Book#590

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

(Book# 114/٣٨٧)-৫৯০
www.motaher21.net
সুরা: আল্‌ – আনফাল।
সুরা:৮
৭২ নং আয়াত:-
أُوْلَـيِكَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاء بَعْضٍ
তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু।
These are (all) allies to one another.

اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ ہَاجَرُوۡا وَ جٰہَدُوۡا بِاَمۡوَالِہِمۡ وَ اَنۡفُسِہِمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ الَّذِیۡنَ اٰوَوۡا وَّ نَصَرُوۡۤا اُولٰٓئِکَ بَعۡضُہُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ ؕ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ لَمۡ یُہَاجِرُوۡا مَا لَکُمۡ مِّنۡ وَّلَایَتِہِمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ حَتّٰی یُہَاجِرُوۡا ۚ وَ اِنِ اسۡتَنۡصَرُوۡکُمۡ فِی الدِّیۡنِ فَعَلَیۡکُمُ النَّصۡرُ اِلَّا عَلٰی قَوۡمٍۭ بَیۡنَکُمۡ وَ بَیۡنَہُمۡ مِّیۡثَاقٌ ؕ وَ اللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ ﴿۷۲﴾

নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, (দ্বীনের জন্য স্বদেশত্যাগ) হিজরত করেছে, জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে[১] এবং যারা (মুমিনদেরকে) আশ্রয় দান করেছে ও সাহায্য করেছে[২] তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু।[৩] আর যারা ঈমান এনেছে; কিন্তু হিজরত করেনি, তারা হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের অভিভাবকত্বের কোন দায়িত্ব তোমাদের নেই।[৪] দ্বীন সম্বন্ধে যদি তারা তোমাদের সাহায্য প্রার্থনা করে, তাহলে তাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের জন্য আবশ্যক;[৫] কিন্তু যে সম্প্রদায় ও তোমাদের মধ্যে চুক্তি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নয়। [৬] তোমরা যা কর, আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

এ আয়াতটি ইসলামের সাংবিধানিক আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা। এখানে একটি মূলনীতি নির্ধারিত হয়েছে। সেটি হচ্ছে, “অভিভাবকত্বের” সম্পর্ক এমন সব মুসলমানদের মধ্যে স্থাপিত হবে যারা দারুল ইসলামের বাসিন্দা অথবা বাইর থেকে হিজরত করে দারুল ইসলামে এসেছে। আর যেসব মুসলমান ইসলামী রাষ্ট্রের সীমানার বাইরে বাস করে, তাদের সাথে অবশ্যি ধর্মীয় ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত থাকবে কিন্তু অভিভাকত্বের সম্পর্ক থাকবে না। অনুরূপভাবে যেসব মুসলমান হিজরত করে দারুল ইসলামে আসবে না বরং দারুল কুফরের প্রজা হিসেবে দারুল ইসলামে আসবে তাদের সাথেও সম্পর্ক থাকবে না। অভিভাবকত্ব শব্দটিকে এখানে মূলে “ওয়ালায়াত” (وَلَايَت) শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। আরবীতে “ওয়ালায়াত” অভিভাকত্ব বলতে “সাহায্য” সহায়তা, সমর্থন, পৃষ্ঠপোষকতা, মৈত্রী, বন্ধুত্ব, নিকট আত্মীয়তা, অভিভাবকত্ব এবং এ সবের সাথে সামঞ্জস্যশীল অর্থ বুঝায়। এ আয়াতের পূর্বাপর আলোচনায় সুস্পষ্টভাবে এ থেকে এমন ধরনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বুঝানো হয়েছে, যা একটি রাষ্ট্রের তার নাগরিকদের সাথে, নাগরিকদের নিজেদের রাষ্ট্রের সাথে এবং নাগরিকদের নিজেদের মধ্যে বিরাজ করে। কাজেই এ আয়াতটি “সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অভিভাকত্ব”কে ইসলামী রাষ্ট্রের ভূখণ্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেয়। এ সীমানার বাইরে মুসলমানদেরকে এ বিশেষ সম্পর্কের বাইরে রাখে। এ অভিভাবকত্ব না থাকার আইনগত ফলাফল অত্যন্ত ব্যাপক। এখানে এগুলোর বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ নেই। উদাহরণ হিসেবে শুধুমাত্র এতটুকু ইঙ্গিত করাই যথেষ্ট হবে যে, এ অভিভাবকত্বহীনতার ভিত্তিতে এ দারুল কুফর ও দারুল ইসলামের মুসলমানরা পরস্পরের উত্তরাধিকারী হতে পারে না এবং তারা একজন অন্যজনের আইনানুগ অভিভাবক হতে পারে না, পরস্পরের মধ্যে বিয়ে-শাদী করতে পারে না এবং দারুল কুফরের সাথে নাগরিকত্বের সম্পর্ক ছিন্ন করেনি এমন কোন মুসলমানকে ইসলামী রাষ্ট্র নিজেদের কোন দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত করতে পারে না। ( এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে হলে পড়ুন লেখকের “রাসায়েল ও মাসায়েল” ২য় খণ্ডের “দারুল ইসলাম ও দারুল কুফরে মুসলমানদের মধ্যে উত্তরাধিকার ও বিয়ে-শাদির সম্পর্ক” নিবন্ধনটি।-অনুবাদক

তাছাড়া এ আয়াতটি ইসলামী রাষ্ট্রের বিদেশ নীতির ওপরও উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করে। এর দৃষ্টিতে ইসলামী রাষ্ট্রের সীমানার মধ্যে যেসব মুসলমান অবস্থান করে, তাদের দায়িত্বই ইসলামী রাষ্ট্রের ওপর বর্তায়। বাইরের মুসলমানদের কোন দায়িত্ব ইসলামী রাষ্ট্রের ওপর বার্তায় না। একথাটিই নবী (সা.) তার নিম্নোক্ত হাদীসে বলেছেনঃ

أَنَا بَرِىءٌ مِنْ كُلِّ مُسْلِمٍ بَيْنَ أَظْهُرِ نى الْمُشْرِكِينَ

অর্থাৎ “আমার ওপর এমন কোন মুসলমানের সাহায্য-সমর্থন ও হেফাজতের দায়িত্ব নেই যে মুশরিকদের মধ্যে বসবাস করে।” এভাবে সাধারণত যেসব বিবাদের কারণে আন্তর্জাতিক জটিলতা দেখা দেয়, ইসলামী আইন তার শিকড় কেটে দিয়েছে। কারণ যখনই কোন সরকার নিজের রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরে অবস্থানকারী কিছু সংখ্যালঘুর দায়িত্ব নিজের মাথায় নিয়ে নেয়, তখনই এর কারণে এমন সব জটিলতা দেখা দেয়, বার বার যুদ্ধের পরও যার কোন মীমাংসা হয় না।)

* এ আয়াতে দারুল ইসলামের বাইরে অবস্থানকারী মুসলমানদের “রাজনৈতিক অভিভাবকত্বের” সম্পর্কমুক্ত গণ্য করা হয়েছিল। এখন এ আয়াতটি বলছে যে, তারা এ সম্পর্কের বাইরে অবস্থান করা সত্ত্বেও ইসলামী ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কের বাইরে অবস্থান করছে না। যদি কোথাও তাদের ওপর জুলুম হতে থাকে এবং ইসলামী ভ্রাতৃ সমাজের সাথে সম্পর্কের কারণে তারা দুরুল ইসলামের সরকারের ও তার অধিবাসীদের কাছে সাহায্য চায় তাহলে নিজেদের এ মজলুম ভাইদের সাহায্য করা তাদের জন্য ফরয হয়ে যাবে। কিন্তু এরপর আরো বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে, চোখ বন্ধ করে এসব দ্বীনী ভাইদের সাহায্য করা যাবে না। বরং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আরোপিত দায়িত্ব ও নৈতিক সীমারেখার প্রতি নজর রেখেই এ দায়িত্ব পালন করা যাবে। জুলুমকারী জাতির সাথে যদি সীমারেখার রাষ্ট্রের চুক্তিমূলক সম্পর্ক থাকে তাহলে এ অবস্থায় এ চুক্তির নৈতিক দায়িত্ব ক্ষুন্ন করে মজলুম মুসলমানদের কোন সাহায্য করা যাবে না। আয়াতে চুক্তির জন্য (مِيثُاق) (মীসাক) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর মূল হচ্ছে (وُثُوق) ‘ওসুক’। এর মানে আস্থা ও নির্ভরতা। এমন প্রত্যেকটি জিনিসকে “মীসাক” বলা হবে যার ভিত্তিতে কোন জাতির সাথে আমাদের সুস্পষ্ট যুদ্ধ নয় চুক্তি না থাকলেও তারা প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ী আমাদের ও তাদের মধ্যে কোন যুদ্ধ নেই এ ব্যাপারে যথার্থ আস্থাশীল হতে পারে।

তারপর আয়াতে বলা হয়েছে بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ مِيثَاقٌ অর্থাৎ তোমাদের ও তাদের মধ্যে চুক্তি থাকে এ থেকে পরিষ্কার জানা যাচ্ছে, ইসলামী রাষ্ট্রের সরকার কোন অমুসলিম সরকারের সাথে যে চুক্তি স্থাপন করে তা শুধুমাত্র দু’টি সরকারের মধ্যকার সম্পর্ক নয় বরং দু’টি জাতির সম্পর্কও। মুসলমান সরকারের সাথে সাথে মুসলিম জাতি ও তার সদস্যরাও এর নৈতিক দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। মুসলিম সরকার অন্য দেশ বা জাতির সাথে যে চুক্তি সম্পাদন করে ইসলামী শরীয়াত তার নৈতিক দায়িত্ব থেকে মুসলিম জাতি বা তার ব্যক্তিবর্গকে মুক্ত থাকার আদৌ বৈধ গণ্য করে না। তবে দারুল ইসলাম সরকারের চুক্তিগুলো মেনে চলার দায়িত্ব একমাত্র তাদের ওপর বর্তাবে যারা এ রাষ্ট্রের কর্মসীমার মধ্যে অবস্থান করবে। এ সীমার বাইরে বসবাসকারী সারা দুনিয়ার মুসলমানরা কোনক্রমেই এ দায়িত্বে শামিল হবে না। এ কারণেই হোদাইবিয়ায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কার কাফেরদের সাথে যে চুক্তি করেছিলেন হযরত আবু বুসাইর ও আবু জানদাল এবং অন্যান্য মুসলমানদের ওপর তার কোন দায়িত্ব অর্পিত হয়নি, যারা মদীনার দারুল ইসলামের প্রজা ছিলেন না।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-
[১] এই সাহাবাদেরকে ‘মুহাজিরীন’ বলা হয়; যাঁরা ফযীলতের দিক দিয়ে সাহাবাদের মধ্যে প্রথম নম্বরে আছেন।

[২] এঁদেরকে ‘আনসার’ (সাহায্যকারী) বলা হয়; এঁরা সাবাহাবাদের মধ্যে দ্বিতীয় নম্বরে আছেন।

[৩] অর্থাঁৎ, একে অপরের পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী। কেউ কেউ বলেন, একে অপরের ওয়ারেস বা উত্তরাধিকারী। যেমন হিজরতের পর রসূল (সাঃ) একজন মুহাজির ও একজন আনসারীর মাঝে ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক কায়েম করে দিয়েছিলেন। এমনকি তাঁরা একে অপরে উত্তরাধিকারীও হতেন। (অবশ্য পরবর্তীতে উত্তরাধিকারের বিধান রহিত হয়ে যায়)।

[৪] এই সাহাবাগণ তৃতীয় পর্যায়ের ছিলেন; যাঁরা মুহাজিরীন ও আনসার ছিলেন না। এঁরা মুসলমান হওয়ার পর নিজেদের এলাকা ও গোত্রের বাসিন্দা ছিলেন। এই জন্য বলা হল যে, তাদের অভিভাবকত্বের কোন দায়িত্ব তোমাদের উপর নেই; অর্থাৎ, এরা তোমাদের পৃষ্ঠপোষক কিম্বা উত্তরাধিকারী হওয়ার উপযুক্ত নয়।

[৫] অর্থাৎ, মুশরিকদের বিরুদ্ধে যদি তাদের জন্য তোমাদের সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তাহলে তাদেরকে সাহায্য করা জরুরী।

[৬] হ্যাঁ! যদি তারা এমন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাহায্যকামী হয়, যাদের ও তোমাদের মাঝে সন্ধি ও যুদ্ধ-বিরতির চুক্তি থাকে, তাহলে সেই মুসলিমদের পৃষ্ঠপোষকতার তুলনায় চুক্তি পালন করা অধিক জরুরী।

তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-

 

এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা কয়েক শ্রেণির মুসলিমের কথা উল্লেখ করেছেন।

১. যারা আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে স্বদেশ ত্যাগ করেছেন, তারা ধন-সম্পদ সব কিছু দিয়ে আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করেছেন। এরা হলেন মুহাজির যারা মক্কা ছেড়ে মদীনায় চলে এসেছেন।

২. যারা আগত মুহাজিরদেরকে আশ্রয় ও সার্বিক সহযোগিতা করেছেন, তারা হলেন আনসার। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: এরা পরস্পর একে অপরের বন্ধু। এজন্য নাবী (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব তৈরি করে দেন। আনসার ও মুহাজিররা প্রত্যেকে ভাই ভাই হিসেবে বসবাস করত এবং মিরাসের বিধান অবতীর্ণ হবার পূর্বে একে অপরের সম্পদের ওয়ারিশ হত।

নাবী (সাঃ) বলেন: মুহাজির ও আনসার একে অপরের বন্ধু। মক্কা বিজয়ের পর আযাদকৃত কুরাইশ ও আযাদকৃত বনু সাকীফ কিয়ামত পর্যন্ত একে অপরের বন্ধু। (মুসনাদ আহমাদ হা: ১৯২৩৫,সহীহ)

আল্লাহ তা‘আলা কুরআনের অনেক আয়াতে আনসার ও মুহাজিরদের প্রশংসা করেছেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(وَالسّٰبِقُوْنَ الْأَوَّلُوْنَ مِنَ الْمُهٰجِرِيْنَ وَالْأَنْصَارِ وَالَّذِيْنَ اتَّبَعُوْهُمْ بِإِحْسَانٍ لا رَّضِيَ اللّٰهُ عَنْهُمْ وَرَضُوْا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِيْ تَحْتَهَا الْأَنْهٰرُ خٰلِدِيْنَ فِيْهَآ أَبَدًا ط ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ ‏)‏

“মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসরণ করে আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও তাঁর ওপর সন্তুষ্ট এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাত, যার নিুদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত হয়, যেথায় তারা চিরস্থায়ী হবে। এটাই হল মহাসাফল্য।”(সূরা তাওবাহ ৯:১০০)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:

(لَقَدْ تَّابَ اللّٰهُ عَلَي النَّبِيِّ وَالْمُهٰجِرِيْنَ وَالْأَنْصَارِ الَّذِيْنَ اتَّبَعُوْهُ فِيْ سَاعَةِ الْعُسْرَةِ مِنْۭ بَعْدِ مَا كَادَ يَزِيْغُ قُلُوْبُ فَرِيْقٍ مِّنْهُمْ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ ط إِنَّه۫ بِهِمْ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ)‏

“আল্লাহ অবশ্যই অনুগ্রহপরায়ণ হলেন নাবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি যারা তার অনুসরণ করেছিল সংকটকালে- এমনকি যখন তাদের এক দলের চিত্ত-বৈকল্যের উপক্রম হয়েছিল। পরে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করলেন; তিনি তো তাদের প্রতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।”(সূরা তাওবাহ ৯:১১৭)

এছাড়াও সূরা হাশরের ৮ ও ৯ নং আয়াতে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে।

৩. যারা ঈমান এনেছে কিন্তু হিজরত করেনি বরং নিজ দেশেই অবস্থান করেছেন। হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের অভিভাকত্বের দায়িত্ব তোমাদের নেই। তবে যদি এরা দীন রক্ষার্থে সাহায্য চায় তাহলে সাহায্য করা ওয়াাজিব। কিন্তু যদি এমন লোকেদের সাথে মোকাবেলা করার আবেদন জানায় যাদের সাথে চুক্তি রয়েছে তখন সাহায্য করা যাবে না। পক্ষান্তরে যারা কাফির তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু।

(وَإِنِ اسْتَنْصَرُوْكُمْ فِي الدِّيْنِ)

“আর দীন সম্বন্ধে যদি তারা তোমাদের সাহায্য প্রার্থনা করে তবে তাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য” অর্থাৎ কাফিরদের এলাকা থেকে যে সকল মুসলিমরা হিজরত করেনি তারা যদি দীনের ব্যাপারে কোন সহযোগিতা চায় তাহলে তাদেরকে সহযোগিতা করা তোমাদের জন্য আবশ্যক।

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. পরিপূর্ণতা ও মর্যাদার দিক দিয়ে মু’মিনদের মাঝে পার্থক্য রয়েছে।
২. যারা ঈমান ও আমলে অগ্রগামী তারাই মর্যাদায় সর্বশ্রেষ্ঠ।
৩. দীনের ব্যাপারে মুসলিমদের সাহায্য করা ওয়াজিব।

 

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Al-Anfal
Sura:8
Verses :- 72

أُوْلَـيِكَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاء بَعْضٍ
These are (all) allies to one another.

The Muhajirin and Al-Ansar are the Supporters of One Another

Allah says;

إِنَّ الَّذِينَ امَنُواْ وَهَاجَرُواْ وَجَاهَدُواْ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَالَّذِينَ اوَواْ وَّنَصَرُواْ أُوْلَـيِكَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاء بَعْضٍ

8:72 Verily, those who believed, and emigrated and strove hard and fought with their property and their lives in the cause of Allah as well as those who gave (them) asylum and help, — these are (all) allies to one another.

Here Allah mentions the types of believers, dividing them into the Muhajirin, who left their homes and estates, emigrating to give support to Allah and His Messenger to establish His religion. They gave up their wealth and themselves in this cause. There are also the Ansar, the Muslims of Al-Madinah, who gave asylum to their Muhajirin brethren in their own homes and comforted them with their wealth. They also gave aid to Allah and His Messenger by fighting alongside the Muhajirun. Certainly they are,
بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاء بَعْضٍ
(allies to one another), for each one of them has more right to the other than anyone else.

This is why Allah’s Messenger forged ties of brotherhood between the Muhajirin and Ansar, as Al-Bukhari recorded from Ibn Abbas.

They used to inherit from each other, having more right to inheritance than the deceased man’s relatives, until Allah abrogated that practice with the fixed share for near relatives.

Imam Ahmad recorded that Jarir bin Abdullah Al-Bajali said that the Messenger of Allah said,

الْمُهَاجِرُون وَالاَْنْصَارُ أَوْلِيَاءُ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ وَالطُّلَقَاءُ مِنْ قُرَيْشٍ وَالْعُتَقَاءُ مِنْ ثَقِيفٍ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَة

The Muhajirun and Al-Ansar are the supporters of each other, while the Tulaqa of Quraysh (whom the Prophet set free after conquering Makkah) and Utaqa from Thaqif (whom the Prophet set free from captivity after the battle of Hunayn) are supporters of each other until the Day of Resurrection.

Only Ahmad collected this Hadith.

Allah praised the Muhajirin and the Ansar in several Ayat of His Book and His Messenger (also praised them too).

Allah said,

وَالسَّـبِقُونَ الاٌّوَّلُونَ مِنَ الْمُهَـجِرِينَ وَالَانْصَـرِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُم بِإِحْسَانٍ رَّضِىَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُواْ عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّـتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الَانْهَـرُ

And the foremost to embrace Islam of the Muhajirun and the Ansar and also those who followed them exactly. Allah is well-pleased with them as they are well-pleased with Him. He has prepared for them gardens under which rivers flow (Paradise). (9:100)

لَقَدْ تَابَ الله عَلَى النَّبِىِّ وَالْمُهَـجِرِينَ وَالاٌّنصَـرِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ فِى سَاعَةِ الْعُسْرَةِ

Allah has forgiven the Prophet, the Muhajirin and the Ansar who followed him in the time of distress. (9:117)

and,

لِلْفُقَرَاءِ الْمُهَـجِرِينَ الَّذِينَ أُخْرِجُواْ مِن دِيَـرِهِمْ وَأَمْوَلِهِمْ يَبْتَغُونَ فَضْلً مِّنَ اللَّهِ وَرِضْوَناً وَيَنصُرُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُوْلَـيِكَ هُمُ الصَّـدِقُونَ

وَالَّذِينَ تَبَوَّءُوا الدَّارَ وَالاِيمَـنَ مِن قَبْلِهِمْ يُحِبُّونَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ وَلَا يَجِدُونَ فِى صُدُورِهِمْ حَاجَةً مِّمَّأ أُوتُواْ وَيُوْثِرُونَ عَلَى أَنفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ

(And there is also a share in this booty) for the poor Muhajirin, who were expelled from their homes and their property, seeking bounties from Allah and (His) good pleasure, and helping Allah and His Messenger. Such are indeed the truthful.

And those who, before them, had homes (in Al-Madinah) and adopted the faith, love those who emigrate to them, and have no jealousy in their breasts for that which they have been given, and give them (emigrants) preference over themselves even though they were in need of that. (59:8-9)

The best comment on Allah’s statement,
وَلَا يَجِدُونَ فِى صُدُورِهِمْ حَاجَةً مِّمَّأ أُوتُواْ
(…and have no jealousy in their breasts for that which they have been given) is that it means,

they do not envy the Muhajirin for the rewards that Allah gave them for their emigration.

These Ayat indicate that the Muhajirin are better in grade than the Ansar, and there is a consensus on this ruling among the scholars.
The Believers Who did not emigrate did not yet receive the Benefits of Wilayah

Allah said,

وَالَّذِينَ امَنُواْ وَلَمْ يُهَاجِرُواْ مَا لَكُم مِّن وَلَايَتِهِم مِّن شَيْءٍ حَتَّى يُهَاجِرُواْ

And as to those who believed but did not emigrate, you owe no duty of protection to them until they emigrate,

This is the third category of believers, those who believed, but did not perform Hijrah and instead remained in their areas. They do not have any share in the war booty or in the fifth (designated for Allah and His Messenger, the relatives of the Prophet, the orphans, the poor and the wayfarer), unless they attend battle.

Imam Ahmad recorded that Buraydah bin Al-Hasib Al-Aslami said,

“When the Messenger of Allah would send a commander with an expedition force or an army, he would advise him to have Taqwa of Allah and be kind to the Muslims under his command.

He used to say,

اغْزُوا بِاسْمِ اللهِ

فِي سَبِيلِ اللهِ

قَاتِلُوا مَنْ كَفَرَ بِاللهِ

Fight in the Name of Allah,

in the cause of Allah.

Fight those who disbelieve in Allah.

إِذَا لَقِيتَ عَدُوَّكَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ فَادْعُهُمْ إِلَى إِحْدَى ثَلَثِ خِصَالٍ أَوْ خِلَلٍ فَأَيَّتُهُنَّ مَا أَجَابُوكَ إِلَيْهَا فَاقْبَلْ مِنْهُمْ وَكُفَّ عَنْهُمْ

When you meet your Mushrik enemy, then call them to one of three choices, and whichever they agree to, then accept it and turn away from them.

ادْعُهُمْ إِلَى الاِْسْلَمِ فَإِنْ أَجَابُوكَ فَاقْبَلْ مِنْهُمْ وَكُفَّ عَنْهُمْ

Call them to embrace Islam, and if they agree, accept it from them and turn away from them.

ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى التَّحَوُّلِ مِنْ دَارِهِمْ إِلَى دَارِ الْمُهَاجِرِينَ وَأَعْلِمْهُمْ إِنْ فَعَلُوا ذَلِكَ أَنَّ لَهُمْ مَا لِلْمُهَاجِرِينَ وَأَنَّ عَلَيْهِمْ مَا عَلَى الْمُهَاجِرِينَ

Then call them to leave their area and come to areas in which the Muhajirin reside. Make known to them that if they do this, they will have the rights, as well as, the duties of the Muhajirin.

فَإِنْ أَبَوْا وَاخْتَارُوا دَارَهُمْ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّهُمْ يَكُونُونَ كَأَعْرَابِ الْمُسْلِمِينَ يَجْرِي عَلَيْهِمْ حُكْمُ اللهِ الَّذِي يَجْرِي عَلَى الْمُوْمِنِينَ وَلَاإ يَكُونُ لَهُمْ فِي الْفَيْءِ وَالْغَنِيمَةِ نَصِيبٌ إِلاَّ أَنْ يُجَاهِدُوا مَعَ الْمُسْلِمِينَ

If they refuse and decide to remain in their area, make known to them that they will be just like Muslim Bedouins, and that Allah’s law applies to them just as it does to all believers. However, they will not have a share in the war booty orFai’ (booty without war), unless they perform Jihad along with Muslims.

فَإِنْ هُمْ أَبَوْا فَادْعُهُمْ إِلَى إِعْطَاءِ الْجِزْيَةِ فَإِنْ أَجَابُوا فَاقْبَلْ مِنْهُمْ وَكُفَّ عَنْهُمْ

If they refuse all of this, then call them to pay the Jizyah, and if they accept, then take it from them and turn away from them.

فَإِنْ أَبَوْا فَاسْتَعِنْ بِاللهِ ثُمَّ قَاتِلْهُم

If they refuse all these (three) options, then trust in Allah and fight them.

Muslim collected this Hadith.

Allah said next,

وَإِنِ اسْتَنصَرُوكُمْ فِي الدِّينِ فَعَلَيْكُمُ النَّصْرُ

But if they seek your help in religion, it is your duty to help them.

Allah commands, if these Bedouins, who did not perform Hijrah, ask you to aid them against their enemy, then aid them. It is incumbent on you to aid them in this case, because they are your brothers in Islam, unless they ask you to aid them against disbelievers with whom you have a fixed-term treaty of peace. In that case, do not betray your treaties or break your promises with those whom you have treaties of peace.

إِلاَّ عَلَى قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُم مِّيثَاقٌ

except against a people with whom you have a treaty of mutual alliance;

This was reported from Ibn Abbas.

وَاللّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

and Allah is the All-Seer of what you do.

তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-

এখানে আল্লাহ তাআলা মুসলিমদের প্রকারভেদ বর্ণনা করেছেন। প্রথম হলেন মুহাজির যারা আল্লাহর নামে স্বদেশ ত্যাগ করেছেন। তারা একমাত্র আল্লাহর দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার উদ্দেশ্যে নিজেদের ঘরবাড়ী, ব্যবসা-বাণিজ্য, আত্মীয়-স্বজন এবং দোস্ত বন্ধুদের পরিত্যাগ করেছেন। তারা জীবনকে জীবন মনে করেননি এবং মালকে মাল মনে করেননি। দ্বিতীয় হলেন মদীনার আনসারগণ, যারা মুহাজিরদেরকে নিজেদের কাছে আশ্রয় দিয়েছেন, তাঁদের সম্পদের অংশ দিয়েছেন এবং তাঁদের সাথে মিলিত হয়ে তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। তাঁরা সব পরস্পর একই। এ জন্যেই রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁদেরকে পরস্পর ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেছিলেন। একজন মুহাজিরকে একজন আনসারীর ভাই বানিয়ে দিয়েছিলেন। এই বানানো ভাই আত্মীয়তাকেও হার মানিয়েছিল। তারা একে অপরের উত্তরাধিকারী হয়ে যেতেন। পরে এটা মানসূখ (রহিত) হয়ে যায়। ইবনে আবদিল্লাহ আল বাজালী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “মুহাজির ও আনসার একে অপরের ওলী এবং মক্কা বিজয়ের আযাদকৃত কুরায়েশ ও আযাদকৃত বানু সাকীফ কিয়ামত পর্যন্ত একে অপরের ওলী। (এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রাঃ) জারীর ইবনে আবদিল্লাহ বাজালী (রঃ) হতে তাখরীজ করেছেন এবং হাফিজ আবূ ইয়ালা (রঃ) এটা ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে মারফুরূপে বর্ণনা করেছেন) অন্য রিওয়ায়াতে আছে যে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে একে অপরের ওলী। মুহাজি ও আনসারের প্রশংসায় আরো বহু আয়াত রয়েছে। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “পূর্ববর্তী (আল্লাহর) নৈকট্য লাভকারীরা হচ্ছে মুহাজির ও আনসার এবং ইহসানের সাথে যারা তাদের অনুসরণ করেছে, তাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট, তিনি তাদের জন্যে এমন জান্নাতসমূহ তৈরী করে রেখেছেন যেগুলোর নীচ দিয়ে ঝণাসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে।” (৯:১০০) অন্য জায়গায় মহান আল্লাহ বলেন : (আরবী) অর্থাৎ “আল্লাহ নবী (সঃ)-এর উপর এবং ঐ সব মুহাজির ও আনসারের উপর রহমতের দৃষ্টি নিক্ষে করেছেন যারা কঠিন ও সংকটময় মুহূর্তেও তাঁর অনুসরণ পরিত্যাগ করেনি।” (৯:১১৭) আল্লাহ পাক আরো বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “(শুভ সংবাদ রয়েছে) ঐ দরিদ্র মুহাজিরদের জন্যে যাদেরকে তাদের মালধন থেকে এবং দেশ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, যারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর সন্তুষ্টি অনুসন্ধান করে থাকে, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর সাহায্যের কাজে লেগে রয়েছে, এরাই হচ্ছে সত্যবাদী। আর যারা তাদেরকে স্থান দিয়েছে, তাদের প্রতি ভালবাসা রেখেছে, প্রশস্ত অন্তর দিয়ে তাদেরকে দান করেছে, এমন কি নিজেদের প্রয়োজনের উপর তাদের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দিয়েছে অর্থাৎ যে হিজরতের ফযীলত আল্লাহ মুহাজিরদেরকে প্রদান করেছেন তার উপর তারা হিংসা করে না।” (৫৯৪ ৮-৯) এসব আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, আনসারদের উপর মুহাজিরদের প্রাধান্য রয়েছে। মুসনাদে বাযযারে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) হুযাইফা (রাঃ)-কে ‘হিজরত’ ও ‘নুসরত’ এ দু’টির যে কোন একটিকে গ্রহণ করার ইখতিয়ার প্রদান করেন। তখন হুযাইফা (রাঃ) হিজরতকেই পছন্দ করেন।

আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “যারা ঈমান এনেছে, কিন্তু হিজরত করেনি, তারা হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের অভিভাবকত্বের কোন দায়িত্ব তোমাদের নেই।” এটা হচ্ছে মুমিনদের তৃতীয় প্রকার। এরা হচ্ছে ওরাই যারা নিজেদের জায়গাতেই অবস্থানরত ছিল। গনীমতের মালে তাদের কোন অংশ ছিল না এবং এক পঞ্চমাংশেও ছিল না। হ্যা, তবে তারা কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলে সেটা অন্য কথা ।

মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন কাউকে কোন সেনাবাহিনীর সেনাপতি করে পাঠাতেন তখন তিনি তাঁকে উপদেশ দিতেনঃ “দেখো, অন্তরে আল্লাহর ভয় রাখবে এবং মুসলমানদের সাথে সদা শুভাকাঙক্ষামূলক ব্যবহার করবে। যাও, আল্লাহর নাম নিয়ে তার পথে জিহাদ কর, আল্লাহর সাথে কুফরীকারীদের সঙ্গে যুদ্ধ কর। তোমাদের শত্রু মুশরিকদের। সামনে তিনটি প্রস্তাব পেশ কর। এ তিনটির যে কোন একটি গ্রহণ করার তাদের ইখতিয়ার রয়েছে। প্রথমে তাদের সামনে ইসলাম গ্রহণের প্রস্তাব পেশ করবে। যদি তারা তা মেনে নেয় তবে তাদের থেকে বিরত থাকবে এবং তাদের ইসলাম গ্রহণকে স্বীকার করে নেবে। অতঃপর তাদেরকে বলবে যে, তারা যেন কাফিরদের দেশ ত্যাগ করে মুহাজিরদের দেশে চলে যায়। যদি তারা এ কাজ করে তবে মুহাজিরদের জন্যে যেসব হক রয়েছে, তাদের জন্যেও সেই সব হক প্রতিষ্ঠিত হবে এবং মুহাজিরদের উপর যা রয়েছে তাদের উপরও তা-ই থাকবে। অন্যথায় এরা গ্রামাঞ্চলের অন্যান্য মুসলমানদের মত হয়ে যাবে। ঈমানের আহকাম তাদের উপর জারী হবে। ‘ফাই’ ও গনীমতের মালে তাদের কোন অংশ থাকবে না। হ্যা তবে যদি তারা কোন সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তবে সেটা অন্য কথা। আর যদি তারা ইসলাম গ্রহণে সম্মত না হয় তবে তাদেরকে জিযিয়া প্রদানে বাধ্য করবে। যদি তারা এটা মেনে নেয় তবে যুদ্ধ। থেকে বিরত থাকবে এবং তাদের নিকট থেকে জিযিয়া আদায় করবে। যদি তারা এ দুটোই অস্বীকার করে তবে আল্লাহর সাহায্যের উপর ভরসা রেখে এবং সেই সাহায্য তার কাছে প্রার্থনা করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দাও। যে গ্রাম্য মুসলিমরা তাদের জায়গাতেই মুকীম রয়েছে এবং হিজরত করেনি, তারা যদি কোন সময় তোমাদের কাছে দ্বীনের দুশমনের বিরুদ্ধে সাহায্যের প্রত্যাশী হয় তবে তাদের সাহায্য করা তোমাদের উপর ওয়াজিব। কিন্তু যদি তারা এমন জাতির মুকাবিলায় তোমাদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে যে জাতির ও তোমাদের মধ্যে চুক্তি রয়েছে, তবে সাবধান! তোমরা বিশ্বাস ভঙ্গ করো না এবং কসমও ভেঙ্গে দিয়ো না।”

Leave a Reply