(Book#867) Sura:17 Sura: Bony Israyel. Ayat: 76-77 [ وَ اِنۡ کَادُوۡا لَیَسۡتَفِزُّوۡنَکَ مِنَ الۡاَرۡضِ لِیُخۡرِجُوۡکَ مِنۡہَا Indeed, they were about to drive you from the land to evict you therefrom;] www.motaher21.net

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(Book#867)
Sura:17
Sura: Bony Israyel.
Ayat: 76-77
[ وَ اِنۡ کَادُوۡا لَیَسۡتَفِزُّوۡنَکَ مِنَ الۡاَرۡضِ لِیُخۡرِجُوۡکَ مِنۡہَا
Indeed, they were about to drive you from the land to evict you therefrom;]
www.motaher21.net

17:76

وَ اِنۡ کَادُوۡا لَیَسۡتَفِزُّوۡنَکَ مِنَ الۡاَرۡضِ لِیُخۡرِجُوۡکَ مِنۡہَا وَ اِذًا لَّا یَلۡبَثُوۡنَ خِلٰفَکَ اِلَّا قَلِیۡلًا ﴿۷۶﴾

And indeed, they were about to drive you from the land to evict you therefrom. And then [when they do], they will not remain [there] after you, except for a little.

17:77

سُنَّۃَ مَنۡ قَدۡ اَرۡسَلۡنَا قَبۡلَکَ مِنۡ رُّسُلِنَا وَ لَا تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحۡوِیۡلًا ﴿٪۷۷﴾

[That is Our] established way for those We had sent before you of Our messengers; and you will not find in Our way any alteration.

Tafsir Ibne Kasir Said:-

The Reason why these Ayat were revealed

Allah said:

وَإِن كَادُواْ لَيَسْتَفِزُّونَكَ مِنَ الَارْضِ لِيُخْرِجوكَ مِنْهَا وَإِذًا لاَّ يَلْبَثُونَ خِلفَكَ إِلاَّ قَلِيلً

And verily, they were about to frighten you so much as to drive you out from the land. But in that case, they would not have stayed (therein) after you, except for a little while.

This was revealed concerning the disbelievers among the Quraysh, when they wanted to expel the Messenger of Allah from among themselves. So Allah issued a warning to them in this Ayah, telling them that if they expelled him, they would not stay in Makkah for very long after that. And this is what happened after he migrated from them when their persecution became so intense. Only a year and a half after that, Allah brought him and them together on the battlefield of Badr, without any pre-arranged appointment, and He caused him to prevail over them and defeat them, so he killed their leaders and took their families as captives.

Hence Allah said:

.
سُنَّةَ مَن قَدْ أَرْسَلْنَا

قَبْلَكَ مِن رُّسُلِنَا وَلَا تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحْوِيلً

 

A Sunnah with which We sentOur Messengers before you and you will not find any alteration in Our Sunnah.

meaning this is what We usually do to those who reject Our Messengers and persecute them by driving the Messenger out from among themselves – the punishment comes to them. If it were not for the fact that the Prophet was the Messenger of Mercy, vengeance would have come upon them such as had never been seen before in this world.

So Allah says:

وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنتَ فِيهِمْ

And Allah would not punish them while you are among them. (8:33)

For getting Quran app: play.google.com/store/apps/details?id=com.ihadis.quran

أعوذ باللّٰه من الشيطان الرجيم
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
(বই#৮৬৭)
সুরা: আল্ বনি‌ ইসরাইল
সুরা:১৭
৭৬-৭৭ নং আয়াত:-
[ وَ اِنۡ کَادُوۡا لَیَسۡتَفِزُّوۡنَکَ مِنَ الۡاَرۡضِ لِیُخۡرِجُوۡکَ مِنۡہَا
তোমাকে স্বদেশ থেকে প্রায় উচ্ছেদ করেই ফেলেছিল সেথা হতে বহিস্কার করার জন্য;]
www.motaher21.net

সুরা: বনী ইসরাঈল
আয়াত নং :-৭৬

وَ اِنْ كَادُوْا لَیَسْتَفِزُّوْنَكَ مِنَ الْاَرْضِ لِیُخْرِجُوْكَ مِنْهَا وَ اِذًا لَّا یَلْبَثُوْنَ خِلٰفَكَ اِلَّا قَلِیْلًا

আর এরা এ দেশ থেকে তোমাকে উৎখাত করার এবং এখান থেকে তোমাকে বের করে দেবার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু যদি এরা এমনটি করে তাহলে তোমার পর এরা নিজেরাই এখানে বেশীক্ষণ থাকতে পারবে না।

আয়াত নং :৭৭

سُنَّةَ مَنْ قَدْ اَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنْ رُّسُلِنَا وَ لَا تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحْوِیْلًا۠

এটি আমার স্থায়ী কর্মপদ্ধতি। তোমার পূর্বে আমি যেসব রসূল পাঠিয়েছিলাম তাদের সবার ব্যাপারে এ কর্মপদ্ধতি আরোপ করেছিলাম। আর আমার কর্মপদ্ধতিতে তুমি কোন পরিবর্তন দেখতে পাবে না।

৭৬-৭৭ নং আয়াতের তাফসীর:

ফী জিলালিল কুরআন বলেছেন:-

*বাতিলের সাথে আপােষের পরিণতি : আয়াতের দিকে আবারও একবার খেয়াল করুন, আমি তােমার প্রতি যে ওহী পাঠিয়েছি তার প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় পদস্খলন ঘটাবার ব্যাপারে এরা কোনােপ্রকার চেষ্টা থেকেই বিরত থাকেনি। যাতে করে… এই ছিলাে আমার নিয়ম। আর তুমি আমার এই নিয়মে কোনাে রদবদল দেখতে পাবে না।'(আয়াত ৭৩-৭৭) বর্তমান আলােচনার মধ্যে দেখা যায়, রসূলুল্লাহ(স.)-কে তার দ্বীন থেকে বিচ্যুত করার জন্যে মােশরেকদের নানা প্রকার অপচেষ্টার বিবরণ। এ সব তৎপরতার মধ্যে প্রথম বিষয়টিই হচ্ছে, তার কাছে যে ওহী নাযিল হয়েছে সেই ওহীর ব্যাপারে তার মনের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি করে দেয়া, যাতে করে আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কে তিনি কিছু মিথ্যা কথা তৈরী করে বলে ফেলেন; অথচ তিনি তো সেই মহান ব্যক্তি যাকে সবাই সাদিকুল আমীন-অবিসংবাদিত সত্যবাদী-মহা আমানতদার বিশ্বস্ত খেতাব দিয়েছিলাে। বিভিন্ন ভাবে তারা এই অপচেষ্টা চালিয়েছিলাে… এসব নিকৃষ্ট তৎপরতার মধ্যে একটি ছিলাে তার সাথে এ ব্যাপারে দরকষাকষি করা যে ওদের বাপদাদার ও ওই সব দেব-দেবীদের সমালােচনা ও তাদের প্রতি কটাক্ষ করা বন্ধ করতে হবে তাহলে তারা তার মনিব আল্লাহর হুকুম পালন করবে। আর একটি শর্ত তারা আরাপ করেছিলাে, তা হচ্ছে, আল্লাহ তায়ালা যে পবিত্র ঘরটিকে নিরাপদ স্থান বলে ঘােষণা করেছিলাে, তাদের ঘরগুলােকেও সেই ঘরের মতােই পবিত্র ও নিরাপত্তার স্থান ও পাক-পবিত্র বলে ঘােষণা দিতে হবে। উপরন্তু তাদের আর একটি দাবীও মেনে নিতে হবে যে তাদের বিশেষ বিশেষ নেতৃবৃন্দকে যে বৈঠকে ডাকা হবে সেখানে সাধারণ গরীব-মিসকীন লােকেরা বসতে পারবে না। কারণ, এতে তাদের মান-সম্ভ্রম নষ্ট হয়,-নেতৃবৃন্দের এমন বে-ইযযতী মেনে নেয়া যায় না। এ সম্পর্কে আল কোরআনে কোনাে ফয়সালা দেয়া হয়নি, বরং তাদের দাবীগুলাের দিকে ইংগীত করা হয়েছে মাত্র। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সত্যের ওপরে মযবুতির সাথে টিকে থাকার জন্যে রসূলুল্লাহ(স.)-কে স্মরণ করিয়ে দেয়া এবং তাকে অযৌক্তিক ও অন্যায় কাজ থেকে বাঁচানাে। আসলে, যেভাবে তারা ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পেতেছিলাে, তাতে আল্লাহ তায়ালা যদি তাকে সত্যের পথে টিকে থাকার জন্যে নিজে দৃঢ়তা না দিতেন, তাহলে অবশ্যই তিনি বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যেতেন এবং ওদের দিকে ঝুঁকে পড়তেন, যার ফলে তারা তাকে নিজের বন্ধু বানিয়ে নিত এবং মােশরেকদের দিকে ঝুকে পড়ার ফলে মােশরেকদের ফাঁদে তার পা দেয়া হয়ে যেতে, আর এর অর্থ দাঁড়াতাে দুনিয়া ও আখেরাত-উভয় স্থানেই তিনি দ্বিগুণ আযাবের অধিকারী হয়ে যেতেন এবং সে অবস্থায় আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচানাের মতাে কোনাে সাহায্য ওই সব দেবদেবীরা করতে পারতাে না। এসব নানাবিধ ষড়যন্ত্র থেকে আল্লাহ তায়ালা তার রাসূল(স.)-কে বাঁচিয়েছিলেন। এসব চক্রান্তকারীরা ছিলাে তৎকালীন সমাজে শক্তিশালী ও সব রকমের ক্ষমতার অধিকারী, এরা দাওয়াত দানকারীদের বিরুদ্ধে সর্বদা অসৎ তৎপরতায় লিপ্ত ছিলাে। সত্যের দাওয়াত থেকে বিরত রাখার জন্যে ওরা মানুষকে নানাভাবে উস্কানি দিতাে এবং অবশ্যই তাদের উস্কানিতে কিছু না কিছু লােক তাে প্ররােচিত হতােই-তা সংখ্যায় তারা যতাে কমই হােক না কেন, এমনকি এ দাওয়াতে সাড়া দানকারীদেরকেও তারা নানা কুপরামর্শ দিয়ে তাদের দৃঢ়তা নষ্ট করার চেষ্টা করতাে, যার ফলে তারা যুদ্ধে যােগ দিয়ে বহু মালে গনীমত (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) লাভ করা থেকে পেছনে থেকে যাওয়াকেই বেশী পছন্দ করতাে। ইসলামী দাওয়াত থেকে পিছিয়ে রাখার জন্যে ওই সব কাফের অন্য যে সব চক্রান্ত করতাে তা হচ্ছে, তারা মানুষকে বুঝাতাে-ওসব ঝামেলার মধ্যে গিয়ে কী হবে! অপর দিকে শক্তি ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিরা ইসলামী দাওয়াত পুরােপুরি গ্রহণ করতাে না, বরং তারা সত্য-মিথ্যার মাঝামাঝি একটা পথ বেছে নিত, কারণ এটাকেই তারা সহজ পথ মনে করতাে এরা ছিলাে বেশী চালাক, সত্য-মিথ্যা কখন কোনটার বিজয় হয় কে জানে, কাজেই সবার সাথে সম্পর্ক রাখা দরকার, যাতে যেদিকেই বিজয় আসুক না কেন তারা যেন সুযােগ না হারায়-এই ছিলাে তাদের অন্তরের মধ্যে যুক্তি। প্রকৃত পক্ষে এই চোরাপথে বহু সৎ চিন্তাশীল, এমনকি ইসলামী-দাওয়াত গ্রহণকারী বহু মানুষকে শয়তান বিপথগামী করতে সফল হয়েছে। এরা এতেই কল্যাণ মনে করেছে যে ইসলামী জীবন যাপনের মধ্যে কিছু ক্ষতি স্বীকার করেও ক্ষমতাসীনদের কাছাকাছি থাকাটাই শ্রেয়। কিন্তু চিরদিনের জন্যেই একথা মনে রাখতে হবে, সত্য পথে প্রবেশের প্রথম ধাপে এতােটুকু পদস্খলন বা টিলেমি শেষ পরিণতিতে সত্য থেকে মানুষকে এতাে বেশী দূরে সরিয়ে নিয়ে যায় যে সেখান থেকে ফিরে আসার আর কোনাে উপায় থাকে না। আর ইসলাম গ্রহণকারী যে কোনাে ব্যক্তি একবার অন্যায়ের সাথে আপােষ করতে রাযি হয়ে গেলে, সে ধীরে ধীরে অন্যায়ের সর্বগ্রাসী ছােবলের মধ্যে পড়ে যায়। কারণ, ছােটো বা বড়াে যে কোনাে অন্যায়ের কাছে আত্মসম্পর্ণ করলে মানুষের মনের বল শুধু দুর্বলই হয় না, বরং আস্তে আস্তে একেবারেই নষ্ট হয়ে যায় এবং একবার পরাজয় স্বীকার করার পর সত্যের পথে দৃঢ় হয়ে থাকা তার পক্ষে আর সম্ভব হয় না এবং আল্লাহর সাহায্য থেকেও সে বঞ্চিত হয়ে যায়। আসলে নবীর আহ্বান ছিলাে দ্বীন ইসলাম-এর দাওয়াতকে পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ করা, কিন্তু যে ব্যক্তি একবার নীতিভ্রষ্ট হয়ে যায়, তা সে যতাে ছােটো কারণেই হােক না কেন, অথবা কোনাে ব্যক্তি যখন সত্যের ব্যাপারে সামান্যতম আপােষও করে বসে বা চুপ থেকে নিরপেক্ষতা অবলম্বন করতে চায় তখন প্রকৃতপক্ষে সে ঈমানের হক আর আদায় করতে পারে না। একজন মােমেন দ্বীন-এর দাওয়াতের ছােটো বড়াে প্রতিটি বিষয়কে সমধিক গুরুত্ব দেয়, দ্বীনের কাজের কোনােটিই তার কাছে ছােট বা তুচ্ছ নয়, তার কাছে কোনােটা অত্যাবশ্যকীয় বা বেশী জরুরী এবং কোনােটা নফল তা নয়। সে গভীরভাবে অনুভব করে যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের কোনাে কথা এমন নয় যে তা উপেক্ষা করা যেতে পারে। দ্বীনের নিয়ম-কানুন সবগুলােই পরিপূর্ণ ও পূর্ণাংগভাবে মানুসের জীবনের প্রয়ােজনগুলাে মেটানাের ব্যাপারে নিয়ােজিত এবং প্রতিটি বিষয় পরস্পরের সাথে এমন অংগাংগিভাবে জড়িত যে এগুলাের কোনাে একটি বাদ দিলে অপরগুলাের কার্যকারিতা ক্ষুণ্ন হয়-এতে বুঝা যায় ইসলামী বিধান একটি আর একটির ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং, ইসলামের সৌন্দর্য ও শাস্তি পেতে হলে এর প্রত্যেকটি বিধান একই সাথে চালু হতে হবে; মানুষের তৈরী যে কোনাে কারখানায়ও দেখা যায়, প্রত্যেকটি যন্ত্রাংশ অপর যন্ত্রাংশের ওপর নির্ভরশীল-এদের একটি বন্ধ হলে অপর গুলো আর কর্মক্ষম থাকতে পারে না। চিরদিন পৃথিবীর বুকে একই নিয়ম চলে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও এই একই নিয়ম চলবে বলে বুঝা যায়। ক্ষমতাসীন ব্যক্তি সত্যের নিশান বর্দারদেরকে পর্যায়ক্রমে ও ধীরে ধীরে বশীভূত করতে চায়; তারা সত্য পথের পথিকদের সামনে নানা প্রকার লােভের টোপ ফেলে। এমনই কোনাে লােভনীয় জিনিসের কাছে যখন কোনাে মােমেন আংশিকভাবে হলেও আত্মসমর্পণ করে বসে তখন তার ভাবমূর্তি একধাপ নেমে যায়, তার মর্যাদা ও তার দুর্ভেদ্যতা হ্রাস পায় এবং শক্তিদর্পীরা বুঝে ফেলে যে আর একটু দর কষাকষি করলে বা লােভনীয় জিনিসের মাত্রা আর একটু বাড়িয়ে দিলে এইসব নীতিবান (?)দেরকে খরীদ করতে আর বেগ পাওয়ার কথা নয় এবং তারা নিশ্চিন্ত হয়ে যায় যে, পর্যায়ক্রমে ক্রমবর্ধমান দরকষাকষির মাধ্যমে এদেরকে পুরােপুরি বশীভূত করে ফেলা যাবে! এই ভাবে বাতিল শক্তির প্রস্তাবের অংশবিশেষ মেনে নেয়া- হােক সে পূর্ণাংগ ইসলামের তুলনায় অতি সামান্য বিষয়, কিন্তু তা অন্যায় অপশক্তির বিজয়ের পথকেই ত্বরান্বিত করে। এই প্রক্রিয়ায় দ্বীন বিকিয়ে দেয়ার মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের ওপর তাদের প্রভাব ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। অপর দিকে সত্যের নিশান বর্দাররা যখন অন্যায় অপশক্তির সাথে কোনাে ব্যাপারে আপােষ করে তখন তারা আত্মিকভাবে মরে যায়-আল্লাহর সাহায্য ও সমর্থন হয় বঞ্চিত। অথচ প্রকৃত মােমেনরা তাে তাদের দাওয়াতের প্রচার ও প্রসারের ব্যাপারে একমাত্র আল্লাহর ওপর ভরসা করে; কিন্তু যখন পরাজয় একবার হামাগুড়ি দিয়ে কারও ঘরে ঢুকে পড়ে তখন সে পরাজয়ের গ্লানিকে ধুয়ে মুছে ফেলে আবার বিজয়ের কেতন ওড়ানাে সম্ভব হয় না। এ কারণেই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার রসূলদের প্রতি তার ইহসান-এর কথা স্মরণ করিয়ে মােমেনদেরকে মযবুত হওয়ার জন্যে নির্দেশ দিচ্ছেন। বলছেন, যা কিছু আল্লাহ তায়ালা তার রসূলের ওপর নাযিল করেছেন, তিনি যেন তার ওপর পুরােপুরি মযবুত হয়ে থাকেন, তাহলেই তিনি তাদেরকে মােশরেকদের ফিৎনা ও চক্রান্ত থেকে রক্ষা করতে পারবেন, যেমন করে অতীতে করেছেন। তিনি রসূলুল্লাহ(স.)-কে পেছনের কথা স্মরণ করাতে গিয়ে বলছেন যে এ পর্যন্ত তাকে কাফেরদের যাবতীয় আক্রমণ থেকে শুধু রক্ষাই করেছেন তা নয়, বরং ওই সমাজের শক্তিমান ব্যক্তিদেরকে একে একে টেনে এনে তার পদতলে রেখে দিয়েছেন এবং তার সংগী-সাথীতে পরিণত করেছেন। অতপর সংখ্যায় তারা তুলনামূলকভাবে কম হলেও আল্লাহর রহমতধন্য হয়ে ওই সব ব্যক্তি তার পাশে দাঁড়িয়ে গেছেন ইস্পাত কঠিন প্রাচীরের মতাে—অপর দিকে মােশরেকদের ওপর এসেছে দুনিয়া ও আখেরাতের আযাব হারিয়েছে তাদের সমর্থক ও সাহায্যকারীদেরকে এবং তারা ক্রমান্বয়ে নেমে এসেছে। মুশরিকরা যখন রাসূল(স.)-কে তাদের কথা মেনে নিতে বাধ্য করতে পারলাে না তখন তাকে নানাভাবে ভয় দেখাতে শুরু করলাে যেন তিনি মক্কা ছেড়ে পালিয়ে যান। কিন্তু তিনি তাদের ভয়ে বা তাদের খাহেশ মতাে মক্কা ত্যাগ করলেন না। দীর্ঘ তের বছর অবিরাম গতিতে দাওয়াতী কাজ চালাতে থাকলেন। তারপর যখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে দেশ ত্যাগের নির্দেশ নিলেন, তখন সেই নির্দেশ পালনের জন্যে তিনি মদীনায় হিজরত করে চলে গেলেন, গেলেন যখন তিনি জানতে পারলেন যে কোরায়শরা কখনােই তাকে ধ্বংস করতে পারবে না। কারণ সর্বান্তকরণ তিনি চাইছিলেন যেন কোরায়শরা সামগ্রিকভাবে ধ্বংস প্রাপ্ত না হয়। তিনি জানতেন যে, তার দেশবাসী তাকে দেশ থেকে বের করে দিলে তারা সামগ্রিকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যাবে, যেহেতু পূর্ববর্তী উম্মতরা নবীদেরকে বহিষ্কার করার কারণে একেবারেই নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিলাে । আরও তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে জানতে পেরেছিলেন যে তিনি হিজরত করে চলে গেলে তার দেশবাসী ধীরে ধীরে এবং অচিরেই ইসলামের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়বে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ কথার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলছেন, আর তখন তােমার বিরােধী লােক (মক্কার বুকে) খুবই কম সময়ই থাকতে পারতেন। এটাই হচ্ছে আল্লাহর নিয়ম; যা অবশ্যই একদিন চালু হবে,  ‘(হে রসূল) তােমার পূর্বে, আমি, যে রসূলদেরকে পাঠিয়েছি তাদেরও নিয়ম ছিলাে এটাই; আর তােমরা আমার এ নিয়মের মধ্যে কোনাে পরিবর্তন দেখতে পাবে না।’ আল্লাহর নবীকে বহিষ্কার করলে আযাব নাযিল হওয়া এক আল্লাহরই এমন এক নিয়ম যা চিরদিন একই অবস্থায় এবং অপরিবর্তিত অবস্থাতেই আছে ও থাকবে। এ নিয়মের মধ্যে কোনাে পরিবর্তন হবার নয়। কারণ রসূলদের ঘরছাড়া করা-এমন এক মহান অপরাধ যার চূড়ান্তও সমুচিত শাস্তি হওয়াই বাঞ্ছনীয় (কেননা রাসূল বিশ্ব সম্রাটের বিশিষ্ট প্রতিনিধি)। তাদেরকে দেশান্তর করার অর্থ হচ্ছে খােদা আল্লাহকে তার রাজ্যের মধ্যে অপমান করা-যেহেতু রসূলদেরকে স্বার্থান্ধরা আল্লাহর খাস প্রতিনিধি বলে জানতে ও বুঝতাে তা সত্তেও তাদের প্রতি ওই অরিণামদর্শী ও অহংকারী কাফেররা ক্ষণস্থায়ী স্বার্থের কারণে দুর্ব্যবহার করতে দ্বিধা করতো না-এমতাবস্থায় তাদেরকে সাজা না দেয়ার অর্থ হত আল্লাহর ক্ষমতার কথা প্রমাণ করা। সুতরাং এ মহাবিশ্বে আল্লাহর অমােঘ ও অপরিবর্তনীয় নিয়ম অপ্রতিহতভাবে চলবেই চলবে; কোনাে ব্যক্তি বিশেষের জন্যে বা বিশেষ কারণে যে নিয়ম থেমে যেতে পারে না-এমন কেউ নেই, বা কোথাও এমন কিছু নেই যা এ নিয়ম-বিধানের স্বাভাবিক গতির মধ্যে পরিবর্তন আনতে পারে। এখন আখেরী নবীর মােহব্বতেই হােক বা শেষ ও চুড়ান্ত নবীর উম্মতদেরকে শেষ সুযােগ দেয়ার জন্যেই হােক, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা চাননি যে সর্বগ্রাসী আযাব এসে নবী(স.)-এর জাতিকে সামগ্রিকভাবে ধ্বংস করে দিক। যে মহান নবী শুধু তার নিজ জাতির জন্যেই কাঁদেন নাই, তিনি কেঁদেছেন বিশ্ব মানবতার জন্যে যার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় তায়েফের পথ-প্রান্তরে রক্তাক্ত অবস্থায় আসন্ন আযাব নাযিল হওয়ার আশংকায় নবী(স.)-এর বারবার কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে দোয়া করার মধ্যে দিয়ে-তখনও ওই নিরাশার আঁধারে জোরালাে আশার আলাে তার হৃদয়ে প্রদীপ্ত ছিলাে যে ওরা যদি ঈমান না-ই আনে- হয়তাে ওদের বংশধররা ঈমান আনবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন-তিনি রহমানুর রহীম, তার দরবার থেকে তার প্রিয়তম রসূলের এ আকুল আবেদন ঠোকর খেয়ে ফিরে আসতে পারে না। আবার তার চিরন্তন নিয়মও গতি হারাতে পারে না। এ জন্যে যে তাৎক্ষণিক কারণে অতীতে আযাব নাযিল হয়েছে-সেই কারণটিকেই তিনি দূরে সরিয়ে রাখলেন, অর্থাৎ রসূল(স.)-কে মানুষের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য মোজেযা দিলেন না; অর্থাৎ মােজেযা হচ্ছে আল্লাহর শক্তি ক্ষমতার সরাসরি বহিঃপ্রকাশ-কাফেরদের দাবী অনুসারে এ মােজেযা প্রদর্শন করার পরও যদি জনপদ একে উপেক্ষা করে তখন এ মহামারীর ওষুধ আযাব ছাড়া আর কিছু থাকে না। তাই, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সুকৌশলে মহানবী(স.)-কে মদীনায় হিজরত করিয়ে দিলেন। এ হিজরত ছিলাে আল্লাহর ফয়সালা, নচেৎ কোরায়শদেরকে আল্লাহ তায়ালা এমন শক্তি ক্ষমতা দেন নাই যে তারা শক্তি বলে তাকে বহিষ্কার করতে পারতাে বা দেশ ত্যাগ করার জন্যে রসূলুল্লাহ(স.)-এর নিজেরও কোনাে ফয়সালা ছিলাে না বা তিনি কোনাে ভয়ও পান নাই। তায়েফে গমন-সে তাে ছিলাে দ্বীন প্রচারের ক্ষেত্রে অনুসন্ধানের প্রচেষ্টার এক নমুনা নাত্র।

 

তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন‌্য বলেছেন :-

# এটি একটি সুস্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী। সে সময় এটি তো নিছক হুমকি মনে হচ্ছিল। কিন্তু দশ বারো বছরের মধ্যেই এর সত্যতা অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণ হয়ে গেলো। এ নিজের জন্মভূমি থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করলো এবং এরপর ৮ বছরের বেশী সময় অতিবাহিত হতে না হতেই তিনি বিজয়ীর বেশে মক্কা মুয়ায্যমায় প্রবেশ করলেন। তারপর দু’বছরের মধ্যেই সমগ্র আরব ভূখণ্ড মুশরিক শূন্য করা হলো। এরপর যারাই এ দেশে বসবাস করেছে মুসলমান হিসেবেই বসবাস করেছে, মুশরিক হিসেবে কেউ সেখানে টিকতে পারেনি।

# সকল নবীর ব্যাপারে আল্লাহ এ একই পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। অর্থাৎ যে জাতি তাদেরকে হত্যা ও দেশান্তরী করেছে, তারাপর সে আর বেশী দিন স্বস্থানে অবস্থান করতে পারেনি। এরপর হয় আল্লাহর আযাব তাকে ধ্বংস করে দিয়েছে অথবা কোন শত্রু ভাবাপন্ন জাতিকে তার ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে কিংবা সেই নবীর অনুসারীদের দ্বারা তাকে বিপর্যস্ত ও বিজিত করা হয়েছে।

তাফসীরে ইবনে কাছীর বলেছেন:-

৭৬-৭৭ নং আয়াতের তাফসীর

বর্ণিত আছে যে, ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহকে (সঃ) বলেছিলঃ “আপনার শাম দেশে (সিরিয়ায়) চলে যাওয়া উচিত। ওটাই হচ্ছে নবীদের দেশ। আপনার উচিত এই মদীনার শহরকে ছেড়ে দেয়া।” ঐ সময় এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। একথাও বলা হয়েছে যে, তাবুকের ব্যাপারে এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। ইয়াহুদীরা যে তাঁকে বলেছিলঃ “আপনার শাম দেশে চলে যাওয়া উচিত। কেননা, ওটাই হচ্ছে নবীদের বাসভূমি ও হাশরের যমীন। আপনি যদি সত্য নবী হন তবে সেখানে চলে যান। কিছুকাল তিনি তাদের এই কথাকে সত্য মনে করেই ছিলেন। তাবুকের যুদ্ধ দ্বারা তাঁর নিয়ত এটাই ছিল। কিন্তু তাঁবুকে পৌঁছার সাথে সাথেই সূরায়ে বাণী ইসরাঈলের এই আয়াতগুলি অবতীর্ণ হয়। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবীকে (সঃ) মদীনায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। আর বলেনঃ “মৃত্যু পর্যন্ত তোমাকে এই মদীনাতেই থাকতে হবে এবং এখান থেকেই দ্বিতীয়বার উঠতে হবে।” কিন্তু এর সনদ ও সমালোচনা মুক্ত নয়। আর এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান যে, এই ঘটনাটি সঠিক নয়। (কিন্তু এটা দুর্বল উক্তি। কেননা, এইটি মক্কী আয়াত। আর মদীনা নবীর (সঃ) বাসভূমি পরে হয়েছিল)

তাঁবুকের যুদ্ধ ইয়াহুদীদের উপরোক্ত কথা বলার কারণে সংঘটিত হয় নাই; বরং আল্লাহ তাআলার নির্দেশ বিদ্যমান রয়েছে। তিনি বলেছেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “তোমরা তোমাদের আশে পাশের কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা কর।” (৯:১২৩) অন্য আয়াতে রয়েছেঃ “যারা আল্লাহর উপর এবং কিয়ামতের উপর বিশ্বাস করে না এবং তাঁর রাসূলের হারামকৃত জিনিসকে হারাম মনে করে না ও সত্যকে কবুল করে না এইরূপ আহলে কিতাবের বিরুদ্ধে তোমরা আল্লাহর পথে জিহাদ কর, যে পর্যন্ত না তারা লাঞ্ছিত অবস্থায় জিযিয়াকর দিতে সম্মত হয়। এই যুদ্ধের আরো কারণ ছিল এই যে, যে সব সাহাবী (রাঃ) মূতার যুদ্ধে শহীদ হয়ে ছিলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁদের প্রতিশোধ গ্রহণের ইচ্ছা করেছিলেন। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। যদি উপরোক্ত ঘটনা সঠিক হয় তবে ওরই উপর ঐ হাদীসকে স্থাপন করা হবে যাতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “মক্কা, মদীনা ও সিরিয়ায় কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। ওয়ালীদ (রঃ) তো এর ব্যাখ্যায় লিখেছেন যে, সিরিয়া দ্বারা বায়তুল মুকাদ্দাসকে বুঝানো হয়ে থাকে। তাহলে সিরিয়া দ্বারা তাবুককে বুঝাবে না কেন? এরূপ বুঝানো তো সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার ও সঠিক। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী।

একটি উক্তি এও আছে যে, এর দ্বারা কাফিরদের এ সংকল্পকে বুঝানো হয়েছে, যে সংকল্প তারা মক্কা হতে রাসূলুল্লাহকে (সঃ) তাড়িয়ে দেয়ার ব্যাপারে করেছিল। আর এটা হয়েছিলও বটে। যখন তারা তাঁকে মক্কা থেকে বিদায় করে দেয়, তারপর তারাও সেখানে বেশী দিন অতিবাহিত করতে পারে নাই। ইতিমধ্যেই আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহকে (সঃ) তাদের উপর জয়যুক্ত করেন। মাত্র দেড় বছর পরেই বিনা প্রস্তুতি ও ঘোষণাতেই আকস্মিকভাবে বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়ে যায় এবং তাতে কাফিরদের ও কুফরীর মাজা ভেঙ্গে পড়ে। তাদের শরীফ ও নেতৃস্থানীয় লোকেরা কচুকাটা হয়। তাদের শান শওকত মাটির সাথে মিশে যায়। তাদের বড় বড় নেতারা বন্দী হয় তাই, মহান আল্লাহ বলেনঃ এই অভ্যাস প্রথম যুগ থেকেই চলে আসছে। পূর্ববর্তী রাসূলদের সাথেও এইরূপ ব্যবহার করা হয়েছিল যে, কাফিররা যখন তাদেরকে ত্যক্ত বিরক্ত করে এবং দেশান্তর করে দেয় তখন তারাও রক্ষা পায় নাই। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন করে দেন। তবে আমাদের রাসূল (সঃ) ছিলেন রহমত ও করুণার রাসূল, ফলে কোন সাধারণ আসমানী আযাব ঐ কাফিরদের উপর আসে নাই। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “(হে নবী (সঃ)! আল্লাহ এরূপ নন যে, তুমি তাদের মধ্যে থাকা। অবস্থায় তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন।” (৮:৩৩)।

তাফসীরে‌ হাতহুল মাজিদ বলেছেন:-

৭৬-৭৭ নং আয়াতে তাফসীর:

এখানে মক্কা থেকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বহিষ্কার করার জন্য কুরাইশরা যে ষড়যন্ত্র করেছিল সে কথাই বলা হয়েছে এবং আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন যে, যদি তারা তোমাকে তাদের পরিকল্পনা অনুপাতে বের করে দিত তাহলে তাদের অবস্থা ঐ রকমই হত যেমন পূর্ববর্তী রাসূলদেরকে তাদের দেশ থেকে বের করে দেয়ার ফলে ঐ সম্প্রদায়ের হয়েছিল। এতে কোন প্রকার পরিবর্তন হত না।

আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

১. ভাল/সৎ লোকদেরকে গ্রাম বা এলাকা থেকে বের করে দেয়া যাবে না, দিলে সকলের প্রতি শাস্তি নেমে আসবে।

Leave a Reply