Book#599

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم

(Book# 114/٣٢٥)-৫৯৯
www.motaher21.net
সুরা: আত্ তাওবাহ
সুরা:০৯
১৬ নং আয়াত:-

أَمْ حَسِبْتُمْ
তোমরা কি মনে করেছ যে?
Do you think?

اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تُتۡرَکُوۡا وَ لَمَّا یَعۡلَمِ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ جٰہَدُوۡا مِنۡکُمۡ وَ لَمۡ یَتَّخِذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ لَا رَسُوۡلِہٖ وَ لَا الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَلِیۡجَۃً ؕ وَ اللّٰہُ خَبِیۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿٪۱۶﴾

তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমাদেরকে এমনি ছেড়ে দেওয়া হবে, অথচ এখনও আল্লাহ জেনে নেননি যে, তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে এবং কে আল্লাহ, তাঁর রসূল ও বিশ্বাসিগণ ব্যতীত অন্য কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করেনি? আর তোমরা যা কর, সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।

তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ বলেছেন:-

১৬ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদেরকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারপর জান্নাত দেবেন- সে কথাই এখানে প্রকাশ পেয়েছে। প্রকৃত ঈমানদারদের জন্য মর্যাদা বৃদ্ধি ও মুনাফিকদের মুখোশ উন্মোচন করার জন্য আল্লাহ তা‘আলা জিহাদকে শরীয়ত সিদ্ধ করে দিয়েছেন। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(أَحَسِبَ النَّاسُ أَنْ يُّتْرَكُوْآ أَنْ يَّقُوْلُوْآ اٰمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُوْنَ , ‏ وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَلَيَعْلَمَنَّ اللّٰهُ الَّذِيْنَ صَدَقُوْا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكٰذِبِيْنَ )‏

“মানুষ কি মনে করে যে, আমরা ঈমান এনেছি- এ কথা বললেই তাদেরকে পরীক্ষা না করেই অব্যাহতি দেয়া হবে? আমি তো এদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম; আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন কারা সত্যবাদী এবং তিনি অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন কারা মিথ্যাবাদী।”(সূরা আনকাবুত ২৯:২-৩)

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللّٰهُ الَّذِيْنَ جٰهَدُوْا مِنْكُمْ وَيَعْلَمَ الصّٰبِرِيْنَ)

“তোমরা কি ধারণা করছো যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ জানবেন না তোমাদের মধ্য হতে কে জিহাদ করে ও কে ধৈর্য ধরে।”(সূরা আলি ইমরান ৩:১৪২)

মোটকথা আল্লাহ তা‘আলা জিহাদকে শরীয়তসিদ্ধ করেছেন বান্দাদের পরীক্ষা করার জন্য, কে তাঁর আদেশ মান্য করতঃ জান-মাল দিয়ে জিহাদ করে আর কে অমান্য করে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: যে ব্যক্তি মৃত্যু বরণ করল কিন্তু জিহাদ করল না এবং জিহাদের কোন ইচ্ছাও করল না সে এক প্রকার মুনাফিক অবস্থায় মারা গেল। (সহীহ মুসলিম হা: ১৯১০)

নিষ্ঠাবান মুসলিমদের আলামত দুটি: প্রথমত তারা শুধু আল্লাহ তা‘আলার জন্য কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করে। দ্বিতীয়ত কোন অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলে না। وَلِیْجَةٌ অর্থ অন্তরঙ্গ বন্ধু, যে গোপন কথা জানে। সূরা আলি-ইমরানের ১১৮ নং আয়াতে এ অর্থে بِطَانَةً শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ঐ সকল লোকেদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন যারা তঁর ঘরসমূহ আবাদ করবে। যারা নিজেদের কুফরীর সাক্ষ্য দেয় ঐ সকল মুশরিকরা আল্লাহ তা‘আলার ঘরসমূহ আবাদ করতে পারে না। যেমন মুশরিকরা তালবিয়াহ পাঠ করার সময় বলত:

لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ إِلاَّ شَرِيكًا هُوَ لَكَ تَمْلِكُهُ وَمَا مَلَكَ

“আমি তোমার কাছে হাজির, তোমার কোন শরীক নেই, তবে শরীক আছে, তার ও সে শরীক যা কিছুর মালিক তাও তোমার কর্তৃত্বাধীন।”(সহীহ মুসলিম হা: ১১৮৫)

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. বান্দাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে দেবেন।

English Tafsir:-
Tafsir Ibn Kathir:-
Sura Tawbah
Sura:09
Verses :- 16

أَمْ حَسِبْتُمْ

Do you think?

Among the Wisdom of Jihad is to test the Muslims

Allah said,

أَمْ حَسِبْتُمْ

Do you think,

O believers that We will leave you untested with matters that make apparent those who have pure, good intent from those who have false intent

أَن تُتْرَكُواْ

that you shall be left alone,

This is why Allah said next,

وَلَمَّا يَعْلَمِ اللّهُ الَّذِينَ جَاهَدُواْ مِنكُمْ وَلَمْ يَتَّخِذُواْ مِن دُونِ اللّهِ وَلَا رَسُولِهِ وَلَا الْمُوْمِنِينَ وَلِيجَةً

while Allah has not yet tested those among you who have striven hard and fought and have not taken Walijah besides Allah and His Messenger, and the believers…,

meaning, supporters and confidants. Rather, they are sincere for Allah and His Messenger inwardly and outwardly.

Allah also said;

الم

أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا امَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ

وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ الَّذِينَ صَدَقُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِينَ

Alif-Lam-Mim.

Do people think that they will be left alone because they say:”We believe,” and will not be tested.

And We indeed tested those who were before them. And Allah will certainly make known those who are true, and will certainly make known those who are liars… (29:1-3)

أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَـهَدُواْ مِنكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّـبِرِينَ

Do you think that you will enter Paradise before Allah tests those of you who fought (in His cause) and (also) tests those who are patient. (3:142)

and,

مَّا كَانَ اللَّهُ لِيَذَرَ الْمُوْمِنِينَ عَلَى مَأ أَنتُمْ عَلَيْهِ حَتَّى يَمِيزَ الْخَبِيثَ مِنَ الطَّيِّبِ

Allah will not leave the believers in the state in which you are now, until He distinguishes the wicked from the good. (3:179)
In summary, since Allah legislated Jihad for His servants, He explained that the wisdom behind doing so includes testing His servants, distinguishing between those who obey Him and those who disobey Him.

وَاللّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ

Allah is well-acquainted with what you do.

Allah, the Exalted, is the All-Knower of what occurred, what will occur, and the true essence of what might occur had He decided it. Therefore, Allah knows everything before it occurs and how it will occur, there is no deity worthy of worship except Him, nor a Lord except Him. Truly, there is none who can avert Allah’s judgment and decision.

তাফসীরে ইবনে ‌কাসীর বলেছেন:-

আল্লাহ তা’আলা বলেন, হে মুমিনগণ! এটা সম্ভব নয় যে, আমি তোমাদেরকে ছেড়ে দেবো, অথচ তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো না ও দেখবো না যে, তোমাদের মধ্যে ঈমানের দাবীতে কে সত্যবাদী ও কে মিথ্যাবাদী। (আরবী) শব্দের অর্থ হচ্ছে রহস্যবিদ ও দখলদার। সুতরাং ঈমানের দাবীতে সত্যবাদী ঐ ব্যক্তি যে জিহাদে আগে বেড়ে অংশ নেয় এবং প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর মঙ্গল কামনা করে ও তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতা করে। এক প্রকারের বর্ণনা দ্বিতীয় প্রকারকে প্রকাশ করে দিচ্ছিল, তাই দ্বিতীয় প্রকারের লোকদের বর্ণনা আল্লাহ তা’আলা ছেড়ে দিয়েছেন। এরূপ বর্ণনারীতি কবিদের কবিতাতেও পরিলক্ষিত হয়। অন্য আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “লোকেরা কি এটা ধারণা করেছে যে, আমরা ঈমান এনেছি একথা বললেই তারা অব্যাহতি পেয়ে যাবে এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না? আমি ঐ লোকদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম যারা তাদের পূর্বে অতীত হয়ে গিয়েছে, সুতরাং আল্লাহ ঐ লোকদেরকে জেনে নিবেন যারা সত্যবাদী ছিল এবং তিনি মিথ্যাবাদীদেরকেও জেনে নিবেন।” আর এক আয়াতে আল্লাহ তা’আলা এ বিষটিকেই (আরবী) এই শব্দে বর্ণনা করেছেন। অন্য একটি আয়াতে রয়েছে (আরবী) অর্থাৎ “আল্লাহ এরূপ নন যে, তিনি মুমিনদেরকে তোমাদের এ অবস্থাতেই ছেড়ে দিবেন এবং কে কলুষিত ও কে পবিত্র তা পরীক্ষা করে পৃথক করবেন না।” (৩:১৭৯) সুতরাং শরীয়তে জিহাদের বিধান দেয়ার এটাও একটা হিকমত যে, এর দ্বারা ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য ও তারতম্য হয়ে যায়। যদিও আল্লাহ সবকিছুই অবগত আছেন, যা হবে সেটাও তিনি জানেন, যা হয়নি সেটাও জানেন, আর যখন হবে তখন ওটা কিভাবে হবে সেটাও তিনি অবগত রয়েছেন। কোন কিছু হওয়ার পূর্বেই ওর জ্ঞান তার থাকে এবং প্রত্যেক জিনিসেরই অবস্থা সম্পর্কে তিনি সম্যক অবগত। তবুও তিনি দুনিয়াতেও ভাল-মন্দ এবং সত্য ও মিথ্যা প্রকাশ করে দিতে চান। তিনি ছাড়া অন্য কোন মা’বুদও নেই এবং তিনি ছাড়া অন্য কোন প্রতিপালকও নেই। তাঁর ফায়সালা ও ইচ্ছাকে কেউই পরিবর্তন করতে পারে না।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান বলেছেন:-

[১] অর্থাৎ, পরীক্ষা ও যাচাই না করে ছেড়ে দেওয়া হবে?

[২] যেন জিহাদের দ্বারা পরীক্ষা করা হল।

[৩] وَلِيجَة শব্দের অর্থঃ অন্তরঙ্গ প্রাণ-প্রিয় বন্ধু। যেহেতু মুসলিমদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের শত্রুদের সাথে ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখতে নিষেধ করা হয়েছিল, সেহেতু এটাও পরীক্ষার একটি উপকরণ ছিল। যাতে মু’মিনদেরকে অন্যান্যদের থেকে পৃথক করা হয়েছে।

[৪] অর্থাৎ, আল্লাহ তো পূর্ব হতেই সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। কিন্তু জিহাদ বিধিবদ্ধ করার হিকমত ও যৌক্তিকতা এই ছিল যে, এ থেকে খাঁটি ও অখাঁটি, অনুগত ও অবাধ্য বান্দা কে তা প্রকাশ পেয়ে সামনে এসে যাবে; যাদেরকে প্রত্যেক ব্যক্তি দেখে ও চিনে নিতে পারবে।

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন বলেছেন:-

স্বল্পকাল আগে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিল এখানে তাদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে, তাদেরকে বলা হচ্ছে, যতক্ষণ তোমরা এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একথা প্রমাণ করে না দেবে যে, যথার্থই তোমরা আল্লাহ‌ ও তাঁর দ্বীনকে নিজেদের ধন-প্রাণ ও ভাই-বন্ধুদের তুলনায় বেশী ভালবাসো, ততক্ষণ তোমাদের সাচ্চা মু’মিন বলে গণ্য করা যেতে পারে না।

এ পর্যন্ত বাহ্যত তোমাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, যেহেতু সাচ্চা মু’মিন ও প্রথম যুগের দৃঢ়চিত্ত মুসলিমদের প্রাণপণ প্রচেষ্টা ও সংগ্রামের মাধ্যমে ইসলাম বিজয় লাভ করেছে এবং সারাদেশে ছেয়ে গেছে তাই তোমরাও মুসলমান হয়ে গেছো।

Leave a Reply