু কথাবার্তা বলতেন। এই লোকটি বিশুদ্ধ আরবী ভাষায় কথা বলতেও পারতো না। ভাঙ্গা ভাঙ্গা আরবীতে কোন রকমে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতো।
মুশরিকদের এই মিথ্যারোপের জবাবে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “এ লোকটি কি শিক্ষা দিতে পারে? সে তো নিজেই কথা বলতে জানে না। তার মাতৃভাষা তো আরবী নয়। আর এই কুরআনের ভাষা আরবী। তা ছাড়া এর বাকরীতি কত সুন্দর। এর ভাষা কত শ্রুতি মধুর। অর্থ, শব্দ ও ঘটনায় এটা সমস্ত গ্রন্থ হতে স্বতন্ত্র। বাণী ইসরাঈলের আসমানী গ্রন্থগুলো হতেও এর মর্যাদা ও মরতবা বহু উর্ধ্বে। তোমাদের যদি সামান্য জ্ঞানও থাকতো তবেহাতে প্রদীপ নিয়ে এভাবে চুরি করতে বের হতে না এবং এরূপ মিথ্যা কথা বলতে না। তোমাদের এ কথা তো নির্বোধদের কাছেও টিকবে না।” “সীরাতে ইবনু ইসহাক’ গ্রন্থে রয়েছে যে, হিব্রু নামক একজন খৃষ্টান ক্রীতদাস ছিল। সে ছিল বানূ হারামী গোত্রের কোন একজন লোকের গোলাম। মারওয়া পাহাড়ের নিকটে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তার পাশে বসতেন। মুশরিকরা রটিয়ে দেয় যে, এই লোকটিই মুহাম্মদকে (সঃ) কুরআন শিক্ষা দিয়ে থাকে। তাদের এই কথার প্রতিবাদে এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। কথিত আছে যে, তার নাম ইয়াঈশ ছিল। এটা কাতাদা’র (রঃ) উক্তি।
হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, মক্কায় বালআম নামক একজন কর্মকার বাস করতো। সে ছিল আজমী লোক (তার মাতৃভাষা আরবী ছিল না)। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে শিক্ষা দান করতেন। তার কাছে রাসূলুল্লাহর (সঃ) যাতায়াত দেখে কুরায়েশরা গুজব রটিয়ে দিলো যে, তাঁকে এই লোকটি কিছু শিখিয়ে থাকে এবং তিনি এটাকেই আল্লাহর কালাম বলে নিজের লোকদেরকে শিখিয়ে থাকেন। যাহহাক ইবন মাযাহিম (রঃ) বলেন, এর দ্বারা। হযরত সালমান ফারসীকে (রাঃ) বুঝানো হয়েছে। কিন্তু এটা খুবই দুর্বল উক্তি। কেন না, এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয় মক্কায়, আর হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) রাসূলুল্লার (সঃ) সাথে মিলিত হন মদীনায়।
আব্দুল্লাহ ইবনু মুসলিম (রাঃ) বলেনঃ “আমাদের কাছে দু’জন রূমী গোলাম ছিল, যারা তাদের ভাষায় তাদের কিতাব পাঠ করতো। রাসূলুল্লাহও (সঃ) তাদের কাছে মাঝে মাঝে যাতায়াত করতেন এবং পাশে দাঁড়িয়ে কিছু শুনেও নিতেন। তখন মুশরিকরা গুজব রটিয়ে দেয় যে, তিনি তাদের কাছে কুরআন শিক্ষা করে থাকেন। সেই সময় এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
সাঈদ ইবনু মুসাইয়াব (রঃ) বলেন, মুশরিকদের মধ্যে একটি লোক ছিল, যে ওয়াহী লিখতো। এরপর সে ইসলাম পরিত্যাগ করে এবং এইকথা বানিয়ে নেয়। তার উপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষিত হোক।
English Tafsir Ibne Kasir said:-
The Idolators’ Claim that the Qur’an was taught by a Human, and the Refutation of their Claim
Allah says:
وَلَقَدْ نَعْلَمُ أَنَّهُمْ يَقُولُونَ إِنَّمَا يُعَلِّمُهُ بَشَرٌ
And indeed We know that they (polytheists and pagans) say:”It is only a human being who teaches him.”
Allah tells about the idolators’ lies, allegations, and slander when they claimed that this Qur’an which Muhammad had recited for them, was actually taught to him by a human.
They referred to a foreign (i.e., non-Arab) man who lived among them as the servant of some of the clans of Quraysh and who used to sell goods by As-Safa. Maybe the Messenger of Allah used to sit with him sometimes and talk to him a little, but he was a foreigner who did not know much Arabic, only enough simple phrases to answer questions when he had to.
So in refutation of their claims of fabrication, Allah said:
لِّسَانُ الَّذِي يُلْحِدُونَ إِلَيْهِ أَعْجَمِيٌّ وَهَـذَا لِسَانٌ عَرَبِيٌّ مُّبِينٌ
The tongue of the man they refer to is foreign, while this (the Qur’an) is a (in) clear Arabic tongue.
meaning, how could it be that this Qur’an with its eloquent style and perfect meanings, which is more perfect than any Book revealed to any previously sent Prophet, have been learnt from a foreigner who hardly speaks the language! No one with the slightest amount of common sense would say such a thing.